কেন আমি ডাকি তারে-৬
ফেরার পর থেকে রেহান রুমে ঢোকেনি। নিতু রুম থেকে বের হলো না। দুপুরের দিকে রুমে ঢুকতে হবে, কারন ফ্রেশ হওয়া প্রয়োজন। রেহান দ্বিধা নিয়ে রুমে ঢুকল। ঢুকে দেখে নিতু ঘুমাচ্ছে। এই অবেলায় ঘুম! রেহান কাছে যাবে ভেবেও গেল না। আলমারি থেকে পোশাক নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলো৷ নিতুর ফোন চার্জে৷
রেহান কাছে গিয়ে ডাকল, নিতু!
নিতু উত্তর দিলো না।
রেহান কিছু একটা মনে করে ওর কপালে হাত দিয়ে দেখল, অনেক গরম, জ্বর এসেছে।
সায়রা ফোন করেছে কয়েকবার এখনো করছে৷ রেহান ফোন কেটে দিলো।
এ্যাই নিতু, প্যারাসিটামল খেয়েছ?
নিতু বলল, না।
রেহান বলল, ওঠো, লাঞ্চ করে ওষুধটা খাও।
নিতু উঠে বসার চেষ্টা করতে গেলে রেহান ওকে ধরে বসিয়ে দিলো।
নিতু বলল, আমি কিছু খাব না।
রেহান বলল, ওষুধটা খেতে কিছু খাওয়া দরকার। জ্বর কেন এলো, জার্নিতে কষ্ট হয়েছে? আগে আগে পেছনে ঢুকে বসলে!
নিতু বলল, না কষ্ট হয় নি।
আমি খাবার নিয়ে আসছি।
না ঠিক আছে আমি যাচ্ছি।
না, যেতে হবে না।
বসো।
রেহান কিচেনে গিয়ে প্লেটে করে খাবার নিয়ে এলো।
একটু খাওয়ার চেষ্টা করো।
নিতু খেতে চেষ্টা করল কিন্তু কাজ হলো না। হরবর করে সবটা বমি করে ফেলল। রেহান ওকে ধরে ফেলল।
ঠিক আছে, ডোন্ট ওরি, আমি ক্লিন করে নিব। চলো।
রেহান একটু চিন্তিত বোধ করছে, এমন হচ্ছে কেন, কাল রাতের কোনো সাইড ইফেক্ট না তো! সায়রার তো কোনো সমস্যা হয় নি! বরং খুব এক্টিভ ছিল। নিতুর তো ইচ্ছা ছিল না। তাই কি! জিজ্ঞেস করবে না থাক, দরকার নেই!
রেহান নিতুকে চোখে মুখে পানি দিয়ে সোফায় শুইয়ে দিলো৷ বেড ক্লিন করে নিতুকে নিয়ে এলো।
ঘুমাও একটু।
ওষুধ খাইয়ে বলল।
নিতু জিজ্ঞেস করল আমার টেক্সট এসেছিল?
হ্যা, তুহিন তোমাকে অফিস টাইমে কল করতে নিষেধ করেছে। এখন কথা বলবে?
না থাক।
আমি একটু বাইরে যাব। মাকে বলে যাব, তোমার পাশে থাকবে।
সমস্যা নেই। শুনুন, একটা এমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ নিয়ে আসবেন।
রেহান মাথা নিচু করে বলল, আচ্ছা।
তারপর বলল, আই এ্যাম সরি নিতু। ট্রাস্ট মি৷ আমি এত খারাপ না যে তোমার দিকে খারাপ নজরে তাকাব৷ কালকের বিষয়টা আমার হাতে ছিল না।
নিতু অন্যদিকে তাকিয়ে বলল, বুঝতে পেরেছি।
রেহান বলল, বিষয়টা সিক্রেট রেখো। তুহিনকে বলার দরকার নেই।
নিতু বলল, আপনিও আপনার গার্ল ফ্রেন্ডকে জানিয়েন না।
না। ঠিক আছে৷ আমি নিয়ে আসব।
রেহান বাইরে গেল ঠিকই৷ কিন্তু সায়রার সাথে দেখা করতে গেল না। একটা কাজ ছিল, শেষ করে নিতুর জন্য প্রয়োজনীয় মেডিসিন আর কিছু ফল নিয়ে বাসায় চলে এলো।
রেহানকে দেখে ওর মা বোনেরা রুম থেকে বের হয়ে গেল। এতক্ষণ নিতুর পাশে সবাই ছিল৷
আপনি এত তাড়াতাড়ি?
জ্বর কমেছে?
হুম!
এমনি ফিরলাম, ঘুম পাচ্ছে। তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তে হবে। তুমিও আজ রাত জেগো না।
নিতু কিছু বলল না৷
গভীর রাতে ঘুম ভেঙে রেহান দেখল নিতু পাশে নেই!
উঠে বসে দেখে নিতু সোফায় বসে তুহিনের সাথে কথা বলছে। কাঁদছে বোধহয়।
রেহানের খুব বিরক্ত লাগল, অসুস্থ মেয়েটা, এটা কথা বলার সময় হলো!
রেহান লাইট জ্বালতেই নিতু পেছন ফিরল।
রেহান বিরক্ত স্বরে বলল, নিতু, এখন ফোন রাখো। এসে শুয়ে পড়ো, এত রাত জেগো না। তোমার শরীরটা ভালো না। কথা পরেও বলতে পারবে।
নিতু বলল, আসছি।
চলবে
শানজানা আলম