কয়েক ফোঁটা বৃষ্টিতে পর্ব ৪

0
1337

#কয়েক ফোঁটা বৃষ্টিতে
#পর্ব-৪
(কপি করা নিষেধ। তবে শেয়ার করুন।)
লিজা একটা খাম টেবিলের উপর রেখে জয়ীকে বলল,

“এখানে কিছু টাকা আছে জয়ী। ”

“কিসের টাকা ভাবী?”

“তোমার ভাইয়া দিলো। একটু পার্লারে যাও। ফেসিয়াল করো, আরও যা যা লাগে করে ফেলো। ”

জয়ী শুয়ে শুয়ে মোবাইল দেখছিলো। উঠে বসে অবাক হবার ভান করে বলল,

“সিরিয়াসলি! ভাইয়া দিয়েছে?”

“হু। ”

জয়ীকে খানিকটা চিন্তিত দেখালো। বাড়িতে ওর বিয়ে নিয়ে তাহলে সত্যিই খুব ভাবা হচ্ছে। আচ্ছা ওর কী ই বা এমন বয়স হয়েছে! চব্বিশ বছর বয়স কী খুব বেশী কিছু। এখনো জীবনে কিছুই করা হয়ে উঠলো না। তার আগেই বিয়ে! আর বিয়ের জন্য তো শুধু বয়স না, মানসিক প্রস্তুতিরও দরকার।

লিজা জয়ীকে বলল,

“তোমার মাথায় কী চলছে?”

জয়ীর ধ্যান ভাঙলো। বলল,

“নাথিং। ”

“জানিনা মাথায় কী চলছে! তবে অনীশ কে যা বলার সরাসরি বলবে। ”

জয়ী হেসে বলল,

“ভাবী আমি আসলে বুঝতে পারছি না তুমি কার দলে!”

“মানে?”

“মানে তুমি ঠিক কী চাচ্ছ? একবার মনে হচ্ছে তুমি আমাকে তাড়াতে উঠে পড়ে লেগেছো; আরেকবার মনে হচ্ছে তোমার খালাতো ভাইয়ের ভালো চাচ্ছো। ”

লিজার এবার খানিকটা রাগ হলো। বলল,

“জয়ী তুমি কিন্তু আমার ব্যাপারে একটু নেগেটিভ ই ভাবো সবসময়। তোমার সব আচরণ আমার পছন্দ হয় না সেটা ঠিক কিন্তু তাই বলে শত্রু ভাববে!”

জয়ী ঠোঁটে প্লাস্টিকের হাসি ঝুলিয়ে বলল,

“আমি তো মজা করছিলাম ভাবী! এতো সিরিয়াস কেন হলে!”

লিজার রাগ এখনো কমেনি। কঠিন গলায় বলল,

“তাহলে এরপর থেকে বলে দিও তো কোনটা তোমার রাগ আর কোনটা সিরিয়াস কথা। ”

জয়ী বাধ্য ছাত্রীর মতো মাথা নেড়ে বলল,

“আচ্ছা। ”

***
লিজা চলে যাবার পর জয়ী খাম টা খুলল। অনেকগুলো টাকা আছে। সব টা খরচ না করলেও চলবে। জয়ীর ভাই জিহাদ এমনিতে জয়ীকে খুব ভালোবাসে। সেকারণেও লিজা জয়ীকে কিছুটা অপছন্দ করে। বিয়ের পর ই জিহাদ বোন আর বউ দুজনকেই বলে দিয়েছে যে নিজেদের মধ্যে যতই চুলোচুলি করো সেটা আমার কানে দয়া করে যেন না আসে। আর যদি আসেও তার ফল খুব একটা ভালো হবে না। ফল আসলে কী হবে সেটা কেউ জানেনা কিন্তু তবুও কেউ সীমা লঙ্গন করে নি।

***
সন্ধ্যেবেলা লিজা স্বামীকে বগলদাবা করে কলিগের বিয়েতে চলে গেল। জয়ী বাসায় একা। দু’কাপ কফি বানিয়ে খেয়ে, ফোন দেখে খানিকটা সময় কাটালো। তারপর সৌমিকে ফোন করলো। সৌমি ওর একমাত্র কাছের বন্ধু। সৌমি জানালো যে ওর জ্বর তাই আসতে পারবে না। তাই একাই চলল পার্লারে।

ধানমন্ডির এই পার্লারে জয়ী মাঝেমধ্যে আসে ভ্রু প্লাগ করাতে। এবার আসলো মাস তিনেক পর। সন্ধ্যে থেকে ভীড়৷ হাতে স্লিপ ধরিয়ে দিলো। স্লিপে নাম্বার দেখলো ৬। খুব বেশী দেরি হবে না মনে হচ্ছে। জয়ী ভেতরের রুমের সোফায় বসলো। সামনের টেবিলে কিছু ম্যাগাজিন থেকে একটা হাতে নিলো। এসব ম্যাগাজিনে শুধুই বিনোদনের খবর। হঠাৎ ই পাশ থেকে এক ভদ্রমহিলা বলল,

“টাইমপাসের জন্য এসব পড়ছ?”

“হ্যাঁ। ”

“এসব শুধুই ফালতু নিউজে ভরা। সেদিন পত্রিকায় ছেপেছে ঐশ্বর্য রায় স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গেছে। এটা কোনো নিউজ হলো! আরে, স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী বেড়াতে যাবে তাতে আমাদের কী! পয়সা খরচ করে আমরা পত্রিকা কিনি এসব পড়ার জন্য!”

জয়ীতা হেসে ফেলল। ভদ্রমহিলার কথায় মজা পাচ্ছে। ভদ্রমহিলাকে দেখে বয়স আন্দাজ করলো। আনুমানিক পঞ্চাশ হবে বয়স। এই বয়সী মহিলারা স্বাস্থ্যের দিক থেকে খানিকটা ভারী হয়। তবে উনি রোগা। মাথার সামনের কিছু চুল পাকা। মুখের চামড়া বেশ টানটান। নিয়মিত পার্লারে আসে বোঝা যায়।

জয়ীকে আবারও ভদ্রমহিলা জিজ্ঞেস করলো,

“এখানে রেগুলার আসো?”

“না। দুই, তিন মাসে একবার আসি। ”

ভদ্রমহিলা চোখ কপালে তুলে বলল,

“কী বলো! দুই, তিন মাসে একদিন! আমি তো প্রতি সপ্তাহে আসি। এই সপ্তাহে তো দুদিন এসেছি। একদিন আসলাম নখ কাটতে আর আজ আসছি ফেসিয়াল করতে। ”

“আচ্ছা। ”

“তোমার নাম কি?”

“সহেলী শবনম জয়ীতা। ”

“এতো বড় নাম মনে রাখতে পারব না। জয়ীতা টা মনে রাখতে পারব। ”

“ছোট করে জয়ীও ডাকতে পারেন। ”

“আচ্ছা সেটাই ভালো হয়। আমার নাম জুলিনা। জুলিনা আন্টি ডেকো। ”

“আচ্ছা।”

এরপর আরও একগাদা প্রশ্ন করলো। জয়ীতার বাড়ি কোথায়, কী করে আরও নানান কথা। জয়ীতাও বিরক্তিহীন ভাবে জবাব দিলো। এরমধ্যে জয়ীতার সিরিয়াল নাম্বার চলে এলো।

জয়ীতা ভেবেছিল একটা নরমাল ম্যাসাজ নিবে আর ভ্রু প্লাগ করবে। হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদলে হেয়ার ট্রিটমেন্ট নিলো। কয়েক ঘন্টা সময় নষ্ট করে সোজা চুলগুলো কে কার্লি করে ফেলল। আয়নায় তাকিয়ে নিজেই নিজেকে চিনতে পারলো না। তবে খুব একটা মন্দ লাগছে না। চেহারার ধরন টাই কেমন যেন পাল্টে গেল।

বাইরে আসার পর জুলিনা আন্টি ডেকে বলল,

“এই জয়ী এটা কী করেছো?”

জয়ী হেসে বলল, ভালো লাগছে না?

“চুলগুলো ইনস্ট্যান্ট নুডলস এর মতো হলেও দারুণ লাগছে। একটা ছবিতে কোয়েল মল্লিকের এমন ছিল। তোমাকেও তেমন লাগছে। ”

জয়ী হেসে বলল, থ্যাংক ইউ।

“আমার জন্য একটু দাঁড়াও। এক সঙ্গে বের হই।”

“আচ্ছা।”

***
পার্লার থেকে বেরিয়ে দুজনএক বাটি হালিম খেল। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ভীষণ ঝালের ভর্তা আর চিতই পিঠা খেল। এরপর শেষে ঝাল কমাতে কোল্ড কফি খেল। এরপর যে যার বাসায় চলে গেল। যাবার আগে জুলিনা আন্টি বলল,

“আমি তোমার চাকরির ব্যাপারে কথা বলব। একটা কিছু নিশ্চয়ই হবে। আমার ফ্যামিলির সবাই ই বড় বড় পজিশনে আছে। সব আছে ফ্যামিলিতে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জজ বেরিষ্টার। এমনকি দুই একটা চোর ডাকাতও আছে।

জয়ী শব্দ করে হাসলো। জুলিনা আন্টি আবারও বলল,

” ফোন নাম্বার তো আছে। আমি তোমাকে ফোন করব। ”

“আচ্ছা আন্টি।”

***
জয়ী বাসায় ফিরে দেখলো ভাইয়া ভাবী এখনো ফেরে নি। বাইরে যা খেয়েছিল তাতেই পেট ভরা ভরা লাগছে। আর কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুম ভাঙলো ফোনের শব্দে। জয়ী ফোন হাতে নিয়ে দেখলো অচেনা নাম্বার থেকে ফোন। ফোন ধরতেই জুলিনা আন্টি একরকম চিৎকার করে বলল,

“হ্যালো জয়ীইইই!”

“কে?”

“আমি। জুলিনা আন্টি। ওই যে কাল রাতে… পার্লার….

“হ্যাঁ আন্টি। ”

“এখনো ঘুমাচ্ছো?”

“জি আন্টি। ”

“আরে জরুরী কাজ আছে। তাড়াতাড়ি এসো। ”

“কী কাজ?”

“তোমার চাকরির ব্যবস্থা করেছি। ”

জয়ীর এবার মনে হলো ভদ্রমহিলাকে খুব প্রশ্রয় দিয়ে ফেলেছে। কথা শুনতে ভালোই লাগছিলো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে খুবই বিরক্তিকর। জয়ী বলল,

“আজ আমার শরীর টা ভালো নেই। ”

“আরে চাকরি কী বসে থাকবে?”

“রাখছি আন্টি। পরে কথা বলব। ”

জয়ী জুলিনা আন্টিকে আর কিছু বলার সুযোগ ই দিলো না। ফোন টা রেখে আবারও শুয়ে পড়লো।

ঘন্টাখানেক পর আবারও ফোন। জয়ীকে ইচ্ছে করেই ফোন ধরলো না। কিন্তু ফোনের পর ফোন দিতেই লাগলো। জয়ী এবার ফোন ধরতেই জুলিনা আন্টি বলল,

“এই জয়ী তোমাদের বিল্ডিং নাম্বার কত? আমি তো গভমেন্ট কলোনীর ভেতরে। ”

জয়ী বিস্মিত গলায় বলল,

“আপনি সত্যিই আমার বাসা খুঁজে বের করেছেন?”

“খুঁজে বের করা আর কী! নতুন কলোনী তো সবাই ই চিনে। ”

জয়ীর বিস্ময় এখনো কাটছে না। বলল,

“আপনি গোল চত্বরে এসে দাঁড়ান। আমি আসছি। ”

****
তাসিন, নওশিন দুজনেই আজ বাড়িতে। আদনান প্র‍্যাকটিসে গেছে। ওখান থেকে জিমে যাবে। ফির‍তে ফিরতে সন্ধ্যে হবে। বিকেলের দিকে হঠাৎই ওদের দারোয়ান জানালো যে একটা মেয়ে এসেছে। ওদের মামী নাকি পাঠিয়েছে। নওশিন বলল,

“আসতে বলুন। ”

মেয়েটা লম্বা, রোগা। কার্লি চুল, মুখশ্রী সুন্দর। চোখ দুটো ছোট, মুখ টাও ছোট। সব মিলিয়ে দেখতে সুন্দরই। পরে আছে নীল জিন্স আর লাল রঙ এর ঢোলা শার্ট। মুখে মেকাপের কোনো প্রলেপ নেই। তবে ঠোঁটে লিপস্টিক আর চোখে কাজল দেয়া। মেয়েটা হেসে বলল,

“জুলিনা আন্টি পাঠিয়েছে। আমার নাম সহেলী শবনম জয়ীতা।”

নওশিন বলল,

“ভেতরে আসুন। ”

জয়ী ভেতরে গেল। তাসিন জিজ্ঞেস করলো,

“মামী আপনাকে কী কাজে পাঠিয়েছে?”

জয়ী অপ্রস্তুত হলো। যা ভেবেছিলো তাই। ভদ্রমহিলার যে মাথায় একটু গন্ডগোল আছে সেটা বুঝলো।

জয়ী জিজ্ঞেস করলো,

“চাকরির জন্য পাঠিয়েছে। আদনান ফয়সাল নামে একজনের কাছে গেলেই নাকি চাকরি পাওয়া যাবে। ”

তাসিন আর নওশিন মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো। জয়ী বুঝতে পারলো যে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরী হচ্ছে। তাই বলল,

“আসল ব্যাপার হলো জুলিনা আন্টির সঙ্গে কাল রাতেই আমার আলাপ হয়েছে। উনি অজস্র প্রশ্ন করেছেন। সেখানে আমি বলেছিলাম যে জব সিকার। এরপর চাকরি দেবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। ফোন পিক করছিলাম না বলে বাড়ি অবধি পৌছে গেছে। এখানেও আমার সঙ্গে তার আসার কথা ছিলো কিন্তু তার আর্জেন্ট কল আসায় আসতে পারে নি। ভেবেছিলাম মিথ্যে বলব কিন্তু সেই উপায়ও নেই। মিনিটে মিনিটে টেক্সট করছে।

তাসিন হেসে বলল, একচুলি ওনার মাথায় একটু প্রবলেম আছে। আই মিন মাথার কিছু স্ক্রু নড়বড়ে।

জয়ী হাসলো। বলল,

“আমিও তাই ভাবছিলাম। ”

নওশিন বলল, আপনি আপসেট হবেন না। ভাইয়া কিছুক্ষনের মধ্যে চলে আসবে। তার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।”

“না না কিছু বলতে হবে না। আমি একটু পরেই চলে যাব। আমার আসলে এমার্জেন্সি চাকরির প্রয়োজন ও নেই। যদিও জুলিনা আন্টি বলতে বলেছে যে আমি জনম দুঃখী। আমার চাকরির খুব দরকার। ”

তাসিন আর নওশিন হেসে ফেলল একসঙ্গে। নওশিন হাসি থামিয়ে বলল,

“ভাইয়া যে কী চাকরি দিবে সেটা আমরাও বুঝতে পারছি না। ”

জয়ী আবারও হাসলো। তাও ভালো মেয়ে দুটোর সঙ্গে কথা বলে আরাম আছে। দুজনেই স্মার্ট। জুলিনা আন্টির কথা শুনেও আরাম লেগেছিলো। কিন্তু পরে বিরক্তি ধরিয়ে দিয়েছে। ভদ্রমহিলার কিছু ব্যাপার বিরক্তিকর হলেও আজকে সকালের ব্যাপার টা জয়ীকে মুগ্ধ করেছে। আজ আসার সময় ওর জন্য বাসা থেকে ব্রেকফাস্ট নিয়ে এসেছিল।

নওশিন বলল,

“আপনাকে চা, কফি কিছু দিতে বলব?”

“কফি, উইথ স্যুগার।”

“আচ্ছা। ”

নওশিন ভেতরে গিয়ে কফির কথা বলে চলে এলো। জয়ীর সঙ্গে টুকটাক গল্প করলো। জয়ীও ভালোই গল্পে মগ্ন হয়ে গেল। হঠাৎই আদনানের আগমন। নওশিন বলল,

“এই যে ভাইয়া।”

আদনান জয়ীর দিকে তাকালো। জয়ীর হাসি হাসি মুখ টা নিভে গেল মুহুর্তেই। হাই ভোল্টেজ শক বোধহয় একেই বলে। এরপরের ঘটনা ঘটলো অতি দ্রুত। জয়ী বসা থেকে দাঁড়িয়ে এক দৌড় দিলো। জুতা একটা খুলে ড্রইংরুমেই রইলো। আরেক পায়ের জুতা পরেই দৌড়াতে লাগলো। দোতলার সাত সিড়ি পেরিয়ে হোচট খেয়ে পড়ে গেল। বাকী সিড়িগুলো উবু হয়ে নামলো। ঘটনার আকস্মিকতায় তাসিন, নওশিন দুজনেই হতভম্ব। আদনান সিড়ির কাছে এসে দাঁড়ালো। তাসিন, নওশিনও এসে দাঁড়িয়েছে। জয়ী হাটুতে ভর দিয়ে গেটের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে আদনান তার স্বরে বলল,

“অস্কার! ”

বিশালদেহী দানবটাইপ এক কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে করতে সিড়ির নিচ থেকে বেরিয়ে এলো। কুকুর টা’কে দেখে জয়ী আর্তচিৎকার করে বলল,

“ও মাগো!”

আদনান ঠান্ডা গলায় বলল, উপরে উঠে আসুন।

জয়ীতা বাধ্য মেয়ের মতো কুকুরের ভয়ে উপরে উঠতে গিয়ে আবারও ছ্যাছড়া খেয়ে পড়ে গেল। আদনান নিজেই এবার নেমে এসে জয়ীতার দুই হাত ধরে ও’কে তুলল। তাসিন, নওশিনও ততক্ষনে এসে গেছে। জয়ীতা শক্ত করে চোখ বন্ধ করে আছে। ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল,

“আমি বাসায় যাব। ”

চলবে…..

সাবিকুন নাহার নিপা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here