তুমিময় আসক্তি ২ পর্ব ১৪

0
584

#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম(লেখিকা)
“১৪”

–” তানিয়ার সাথে রোকনের বেশ ভাব জমে যায়। তানিয়া দুপুরের দিকে বাড়ি ফিরে আসে ভার্সিটি থেকে। এসেই দোলার বাবা আর ভাইকে দেখে খুশি হয়। এরপর রোকনের সাথে আলাপ হতেই বেশ ফ্রি হয়ে যায় দুজন। রুদ্র বিকালের দিকে বাড়ি ফিরে আসে অফিস থেকে। দোলা আজ সারাদিন ভীষণ হাসিখুশি হয়ে আছে। রাশেদ মিয়া চলে যেতে চাইলে রুদ্র যেতে দেয়না। রুদ্রর মতে আজ রাতটা অন্তত তাদের থাকতে হবে এখানে। কারণ রুদ্র বাড়ি ফিরে দোলার হাসিখুশি মুখটা দেখতে পেয়ে সার্থক। দোলাকে এত খুশি এর আগে হতে দেখেনি রুদ্র। তাই দোলার খুশির জন্য হলেও একটা রাত রাখতে চাই রাশেদ মিয়াকে। রোকন তো অনেক খুশি বোনের কাছে একদিন থাকতে পারবে ভেবে।

— সন্ধ্যার সময়! তানিয়া, রুদ্র, দোলা একসাথে বসে গল্প করছে। বিভিন্ন কথা বলে হাসাহাসি করছে তারা। আর একদিকে বড়রা গল্প করছে। জেসমিন চৌধুরী সারাদিন রুম বের হয়নি আজ।
— রুদ্র এতখন রুমে ছিলো। সেও নিচে নেমে আসে সবার সাথে আড্ডা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। রুদ্র নিচে আসতেই রোকন উল্লাসিত কন্ঠে বলে দুলাভাই আসুন না আমরা একসাথে বসে গল্প করি। রোকনের মুখে দুলাভাই শুনে রুদ্র নাক মুখ কুচকে বলে হোয়াট? হঠাৎ রুদ্রর এমন রিয়াক্টে সবাই ঘাবড়ে যায়। দোলার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়। তাহলে কি এখন রোকনকে বকবে উনি? এটাই ভাবনা দোলার মধ্যে।
– রোকন ভয়ার্ত কন্ঠে বলে কি হয়েছে দুলাভাই? আমি কি কোনো ভুল করেছি। আবারও দুলাভাই ডাক শুনে রুদ্র দাঁতে দাঁত চেপে বলে এইগুলো কি ডাক হ্যাঁ। শুনো রোকন আমাকে এইসব দুলাভাই বলবে না। গম্ভীর কন্ঠস্বর রুদ্রর। দোলা আর তানিয়া এতখনে বুঝতে পারে রুদ্রর রিয়াক্ট করার কারণ। ঠোঁট চেপে হাসে দুজন। আর রোকন বেচারা মলিন চেহারা নিয়ে বসে আছে।
— কেনো কি সমস্যা? দুলাভাই ডাক কত সুন্দর একটা ডাক বলুন তো। তাছাড়া আপনি তো আমার ভাইয়ের দুলাভাই হোন সম্পর্কে। তাহলে এতো রিয়াক্ট করার কি আছে বুঝলাম না। ভাই তুই দুলাভাই বলেই ডাকবি দোলা বলে মুচকি হেসে। তানিয়া ফিক করে হেসে দেয় দোলার কথায়। পাশে থেকে রাশেদ মিয়া,রত্না চৌধুরী আর তানভীর আহমেদ তারাও মুখ চেপে হাসছে। কিন্তু রুদ্রর অবস্থা হযবরল। দোলার দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে বলে আমি যখন বলেছি দুলাভাই বলবে না মানে বলবে না। রোকন তুমি আমাকে ভাইয়া বলে ডাকবে ওকে। স্রেফ ভাইয়া আর নয়তো জিজু বলতে পারো সমস্যা নেই৷ তবে দুলাভাই একদম নয়।

— আচ্ছা দুলাভাই আমি.. শাট আপ রোকনের কথায় রুদ্র ধমক দিয়ে উঠে। দোলা এবার রেগে বলে আপনি আমার ভাইয়ের সাথে এইভাবে কথা বলবেন না। আমার ভাইয়ের যা ইচ্ছে তাই বলবে আপনার কি হুম। গন্ডার একটা কথাটা জোরেই বলে ফেলে দোলা। কথাটা বলে দোলা জিভ কেটে ঘাবড়ে যাওয়া চোখে রুদ্রর দিকে তাকায়। রুদ্র চোখ পাকিয়ে দোলার দিকে তাকিয়ে থেকে হনহন করে উপরে চলে যায়। রুদ্র যেতেই সেখানে একদফা হাসির রোল পড়ে যায়। তবে দোলার মধ্যে ভয় জাঁকে। কারণ রুদ্র যে রেগে গেছে বুঝতে পারছে৷ তাছাড়া দোলার তো একটা ধন্যবাদ দেওয়ার ছিলো রুদ্রকে। তার জন্য তো দোলা আজ এত সুন্দর একটা দিন উপহার পেয়েছে।
– তানিয়া তোমরা বসে গল্প করো আমি আসছি বলে দোলা উঠে দাঁড়ালে তানিয়া মিটিমিটি হেসে ভ্রু উঁচিয়ে বলে কি ব্যাপার ভাবি! যেই বর রাগ করেছে ওমনি তুমিও ছুটছো বরের রাগ ভাঙাতে৷ তা কি করে রাগ কমাবে তোমার গন্ডারের শুনি। আদর দিয়ে বুঝি ফিসফিস কন্ঠে বলে শেষের কথাটা। তানিয়ার কথায় দোলার কান গরম হয়ে আসে। লজ্জায় গাল দুটো টমেটোর ন্যায় লালাভ হয়ে আসে৷ লাজুক একটা হাসি দিয়ে বলে তুমি খুব অসভ্য হয়ে যাচ্ছো তানিয়া। কথাটা বলে দোলা আর দাঁড়ায় না। তানিয়া শব্দ করে হেসে দেয়।

— রুদ্র এসে বারান্দায় বসে। রাগে ফুঁসতে থাকে রুদ্র।
খুব সাহস বেড়ে গেছে। আমার সাথে রসিকতা করা। ওকে ফাইন! টাইম আমারও আসবে দোলা পাখি। আর তখন তোমায় বোঝাবো। এর মধ্যে দোলা এসে হাজির হয়৷ রুদ্রকে একা একা বিড়বিড় করতে দেখে ভ্রু কুচকে থাকে। রুদ্র বারান্দা থেকে ঘরে আসার উদ্যোগ নিতে দেখে দোলা দাঁড়িয়ে আছে সামনে। রুদ্রকে তাকাতে দেখে দোলা নড়েচড়ে উঠে।
– তুমি? তুমি এখানে কেনো এসেছো? রাগী গলায় বলে রুদ্র।
– সরি! হুট করে বলে উঠে দোলা। রুদ্র বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে বলে কেনো?
– এই যে আপনাকে এতখন রাগানোর চেষ্টা করলাম তার জন্য। আমি মজা করছিলাম আপনার সাথে বিশ্বাস… কথা শেষ করার আগে রুদ্র দোলা হাত টেনে নিজের সাথে আবদ্ধ করে নেয় দোলাকে। দোলা হকচকিয়ে উঠে ভয়ার্ত চোখে রুদ্রর চোখে চোখ রাখে।
– রুদ্রনীল চৌধুরীর সাথে মজা করার সাহস দেখিয়ে একদম ভালো করোনি দোলাপাখি। রুদ্রর কথায় দোলা আমতাআমতা করে বলে সরি তো বললাম তার জন্য। আর কখনো এমনটা করবো না বিশ্বাস করুন৷ দোলার চোখ মুখে প্রচন্ড ভয়ের ছাপ। রুদ্রর বেশ মজা লাগছে দোলাকে এইভাবে দেখতে।
– এবার শাস্তির জন্য প্রস্তুত হও দোলা-পাখি ফিসফিস কন্ঠে বলে রুদ্র। দোলা চমকে যাওয়া চোখে তাকিয়ে বলে শা-শাস্তি। কি শাস্তি দেবেন আপনি। দেখুন এটা কিন্তু ঠিক না৷ আমি তো সরি বলেছি কাঁদো কাঁদো গলায় বলে দোলা।

– রুদ্র দোলার কথায় পাত্তা না দিয়ে টুপ করে একটা চুমু এঁকে দেয় দোলার গালে। দোলা বড় বড় চোখ করে তাকায় রুদ্রর দিকে। রুদ্র হো হো করে হেসে উঠে দোলার এমন রিয়াকশনে। দোলা বিস্ময় কাটিয়ে মুগ্ধ চোখে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে৷ এই প্রথম সে রুদ্রকে এইভাবে প্রাণ খুলে হাসতে দেখছে। রুদ্র ছেড়ে দেয় দোলাকে। কোমরে হাত দিয়ে রুদ্র হেসে চলেছে। দোলা ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে মোহনীয় দৃষ্টি রাখে রুদ্রর পাণে।
– রুদ্র হাসি থামিয়ে বলে সিরিয়াসলি দোলা, তুমি শাস্তির কথা শুনে এতটা ঘাবড়ে যাবে ভাবিনি। আমার তো বেশ ইন্টারেস্ট লাগছিলো ব্যাপারটা। তোমার মুখটা তো দেখার মতো ছিলো কথাটা বলে রুদ্র আবার হাসতে শুরু করে।
– দোলাও এবার হেসে দেয় মাথা নিচু করে। ভালো লাগছে ভীষণ। মনটা কেমন জানি হাল্কা হাল্কা লাগছে দোলার৷ দোলা রুদ্রর দিকে আবার তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে হাসি রেখেই বলে ধন্যবাদ! হঠাৎ দোলার মুখে ধন্যবাদ শুনে রুদ্র হাসি থামানোর চেষ্টা করে বলে কোন আনন্দে?
– এই যে আপনি আমাকে খুশি করার জন্য আমার বাবা ভাইকে এখানে আসতে বলেছেন। তাদের আসার অনুমতি দিয়েছেন তার জন্য। আমি সত্যি অনেক কৃতজ্ঞ রুদ্র আপনার কাছে। বাবাকে দেখে আমি যে কি পরিমাণ খুশি হয়েছি আপনাকে বলে বোঝাতে পারবো। ধন্যবাদ রুদ্র! অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। রুদ্র বিমুঢ় চাহনিতে দোলার দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু কোনো কথা বলে না। রুদ্রকে এমন অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে দোলা ভ্রু কুচকে তাকায়।

– শুকনো ধন্যবাদে তো হবে না দোলা-পাখি। আমার তো অন্য কিছু লাগবে ঠোঁটের কোণে দুষ্টামি হাসি নিয়ে বলে রুদ্র। দোলা ঘাবড়ে যাওয়া কন্ঠে বলে কি চাই আপনার?
– রুদ্র দোলার দিকে ঝুকলে দোলা কয়েক-পা পিছিয়ে যায় ভয়ে। রুদ্র দোলার হাত টেনে ধরে কাছে নিয়ে কানের পাশে মুখ লাগিয়ে আগের ন্যায় ফিসফিসিয়ে বলে আদর লাগবে আমার। রুদ্রর এতটুকু কথায় যথেষ্ট ছিলো দোলার মধ্যে শিহরণ জাগানোর জন্য। মুঠো বন্দী করে নেয় শাড়ির দুইপাশ। লজ্জা মিশ্রিত চাহনিতে মুচকি একটা হাসি রাখে। রুদ্রর ঠোঁট জুড়েও কাঙ্ক্ষিত হাসি।
– কি হলো করো! রুদ্রর কথায় দোলা হকচকিয়ে উঠে ব্যস্ত সুরে বলে কি?
– কি আবার আদর! সাবলীল ভাবে বলে রুদ্র। দোলা দ্বিগুণ লজ্জা মিশ্রিত একটা হাসি দিয়ে বলে ধ্যাত আপনি অনেক খারাপ। রুদ্র হেসে দেয় দোলার কথায়।
– তাহলে আমি করি আদর। তোমার দ্বারা সম্ভব না আগেই জানতাম। আমার পাওনা আমি নিজেই নিয়ে নিই বলে রুদ্র এগুতে গেলে দোলা রসগোল্লার ন্যায় চাহনি রেখে বলে ভালো হবে না কিন্তু। দোলা পিছু হঁটে দৌড় লাগাতে যাবে তখনই মাথাটা ঘুরিয়ে উঠে দোলার। সাথে গা গুলিয়ে আসে। দোলা মুখ চেপে ধরে ওয়াসরুমে ছুট লাগায়। হঠাৎ দোলার এমন হওয়াতে রুদ্র ঘাবড়ে যায়৷ চিন্তিত হয়ে সেও দোলার পিছু পিছু ওয়াসরুমে যায়।
– দোলা কি হয়েছে? শরীর খারাপ করছে? দোলাকে ধরে রুদ্র। দোলা বমির জন্য কিছু বলতে পারে না। বেশ কিছুখন পর দোলা স্বাভাবিক হয়। চোখ মুখে পানি দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়৷ তবে বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়ে দোলা। রুদ্র দোলাকে ধরে বিছানায় বসায়।
– কি হয়েছে দোলা৷ তোমার শরীর কি বেশি খারাপ করছে। আমি ডক্টরকে কল করছি বলে রুদ্র উঠতে গেলে দোলা হাত চেপে ধরে ইশারা করে বলে ডক্টর না ডাকতে। রুদ্র ভ্রু কুচকে চিন্তিত দৃষ্টি রাখে।

– আমি ঠিক আছি রুদ্র। প্লিজ ডক্টর ডাকবেন না। মনে হচ্ছে উল্টো পালটা খাওয়া হয়ে গেছে বেশি। তাই এমন রিয়াকশন দেখা দিচ্ছে। আজ তো ভাজাপোড়া বেশি খাওয়া হয়েছে৷ হয়তো গ্যাস্টিকের সমস্যা। ঠিক হয়ে যাবে আবার চিন্তা করবেন না। রুদ্র আহত চোখে তাকিয়ে আছে দোলার দিকে। হুট করে দোলার শরীর খারাপ রুদ্র যেনো মানতে পারছে না। আর কেউ না জানুক রুদ্র তো জানে দোলা তার কাছে কতটা ইমপোর্টেন্ট।
– আমি একবার ডক্টর ডেকে চেকাপ করি দোলা। আমার মনে হচ্ছে তোমার শরীর ঠিক নেই। আচ্ছা সত্যি করে বলো তো তোমার শরীর ঠিক আছে তো। আই মিন আজই কি এমন হলো! নাকি? সন্ধিহান চাহনি রাখে রুদ্র৷ দোলা ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে আমি ঠিক আছি রুদ্র। আমার কিছু হয়নি। বললাম তো গ্যাস্টিকের প্রবলেম। কিছুটা উত্তেজনার সাথে বলে দোলা। রুদ্র অবাক হয় দোলার কথায়৷ রেগে যাওয়ার মতো কি বলেছে রুদ্র বুঝতে পারছে না।
– রুদ্র আর জোর করে না দোলাকে। এক গ্লাস স্যালাইন পানি করে দোলাকে দেয়। তবে রুদ্রর মধ্যে টেনশন এক চুল পরিমাণ কমেনি।

– এইভাবে কেটে যায় দুদিন। সেদিনের পরেরদিন রাশেদ মিয়া চলে যায় রোকনকে নিয়ে। রুদ্র রাশেদ মিয়াকে কথা দেয় কিছুদিন পর সে দোলাকে সাথে করে ওই বাড়িতে যাবে৷ রাশেদ মিয়া খুবই খুশি হয় রুদ্রর কথায়৷ যে রুদ্রকে চিনতো জানতো সেই রুদ্রকে সবাই যেনো আবার নতুন করে চিনছে জানছে।

– দোলা,তানিয়া, আশা ভার্সিটির ক্লাস রুমে বসে আছে। ক্লাস শেষ তবে তারা সেখানেই বসে আড্ডা দিচ্ছে। দোলার শরীরটা ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছে। তারপরও দোলা সেসবে পাত্তা দিচ্ছে না। ভালো হয়ে যাবে এই ভেবে দিন পার করছে।
— ভাবি আমার একটা ক্লাস আছে এখন৷ তোমরা থাকো আমি ক্লাসটা করে আসছি। এরপর বাড়ি ফিরবো একসাথে। তানিয়ার কথায় দোলা মুচকি হেসে বলে আচ্ছা যাও। আমরা বাইরে থাকছি। তানিয়া চলে যায় সেখানে থেকে।
– দোলা আর আশা ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে আশা ওয়াসরুমে ছুট লাগায় দোলাকে অপেক্ষা করতে বলে। দোলা ক্লাসরুমের সামনে বারান্দায় অপেক্ষা করছে। অতঃপর সেখানে সামির হাজির হয়৷ দোলাকে দেখে একটা মুচকি হাসি দেয় সে। বিপরীতে দোলাও একটা হাসি দেয়।
– কি ব্যাপার দোলা। এই দুইদিন ভার্সিটি আসোনি যে? সামিরের কথায় দোলা হাসিটা বজায় রেখে বলে ব্যস্ত ছিলাম একটু তাই আশা হয়নি।
– সামির বিস্মিত চোখে তাকিয়ে আছে দোলার দিকে।
– আচ্ছা সামির তুমি থাকো আমি যাই। কথাটা বলে দোলা সরে আসতে চাই। কারণ সে চাইনা রুদ্র আর তার মাঝে নতুন করে আর কোনো ঝামেলা হোক কাউকে নিয়ে। দোলা আসতে গেলে সামির পথ আগলে দাঁড়ায়। দোলা ভ্রু কুচকে তাকায়।
– আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে দোলা। সামিরের সিরিয়াস কথায় দোলা ঘাবড়ে যাওয়া কন্ঠে বলে প্লিজ সরে যাও সামির। আমার সাথে এই ভাবে হুটহাট করে কথা বলতে এসো না৷ তাহলে তোমার বিপদ হবে। চিন্তিত দেখায় দোলাকে।
কে করবে আমার বিপদ। তোমার স্বামী রুদ্রনীল চৌধুরী? সামিরের কথায় দোলা অবাক হয়ে বলে তুমি চেনো তাকে?
– রুদ্রনীল চৌধুরীকে কে না চেনে এই শহরে। নামকরা বিজনেসম্যান সেই সাথে একজন ঠক প্রতারক, খুনি। সামিরের কথায় দোলা রাগী গলায় বলে সামির কি বাজে বকছো এইসব।
– জানি আমার কথা বিশ্বাস করবা না তুমি৷ তাই তো তোমাকে আমি কিছু প্রমাণ দেখাবো আজ। তার আগে আমাকে এটা বলো দোলা। তুমি কেনো রুদ্রকে বিয়ে করতে গেলে। আমার জানা মতে তুমি তো তেমন মেয়ে নও। যার মধ্যে নেই কোনো অর্থের লোভ না আছে কোনো বেশি এক্সপেক্টেশন। তাহলে তুমি কেনো রুদ্রর মতো একটা মানুষকে বিয়ে করতে গেলে?

– এইসব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বাধ্য নয় সামির। তাছাড়া তুমি কে আমাকে এইসব জিজ্ঞেস করার। আমি তোমাকে বন্ধুত্বের জায়গা দিয়েছি তাই বলে এই নয় তুমি আমার পার্সোনাল ম্যাটার নিয়ে কথা বলবে। তাছাড়া তুমি এখন যার সম্পর্কে কথা বলছো সে আমার স্বামী হয় ভুলে যেওনা। উত্তেজিত হয়ে বলে দোলা।

– তুমি শুধু শুধু আমার উপর রাগ করছো দোলা। আমি তোমার ভালো চাই তাই তোমাকে আমি এইসব কথা বলছি৷ তুমি যাকে স্বামী বলে দাবী করছো তার সম্পর্কে তোমার জানা উচিত। সে কেমন মানুষ তোমার জানা উচিত দোলা। দৃঢ় কন্ঠে বলে সামির।
– আমাকে যেতে দাও সামির৷ তোমার এইসব বাজে কথা শোনার সময় নেই আমার। কথাটা বলে দোলা চলে যেতে নিলে সামির বলে, পালাতে চাইছো তুমি দোলা। কিন্তু কেনো?

– দোলা চমকে যাওয়া চোখে তাকিয়ে বলে কি বলতে চাইছো?
– বলতে তো অনেক কিছু চাই। কিন্তু তুমি শুনলে তবে।
– জানোই তো আমি চাইনা শুনতে। তাহলে কেনো ফ্রোস করছো আমায়। দেখো সামির আমার কাছে এসো না আর। এতে তোমার আমার দুজনেরই ভালো হবে।
– সামির হুট করে দোলার হাত চেপে ধরে। এতে দোলা রেগে যায় অনেক।
– কি হচ্ছে সামির। হাত কেনো ধরছো আমার? ছাড়ো বলছি।
– আমার কথা না শুনলে আমি তোমাকে ছাড়বো না দোলা। প্লিজ একটি বার আমাকে বলার সুযোগ দাও। দোলা সামিরের হাত থেকে ছাড়ার চেষ্টা করে। সামির দোলাকে রুমের মধ্যে নিয়ে দেয়ালে চেপে ধরে। দোলা ভয়ার্ত চোখে তাকায় সামিরের দিকে।

– সামির বাড়াবাড়ি হচ্ছে এটা৷ ছাড়ো আমাকে। কেউ দেখে ফেললে খুব খারাপ হয়ে যাবে।
– কেউ দেখবে না। তুমি আগে আমার কথা শুনো। তোমার স্বামী কেমন মানুষ সেটা তোমার জানা উচিত আত্মবিশ্বাসের সাথে বলে সামির।
– আমি কিছু শুনতে চাইনা৷ ছাড়ো আমাকে চিৎকার করে বলে দোলা। দোলার মধ্যে ভয় একটাই যে সামির তার হাত ধরেছে এটা যদি রুদ্রর কান অব্দি যায় তাহলে রুদ্র আবার হিংস্র হয়ে উঠবে৷ দোলাকে ভুল বুঝবে। সাথে সামিরেরও ক্ষতি করবে। কিন্তু সামির কি বলতে চাই। রুদ্র ঠক প্রতারক খু/নি কেনো বলছে এইসব? দোলার মধ্যে দোটানা! ভয়, সংশয়।

– চলবে……

– ❌❌কপি করা নিষেধ,❌❌ভুলক্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষে বিবেচনা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here