কেন আমি ডাকি তারে – ২০
নিতু বলেছিল নিতুর পায়ের ব্যাথা কমেছে, কিন্তু বিকেলের দিকে ওর গা কাঁপিয়ে জ্বর এলো। রেহান গিয়েছিল হালকা কিছু স্ন্যাকস নিয়ে আসতে সেই সাথে ডিনারের অর্ডার দিয়ে দিতে। অফ সিজনে আনলিমিটেড খাবার থাকে না। অর্ডার বেসিসে রান্না করা হয় এখানে।
সেখানে বন্ধুদের সাথে চা খেতে একটু দেরী হলো। নিতু ফোন করে নি৷ এমনিতেই বেচারা ঘুরতে এসে প্যাচে পড়ে গেছে৷
রুমে ঢুকে রেহান দেখল, নিতু লাইট নিভিয়ে শুয়ে আছে।
লাইট দিয়ে রেহান বলল, সন্ধ্যায় আলো জ্বালতে হয় রুমে।
নিতু অস্পষ্ট ভাবে কিছু বলার চেষ্টা করল।
কি হয়েছে নিতু?- রেহান এগিয়ে এসে দেখল, জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।
নিতু, এ্যাই নিতু!
নিতু চোখ মেলে বলল, জ্বর এসেছে!
হুম, আমাকে ফোন করো নি কেন! ওঠো, কিছু খেয়ে প্যারাসিটামল খেয়ে নাও!
নিতু উঠতে পারল না।
রেহান নিজে চেঞ্জ করে নিতুকে মাথায় কিছুক্ষণ জলপট্টি দিলো৷ গা মুছিয়ে দিলে ভালো হতো কিন্তু নিতু রাজি হবে কিনা! রেহান কি একটু জোর খাটাবে!নিতু নিষেধ করল না৷ রেহানকে দূরের কেউ মনে হচ্ছে না। তাছাড়া রেহান অনেকবারই নিতুর কাছাকাছি এসেছে। ওয়াশরুম থেকে এসে নিতুকে শুইয়ে দিয়ে রেহান সরে যাচ্ছিল৷ নিতু রেহানের হাত ধরে ফেলল।
রেহান নিতুকে বলল, আসছি।
রেহান সরে যেতেই নিতুর মনে হলো, রেহানকে ছেড়ে থাকা এতটাও সহজ হবে না তার জন্য।
★★★
শেষরাতে জ্বর ছাড়ল ঘাম দিয়ে৷ নিতুর ঘুম হয় নি, সারা রাত উল্টো পাল্টা স্বপ্ন দেখেছে, রেহান এক মুহুর্তেও কাছ থেকে সরে যায় নি৷ এখন একটু ঘুমিয়েছে। নিতু রেহানকে ডাকল না।
সকাল সকাল নিতু উঠে পড়ল। কাল চলে যাওয়ার কথা। এখানে এসে এই রুমের বাইরে যাওয়া হয় নি। রেহানও যায় নি। নিতু ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে ঢুকল। আজ একটু বাইরে যাবে৷
রেহানের ঘুম ভাঙল নিতুর বড় ভাইয়ার ফোনে। রেহান উঠে বসল৷ ভীষণ খারাপ একটা নিউজ, নিতুর বাবার শরীরটা ভালো নেই, ভালো নেই মানে ভীষণ খারাপ। ডাক্তার লাইফ সাপোর্ট দিতে চাচ্ছে।
হুট করেই গতরাতে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে৷
নিতু বের হওয়ার পরে রেহান বলল, নিতু আমাদের এক্ষণি বের হতে হবে। বাবার শরীরটা ভালো না।
নিতু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, আমার আব্বা? উনি কি বেঁচে আছেন?
চলবে
শানজানা আলম