#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম(লেখিকা)
“১২”
–” রুদ্র আর দোলা কাছাকাছি চলে আসছে। ওদের চাইলেও দূরে করা সম্ভব না এখন। তুমি বলেছিলে দোলা আমার হবে। তুমি দোলাকে আমার কাছে নিয়ে এসে দেবে! কিন্তু কি করলে তুমি? দোলা কবে হবে আমার? রুদ্র কখনোই দোলাকে ছাড়বে না রেগে বলে কথাগুলো সামির।
– সামনে থাকা ব্যক্তিটি সামিরের কথায় মুচকি হাসে। তাই দেখে সামির আরো রেগে যায়।
– আমার কথায় তোমার হাসি পাচ্ছে। আমার অনুভূতি নিয়ে মজা করছো তুমি? আমারই ভুল ছিলো তোমাকে ভরসা করা। তুমি কোনো কাজের নও এটা আমার আগেই ভাবা উচিত ছিলো। সামিরের কথায় ব্যক্তিটি ভীষণ রেগে যায় এবার। ক্রোধান্বিত হয়ে লাল বর্ণ চোখে তাকায় সামিরের দিকে।
– শাট আপ সামির। কি বাজে বকছো? আমি যখন বলেছি দোলা তোমার হবে মানে দোলা তোমার হবে। আমাকে ভরসা করা ছাড়া তোমার কাছে দ্বিতীয় কোনো অপশন নেই খুব ভালো করে জানো সেটা তুমি।
– ও আচ্ছা। তুমি যখন বুঝেই গিয়েছো তাহলে কেনো দোলাকে এনে দিচ্ছো না আমার কাছে। আর কতদিন আমি ওই রুদ্রকে টলারেট করব দোলার সাথে। ও দোলাকে ভালো থাকতে দেয়না৷ কিভাবে অত্যাচার করে জানো না তুমি? দেখো আমি আর পারছি না এইভাবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে৷ যদি তুমি কিছু না করো তবে এবার আমি আমার কাজ করবো। দোলাকে নিয়ে আসবো আমার কাছে সে -যেভাবেই হোক।
– শব্দ করে হেসে উঠে ব্যক্তিটি। তাই দেখে সামির ভ্রু কুচকে তাকায়।
– তোমার কি মনে হয় সামির! তুমি বলবে আর দোলা সুড়সুড় করে তোমার কাছে চলে আসবে? তাছাড়া কেনো আসবে দোলা তোমার কথায়? তুমি দোলাকে ভালোবাসো কিন্তু দোলা তোমাকে নয়৷ দোলা তোমাকে জাস্ট ফ্রেন্ড ভাবে এর বাইরে কিছু নয়। হয়তো ভুলে গিয়েছো তুমি দৃঢ় কন্ঠে বলে ব্যক্তিটি। সামির অসহায় চোখে তাকায়।
– শুনো সামির! সময় চলে এসেছে দোলাকে রুদ্রর থেকে আলাদা করার। রুদ্র দোলাকে ছাড়বে না কিন্তু দোলা! সে অনায়েসে রুদ্রকে ছেড়ে চলে আসবে। আর সে রাস্তাটা প্রশস্ত করতে হবে আমাদের। দোলা রুদ্রকে কখনোই ভালোবাসেনি। হয়তো রুদ্রকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে কোনো কারণে। কিন্তু রুদ্রর প্রতি দোলার এতটুকু মায়া,ভালোবাসা কাজ করে না৷ আর সেটাও রুদ্রর জন্য। আমাদের এখন দোলাকে এটা বোঝাতে হবে রুদ্র তার জন্য কখনোই ঠিক ছিলো না। রুদ্র ভালো মানুষ নয়। শুনো সামির! আমি তোমাকে যা বলেছি তাই করো এবার। দোলাকে সবটা জানাও। প্রমাণ গুলো দেখাও। তাহলে দোলা রুদ্রকে আরও আরও ঘৃণা করবে। রুদ্রর মুখও দেখতে চাইবে না। আর তখন রুদ্র আর দোলা আলাদা হয়ে যাবে। আর তুমি দোলাকে খুব সহজে পেয়ে যাবে আর আমার কাজও স্বার্থক হাসি রেখে বলে ব্যক্তিটি। সামির গভীর ভাবনায় পড়ে যায়।
— বিকেলের দিকে! রুদ্র বারান্দায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছে। রুদ্র আজ সারাদিন বাড়িতেই আছে। ঘরে বসেই অফিসের কাজ করেছে। দোলা আজ রুদ্রকে এড়িয়ে এড়িয়ে চলেছে। রুদ্র কথা বলতে চাইলেও দোলা পাত্তা দেয়না রুদ্রকে। রুদ্রর প্রতি রাগ,ক্রোধ কোনোটাই কমেনি দোলার। রুদ্র হতাশ হয় দোলার বিহেভে। দোলার যে রুদ্রর প্রতি এক পাহাড় সমান অভিমান জমা হয়েছে সেটা রুদ্র উপলব্ধি করতে পারে। দোলা আজ খুব একটা দরকার ছাড়া ঘরেও আসেনি। বিকেলের দিকে রুদ্রর কফিটাও একজন সার্ভেন্ট দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। রুদ্র কফির মগে চুমুক দেয় আর ল্যাপটপে কাজ করে। এমন সময় রুদ্রর মনে পড়ে গতরাতের ওই ছায়ার কথায়৷ যেটা রুদ্রকে দেখে সরে গিয়েছিলো। রুদ্র প্রথমে মনের ভুল ভাবলেও এখন সেটা ভুল মনে হয়না তার কাছে। রুদ্র কৌতুহলী হয়ে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ চেক করে গতরাতের। রুদ্রর বাড়ি সম্পুর্ণ সিসি ক্যামেরা দ্বারা সুরক্ষিত আছে। তাই রুদ্র সহজেই জানতে পারবে গতরাতে তার দেখা ভুল ছিলো নাকি সঠিক।
— সিসি ক্যামেরা ফুটেজ অন করতেই রুদ্রর চোখ কপালে উঠে যায়। কারণ তার মনের ভুল ছিলো না।সত্যি কেউ একজন এসেছিলো সেখানে। তবে যে এসেছিলো তার মুখ ঢাকা ছিলো একটা কালো চাদরে। একটু পর রুদ্র খেয়াল করে দোলাও বের হয় সে রাতে। এটা দেখে রুদ্র চমকানো চোখে তাকিয়ে থাকে ল্যাপটপের দিকে।
– দোলা এত রাতে বাইরে গিয়েছিলো! কিন্তু কেনো? তাহলে কি ওই লোকটা দোলার কাছে এসেছিলো? দোলা কি কোনো ভাবে চিনে এই ব্যক্তিটিকে? রুদ্র ভাবনা চিন্তা ছেড়ে আবারও ল্যাপটপে চোখ রাখে।
– দোলা সদর দরজা থেকে বের হয়ে বাইরে যেতেই সব কালো হয়ে আসে৷ রুদ্র আর কিছু দেখতে পাইনা। যার মানে কেউ ইচ্ছে করে সেখানকার সিসি ক্যামেরাটা আড়াল করেছে। যার ফলে ওইখানের আর কিছু রেকর্ড হয়নি সিসি ক্যামেরা ফুটেজে।
– রুদ্রর মধ্যে আবার রাগ,ক্রোধ, জেদ হিংস্রতা দেখা দেয়। দোলার প্রতি সন্দেহ বেড়ে যায়। রাগে চোখ মুখ লালাভ হয়ে আসে।
– তার মানে দোলা ইচ্ছে করে নিচে ছিলো রাতে। যাতে এই ব্যক্তিটির সাথে দেখা করতে পারে। কিন্তু কে এই ব্যক্তি? রুদ্র আবারও দেখে ফুটেজটা। রুদ্র বোঝার চেষ্টা করে কে হতে পারে এই ব্যক্তিটি। রুদ্র ওই ব্যক্তিটির হাতের দিকে খেয়াল করে দেখে সামিরের ঘড়ি মতো একটা ঘড়ি পড়া এই ব্যক্তিটির হাতে। রুদ্র চমকে উঠে। রুদ্র জুম করে দেখে এটা সামিরেরই ঘড়ি। আর ব্যক্তিটিও সামির। রুদ্র ক্রোধান্বিত স্বরে দোলাকে ডাকে। দোলা রত্না চৌধুরীর সাথে গল্প করছিলো নিচে৷ হঠাৎ রুদ্রর এমন চিৎকার করে ডাকে ঘাবড়ে যায়৷
– রুদ্র ঘরের মধ্যে এসে পায়চারি করছে আর দোলার আসার অপেক্ষা করছে।
– রুদ্রর ডাকে দোলা ঘরে আসে বিরক্ত নিয়ে। দোলা ঘরে আসতেই রুদ্র রাগী লুক নিয়ে তাকায় দোলার দিকে। দোলা বিস্ময় নিয়ে তাকায় রুদ্রর দিকে। হঠাৎ এমন বিহেভের মানে বুঝতে পারে না দোলা।
— কি হয়েছে? ডাকলেন কেনো আমায়? অভিমানী স্বরে বলে দোলা।
– গতরাতে কে এসেছিলো? কোনো রকম ভণিতা ছাড়াই বলে রুদ্র। দোলা অবাক হয়ে তাকিয়ে বলে কে এসেছিলো মানে? কার কথা বলছেন?
– কার কথা বলছি বুঝতে পারছো না? বাকি বুঝেও বুঝতে চাইছো না? তুমি ইচ্ছে করে গতরাতে নিচে ছিলে যাতে তুমি ওই ছেলেটার সাথে দেখা করতে পারো। রুদ্র সামিরের নাম নেয় না। কারণ সে চাই দোলা নিজ মুখে বলুক সামিরের কথা।
– কি যা-তা বলছেন রুদ্র। কোন ছেলে! কিসের ছেলে? আর কোথা থেকে আসলো। দেখুন আপনি আমাকে বারবার মিথ্যা অপবাদ দিতে পারেন না। যখন যা ইচ্ছে হবে তাই বলে দোষারোপ করবেন না। আপনার যদি এতই সমস্যা থাকে আমাকে নিয়ে তাহলে কেনো রেখেছেন এই বাড়িতে৷ তাড়িয়ে দিন আমায়। বের করে দিন। মুক্ত করে দিন আমায়। তাহলে অন্তত আমাকে নিয়ে আপনাকে আর ভাবতে হবে না আর আমিও এই নরক থেকে মুক্তি পাবো। রুদ্র কথায় দোলার আবারও রাগ হয়৷ অভিমান গুলো এখন তিক্ততায় স্থান নিয়েছে।
– তুমি তো চাও আমি তোমাকে মুক্ত করে দিই। আর সেই জন্য তুমি ইচ্ছে করে এইগুলো করছো তাই না?
– রুদ্রর কথায় দোলা ভ্রু কুচকে তাকায়। রুদ্রর কোনো কথার মানেই বুঝতে পারছে না সে।
— আমি সবটা দেখেছি দোলা। তাই তুমি চাইলেও কিছু আড়াল করতে পারবে না আমার থেকে।
– তাহলে নতুন করে আমার থেকে আবার কি জানতে চান আপনি? সব যখন আপনি জানেন! আপনি দেখেছেন তাহলে কেনো আমাকে জিজ্ঞেস করছেন। আপনার কাছে নিশ্চয় প্রমাণ আছে আমার বিরুদ্ধে? তাহলে এখনো দাঁড়িয়ে কেনো আছেন আপনি। আসুক আমাকে শাস্তি দিন। গায়ে হাত তুলুন আমার। যেটা আপনি সর্বদা করেন। ক্ষোভ নিয়ে বলে দোলা। রুদ্র বিস্মিত চোখে তাকায় দোলার দিকে।
– দোলার চোখে পানি৷ যেটা দোলা যথা সাধ্য চেষ্টা করছে আড়াল করার রুদ্রর থেকে। কিন্তু রুদ্র ঠিক দেখে নেয় দোলার সে কষ্টস্রোতের ধারা।
– রুদ্রর মনটা হীনো হয়ে আসে। আহত চোখে তাকায় দোলার দিকে। দোলা মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে তাকায়।
– দোলা! কোমল কন্ঠস্বর রুদ্রর। দোলা এরপরও তাকায় না রুদ্রর দিকে।
– সত্যি তুমি জানো না গতরাতে কি হয়েছিলো? কে এসেছিলো? রুদ্রর কথায় দোলার মধ্যে ক্ষোভটা আরো বৃদ্ধি পায়। ইচ্ছে করছে না রুদ্রর কোনো কথার জবাব দিতে।
– কি হলো উত্তর দাও? আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি তোমায়। গম্ভীর কন্ঠে বলে রুদ্র।
আমার আপনাকে কিছু বলার নেই আর না কিছু বলতে চাই। যা ইচ্ছে ভাবুন আপনি। আমি আর নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইনা আপনার কাছে। কারণ এতে কোনো লাভ নেই। যার মধ্যে বিন্দু পরিমাণ বিশ্বাস নেই তার কাছে রচনা দিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করলেও সে কখনোই বুঝবে না৷ সেই এক সূচনায় আবদ্ধ থাকবে। কথাগুলো বলতেই দোলার গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে দুঃখের বিষাদমাখা অশ্রুকণা।
— রুদ্র নড়েচড়ে উঠে দোলার কথায়। নিজের মধ্যে রাগ,ক্রোধ সরিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে।
– এটা আমি কি করছি? আবারও দোলাকে ভুল বুঝছি? অবিশ্বাস করছি আমি। কিন্তু আমি তো কথা দিয়েছি আর কোনো রকম অবিশ্বাস আমি দোলাকে করবো না। আচ্ছা সত্যি দোলা জানে না গতরাতে কে এসেছিলো? তাহলে দোলা বাইরে কেনো গিয়েছিলো ওই সময়। উফফ সব কিছু তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। আমাকে আরো ভালো ভাবে জানতে হবে সব। মাথা গরম করলে চলবে না। আমাকে মাফ চাইতে হবে দোলার কাছে। আমি আবারও দোলাকে হার্ট করলাম। সরি দোলাপাখি। আইম রেলি ভেরি সরি মনে মনেই আওড়াই কথাগুলো রুদ্র।
– রুদ্র দোলার দিকে এগিয়ে গিয়ে দোলার দুই গালে হাত রাখে আলতো স্পর্শে। দোলা নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসতে চাই রুদ্রর থেকে কিন্তু রুদ্রর ভালোবাসা জড়ানো স্পর্শ উপেক্ষা করতে পারে না।
– আমি আবারও তোমাকে কষ্ট দিয়ে ফেললাম দোলাপাখি। আমি এমনটা করতে চাইনি তোমার সাথে। আসলে ওই গতরাতে! থেমে যায় রুদ্র। দোলা কৌতুহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
– কি গতরাতে? বলুন।
– রুদ্র হাত নামিয়ে নেয় দোলার গাল থেকে। করুণ চাহনি রেখে বলে কিছুনা৷ তুমি এখন যেতো পারো৷ আমার কিছু কাজ আছে বেরোতে হবে কথাটা বলে রুদ্র বেরিয়ে যায় ঘর থেকে।
– দোলা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে। আর ভাবতে থাকে রুদ্রর কথাগুলো। কি হলো হঠাৎ রুদ্রর? এইতো রেগে ছিলেন উনি আবার সব নরমাল। আচ্ছা উনি কোন ছেলের কথা বলছিলেন? তখন দোলার মনে পড়ে গতরাতের কথা। যখন সে দরজায় কারো নক করা দেখে দরজা খুলে বাইরে যায়।
আসলে দোলা রাতে সত্যি বাইরে গিয়েছিলো তবে কারো সাথে দেখা করতে নয়৷ বরং কে দরজায় নক দিয়েছে সেটা দেখতে। গতরাতে দোলা যখন ঘরে আসবে কি আসবে না এই নিয়ে দোটানায় ছিলো। তখন হঠাৎ সদর দরজায় কেউ একজন করঘাত করে। দোলা ভ্রু কুচকে তাকায় সেদিকে। কারণ মেইন গেটে দারোয়ান আছে। সেখানে থেকে এসে সদর দরজায় আবার কে নক করবে। এইটা তো সব সময় খোলা থাকে৷ আবার ভেজানো থাকে অনেক সময়। গতরাতেও তাই ছিলো। আর তখনই কেউ নক করে
দোলা দরজা খুলে দেখে কেউ নেই সেখানে। দোলা একটু না অনেকটাই অবাক হয় তাতে। কারণ তার স্পষ্ট মনে আছে কেউ করঘাত করেছে দরজায়। কিন্তু এখানে কেউ নেই। দোলা বাইরে বেরিয়ে দেখে একটু৷ এরপর কাউকে না দেখতে পেয়ে আবার ফিরে আসে। আর ঠিক সে সময়টা সিসি ক্যামেরায় আবদ্ধ হয়ে যায়।
— দোলা আর কিছু ভাবতে পারে না৷ তার আর ভালোও লাগছে না এইসব। রুদ্র কেনো এমন? কেনো উদ্ভুত আচরণ এইগুলো দোলাকে খুব করে ভাবায়৷। দোলার খেয়াল আসে ওই বন্দি ঘরটার কথা। দোলার বিশ্বাস তার সব প্রশ্নের উত্তর ওই ঘরে আছে৷ আর সেটা দোলাকে উন্মোচন করতেই হবে।
— আচ্ছা আমি কি এখন একবার গিয়ে দেখবো ওই ঘরটা। কিন্তু ওই ঘর তো তালা বন্ধ হয়ে। চাবিটা নিশ্চয় ওই গন্ডারের কাছে আছে।
– উনি কি চাবি সাথে রাখবেন সব সময়? নিশ্চয় না। তাহলে চাবিটা ঘরে কোথাও আছে নিশ্চয়। আমাকে খুঁজে দেখতে হবে। উনার আলমারিটা দেখলে আমি পেতে পারি। দোলা চাবি খোঁজার জন্য রুদ্রর আলমারির কাছে যায়।
— রাস্তার পাশে রিকসার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে তানিয়া। বিকেলের দিকে বের হয় তানিয়া একটা ফ্রেন্ডের বাড়ি যাবে বলে। তার থেকে একটা নোট নেওয়ার জন্য বের হয় তানিয়া৷ তানিয়া আজ ইচ্ছে করে গাড়ি নিয়ে আসে না। তার খুব ইচ্ছে করে রিকসায় চেপে যেতে। অনেক দিন হয়েছে রিকসায় ঘোরা হয়নি তার। তানিয়া কাজ শেষ করে এখন বাড়ি ফিরছে। আর তার জন্যই রিকসার অপেক্ষা করছে। সেখানে হঠাৎ আবির্ভাব হয় সজল। ওইদিক দিয়ে যাচ্ছি সে। আর তানিয়াকে দেখে থমকে যায়। প্রত্যাশাই ছিলো না তানিয়ার সাথে দেখা হবে তার এইভাবে। সজল গাড়ি নিয়ে এসে থামে তানিয়ার সামনে। হুট করে বড় গাড়ি সামনে আসায় তানিয়া কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। তানিয়া কৌতুহল কাটাতেই সজল বেরিয়ে আসে গাড়ি থেকে। তানিয়ার কপালে আপনাআপনি একটা ভাঁজ পড়ে।
আরে আপনি এখানে? আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না আপনি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। বেশ উৎসাহিত হয়ে উল্লাসিত কন্ঠে বলে সজল। তানিয়া চোখ মুখ কুচকে বলে অবিশ্বাসের কি আছে এখানে? হ্যাঁ আমি তো আছি আপনার সামনে গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলে।
– না মানে!সে যাই হোক। আপনি এখানে এই সময়? কোনো দরকারে এসেছিলেন বুঝি?
– নাহ!এমনই হাঁটতে হাঁটতে চলে এসেছি। খুব শখ জেগেছিলো তো ব্যঙ্গ করে বলে তানিয়া। সজলের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়।
আপনি রাগ করছেন মিস তানিয়া?
– জ্বি-না৷ তবে বিরক্ত হচ্ছি এটা নিশ্চিত। তানিয়া এদিক ওদিক তাকিয়ে রিকসা খোঁজার ছলে কথাটা বলে।
– ওহ! তবে আমি তো আপনার বিরক্তর কারণ হতে চাইনা। মুখটা মলিন করে বলে সজল। তানিয়া চমকে উঠে ঘাবড়ে যাওয়া কন্ঠে বলে এমা! কথাটা আমি আপনাকে বলিনি। আসলে কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি এখানে তবে একটাও রিকসার দেখা মিলছে না। তাই সেই বিরক্তর কথা বলেছি। আপনাকে একদম নয় ভাইয়া। দাঁত কেলিয়ে বলে তানিয়া। এইদিকে সজল হযবরল লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে তানিয়ার দিকে। উত্তেজিত কন্ঠে বলে ভাইয়া? কে ভাইয়া? সহজ আশাহত হয় তানিয়ার মুখে ভাইয়া ডাক শুনে।
– চলবে….