তুমিময় আসক্তি ২ পর্ব ৪

0
930

#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম (লেখিকা)
“৪”

— শাট আপ! একদম লেকচার দিতে আসবে না আমাকে৷ আমার দয়ায় খাচ্ছো, থাকছো আর অন্যের গুণগান গাইছো। নিজের তো মুরিদ নাই কিছু করার। তোমাকে বিয়ে করে জীবনে কি পেয়েছি আমি? কি দিতে পেরেছো আমাকে? সারাজীবন তো আমার টাকায় চলে গেছো। তাহলে এত বড়বড় কথা আসে কীভাবে তোমার? তোমাকে বিয়ে করা আমার জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো। আগে যদি জানতাম তুমি একটা ফকিন্নি ঘরের সন্তান তাহলে কখনোই বিয়ে করতাম না তোমাকে। জীবনটা আমার অতিষ্ঠ করে দিয়েছো।
– জেসমিন চৌধুরীর কথায় তানভীর আহমেদ মুচকি হেসে বলে, আমাকে পেয়েছিলে বলে জীবনে স্বাধীনতা বজায় রাখতে পেরেছো। আমার টাকা নাই, ধন সম্পদ নাই বলে আমাকে তুমি পায়ের তলায় রাখতে পারো। কখনো কোনো কথা বলার অধিকার দাওনি৷ ন্যায়-অন্যায় দেখেও অন্ধের মতো থাকি। তবে একটা কথা মনে রেখো জেসু! পাপ কিন্তু কখনো কাউকে ছাড় দেয়না৷ তার কর্মের ফল ঠিকই পাবে একদিন৷ তেমন তোমারও নিস্তার নাই। অন্যের জন্য যে গর্ত খুড়ে রাখছো তুমি এমন না হয় সে গর্তে তুমি মুখ থুবড়ে পড়লে। কথাগুলো বলে তানভীর আহমেদ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। জেসমিন তানভীর আহমেদের চলে যাওয়ার পাণে চেয়ে থেকে বলে, শুধু মুখে বড়বড় কথা। আমার কেউ কিছু করতে পারবে না। তার আগে আমি আমার কাজ হাসিল করে ছাড়বো।

— আমি আসছি মা তাহলে? হাসি মুখে বলে দোলা। রুদ্র বেরিয়ে গেছে আধা ঘণ্টা আগে। এরপর দোলাও রেডি হয়ে আসে বাড়িতে যাওয়ার জন্য।
– হুম যা তবে। সাবধানে যাস। আর শুন গাড়ি করে যাবি আবার গাড়িতেই আসবি। পাকামু করে গাড়ি আবার পাঠিয়ে দিও না। রত্না চৌধুরীর কথায় দোলা হেসে বলে আচ্ছা মা আমি তাই করবো।
– তানিয়া! আসছি আমি। দোলার কথায় তানিয়া হাসিমুখে বিদায় দেয়।

— দোলা বাড়িতে এসে সদর দরজায় ধাক্কা দিলে রোকন( দোলার ভাই) এসে দরজা খুলে দেয়। দোলাকে দেখে রোকন খুশিতে আত্মহারা হয়ে উত্তেজিত কন্ঠে বলে আপু তুই? দোলা ঠোঁট এলিয়ে হেসে রোকনকে জড়িয়ে ধরে বলে, কেমন আছিস ভাই তুই?
– ভালো ছিলাম না রে আপু৷ এখন তোকে দেখার পর অনেক ভালো আছি। অনেক মিস করছিলাম তোকে। জানিস আপু বাবা তোর কথা ভেবে ভেবে মন খারাপ করে। মাঝে মাঝে দেখি বাবার চোখে পানিও। আমার খুব খারাপ লাগে তখন৷ আচ্ছা তুই আসিস না কেনো আপু। আমি বাবাকে বললাম তোকে দেখে আসি। কিন্তু বাবা আমাকে বারণ করলো। আমাকে যেতে দিলো না আর না বাবা যেতে চাইলো।
— রোকনের কথায় দোলার নিশ্বাস ভারী হয়ে আসে কষ্টে। দোলা প্রসঙ্গ বদলাতে বলে, আচ্ছা বাবা কোথায়? বাড়ি আছে তো?
– বাবা তো বাজারে গেছে আপু৷ তুই বস এখনি চলে আসবে। দোলা ভেতরে গিয়ে ব্যাগ থেকে রোকন’কে কিছু চকলেট আর কলমের বক্স দেয় একটা । রোকন হাসি মুখে বলে আমার তো কলম এখনো শেষ হয়নি আপু। এখনো তিনটা আছে।
– তাতে কি। এইগুলোও রেখে দে। আমি তো আর সব সময় আসতে পারবো না৷ আমি তো জানি আমার ভাইটা আমার থেকে ছাড়া কারো থেকে কলম নিতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে না।
– এমন কিছু না রে আপু৷ তোর কলম দিয়ে লিখলে আমি ভালো রেজাল্ট করতে পারি।
– রোকনের এমন ছেলেমানুষী কথা শুনে দোলা শব্দ করে হেসে দেয়। এরই মাঝে রাশেদ মিয়া আসেন

– দোলাকে দেখে হাত থেকে বাজারের ব্যাগ টা পড়ে যায়। ছলছল চোখে এগিয়ে যায় মেয়ের কাছে। রাশেদ মিয়াকে দেখে দোলা বাবা বলে জড়িয়ে ধরে।
– তুই কেমন আছিস মা? সব ঠিকঠাক আছে তো। ওরা সবাই তোকে ভালোবাসে তো মা।। তোর কোনো সমস্যা হয়না তো ওইখানে?
— আস্তে বাবা৷ আমাকে বলতে দাও। আমি ভালো আছি। আর ওরা সবাই অনেক ভালো বাবা। আমার কোনো সমস্যা হয়না ওইখানে। হাসিমুখে বলে দোলা।
— আর রুদ্র? ও তোর সাথে ভালো ব্যবহার করে তো? রুদ্রর কথা শুনে দোলার মুখটা মলিন হয়ে আসে।
– কি বাজার করে নিয়ে আসলে বাবা। দেখি আজ আমি রান্না করবো।।কতদিন হলো রান্না করে খাওয়ায়নি তোমাদের। রাশেদ মিয়ার কথা এড়িয়ে বলে দোলা।
– আপু ইলিশ মাছের পাতুরি করবি আজ৷ অনেক দিন হলো তোর হাতের ইলিশ মাছের পাতুরি খাইনা৷ রোকন বলে কথাটা।
— আচ্ছা ভাই আজ সব তোর পছন্দের রান্না করবো আমি। তাহলে তো হবে? দোলার কথায় রোকন ইয়ে বলে দোলাকে জড়িয়ে ধরে। অনেক দিন পর মেয়েকে দেখে রাশেদ মিয়ার বুকে প্রশান্তি ঢেউ খেলে।

— সারাঘর তন্ন তন্ন করে ফোন খুঁজে চলেছে জেসমিন চৌধুরী। দোলা যাওয়ার পর থেকে ফোন টা খুঁজে চলেছে সে৷ রুদ্রকে যে খবরটা দেবে তার জন্য ফোন লাগবে তার। কিন্তু ফোনটা কোথায় যে রাখছে তিনি খুঁজেই পাচ্ছে না৷ ভীষণ বিরক্ত তিনি নিজের প্রতি। অনেক রাগ হচ্ছে তার মধ্যে।

— ঘরের একি অবস্থা করেছো জেসু? তানভীর আহমেদ আসেন বলতে বলতে।
– আমার ফোনটা কোথায় দেখেছো? কাঠগলায় বলে জেসমিন চৌধুরী।
– তোমার ফোন কোথায় আমি কিভাবে বলব। দেখো আছে হয়তো আশেপাশে কোথাও।
– সারা ঘর খুঁজেছি আমি। কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না৷ ঘরের অবস্থা দেখেছো৷ সারা ঘর এলোমেলো কর ফেললাম অথচ আমার ফোনটা পাচ্ছি না।

— বেশ হয়েছে। অন্যকে জব্দ করতে গিয়ে এখন তুমি নিজেই জব্দ৷ মনে মনে কথাটা বলে তানভীর আহমেদ আর মুচকি মুচকি হাসে।
-এই ভাবে সং হয়ে দাঁড়িয়ে না থেকে ফোনটা খুঁজতে সাহায্য করো আমায়৷ খুব ইমপোর্টেন্স একটা কল করার আছে।
– সে-তো অন্যের পেছনে বাঁশ দেওয়া মুখ ফসকে বলে ফেলে তানভীর আহমেদ।
– কি বললে তুমি? রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে জেসমিন চৌধুরী।
– কই কিছু না তো। আমি খুঁজছি ফোন তোমার।

-দরজার আড়াল থেকে সবটা দেখে মিটিমিটি হাসছে তানিয়া। কারণ ফোনটা সেই সরিয়েছে। তানভীর আহমেদ তানিয়াকে সবটা জানালে তানিয়া জেসমিন চৌধুরীর ফোন নিয়ে তার কাছে রেখে দেয়।

— সারাদিন খুঁজলেও তুমি ফোন পাবে না মা। ফোন ঠিক সময় মতো চলে আসবে তোমার কাছে। দোলা ভাবির ক্ষতি হবে এমন কোনো কাজ আমি তোমাকে করতে দেবো না। এরপর তানিয়া চলে যায় সেখানে থেকে।

— সময়টা দুপুরের পর। রুদ্র অফিসে কাজ করছে বসে৷ আজকে তার কাজের অনেক চাপ। বেশ কিছু ডিল ফাইনাল হয়েছে তারই প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রাজ আসে অফিসে।

– রুদ্র আজ বিকালে একটা মিটিং আছে খেয়াল আছে তোর?
– হুম আছে! সময় মতো চলে যাবো আমি। ফাইলে চোখ রেখেই বলে রুদ্র।
– আচ্ছা তাহলে আমাকে মিটিংয়ের ফাইলটা দে। আমি সব রেডি করে রাখি তুই শুধু গিয়ে মিটিং এটেন্ড করিস। রাজের কথায় রুদ্র উঠে আলমারি থেকে একটা ফাইল বের করতে গিয়ে পাইনা। হঠাৎ রুদ্রর মনে পড়ে সে ফাইলটা বাড়িতে রেখে এসেছে সে৷ গতদিন রাতেই ফাইলটা নিয়ে বাড়ি যায়।
– আমি তো ফাইলটা ভুলে বাড়িতে রেখে এসেছি। চিন্তিত সুরে বলে রুদ্র। আচ্ছা শুন তুই তো এখন বাড়ি ফিরবি৷ ওইদিক দিয়ে ফাইলটা নিয়ে যাস। রুদ্রর কথায় রাজ আচ্ছা বলে উঠে চলে যেতে যাবে তখন রুদ্র বলে ওয়েট! রাজ ভ্রু কুচকে তাকায়।

– তুই বরং বাড়ি ফিরে যা। বিকালে মিটিংয়ে চলে আসিস। আমি ফাইল রেডি করে নিয়ে যাবো।
– ওকে! তাহলে তুই নিয়ে আসিস কিন্তু মনে করে। আমি গেলাম। এরপর রাজ বেরিয়ে যায়৷ রুদ্র আবারও কাজে মন দেয়। হাতের কাজটা শেষ করে বের হবে সে।

— সন্ধ্যার সময়!
— আজকের রাতটা থেকে গেলি পারতি দোলা মা। কতদিন পর আসলি তুই আবার আজই চলে যাচ্ছিস। মন খারাপ করে বলে রাশেদ মিয়া।
– থাকার মতো পরিস্থিতি নেই বাবা৷ তবে কথা দিচ্ছি আমি পরেরবার এসে থাকবো। আর অনেক দিন থাকবো।
– আপু আবার কবে আসবি? রোকনের কথায় দোলাকে হাসার চেষ্টা করে বলে জানি না আবার কবে আসবো। আদো কি আর আসতে পারবো কি-না। শেষের কথাটা আস্তেই বলে।
– আচ্ছা আমি গেলাম। অনেক দেরি হয়ে গেছে৷ ওইদিকে সবাই চিন্তা করছে আমার জন্য। রোকন আমার ফোনটা নিয়ে আয় তো ভাই ঘরে থেকে। দোলার কথায় রোকন ঘর থেকে ফোন এনে দেয় দোলাকে।
– দোলা ফোন অন করতে গিয়ে দেখে অফ হয়ে গেছে ফোন। চার্য আউট হয়ে গেছে তাই।
– ফোনটা এখনি বন্ধ হতে হলো। বাড়িতে একটা ফোন দেবো ভাবলাম সেটা আর হবে না৷ আচ্ছা বাবা আমি গেলাম। নিজের খেয়াল রেখো কিন্তু৷ আমার জন্য একদম মন খারাপ করবে না৷ আর ভাই মন দিয়ে পড়াশোনা করবি৷ অনেক বড় হতে হবে তোকে।

– রোকন হাসে দোলার কথায়৷ রাশেদ মিয়া মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে এরপর বিদায় দেয়।

— উফফ এই ভাবিটাও না। দরকারে একদম পাওয়া যায়না। ফোনটাও সুইচ অফ করে রেখেছে। পায়চারি করছে তানিয়া আর কথাগুলো বলছে। সামনে চিন্তিত হয়ে বসে আছে রত্না চৌধুরী। জেসমিন চৌধুরী বেশ খোস মেজাজে আছে৷ অবশেষে তার মনের ইচ্ছে পুরণ হবে৷

— মামি আমার তো খুব ভয় করছে। না জানি কি আছে দোলা ভাবির কপালে। অসহায় ফেস করে বলে তানিয়া।
– আমারও চিন্তা হচ্ছে দোলার জন্য। মেয়েটাকে এইভাবে না পাঠালে হতো। কে জানছে রুদ্র আজ এত তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে। কথায় আছে না অভাগী যেখানে যায় কপাল সাথে করে যায়। দোলারও হয়েছে তেমন।
— সব তোমাদের পাকামি করার ফল। তবে ভালোই হবে৷ ওই মেয়ের ছটফটানি একটু কমবে। স্বামীকে লুকিয়ে বাইরে যাওয়া। কি সাংঘাতিক কাজ ভাবা যায়।
– তুমি চুপ করো মা। ভাবি মামির অনুমতি নিয়ে তবেই গেছে। তাছাড়া অন্য কোথাও তো যায়নি। গিয়েছে তো নিজের বাড়িতেই।
– এর মধ্যে দোলা আসে। দোলাকে দেখে তানিয়া আর রত্না চৌধুরী করুণ চোখে তাকায়।
— কি হয়েছে তানিয়া! তোমাদের এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেনো? বিস্ময় নিয়ে বলে দোলা।

অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে গেছে ভাবি। ব্রো তো চলে এসেছে৷ সেই বিকালে এসে ঘরে বসে আছে। মনে হয় খুব রেগে আছে ব্রো। রুদ্র এসেছে কথাটা শুনে আঁতকে উঠে দোলা। ভয়ে নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায়। হাত-পা রীতিমতো কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে যায়। যে ভয়টা পাচ্ছিলো আর সেটাই হলো।

– দোলা মা৷ একদম ভয় পাবি না৷ তুই ঘরে যা৷ রুদ্র যদি তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করে তাহলে আজ আমি তার প্রতিবাদ করবো। সাহস দিয়ে বলে রত্না চৌধুরী।

— হ্যাঁ আরো মাথায় তোলো তোমার আদরের বউমাকে। তবে যায় বলো ভাবি। রুদ্রর থেকে যে আজ কোনো ভাবে নিস্তার নেই তোমার আদরের বউমার এটা নিশ্চিত। যাও না একবার ঘরে মুখ বেকিয়ে বলে জেসমিন চৌধুরী।
– মা আমি ঘরে যাচ্ছি। কথাটা বলে দোলা একরাশ ভয় নিয়ে ঘরের দিকে যায়। পা যেনো তার চলছে না। সত্যি কি অপেক্ষা করছে তার জন্য জানা নেই।

— দোলা ঘরের সামনে এসে থেমে যায়৷ ঘরের মধ্যে কুটকুটে আঁধার বিরাজ করছে৷ দোলা সাবধানে ঘরের মধ্যে ঢুকে আলো দিতে যাবে তখনই তার হাতে টান পড়ে। দোলা ছিটকে পড়ে যায় মেঝেতে৷ পড়ে গিয়ে হাতে ব্যথা পায় অনেক টেবিলের সাথে লেগে। মুখ দিয়ে মৃদু স্বরে আর্তনাদ করে উঠে। সাথে সাথে ঘরে আলো জ্বলে উঠে। দোলা মাথা তুলে সামনে তাকাতেই দেখে রুদ্র দাঁড়িয়ে তার সামনে অগ্নি চোখে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে কতটা রেগে আছেন তিনি।

— দোলা একটা শুকনো ঢোক গিলে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে।
– রুদ্র দোলার সামনে হাঁটুমুড়ে বসে গম্ভীর কন্ঠে বলে, কোথায় গিয়েছিলে তুমি? রুদ্র কথায় যেনো একরাশ গাম্ভীরতা বিরাজমান।
— আমি ও-ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম একটু কাঁপা কাঁপা গলায় তোতলানো স্বরে বলে দোলা। কেনো জানি খুব ভয় করছে তার রুদ্রকে দেখে৷ রাগে পুরো মুখ লাল হয়ে আছে রুদ্রর।
— রুদ্র আবারও একহাতে দোলার গাল চেপে ধরে। এতে দোলা খিচে চোখ বন্ধ করে ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করছে।
– কার অনুমতি নিয়ে গিয়েছো তুমি? আমি বারণ করেছিলাম তোমায় যেতে। বলেছিলাম সময় হলে আমি নিয়ে যাবো। কি বলেছিলাম না? ভ্রু কুচকে বলে রুদ্র। দোলা মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বলে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে।
— তাহলে কেনো গেলে? আমি বারণ করার পরও কেনো গিয়েছো তুমি? তোমার ফোন অফ কেনো?
– লাগছে আমার অস্পষ্ট স্বরে বলে দোলা। গালে অনেক ব্যথা করছে দোলার।
— লাগছে না! লাগছে তোমার তাই তো। খুব লাগছে? কেমন অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে রুদ্র৷ দোলা অবাক হয়ে রুদ্রকে দেখছে৷ এই রুদ্রকে কেউ দেখলে বলবে না সে একজন স্বাভাবিক সুষ্ঠু মানুষ।
– তোমার তো এইখানে লাগছে আর আমার কোথায় লাগছে জানো? রুদ্রর কথায় দোলা কৌতুহলী চোখে তাকায়।
– আমার এখানে লাগছে! বুকের বা-পাশে হাত দিয়ে দেখায় রুদ্রু। দোলা অবাক ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে৷ চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।
– আচ্ছা তুমি কি সত্যি তোমার বাবার বাড়ি গিয়েছিলে নাকি অন্য কারো সাথে.. দোলা এবার হাত ঝ্যাকারি দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয় রুদ্রকে। ঘৃণা ভরা চাহনি রাখে রুদ্রর উপর।

– দেখুন মিস্টার রুদ্রনীল চৌধুরী, আপনি যা ইচ্ছে আমাকে বলুন, যা ইচ্ছে হয় করুন। কিন্তু খবরদার আমার চরিত্র নিয়ে একটাও বাজে কথা বলবেন না। তাহলে কিন্তু আমি মুখ বুজে সবটা সহ্য করবো না। দোলার কথায় রুদ্র উঠে দাঁড়ায়। মুচকি হাসে সে। দোলা ভ্রু কুচকে রুদ্রর দিকে তাকায়।
– আমাকে ওয়ার্ন করছো তুমি। এই রুদ্রনীল চৌধুরীকে খবরদারী দেখাচ্ছো। রুদ্র দোলার হাত ধরে ঘুরিয়ে একটা হাত পেছনে নিয়ে চেপে ধরে। ব্যথা পাওয়া হাতটা রুদ্র ঘুরিয়ে পেছনে ধরায় দোলা যেনো ছটফট শুরু করে ব্যথায়। কাতরাতে থাকে দোলা ব্যথার অসহ্য যন্ত্রণায়।

— সত্যি কথা বললে খুব গায়ে লাগ তাই না? আমি বারণ করেছিলাম তোমায় ওই বাড়ি না যেতে৷ ইনফ্যাক্ট এটাও বলেছিলাম আমার অনুমতির বাইরে তুমি এই বাড়ির বাইরে একটা পা-ও রাখতে পারবে না। আর তুমি কি করলে আমাকে ফাঁকি দিয়ে আমার কথা অমান্য করে বাইরে চলে গেলে। সারাদিন কাটিয়ে চলে আসবে আর আমি কিছু জানতে পারবো না এটাই ভেবেছিলে তাই-তো? হাতটা আরো শক্ত করে চেপে ধরে বলে রুদ্র৷ দোলা রুদ্রর বুকের সাথে পিঠ দিয়ে আরও মিশে যায় ব্যথায়। চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। দাঁতে দাঁত চেপে ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করছে।

– আজ তোমার এমন অবস্থা করবো যে! আর কোনো দিন আমার কথা অমান্য করার সাহস তুমি দেখাবে না। রুদ্র কথায় দোলা ভয় পেয়ে যায়। ঘাবড়ে যাওয়া কন্ঠে বলে কি করবেন আপনি?
– তোমার বাবা.. বাকিটা বলার আগে দোলা নায়া বলে চিৎকার করে উঠে। রুদ্র ডেভিল হাসি দেয়। শব্দ করে হেসে উঠে সে।

–” চলবে….

-❌❌কপি করা নিষেধ ❌❌ভুলক্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষে বিবেচনা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here