#শ্রেয়সী
#পর্ব_১১
#লেখনীতে_নাদিয়া_সিনহা
বাড়ি থেকে এসে রোদ্দু কয়েক দফা হাহুতাশ করে ফেলেছে। এত জলদি বাড়ি থেকে ফেরায় সে বেশ নারাজ। আমার উপর প্রবল বেগে ক্ষেপে আছে। মনে হয় যেনো যখন তখন হামলে পরবে আমার উপর। আমিও যথা সম্ভব দূরত্ব বজায় রেখে চলছি। বলা তো যায় না রোদ্দু যা পাগল যদি আমাকে খামচে দেয়। তখন আবার আরেক বিপদ। আমি কেবল অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি রোদ্দুর পানে৷ জোরে জোরে ফুপিয়ে কাঁদছে মেয়েটা। আমি কিয়ৎক্ষন পরপর তার দিকে দৃষ্টি আবদ্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলছি। হঠাৎ ফোনে কল আসে। সেদিকে তাকাতেই নুসুর নম্বর চোখের পরে। সময় ব্যায় না করে কল রিসিভ করি। ওপাশ থেকে বেশ ব্যস্ত কন্ঠে বলে,
-“শ্রেয়ু কই তুই? জলদি ক্লাসে আয়।”
-“মাত্রই এলাম। আজ ক্লাসে যাব না। কাল যাব।”
-“আরে কি বলছিস? জলদি আয় কলেজে কাজ আছে। তোকেও দ্বায়িত্ব দিয়েছেন স্যার।”
-“আমাকে কেনো এসবে ফাঁসাল? আমি পারব না এসব। আমার নাম কে’টে দিস।”
-“হবে না রে। তুই আয় কলেজ মাঠে। আমি তোর জন্য অপেক্ষা করছি।”
-“আচ্ছা আধাঘন্টা পর আসি।”
-“আরে না দশ মিনিটে আয়।”
-“ফোন রাখ।”
বলেই খট করে ফোন রেখে দেই। রোদ্দুর দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলি,
-“রোদ্দু চল৷ কলেজে যেতে হবে। কি না কি কাজ আছে তার জন্য।”
-“কিহ? এখন আবার কলেজে? অসম্ভব!”
-“চল চল প্লিজ। এমন করিস না।”
-“একটু পর যাব। খুব টায়ার্ড আমি রেস্ট করে নেই একটু।”
আমি আর কথা বাড়াই না। সত্যি খুব জার্নি করে এসেছি। আমারও খারাপ লাগছে। তবুও রেস্ট নিলে চলবে না কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হতে হবে। রোদ্দু কে রেখে ফ্রেস হতে চলে গেলাম।
___________________
কলেজ গেট দিয়ে ঢোকার সাথে সাথে হন্তদন্ত হয়ে কেউ আমাদের সামনে চলে আসে। আচমকা কারো আগমনে আমি রোদ্দু আর নুসু বেশ চমকে যাই। ভয় পেয়ে এক কদম পিছিয়েও যাই। নিজেকে দ্রুত সামলে সম্মুখে দৃষ্টি আবদ্ধ করতেই দেখি আরাবী দাঁড়িয়ে। ঠিক তার পিছনে সাজ্জাদ ভাই, শাহীর ভাই তারাও আসছে। আরাবীর পানে দৃষ্টি আবদ্ধ করতেই পিলে চমকে উঠি। চার দিন আগে যে আরাবী কে দেখে গেছি এ সে আরাবী নয়। কেমন বিধস্ত দেখাচ্ছে তাকে। অক্ষিদ্বয় ফুলে রক্তবর্ণ ধারন করেছে। ওষ্ঠদ্বয় কেমন শুকিয়ে কাঠ হয়ে রয়েছে। শুভ্র হলদেটে মুখশ্রীতে কেমন কালচে আভার প্রলেপ ধারণ করেছে। মনে হচ্ছে কয়েক দিন যাবৎ সে নিজের খেয়াল রাখছে না। আমি কিছু বলার পূর্বেই অস্থীর কন্ঠে আরাবী বলে,
-“বলে যাওনি কেনো?”
আমার চুপ থাকায় আরাবী চিৎকার করে বলে,
-“উত্তর দিচ্ছো না কেনো? কথা কানে যায় না?”
আরাবীর কথায় আমার সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠে। আতংকে আমার গলায় সকল শব্দ দলা পাকিয়ে গেছে। আরাবী পানে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই দেখি অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার পানে। আমার চুপ থাকা দেখে পাশ থেকে রোদ্দু আরাবী কে বলে,
-“এক্সকিউজ মি। আপনি কে হ্যাঁ? যে আপনাকে বলে যেতে হবে?”
আরাবী ভ্রু কুঁচকে বিরক্তিকর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,
-“মুখটা বন্ধ রাখো। টকিং মেশিন!আমি তোমার সাথে কথা বলছি না।”
-“কিহ! কি বললেন আপনি? আমি টকিং মেশিন। আপনি তো দেখছি মহা অ’স’ভ্য। কি সুন্দর তিনটা মেয়ে কে আঁটকে জিজ্ঞেস করছে বলে যাওনি কেনো। তা বলি আপনি কোন জন্মের গার্ডিয়ান আমাদের যে কৈফিয়ত দিতে হবে?”
আরাবী সাজ্জাদ ভাইয়ের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই সাজ্জাদ ভাই বলে,
-“এ্যাই জ্বলন্ত আগুন। তোমাকে কি কেউ জিজ্ঞেস করেছে বলে যাওনি কেনো? জিজ্ঞেস করেছে শ্রেয়সী কে। আর তোমরা এখানে কেনো দাঁড়িয়ে। চোখের পলকে ভাগো।”
পাশ থেকে নুসু আমার হাত ধরে বলে,
-“এই শ্রেয়ু চল চল। আমরা ক্লাসে যাই। ক্লাসের সময় হয়ে গেছে।”
সাজ্জাদ ভাইয়া নুসু কে উদ্দেশ্য করে বলে,
-“ম্যাডাম নুসাইবা মাই দিল কি রাণী। আপনি আমার সাথে আসুন বোঝাপরা আছে।”
চিৎকার করে রোদ্দু বলে,
-“কেউ কোথাও যাবে না। যা হওয়া এবং বলার সবার সামনেই হবে। ফাইনাল।”
বিদ্রুপ হেসে তৌফিক ভাইয়া রোদ্দু কে বলে,
-“জ্বলন্ত আগুন আপনার মনে হয় সেদিনের ডোজটা কাজে দেয়নি। চলেন আজ কে আমরা ডাবল স্পাইসি নুডলস খাব।”
এদের কান্ডে আমি নির্বাক শ্রোতা হয়ে শুনছি কেবল। আরাবীর দৃষ্টি তখনও আমিতেই। সেদিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই চমকে উঠি। কেমন পলকহীন তাকিয়ে। যেনো হাজার বছরের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। তৃষ্ণার্থ দৃষ্টি জোড়া আমার থেকে চোখ সরাতেই চাইছে না। আমার দৃষ্টিতেও যেনো ঘোর লেগে গেছে। সম্মুখে থাকা ব্যক্তির উপর থেকে কিছুতেই আমার অবাধ্য দৃষ্টি জোড়া নিরসন করতে পারছি না। আরাবীর দৃষ্টিতে কিছু একটা ছিলো। যা আমার কিশোরী মন ধরতে পারেনি। শান্ত ধীর কন্ঠে আচমকা আরাবী বলে,
-“প্রেয়সী মোর শ্রেয়সী তুমিহীন এ আমি গন্তব্যহীন। তোমার অনুপস্থিতি আমি অস্তিত্বহীন। হৃদয় হরণী হৃদমোহিনী তোমাতে হারিয়েছি আমার সকল অস্তিত্ব। তবে যদি তুমিই হও নিরুদ্দিষ্টা তবে ধরণীতে আমি নামক মানবের মৃত্যু ঘটুক।”
আরাবীর কথায় আমার অক্ষিদ্বয় টলমল করে উঠে। তার সকল অস্তিত্ব আমিতে বিলিয়ে দিয়েছে তা বেশ বোধগম্য। আরাবী কথা শেষ হতেই কয়েক কদম পিছিয়ে সবার উদ্দেশ্য বলে,
-“যে যার ক্লাসে যাও।”
অতঃপর আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,
-“ফোনটা আর লকটা দেও।”
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে,
-“আমার ফোন কেনো?”
-“যা বলছি তা করো। বেশি কথা বললে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে।”
আমি আর কথা না বাড়িয়ে ফোনটা আনলক করে আরাবীর হাতে দিয়ে দেই৷ আরাবী ফোনের দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে কিছু একটা করছে। দীর্ঘক্ষন পরে ফোন থেকে দৃষ্টি তুলে আমার পানে আবদ্ধ করে বলে,
-“ঠিক সময় ফোন তুলবে। না হয় পরবর্তীতে তোমার বাড়িতে আমার অনাকাঙ্ক্ষিত আগমন ঘটবে। মনে থাকে যেনো।”
কথাটা বলেই আরাবী চলে যায়। আমি স্তব্ধ হয়ে মূর্তি ন্যায় দাঁড়িয়ে। ছেলেটা আমার মন এবং মস্তিষ্ক দুইয়েই সমান ভাবে নিজের রাজত্ব গঠিত করে ফেলেছে তা বেশ বুঝতে পারছি। আরাবী চলে গেছে প্রায় অনেক্ক্ষণ হয়ে গেছে। তবুও আমার দৃষ্টি আরাবী যাওয়া পথেই। আমার কেনো ভাবান্তর না দেখে রোদ্দু আর নুসু সমান তালে ধাক্কা দিয় বলে,
-“ওই দিকে কি দেখছিস? ক্লাসে চল। অ’স’ভ্য ছেলে গুলোর জন্য দেরি হয়ে গেলো।”
নুসু ভয়ার্ত কন্ঠে বলে,
-“দোস্ত প্লিজ জলদি চল। টাকলু স্যারের ক্লাস এখন। যদি আমরা ওই টাকলুর পর ক্লাসে যাই তাহলে অপমানের শেষ থাকবে না। চল জলদি।”
রোদ্দু বিষ্ময় নিয়ে বলে,
-“যা চিজ ওই টাকলু। দেখে মনে হয় বোকা-সোকা আসলে যে কি ফা’জি’ল আর ব’জ্জা’ত তা এর স্টুডেন্ট না হলে জানতামই না।”
আমি রোদ্দুর দিকে চোখ পাকিয়ে বলি,
-“রোদ্দু তারা আমাদের গুরু এভাবে বলতে হয় না। আল্লাহ নারাজ হবেন। স্যার তো তোর বাবাও হতে পারতো। তখন তোর বাবা কে কেউ এভাবে বললে কি তোর ভালো লাগতো?”
-“থাক আর বলতে হবে না। ক্লাসে চল জলদি।”
_____________________
ক্লাসের বাইরে আমি, রোদ্দু আর নুসু কান ধরে দাঁড়িয়ে আছি। রোদ্দু রীতিমতো রাগে ফুঁসছে। আমি আর নুসু অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি একে অপরের পানে। ক্লাসে আসতে আমরা প্রায় মিনিট দশেক দেরি করে ফেলি যার দরুন স্যার বাইরে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। কিন্ডারগার্ডেনের স্টুডেন্ট বলে মনে হচ্ছে নিজেদের। রোদ্দু স্যারের গুষ্টি উদ্ধার করতে ব্যস্ত।
-“দেখলি শ্রেয়ু? কেমন বজ্জাত স্যার। মানুষের কি দেরি হতে পারে না? আজ যদি আমার এক্সিডেন্ট হতো তখনও কি এমন দাঁড় করিয়ে রাখতো বল? ইচ্ছে করে সব ইচ্ছে করে করছে টাকলু। এসব করে মজা পায়। জানি না এসব৷ সব জানা আছে।”
বিরক্ত হয়ে নুসু বলে,
-“একটু চুপ থাকবি রোদ্দু। তোর কথায় মাথা ধরে গেছে। ভাবছি ক্লাসে মুখ দেখাব কি করে। এদিকে তুই করছিস পটর পটর।”
-“কেনো জীবনে কি আর কেউ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকেনি? আমারাই কি প্রথম নাকি? যে হাসবে তার দাঁত ভেঙ্গে দিব একদম।”
আমার এবার মহা বিরক্ত লাগছে। বিরক্ত হয়ে বলি,
-“তোরা দুজনই চুপ কর প্লিজ। ভাল্লাগছে না এমনি। তার উপর ঝগড়া করছিস।”
হঠাৎ সম্মুখে তাকিয়ে দেখি সাজ্জাদ ভাই আমাদের দিকেই আসছে। তাকে দেখে লজ্জায় আমরা গুটিয়ে দাঁড়াই। নুসু পারছে না মাটির সাথে মিশে যেতে। যেই না কান থেকে হা নিচে নামিয়েছি ওমনি স্যার ক্লাস থেকে উঁকি মেরে বলে,
-“ভুল করেও কান থেকে হাত নামাবে না। তাহলে তোমাদের আমি মাঠের মাঝখানে নিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখব।”
ভয়ে আবার কানে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে যাই। সাজ্জাদ ভাই দূর থেকে সব পরখ করতে করতেই আমাদের দিকে আসছিলো। কাছে আসতেই উচ্চস্বরে হেসে দেয়। আর বলে,
-“বড়দের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে ঝগড়া করলে এমনই হয়। তো বাচ্চারা আর করবে ওমন হ্যাঁ?”
রোদ্দু রাগ সংযত করতে না পেরে কান থেকে হাত নামিয়ে তেড়ে গিয়ে বলে,
-“তোর মুখ আমি ফাটিয়ে দিব বলে দিলাম।”
সাজ্জাদ ভাই উচ্চস্বরে ‘স্যার’ ডাক দেয়। স্যার কে ডাকছে দেখে রোদ্দু দমে গিয়ে আবার একই জায়গায় এসে কান ধরে দাঁড়িয়ে পরে। স্যার ক্লাস থেকে বেরিয়ে সাজ্জাদ ভাই কে প্রশ্ন করে,
-“কি ব্যপার? এভাবে চিৎকার করে ডাকছো কেনো?”
-“স্যার এই হনুমান গুলোকে এখানে কেনো দাঁড় করিয়ে রেখেছেন? মাঠে নিয়ে গেলে ব্যপারটা আরও আকর্ষণীয় লাগতো।”
-“ঠিক করে কথা বলো সাজ্জাদ। ওদের জন্য এটাই অনেক। আর জীবনে কোথাও লেট করে আসার চিন্তাও করবে না৷ আবার লেট করলে আসলে একদম মাঠে নিয়ে দাঁড় করাব।”
-“স্যার একটু বুঝিয়ে দিয়েন কিভাবে সিনিয়রদের সম্মান করতে হয়। আজ কালের মেয়েরা বড্ড শৃঙ্খলাহীন। ম্যানার বলতে কিচ্ছু নেই।”
রোদ্দু রাগে ফোঁসফোস করছে৷ নুসুরও একই অবস্থা। স্যার সাজ্জাদ ভাইয়ের কথায় আমাদের দিকে একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ক্লাসে চলে যান৷ সাজ্জাদ ভাই আমাদের দিকে তাকিয়ে হেসেই কুটিকুটি। অতঃপর হাসি দমিয়ে আমার দিকে এগিয়ে এসে একটা চিরকুট দেয়৷ চিরকুটটা দেখে আমার ভ্রুযুগল কুঁচকে যায়।
-“চিরকুটটা আরাবী পাঠিয়েছে। আর শোনো ওর কথা গুলো মেনো নিও প্লিজ। ছেলেটা বড্ড জেদি। প্রচন্ড রাগ তার। তবে মানুষকে মন থেকে ভালোবাসে নিজের সব টুকু দিয়ে।”
কথা বলেই সাজ্জাদ ভাই চলে যায়। নুসু আর রোদ্দুর মধ্যে প্রতিযোগিতা লেগে যায়। কে আগে চিরকুট দেখবে। ওদের ঝগড়া থেকে বড্ড বিরক্ত লাগছে। তাই আমি ওদের রেখে একা চলে যাই৷ বারান্দায় এসে চিরকুটটা খুলি। সেখানে লেখা,
-“প্রেয়সী মোর শ্রেয়সী। চার দিন আমার থেকে দূরে ছিলে। চার দিন মানে বুঝো কত ঘন্টা, কত মিনিট, কত সেকেন্ড? এর প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমি তোমার শূন্যতা অনুভব করেছি। ক্ষনে ক্ষনে উপলব্ধি করেছি তুমি হীন এই আমার সত্যি কোনো অস্তিত্ব নেই। হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে তোমার আমি হঠাৎ এতটা তোমার প্রতি ঝুঁকে গেলাম কি করে? তবে বলব এই উত্তর আমারও জানা নেই। শুধু অনুভব করতে পারি আমার প্রেয়সী কেবল শ্রেয়সী।”
চিরকুটের লেখা দেখে আমার সর্বাজ্ঞে অজানা এক শিহরন বয়ে যায়। বরফ স্পর্শের ন্যায় সর্বাঙ্গ ঠকঠক করে কেঁপে উঠছে। হৃদ স্পন্দন স্পন্দিত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া যেনো থমকে যায়। মস্তিষ্ক কেমন শূন্য শূন্য অনুভব হচ্ছে।
-“শ্রেয়ু স্যার ডাকছে আমাদের। প্রতিযোগিতা প্রেকটিসের জন্য।”
নুসুর ডাকে চমকে সেদিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি। রোদ্দুও আছে। তবে রোদ্দুর মন বা মেজাজ কোনোটাই যে ভালো নেই তা বেশ বুঝতে পারছি। নুসু দিকে তাকিয়ে কাপা কঁন্ঠে জিজ্ঞেস করি,
-“আরে ভুলে গেলি? আমাদের নবনীদের নিয়ে প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা। সেটার জন্যই প্রেকটিস।”
-“কিন্তু আমি তো কোনো প্রতিযোগিতায় নাম দেইনি।”
-“দিসনি দিবি। এত কথা কিসের চল আমাদের সাথে। এই রোদ্দু তুই কি এখনও মুখ গোমড়া করে থাকবি? চল তোকে নাচের প্রতিযোগিতায় দিয়ে দিব।”
রোদ্দু অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে নুসুর পানে। অতঃপর চিৎকার করে বলে,
-“ফা’জ’লা’মো করিস? ঘোরার ডিমের প্রতিযোগিতা। আমি নাম দিবই না।”
-“কেনো দিবি না শুনি?”
-“জানিস না? ওই ইভেন্ট আমাদের সিনিয়ররা অনুষ্ঠিত করছে।”
এই কথাটা শোনা মাত্র আমার আরাবী কথা মাথায় চলে আসে। তার মানে তো ইভেন্টে আরাবীরাও থাকবে। সেখানে কোনো মতেই অংশগ্রহণ করা যাবে না। কেয়ামত হয়ে গেলো করা যাবে না।
~চলবে…..