কেন আমি ডাকি তারে -১৮
না মানে, তুহিনকে তুমি এত ভালোবাসো যে আমার এমন অদ্ভুত শর্তে বিয়ে করে একবছর থাকতে রাজী হয়ে গেলে।
সেই ছেলেটা যখন তোমার সাথে ফোনে খারাপ ভাবে কথা বলে আর তুমি কষ্ট পাও, তখন আমার রাগ হয়, এটাই বলেছি৷ -রেহান একটু খোলাসা করে বলল।
নিতু বলল, ওহ, সেটাই বলুন। আমার আর তুহিনের মধ্যে একটা গ্যাপ হয়ে যাচ্ছে, আমি এত চেষ্টা করেও ওকে পাচ্ছি না আর ও যখন ফোন করছে, আমি টেম্পার লুস করে ফেলছি!
রেহান বলল, নিতু, বিয়ে সারা জীবনের সিদ্ধান্ত। একটু ভেবে নিও, তুমি আসলেই ভালো থাকবে কি না৷
নিতু বলল, তুহিনকে বলেছি, ও নিজেকে না শুধরে নিলে৷ আমি ওকে বিয়ে করব না।
বাহ, সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছ!
হুম!
তাহলে কি করবে?
দেখা যাক, কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
আচ্ছা সে পরে দেখা যাবে, পায়ের ব্যাথা কমেছে, বাইরে যাবে?
না, হাঁটতে পারব না খুঁড়িয়ে৷ রুমে থাকি৷ আপনি ঘুরে আসুন।
চলো লনে বসি। দোলনায়?
আচ্ছা। কি ভাবছিলাম, আর কি হলো!রেহান আবারও লজ্জা পেয়ে বলল, সরি নিতু।
নিতু বলল, আপনি সরি বলছেন কেন, আপনার মত বয়ফ্রেন্ড, সায়রা কোনোভাবেই হারাতে চায় না।।তাই হয়তো রিএ্যাক্ট করে ফেলছে।
আমার মত! এটা বলে তুমি কি মিন করছ?
মানে আপনি খুব কেয়ারিং, সাপোর্টিং। বাই দ্য ওয়ে, আপনি আমাকে যেভাবে টেক কেয়ার করেন, সায়রা তো এটা জানলে আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাতো! গলা চেপে ধরতো!
রেহান বিব্রত হয়ে বলল, সেভাবে কী করলাম, তুমি তো কাছেই আসতে দাও নি৷
দুজন কথা বলতে বলতে মধ্যকার জমাট বাধা মেঘ হালকা হয়েছে৷ নিতুর হাত ধরে রেহান বিছানায় বসালো।চুলগুলো খোলা ছিলো, হাত দিয়ে কানের পাশের চুল সরিয়ে গাল ছুঁয়ে দিলো।
নিতু কোনো অচেনা আবেশে কোমল হয়ে উঠলো। রেহান আরেকটু কাছে এগিয়ে নিতুর খুব কাছাকাছি এসে ওকে চুমু খেতে উদ্যত হলো।
দরজায় কেউ কড়া নাড়ল। সম্মোহন কেটে গিয়ে ওরা দুজন সরে গেল।
নিতুকে দেখতে এসেছে রেহানের দুই বন্ধু আর তাদের ওয়াইফ।
ভাবী এখন কেমন আছেন?
নিতু হেসে ঘাড় নাড়ল।
রেহান ভাই তো আর বের হবেন না আজ!
রেহান হেসে বলল, না সরকারী ডিউটি ফেলে কিভাবে বের হই।
নিতু বলল, কোনো ডিউটি নেই, বের হয়ে পড়ুন। আমি রুমেই আছি।
না একদম না।আমি বের হলে তোমাকে নিয়েই বের হবো।
কিছুক্ষণ থেকে ওরা বের হয়ে পড়ল। রেহান দরজা বন্ধ করে নিতুকে ডাকল, নিতু, এসো এদিকে।
নিতু বসে ছিল। নামতে গিয়ে মনে হয় পায়ে টান লাগল। রেহান এগিয়ে এসে ধরে ফেলল নিতুকে।
বুঝলে, আসেপাশের সবাই বেরসিক, মাত্র একটু কাছে আসছিলাম- বলে রেহান হাসল।
নিতু রেহানকে ধরে বলল, আপনি পারেনও!
রেহান অপেক্ষা না করে নিতুর ঠোঁটে আলতো করে চুমু খেলো। নিতুর ভালো লাগছিল, ও তাই সাড়া দিলো। অনুভূতি ছাড়া যে কাছে আসা যায়, সেখানে ভালোলাগাও তৈরি হয়, এটা নিতু জানত না৷ অথবা এটাই অনুভূতি, সেটাও নিতু জানে না। অপরিচিত অনুভূতি কিভাবে সারাজীবন একা একা বয়ে নিয়ে যাবে, সেটাও নিতু জানে না।
চলবে
শানজানা আলম