–আমরা কোথায় যাচ্ছি ইভান ভাইয়া?
–কাজী অফিস।
গম্ভীর আওয়াজে ইভানের সোজা সাপটা উত্তরে গোল গোল চোখে তার দিকে তাকাল ঈশা। কাঠ ফাটা তপ্ত গরমে ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা। শরীর ঝলসে যাওয়ার উপক্রম। এই অবস্থায় এমন মজা করা কি আদৌ সাজে। বিরক্ত হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলো ঈশা। ইভান পাঞ্জাবির ডান হাতটা গুটাতে ব্যস্ত। ঈশা সেদিকে এক নজর ফিরতেই চোখ আটকে গেলো। মিনিটে ১০ বার ক্রাশ খাওয়ার মতো চেহারা তার। শুভ্র রঙের পাঞ্জাবীটা ঘামে পিঠের দিকে লেপটে আছে। ভিজে একাকার অবস্থা। বাম হাতাটা গুছিয়ে সেটা দিয়ে কপালে জমে থাকা ঘাম মুছে নিলো। ঘামের সাথে লেপটে থাকা চুল গুলো এদিক সেদিক সরে এলোমেলো হয়ে গেলো। ঘর্মাক্ত চেহারাটাও কি অদ্ভুত আকর্ষণীয়।
–এই মামা যাবা?
ইভান হাত উচিয়ে রিকশা ডাকতেই ঈশার ঘোর কেটে গেলো। খুব শান্ত ভাবে পাশে ঘাড় ঘুরিয়ে বাকিদের উদ্দেশ্য করে বলল
–আমরা যাচ্ছি। তোরা আয়।
বলেই রিকশায় উঠে বসে গেলো। ঈশা ঘোর থেকে বের হলেও ইভানের উপর থেকে চোখ সরাতে তখনও ব্যর্থ। ইভান তার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে ফেলল। মুহূর্তেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে ঈশার চোখের দিকে তাকিয়ে শান্ত কণ্ঠে বলল
—-দাড়িয়ে থেকে এভাবে না দেখে কাছে এসে বস। কাছে থেকে দেখ। মন ভরে দেখতে পারবি। কেউ ডিস্টার্ব করবে না। কেউ কিছুই বলবে না। আমিও মোটেই বিরক্ত হবো না। প্রমিস!
তার কথা কানে আসতেই চোখ নামিয়ে নিলো। পাশ থেকে ঈশানের চাপা হাসির আওয়াজ কানে আসলো। সেদিকে একবার শক্ত চোখে তাকালেও সে দমে গেলো বলে মনে হল না। মুখে হাত চেপে হাসতে লাগলো। ঈশা আর দেরি করলো না। লজ্জা নিয়েই রিকশায় উঠে বসলো। ইভান পাঞ্জাবির হাতায় ঘাম মুছে সামনে তাকিয়েই বলল
–মামা কাজী অফিস চল।
রিকশাওয়ালা আর ঈশা দুজনই গোল গোল চোখে ইভানের দিকে তাকাল। সেদিকে তার কোন খেয়াল নেই। সে ঘাড় বেকিয়ে পিছনের রিকশা গুলকে দেখছে। সবাই একে একে রিকশায় উঠে বসলো। কিন্তু ঈশার মাথায় আরও জটিল ভাবে তাল গোল পেকে গেলো। কাজী অফিস কেন যাচ্ছে? রিকশাওয়ালা ইভানের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে ঈশার দিকে তাকাল। পিছনের রিকশা গুলো এগিয়ে যেতেই ইভান সামনে ঘুরল। রিকশাওয়ালা তাদেরকে এগিয়ে যেতে দেখে অন্য রকম একটা হাসি দিয়ে রিকশা চালাতে শুরু করলো। অনেক্ষন চুপ করে থাকার ফলে ঈশার মস্তিষ্কে এলোমেলো চিন্তা ভিড় করছে। নাহ! আর চুপ করে থাকা সম্ভব হল না। ইভানের দিকে তাকাল। ভ্রু কুচকে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু একটা ভাবছে সেটা নিশ্চিত। কিন্তু ঈশার প্রশ্নের উত্তর তো তার চাই। তাই নড়েচড়ে বসে জিজ্ঞেস করলো
–ইভান ভাইয়া আমরা কাজী অফিসে কেন যাচ্ছি?
ঈশার প্রশ্ন শুনে এমন ভাবে তাকাল যেন সে কোন ভয়ানক রকমের কোন বাজে কথা বলে ফেলেছে। এখনি তাকে ফাসির শাস্তি দিলেও খুব একটা ভুল হবে না। সেভাবে তাকিয়েই শান্ত সরে বলল
–কাজী অফিসে কি করে?
–বিয়ে করে।
ঈশা নিজের উত্তরে নিজেই থেমে গেলো। একটু ভেবে বিস্ময়কর ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করলো
–কিন্তু কার বিয়ে?
ইভান বিরক্তিকর ভঙ্গিতে তাকাল। ঈশা বুঝে গেলো এবার আর কোন প্রশ্ন করে লাভ হবে না। এরকম দৃষ্টিতে তাকান মানে কথার ঝুলি ফুরিয়ে এসেছে। সারাদিন ঘ্যান ঘ্যান করলেও কোন কথা বেরবে না। তবে গালে থাপ্পড় পড়তে পারে। তাই আর কথা বাড়াল না। চুপচাপ বসে ভাবতে লাগলো। মস্তিষ্ক নিজের গতি মতো বিভিন্ন অসনি সঙ্কেত দিতে লাগলো। সব কটি ঘাবড়ে জাবার মতো। কিন্তু আসলেই কি ঘাবড়াবার মতো কোন কারন আছে কিনা ঈশার জানা নেই। তবে বিশ্বাসও করতে পারছে না। খুব টেনশন হচ্ছে তার। এতক্ষন গরমেও সে দমে যায়নি। কিন্তু টেনশনে ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা। শাড়ির আচল তুলে কপালে মুখে জমে থাকা ঘাম মুছে ফেলল। তার কাজিন সম্প্রদায়ের উপরে বিশ্বাস করা বিপদের থেকে কম কিছু না। তারা যে কোন মুহূর্তে যে কোন অসম্ভব ঘটনা কে সম্ভব করতে পারে। ইভানের ফোন উচ্চ শব্দে বেজে উঠলো। শব্দে ঈশার ঘোর কেটে গেলো। হাতেই ধরে ছিল সে ফোনটা। তাই একবার সেদিকে তাকিয়ে ধরে ফেলল। ওপাশ থেকে হ্যালো বলতেই ইভান শান্ত সরে বলল
–বল।
ওপাশের ব্যক্তিটা কি বলল সেটা ঈশার কানে আসলো না। কিন্তু কিছুক্ষন চুপ থেকে ইভান বলল
–কাজী অফিসে যাচ্ছি।
আবার একটু হেসে বলল
–বউ নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। যেখানে স্বয়ং আমি আছি সেখানে বউকে নিয়ে এতো ভাবার কিছু নাই।
ঈশা বড়বড় চোখে তাকাল ইভানের দিকে। কে বউ? শুকনো ঢোক গিলল। ইভান এবার শব্দ করে হাসল। হাসি থামিয়ে বলল
–এতো কথা এখনি বলতে পারব না। এতো কৌতূহল থাকলে কাজী অফিসে চলে আয়। বিয়েটা নিজে চোখেই দেখবি। নাহলে আবার পরে বলবি বন্ধু হয়েও তোরা কিছুই জানলি না। আফসোস করার সুযোগ দিতে চাইছি না। চলে আয়। আমি অর্ধেক রাস্তায়। পৌছার আগেই চলে আয়। নাহলে কিন্তু বিয়েটা আর দেখা হবে না। বরের আবার ধৈর্য কম। জানিস তো।
বলেই হেসে উঠলো। ফোনটা কেটে দিয়েও হাসছে সে। হাসি মুখেই ঈশার দিকে তাকাল। ভ্রু কুচকে ঠোট কামড়ে ভালো করে দেখে নিলো। অবাক চোখে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল
–তুই শাড়ি পরেছিস?
ঈশা চোখ নামিয়ে নিলো। ইভান আবার বিস্ময়ের ভঙ্গিতে বলল
–নীল শাড়ি কেন? অন্য রঙ ছিল না?
ঈশা কি বলবে বুঝতে পারলো না। চোখ নামিয়ে মিনমিনে কণ্ঠে বলল
–কার বিয়ে ইভান ভাইয়া?
ইভান ঈশার দিকে ভ্রু কুচকেই তাকিয়ে থাকলো। অনেক্ষন দেখে নিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো। বলল
–আমার।
ঈশার বুকের ভেতরে মোচড় দিয়ে উঠলো। ইভানের দিকে তাকাল। সে সামনে তাকিয়ে আছে। ঠোটের হাসিটা এখন বেশ স্পষ্ট। হঠাৎ করেই অতি প্রিয় রিকশা ভ্রমণটা বিরক্তিকর হয়ে উঠলো। বাতাসটাও কেমন গরমে তেতে উঠেছে। নিঃশ্বাস নিতে ভীষণ রকমের কষ্ট হচ্ছে। একটু দুরেই রিকশা থেমে গেলো। ঈশা মাথা তুলে পাশে তাকাল। বড়বড় করে লেখা ‘কাজী অফিস’। রিকশা থেকে নেমে এক পাশে দাঁড়ালো সে। ইভান ভাড়া মিটিয়ে এসে তার পাশে দাঁড়ালো। বাকি কাজিনরাও এসে একে একে তাদের পাশে দাঁড়ালো। ঈশা কারও দিকে তাকাচ্ছে না। মাথা নিচু করেই দাড়িয়ে আছে।
–কেমন আছো ঈশা?
কিঞ্চিত পরিচিত গলা শুনে ঈশা মাথা তুলে তাকাল। ইভানের বন্ধু সায়ান। সে অনেকবার এই ছেলেটাকে তাদের বাসায় আসতে দেখেছে। জোর করে হেসে বলল
–ভালো আছি ভাইয়া। আপনি কেমন আছেন?
–ভালো আছি।
ঈশান এগিয়ে এসে সবাইকে উদেশ্য করে বলল
–এখন ভিতরে চল। সব রেডি।
ঈশা এবার মাথা তুলল। চারিদিকে ভালো করে তাকাল। সবাই তার কাজিন। শুধু ইভানের কয়েকজন বন্ধু এসেছে। ঈশা খুব শান্ত সরে বলল
–বউ কোথায়?
ঈশার এমন বোকা বোকা প্রশ্ন শুনে সায়ান তার দিকে ভ্রু কুচকে তাকাল। কিন্তু বাকি সবার চেহারায় বেশ স্বাভাবিকতা। ইভান নরম কণ্ঠে বলল
–আসলে ওকে কিছু বলা হয়নি এখনও। কিছুক্ষন পরে সবটা তো দেখতেই পাবে।
ঈশা আবার চোখ নামিয়ে নিলো। পরিবেশটা বিষাক্ত লাগছে। এখানে আর থাকতে ইচ্ছা করছে না তার। সবাই একে একে কাজী অফিসের ভিতরে ঢুকল। ঈশা ভিতরে ঢুকে এক পাশে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়ালো। সবাই বিভিন্ন খোশ গল্পে মত্ত। চাপা গল্পে মাঝে মাঝে খিলখিল করে হেসে উঠছে সবাই। ঈশার মুখে কালো মেঘের ছায়া। সে এক হাতে শাড়ির আচলটা পেঁচাচ্ছে আবার খুলছে। একটু পরে ইভান বাইরে থেকে এসে সবার উদ্দেশ্যে বলল
–তাহলে বিয়েটা শেষ করা যাক।
ঈশা সেদিকে তাকাল। একটা সুন্দরি মেয়ে তার পাশে দাড়িয়ে। মিষ্টি হাসি মুখে। মেয়েটা বেশ সুন্দর। কিন্তু এই মুহূর্তে ঈশার তাকে খুব বিরক্ত লাগছে। একবার ইভানের দিকে তাকাল। ইভান হাসি মুখে নিয়ে মেয়েটার সাথে কথা বলছে। ঈশা চোখ নামিয়ে নিলো আবার। ইভান চোখ দিয়ে ইশারা করতেই সবাই এগিয়ে গেলো। ইলু আর সায়ান কাজী সাহেবের সামনে বসতেই ঈশা বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকাল সেদিকে। ওরা দুজন কেন বসেছে ওখানে? ঈশার মাথায় কিছুই ঢুকছে না। এগিয়ে গেলো বিষয়টা বুঝতে। কাজী সাহেব বিয়ে পড়াতে শুরু করলেন। ঈশার কপালে ভাঁজ পড়ল। সব কিছু তার মাথার উপর দিয়ে গেলো। কি হচ্ছে কেন হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না। ইলুর সাথে সায়ানের বিয়ে কেন? আর শুধু তারাই কেন? বড়রা কেউ নেই। এভাবে কাজী অফিসে এসে বিয়ে করার মানে কি? নানান প্রশ্নের মাঝে ঈশার মস্তিষ্ক ভনভন করছে। ইভান ঈশার সামনে দাড়িয়ে ছিল। পিছনে ঘুরতেই ঈশাকে তাদের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল
–এতক্ষনের টেনশনটা কি একটু কমলো?
ঈশা আর একটু সামনে এসে দাতে দাত চেপে ফিস ফিসিয়ে বলল
–আমাকে এসব আগে বললে কি হতো? আর তুমি মিথ্যা বললে কেন?
ইভান ভ্রু কুচকে বলল
–কি মিথ্যা বললাম?
–ওই যে তোমার বিয়ে। এখানে তো পুরো ঘটনাই অন্য রকম।
ইভান বাকা হেসে পুরোটাই ঈশার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে হাত গুঁজে গম্ভীর কণ্ঠে বলল
–চাইলেই বিয়েটা আমার হতে পারতো। কিন্তু…।
বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
–চেয়ে ফেল। তোমাকে তো কেউ আটকে রাখেনি। কাজী অফিস পর্যন্ত তো চলেই এসেছ। তাহলে বিয়েটাও করে ফেল।
ঈশা ঝাঝাল কণ্ঠে বলল। ইভান হেসে বলল
–সে কি চায়? সে চাইলেই আমি রাজি। আমি একা চাইলে তো আর সব হয়না।
ইভানের কথা শুনে ঈশা বোকার মতো জিজ্ঞেস করলো
–সে টা কে? তোমার গার্ল ফ্রেন্ড?
ইভান না সুচক মাথা নাড়াল। ধির স্থির কণ্ঠে বলল
–আমার সব। অস্তিত্ব, নিঃশ্বাস, যাকে এক কথায় বলে জীবন। আমার জান পাখি।
ঈশা সন্দিহান চোখে তাকাল। অসহায় কণ্ঠে বলল
–আগে তো কখনও শুনিনি এমন কথা? কে তোমার সেই পাখি?
ইভান মুচকি হেসে বলল
–আগে তো কখনও এভাবে সামনে আসেনি তাই বলার প্রয়োজনও হয়নি। কিন্তু আজ এই মুহূর্তে বিশেষ মানুষটাকে বলতে ইচ্ছা করছে অনেক কিছু। মনে জমিয়ে রাখা সেসব কথা যা বলা হয়নি।
–বলে ফেল। তোমাকে তো কেউ নিষেধ করেনি।
ঈশা চোখ নামিয়ে ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলতেই ইভান হেসে ফেলল। কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই বিয়ে পড়া শেষ হল। সবাই মোনাজাত করতে হাত তুলল। ঈশা মাথায় কাপড় টেনে হাত তুলে দোয়া করছে। ইভান হাত তুলে আছে ঠিকই কিন্তু তার সমস্ত ধ্যান এখন ঈশার দিকে। অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে। নীল শাড়ীতে মেয়েটাকে অদ্ভুত লাগছে।
কাজী অফিসের সব পর্ব শেষ করে বের হয়ে এলো সবাই। ঈশা সবার উপরে রাগ করেছে। তাকে আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি তাই। কিছুক্ষন কথা বার্তা শেষ করে আবার সবাই রিকশায় উঠলো। এবার গন্তব্য রেস্টুরেন্ট। সায়ান আজ ট্রিট দিবে। ঈশা রিকশায় উঠে গোমড়া মুখে বসে আছে। অভিমানি কিশোরী মন। হুটহাট কখন তীব্র অভিমান করে বসে তার কোন সময় নেই। ইভান সামনে তাকিয়েই বলল
–ওরা দুজন দুজনকে অনেক দিন থেকেই ভালোবাসে। সায়ান বিদেশে যাচ্ছে পড়ালেখা করতে। তাই বিয়েটা করে রেখে দিতে চায়। কিন্তু সেজ মা আর সেজ বাবা ইলুর এখনি বিয়ে দিবে না। তাই আমিই ওদের বুদ্ধি দেই এভাবে বিয়ে করে রাখতে। সায়ানের পড়া শেষ হলে বাসায় জানিয়ে আবার বিয়ে করবে। এখন আপাতত কয়েক বছরের জন্য সেফ।
ঈশার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল
–ভালবাসার মানুষকে কে হারাতে চায়? ভালবাসার মানুষের হারানোর কথাটা মাথায় আসলে ন্যায় অন্যায় বোধটা না থাকেনা। তখন সেই মানুষটাকে নিজের কাছে ধরে রাখাটাই মুখ্য হয়ে উঠে। আর সেই মানুষটারও মনে যদি একই রকম অনুভুতি থাকে তাহলে তো কথাই নাই। সারা দুনিয়ার সাথে যুদ্ধ করে হলেও তাকে নিজের কাছে আগলে রাখতে চেষ্টা করে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত।
ঈশা এবার শান্ত হল। অভিমানি কণ্ঠে বলল
–আগে বলা জেতনা?
–আগে বললে কি তোর মধ্যে এই ভয়টা দেখতে পেতাম?
ইভানের কথার মানে বুঝতে না পেরে ঈশা আবারো বোকার মতো প্রশ্ন করলো
–কোন ভয়?
–বিশেষ কাউকে হারানোর ভয়। আকাশ সম ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়। পাশে বসে থাকা মানুষটার কাছ থেকে সময় অসময়ে অপ্রত্যাশিত কিছু প্রাপ্তির অপ্রাপ্ত থাকার ভয়।
থেমে আবার ঈশার দিকে তাকাল। মৃদু হেসে আদুরে কণ্ঠে বলল
–ভয় থাকবে তাহলেই তো ভালবাসা দৃঢ় হবে। তবে লজ্জাবতীর এই লাজুকতায় মাখা মুখটায় ভীত হরিণীর মতো ভয়টা অসম্ভব লাগে। চোখ দুটো জুরিয়ে যায় একদম। ভেরি ইম্প্রেসিভ!
ঈশা বড় বড় চোখে ইভানের দিকে তাকাল। চোখে চোখ পড়তেই আবার চোখ নামিয়ে নিলো সে। ইভান খুব যত্ন করে পড়ে যাওয়া ঘোমটাটা তুলে দিলো। সামনে তাকিয়েই বলল
–এই মনে আকাশ হয়ে রয়েছো তুমি। যেই আকাশ শুধুই আমার। আমি যে ভালবাসি এই নীল রঙ। ভালবাসি নীলে জড়ানো এই লজ্জাবতী।
চলবে……?
শুভ্র_নীলের_প্রেমপ্রহর
লেখক- এ রহমান
সুচনা পর্ব
(পাঠকের জন্যই গল্প লেখা। এতো অনুরোধের পরে আর পাঠকদের ভালবাসাকে ফেরানোর ক্ষমতা আমার মতো ক্ষুদ্র লেখকের নেই। আপনাদের জন্য আরও একবার সেই পুরাতন জুটি নতুন নামে নতুন গল্পে। আগেই বলে রাখি এই গল্পটি গতানুগতিক ধারা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা রকমের হবে। স্বাভাবিক প্রেমিক যুগলের কিছু বিশেষ মুহূর্ত আপনাদের কাছে তুলে ধরা হবে। থাকবে না কোন সাসপেন্স। চলবে কি না একটু বড় করে জানাবেন প্লিজ। )