গোধূলি বেলায় তুমি এসেছিলে দ্বিতীয় খন্ড (পর্ব ১৩)

0
433

#গোধূলি_বেলায়_তুমি_এসেছিলে
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১৩ (২য় খণ্ড)

“অভিরূপ তোমার যত্ন করতে বলে গেলেন যে। না করলে আবার মনঃক্ষুণ্ন হবেন।”

অক্ষিগোলক আকারে বৃহৎ হলো রূপাঞ্জনার। রাগিনীর মাত্র বলা কথাটি তার কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে বটে। যেই মানুষটি ভ/য়াবহ রাগ দেখিয়ে কিছুক্ষণ আগে চলে গেল সেই মানুষটি কিনা তার যত্ন নিতে বলেছে ভাবতেই পারছে না সে। রাগিনী এবার সাহস করে হাতে স্যুপের বাটি ধরল। চামুচ দিয়ে নাড়িয়ে বেশ যত্নের সঙ্গে ফুঁ দিতে আঁড়চোখে তাকাল রূপার পানে। এতক্ষণ সে কথা বলে যাচাই করে দেখছি রূপার হাবভাব। মেয়েটিকে এখন ঠিকঠাক লাগছে তার। ভয় লাগছে না। তার চোখ এবং কথার বলার ধরণে সে বুঝে নিয়েছে সে আসলেই অসুস্থ। চামুচ দিয়ে স্যুপ তুলে রূপার মুখের দিকে ধরতেই আবারও আগের মতো অবাক চোখে তাকাল রূপা। তার সবটা অবিশ্বাস্য লাগছে। তবুও সে হা করে চুপ মুখে নিয়ে গিলে বলল,
“উনি বলেছেন আমার যত্ন নিতে?”

“বলেছেন তো। এমনিতেই তো কম বিরহে ভোগেন নি।”

“বিরহ? কীসের বিরহ?”

মুচকি হাসে রাগিনী। রূপার প্রশ্নের উত্তরটা সে তো নিজেই। এই ভেবে আরো হাসিটা প্রগাঢ় হয়। ক্ষীণ সুরে প্রশ্ন করে,
“কখনো কাউকে ভালোবেসেছ?”

রূপার কপালে ভাঁজ পড়ল এবার। সময় না নিয়ে নির্লিপ্তে বলে দিলো,
“না।”

“তাহলে বাদ দাও। উনার বিরহ তুমি বুঝবে না।”

রূপা দম ফেলে ফেলে খেতে থাকল। সামান্য স্যুপ গিলতেও তার ক/ষ্ট হচ্ছে। বেশ সময় নিয়ে কিছু একটা ভেবে ফট করে বলে উঠল,
“উনি বোধহয় তোমার প্রেমে পড়েছিলেন আর তুমি তো ওই অফিসারকে ভালোবাসো। তোমাদের তো বিয়ে হওয়ারও গুঞ্জন উঠেছিল। এখনো গুঞ্জনটা সচল। তুমি বিয়ে ভে’ঙে দিয়েছ। সেকারণেই উনার মন খারাপ তাই না?”

এমন বোকা কথায় এবার বেশিই হাসি পেয়ে যায় রাগিনীর। বাটিটা হাত থেকে নামিয়ে খিলখিলিয়ে হেঁসে দেয় সে। রূপার বেশ লাগে তার হাসির শব্দে। মেয়েটার হাসি দারুণ সুন্দর। একপলক দেখেই কোনো পুরুষ প্রেমে পড়া কোনো ব্যাপারই নয়। রাগিনী হাসতে হাসতেই ফের খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে বলে,
“বোকা মেয়ে তুমি।”

“ওহ এই ব্যাপার নয়?”

রাগিনী মাথা এপাশ-ওপাশ নাড়াল। খাওয়ানোর মাঝে রাগিনী আগ্রহের সাথে জিজ্ঞেস করল,
“তোমার নামই তো জানা হলো না। কী নাম তোমার? এবার প্লিজ সত্যিটা বলবে।”

“রূপা আমার নাম। রূপাঞ্জনা।”

“পুরো নাম? মানে পদবী নেই?”

রূপার মুখে ফ্যাকাশে আভা দেখা দিলো এবার। কিঞ্চিৎ সময় আগে এক অন্যরকম উজ্জীবিত চেহারা কালো হয়ে এলো। তাকে এমন চুপচাপ দেখে খাওয়া থামাল রাগিনী। রূপা থেমে থেমে বলল,
“আমার কোনো পদবী নেই। কোনো বেজ* বাচ্চার পদবী থাকে কখনো? আমারও ঠিক তেমনই নেই।”

“তোমার মা-বাবা নেই?”

ঢক গিলে জিজ্ঞাসা করে রাগিনী। রূপা প্রতিত্তোরে থমথমে সুরে বলে,
“না। আমি আদেও জানি না কারা আমায় জন্ম দিয়েছিল। আর কারাই বা রাস্তার ডাস্টবিনে ফে/লে দিয়েছিল। হবে হয়ত কোনো প/তিতা বা যেই সম্পর্কের কোনো নাম নেই সেই সম্পর্ক থেকে জন্ম নেওয়া এক সন্তান। যার হাত ছড়িয়ে বাঁচার অধিকার নেই। হয়ত বাঁচতামও না। যদি গবেষক বাবা না বাঁচাতেন।”

“গবেষক বাবা?”

“হ্যাঁ। তিনি আমায় রাস্তার ওই ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার করেছিলেন। বড়ো করলেন। আমাকে উনিই বলেছিলেন জানো তো! যে মানুষের ক/ষ্ট এবং লাল র/ক্ততে আলাদা শান্তি মেলে। আমি খুব ছোটোবেলায় সবার আগে একটা ছোটো বাচ্চাকে মে/রে তার মাথা ফ/টিয়ে ফেলেছিলাম। তাও উনার কথায় সাহস করে। আর সত্যি বলতে ওইদিন ওই কান্না আর র/ক্ত দেখে অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করছিল আমার। গবেষক বাবা আমায় আরো বেশি উৎসাহ দিতো। আমি সবাইকে সামান্য কারণে মা/রতাম। বড়ো হতে হতে উনি হঠাৎ মা/রা গেলেন। মা/রা যাওয়ার আগে শেষ মেসেজ ছিল আমি যেন তার তৈরি করা প্রতিটা সদস্যদের পরিচালনা করি। শক্তহাতে তার প্রতিজ্ঞা করা পূরণ করতে সাহায্য করি। তার প্রতিজ্ঞা ছিল তিনি একদিন পুরো দে/শে আ/তঙ্ক সৃষ্টি করে সকলের রাজা হয়ে উঠবেন। উনার এই অদ্ভুত চাহিদা কেন ছিল জানি না। সবার ইচ্ছে তো একরকম থাকেনা। অনেকেই অনেক ভ’য়ঙ্কর ইচ্ছে মনে পোষন করে। উনিও তেমন ছিলেন।”

রাগিনী তেমন কিছু বলল না এবার। মনোযোগ দিয়ে শুনে থম মে’রে বসে রইল। খাওয়ানোটাও বন্ধ হলো তার। কী বলবে বুঝে উঠতে পারল না। একটা অবহেলিত সদ্য জন্মানো সন্তানের জায়গা যখন হয় রাস্তার ডাস্টবিনে তখন তার ভবিষ্যৎ যে খুব একটা ভালো হয় না সেটা রাগিনীর অবগত। একটা বাচ্চা বড়ো হয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার জন্য সঠিক শিক্ষার পাশাপাশি সে যেই পরিবেশে বেড়ে ওঠে সেই পরিবেশটা সুন্দর এবং সৎ হওয়া ভীষণ প্রয়োজন। পৈশা/চিক এবং ভ/য়ানক পরিবেশে বেড়ে উঠলে শিশুটার মনোভাবও একইরকম হতে থাকে। তার হরমোনে সেইসব কার্যক্রম জায়গা করে নেয়। বেশ ভাবনাচিন্তা করে রাগিনী বলল,
“প্রাণ নেওয়াতে কোনো আনন্দ নেই রূপা বিশ্বাস করো। একটা মানুষের প্রা’ণ নিলে সেই পরিবার বি/ধ্বস্ত হয়। সেই পরিবারের প্রধান সদস্য সে হয় তবে তো কথায় নেই। এভাবে কত পরিবার ধ্বং/স হয়েছে তার ঠিক নেই।”

রূপাঞ্জনা যেন মানতে চাইল না রাগিনীর কথা। কিছুটা শক্ত চাহনিতে তাকাল সে। কড়া গলায় জবাব দিয়ে উঠল,
“তাতে আমার কী? আমার তো পরিবার নেই। তবে অন্যদেরটা কেন দেখতে যাব আমি?”

বলেই নিজের মাথাটা চেপে ধরল সে। তার মাথাটা এমন চাপে হঠাৎই অসহ্য য/ন্ত্ণা শুরু করে দিয়েছে। যেন চিন্তাশক্তি কাজ করছে না। লোপ পাচ্ছে ভাবনাগুলো। তবে তার এমন দৃঢ় কণ্ঠেই রাগিনী হুট করেই ভড়কে গেল। হুড়মুড়িয়ে উঠে যেতে লাগলে রূপা এবার জোর গলায় বলল,
“প্লিজ বসো। আমার ভালো লাগছে না। মাথাব্য/থা করছে।”

রাগিনী ঘর থেকে বেরিয়ে না গেলে উঠে দাঁড়িয়ে রইল। রূপার হুটহাট এমন ব্যবহার তার মনে ভীতি তৈরি করছে। এরপর আরেকটা কথা বলে বসে রূপা। মাথার চুল ধরেই অনুরোধ করে বলে,
“আমি পালিয়ে এসেছি ওই দল থেকে। প্লিজ আমায় পুলিশে দিও না। আমি বাঁচতে চাই তোমাদের মতো।”

রাগিনী বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তার হঠাৎ এমন কথার তার মস্তিষ্ক ফাঁকা করে দিয়েছে। সে রূপার পাশে বসতে চাইলেও বসল না। ভয় ভয় করছে ভীষণ। রূপা আবারও বিরতি নিয়ে বলে,
“আর ওই অভিরূপ চৌধুরী বলে দেবে উনাকে মা/রার জন্য আমাদের টিম ওত পেতে আছে। জাস্ট একটা সুযোগ চাই তাদের। তাহলেই ওরা উঠেপড়ে লাগবে। আমি প্রথমবার উনাকে এয়ারপোর্টে শে/ষ করে দিতে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু ওইবার সফল হইনি। এরপর উনার সাথে দেখা হয় এক জঙ্গলে। আমি কিছু ব/খাটে ছেলের খপ্পরে পড়েছিলাম। উনি আমাকে রাগিনী মানে তুমি মনে করে বাঁচিয়েছেন। এরপরও আমি প্ল্যানিং করা থামাই নি। তোমাদের ঘুরতে যাওয়ার দিনও আমি উনার সঙ্গে যাই। কিন্তু উনি আমায় সেদিন বাঁচিয়ে মনে যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেন সেটা আমি অতিক্রম করতেই পারিনি। আমি উনার মৃ;ত্যু দেখার আগে ম/রে যাব। তাও উনাকে ম/রতে দেখতে পারব না। উনাকে পারলে উনার দেশে চলে যেতে বলো।”

রাগিনী নীরব রইল বেশ কিছুক্ষণ। কেন যেন তার মনটা পু/ড়ছে এই মেয়েটির কথায়। কোথাও একটা বি;ষাক্ত অনুভূতি ছেয়ে গিয়েছে কিছু মুহূর্তেই। সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠছে পলকে পলকে। ঢোক গিলে নিজেকে ধাতস্থ করার প্রচেষ্টায় সে বলল,
“তুমি যদি এই পুরো ক্রা/ইম টিমকে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করো তাহলে তোমার শা/স্তি হয়ত কমে যাবে। তুমি কি বলতে পারো না? ওরা এখন কোথায় আছে? ওদের নেক্সট প্ল্যানিং কী?”

এলোমেলো চুলে অবসাদগ্রস্ত মুখে রাগিনীর পানে তাকায় রূপা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“আমি পারব না বলতে। ওরা যেখানে ছিল এতক্ষণে তারা নিজেদের জায়গায় পরিবর্তন করে নিয়েছে আমি পালানোর খবর পেয়ে। ওখানে গিয়ে লাভ হবে না। আর গত কয়েকদিন ওরা আমায় অসুস্থ করে রেখেছিল। প্ল্যানিং-এ অংশগ্রহণ করা তো দূর আমাকে ওরা নিজেদের পরিকল্পনা জানতেও দেয়নি।”

রাগিনী আরো কিছু বলতে চায়। তবে পেরে ওঠে না। মাঝখানে হাজির হয় অভিরূপ। দরজাটা ঠা/স করে খুলতেই ঘরে থাকা দুজনই চকিতে তাকায়। ঘরে গাম্ভীর্যের সাথে প্রবেশ করে বলে,
“দরজাটা লাগিয়ে কথা বলা উচিত ছিল রাগিনী। কেউ যদি চলে আসত। আর ওকে দেখে ফেলত?”

রাগিনী মাথা নুইয়ে মিনমিন করে বলে,
“সরি। খেয়াল করিনি।”

“আমার ওর সঙ্গে কিছু কথা আছে সো…”

রাগিনী অভিরূপের কথা শেষ হওয়ার আগেই বুঝে নিয়েই মাথা দুলিয়ে বলে,
“কিপ ইট আপ। কিন্তু সাবধান। ওকে বেশিক্ষণ লুকিয়ে রাখা সম্ভব হবেনা। সৈয়দ কাকা আমায় জিজ্ঞেস করছিলেন কেন আমি হঠাৎ স্যুপ বানাতে গিয়েছি। এমন হলে ধরা পড়ে যাব। সো প্লিজ…”

অভিরূপ দুটো চোখ বন্ধ করে আবার খুলে রাগিনীকে আশ্বস্ত করে। আর কোনোরকম বিলম্ব না করে বেরিয়ে যায় রাগিনী। সঙ্গে সঙ্গে দরজা আঁটকে দেয় অভিরূপ। সরাসরি এসে রূপাঞ্জনার মুখোমুখি বসে।

নিজের ঘরে বসে বসে কিছু সিসিটিভি ফুটেজ মেলানোর চেষ্টা করছিল মেহরাজ আর কোহিনূর। ব্যস্ত হয়ে দুজনই ভ্রু কুঁচকে বারংবার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চলেছে। আজ আরেকটা কয়েকটা বাচ্চা ছেলেমেয়ে অপ/হরণ হয়েছে। তাও আবার শপিংমল থেকে। খবরটা ছড়িয়ে পড়ার পর মিডিয়া বেশ গরম হয়ে উঠেছে। টান টান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টা প্রথমে রায়ানকে সলভ করতে দিলেও পরবর্তীতে কোহিনূর শুনে মনে করে এটাও সেই আ;তঙ্কবা’দীদের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই সেও পা/গলের মতো খুঁজে চলেছে যেকোনো এভিডেন্স! যাই হক ফুলের মতো বাচ্চাদের প্রা/ণ ঝরতে দেওয়া যায় না। কিন্তু এই ব্যস্ত সময়ে গুটিগুটি পায়ে কোহিনূরের ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়াল নয়নতাঁরা। প্রথমে দেখে নিলো নিজের ভাইকে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সাহস সঞ্চয় করে ঢক গিলে ডেকে উঠল,
“বিগ ব্রাদার!”

কোহিনূর দেরি না করে তৎক্ষনাৎ কড়া গলায় জবাব দিলো,
“আমার কাছে এখন টাইম পাস করার মতো সময় নেই নয়ন। নিজের ঘরে যাও। যা ইচ্ছা করো। ডোন্ট ডিস্টার্ব মি!”

“আমার কিছু ইম্পর্ট্যান্ট কথা ছিল।”

ল্যাপটপ থেকে চোখ তুলে তাকায় এবার কোহিনূর। এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বলে,
“তোমার কথা তো সবসময় শুনি। বাচ্চাদের থেকে ইম্পর্ট্যান্ট নিশ্চয় নয়।”

“কথাটাও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। বিলিভ মি!”

কোহিনূর কিছু না বলে বড়ো শ্বাস নিলো একটা। যখন তখন নয়নের এত আবদার শোনা তার পক্ষে সম্ভব নয়। সে কথার উত্তর না দিয়ে ল্যাপটপে মন দিয়ে স্ক্রিনে থাকা একটা লোককে দেখিয়ে বলল,
“এটাকে চেনা চেনা লাগছে মেহরাজ। একে কি আগেও কোথাও ধরেছিলাম?”

“চেক করতে হবে স্যার।”

মেহরাজের কথার মাঝে আবারও বাগড়া দিলো নয়নতাঁরা। চিল্লিয়ে বলল,
“বিগ ব্রাদার! লিসেন টু মি!”

“গো টু ইউর রুম নয়ন, ফর গড সেক!”

“ভাবিজানের বাড়িতে ওই বহুরূপী মেয়েটা অবস্থান করছে, বিগ ব্রাদার!”

কথাটা কানে পৌঁছানো মাত্র টনক নড়ল এবার কোহিনূরের। মেহরাজও হতবিহ্বল হয়ে তাকাল। ভুল শুনেছে কিনা ঠিক শুনেছে তা যাচাই করতে ব্যস্ত হলো। কোহিনূর উঠে দাঁড়াল। নয়নের দিকে এগোতে এগোতে বলল,
“কোন বহুরূপী? কার কথা বলছ?”

নয়ন মাথা নুইয়ে ফেলে এবার। সে বলতে চায়নি তার ভাইকে এসব কথা। ভেবেছিল রাগিনী নিজে এসে বলবে। কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি। তাই নিজে বলতে এসেছে সকলের ভালো ভেবে তাদের ভালো করার প্রত্যাশায়। শীতল গলায় বলল,
“ভাবিজানের মতো দেখতে হুবহু যে! যাকে নিয়ে এত সন্দেহের সৃষ্টি। যাকে নিয়ে এত শোরগোল। তাকে ভাবিজান নিজে ওই বাড়িতে রেখেছে। সিঙ্গার অভিরূপ চৌধুরীর অনুরোধে সে কাউকে কিছু বলেনি।”

কোহিনূর অবিশ্বাস্য চোখে তাকায়। হতবাক হয়। নিজের কপালে হাত রেখে বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে কুঁচকিয়ে বিস্মিত হয়ে বলে,
“কী বলছ তুমি? তোমার ধারণ আছে তুমি কীসব বলছ? রাগিনী কেন এমন করবে? ওই অভিরূপ চৌধুরীই বা কেন এমন করবে?”

“আমি নিজে শুনেছি। আমি যখন তাদের বাড়ি যাই তখন ভাবিজানকে খুঁজতে গিয়ে আমি অভিরূপের ঘরের দিকে যাই। তাদের আড়ালে বলা কথোপকথন আমার কানে আসে। অভিরূপ অনুরোধ করছিলেন। আই এম সিউর ওই মেয়েটা ওখানেই আছে। আমি ভুল বলছি না।”

কোহিনূর নির্বাক হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে। বাকশক্তি কেঁ/ড়ে নিয়েছে কেউ। মাথা প্রতিটা রগ যেন ফে/টে যাচ্ছে। বিশ্বাসযোগ্য লাগছে না কিছুই। আবার ভুলও মনে হচ্ছে না। কোনো পদক্ষেপ কি নেওয়া উচিত?

চলবে…

[বি.দ্র. গল্প দিতে দেরি হয়ে গেল। দুঃখিত। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here