সূর্যশিশির
২৯.
রূপা মধ্যরাতে সেলিনার ফোনে কল করেছিল। দুপুরে আংটি বদল হবে। এখন বাজে সকাল দশটা। অরুনিকা স্বীয় রুমে পায়চারি করছে। কীভাবে বের হবে পথ খুঁজে পাচ্ছে না৷ রূপার এরকম গুরুত্বপূর্ণ দিনে সে থাকবে না তা হতে পারে না। আজিজুর রাতের ফ্লাইটে সিংগাপুর চলে যাবেন৷ তাই ব্যাগ গোছগাছ করছেন৷
অরুনিকা বেশ কিছুক্ষণ পায়চারি করে বুকে সাহস জমিয়ে আজিজুরকে গিয়ে বলল, “পাপা।”
আজিজুর কাজে সচল থেকে বললেন, “বলো।”
“একটু বের হতে চাই।”
আজিজুরের হাত থেমে গেল। তিনি ঘাড় ঘুরিয়ে এমনভাবে তাকালেন যে অরুনিকা ভড়কে গেল। এখন ভয় পেলে চলবে না, নিজেকে শক্ত রাখতে হবে।
অরুনিকা পুনরায় সাহস যুগিয়ে বলল, “আজ ফাইয়াজ স্যার রূপাকে আংটি পরাতে আসবে। আমি যেতে চাই, প্লিজ পাপা।”
আজিজুরের হাত ধরে অনুরোধ করার জন্য অরুনিকা এগিয়ে আসলে, আজিজুর হাত তুলে থামিয়ে দিলেন৷
বললেন, “যেতে পারবে না। আর এটাও ভেবো না, আমি চলে গেলে তুমি ওই মেয়ের কাছে যেতে পারবে। আমি লোক রেখে যাচ্ছি তোমার সব গতিবিধি শনাক্ত করার জন্য। ওই নোংরা এলাকায় কখনো পা রাখার সাহস করবে না।”
অরুনিকা বিস্ময়ে হতবিহ্বল হয়ে গেল, “আমার পিছনে গোয়েন্দা লাগিয়েছো?”
“হ্যাঁ, তাই। এখন রুমে যাও, পড়াশোনা করো। বাইশ তারিখ ব্র্যাকে ভর্তি পরীক্ষা। ভালো করে এক্সাম দিবে। তোমাকে ফার্মেসী নিয়ে পড়তে হবে।”
অরুনিকা অবাক হয়ে বলল, “ব্র্যাক! আমি ব্র্যাকে পড়তে চাই না, পাপা।”
“আমি তোমার ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেব তাই হবে৷”
“পাপা প্লিজ!”
আজিজুর ধমকে উঠলেন, “যাও, রুমে যাও।”
অরুনিকার চোখ ছাপিয়ে জল নামল। দৌড়ে ছুটে গেল রুমে। সেলিনা ঘুমিয়ে ছিলেন। চিৎকার শুনে ধড়ফড়িয়ে উঠে বেরিয়ে এলেন।
এসে বললেন, “কী হয়েছে? চিৎকার করছো কেন?”
“তোমার মেয়ে ব্র্যাকে পড়বে না বলছে। টাকা তো আমি দেব, তার কী সমস্যা পড়তে?”
“জোর করে কি পড়াশোনা হয়? ও যেখানে যে সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে চায়, পড়তে দাও।”
“যেটা ভালো হবে আমি সেটাই করছি। মেয়েকে চোখে চোখে রেখো। যদি মেয়ে হাতছাড়া হয়, আমি তোমাকেও ত্যাগ করব।”
সেলিনার চোখ সজল হয়ে উঠল।
তিনি বললেন, “এই কথা বলতে পারলে?”
আজিজুর জবাব দিলেন না৷ হতভম্ব সেলিনাকে উপেক্ষা করে নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিলেন।
অরুনিকা কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর একটা সিদ্ধান্তে নিল। সে প্রথমে সেলিনার রুমে গেল। সেলিনার ব্যাগ থেকে ক্রেডিট কার্ড চুরি করে আবার নিজের রুমে চলে আসল। পাসওয়ার্ড তার জানা আছে। রূপার জন্য উপহার কিনতে হবে।
অরুনিকা হালকা বেগুনি রঙের শাড়ি পরল, ব্লাউজ পরল, মনমতো সাজল। তারপর চুপিচুপি রুম থেকে বের হলো। উঁকি দিয়ে দেখল, আজিজুর ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছেন। তাকে ড্রয়িংরুম পেরিয়ে দরজা অবধি যেতে হবে। রূপার কাছে যাওয়ার জন্য এতটুকু ঝুঁকি নিতেই হবে।
সে এক হাতে শাড়ির কুঁচি ধরে ভোঁ দৌড় দিয়ে দরজা খুলে দপদপ শব্দ তুলে সিঁড়ি বেয়ে নেমে যায়। ব্যাপারটা এতো দ্রুত ঘটল যে আজিজুর তৎক্ষনাৎ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারলেন না। যখন হুঁশ ফিরল তিনি পিছন পিছন ছুটেও মেয়ের নাগাল পেলেন না। সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত নিচে নামার সামর্থ্য তার নেই। তাই শীঘ্রই দারোয়ানের নাম্বারে কল করলেন। এখুনি গেইট বন্ধ করতে হবে। দারোয়ান ফোন রিসিভ করল না। আজিজুর রাগে হুংকার দিয়ে উঠলেন। অন্য রুম থেকে দৃশ্যটি দেখলেন সেলিনা। তিনি মেয়েকে ছুটে বেরিয়ে যেতে দেখেও কোনো উদ্যোগ নেননি। সারাজীবন ছেলে-মেয়ে, স্বামীর জন্য করেই গেলেন, কেউই তার মন বুঝল না; মূল্য দিল না।
অরুনিকা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে নিচ তলায় এসে হিরণের মুখোমুখি হয়। সে পড়ে যাচ্ছিল, হিরণ ধরল। বলল, “কী হয়েছে? এভাবে ছুটছো কেন?”
অরুনিকা পিছনে তাকিয়ে ঢোক গিলে বলল, “আজ আমার বন্ধু, রূপার এনগেজমেন্ট। পাপা বের হতে দিচ্ছে না। তাই পালাচ্ছি।”
হিরণ মন্ত্রমুগ্ধের মতো অরুনিকার দিকে তাকিয়ে আছে। এতো সুন্দর অরুনিকা! সদ্য প্রস্ফুটিত ফুলের মতো!
অরুনিকা দ্রুত পাশ কেটে চলে যায়। হিরণের সাথে পরে কথা বলা যাবে। আগে পালাতে হবে।
দারোয়ান ঘুমাচ্ছিল। হিরণ মাত্র বাহির থেকে আসায় গেইট খোলা। অরুনিকা দৌড়ে বেরিয়ে যায়।
পিছন পিছন হিরণ আসল বাইক নিয়ে। রাস্তায় এসে অরুনিকাকে বলল, “চলো, তোমাকে পৌঁছে দেই।”
অরুনিকা মিষ্টি করে হাসল। সঠিক সময়ে হিরণ এসেছে।
সে বাইকে উঠে বসতেই হিরণ বলল, “শক্ত করে ধরো, নয়তো পড়ে যাবে।”
অরুনিকা থতমত খেয়ে বলল, “কাকে ধরব?”
“আমি ছাড়া কি আর কিছু আছে ধরার মতো? দ্রুত ধরো, আবার তোমার পাপা চলে আসবে।”
অরুনিকা পিছনে তাকায়। আজিজুর এখনো আসেননি! উত্তেজনায় তার হাতপা কাঁপছে। কণ্ঠমণি শুকিয়ে আসছে। সে শক্ত করে দুই হাতে হিরণের পেট আঁকড়ে ধরল। সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভুত এক ভালোলাগা বুকজুড়ে লুটোপুটি খেতে শুরু করে।
পেটিকোট পরে পালঙ্কে বসে আছে রূপা। সুমনা তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ মা-মেয়ে ব্লাউজ বিড়ম্বনায় পড়ে হতাশ। ব্লাউজের সাইজ ভুল।
রূপা বলল, “আম্মা, আমি শার্ট পরে ফেলি?”
সুমনা ধমকে উঠলেন, “শাড়ির সঙ্গে তুই শার্ট পরবি? আরেকবার কথা বলবি, থাপ্পড় দিয়ে দুই গাল ফাটিয়ে দেব। পাত্রীর জন্য কিছু কেনার আগে যে পাত্রীর সাইজ জেনে নিতে হয় তা কি ওরা জানে না? দাঁড়া, আমি এখুনি কল দিচ্ছি।”
“এইটুকুর জন্য তুমি কল করবে? কেমন দেখায় না। এরকম করো না।”
“তোকে না চুপ থাকতে বলেছি?”
বলেই সুমনা জেসমিনের নাম্বারে কল করলেন।
জেসমিন কল রিসিভ করেই বললেন, “এইতো আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে আসছি।”
“রূপার ব্লাউজ তো বড় হয়ে গেছে৷ ও তো কখনো শাড়ি পরেনি তাই ব্লাউজ নেই৷ আমার ব্লাউজও ওর বড় হয়। আপনাদের বাসায় চৌত্রিশ সাইজের কোনো ব্লাউজ থাকলে নিয়ে আসিয়েন। নয়তো শার্ট-প্যান্ট পরেই বেরিয়ে পড়বে।”
“কী বলেন! আচ্ছা দাঁড়ান, আমি ফাইয়াজকে পাঠাচ্ছি। ও তাড়াতাড়ি গিয়ে পরিবর্তন করে নিয়ে আসবে।”
ফোন কানে রেখেই তিনি ফাইয়াজকে ডাকলেন, “ফাইয়াজ, ফাইয়াজ…কই রে ফাইয়াজ?”
ফাইয়াজের কণ্ঠ শোনা গেল, “কী?”
“ব্লাউজ বড় নিয়ে এসেছিস বোধহয়। রূপার হচ্ছে না৷ দ্রুত গিয়ে পাল্টে নিয়ে আয়।”
তারপর সুমনাকে বললেন, “চুল আচড়ে ছাদে যাচ্ছে, দিয়ে দিয়েন আগেরটা। পরিবর্তন করে আনবে।”
সুমনা ফোন রেখে রূপাকে বললেন, “ফাইয়াজ ওদের ছাদে আসছে। ব্লাউজ দিয়ে আসিস, বলে দিস চৌত্রিশ আনতে। আমি দেখি রান্না কতদূর।”
সুমনা চলে গেলেন। রূপা প্যান্ট-শার্ট পরে নিল। তখনই ফাইয়াজের ডাক শোনা গেল, “রূপা?”
রূপা দ্রুত ব্লাউজ নিয়ে বেরোল। ফাইয়াজ পাশের ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। তার পরনে লাইট গ্রে স্যুট, পায়ে চামড়ার তৈরি গাঢ় বাদামি রঙের জুতা, হাতে ঘড়ি, চুলে নিউ কাট — গ্ল্যামারাস পুরুষ! রূপার মাথার ভেতরটা ভনভন করে উঠে।
ফাইয়াজ বলল, “ঝিমিয়ে হাঁটছো কেন? দ্রুত হেঁটে আসো।”
রূপা দ্রুত হেঁটে গিয়ে হাতের শপিং ব্যাগটি বাড়িয়ে দিয়ে মিনমিনে সুরে বলল, “চৌত্রিশ।”
ফাইয়াজ স্বগতোক্তি করল, “সারাক্ষণ বস্তা পরে থাকলে সাইজ বোঝার সাধ্যি কার!”
গতকাল রূপার পছন্দে শাড়ি, রূপার পায়ের মাপে জুতা নিলেও, জিজ্ঞাসা করার সাহস হয়নি, সাইজ কত! বাঙালি পুরুষের মন বলে কথা, কোথাও যেন বাঁধছিল! সে ঝটপট আন্দাজে বলে দিয়েছিল৷ ভেবেছিল, মিলবে।
ফাইয়াজ ব্যাগ নিয়ে দ্রুতপদে প্রস্থান করল।
রূপা ঘোরগ্রস্তের মতো ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়৷ নিজের গাল ছুঁয়ে দেখে। সে কখনোই ফাইয়াজের মতো পরিপাটি নয়, গ্ল্যামারাস নয়। তার গালে ব্রনের দাগ, রোদে ত্বক পুড়ে গেছে, উজ্জ্বলতা নেই। লম্বা চুল আর উচ্চতা ছাড়া তথাকথিত সৌন্দর্যের কিছুই নেই। রূপার হুট করেই নিজের সৌন্দর্য নিয়ে আক্ষেপ হয়৷
সে ভাবল, “ফাইয়াজ স্যারের সঙ্গে আমাকে মানায় না। আমি এই বিয়েটা করলে সারাজীবন হীনমন্যতায় ভুগব। যে হীনমন্যতা কখনো আমার হৃদয়ে আসেনি, সে হীনমন্যতা আজ, এই ক্ষণে চলে এলো। এই বিয়ে করা উচিত হবে না।”
কিন্তু সে নিরুপায়। বিয়ে না করেও উপায় নেই। রূপা নিজের ভাবনা উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। উজ্জ্বলতাই কি সব? তার মুখের আকৃতি তো সুন্দর।
সে নিজের প্রতি সন্তুষ্ট প্রকাশের জন্য হাসল।
“রূপা!”
রূপা চমকে তাকায়। দরজার ওপাশে অরুনিকা দাঁড়িয়ে আছে! তার সবচেয়ে আপন মানুষটা চলে এসেছে।
দুই বন্ধু উচ্ছ্বসিত হয়ে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরল।
রূপা বলল, “আমি জানতাম তুই আসবি।”
“আমি তোর সব বিশেষ দিনে থাকব, সব দিনে!”
“তুই ছাড়া আমার সব বিশেষ মুহূর্ত অপূর্ণ।”
অরুনিকা মুখ তুলে বলল, “স্যারকে বাইক নিয়ে কোথায় যেন যেতে দেখলাম। এ সময়ে কোথায় গেছে?”
“ব্লাউজ বড় হয়ে গেছে। পরিবর্তন করতে গেছে।”
“স্যারকে কী যে সুন্দর লাগছিল!” অরুনিকা খুশিতে গদগদ।
রূপা হেসে অরুনিকাকে বিছানায় বসিয়ে বলল, “তোর স্যারের সঙ্গে রূপাকে একেবারেই মানাচ্ছে না।”
অরুনিকা রূপার বাহুতে থাপ্পড় দিয়ে বলল, “যা, স্যারের পাশে একবার দাঁড়িয়ে দেখেছিস? আমি তোদের কল্পনা করতে করতে হাঁপিয়ে গেছি। এতো ভালো লাগে পাশাপাশি। এবার বাস্তবে দেখব।”
রূপা হাসল। বলল, “কীভাবে আসলি?”
“শাড়ি পরে, সেজেগুজে দৌড়ে বেরিয়ে চলে এসেছি৷ হিরণ বাইকে করে তোদের বাড়ি অবধি দিয়ে গেছে।”
অরুনিকার চোখমুখ চকচক করছে। চোখে স্পষ্ট খুশি। পরে বাড়ি ফিরলে কী হবে, সেসব ভাবছে না।
রূপা বলল, “হিরণ ভাইয়া কেন দেখা করেনি বলেছে কিছু?”
“ওর এক বন্ধু নাকি এক্সিডেন্ট করেছে। খবরটা শুনে চলে গিয়েছিল। আগামীকাল তুই ফ্রি থাকলে দেখা করবে বলেছে।”
“তুই তাহলে বলে দিস, কাল সকালে যেন লেকে আসে। আগে যেখানে আসার কথা ছিল।”
“বলব।” অরুনিকা রূপাকে জড়িয়ে ধরে বলল, “আমি অনেক খুশি। তোর জন্য সবসময় স্যারের মতো কাউকেই ভেবেছি। আর তুই কী না একবার বেঁটে, আরেকবার ল্যাংড়া এসবের সঙ্গে প্রেম করেছিস! আমি জানতাম তোর জন্য কোনটা পারফেক্ট। এবার মিলল তো?”
রূপা বলল, “বেঁটে, ল্যাংড়া তো কী? ওরা কি মানুষ না?”
“ইশ! তুই সামঞ্জস্যতা বুঝিস না। সমান, সমান হতে হবে না?”
“তাহলে তো বলতে হয়, স্যারের সঙ্গে আমার সামঞ্জস্যতা নেই।”
এই পর্যায়ে এসে অরুনিকা রূপার গালে আলতো করে থাপ্পড় বসাল। বলল, “তুই বেশি বুঝিস। এই দেখ, ব্যাগে করে আবার সব মেকাপ প্রোডাক্ট নিয়ে এসেছি। তোকে আজ মনের মতো সাজাব।”
“এই না, আমি এসব মেকাপ-টেকাপ করব না। শাড়ি পরব এই বেশি। আব্বা, আম্মার মন রাখতে পরছি নয়তো এটাও পরতাম না।”
“আমার মন রাখতে সাজবি।”
রূপা উঠে দাঁড়ায়, “এ তো অবিচার!”
“কখনো তোর অপছন্দের কিছু করিনি। আজ আমি সাজাবই৷ এতোকিছু নয়তো কেন বয়ে আনলাম?”
রূপা এক হাতে অরুনিকার ব্যাগ সরিয়ে তার কোলে মাথা রাখল৷ প্রসঙ্গ পাল্টে সম্পূর্ণ অন্য প্রসঙ্গ টেনে বলল, “অরু, আমি চরম হীনমন্যতায় ভুগছি। স্যার পরে আফসোস করবে না তো?”
“এখনো কীসের স্যার, স্যার করছিস? ফাইয়াজ বল৷ স্যার তরুণ না যে মোহে পড়ে বিয়ে করবে৷ নিশ্চয়ই কিছু পেয়েছে তোর মধ্যে। বা তোকে ভালোবাসে সেই কোচিং থেকে।”
রূপা অবাক হয়ে তাকাল, “কোচিং থেকে!”
“হতেই পারে। বিয়ের পর জিজ্ঞাসা করে নিস। ওহ ভালো কথা, বিয়ে কবে ঠিক হলো?”
“মে মাসের ত্রিশ তারিখ।”
“এতো দেরি কেন? আরো দেড় মাস!”
“আব্বা ধুমধাম করে বিয়ে দিতে চায়, এজন্য।”.
চলন্তিকা বাসের পিছনের সিটে বসে আছে রুমি। তার চোখেমুখে মারের দাগ। নিকাব পরেও চোখের আশেপাশে থাকা দাগগুলো আড়াল করতে পারেনি।
চোখ দুটি জলে ভেজা, ক্লান্ত। ফিরছে নিজের নীড়ে।
একজন বৃদ্ধা বার বার তাকে দেখছে৷ একসময় প্রশ্ন করেই ফেললেন, “ও মেয়ে, তোমার চোখে কী হয়েছে?”
রুমি কথা বলতে গিয়ে টের পেল তার কথা বেরোচ্ছে না। বাম পা অস্বাভাবিকভাবে কাঁপছে।
চলবে…