কেন আমি ডাকি তারে -২১
রেহান নিতুকে বলল, টেনশন নিও না, হসপিটালাইজড করতে হয়েছে, ঠিক হয়ে যাবে। তুমি গুছিয়ে নাও৷ আমি কার ম্যানেজ করছি।
নিতুর মনে হলো, ও কিছুই করতে পারবে না৷ হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিতু পারল। আস্তে আস্তে সবকিছু গুছিয়ে নিলো৷
ওরা ঘন্টাখানেকের মধ্যে রওনা হয়ে গেল।
পুরো পথ নিতু কাঁদছিল। রেহান নিতুকে ধরে রাখল শক্ত করে।
ভয় পেও না নিতু, সব ঠিক হয়ে যাবে।
নিতু বলল, কিচ্ছু ঠিক হবে না। আমার সব কিছুই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে!
রেহান বুঝলো, নিতু কি বলতে চাচ্ছে।
রেহান বলল, নিতু, কিছু এলোমেলো হয় নি৷ সব ঠিক আছে। একটু ধৈর্য্য ধরো।
ঢাকায় পৌঁছে রেহান নিতুকে নিয়ে হাসপাতালে চলে গেল। ততক্ষণে নিতুর বাবা লাইফ সাপোর্টে, কোনো জ্ঞান নেই, হয়তো ফিরবেও না৷
নিতু স্থির হয়ে বসে পড়ল। বাবা যাতে কষ্ট না পায় এর জন্য এত কিছু করা। বাবা যদি না থাকে, মাথার উপর থেকে ছায়াটা সরে যাবে।
নিতুর কাছে ফোনটা ছিল না। রেহান একটু দূরে নিতুর ভাইয়ের সাথে কথা বলছিল। হঠাৎ নিতুর হোয়াটসঅ্যাপে ফোন এলো।
তুহিন!
রেহান নিতুকে ডাকা সমীচীন মনে করল না। দূরে গিয়ে ফোন রিসিভ করে বলল, তুহিন, নিতু একটু দূরে আছে, ওর বাবা সিক! আপনি পরে ফোন করুন।
তুহিন বলল, আপনি! আপনার কাছে নিতুর ফোন! ওর কী প্রাইভেসি বলতে কিছু নেই এখন!
রেহান বলল, এটা প্রাইভেসির সময় না। তাছাড়া ওর প্রাইভেট সব কথাই আমার জানা! তাই কোনো সমস্যা নেই।
তুহিন বলল, নিতু কী আপনার সাথে সব কথা শেয়ার করে? আমি ওকে কতবার চুমু খেয়েছি সেটাও বলেছে?
রেহান চুপ করে থেকে বলল, নিতুকে এত হালকা মেয়ে ভাবেন! আপনার তো বেশ কয়েক বছরের গার্লফ্রেন্ড নিতু, ওর সম্পর্কে দেখি আপনি কিছুই জানেন না!
রেহান, আপনাকে একটা কথা বলি, নিতুকে কাছে পেয়ে আপনি হয়তো ভাবছেন, নিতুকে আপনি ছাড়বেন না। কিন্তু সেটা হবে না৷ আমি ফিরে আসব আর নিতু আমার কাছেই চলে আসবে!
-তাই নাকি, আপনি এত ইনসিকিউরড ফিল করছেন কেন! – রেহান তাচ্ছিল্য করে বলল।
আমি জানি, আপনি নিতুকে ভোলাতে চেষ্টা করছেন, আর আপনার জন্যই নিতু আমাকে আগের মত সময় দেয় না। এখন ফোনটাও দখল করে নিয়েছেন!
রেহান বলল, তুহিন আপনি পরে নিতুর সাথে কথা বলে নিয়েন। এখন বরং রাখি! ঠিক আছে?
তুহিন কেটে দিলো।
রেহান ভাবল, নিতুকে গিয়ে বিষয়টা খুলে বলবে৷ কিন্তু সে সুযোগ পাওয়া গেল না। ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছেন, লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলবেন এখন!!!
চলবে
শানজানা আলম
বৃষ্টি নূপুর, পথের শেষে, মন মুনিয়া পড়তে পারেন বইটই থেকে।