#রক্ষিতা
#আশুথিনী_হাওলাদার (ছদ্মনাম)
পর্ব-৭
সে ঘটনার পর নিফান ততটা ঘাটে না অর্ঘমাকে। তার মতো তাকে ছেড়ে দিয়েছে। ইদানিং কাজের চাপ বেড়েছে তাই নিফান অফিস টু বাসা। বাসা টু অফিস করে যাচ্ছে। অর্ঘমার সাথে তেমন একটা কথা বলেনা অর্ঘমাও বলে না।
কিছু দিন পরের কথা। অর্ঘমা ডাইনিং এ খাবার সাজাচ্ছিল তখন কলিং বেল বেজে ওঠে খুলে দেখে নিফান আজ আবারও একটা মেয়ে নিয়ে এসেছে। নিফানের চোখ দু’টো লাল টকটকে। অর্ঘমা কোনো প্রশ্ন না করে দরজা ছাড়ে দাঁড়ায়। নিফান মেয়েটার কোমড়ে হাত দিয়ে একপ্রকার জড়িয়ে ধরে রুমে গিয়ে এক অর্ঘমার দিকে এক পলক তাঁকায় অর্ঘমাও তার দিকে তাঁকিয়ে ছিল। দু’জন এর চোখাচোখি হয়। নিফান রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। অর্ঘমা গিয়ে নিশ্চুপ ভাবে ডাইনিং এর চেয়ারে বসে থাকে। তার বুঝতে বাকি নেই বদ্ধ ঘরে ঠিক কি হচ্ছে দীর্ঘশ্বাস ফেলে অর্ঘমা। মাথায় খুব যন্ত্রনা হচ্ছে পাশের রুমে গিয়ে ঘুমের মেডিসিন খেয়ে ঘুমিয়ে পরে। এভাবে কিছুদিন যায় নিফান প্রতিদিন রাতে একটা করে নতুন মেয়ে আনে। তার সামনে তাকে নিয়ে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। সকাল বেলা দু’জনে গোসল করে বের হয়। নিজেকে এই পরিস্থিতির সাথে মিলিয়ে নেয় অর্ঘমা। মেনে নেয় নিফান তাকে ভালবাসে না। ভালোই যখন বাসেনা তাকে আটকে কেন রাখছে। দম বন্ধ হয়ে আসে এখানে অর্ঘমার একটু শান্তিতে নিশ্বাস নিতে চায় সে। পরের দিন সকালে নিফান এক প্রকার লুকিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় অর্ঘমা। বাড়িতে দম আটকে আসছিল তার। সামনে একটা পার্কে গিয়ে বসে অর্ঘমা সামনে কিছুদূর তাকিয়ে দেখে পার্কের একটা বেন্সে নিফান বসে আছে তার হাতের উপর হাত দিয়ে উরবুশি নামের মেয়েটা বসে আছে। অনেক কাছাকাছি আছে দু’জন। তাচ্ছিল্য আসে অর্ঘমা। সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে আসে-পাশে তাঁকায় ছোটো ছোটো বাচ্চারা খেলছে। ওদের দেখে বুক খা খা করে ওঠে অর্ঘমার। এমন একটা সন্তান তো তারও থাকতে পারতো। আজ তার বয়স ২৬ কিন্তু তার চেয়ে ছোটো ছোটো মেয়েদের স্বামী সন্তান নিয়ে ভরা সংসার। আর সে নিজের স্বামীর বিয়ের করা রক্ষিতা উপাদি নিয়ে আছে। বুকের ভিতর যন্ত্রনা শুরু হয় সাথে শ্বাস অর্ঘমা ব্যাগ হাতরে ইনহেলার খোজার চেষ্টা করে পায়না। এদিকে তার শরীর খারাপ হচ্ছে। এমন সময় তার সামনে কেউ ইনহেলার রাখে অর্ঘমার তার হাত থেকে সেটা কেড়ে নিয়ে গ্যাস নেয়। হাতের মালিকের দিকে তাঁকিয়ে স্তব্দ হয় অর্ঘমা। সামনের মানুষটি তার পাশে বসা। ভরসার মানুষটাকে পেয়ে অন্য কিছুনা ভেবে তার বুকে ঝাঁপইয়ে পরে হুহু করে কেঁদে দেয় অর্ঘমা। নিহিতা লাগলে নেয় অর্ঘমাকে। অর্ঘমার চোখের জল মুচিয়ে দেয়। নিহিতা তার হাত ধরে প্রশ্ন করে,,
__‘কেমন আছিস?
মলিন হেসে উত্তর দেয় অর্ঘমা,,
__‘যেমন দেখছিস, তেমন আছি।
দূরে বসে থাকা নিফান কে দেখে নিহিতা বলে,,
__‘আরে ওটা নিফান ভাই না? উনি এখানে এতদিন পর। আর তুই এভাবে বসে আছিস ওনার কাছে যাচ্ছিস না কে?
অর্ঘমা ভাবশালিন ভাবে উত্তর দেয়,,
__‘গিয়ে কি হবে? শুধু শুধু ঝাঁমেলা হবে।
নিহিতা অবাক হয়
__‘কি বলছিস অর্ঘ? তুই এটা বলছিস? নিফান ভাইয়ার হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার পর তোর কেমন অবস্থা হইছিলো মনে আছে? আজ যখন উনি এখানে এভাবে,, ওকে তুই না যাস আমি যাচ্ছি।
অর্ঘমা এক পলক দূরে থাকা নিফান উরবুশির দিকে তাঁকিয়ে। মৃদু হেসে বলে,,
__‘এক বাড়িতে এক ঘরেই তো থাকি। দূরে কোথায়। ওনার সাথে এখন ওনার প্রেমিকা আছে ডিস্টার্ব করা ঠিক হবে না।
নিহিতা হতবাক হয়ে বলে,
__‘মানে এক বাড়ি, এক ঘরে কি করে?
চোখের কোন থেকে জল মুছে অর্ঘমা বলে,,
__‘জানিস তো দাদুমের ক্যান্সার ধরা পরেছে। আমাদের বাড়িটা ছাড়া তো আর কিছু নেই। বাকি যা ছিল তা দাদুম আমায় সুস্থ করতে খরচ করে ফেলেছে। দাদুম চায়নি তার ভিটে হাতছাড়া করতে। তাই আর বিক্রি করতে দেয়নি। কিন্ত আমারও তো দাদুম ছাড়া কেউ নেই। মাম্মাম-পাপা ভাইয়া তো সেই সাড়ে তিন বছর আগে আমায় ফেলে চলে গেছে। এখন দাদুম ও যাওয়ার পায়তারা করছে। দাদুমের কিছু হয়ে গেলে আমার কি হবে বলতো? অনেক টাকার ব্যাপার। বাড়ি বিক্রি করলে ম্যানেজ হতো দাদুমও দিব্যি দিয়ে রেখেছে তার ভিটে বিক্রি করা যাবে না। যখন সব পথ বন্ধ তখন তিন বছর পর দেখা নিফানের সাথে। সে বলে, সে সব টাকা দেবে। তবে শর্ত আছে। আমাকে তার রক্ষিতা হয়ে থাকতে হবে। দাদুমকে বাঁচানোর কোনো পথ এছাড়া নেই। তাই রাজি হয়ে যাই আজ ৭ মাস ধরে আছি তার বাড়িতে তার রক্ষিতা হয়ে। এক বছর ছয় মাসের জন্য সে আমায় কিনে নিয়েছে। (কথা শেষ করে হাসে অর্ঘমা)
নিহিতা হতবিহ্বল হয়ে চেয়ে আছে অর্ঘমার পানে। অর্ঘমা -নিফান তাদের ভার্সিটির ‘মেট ফর ইচ আদার’ জুটি ছিল’। আজ তারা কিনা এভাবে। নিফান তো খুব ভালোসাতো অর্ঘমাকে। প্রথমে অর্ঘমাকে মাঝ পথে ছেড়ে চলে গেল। আবার ফিরে এসে বউ না রক্ষিতা করে ঘরে তুলছে। কি করে সম্ভাব এটা নিফানের দ্বারা।
ড্রিংক করে বেশ রাত করে বাড়ি ফিরে নিফান। ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ঘরের দরজা খুলে ভিতরে আসে। রুমের লাইট অফ ডিম লাইটের মৃদু লাল আলোতে দেখতে পায় অর্ঘমা শুয়ে আছে। শাড়ি জায়গায় নেই। শরীরের বেশির ভাগ দৃশ্যমান। খানিক্ষন ঘোড় লাগা দৃষ্টিতে সেদিকে তাঁকিয়ে থাকে। কিছু একটা মনে পরে যাওয়ায় রাগ হয় নিফানের। অর্ঘমার উপর গিয়ে শুয়ে পরে। তার গরম নিশ্বাস অর্ঘমার মুখে আছড়ে পরে। অসস্থি হয় অর্ঘমার ঘুম ভেংগে যায়। পিটপিট করে চোখ খুলে। নিফান কে তার এত কাছে দেখে থতমত খেয়ে যায়। নিফানের চোখে অন্য কিছু দেখতে অর্ঘমা। কামুকতা,,রাগ দুটোই তার চোখে দেখতে পাচ্ছে। নিফানের এমন দৃষ্টিতে ভরকে যায় সে বিছানার চাদর খামছে ধরে। কিছু বলতে নেয়। তার বলার আগে নিফান তার হক বুঝে নেয়। ঝাঁপিয়ে পরে তার উপর। কিন্তু নিফানের ছোঁয়ায় ভালবাসা পাচ্ছেনা অর্ঘমা। এ যেন রাগের বহিঃপ্রকাশ। শুকনো ঢোক গিলে অর্ঘমা। নিফান কে ছাড়াতে চায় নিজের থেকে। রেগে যায় নিফান। অর্ঘমার গলায় জোড়ে কামড় বসিয়ে দেয় নিফান। ডুকরে কেঁদে উঠে অর্ঘমা। নিফান যদি ভালবেসে তার কাছে আসত অর্ঘমা নিজে থেকে তার কাছে যেত কিন্তু এ ছোঁয়ায় বিন্দু মাত্র ভালোবাসার ছিটে ফোটা পাচ্ছেনা অর্ঘমা। যন্ত্রনায় কেঁদে ওঠে অর্ঘমা। সেদিকে নিফানের নজর নেই নিজের কামুকতায় ব্যাস্ত। আজ বোধায় নিফানের ‘রক্ষিতা’ দেয়া নামটা সার্থক হলো। আজ তাকে নিফান ভালোবেসে বউও এর মতো না উলটো রক্ষিতার মতো ট্রিট করছে। নিফান তার কাজ শেষে অর্ঘমার উপর শুয়েই তার ঘাড়ে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরে। অর্ঘমা যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে চোখের পানি ফেলে সারা-রাত কাটিয়ে দেয়।
সকালে ঘুম থেকে উঠেও রেহাই দেয়নি তাকে নিফান। আজ এতদিন পর নিজেকে ‘রক্ষিতা’ মনে হচ্ছে। সকালে উঠে নিফান তার চাহিদা মিটিয়ে অফিসে চলে যায়। সাথে শাসিয়েও যায় রাতের জন্য তৈরী থাকতে। আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকায় অর্ঘমা। সারা শরীরে কামড় আর নখের দাগ। ঠোঁট দুটোও ফুলে গেছে। বেলা ১১ টা বাজে। কাল রাত থেকে এত বেলা অব্দি নিফান তার চাহিদা মিটিয়ে গেছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে গায়ে চাঁদর পেঁচিয়ে উঠে ওয়াশ্রুমে যায় ফ্রেস হতে।
চলবে?
(যথেষ্ট শালীন ভাবে লেখার চেষ্টা করেছি। ভুল হল্ব বা কোনো জায়গায় বাজে শব্দ ইউজ হলে বল্ক করার আগে জানাবেন আমি ঠিক করবো।)