কেন আমি ডাকি তারে- পর্ব ৪

0
807

কেন আমি ডাকি তারে -৪
-রেহান, আনু মামা তোকে আর নিতুকে দাওয়াত করেছে। শুক্রবারে।

ব্রেকফাস্ট টেবিলে মা বললেন।

নিতু একটু টেনশনে পড়ল, এইখানেই ভালো আছে৷ আবার কোথাও যাওয়া লাগবে কেন!

রেহানেরও অবশ্য ইচ্ছে করছে না। বিয়েটাই তো থাকবে না, সব জায়গায় নিতুকে নিয়ে গেলে পরে সায়রাকে নিয়ে যাওয়া ঝামেলা হবে।

রেহান বলল, আমার তো কাজ আছে।

মা বললেন, থাকুক কাজ, আমরাও যাব। সবাই একসাথে গেলে ভালো লাগবে।

আনু মামা থাকে গাজীপুরের ভেতরের দিকে একটা গ্রামে। সেখানে রাস্তাঘাটের ভাংচুর অবস্থা। ওনার খুব বাগান করার শখ, তাই অনেক জমি কিনে সেখানে বাগান করেছেন। ছোট্ট একটা বাড়ি করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু নির্মান সামগ্রীর এত দাম, দুটো রুম কোনো মতে হয়েছে। না হলে ওখানে গিয়ে থাকা যেত দু চার দিন।
নিতুকে অনিচ্ছা স্বত্তেও যেতে হবে। রেহানের মা জোর করছেন। রেহান অবশ্য কিছু বলল না।

বিয়েটা নিতুর অনিচ্ছায় হলেও কেনাকাটা কম হয়নি। নিতু সুন্দর একটা জামা পড়ল, হালকা নীল রঙের। রেহান নিতুকে দেখল তাকিয়ে। মেয়েটা ভীষণ সুন্দর। কেমন যেন মন খারাপ করা সুন্দর। সায়রা অবশ্য এরকম না৷ বারবার কেন সায়রার সাথে তুলনা চলে আসে, রেহান বুঝতে পারে না৷ এই নিতু নামের পুতুল পুতুল মেয়েটা কিন্তু বউ হিসেবে বেশ ভালো হবে, ওর বয়ফেন্ডের কপাল বেশ ভালো।

নিতুর অবশ্য গিয়ে খুব একটা খারাপ লাগল না৷ যাওয়ার পথে রেহান ড্রাইভারের পাশের সিটে বসেছিল। নিতু মাঝখানে। রেহান আড় চোখে নিতুকে দেখছিল। দেখতে ভালো লাগছে, তাই দেখেছে, এর মধ্যে কোনো কিন্তু নাই।
আলাদা বসায় নিতুর তেমন সমস্যা হয় নি। সবার সামনে অভিনয় করাটা কষ্টের।

ওখানে নেমে ভীষণ ভালো লাগল, ছায়া ঘেরা সুন্দর একটা জায়গায়৷ রেহানকে মা ডেকে বললেন, নিতুকে নিয়ে ঘুরতে। নিতুর অবশ্য রেহানের সাথে ঘুরতে ইচ্ছে করছিল না। নিতু পুকুর পাড়ে একজায়গায় বসল। রেহান একা একাই কিছুক্ষণ ঘুরল। তারপর মাছ ধরতে নেমে পড়ল।
নিতুর ইচ্ছে করছিল পুকুরে একটু নামতে কিন্তু সাহস হলো না। নতুন বউ, কেমন দেখায়, সেজন্য বললও না।
সারাদিন মোটামুটি আনন্দে কাটলেও বিপত্তি বাঁধল ফেরার সময়৷ একটা কাঠের পোল আছে, সেটা নাকি ভেঙে গেছে৷ রাতে মেরামত করে ফেলবে। তার আগে যাওয়া যাবে না৷ আনু মামার তো দুটো রুম মাত্র। কীভাবে এতজন মানুষ থাকবে৷ আনু মামা তাই নিতু আর রেহানের জন্য একটু দূরে এক বাড়িতে রাতে থাকার ব্যাবস্থা করে ফেললেন।
বাড়িতে কেউ থাকে না৷ কেয়ারটেকারকে কিছু বখশিশ দিয়ে ব্যবস্থা করতে হলো।

রাতে খাওয়ার পরে ওদের পৌঁছে দিয়ে সবাই চলে যাওয়ার পরে আবার দমকা হাওয়া আর বৃষ্টি শুরু হলো। নিতু ভীষণ অস্বস্তি বোধ করছে, এত অপরিচিত জায়গায় রেহানের সাথে একা! কেমন একটা বিষয় হলো! স্বাভাবিক বিয়ে হলে বিষয়টা কত আনন্দের হতে পারত।

তারপর নিতু, ভয় লাগছে? – রেহান তাচ্ছিল্য করেই জানতে চাইল।

আপনার ফোনে চার্জ আছে? – নিতু কথা পাল্টে জিজ্ঞেস করল
হুম, আছে।

মোবাইল ডাটা?

হুম।

আমি একটা টেক্সট করতে পারি? আমার ফোন সুইচড অফ হয়ে গেছে।

হ্যা, নাও।

নিতু হোয়াটসঅ্যাপে তুহিনকে টেক্সট করল বড়সড় একটা।
সেন্ড করে ফোন ফিরিয়ে দিলো।

রিপ্লাই করলে ফোনটা দিয়েন একটু।

ওকে।

রেহান বলল, শুয়ে পড়া দরকার। টায়ার্ড লাগছে।

হুম।
নিতু শুয়ে পড়ল পেছন ফিরে। রেহান বলল, আমি একটু আসছি বারান্দা থেকে।

নিতু কিছু বলল না।

রেহান সায়রাকে ফোন করে কথা বলতে চাইল কিছুক্ষণ কিন্তু সায়রা পার্টিতে আছে মনে হয়। তাড়াতাড়ি করেই রেখে দিলো।

রেহান একটা সিগারেট ধরিয়ে কিছুক্ষণ টানার চেষ্টা করল, আরাম লাগছ না। বাইরে অনেক মশা।

ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল তাই।

চলবে

শানজানা আলম

(কী হবে এরপরে🤔

যাই হোক অসুবিধা নাই, এটুক লিখলাম চারদিন বসে, বুঝতে পারছেন কি পরিমাণ অসুস্থ আমি!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here