প্রেম পিয়াসী পর্ব ৩৭

0
466

#প্রেম_পিয়াসী ❤️
#লেখিকা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
#পর্ব______৩৭.

ইলহামের শারিরীক কন্ডিশন অনুযায়ী ডক্টররা প্রেসক্রাইব করে দিলেন, ইলহামের ডেলিভারি হতে হয়তো বেশি সময় লাগবেনা। বেশি হলে দেড় মাস। এরকম পেসেন্টদের জন্য ডেলিভারির সময়টা যত বেশি হয় ততই অবস্থা ক্রি/টিকাল হতে থাকে। তাই কোনো রকম রি//স্ক না বাড়ানোটাই শ্রেয়।

এদিকে রাদ ভেবে দিশেহারা ইলহামের এমন অবস্থায় সে ইলহামকে সঙ্গ দিবে নাকি নিজের কাজকে। অবশ্যই ইলহামকে। কিন্তু ওদিকের কাজটাও যে সমান গুরুত্বপূর্ণ। ইলহামের বাবা এবং সৎমাকে অনেক কায়দা করে দেশে এনেছে রাদ। প্রায় ৩বছর যাবত তারা ইংল্যান্ডে সেটেল্ড। হয়তো দেশে আসার তেমন কোনো প্রয়োজনও পড়েনা তাদের। এমতাবস্থায়, রাদ তাদের বেশিদিন এখানে আঁটকে রাখতে পারবেনা। তারা এখনই পালাই পালাই শুরু করে দিয়েছে। বড়জোর আর পনেরো দিন তারা থাকবেন এখানে। এরমধ্যেই যা করার করতে হবে। কিন্তু কিভাবে?

তার এতো এতো চিন্তার একমাত্র সমাধান হয়ে হাজির হলো অন্তু। হ্যাঁ, রাদ অন্তুকেই এই মুহুর্তে নিজের বাহক করেছে। অন্যথায় তার একুলও যাবে আবার ওকুলও। অর্থাৎ না পারবে ইলহামকে সামলাতে আর না পারবে ইলহামের মায়ের মৃ/ত্যু/র রহস্য উদঘাটন করতে।

—-” তুই এতো টেনশন কেন নিচ্ছিস বলবি একটু? আমি আছি তো নাকি! তাছাড়া, বেশি প্রবলেম হলে আমি প্রণয়কে সঙ্গে করে নিয়ে যাবো। আমরা দু’জন মিলে ঠিক কোনো না কোনো ক্লু জোগাড় করবোই।”

—-” কথা সেটা নয় অন্তু। কথা হলো, লাবনী খানকে নিয়ে। উনাকে তুই এখনও বুঝে উঠতে পারিসনি। উনি কিন্তু ভীষণ গভীর জলের মাছ। আমি যদি ভুল না করি, তবে কুহেলিকা ম্যামের মৃ//ত্যু//র পেছনে উনারই হাত আছে। ক্যান ইউ জাস্ট ইমাজিন, ঐ সময়ে কতটা নিখুঁত পরিকল্পনায় একটা মানুষকে সরিয়ে ফেলেছে ওরা। আর সে কোনো আম লোক নয়। একজন নামকরা সঙ্গীত শিল্পী!”

—-“ভাই আমারও এটাই মনে হচ্ছে। কোনো না কোনো ভাবে তারা দু’জনেই যুক্ত এসবের পেছনে। জানিস তো, সেদিন যখন আমি মিস্টার খানের সামনে ইলহামের নামটা তুললাম, উনি কেমন অদ্ভুত রিয়াক্ট করছিলেন। মনে হচ্ছিলো কোনো রহস্য ফাঁস করে দিয়েছি আমি! যেন, উনার কোনো কালো অতীত উনার মনে পড়েছে..”

—-” রসহ্য ফাঁস তো বটেই! এবার যে আরও কত রহস্য ফাঁস হবে রেজা সাহেব, ইউ কান্ট ইমাজিন!”

বলতে বলতে ডেভিল হাসলো রাদ। অন্তুও বাঁকা হাসলো। এবার দুই ভাই মিলেই কীর্তি ফাঁস করবে বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী রেজা খানের।

___________

তিনদিন আগে রেজা সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে তার অফিসে গেলেও আজ অন্তুর ডাক পড়েছে রেজা সাহেবের নিজ বাড়িতে। বাড়িটা যে সে বাড়ি নয়। একরকম প্রাসাদ বলা যায়। বাইরেটা, ভেতরটা কোনো দিকেই বাদ নেই। অসংখ্য সিকিউরিটি গার্ডদের মধ্যে ছোট্ট একটা প্রাসাদ। আর এই প্রাসাদের একমাত্র উত্তরাধিকারী হলো ইলহাম। কিন্তু সে এসব অধিকার থেকে চিরকালই বঞ্চিত। বেচারি! কথাটা ভাবতেই বুক চিঁড়ে তপ্ত দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো অন্তুর। ওকে অন্যমনস্ক হয়ে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখে কিছুদূর এগিয়ে গিয়েও আবার ফিরে এলো প্রণয়। প্রণয়কে সঙ্গে নিয়ে এসেছে অন্তু। আর এখন প্রণয়ও সবটা জানে। প্রণয় ফিরে এসে অন্তুর কাঁধে হালকা করে চাপড় দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

—-” দাঁড়িয়ে পড়লি কেন? ভেতরে যাবি না!”

অন্তুর ঘোর কাটে। প্রণয়ের দিকে একবার দৃষ্টিপাত করে একটা দীর্ঘশ্বাস আওড়ে বলে,

—-” ভাবছি মানুষের ভাগ্য ঠিক কতটা খা/রাপ হতে পারে!”

—-” হ্যাঁ রে! ইলহামের সঙ্গে কত অ/ন্যা/য় হয়েছে। ভাবতেই ভীষণ খা/রাপ লাগে।”

—-” ভেতরটা কেমন করে আমার। তবে কি জানিস, রাদের সঙ্গে ওর বিয়েটা হওয়াতে সত্যিই ও এসবের থেকে মুক্তি পেয়েছিলো। উপরওয়ালা হয়তো মুখ তুলে চেয়েছিলো ওর প্রতি।”

—-” একদম। আর দেখিস আমরা গোটা পরিবার মিলে ইলহামকে আর কোনো দুঃখ স্পর্শ করতেই দিবোনা। এবার থেকে ও আমাদের সবার মাঝে একসাথে অনেক অনেক ভালো থাকবে।”

—-” ইয়েস। চল, লেট হয়ে যাচ্ছে।”

—-” হ্যাঁ, চল।”

বাসার কলিং বেল চাপতেই একজন সার্ভেন্ট এসে দরজা খুলে দিলো। অন্তু এবং প্রণয় ওদের পরিচয় দেওয়াতে সার্ভেন্ট ওদের ভেতরে নিয়ে এসে বসতে যায়। “স্যার এবং ম্যাম’ একটু বাইরে গেছেন হয়তো কিছুক্ষনের মধ্যে চলেও আসবেন” এই বলে কাজের লোকটি ওদের অপেক্ষা করতে বলে সন্ধ্যার নাস্তা দিয়ে যায়। খাবারের আইটের গুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করে অন্তু আর প্রণয় কেবল কফিটা খায়। ইতিমধ্যে এসে উপস্থিত হয় রেজা সাহেবের পিএ মিমি। মিমি ওদের দেখে ভদ্রতা সূচক হাসে। এগিয়ে এসে ‘গুড ইভিনিং’ জানিয়ে কাজের ব্যাপারে কথা শুরু করে। প্রণয় বারবার খেয়াল করছিলো, মেয়েটা কথা বলতে বলতে বারবার কেমন অদ্ভুত করে তাকায় অন্তুর পানে। একা একাই লজ্জা পায়, মুচকি হাসে।

—-” ওকে। থ্যাঙ্কস্ ফর দ্য ইফোর্ট। বাই দ্য ওয়ে, স্যার কি আসতে পারবেন না?”

আজকের কাজটুকু দু’জনের প্রচেষ্টায় সফল করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো অন্তু। ফের শেষোক্ত প্রশ্নে জানতে চাইলো রেজা সাহেবের কথা। মিমি ঘড়িতে একবার দৃষ্টিপাত করে বলল,

—-” আসতে আরও একটু লেট হবে, আই থিংক সো। স্যারই আমাকে ফোন করে আসতে বলেছেন এখানে। উনি এসে পৌঁছাতে না পারলে আমি যেন আপনাকে হেল্প করি। কাজ তো অলমোস্ট ডান। আরেক কাপ কফি হবে?”

—-” নো নো! আমাদেরও উঠতে হবে। অনেক সময় চলে গেছে।”

কথাটা বলতে বলতে একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়লো অন্তু। মনেমনে ভাবতে লাগলো, আসল কাজই তো হলোনা।

—-” এক্ষনি চলে যাবেন?”

মিমি একটু মন খারাপের সুরেই প্রশ্নটা করলো অন্তুকে। অন্তু খেয়াল করেনি ওর কথাটা। পাশ থেকে প্রণয় জবাব দিলো,

—-” হ্যাঁ, এক্ষনি বের হবো ভাবছি।”

—-” আহ্ ওকে।”

অন্তু আর প্রণয় উঠে দাঁড়ালো। অন্তু তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছে চারপাশটা। কিভাবে যে সব রহস্যের সমাধান করবে জানেনা সে। টেনশন হচ্ছে খুব। আর তারউপর আজ ভেবে এলো, লাবনী খানের সঙ্গে দেখা হবে! কিন্তু সেটাও হলোনা। কিছুই যে প্ল্যান মোতাবেক এগোচ্ছে না।

—-” এক্সকিউজ মি, মিস্টার অন্তু?”

ওরা গাড়িতে উঠবে ঠিক এমন মুহুর্তে পিছু ডাকলো একটা মেয়েলী কন্ঠ। অন্তু এবং প্রণয় একসাথেই পেছন মুড়ে তাকালো। একটু অদূরে মিমি দাঁড়িয়ে আছে। তখন কাজের ফাঁকে খেয়ালই করা হয়নি আজ মেয়েটাকে সেদিনের চেয়ে ভিন্ন লাগছে। কারন, সেদিন তার সমান চুল গুলো খোলা থাকলেও আজ বেঁধে রেখেছে। তাতেও বেশ ভালো দেখাচ্ছে।

—-” ইয়েস! কিছু বলবেন?”

—-” আপনি যদি কিছু মনে না করেন, আপনার সঙ্গে দু’মিনিট বসতে পারি?”

—-” আব.. বসবেন? কিন্তু কোথায়?”

আধঘন্টা পর, ওদের গাড়িটা একটা কফিশপের সামনে এসে থামলো। অন্তু গাড়ি পার্ক করতে প্রথমে মিমি অতঃপর প্রণয় নেমে আসে গাড়ি থেকে। এবং অবশেষে অন্তু। ওরা ভেতরে এসে বসে কফি অর্ডার করে বসলো চুপচাপ। কয়েক মুহুর্ত নিরবতা বিরাজ করলে অবশেষে নিরবতা ভাঙে অন্তু। মিমির উদ্দেশ্য পরিস্কার গলায় জিজ্ঞেস করে,

—-” জি, এবার বলুন?”

মিমি একটু নড়েচড়ে বসে। নিজেকে ধাতস্থ করে। অতঃপর, এতো বছরেও যে সাহস হয়নি আজ সেই সাহস সঞ্চয় করে হঠাৎ প্রশ্ন করে অন্তুকে,

—-” আপনি সেদিন স্যারের থেকে জানতে চেয়েছিলেন, স্যারের মেয়ে কেমন আছে? কিন্তু আমাদের জানামতে স্যার নিঃসন্তান। লাবনী ম্যামের কখনোও কোনো বেবিই হয়নি। হ্যাঁ, কুহেলিকা ম্যামের ব্যাপারে অনেক রটনা আছে। কিন্তু, স্যার তো সবাইকে বলে বেড়ান কুহেলিকা ম্যামের যদি কোনো মেয়ে থেকে থাকে তার বাবা নাকি উনি নন। তবে, আপনি এতো জোর গলায় কি করে বলেছিলেন ঐ কথা গুলো! আপনি যার কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি কি আসলেই স্যারের মেয়ে?”

মিমির প্রশ্নগুলো কয়েক মুহুর্তের জন্য ঘটনাস্থলকে নিস্তব্ধ করে তুললো। কেননা, অন্তু কোনোভাবেই আশা করেনি এই মেয়েটি তাকে ডেকে এনে এসব প্রশ্ন করবে। কেননা, মেয়েটা রেজা খানের পার্সোনাল এসিসট্যান্ট। যে কিনা,নিজের বসের সম্মন্ধে এসব খবর বের হলেও ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করবে। কিন্তু তা না করে এতো কৌতুহল নিয়ে ওকে ডেকে আনলো কফিশপে।

—-” সে যাই হোক, তবে এসব কথা আমি আপনাকে কেন বলবো? আর আপনি যে আমাদের জাসুসি করছেন না, আমাদের থেকে ইনফরমেশন নিয়ে রেজা খানকে জানাবেন না এর কি নিশ্চয়তা আছে?”

—-” নো নো! এমন কিছুই নয়। আমি এমন করবোনা। ট্রাস্ট মি! আমি রেজা স্যারের হয়ে কাজ করলেও…”

—-” আই কান্ট ট্রাস্ট ইউ!”

—-” মিস্টার অন্তু, প্লিজ ট্রাস্ট মি! আমি কুহেলিকা ম্যামকে..”

—-” নো ওয়ে। আপনি আমাদের সাথে কফি খেতে চেয়েছেন। কেবল কফিই খাবেন। যা কথা বলার সব হয়ে গেছে। দয়াকরে এসব বিষয়ে আর নাক গলাবেন না!”

অন্তু একটু রা/গী গলায় ঝাড়লো কথাগুলো। মিমি মন খারাপ করে ফেললো। কারন অন্তু ওকে ভুল বুঝছে। ও এমন মেয়ে নয়। ওর রেজা খানের পার্সোনাল এসিসট্যান্ট হওয়ার পেছনে অনেক বড় একটা গল্প আছে। সেটা কেউ জানেনা। আর জানেনা বলেই অন্তু ওকে মুখের উপর না করে দিতে পারলো।

—-” প্লিজ অন্তু…”

—-” আই স্যেইড নো! নো মিনস্ নো!”

মিমি মাথা নীচু করে নিলো। না, এভাবে কিছু হবেনা। আর কোনো কথা বাড়ালো না মিমি। চুপটি করে উঠে গেলো ওদের সামনে থেকে। ওর দুই মিনিট ব্রেক লাগবে। নিজেকে পূণরায় ধাতস্থ করতে। মিমি চলে গেলে প্রণয় অন্তুর হাত ঝাঁকিয়ে বলল,

—-” এটা কি করলি? মেয়েটা তো সত্যি বলছিলো! ওর চোখমুখ দেখে বুঝতে পারলিনা?”

—-” বুঝতে পারবোনা কেন! বুঝতে পেরেছি। আর বুঝতে পেরেছি বলেই ঘাঁটিয়েছি। এবার ঘুঘু কেমন করে ধরা দেয় দেখ। আমরা যে উদ্দেশ্যে আজ ও বাড়ি গিয়েছিলাম সেই উদ্দেশ্য সফল হওয়ার পালা। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি।”

দুই মিনিট বাদে পূণরায় ফিরে এলো মিমি। চোখ দুটো ফোলা লাগছে কিঞ্চিৎ। অন্তু অবাক হলো। অবাক হলো প্রণয়ও। মেয়েটা কি কেঁদেছে? কিন্তু কেন! অন্তু কৌতুহল দমিয়ে রাখতে পেরে প্রশ্ন করেই ফেললো,

—-” হোয়াটস গোয়িং অন মিমি? ডিড ইউ ক্রাই?”

অন্তুর প্রশ্নে মিমি পূণরায় কেঁদে দিলো। ভড়কে গেলো অন্তু আর প্রণয়। দু’জনে বোবা দৃষ্টিতে মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো। প্রণয় অবাক কন্ঠে বলল,

—-” কি হয়েছে মিমি? আপনি ঠিকাছেন তো!”

—-” মিমি, লিসেন টু মি? প্লিজ স্টপ ক্রায়িং! মিমি, সবাই দেখছে.. প্লিজ।”

মিমি ফুঁপিয়ে কাঁদছে। যখন বুঝলো সবাই তাকেই বাঁকা চোখে দেখছে তখন নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করলো। অন্তু খানিক টিস্যু মিমির হাতে ধরিয়ে দিলে মিমি চোখ মুখ মুছে শান্ত হয়ে বসে। কয়েক লহমা কেটে যায় স্তব্ধতায়। অতঃপর মিমি নিজেই নিরবতা ভাঙে,

—-” আমি অনেক গরীব ফ্যামিলি থেকে বিলং করি। আমার বাবা-মা কেউই নেই। অনেক ছোট বেলায় বাবা মাকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করে আর মা তার প্রাক্তনকে বিয়ে করে চলে যায়। আমি আমার মামার কাছে বড় হই। মামা ছোটখাটো একটা কাজ করতেন। মামার পেশাও আমার মতোই ছিলো। ঐ সময়কার বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী কুহেলিকা ম্যামের পার্সোনাল এসিসট্যান্ট ছিলো আমার মামা।”

এটুকু বলতেই ওর মুখের কথা কেঁড়ে নেয় অন্তু। আশ্চর্যান্বিত কন্ঠে বলে,

—-” হোয়াট! কুহেলিকা ম্যামের পার্সোনাল এসিসট্যান্ট?”

—-” হুম। আমি ম্যামকে ছোট থেকেই চিনি। উনার গান আমার ভীষণ পছন্দের ছিলো। মামার সঙ্গে আসা-যাওয়া করতে করতে কুহেলিকা ম্যাম আমাকেও চিনে নিলো খুব ভালো ভাবেই। উনার প্রায় অনেক কাজেই মামার মতো আমিও হেল্প করার চেষ্টা করতাম। উনি বলতেন, আমি নাকি ঠিক উনার মেয়ের মতো। তখন আমি অনেক ছোট। উনার মেয়ে, উনার হাসবেন্ড এতকিছুর সম্মন্ধে আমার জ্ঞান সীমিত। যখন আমি একটু বড় হই, আমি জানতে পারি কুহেলিকা ম্যামের একজন শ//ত্রু আছে। আর সে রেজা খান। মাঝেমধ্যে সেটে রেজা খান কুহেলিকা ম্যামের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। ঠিক দেখা নয়, এসেই ঝগড়া শুরু করতেন উনার সাথে। খুব অকথ্য ভাষায় গা/লিগা/লাজও করতেন। উনি শুধু একটা কথাই বারবার বলতেন, ঐ সন্তান আমার নয়। কুহেলিকা ম্যাম নাকি উনার পাপের সন্তান জন্ম দিয়েছেন।”

—-” পাপের সন্তান মানে?” জিজ্ঞেস করলো অন্তু।

—-” পাপের সন্তান বলতে আপনি যার কথা বলেছিলেন রেজা খানও তার কথাই বলতেন! ঐ সন্তান নাকি তার নয়। সে নাকি অবৈধ! এসব বলতেন। আমি আস্তেধীরে আরও বড় হলাম। কুহেলিকা ম্যামের আরও ঘনিষ্ঠ হলাম। একবার বোধহয় তার মেয়েকে আমি দেখেছিলাম! তারপর তো হুট করে মৃ//ত্যু হয় কুহেলিকা ম্যামের! আর খুব র/হস্য জনক ভাবে উনার মৃ//ত্যুর ঠিক সাত দিনের মাথায় কেউ বা কারা আমার মামাকেও মেরে ফেলে। আর তারপর থেকেই আমার মূখ্য উদ্দেশ্য ছিলো রেজা খান এবং কুহেলিকা ম্যামের মেয়ে। জানিনা, সে এখন কোথায় আছে বা আদৌও বেঁচে আছে কিনা…”

—-” বেঁচে আছে! বেঁচে আছে আর ভীষণ ভালোও আছে। আই এম সরি মিমি! আমি আপনাকে কথাগুলো ওভাবে না বললেও পারতাম। আই এম রিয়েলি সরি।”

—-” ইট’স ওকে মিস্টার অন্তু। কুহেলিকা ম্যাম আমার মায়ের মতো ছিলো। আর আমি চাই, উনার মৃ//ত্যুর রহস্য সবার সামনে আসুক। একই ভাবে আমার মামাকেও যারা মে//রে ফেলেছে তাদেরও শা/স্তি হোক।”

—-” থ্যাংক্স ফর ইওর ইনফরমেশন। ইউ কান্ট ইমাজিন আপনার এই ইনফরমেশন গুলো কতটা কাজে আসবে আমাদের।”

—-” এবার তো বলুন, ম্যামের মেয়ে কোথায় আছে? আর আপনার কথা গুলো আদৌও সত্যি কিনা?”

—-” হ্যাঁ! সবটাই সত্যি। আর আপনার ম্যামের মেয়ে যেখানেই আছে খুব ভালো আছে। সরি টু স্যে, আমি এই মুহুর্তে তার গোটা ইনফরমেশন আপনাকে পাস করতে পারবোনা। আমাদের আগে রেজা খানের পর্দা ফাঁ/স করতে হবে। আর তার জন্য আপনার অনেক হেল্প প্রয়োজন আমাদের। আপনি কি পারবেন?”

—-” অবশ্যই পারবো। প্রসঙ্গ যখন কুহেলিকা ম্যামের, তখন এই মিমি ম/র/তেও রাজি।”

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here