সূর্যশিশির
১৩.
ল্যাম্পপোস্টের নিয়ন আলোয় সবকিছু কেমন যেন জন্ডিস জন্ডিস লাগছে, যা-ই চোখে পড়ে, সবই হলদে। রূপা নিজ এলাকা ছেড়ে সাইকেল নিয়ে কোলাহলপূর্ণ শহরে প্রবেশ করল। এখানকার ল্যাম্পপোস্টর আলো আবার সাদা। চতুর্দিক ফকফকে লাগে। দুই দিকে বড় বড় বিল্ডিং, শপিংমল, হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজ। সামনে-পিছনে, ডানে-বামে বিভিন্ন গাড়ি। প্রত্যেকে নিজ নিজ ধ্যানে মগ্ন৷ এই শহরে মানুষের থেকে যেন গাড়ি বেশি। রূপা রাস্তার এক পাশ ধরে চলছে। হঠাৎ ট্রাফিক জ্যাম লেগে যায়। কোনো চিপাচাপা জায়গাও নেই সাইকেল নিয়ে যাওয়ার মতো। সঙ্গে সঙ্গে বিরক্তিতে তার কপালে গুটি কয়েক ভাঁজ সৃষ্টি হয়। এই জ্যামের ভয়ে, প্রথমে ভেবেছিল হাইওয়ে রোড দিয়ে নয়াবাড়ি পৌঁছাবে; কিন্তু ওদিকে এক-দুটি চলন্ত গাড়ি সবসময় দেখা গেলেও সাইকেল নিয়ে রাতের বেলা চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া তাকে হাইওয়ে রোড অবধি যেতে হলে বনের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। রোডটির একাংশও বনের ভেতরে পড়েছে। বহুবার সে বনের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করেছে, কিন্তু আজকের মতো অশুভ দিনে এতোটা দুঃসাহস দেখানো উচিত হবে না।
পনেরো মিনিট অপেক্ষার পর জ্যাম ছুটল। রূপা সাইকেল নিয়ে হাওয়ার বেগে ছুটতে শুরু করে। এই মুহূর্তে সে নিজেকে রাজকন্যা আর সাইকেলটিকে পঙ্খীরাজ ঘোড়া ভেবে নিয়েছে।
সাইকেলের বেগ দেখে অনেকেই গ্রীবা ঘুরিয়ে ভীষণ কৌতুহল নিয়ে রূপাকে এবং তার সাইকেলরূপী পঙ্খীরাজ ঘোড়াকে দর্শন করছে।
রাত আটটা ত্রিশ মিনিটে নয়াবাড়ি এসে পৌঁছাল সে। দেড় ঘন্টার রাস্তা চল্লিশ মিনিটে পাড়ি দিয়ে রূপা আনন্দিত৷ পরবর্তী ধাপ হলো, বাড়ি খুঁজে বের করা। সে ফোন বের করে মেসেঞ্জারে গেল। পুনরায় খরিদ্দারের ঠিকানায় চোখ বুলিয়ে নিল। সেখানে লেখা –
নাম: রাহাতি মণি।
ঠিকানা: নয়াবাড়ি, বি ব্লক। রোড নাম্বার: ৬, বাসা নাম্বার: ৭৮।
ফোন নাম্বার: ০১৭********
রূপা ফোন পকেটে রেখে একজন পথচারীকে ডেকে বলল, “একটু শুনবেন, প্লিজ।”
পথচারী উৎসুক হয়ে দাঁড়াল। রূপা বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাইল, “বি ব্লকটা কোনদিকে বলতে পারবেন?”
পথচারী অঙ্গুলিনির্দেশে একটা রাস্তা দেখিয়ে বলল, “ওই রাস্তা ধরে বামে যাবেন।”
রূপা হাস্যমুখে বলল, “আচ্ছা, থ্যাংক ইউ।”
সে মিনিট বিশেক সাইকেল নিয়ে হাঁটার পর কাঙ্খিত ছয় নাম্বার রোডের আটাত্তর নাম্বার বাড়িটি খুঁজে পেল। রোডের শেষ প্রান্তের পুরনো, জীর্ণশীর্ণ এক তলা বাড়িটিই রাহাতি মণির।
বাড়ির সামনে তিনটে কুকুর শুয়ে আছে। রূপাকে দেখে দু’টো কুকুর ঘেউঘেউ করে দাঁড়িয়ে পড়ল। তৃতীয় কুকুরটি তখনও শুয়ে ছিল। রূপা কুকুর অথবা কুকুরের চিৎকার কোনোটাই ভয় পায় না। তাই সে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে এল। কাছে আসতেই কুকুর দু’টো চিৎকার থামিয়ে কুঁই কুঁই করতে লাগে। শুয়ে থাকা কুকুরটিও গা ঝাড়া দিয়ে উঠে পড়ল।
রূপা সাবধানে প্রথম কুকুরটির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, “তোরা কি বন্ধু? একসঙ্গে থাকিস?”
কুকুরগুলো প্রত্যুত্তরে কিছু না বলে লেজ নাড়িয়ে অন্যদিকে চলে যায়। রূপাও আশা করেনি জবাবের। বোবা প্রাণী বলবেই বা কী!
সে বাড়িটির সামনে গিয়ে দেখল, গেইটটি হাট করে খোলা। রূপা গেইটে শব্দ করল। ভেতর থেকে সাড়া মিলল না। বেশ কয়েকবার শব্দ করার পর, একজন মধ্য বয়স্কা মহিলা বেরিয়ে এল। রূপা তৎক্ষনাৎ হেসে বলল, “আসসালামু আলাইকুম, আমি বারিধি রেস্টুরেন্ট থেকে এসেছি। একটি অর্ডার ছিল।”
রূপার কথা শুনে মহিলা অদ্ভুতভাবে তাকালেন। বললেন, ” কীসের অর্ডার? কে দিল? কী নিয়া আসছো?”
মহিলার প্রতিক্রিয়া দেখে রূপা অপ্রস্তুতবোধ করল। পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, “জন্মদিন উপলক্ষে রাহাতি মণি নামে একজন দশ জনের কাচ্চি অর্ডার করেছিলেন। আমাকে এই ঠিকানা দেয়া হয়েছিল।”
মহিলা উল্টোদিকে মুখ ঘুরিয়ে বাসার অভ্যন্তরে থাকা কাউকে গমগমে গলায় বললেন, “দেখছ কারবার? সংসার চলে না আর তোমার মাইয়া বন্ধুবান্ধবদের খাওয়াতে কাচ্চি অর্ডার দিছে। আমি চাইলেই শুধু টাকা নাই। কী যে পেটে ধরছিলাম!”
এসব কথাবার্তা কেউ বাইরের মানুষের সামনে উচ্চারণ করে? রূপার হাঁসফাঁস লাগে, অস্বস্তিতে পড়ে যায়৷
ভেতর থেকে পাল্টা জবাব এল, “ওর টাকা ও কি করবে ওর ব্যাপার। তুমি এত মাথা ঘামাচ্ছ কেন?”
মহিলা প্রতিত্তরে সন্তুষ্ট হলেন না। অপ্রসন্ন মুখে রূপার দিকে তাকালেন৷ প্রশ্ন করলেন, “টাকা কী দিয়ে দিছে? ”
রূপা ঠোঁটে হাসি ধরে রেখেই বলল, “কিছু বাকি।”
“কত বাকি?”
“১৬৫০ টাকা।”
“ওহ, আচ্ছা। তুমি বরং এখানে অপেক্ষা করো, মণি কেনাকাটা করতে গেছে। চলে আসবে।”
রূপা বিনীতভাবে বলল, “অনেক দূর থেকে এসেছি, অপেক্ষা করলে রাত হয়ে যাবে। যদি…”
তাকে কথার মাঝে আটকে দিয়ে মহিলা বিরস বদনে বললেন, “বাসায় এতো টাকা নাই। তুমি অপেক্ষা করো।”
রূপাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে মহিলা হনহনিয়ে বাসার ভেতর চলে যায়। রূপা হতাশ ভঙ্গিতে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। সাইকেল এক পাশে রেখে তার উপর হেলান দিয়ে দাঁড়াল। তারপর মণির নাম্বারে কল করল। বের হওয়ার আগে মণিকে জানিয়েছিল, সে পার্সেল নিয়ে আসছে।
তবুও মেয়েটা কেনাকাটা করতে চলে গেছে! অন্তত টাকাটা বাসায় রেখে যেত। হয়রানির মানে কী?
সে বেশ কয়েকবার কল করেও মণিকে পেল না।
কল যায় কিন্তু রিসিভ হয় না৷ ফোন সাইলেন্ট বোধহয়।
এরইমধ্যে মণির চার-পাঁচ জন বন্ধু বান্ধব এসে পৌঁছায়। দুটো মেয়ে, তিনটে ছেলে। তারা এমনভাবে রূপার দিকে তাকায় যেন বিচিত্র কিছু দেখছে। রূপা সেসব তোয়াক্কা করল না। সে পুনরায় মণিকে করল৷ এবারও রিসিভ হলো না।
মশার যন্ত্রণায় এখানে টিকে থাকাও যাচ্ছে না৷ ছেলেমেয়ে গুলো ভেতরে যেতেই রূপা সাইকেল নিয়ে গেইটের নৈকট্যে এসে দাঁড়াল। এখানে মশা কম।
মুহূর্তখানেক পর বাসার ভেতর থেকে একটা ছেলে বেরিয়ে এসে সন্দিগ্ধ কণ্ঠে বলল, “তখন থেকে এখানে দাঁড়িয়ে আছেন, কাউকে দরকার ?”
“রাহাতি মণির জন্য অপেক্ষা করছি।”
“কোনো দরকার ছিল?”
“জি, উনার একটা অর্ডার ছিল।”
“কী অর্ডার করেছে?” ছেলেটির চোখেমুখে কৌতুহল। বয়স বিশ কী একুশ হবে!
রূপার কথা বলতে বিরক্ত লাগছে৷ কিন্তু কিছু করার নেই। যেহেতু ছেলেটি খরিদ্দারের বন্ধু, টাকা না পাওয়া অবধি সহ্য করে নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। রূপা বলল, “কাচ্চি বিরিয়ানি।”
ছেলেটি অবাক হয়ে বলল, ” কাচ্চি অর্ডার করেছে! আর আমাদের কিনা বলল, নিজের হাতে রেঁধে খাওয়াবে। কি মিথ্যুকরে বাবা! আজ আসুক, আচ্ছামত ধোলাই দেব।”
রূপা কিছু বলল না। ছেলেটি বলল, “আচ্ছা ওয়েট, আপনার কণ্ঠটা মেয়েদের মতো… আপনি মেয়ে?”
এতোক্ষণে খেয়াল হলো সামনে থাকা মানুষটি মেয়ে! রূপা দায়সারাভাবে বলল, “জি।”
ছেলেটি হেসে বলল, “বুঝতেই পারিনি। আপনি ভেতুরে আসুন না, এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?”
“সমস্যা নেই। এখানেই ভালো লাগছে।”
“আন্টি কি আপনাকে ভেতরে যেতে বলেননি? মেয়ে মানুষ রাতের বেলা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। আসুন ভেতরে আসুন।”
রূপা দৃঢ় কণ্ঠে জানাল, “আমি অচেনা মানুষদের মাঝে স্বস্তিবোধ করি না।”
“আপনি তো আচ্ছা ঘাড়ত্যাড়া। আচ্ছা, থাকুন।”
ছেলেটি বাড়ির অভ্যন্তরে চলে গেল। হয়তো রূপাকে বখাটে ভেবে যাচাই করতে এসেছিল।
_
অন্যদিন মহ্নরগরিতে রাত বাড়লেও আজ যেন দ্রুত রাত বাড়ছে। ছয় নাম্বার রোডটিও এই মুহূর্তে জনমানবহীন হয়ে ওঠেছে৷ কিছুক্ষণ আগে এক – দুটো মানুষ ছিল। এখন সবাই নিজ নিজ ফ্ল্যাটে অবস্থান করছে। শুধু রূপা ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে রইল একা একা।
বারংবার সে রাহাতি মণিকে কল করছে। মেয়েটা রিসিভ করছে না। কী হলো তার?
হঠাৎ ফোন বেজে ওঠল। বারেক মিয়া কল করেছেন! রূপা ঠোঁট কামড়ে ভাবল, রিসিভ করবে নাকি। সাত-পাঁচ ভেবে রিসিভ করেই বলল, “এইতো আব্বা, চলে আসছি। চিন্তা করবেন না।”
তারপর কল কেটে দিল, বারেককে কোনো বাক্য উচ্চারণের সুযোগ অবধি দিল না। বারেক বেশ কয়েকবার কল করলেন, রূপা রিসিভ করল না।
রাত দশটা বিশে আটাত্তর নাম্বার বাড়ির সম্মুখে একটি সাইকেল এসে থামল। সাইকেলে থাকা লোকটি রূপাকে দেখে অবাক হলো। এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল, “আপনি কে? এখানে কী করছেন?”
রূপা বিরক্তি নিয়ে বলল, “সেটা আপনাকে কেন বলব?”
লোকটি বলল, “আমার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, আমাকে বলবেন না কেন দাঁড়িয়ে আছেন?”
রূপা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাল না। খরিদ্দারের বাড়ির লোক তাই আবারও তাকে ধৈর্য ধরতে হবে৷ সে কণ্ঠ স্বাভাবিক করে বলল, “রাহাতি মণির একটি অর্ডার ছিল। তার জন্য দেড় ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি। অথচ তার আসার নাম নেই।”
সে যে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত তা তার চেহারা দেখে ও কণ্ঠ শুনে বোঝা যাচ্ছে।
“মণি ফিরেনি এখনো? ও তো বিকেলে বেরিয়েছিল, এখনো কেন ফিরেনি?” বলতে বলতে লোকটি উদগ্রীব হয়ে ওঠল।
রূপা বিরস মুখে বলল, “আমি কী জানি?”
লোকটি রূপাকে অবাক করে দিয়ে বলল, “পার্সেলটি আমাকে দিন। আপনার টাকা বাকি আছে? থাকলে বলুন কত বাকি? আমি দিচ্ছি।”
মুহূর্তে রূপার চোখমুখে ছড়িয়ে পড়ে জেল্লা। সে তুরন্ত পার্সেলগুলো এগিয়ে দিয়ে বলল, “১৬৫০ টাকা বাকি।”
লোকটি সতেরো’শ টাকা দিয়ে বলল, “ভাংতি নেই। পরেরবার মণি কিছু অর্ডার করলে পঞ্চাশ টাকা কেটে নিয়েন।”
রূপা অত্যন্ত নম্রভাবে বলল, “থ্যাংক ইউ স্যার।”
লোকটি চলে যেতেই রূপা প্রফুল্লচিত্তে টাকাটা মানিব্যাগে রেখে অরুনিকাকে কল করল। ওপাশ থেকে ভেসে এল, “…সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”
এই কয়েকটি শব্দ রূপার কাছে অপ্রত্যাশিত!
অরুনিকা কখনো ফোন বন্ধ রাখে না। রূপা উৎকণ্ঠিত হয়ে বার বার চেষ্টা করতে থাকল, দূর্ভাগ্যবশত বার বারই ফোন বন্ধ পেল। কী হচ্ছে তার সাথে?
সে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিল, প্রথমে অরুনিকার কাছে যাবে। পাব্লিক রোড দিয়ে গেলে দেরি হবে। তাছাড়া অরুনিকার বাসা হাইওয়ে রোডের কাছাকাছি। তাই সে হাইওয়ে রোড দিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। রোডে ওঠার পূর্বমুহূর্তে থামল। ভাবল, যাওয়া ঠিক হবে নাকি!
চারপাশে তখন সুনসান নীরবতা। মাঝেমধ্যে একটা দুটো গাড়ি দেখা যাচ্ছে৷ ঢাকা হরতাল বলে ঢাকাগামী কোনো গাড়ির সাক্ষাৎ মিলছে না।
অরুনিকার ফোন কেন বন্ধ? সেই দুশ্চিন্তায় নিমজ্জিত হওয়ায় রূপার সিদ্ধান্ত নিতে বেগ পেতে হলো না। সে হাইওয়ে রোড ধরে এগোতে থাকে।
একসময় সে বনের কাছাকাছি চলে এল। বনের মধ্যখান দিয়ে হাইওয়ে রোড চলে গেছে বহুদূরে। বনে প্রবেশ করার মিনিট পাঁচেক পর সে দূর থেকে দেখতে পেল, কালো পোশাকে আবৃত কিছু একটা বাম পাশের ঘন ঝোপ থেকে ডান পাশে ছুটে গেল। রূপা চমকে ওঠে৷ সে থেমে যায়। হৃৎপিণ্ডের সংকোচন বেড়ে যায়। পিছনে তাকিয়ে দেখে, কোনো গাড়ি আসছে নাকি। নির্জনতাকে ভেঙে একটা ট্রাক এগিয়ে আসছে।
ট্রাকটি কাছে আসতেই সে ট্রাকটিকে অনুসরণ করতে শুরু করল। তার পরিকল্পনা, সে ট্রাকটির পিছু নিয়ে বন পেরোবে। একা বন পেরোবার সাহস হচ্ছে না। কিন্তু শীঘ্রই তার পরিকল্পনা ভেস্তে গেল। ক্ষীণ আলোর রোডটিতে তাকে একা ফেলে ট্রাকটি চলে গেল দূরে। ট্রাকের গতির সাথে কি আর সাইকেলের গতি পারে? ট্রাকটি তার থেকে যখন অনেকটা দূরে তখন বন থেকে একটি তেজস্বী আলো এসে পড়ে চোখেমুখে। সঙ্গে সঙ্গে রূপা সাইকেলের ভারসাম্য হারিয়ে, সাইকেলসহ উল্টে পড়ল সামনে।
চলবে…