#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম (লেখিকা)
“২”
–” দোলা দেখা করতে যায় রুদ্রর সাথে। রুদ্র যেনো দোলারই অপেক্ষায় ছিলো। সে জানতো তার বাবার এত বড় বিপদের কথা শুনলে দোলা বসে থাকতে পারবে না৷ রুদ্রর কাছে ছুটে আসতে হবে। আর হয়েছেও তাই। দোলা রুদ্রকে বোঝানোর চেষ্টা করে তার বাবা কিছু করেনি। নিশ্চয় কোনো ষড়যন্ত্র আছে এখানে৷ তার বাবাকে যেনো এই মিথ্যা অপবাদ না দেওয়া হয়৷ তাহলে তিনি শেষ হয়ে যাবেন অপমানে। গরিব মানুষের কাছে আর যাই হোক আত্মসম্মানটা সবার আগে। হয়তো তারা ধনি,বা অঢেল সম্পদের মালিক না। তবে আত্মসম্মানবোধ দৃঢ় থাকে। রুদ্রও জানে রাশেদ মিয়া কিছু করেনি। আর না হিসাবে কোনো গড়মিল আছে। তবে রুদ্র এমন একটা ভাব ধরে আছে যে, সে প্রচন্ডভাবে বিরক্ত দোলা এবং রাশেদ মিয়ার প্রতি। দোলার কোনো কথায় সে মানতে বা শুনতে চাইনা৷ দোলা যখন ব্যর্থ হয় রুদ্রকে বোঝাতে তখন হতাশ হয়ে ফিরে আসা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না তার৷ দোলা দুঃখ নিয়ে ফিরে আসতে যাবে তখনই রুদ্র দোলাকে বিয়ের প্রপোজাল দেয়। রুদ্রর মুখে বিয়ের কথাশুনে দোলা যেনো বড়সড় শক খাই একটা। অবাক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে রুদ্রের দিকে।
— এরপর দোলা জানায় সে এই বিয়ে করতে পারবে না। তখন রুদ্র দোলাকে নানা ভাবে ব্ল্যাকমেইল করে। রাশেদ মিয়াকে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখাই৷ নিরুপায় হয়ে দোলা রুদ্রকে বিয়ে করার জন্য রাজি হয়ে যায়৷ আর এটাই ছিলো দোলার জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। যদিও দোলার কাছে আর কোনো অপশন ছিলো না রুদ্রকে বিয়ে করা ছাড়া। তবে দোলা এটা খুব ভালো করে বুঝে গিয়েছিলো যে রুদ্রর প্ল্যান ছিলো সব তাকে বিয়ে করার জন্য। কিন্তু কেনো? এর উত্তর দোলা আজও খুঁজে পায়নি।
রাশেদ মিয়া প্রথমে রাজি না হলেও দোলা তাকে বোঝায়। আর যাই হোক সে তার বাবাকে জেলে যেতে দেখতে পারবে না। বিয়ের পর দোলার জীবনে শুরু রুদ্র নামক ঝড়। কখনো রুদ্রর রোমান্টিক অত্যাচার, কখনো মানসিক ভাবে তো কখনো শারিরীক। দোলা নিরুপায় হয়ে সবটা সহ্য করে যাচ্ছে আর অপেক্ষা করছে রুদ্রর করা ষড়যন্ত্র গুলো সবার সামনে নিয়ে আসার। তার বাবাকে নির্দোষ প্রমাণ করবে। এরপর সে এই যন্ত্রণাদায়ক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসবে৷ যেখানে আত্মসম্মান নেই, কোনো বিশ্বাস নেই সেখানে থাকা অহেতুক ছাড়া কিছু না।
— রুদ্রর কোম্পানির সাফল্যের জন্য একটা পার্টি রাখা হয়। রুদ্র দোলাকে বলে সে পার্টি এটেন্ড করতে। কারণ রুদ্র চাই দোলাকে সবার কাছে নিজের ওয়াইফ বলে পরিচয় করিয়ে দিতে। রুদ্র দোলাকে কখনো একা ছাড়ে না৷ ইনফ্যাক্ট বিয়ের পর দোলার বাড়ির বাইরে বেরুনো নিষিদ্ধ করা হয়। দোলার প্রয়োজনীয় সব কিছু রুদ্র সময় মতো পৌছে দিয়েছে দোলার কাছে৷ সব সময় চোখে চোখে রাখা হয় দোলাকে। দোলা প্রথমে পার্টিতে যেতে চাইনা৷ কারণ সে জানে পান থেকে তিল পরিমাণ চুন খসলে তার জন্য থাকবে অনেক দুর্ভোগ। আবার এমনও হতে পারে তার জন্য অন্যের কোনো ক্ষতি হতে পারে। রুদ্র চাইনা দোলা কোনো পর-পুরুষের সাথে কথা বলুক। আর পার্টিতে তো অনেক মানুষ থাকবে। সবাইকে তো এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না৷ কিন্তু দোলা তার সিদ্ধান্তে অটুট থাকতে পারে না রুদ্রর জেদের কাছে৷ বাধ্য হয়ে পার্টিতে যেতে হয় তাকে।
– পার্টিতে অনেক মানুষ ছিলো। রুদ্রর পরিবারের সবাই এবং অফিসের স্টাফ থেকে শুরু করে বড় বড় বিজনেসম্যানরা।
– রুদ্র দোলাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় তার ওয়াইফ বলে। এরপর দোলা আর তানিয়াকে বলা হয় একসাথে থাকতে৷ সে একটা কাজ সেরে জলদি চলে আসবে৷ রুদ্র কাউকে একটা ফোন করতে করতে সেখানে থেকে চলে যায়। দোলা খুবই ভয়ে ভয়ে পার করে সময়টা। তানিয়া আর দোলা বেশ হাসিমুখে গল্প করছিলো এমন সময় একজন ব্যক্তি এসে দাঁড়ায় তাদের সামনে। ব্যক্তিটাকে দেখে দোলা ঘাবড়ে যায়। ভয়ার্ত চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে রুদ্র আছে নাকি। ব্যক্তিটি আর কেউ না৷ রুদ্রর অফিসেরই ম্যানেজার। দোলার সাথে আলাপ করতে আসে। বসের ওয়াইফ বলে কথা। ম্যানেজার দোলার সাথে কথা বললে দোলা কোনো জবাব দেয়না৷ কারণ তার তো ধ্যানগ্যান রুদ্র। যদি একবার দেখে নেই কথা বলতে তাহলে যে কি কুরুক্ষেত্র বাধাবে সেটা একমাত্র দোলায় জানে।
– এর মধ্যে রুদ্র হাজির হয় সেখানে৷ দোলাকে ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে দেখে চোখ মুখ কুচকে তাকায় দোলার দিকে। রুদ্রকে দেখতে পেয়ে দোলার আত্মা কেঁপে উঠে। সেখানে থেকে সরে আসে দ্রুত পায়ে৷ আর তখনই বাঁধে আরেক বিপত্তি। দোলা তাড়াহুড়ো করে আসতে গিয়ে একজন ওয়েটারের সাথে ধাক্কা খায় আর এতে ওয়েটারের হাতে থাকা জুসের ট্রে’টা দোলার উপর পড়ে দোলার শাড়ি ভিজে যায়। ওয়েটার ভয় পেয়ে যায়! সাথে অনেকটা ঘাবড়ে উঠে। দোলার অবস্থাও সেম। ওয়েটার কি করবে বুঝতে না পেরে দোলার শাড়ি ঝাড়তে শুরু করে ভয়ে। কারণ রুদ্রনীল চৌধুরীর বউ বলে কথা৷ আর তার গায়ে একজন সামান্য ওয়েটার জুস ফেলেছে এটা যদি রুদ্রর কানে যায় তাহলে তার আর প্রাণে বাঁচা হবে না৷ সেই তাড়নায় ওয়েটারটা দোলার শাড়ি পরিষ্কার করতে যায়। এইদিকে রুদ্র রাগী লুক নিয়ে সবটা দেখছিলো। যখন ওয়েটার দোলার শাড়িতে হাত দেয় তখন রুদ্র এসে ওয়েটারের হাত চেপে ধরে শক্ত করে। এমন ভাবে হাতটা ধরেছে যে এই বুঝি হাত ভেঙে গুড়িয়ে যাবে। দোলা ভয়ার্ত ফেসে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রুদ্রর দিকে৷ রুদ্রর চোখ দিয়ে যেনো আগুনের ফুলকি ছুটছে। রুদ্র ওয়েটারকে ছেড়ে দিয়ে দোলার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায় সবার মাঝে । সবাই অবাক চাহনিতে তাকিয়ে আছে রুদ্র আর দোলার দিকে। তানিয়া ঘাবড়ে যায় সব কিছু দেখে। সে খুব ভালো করে জানে দোলার জন্য সময়টা মোটেও ভালো নয়। পার্টিতে জেসমিন চৌধুরীও ছিলেন ( রুদ্রর ফুপি) দোলাকে ওইভাবে নিয়ে যেতে দেখে তিনি অনেক খুশি হয়। দোলাকে একদম সহ্য করতে পারেন না তিনি।
— এরপরের ঘটনা তো আপনারা জানেনই।
ছোট একটা খুপরির মতো ঘরে বেঁধে রাখা হয়েছে একজনকে। ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটফট করছে সে। ভয়ে তার কলিজা শুকিয়ে আছে যেনো। আর যাই হোক রুদ্রনীল চৌধুরী সম্পর্কে সবাই কম বেশি অবগত। মনে মনে নিদারুণ আফসোস তার কেনো সে পার্টির কাজটা নিতে গেলো। যদি সেখানে না যেতো তাহলে হয়তো তাকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।
– আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ। আমি আর কখনো রুদ্র স্যারের বাড়িরে কাজে যাবো না। এমনকি এই শহরেই থাকবো না আমি। চলে যাব অনেক দূরে। আমার বাড়িতে বউ আর একটা মেয়ে আছে। আমি ছাড়া তারা নিঃস্ব। প্লিজ ভাই আমাকে ছেড়ে দিন৷ ওয়েটার টা আকুতি করতে থাকে সাথে থাকা দুজন লোকের কাছে৷ ওরা রুদ্ররই লোক।
– স্যার আসুক। তারপর তোকে ছেড়ে দেবে জনমের মতো ওই উপরে। একজন বলে উঠে তার মধ্যে থেকে। এই কথা শুনে লোকটার কলিজা শুকিয়ে আসে। আজ আর তার নিস্তার নেই।
– আমি তো বলছি আমি চলে যাবো এখানে থেকে। কখনো আর এই মুখ দেখাবো না আপনাদের। আমাকে ছেড়ে দিন ভাই।
– তোকে ছেড়ে আমরা আমাদের প্রাণ খোয়া দেবো নাকি৷ ওই ওর মুখটা অফ কর৷ ঘ্যানঘ্যান ভালো লাগে না৷ রুদ্র স্যার আসছে৷ এরপর শা/লার একটা ব্যবস্থা হবে৷ লোকটার কথায় একজন ওয়েটারের মুখ বাঁধতে যাবে তখনই রুদ্র প্রবেশ করে সেখানে। রুদ্রকে দেখে লোকটার প্রাণ যায় যায় অবস্থা। ঘনঘন ঢোক গিলতে থাকে। চোখ দিয়ে আপনাআপনি পানি পড়তে শুরু করে লোকটার।
— স্যার আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ। বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে কিছু করিনি৷ আমি ম্যামের শাড়িতে জুস ফেলতে চাইনি৷ ম্যাম এমনভাবে আসছিলেন যে আমি বুঝতে পারিনি। রুদ্র লোকটার কথায় যেনো কোনো পাত্তা দেয়না। হেয়ালিপণা নিয়ে চেয়ারে বসে পায়ের উপর পা তুলে।
— তুই যদি শুধু জুস ফেলে থেমে যেতি তাহলে হয়তো তোকে এখানে নিয়ে আসা লাগতো না আমায়। কিন্তু তুই আমার ওয়াইফেরর শরীরে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেছিস। খুব সখ না অন্যের বউয়ের শরীর স্পর্শ করা৷ বেশ মজা লাগে এতে তাই না? শান্ত ভঙ্গিতে বলে রুদ্র। রুদ্রর কথায় লোকটা বড়বড় চোখ করে তাকায়। ঘামে অবস্থা বেহাল তার।
– ভুল ভাবছেন স্যার। আমি এমন কিছু করিনি৷ আমি তো ভয়ে ম্যামের শাড়ি… বাকিটা বলার আগের রুদ্র ওয়েটারের বুকে একটা লা/থি মা/রে। ওয়েটার চেয়ার নিয়ে নিচে পড়ে যায় বাঁধা অবস্থায়।
— আমার স্ত্রীর শরীরে হাত দিয়ে আবার আমাকেই তার ব্যাখ্যা দিচ্ছিস বা/স্টার্ড কথাটা বলে রুদ্র একটা রিভোলবার বের করে ওয়েটারের দিকে তাক করে গুলি করতে যাবে তখনই হন্তদন্ত হয়ে রাজ আসে। ( রুদ্রর বন্ধু)
– স্টপ রুদ্র! কি করছিস এইসব৷ পাগল হয়ে গেছিস কথাটা বলে রুদ্রর হাত ধরে থামিয়ে দেয়। লোকটা ভয়ে কুঁকড়ে উঠে খিচে চোখ বন্ধ করে আছে৷ রাজের কথায় চোখ খুলে তাকায়।
– আমার হাত ছাড় রাজ। ওকে আমি শেষ করে ফেলবো। আমার ওয়াইফের শরীরে হাত দেওয়ার সাহস হয় কিভাবে ওর কথাটা বলে রুদ্র আবারও গুলি করতে গেলে রাজ রিভোলবারটা কেড়ে নেয় রুদ্রর থেকে। রুদ্র রাগী চোখে তাকায় রাজের দিকে৷ রাজ ভড়কে যায় এতে কিছুটা।
– শান্ত হো রুদ্র। এত হাইপার কেনো হচ্ছিস তুই? সামান্য একটা ব্যাপারকে এত বড় করে দেখার কি আছে। তাছাড়া উনি তো ইচ্ছে করে কিছু করেনি বলছে তো। একটা মিস-আন্ডারস্ট্যান্ড হয়ে গেছে৷। ছেড়ে দে।
– তুই কি পার্টিতে উপস্থিত ছিলি? কাঠগলায় বলে রুদ্র।
– আমি ছিলাম না ঠিকই কিন্তু শুনেছি আমি সবটা। তানিয়া আমাকে বলেছে। তুই দোলা ভাবির সাথেও ঠিক করিসনি রুদ্র। কেনো এত রুড হয়ে উঠছিস তুই। কেনো নিজেকে এত কঠিন ভাবে উপস্থাপন করতে চাইছিস?
– কেনো করি তুই জানিস না? রুদ্রর এই কথাটায় রাজ থেমে যায়। করুণ একটা চাহনি রেখে বলে সবটা বুঝতে পারছি কিন্তু তারপরও তোর কোথাও একটা ভুল হচ্ছে রুদ্র৷ দোলা ভাবি আর যাই হোক এমন হতে পারে না৷ আমি তো বিশ্বাসী করতে পারছি না। তাছাড়া তুই একজনের… স্টপ রাজ। এই নিয়ে আর একটা কথা শুনতে চাইনা আমি তোর থেকে। তুই এখানে কেনো এসেছিস তাই বল? আর তোর না পার্টিতে এটেন্ড থাকার কথা ছিলো। আসিস নাই কেনো?
– সরি ইয়ার! একটা কাজে আটকে পড়েছিলাম। আর একটা খুশির সংবাদ আছে৷ যার জন্য আমার এখানে আসা। মিস্টার রিতেস কুমারের সাথে আমাদের যে একটা বড় ডিল নিয়ে কথা চলছিলো আজ সেটা ফাইনাল করতে চাই তারা।
– আজ! ভ্রু উঁচিয়ে বলে রুদ্র।
– হ্যা আজ মানে এখনি। আর আধা ঘণ্টা পর আমরা মিটিংয়ে বসব। এইসব ছাড় আর চল তাড়াতাড়ি। হাসি মুখে বলে রাজ।
– এতো তাড়াহুড়ো করার কি আছে? আমরা তো কালকেও মিটিং টা করতে পারি।
– হ্যাঁ তা পারি। কিন্তু উনারা ডিলটা ফাইনাল করে আজই চলে যাবেন। তাই এত তাড়াহুড়ো করা। চল এখন কথা না বাড়িয়ে। এরপর রাজ একজনকে ইশারা করে বলে ওয়েটারটাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য।
– লোকটা ছাড়া পেতেই রাজের পা ধরতে আসলে রাজ থামিয়ে দিয়ে বলে আর যেনো না দেখি তোমাকে। যাও কুইক। রাজের কথায় লোকটা রুদ্রর দিকে তাকিয়ে ছুটে পালায়।
তোর জন্য আজ জানে বেঁচে গেলো। নয়তো? আরে ছাড় তো। তবে রুদ্র একটা কথা মানতে হবে তোর। দোলা ভাবি আসার পর থেকে কিন্তু আমাদের বিজনেসটা একদম তড়তড় করে উপরে উঠছে৷ এত বড় বড় ডিল আমরা পাচ্ছি। যদিও আগে আমরা সব গুলা পেতাম। তবে এখন যেনো আরো.. রুদ্র চোখ গরম করে রাজের দিকে তাকালে রাজ চুপসে যায়। হাসার চেষ্টা করে বলে ওকে আর কিছু বলছি না৷ চল এবার৷। রুদ্র গটগটে পায়ে আগে বেরিয়ে আসে এরপর রাজ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রুদ্রর পেছনে আসে।
— রাত প্রায় এগারোটা নাগাদ। অসহ্য ব্যথা নিয়ে শুয়ে আছে দোলা। শরীর অনেক ব্যথা হয়ে আছে ৷ তার সাথে মাথার তীব্র যন্ত্রণা। সবকিছু মিলিয়ে পাগল হওয়ার উপক্রম যেনো। পুড়ে যাওয়া জায়গা গুলো এখনো যেনো ছ্যানছ্যান করে জ্বলে চলেছে। দোলার ঘুমের প্রয়োজন। চোখ দুইটাও লেগে আসছে ঘুমে৷ ক্লান্ত শরীর বিসানায় এলিয়ে দিলে দোলা সত্যি সত্যি ঘুমিয়ে পড়ে।
– — রুদ্র ঘরে এসে দেখে দোলা ঘুমাচ্ছে। ঘুমন্ত দোলাকে নিষ্পাপ বাচ্চার থেকে কম কিছু লাগছে না৷ রুদ্র কিছুখন অপলক ভাবে দোলার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। অনেক মায়াবী লাগছে দোলাকে৷ আর এই মায়াবী ঘুমন্ত দোলা যেনো রুদ্রকে খুব করে কাছে টানছে। রুদ্রর চোখ যায় দোলার পেটের দিকে। পেটের উপর থেকে শাড়িটা কিঞ্চিৎ সরে যাওয়ার জন্য দোলার পেটের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে৷ আর সেখানে রুদ্রর দেওয়া আঘাত গুলো জ্বলজ্বল করছে। রুদ্র একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দোলার কাছে এগিয়ে যায়৷ শাড়ির আঁচলটা পেট থেকে ভালো ভাবে সরিয়ে সেখানে আলতো করে হাত রাখলে কেঁপে উঠে দোলা ঘুমের মধ্যে । এবার রুদ্রর দৃষ্টি যায় দোলার গলার দিকে। উজ্জ্বল শরীরে হাতের ছাপ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। রুদ্রর খারাপ লাগে একটু নিজের করা কাজের জন্য।
— দোলা নড়েচড়ে উঠে ঘুমের মধ্যে। রুদ্র সাবলীল ভাবে তাকিয়ে আছে দোলার দিকে। রুদ্র উঠে গিয়ে টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা মলম বের করে দোলার শাড়িটা আবার সরিয়ে মলম লাগাতে যাবে তখনই দোলা ধুসমুসিয়ে উঠে বসে ঘাবড়ে যাওয়া কন্ঠে বলে কি করছেন আপনি? রুদ্র চোখ মুখ কুচকে তাকায়। কিন্তু মুখে কিছু বলে না৷
– দোলা শাড়িটা ঠিক করে দৃঢ় কন্ঠে বলে, দেখুন আমার শরীরটা একদম ভালো না আজ। তাই কোনো কিছুর জন্য আমি প্রস্তুত নই। আমাকে মাফ করুন আজকের মতো। দোলার কথায় রুদ্র ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে হোয়াট? রুদ্রর এমন রিয়াক্টে দোলা হতভম্ব হয়ে তাকায়। দোলার মধ্যে আবার ভয় কাজ করে। তাহলে কি রুদ্র বরাবরের মতো তার বারণ শুনবে না৷ তার চাহিদা পূরণ করে তবেই ক্ষান্ত হবে?
চলবে….
— ❌❌কপি করা নিষেধ।❌❌ ভুলক্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষে বিবেচনা করবেন। এক বা দুই পর্ব পড়ে সবটা বিচার করতে যাবেন না৷ এটা নেহাতই বোকামি ছাড়া কিছু না৷ যদি ভালো না লাগে তাহলে ইগ্নোর করবেন।