তুমিময় আসক্তি ২ পর্ব ২৩

0
642

#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম(লেখিকা)
“২৩”

–” রোজার সামনে বসে আছে সামির। রোজাকে সব জানানোর পর সামির এটা বলে যে, সে দোলাকে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু রোজা ইস্যু করে বাচ্চাটাকে।
– তুমি দোলাকে বিয়ে করবে সমস্যা নেই। কিন্তু দোলার বেবিটাকে কি করবে? মেনে নেবে তাকে? রোজা ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে। সামির রাগী গলায় বলে রুদ্রর বাচ্চার দায়ভার কেনো আমি নিতে যাবো। তাছাড়া আমি চাইনা আমার আর দোলার মধ্যে কেউ আসুক। অনেক হয়েছে৷ আমি আর দোলাকে হারাতে চাইনা এটাই আমার শেষ কথা।
– তোমার কি মনে হয় সামির” রুদ্র এত সহজে সবটা ছেড়ে দেবে। দোলাকে এখন সে চোখে হারায় অফকোর্স সেটা বেবিটার জন্য। যদি বেবিটার কিছু হয় তাহলে কিন্তু রুদ্র তোমাকে ছাড়বে না। সো মাথা গরম করলে চলবে না। আমাদের ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে৷ যাতে করে সাপও মরে আর লাঠিও অক্ষত থাকে।

– কি করতে চাইছো তুমি? বিস্ময় নিয়ে বলে সামির।
– রোজা মুচকি হেসে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বলে আমি যা বলছি এবার তাই করো শুধু।

— বিকেলে! রুদ্রর ঘুম ভেঙেছে কিছুক্ষণ আগে৷ ঘুম থেকে উঠেই সে দোলাকে দেখতে পাইনা। রুদ্রর প্রচন্ড মাথা ধরেছে৷ সচারাচর এই সময় রুদ্রর কখনোই ঘুম হয়না৷ শরীর খারাপের জন্য তার ঘুমানো আজ। তবে হঠাৎ করে মাথাটা এমন ভাড় হয়ে আছে৷ ইচ্ছে করছে আদা দিয়ে এক-কাপ চা খেতে। রুদ্র দোলাকে ডাকতে দিয়েও ডাকে না। রুদ্র ভাবে দোলা হয়তো কোনো কাজে আছে নিচে৷ সময় মতো চলে আসবে।

– তানিয়া দুপুরের পর আর রুম থেকে বের হয়নি। কানে হেডফোন গুজে গান শুনছে সে। রত্না চৌধুরী তার ঘরে থাকলেও একটু বাদে ড্রয়িং রুমে আসেন। জেসমিন চৌধুরী আর তানভীর আহমেদও আছেন যেখানে। সবাই চা এর জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু দোলার কথাটা কারো মাথায় নেই আপাতত। কারণ সবাই মনে করে দোলা ঘরে আছে রুদ্রর সাথে। যেহেতু দোলা মা হতে চলেছে! সেহেতু দোলার রেস্টের প্রয়োজন অনেক।
– এর মধ্যে হন্তদন্ত হয়ে প্রবেশ করে সজল। এই সময় সজলকে দেখে ড্রয়িং রুমে উপস্থিত সবাই কিছুটা সংকোচিত চোখে তাকায়।
-রত্না চৌধুরী দৃষ্টিগোচর হতেই সজল সালাম দেয় তাকে হাসার চেষ্টা করে। রত্না চৌধুরীর বিস্ময় নিয়েই সালামের জবাব দেন।

-আন্টি একটু দোলাকে ডেকে দেওয়া যাবে৷ সজলের আবদার স্বরুপ কথায় রত্না চৌধুরী হাস্যজ্বল মুখে বলে দাঁড়িয়ে কেনো বাবা! বসো না। আমি দোলাকে ডেকে পাঠাচ্ছি। জেসমিন চৌধুরী মুখ বাকায় সজলকে দেখে। তানভীর আহমেদ সজলের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে হঠাৎ এই সময় আসলে বাবা। আবার দোলাকে খুঁজছো এসে। কোনো সমস্যা হয়েছে কি?
– তানভীর আহমেদের কথায় সজল মুখটা মলিন করে বলে আসলে আঙ্কেল মামার শরীরটা ভালো নেই। হঠাৎ করেই সকাল সকাল অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি৷ দুপুরের দিকে অবস্থা বেশি খারাপ হলে রোকন দোলাকে ফোন দেয়। কিন্তু দোলাকে ফোনে পাইনা। এরপর আমাকে কল করে। মামাকে হসপিটালে নেওয়া হয়েছে। আমি এরপর থেকে দোলাকে ফোনে ট্রাই করছি”কিন্তু দোলার ফোন সুইচ অফ বলছে। তাই বাধ্য হয়ে আমাকে আসতে হলো। মামার ছোটখাটো একটা স্ট্রোক হয়। চিন্তার কোনো কারণ নেই। এখন মোটামুটি ঠিক আছে। তবে বারবার শুধু দোলাকে দেখতে চাইছে। সজলের কথায় আতংকিত দৃষ্টি রাখে রত্না চৌধুরী আর তানভীর আহমেদ। চিন্তিত হয়ে বলে এখন আর কোনো সমস্যা নেই তো বাবা। দোলা যদি জানতে পারে তাহলে তো মন খারাপ করবে অনেক। আর ওর জন্য এটা একদম ঠিক হবে না এই সময়।

– এই সময় মানে? রত্না চৌধুরীর কথা বুঝতে না পেরে প্রশ্ন করে সজল।
রত্না চৌধুরী মুচকি হেসে বলে তুমি যে মামা হতে চলেছো সজল বাবা। আমাদের দোলা মা হতে চলেছে। কথাটা শুনে সজলের ঠোঁট দুটো প্রসারিত হয়ে আসে আনন্দে। অতঃপর সেখানে তানিয়া উপস্থিত হয়। সজলকে দেখে ভ্রু কুচকায় সে। সজল তানিয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দেয়। সেই হাসিতে তানিয়াও হেসে উঠে।

– তানিয়া দোলাকে ডেকে নিয়ে আয় তো মা। বল সজল এসেছে ওর সাথে দেখা করতে। রত্না চৌধুরীর কথায় তানিয়া সাবলীল ভাবে বলে আমি ডেকে নিয়ে আসছি ভাবিকে। এরপর তানিয়া সজলের দিকে একবার তাকিয়ে আবারও উপরে চলে যায়।

– রুদ্র ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে। এই দুদিন অফিসটা রাজই সামলাচ্ছে। হঠাৎ ফোনে ম্যাসেজ টোন বেজে উঠে। রুদ্র স্বাভাবিকভাবে ফোনের দিকে তাকিয়ে চোখ ফেরাতে গিয়ে আবছা চোখে ফোন স্ক্রিনে দোলার নাম্বার সো করতে দেখে। রুদ্র কপালে ভাঁজ ফেলে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে দোলার নাম্বার থেকে আসা ম্যাসেজ নোটিফিকেশন।
– রুদ্র ম্যাসেজ চেক করতেই চমকে উঠে। অনুভূতিশূণ্য হয়ে কিছুক্ষণ ফোনের দিকেই তাকিয়ে থাকে। মাথার মধ্যে ভনভন করে ঘুরছে। রুদ্র আবারও ম্যাসেজটা চেক দেয়। আর সেখানে স্পষ্ট ভাষায় লেখা আছে! “আমি সামিরের সাথে থাকতে চাই। কারণ আমি সামিরকে ভীষণ ভালোবাসি। দয়া করে আপনি আমাদের মাঝে আসবেন না। আমি সামিরের কাছে স্ব-ইচ্ছায় চলে এসেছি। আমাকে বিরক্ত করবেন না আর”। রুদ্রর চোখ মুখে একটা ঘোর নেমে আসে। এর মধ্যে তানিয়া উপস্থিত হয় হাসি মুখে।
– ভাবি তোমাকে নিচে ডাকছে বলে তানিয়া ভেতরে তাকিয়ে দেখে রুদ্রর অস্বাভাবিক চেহারা। তানিয়া ভালো ভাবে এদিক ওদিক তাকিয়ে দোলাকে কোথাও পাইনা।
– ব্রো কি হয়েছে তোমার? আর ভাবি কোথায়? তানিয়ার কথায় রুদ্র যেনো হতভম্ব হয়ে উঠে অবাক করা কন্ঠে বলে তার মানে দোলা বাড়ি নেই?
– হঠাৎ রুদ্রর এমন কথায় তানিয়া কপাল কুচকে বলে ভাবি বাড়ি নেই মানে। ভাবি আবার কোথায় যাবে?
– দোলা বাড়িতে নেই তানিয়া। গম্ভীর কন্ঠে বলে রুদ্র। তানিয়া যেনো হকচকিয়ে উঠে।
– কি হয়েছে ভাইয়া? ভাবি কোথায়? তানিয়ার কথায় রুদ্রর চেহারাটা মলিন হয়ে আসে। অসহায় চোখে তাকিয়ে ফোনটা বাড়িয়ে দেয় তানিয়ার দিকে।
– তানিয়া বিস্মিত হয়ে এগিয়ে এসে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখতেই ঘাবড়ে যাওয়া চোখে তাকায় রুদ্রর দিকে।

– এটা মিথ্যা! ভাবি এমনটা কখনোই করতে পারে না।
– আমিও এটাই বিশ্বাস করি তানিয়া। রুদ্রর মুখে এমন কথা শুনে তানিয়া আকাশ থেকে পড়ে এমন একটা লুক নিয়ে বলে ব্রো তোমার সন্দেহ হচ্ছে না ভাবির উপর?
– রুদ্র আহত দৃষ্টি রাখে শুধু।

— চৌধুরী বাড়ির ড্রয়িং রুমে চিন্তিত হয়ে বসে আছে সবাই। রুদ্র মাথা নুয়ে কিছু একটা ভাবছে। রাজ,সজল, তানিয়া, রত্না চৌধুরী, তানভীর আহমেদ অস্থির হয়ে উঠছেন মাঝে মাঝে। কোনো ভাবান্তর নেই শুধু জেসমিন চৌধুরীর মধ্যে। হঠাৎ করে দোলা এমন সিদ্ধান্ত কেনো নেবে? আর দোলা বাড়ি থেকে কখন বেরিয়েছে এটা ভাবতেই বেশ বেগ পেতে হয় সবাইকে।

– রুদ্র! তোর সত্যি দোলাকে সন্দেহ হচ্ছে না? তোর মনে হচ্ছে না দোলা এইগুলো করতে পারে। রাজের কথায় রুদ্র বিরক্ত নিয়ে বলে কেনো এক কথা বারবার বলছিস রাজ? আমি বললাম তো! এইসব কিছু বিশ্বাস করিনা আমি৷ আমি যে ভুল আগে করেছি সেটা আবার পুনরায় করতে চাইনা। আমি দোলাকে আর অবিশ্বাস করবো না৷ কারণ আমি দোলাকে কথা দিয়েছি। আর দোলাও আমাকে কথা দিয়েছে ও কখনোই আমাকে ঠকাবে না। আমি ওর চোখে সেই ভরসা, বিশ্বাসের ছোঁয়া দেখেছি। তাই যতখন না দোলা আমার সামনে এসে নিজ মুখে এইগুলো বলছে ততখন আমি একটা শব্দও বিশ্বাস করবো না।।দোলা আমাকে ঠকাবে না আমি এতটুকু বুঝে গিয়েছি এতদিনে। রুদ্র কথায় সবার মধ্যে প্রশান্তি। অনেক ভালো লাগছে এত খারাপ সময়ের মধ্যেও।
– মিস্টার রাজ! আপনি বারবার এক কথা বলে কি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন। আমার বোন দোষী? আমার বোন সত্যি ওই ছেলেটার সাথে… না না সজল আমাকে ভুল বুঝবেন না প্লিজ। উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠে রাজ।
– দেখুন! আমি জানিনা আপনি কেনো বলছেন এইসব কথা। কিন্তু আমি বলতে পারি আমার বোন এমন ধরনের কাজ কখনোই করবে না। দোলা অনেক ভালো একটা মেয়ে। আমার শুধু চিন্তা হচ্ছে ওকে নিয়ে। কোথায় আছে? কেমন আছে আল্লাহ জানে। আর ওইদিকে মামাকে গিয়ে কি বলবো আমি? মামা তো দোলাকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে। সজল কপালে হাত ঠেকিয়ে নুয়ে পড়ে। সবার মধ্যে বিরহের ছাপ বিদ্যমান।

– আমি নিশ্চিত ভাবি কোনো না কোনো বিপদে পড়েছে। নাহলে ভাবি এমন কখনোই করবে না আমি বিশ্বাস করি। তানিয়া বলে দুঃখ বিলাপ করে।
— রোজা! হঠাৎ করে রুদ্র রোজার নাম করে। সবাই কৌতুহলী হয়ে তাকায় ওর দিকে।
– আমি জানি এইসব রোজার কাজ। ও দোলাকে সরিয়েছে কোনোভাবে। দোলার যদি কিছু হয় আমি ওকে ছাড়বো না। খু/ন করবো নিজ হাতে রাগে রুদ্রর শরীরের প্রতিটি রগ যেনো ফুলে-ফেঁপে উঠে। চোখ মুখে আগ্নেয়গিরির লাভা ফুটন্ত হয়ে।

— আচ্ছা রুদ্র” আমরা যদি সিসি ক্যামেরা ফুটেজ চেক করি। তাহলে তো জানতে পারবো দোলা কখন বেরিয়েছে বাড়ি থেকে। বা ওকে কেউ নিয়ে গেছে কি-না। রাজের কথায় রুদ্রর চোখ দুটো চকচক করে উঠে। এত দুঃচিন্তার মধ্যে এই কথাটা ভুলেই গিয়েছিলো সে। রুদ্র দ্রুত পায়ে উঠে ঘরে যায়। পেছনে যায় রাজ আর তানিয়া। বাকিরা আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে।

— সিসি ক্যামেরা ফুটেজ চেক করতেই রুদ্ররা দেখে যে দোলা কাউকে একটা ফোন করে। এরপর একটু পর বেরিয়ে যায়। দোলা কাকে ফোন করছে সেটা জুম করে দেখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় তারা।
– আচ্ছা দোলা কোনো ভাবে সামিরের সাথে দেখা করতে যায়নি তো। রাজের কথায় তানিয়া উত্তেজিত কন্ঠে বলে একদম ঠিক বলেছো রাজ ভাইয়া। আমরা তো সামিরের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। ভাইয়া তোমার মনে আছে ভাবি গতকাল বলেছিলো সে সামিরের সাথে দেখা করবে। কেনো এমন করেছে সামির তার জবাব চাই তার। আমরা তো বারণ করি ভাবিকে। তাহলে কি ভাবি আমাদের কিছু না বলে সত্যি সামিরের কাছে যায়। আর সেখানে গিয়েই কি কোনো বিপদ হয়। আমার খুব ভয় করছে ব্রো। ভাবির কোনো ক্ষতি করবে না তো সামির আতংকিত কন্ঠে বলে তানিয়া।

— কিছু হবে না দোলার। ওর গায়ে যদি একটা আচঁড়ও পড়ে তাহলে আমি কাউকে আস্ত রাখবো না। রেগে বলে রুদ্র।
– ওয়েট আমি আশাকে ফোন দিয়ে দেখি। ও কিছু জানে নাকি দোলার ব্যাপারে। রাজের কথায় সবাই অপেক্ষা করে। রাজ আশার নাম্বারে ফোন দিলে ফোন সুইচ অফ বলে। রাজ বেশ কয়েকবার ট্রাই করে কিন্তু বারবার একই কথা বলে।

– বুঝলাম না। আশার ফোনও বন্ধ কেনো। আচ্ছা আমি কি একবার যাবো ওর কাছে?
– কোনো দরকার নেই রাজ। আমি বুঝে গেছি এইসবের পেছনে কে আছে। সামির আর রোজা মিলে দোলাকে আটকে রেখেছে। রোজা যাওয়ার আগে দোলাকে থ্রেট দিয়ে যায় মনে আছে। আমাকে এখনি যেতে হবে রোজার কাছে৷ আজ এর শেষ দেখেই ছাড়বো বলে রুদ্র বেরিয়ে যেতে গেলে রাজ থামিয়ে দেয়।
– প্লিজ রাজ আমাকে থামাস না। দোলার কোনো ক্ষতি করার আগে আমাকে সেখানে যেতে হবে। দোলা একা নেই সেখানে৷ আমার বেবিও আছে ওর মধ্যে। আর আমি চাইনা আমার সন্তানের আর কোনো ক্ষতি হোক। করুণ কন্ঠে বলে রুদ্র।
– কারো কিছু হবে না রুদ্র৷ তুই মাথা ঠান্ডা করে কাজ কর। আমার কথাটা শুন। যদি রোজা দোলাকে কোনো ভাবে আটকে রাখে তাহলে দোলাকে পাওয়া সহজ হবে না। তাই আমাদের শান্ত মাথায় সবটা ভাবতে হবে।

– তুই ঠিক কি করতে চাইছিস? রুদ্র ভ্রু কুচকে বলে। রাজ মুচকি হেসে বলে শুন আমার কথাটা।

— দোলা আর আশা বন্ধ রুমে ছটফট করছে। কীভাবে এখানে থেকে বেরুনো যায় সেটাই বুঝতে পারছে না।।তাছাড়া এখানে থেকে যাওয়ার মতো কোনো পথও নেই৷
– আমাদের সত্যি অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে দোলা। এইভাবে কাউকে কিছু না বলে আশাটা ঠিক হয়নি। সামির যে এতটা খারাপ সত্যি জানা ছিলো না।।আচ্ছা সামির যদি তোর বেবিটার কোনো ক্ষতি করে দেয় তাহলে?
– নাহ! এমন কিছু হবে না। আমার বেবির কিছু হতে দেবো না আমি। আমার প্রাণ থাকা পর্যন্ত ওর কোনো ক্ষতি কেউ করতে পারবে না উত্তেজিত হয়ে বলে দোলা।
– আমরা এখন কি করবো দোলা? সব প্রমাণ তো সামিরের কাছে৷ ফোন গুলো নিয়ে গেছে। না জানি কি হবে এরপর। আশা অনেক ভয় পেয়ে যায়।
– চিন্তা করিস না আশা। কিছু হবে না আমাদের। আমার জন্য তুইও বিপদে পড়ে গেলি। সরি রে৷ আমি সত্যি ভাবিনি সামির এমন কিছু করবে। তবে আমার বিশ্বাস রুদ্র ঠিক আসবে আমাকে খুঁজতে দেখিস। আমার বিশ্বাস উনি আমাকে মুক্ত করে নিয়ে যাবে।

– রুদ্র কখনোই আসবে না দোলা জান। হঠাৎ কারো কথায় দোলা আর আশা চমকে উঠে।
দরজার সামনে সামির কে দেখে রাগে শরীর যেনো রিরি করে উঠে তাদের।
-আমাদের যেতে দাও সামির। তুমি কিন্তু অনেক বড় ভুল করছো। এর ফল কিন্তু ভালো হবে না। দোলা বলে দৃঢ় কন্ঠে। দোলার কথায় সামির হো হো করে হেসে উঠে। চোখ মুখ কুচকে তাকায় দোলা।

– আচ্ছা কোন ভরসায় এইগুলো বলছো তুমি দোলা? রুদ্রর ভরসায়? তোমার মনে হয় রুদ্র আসবে তোমাকে রক্ষা করতে। উমম! হ্যাঁ ঠিক ভেবেছো রুদ্র আসতো যদি তুমি রুদ্রকে এসএমএস দিয়ে না বলতে তুমি আমার সাথে থাকতে চাও। রুদ্র যেনো আমাদের মধ্যে না আসে। সামিরের কথার আগাগোড়া কিছুই বুঝে না দোলা। তাই বিস্ময় নিয়ে বলে মানে? কিসের এসএমএস?

– সামির মুখের হাসিটা চওড়া করে দোলার দিকে এগিয়ে এসে বলে, তোমার ফোন থেকে রুদ্রকে এসএমএস করে দিয়েছি। তুমি আমার সাথে থাকতে চাও। স্ব-ইচ্ছায় তুমি আমার কাছে চলে এসেছো।
– সামির! তুমি এতো নিচ জঘন্য মানুষ সত্যি আমি ভাবতে পারিনি।
– তাতে কি? এখন ভাবো! গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলে সামির।
– দোলার শরীর জ্বলে উঠে সামিরের কথায়। ইচ্ছে করছে কয়েকটি চড় বসিয়ে দিতে। তবে একটু শান্তি আসে মনে।

– রুদ্র তোমার কাছে আর আসবে না। তাই রুদ্রর কথা ভুলে যাও। এখন শুধু আমার কথা ভাবো তুমি। রুদ্র তোমাকে আগেও ঘৃণা করতো এখনো করবে।

– “পীপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে” এটা নিশ্চয় জানো সামির। তোমার পতন খুব শীগ্রই তাই উড়ে নাও যত ইচ্ছে। কিন্তু দিন শেষে মাটিতে থুবড়ে পড়বে বলে রাখলাম। যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে তুমি এতো আনন্দিত সেটা কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হবে না৷ রুদ্র আসবে আর আমাকে নিয়ে যাবে। এটাই আমার বিশ্বাস।

– আচ্ছা তুমি তোমার বিশ্বাস নিয়ে থাকো তাতে আমার প্রবলেম নেই। এখন চলো।

– কোথায়? চমকে যাওয়া কন্ঠে বলে দোলা সামিরের কথায়।

– আমাকে বিয়ে করতে। সামির দোলার দিকে ঝুকে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস কন্ঠে বলে কথাটা।

চলবে….

-❌❌ কপি করা নিষেধ ❌❌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here