প্রেমের উষ্ণ ধোঁয়াতে পর্ব ২৪

0
1616

#প্রেমের_উষ্ণ_ধোঁয়াতে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব____২৪

হুট করে এনগেজমেন্ট এর দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার সুবাদে ঊষার পড়াশোনা লাটে ওঠার অভিপ্রায়। ব্যাপারটা এমন না যে দু-তিনদিনে কি আর পড়ার ক্ষতি হবে। কিন্তু পড়ার মাঝে নিজেকে সর্বদা ডুবিয়ে রাখা মেয়েটার কাছে কেবল একটা দিন পড়াতে ফাঁকি দিলেই কেমন রিক্ততা ঘিরে ধরে বুক পাঁজরে। মনের ঘরে উঁকি মারে অবহেলিত, বিস্বাদ প্রণয়। ওর হৃদয় হতে যেই প্রেমের উদগত হয়েছে সেটার কোনো রং নেই, তৃপ্ততা নেই, শুধুমাত্র অসম্পূর্ণ বিষাদ রয়েছে। অবাধ্য মনকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে পড়ার মাঝে নিবেশিত করা ছাড়া তার কাছে কোনো উপায়ন্তর রাখে নি নিয়তি। প্রত্যয়কে পাওয়া ওর জন্য মুশকিল কোনো চ্যাপ্টার না,বরঞ্চ ভালোবাসা পাওয়া দুর্বোধ্য। নিঃশক্তি দেহটা টেনে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল ও। তাৎক্ষণিক ভোঁতা যন্ত্রণা সৃষ্ট হলো মস্তিষ্কে,নেত্রযুগলে জ্বলন। তোয়াক্কা করল না ও। ঘুমের বিঘ্ন ঘটলেই এমন অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। বহুকাল পর জায়গা বদলেছে ঘুমানোর। ফলস্বরূপ তন্দ্রা কাছে ভিড়তে নারাজ ছিল। এপাশ-ওপাশ করে অবশেষে ঘুমের দয়া হলো তার ওপর। এলো রজনীর শেষভাগে। এখন নিজেকে নির্জীব থেকে সজীব করে তোলার একটাই মেডিসিন যাকে বলে ‘চা। ‘ ঊষার প্রতিটা সকাল-দিনান্তের ভালো সঙ্গী।

কোঁকড়ানো কেশগুচ্ছ হাত খোঁপা করতে করতে সর্বপ্রথম বেলকনিতে আসল ঊষা। চক্ষু মুদে নাসারন্ধ্র পথে বুক ফুলিয়ে ভেতরে টেনে নিল শান্তির এক প্রশ্বাস। হেমন্তের রাজ্য শাসনামলে স্মরণিকা নিবাসের ফুটন্ত গন্ধরাজ, কামিনীর মাতাল ঘ্রাণ ধাক্কা খেল নাকে মুহূর্তেই। মোটা ঠোঁটজোড়া অমোঘ প্রশান্তিতে প্রশস্ত হয়ে গেল ঊষার। ধীরে গতিতে চোখ দুটি মেলে তাকাল সুদূরে। এ বাড়ির বারান্দাগুলো অসম্ভব সুন্দর। চারপাশ উন্মুক্ত। আলতো আলতো কুয়াশারা প্রকৃতিকে আড়াল করতে ব্যস্ত। কিন্তু হায়! এ যে ব্যর্থ প্রচেষ্টা। সবে শীতের নিমন্ত্রণ নিয়ে প্রকৃতিতে ক্ষণিকের অতিথি হয়ে এসেছে, স্থায়িত্ব পেতে এখনও অনেক অপেক্ষার প্রহর পার করতে হবে। কখনো কখনো ঊষার মন বলে প্রকৃতি এক প্রহেলিকা। উগ্র,শান্ত,রহস্য সব বৈশিষ্ট্য বহন করে। অকস্মাৎ নজরে আসল বাড়ির বাগানের মধ্যের দোলনাটার দিক। এটা নিয়ে ওর একটা সুন্দর স্মৃতি আছে,বলতে গেলে বড্ড ভালোবাসাময় স্মৃতিটুকু।

নিরু শাড়িটা মাত্র পরে সাড়ল। এর মধ্যে ছোট ছোট পায়ে দৌড়ে ঘরে ঢুকল ঊষা। সরল দৃষ্টিতে তাকাল ফুপির সৌন্দর্যের দিক। খাড়া নাক,চোখের ঘন পাপড়ি,লম্বা কোঁকড়া চুল,পাতলা দু অধর, একেবারে ফিটফিটে ফর্সা নিরুর দিক নারী-পুরুষ যে কেউ একটা পলক তাকাতে বাধ্য হয়। শাড়িতে তাকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় লাগে। সদ্য অল্প স্বল্প বুঝে উঠা ঊষাও তার ফুপির সৌন্দর্যের মায়ায় বিমোহিত। নিরু কাচের দু মুঠো চুড়ি পরে বিছানায় বসল। মায়াময় কণ্ঠে জানতে চাইল,

” কী দরকার আমার আম্মাটার? অমন দৌড়ে এলেন কেন আম্মা? ”

ঊষা দ্রুত পায়ে ফুপির কাছে গিয়ে দাঁড়াল। প্রশংসা করল,
” তুমি সুন্দর ফুপি। ”

” কতবার বলবেন আম্মা? আপনি কি জানেন? আপনি আমার থেকেও বেশি সুন্দর। ”

ঊষা লাজুক ভঙ্গিতে হাসল। চিবুক গিয়ে স্পর্শ করল গলার নিকটস্থে। আবদার করল সংকোচ নিয়ে,

” তোমার মতো করে আমার চুলগুলো বেঁধে দাও না ফুপি। ”

নিরু হতাশ নয়নে ওর চুল দেখল। ঘাড় ছুঁয়েছে সবে। এটুকুন চুল দিয়ে দুই বিনুনি তো হবে না। সে কিছু একটা ভেবে একটা বক্স থেকে দু’টো শুভ্র ফিতা নিয়ে এলো। জিজ্ঞেস করল,

” আমার মতোই কেন বানতে হবে? ”

বাচ্চা কণ্ঠটা অকপটে উত্তর দেয়,

” প্রত্যয় ভাইয়া বলেছে তোমার চুল বাঁধা নাকি ভাইয়ার খুব পছন্দ। তোমার মতো বাঁধলে আমাকেও পছন্দ করবে ভাইয়া। ”

নিরু চুলগুলো নিয়ে দু দিকে দুটি ঝুটি বেঁধে দিল। ক্ষীণ হাসি ঠোঁটের কোল জুড়ে। নির্নিমেষ চাহনি নিবদ্ধ ঊষার মুখখানায়।

” তোমার প্রত্যয় ভাইয়া তোমাকে অপছন্দ করে?”
ঊষা বামে,ডানে মাথা নাড়াল সরব করে। বুঝালো করে না। নিরু ওর চিবুকে নরম হাতটা রেখে বলে,

” আমরা সবাই তোমারে অনেক ভালোবাসি আম্মা। আমাদের ঘরের একটা মাত্র প্রদীপ তুমি। প্রদীপের অনেক কদর করতে হয়। কারণ অন্ধকার কেউই ভালা পায় না। ”

ফুপির কথার অর্থ ঠিকঠাক না বুঝলেও ঊষার ভিতর আনন্দে টগবগ করতে লাগল। বাগানে দোলনা বেঁধেছে বাড়ির এক কাজের লোক। গতকাল ঊষা দোলনা চড়ার জন্য কেঁদেকেটে হুলুস্থুল কান্ড ঘটিয়েছিল। এমনকি রাতে ঘুমের মাঝেও দোলনার জন্য কেঁদে কেঁদে উঠছিল মেয়েটা। ফলপ্রসূ সকাল সকাল মোশতাক সাহেব একমাত্র মেয়ের কান্না আর সইতে না পেরে শহর থেকে দোলনা আনালেন। ফুপির ঘর থেকে বেরিয়ে টালমাটাল পদলি ফেলে বাহিরে আসতেই দেখে চওড়া,দীর্ঘ দোলনার একপাশ প্রত্যয়ের দখলে। হাতে খাতা নিয়ে ড্রইং করতে নিমজ্জিত সে।

” ভাইয়া কী করছো?”
চিকন সুরে উচ্চারিত ধ্বনির বদলে কোনো উত্তর এলো না। অগত্যা ঊষা পুনর্বার জিজ্ঞেস করল। তবুও এক দশা। তাই প্রত্যয়ের গেঞ্জি ধরে টান মারল ও। নিমেষে গর্জে ওঠে প্রত্যয়,

” বিরক্ত করছিস কেন?”
” কী আঁকছ তুমি?”
দোলনার একপাশের খালি জায়গা টায় বসে উঁকি দিল খাতায়। তৎক্ষনাৎ মুখ হা করে চমকানোর ভঙ্গিতে বলে উঠল,
” এগুলো তো জামাই, বউ ভাইয়া। তুমি জামাই বউ কেন এঁকেছ? ছি! পঁচা কাজ করেছ তুমি। ”

ভ্রুঁ কুঁচকে তাকাল প্রত্যয়। ঊষা তার ছোট ছোট হাতগুলো মুখে দিয়ে রেখেছে, ভাব এমন যেন লজ্জায় জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যয় খাতাতে তার আঁকা অপরিপক্ক ছবির লাল বউটা দেখিয়ে বলে,

” এটা তুই। আর পাশেরটা তোর জামাই। ”
” আমার জামাই? “– অবাক চোখে চেয়ে অনতিবিলম্বে প্রশ্নটা ছুঁড়ে মা-রল ঊষা।
সে তাল মিলিয়ে বলল,” হু। ”
” আমার জামাইয়ের নাম কী ভাইয়া?”
” কী নাম, জানিস না?”
ঊষা ভাবুকতার ভঙ্গিমা ধরে বলে,” না। ”
” প্রত্যয় এহসান তোর জামাইর নাম। ”
” কী বলো? তুমি আমার জামাই? ”
” হ্যাঁ। পুতুল পুতুল খেলতে গেলে তুই যে সবার কাছে বলিস ভাইয়া আমার জামাই,তাহলে এখন আমি তোর জামাই না কেন? তুই সবসময় আমাকে জামাই বলবি ঠিক আছে,পুষি?”

ঊষা ফ্যাসাদে পড়ে গেল। সে খেলায় অন্য কাউকে জামাই বানাতে লজ্জা পায়। সবাই মিছে মিছে জামাই বানায়। কার টা বেশি সুন্দর এ নিয়ে ঝগড়া করে। সবাই জানে ওর প্রত্যয় ভাই বেশি সুন্দর, তাই তো তাকে জামাই বানায় ও। কিন্তু মা বলেছে এসব পঁচা খেলা যেন আর না খেলে,ওড়না দিয়ে শাড়িও যেন না পরে। প্রত্যয় শুনলে ব-কবে ওকে। বকল না!উল্টো ওকে বলছে জামাই বলতে সারাজীবন। ভাইয়া ক্ষেপে যায় নি তো! ভয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে বলল,” আচ্ছা। ”

সেই কিন্ডারগার্টেনে পড়ুয়া ঊষা হতে সময়ের সাথে সাথে দৃঢ় আশা নিয়ে আজ মেডিক্যাল পড়ুয়া ঊষা হলো সে। বদলে গেল প্রত্যয়ের কথা,পরিবর্তন হলো পরিস্থিতি, চাওয়া,আকাঙ্ক্ষা, মানুষ, মুখ। অথচ গ্রাম ছেড়ে শহুরে জীবনে অভ্যস্ত হয়ে,দূরত্ব মানিয়ে নিয়েও বুকে বউ হবার ইচ্ছেটা ধারণ করে রেখেছিল। স্বপ্ন, আশা এসবের দুঃসাহস সে করেনি,তাকে দিয়ে করানো হয়েছিল সেই অবুঝ বয়সে। তাহলে আশা দেওয়া মানুষটার মনের হাল কেন পরিবর্তনের খাতায় নাম লিখাল? নিরু ফুপির কথাও খুব মনে পড়ছে ওর। গ্রামের সবাই বলে সে তার নিরু ফুপির ন্যায় কোঁকড়া চুল পেয়েছে। অক্ষি কাচে ভাসছে বারংবার তার চলে যাওয়ার মুহূর্তটুকু। কি বি**ভৎস ছিল সেই সময়খানি! শেষবেলা ফুপির চেহারাটা দেখে মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছে ও। ভয়ের চোটে রক্ত হিম হয়ে এসেছিল। দিন কতক আওড়াল , ” ফুপির মুখ থেকে ফেনা বের হয়,ফেনা বের হয়। ” ফুপি কেন চলে গেল,কী হয়েছিল ও জানেনা। মস্তিষ্ক স্রেফ জানান দেয়- ফুপি বুকে অসম য**ন্ত্রণা নিয়ে বিদায় দিয়েছে সবাইকে।

নিশাতের জ্বরের মাত্রা কমে এসেছে দুদিন হলো। আপাতত চনমনে ভাবে স্কুলের জন্য তৈরি হয়ে শিমুলের জন্য রাস্তায় দাঁড়াল। আজ আর ওই বাড়ির মুখী হবে না। শিমুল কাজের লোককে দিয়ে খবর পাঠাল সে যাবে না স্কুলে। ভিতরে ভিতরে ঢের অভিমান হলো নিশাতের। ও জ্বরে বিছানায় পড়েছিল এই মেয়ে খবর নেয় নি একটাবার। প্রহর ভাইকে ও পছন্দ করে জানা সত্ত্বেও দিব্যি মজা করছে ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে। ওকে এখন চিনছেই না। হাপুস নয়নে হাঁটতে লাগল স্কুলের উদ্দেশ্যে। আগামীকাল প্রহরের এনগেজমেন্ট। ও যদি পারত তনুজাকে কে-টে মরিচ লাগিয়ে দিতে। কিন্তু প্রহর এতে ওকে আস্ত রাখবে না। কী করলে ও ওর প্রহর ভাইকে পাবে? ভালোবাসা প্রকাশ করার মতোন প্রকান্ড ভয়া**বহ কাজটা তো ওর দ্বারা অসম্ভব। রিজেক্ট শব্দটা সে মানতে পারবে না। বলেই বা কী হবে! প্রহর ওকে ভালোবাসলে তনুজাকে বিয়ে করার জন্য রাজি হত না।
পেছনে গাড়ির হর্ণের তীব্র আওয়াজে বুকটা ধ্বক করে উঠল। লাফিয়ে সরে গেল নিমিষেই। হৃদপিন্ডের ধুকপুকানির তাল বেড়ে গেল। পশ্চাতে চাইতেই একটা হাত ইশারায় ডাকল কাছে। যাবে কি যাবে না ভাবনায় পড়ল মন। দ্বিধাবোধ নিয়ে অগ্রসর হতেই একটা লোক মুখ বাড়িয়ে মধুর গলায় জিজ্ঞেস করল,

” স্মরণিকা নিবাসটা এদিকে পুচকি?”

নিশাত হতবাক। বাকশক্তি হারিয়ে ফেলল অল্প সময়ের জন্য। বিস্ময়কর চাহনি নিক্ষেপ করল। কবি কবি ভাব নিয়ে থাকা ছেলেটা প্রশ্ন করল ফের,

” হেই সুন্দরী পুচকি, প্লিজ আন্সার মি।”

আরও একদফা থতমত খেল সে এহেন কথায়। তর্জনী তুলে সে ইশারা করল স্মরণিকা নিবাসে পৌঁছাবার রাস্তা বরাবর। ছেলেটা গাড়িটা স্টার্ট দিয়ে থমকে গেল। ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে বলল,

” তোমার গায়ের রং টা খুব নজরে লেগে গেল সুন্দরী পুচকি। এতে আমার দো–ষ নেই, দো**ষ আমার চোখের। তবে প্রথম দফায় মন কাছে টানার ক্ষমতা রাখো তুমি। থ্যাংকস দেবো না,কারণ বার বার দেখা হবে এখন থেকে আমাদের।”

এমন অদ্ভুত, অস***ভ্য ইঙ্গিতে কথা বলবার মানুষ নিশাত প্রথমবার দেখে নি। ওর জীবনে আরো একটা অ**সভ্য লোক,ঘাড়ত্যাড়া লোক দেখেছে। ভিন্ন কিছু হলো পরিচিত,অপরিচিত শব্দগুলো। ওর জীবনের অস–ভ্য লোকটা ওর পরিচিত এবং বক্ষস্পন্দনে আধিপত্য বিস্তার করা লোক। আর বর্তমানের লোকটা অত্যধিক অপরিচিত। তার ক্ষুদ্র হৃদয়ের স্পন্দন তড়তড় করে বাড়িয়ে গেল বাজে বাজে কথা বলে।

তনুজাদের বাড়ির সবাই হাজির শিমুলদের বাড়িতে। আলতা,কাজের লোক সবাই কাজে ব্যস্ত। ঊষা চাচির হাতে হাতে কাজ করে দিতে লাগলে আলতা অনুরোধ করলেন,

” মা,দারোয়ানকে চায়ের পাতা আনতে বলেছিলাম। আনল কি-না দেখবি একটু?”

” যাচ্ছি কাকিমা। ”

বাহিরে এসেই মুখোমুখি হলো বিরক্তিকর একটা মানুষের। যাকে দেখলে তার সমস্ত অঙ্গে অঙ্গে অজস্র বোলতার হুল ফোঁটানোর যন্ত্র–ণা আরম্ভ হয়। চোখের গহ্বর হতে আগুনের হলকা বের হয় যেন। সমীরণ ওর মুখে জোরে একটা তপ্ততা মিশ্রিত ফুঁ দিল। ঠোঁটের কার্নিশে মৃদু হাসি ঝুলানো তার।চাউনি অটল। কথা বলল সে,

” আমার শুরুর অধ্যায়ের সমাপ্তি কি তুমি? যেখানে সেখানে কেন তোমাকেই দেখতে পাই? এটা কি বিশেষ কিছুর সাইন?”

ঊষার নেত্রদ্বয় দ্বিগুণ তেজে জ্বলে উঠল। কণ্ঠে নির্ভয় ভাব,

” আমার হাতের থা**প্পড় কি আপনার এত প্রিয়? নারী লোভী লোক একটা!”

সমীরণ বেহায়া ভাব ধারণ করল। হাসল,স্মিতহাসি। চুলগুলো ব্যাকব্রাশ করে নিপুণভাবে ঊষার চোখের গভীরত্ব মাপতে চাইল সে। অপার ব্যর্থতা নিয়ে বলল,

” “শুনো ললনা, মনটা আমার খুঁজে পাচ্ছি না
হারিয়ে ফেলেছি তোমার ওই কৃষ্ণ চোখের মোহনায়
তুমি আমার হও,আমি আর দ্বিমুখী হব না। ”

“এক মন কতবার হারায়?”

” লক্ষ লক্ষ বার হারায়,হারাবে। থামবে না হারানো,চলতে থাকবে সন্ধান। তবে! যেদিন মিলবে পারমানেন্ট বাসস্থান, ভালোবাসব আমৃত্যু, হব আমি বিষা-ক্ত প্রেমিকের লিডার। ”

ঊষা পারছে না এই লোককে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। তনুজার ভাই বলে নিজেকে দমিয়ে রেখেছে ও। বিড়বিড় করল,

” আপনার ভাগ্য ভালো সমীরণ দ্যা নারীলোভী, আমি পায়ে জুতো পরে বের হই নি। ”
________________________________

প্রহরের পায়ে ব্যান্ডেজ দেখে এসেই তনুজা ছটফট করতে লাগল। আলতার পিছু পিছু ঘুরছে প্রহরের কী কী লাগবে, না লাগবে জানতে। বিরক্ত হয়ে এক পর্যায়ে আলতা মুখ খুললেন,

” শক্তপোক্ত, ত্যাড়া মানুষটা পায়ে কেমনে ব্যথা পেল সেটা জেনে আসো আগে। ”

#চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here