#জৈষ্ঠ্যের_প্রেম (পর্ব-৫)
লেখনীতে– ইনশিয়াহ্ ইসলাম।
১০.
মৌসন্ধ্যা আর বর্ষা একরকম ডিজাইনের তবে ভিন্ন রঙের থ্রী পিস পরেছে। এপ্রিল আর চৈত্র লেহেঙ্গা পরেছে। আর যত মেয়ে কাজিন আছে তারা শাড়ি পরেছে। কমিউনিটি সেন্টারে বড়রা এবং একেবারে ছোট যারা তারা সবাই আগেই চলে গেছে। বাকি আছে মৌসন্ধ্যারা দুই তিন জন। তাদের তৈরি হতে দেরি হওয়াতে সকলের সাথে যেতে পারেনি। শ্রাবণকে বড় মামা বলেছিলেন ওদের সাথে করে নিয়ে যেতে কিন্তু শ্রাবণ মুকিতদের সাথে চলে গেছে। নিচ তলার হল রমে বর্ষা আর মৌসন্ধ্যা বসে আছে। চৈত্র গেছে ওয়াশরুমে আর জুনের সাথে তার আদরের এপ্রিল আরো আগেই চলে গেছে। ওদেরকে ছোট মামা কল করে বলেছেন অপেক্ষা করতে গাড়ি পাঠাচ্ছেন তিনি।বর্ষা নিজের মতো সেলফি তোলায় ব্যস্ত আর মৌসন্ধ্যা ফেসবুকে ঢু মারছে। তখনই উপর থেকে শরৎ নেমে এলো। সে যে এখনও বাড়িতেই আছে ওরা কেউ জানত না। শরৎকে এখনও কেউ খেয়াল করেনি। সে নিজে থেকেই বলল,
-‘কাকা এখনও গাড়ি পাঠায়নি বর্ষা!’
বর্ষা আচানক পুরুষ গলা শুনতে পেয়ে ভড়কে গেল, মৌসন্ধ্যার ও একই অবস্থা। তারা দুজন দেখল পাঞ্জাবীর বোতাম লাগাতে লাগাতে শরৎ নিচে নামছে। সে আসার সাথেই একটা দারুন সুগন্ধ ছড়িয়ে গেল। বর্ষা ভাইকে এক পলক দেখে বলল,
-‘না আসেনি এখনও। তবে আসবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে।’
-‘ওহ।’
শরৎ তাদের সামনের সোফায় বসে পাঞ্জাবীর পকেট থেকে হাতঘড়িটা বের করল। তারপর হাতে বাঁধতে থাকে। তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে একটু আগেই শাওয়ার নিয়েছে আর গায়ে কোনো মতে পাঞ্জাবী গলিয়ে পারফিউম স্প্রে করে নিচে নেমে এসেছে। বর্ষা বলল,
-‘তুমি এতক্ষণ এখানেই ছিলে! ভাবলাম চলে গিয়েছ সবার সাথে।’
-‘যেতাম, শরীরটা ভালো লাগছিল না। তাই তখন গেলাম না এখন একটু বেটার ফিল হচ্ছে। নয়তো বিয়েটা মিস দিয়েই দিতাম।’
-‘দিলেও বা আর কী! তুমি তো কারো বিয়েতে এমনিতেও যাও না।’
বর্ষা কথাটা খুব ভ’য়ে ভ’য়ে বলল। কারণ ক্ষ্যা’পা রেগে যেতে পারে। আর রা’গলেই তো সব শেষ! মান ই’জ্জ’ত আস্ত থাকবে কিনা সন্দেহ। বলা যায় না দুই তিনটা চটকনাও খেতে হতে পারে।
তবে বর্ষাকে অবাক করে দিয়ে শরৎ বলল,
-‘না রে! আপুর বিয়েটা মিস দিতে চাইনি। ওর বিয়েটাতে থাকার আগ্রহ রেখেছিলাম বেশি তাই দেখা গেল এখন ওর বিয়েতে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে আছি। একেবার উটকো ঝামেলা!’
-‘তোমার কী জ্বর এসেছে?’
-‘হ্যাঁ।’
-‘ঔষুধ খাওনি?’
-‘খেয়েছি।’
চৈত্র ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে হাত মুছতে নিলে খেয়াল করে একটা কালো রঙের গাড়ি গেইট দিয়ে ঢুকছে। একটু ভালো করে খেয়াল করতেই দেখে এক যুবক গাড়ি থেকে নামছে। তাকে দেখেই সে দ্রুত বেগে দৌঁড়ে নিচে নামতে নামতে চিৎকার করে বর্ষা আর মৌসন্ধ্যার উদ্দেশ্যে বলতে থাকে,
-‘এই মৌপু, বর্ষাপু, দ্যাখো কে আসছে!’
চৈত্রের চেঁচামেচি শুনে শরৎ চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে। মৌসন্ধ্যা উঠে বলল,
-‘কে এসেছে?’
-‘আষাঢ় ভাইয়া!’
বর্ষা শুনে লাফিয়ে উঠে বলল,
-‘কে! ভাইয়া?’
-‘হ্যাঁ!’
তখনিই বাসায় প্রবেশ করল আষাঢ়। আষাঢ়কে দেখে শরৎ হেসে তার দিকে এগিয়ে গেল। আষাঢ় ও ছোট ভাইকে দেখে হেসে জড়িয়ে ধরল। বর্ষা দৌঁড়ে গিয়ে ভাইয়ের বুকে জাপটে পড়ল। আষাঢ় ছোট বোনকে বলল,
-‘উফ! বুকের হাড় গুলো সব ভেঙে গেল রে বর্ষাকাল!’
মৌসন্ধ্যাও আষাঢ়কে দেখে অবাক হলো। ও কানাডা থেকে কখন এলো? চৈত্র আর মৌষন্ধ্যাকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আষাঢ় ভ্রু কুচকে বলল,
-‘ওই দুইটা কে!’
চৈত্র রা’গ করে বলল,
-‘ভাইয়া আমি! আমি চৈত্র, তুমি চিনো না?’
-‘তো তুই চৈত্রমাস হলে ওইখানে কী করিস? বড় ভাই আসছে এতদিন পর! তুই তাকে দেখেও দূরে দাঁড়িয়ে আছিস! কাছে এসে সালাম তো করা উচিত।’
চৈত্র হেসে দিল। আষাঢ়কে দেখে বর্ষা আর চৈত্র ভীষণ খুশি! আষাঢ় আর শ্রাবণ জমজ। আষাঢ় শ্রাবণের সাত মিনিটের বড়। জমজ হলেও চেহারায় মিল নেই তেমন একটা। বলা চলে দুজনেই ভিন্ন। তাদের কথা বলা, চলা ফেরা, হাসি, রা’গ করা সবই আলাদা। শ্রাবণের এই নিয়ে খুব ক’ষ্ট। তার ক’ষ্ট বাকি জমজ গুলোর মতো মিল তাদের কেন নেই? সমাজে জমজ হওয়ার এক অন্যরক মজা। মানুষ যখন দুজনকে গুলিয়ে ফেলে তখন ব্যাপারটা খুব উপভোগ্য হয়ে ওঠে। শ্রাবণ আর আষাঢ়কে দেখলে কেউ এটা বলেনা যে,
-‘তোমরা কী টুইন?’
তবে এটা বলবেই,
-‘তোমরা দুইজন ভাই!’
পুরোপুরি মিল না থাকলেও চেহারার একটু খানি মিলের জন্য সহজেই বোঝা যায় দুইজন ভাই। তবে জমজ যে সেটা বোঝা যায়না। এবং ওরা যখন নিজেদের জমজ বলে পরিচয় করায় অনেকে তা বিশ্বাসও করতে চায়না। তাই শ্রাবণ মাঝে মাঝেই আষাঢ়কে বলে,
-‘ভাই, তুই আমার থেকে সাত মিনিটের বড় না হয়ে সাতাশ মাসের বড় হইতি। তবুও তো মনটারে মানাতে পারতাম।’
মৌসন্ধ্যাকে দেখে আষাঢ় কিছক্ষণ তাকিয়েই থাকে। হয়তো ঠিক চিনে উঠতে পারছেনা। হঠাৎ সে বলে উঠল,
-‘তুই জৈষ্ঠ্য না?’
মৌসন্ধ্যার সুন্দর মুখটা কালো হয়ে গেল। এই জমজ দুইটার মধ্যে সে বহু অমিল লক্ষ্য করলেও এই মিলটা ঠিকই লক্ষ্য করেছে। তারা সবসময় তাকে জৈষ্ঠ্য বলে ডাকবে। এবং এমনভাবে ডাকবে যাতে ব্যাপারটা খুব হাস্যকর লাগে। আষাঢ় এগিয়ে এলো মৌসন্ধ্যার দিকে বলল,
-‘কীরে! দিন দিন এত বেশি মোটা হচ্ছিস কেন? খাওয়া দাওয়া কমাতে পারিস না!’
অপমানে মৌসন্ধ্যার কান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। আষাঢ় বলল,
-‘থাক চিন্তা করিস না। ব্র্যান্ডেড গ্রীন টি নিয়ে এসেছি এবার। খেলেই সব মেদ চর্বি গলা যাবে।’
মৌসন্ধ্যার এবার বেশ খা’রা’প লাগল। চৈত্র আর বর্ষা হেসে ওঠায় তার আরো বেশি খা’রা’প লাগে। সে আষাঢ়ের থেকে চোখ সরায়। মৌসন্ধ্যা একটু নাদুস নুদুস, খুব বেশিও না। কাজিন মহলে এটা নিয়ে মাঝে মাঝেই তাকে কথা শুনতে হয়। মৌসন্ধ্যা জানে তার এই একটু গুলুমুলু শরীরটার জন্য তাকে কতটা সুন্দর লাগে। লম্বা হওয়ায় তার এই ওজনে তাকে ভালোই মানিয়েছে।
মৌসন্ধ্যা হেঁটে চলে এলো বাহিরে। কড়া রোদ তার চোখে মুখে পড়ছে। আজকেও ভেবেছিল সাজবেনা কিন্তু জুন তাদের জন্য নিজের কসমেটিক্স গুলো রেখে গিয়েছিল। বর্ষা জোর করে সাজিয়ে দিয়েছে আর বলেছে,
-‘কাল যখন কোনো সাইড ইফেক্ট দেখা যায়নি, আজও দেখা যাবেনা। চিন্তা করিস না তো অযথা!’
মৌসন্ধ্যাকে বের হয়ে আসতে দেখে আষাঢ় বর্ষা, শরৎ আর চৈত্রকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-‘তোরা চল। আমি গাড়ি নিয়ে এসেছি। এমনিতেও দেরি হয়ে গেছে। ছোট কাকা দেখা গেল রে’গে বোম হয়ে গেছেন।’
শরৎ হেসে বলল,
-‘সে তো তিনি এমনিতেও হাইপার মানুষ।’
বর্ষা আর চৈত্র ছুটে গেল বাহিরে। তারা বেশ বুঝতে পেরেছে মৌসন্ধ্যা রা’গ করেছে। বাহিরে মৌসন্ধ্যাকে রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বর্ষা তার কাছে গিয়ে এক হাতে জড়িয়ে ধরে বলল,
-‘রা’গ করেছিস? ভাইয়া তো এমন মজা সবসময় করে। পাত্তা দিলে হয়! চল চল। ভাইয়ার গাড়িতেই যাব আমরা।’
মৌসন্ধ্যার ইচ্ছে হচ্ছিল বলতে যে তার যেতে ইচ্ছা করছেনা। কিন্তু বলতে পারবেনা। সামাজিকতার শেঁকড়ে আটকা পড়ে গেছে সে। মাঝে মাঝে তার ইচ্ছা করে এসব সামাজিকতা থেকে মুক্তি পেতে। চিরতরে!
১১.
কমিউনিটি সেন্টারে পৌঁছানোর পর মৌসন্ধ্যা বর্ষাকে ফেলেই আগে আগে ভেতরে চলে গেল। এখনও বরপক্ষ আসেনি। দুই এক মিনিটের মধ্যেই হয়তো এসে পড়বে। মৌসন্ধ্যার কেন যেন আষাঢ়ের কথা শোনার পর থেকেই নিজেকে হী’ন মনে হচ্ছে। আর এটা ভাবতেই সে কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে। সে নিজেকে বারবার বোঝাচ্ছে সে এতটাও মোটা নয়। ওজন কত হবে? ঊনষাট হয়তো। পাঁচ ফিট সাত ইঞ্চি উচ্চতায় এটা কোন দিক দিয়ে খা’রা’প?
মৌসন্ধ্যা তার মায়ের নম্বরে কল করে তাদের অবস্থান জেনে নিলো। তারপর সে গিয়ে মুরব্বি গোছের সকলের সাথে বসে রইল। যাওয়ার সময় শ্রাবণের সাথে দেখা হয়ে গেল। সে দ্রুত হেঁটে চলে এসেছিল তখন। সে মানে এই অ’স’ভ্য মামাতো ভাই গুলো থেকে যত দূরে থাকবে ততটাই ভালো থাকবে।
মা বহুবার ঠেলেও তাকে পাঠাতে পারল না বরের গেইট আটকানোর সেই আনন্দ মিছিলে। মা তাকে ‘ঘরকুনো ব্যাঙ’ বলতেও দ্বি’ধা করেননি। সে দেখল এখানেও বসে থাকা যাচ্ছেনা। তার কেন যেন ভীষণ কান্না পাচ্ছিল! সে দোতলায় উঠে আশেপাশে ঘুরতে থাকল। এর মধ্যে বর্ষা আর চৈত্র তাকে খুঁজে হয়রান। শ্রাবণকে মৌসন্ধ্যার কথা জিজ্ঞেস করতেই সে বলল যে ও ওর মায়ের কাছে। বর্ষা বলল,
-‘ও ওইখানে কী করছে! খাবে না? সবাই ডাকছে তো!’
-‘ফুপুরা মাত্র খেয়ে এলো। বোধ হয় ও ফুপুদের সাথেই খেয়েছে।’
-‘কি বলো! সত্যি?’
শ্রাবণ বিরক্ত হয়ে বলল,
-‘আমি মিথ্যা বলব কী কারণে!’
শ্রাবণ চলে গেল। আর বর্ষা দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগল যে মৌসন্ধ্যার এত রা’গ কীসে! আষাঢ় তো মজা করেই বলেছে। তারা নয়তো সেই মজার কথা শুনে হেসেছে। তাতে কী হয়েছে! মৌসন্ধ্যার এমনিতেও সবকিছুতে বেশি বেশি।
সে চলে গেল খাবার খাওয়ার জায়গায়। তারপর বাকি সবার সাথে খেতে বসল। মুকিত বলল,
-‘তোর সাথেরটা কই?’
বর্ষা বি’র’ক্ত হয়েই বলল,
-‘জানি না!’
শরৎ ও তাদের সাথে এসে বসল। তার সাথে আষাঢ় ছিল। আহরার সবাই খাচ্ছে কীনা ঠিকভাবে সেটা দেখাশোনা করছিল। তাদের সবাইকে দেখে এগিয়ে আসে। আষাঢ়ের সাথে টুকটাক কথাও বলে। তারপর ওয়েটারদের ডেকে দেয়। শ্রাবণ বলে,
-‘ভাই আপনি এত ক’ষ্ট করছেন কেন? আমরা ভাই হয়েও দেখেন খেতে বসে গেছি!’
-‘তো আমি কি জুনের ভাই না? আর তাছাড়া আমি কিছু করিনি। সাবাব, শরৎ আর গ্রীষ্ম মিলে এতক্ষণ দেখাশোনা করছিল। আমি মাত্র এই পাশে এলাম।’
-‘আপনি এখনও খান নাই?’
-‘খাবার তো চলে যাচ্ছেনা। আমি খাবো, এখন তোমরা খাও।’
চৈত্র বলল,
-‘হুম আপনি তো গ্রীষ্ম ভাইয়ের সাথে খাবেন আমরা জানি।’
আহরার হেসে দিল। তখনই আষাঢ় বলল,
-‘এই জৈষ্ঠ্য কোথায়?’
চৈত্র জবাব দিলো,
-‘আপু ফুপিদের সাথে খেয়েছে।’
-‘পেটুকটা আমাদের জন্য অপেক্ষা করবেনা! আগে আগে খাই খাই করা লাগে!’
শরৎ এর ভালো লাগল না কথাগুলো। সে বলল,
-‘ভাই! এভাবে বলার কি আছে? ও ওর মায়েদের সাথে খেয়েছে এখানে এত সমস্যা থাকার তো কথা নয়! পেটুক ফেটুক এসব বলবে না প্লিজ। শুনতে ভালো লাগছেনা।’
বর্ষা বিরক্তির দৃষ্টিতে তাকালো শরৎ এর দিকে। ক্ষ্যা’পা মৌসন্ধ্যার হয়ে কথা বলছে কেন? আষাঢ় বলল,
-‘আরে ব্যাটা! আমি তো ওর সাথে মজা করি।’
-‘সব মজা কিন্তু ভালো না ভাই। তুমি আমাদের বড়। তোমার তো এটা জানার কথা।’
আষাঢ় শরৎ এর উপর একটু রে’গে গেল। সে তবুও হেসে বলল,
-‘আচ্ছা যা। আর বলব না। তোরা খাওয়া শুরো কর।’
—————–
সবার খাওয়া শেষ হলেই গ্রীষ্ম আর আহরার আর দুই তিনজন খেতে বসল। গ্রীষ্ম নিজের প্লেটে ভাত বাড়তে নিচ্ছিল এমন সময় আহরার বলে উঠল,
-‘তোর ফ্যামিলিতে জৈষ্ঠ্য কে রে?’
গ্রীষ্ম চামচটা হাত থেকে ছাড়িয়ে আহরারের দিকে তাকালো। হঠাৎ মৌসন্ধ্যার কথা বলার কারণ কী আহরারের! সে বলল,
-‘মৌসন্ধ্যাকে আমরা জৈষ্ঠ্য বলি।’
-‘মৌসন্ধ্যা! তার দেখছি সব নামই ইউনিক।’
গ্রীষ্ম একটু হাসল। আহরার বলল,
-‘অবশ্য তোর গোষ্ঠীর সবার নামই অদ্ভুত।’
গ্রীষ্ম চোখ রাঙানি দিলো আহরারকে। আহরার হেসে বলল,
-‘আমি মজা করছি। অদ্ভুত হলেও মন্দ নয়।’
তারপর কিছুক্ষণ কি ভেবে বলল,
-‘আচ্ছা তোর কাজিনরা বলছিল ও নাকি ওর মায়ের সাথে আগে খাবার খেয়েছে। কিন্তু আমি আন্টিদের সাথে ওকে দেখিনি। ওরা জৈষ্ঠ্য বলাতে আমি তখন আসলে বুঝিনি ওরা কার কথা বলছে। তুই কী দেখেছিস ওকে খেতে বসতে?’
গ্রীষ্ম প্রথম থেকেই খাবার দাবার তদারকি করছিল। এর মধ্যে একবারও সে মৌসন্ধ্যাকে দেখেনি। ফুপিরা যখন খেতে বসেছিল তখনও দেখেনি। তবে কি মৌসন্ধ্যা এখনও খাবার খায়নি? সে উঠে পড়ল। আহরার বলল,
-‘কই যাচ্ছিস?’
-‘তুই খেতে থাক আমি আসছি।’
গ্রীষ্ম খুঁজতে থাকল মৌসন্ধ্যাকে। পথে এর সাথে ওর সাথে দেখা হওয়াতে আরো দেরি হয়ে যাচ্ছিল। নিচ তলায় না পেয়ে সে উপরে গেল। মেয়েটা আশেপাশে নেই কোথাও। সে একটু করিডোর বেয়ে সামনে যেতেই দেখল মৌসন্ধ্যাকে। একটা মহিলার সাথে বসে খোশ গল্পে ব্যস্ত। মহিলাটা জুনের খালাশ্বাশুড়ি। ছেলের জন্য মেয়ে খুঁজছেন। গ্রীষ্ম লক্ষ্য করেছে মহিলাটা এসেছে থেকেই এই মেয়ের সাথে ওই মেয়ের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে। গ্রীষ্ম জানে এমন কিছু মহিলা অন্যের বিয়ে খেতে গিয়ে নিজেদের কারো বিয়েও ঠিক করে ফেলে। গ্রীষ্ম দ্রুত কদম ফেলে সেদিকে এগিয়ে গেল, মহিলার সেই নজরে তার জৈষ্ঠ্যকে পড়তে দেওয়া যাবেনা।
#চলবে।
(দেরি করেছি কারণ আমি ব্যস্ত ছিলাম। আর একটু অসুস্থ্যও । যার কারণে বার বার লেখায় বিরতি নিয়েছি। ভুল ত্রুটি চোখে পড়লে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আমাকে জানাবেন। আমি রি-চেইক দেইনি।)