#অনুভুতি_মায়ার_খেলা_(১১)
#সায়ারা_জাহান_লেখায়।
খালার মুখে এতো কথা শুনে স্তব্দ হয়ে গেছে সায়ারা। সায়ারার আর দিন দুনিয়ার হুস নাই। চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেছে যা শুনেছে এরপর। এটা তার খালা টাকা পয়সার জন্য এতো হাসি খুশি পরিবার নিজের হাতে ধ্বংষ করে দিলো। মানুষ এতো নিকৃষ্ট কিভাবে হতে পারে? সায়ারার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে না সে হয়তো তার বিষ্ময় কাটিয়ে উঠতে পারে নাই। দূর থেকে সায়ান ও পুরা স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই মানুষ টা ২ জন মানুষের খু-নি আরেকজন কে পাগল বানিয়ে ছেড়ে রেখেছে সে এতো ভালো কিভাবে আছে? তার মধ্যে অনুশোচনার বিন্দুমাত্র চিহ্ন নাই। সায়ান পকেটে এ মোবাইল রেখে দাড়ালো তখন সায়ানের পিছ থেকে সায়ান কে কেউ লাত্থি মেরে ফেলে দিলো। সায়ান গিয়ে পড়লো সায়ারা আর আর তার খালার দিকে। সায়ান নিজেকে সামলে পিছে তাকিয়ে দেখে তাদের পিছে সিয়াম দাঁড়ানো। সিয়ামের মা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সায়ানের দিকে সে ভাবছে সায়ান এখানে কিভাবে?
– সায়ান তুমি এখানে কিভাবে? আর আসলেই বা কখন?
– কেন ফুপ্পি এখানে এসে কি আমি কোনো ভুল করলাম বলো? না আসলে তোমাদের এইরকম জঘন্যতম চেহারা আমি কিভাবে দেখতাম।
-দেখো সায়ান সিয়াম সায়ারা কে ভালোবাসে আর আমি চাই এখন ওদের বিয়ে হোক তুমি এসব থেকে দূরে থাকো বাবা। সিয়াম তোমার ফুফাতো ভাই তোমার উচিত ও কে সাপোর্ট করা।
-সিয়াম সায়ারা কে ভালোবাসে সায়ারা কি তাকে ভালোবাসে? সায়ারা কি নিজের মুখে এসব বলেছে আপনাদের। আর আপনাদের মতো ক্রিমিনালদের মাঝখানে আমি সায়ারা কে দিবো আপনাদের ভুল ধারনা ফুপি।
– মা তুমি ও কে এতো বুঝাচ্ছোই বা কেনো ও কে যে ওর থেকে পারমিশন নিতে হবে?
সিয়ামের কথা শেষ হওয়ার আগে সিয়ামের পেটে সায়ান নিজের শরীরের সব শক্তি খাটিয়ে এক ঘু-ষি দেয়। সিয়াম পেট ধরে নিচে ফ্লোরে বসে পড়ে। সায়ান খ্যান্ত হয় না সে উঠে আবার মা-র-তে যাবে এমন সময় সায়ানের পিছন থেকে সায়ানের মাথায় বালতি দিয়ে আ-ঘা- করে সিয়ামের মা।
– সায়ান ভাইইইইইইইই
সায়ারা নিজেকে সামলাচ্ছিলো তখন কিছু বুঝে উঠার আগেই সায়ান কে দেখে আর এখন ফুপি এভাবে মা-রা-য় চিল্লিয়ে উঠে। সিয়ামের ইশারায় সিয়ামের সাথে আসা লোক গুলাও মা-র-তে লাগলো সায়ান কে। ৷
– সিয়াম ভাই থামেন আর মাইরেন না সায়ান ভাই কে। খালা ওদের থামতে বলুন সায়ান ভাই ব্যাথা পাছে ।
– আচ্ছা ছাড়তে বলবো নে আগে তুই আমার এই কাগজে সাইন করে দে।
– আমি সাইন করে দিবো তুমি ওদের থামতে বলো।
সায়ান ওঠে ওদের সাথে মারামারি করতে লাগলো আর খালা তাড়াতাড়ি করে সাইন করতে বলে এর মাঝে পুলিস রাও চলে আসে। তারা চলে আসায় সিয়াম আর ও মা অবাক হয়ে যায়। সায়ান গিয়ে সায়ারা কে ধরে। সায়ারা সায়ান কে জাপটে ধরে কান্না শুরু করে দেয়।
– থ্যাংক ইউ মিস্টার সায়ান আজ আপনি টাইমলি আমাদের ইনফর্ম না করলে হয়তো আমরা এখানে আসতে পারতাম না।
– ইটস ও কে স্যার৷।
সায়ান তার মোবাইল বের করে কিছুক্ষণ আগে করা ভিডিও টা প্লে করে। ভিডিও টা চলছে আর সিয়ামের মা আশ্চর্য হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে ভাবছে যে তিনি এভবে ফেসে যাবেন কল্পনাও করেন নাই। আজ ছেলের সামনে যেইটুকু সম্মান ছিলো সব যাবে। যেই সম্পত্তির জন্য বোন- বাবা- মা- স্বামী কারো কথা ভাবে নাই আজ সে সেই সম্পত্তি হারালো। শেষ ছিলো তার ছেলে আর আজ তার চোখে সে ছোট হয়ে গেলো। সিয়াম ভিডিও দেখছে আর তার মায়ের দিকে তাকাচ্ছে সে কিছু বিশ্বাস করতে পারছে না। সিয়ামের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। যে বাবাকে খারাপ ভেবে ঘৃনা করেছে যে খালা তার বাবাকে কড়ে নিয়েছে বলে তার মেয়েকে এতো অ-ত্যা-চা-র করেছে আজ জানতে পারলো এসব কিছুই ঘটেনি। এতো কিছু তার মা নিজ হাতে খু-ন করেঁছে।
– আম্মু তুমি এতোটা জ-ঘ-ন্য কিভাবে হলে? আমার থেকে আমার বাবা কে কেড়ে নিলে আই হেইট ইউ আম্মু আই হেইট ইউ।
– খালা আপনি সামান্য সম্পত্তির জন্য আমাদেত সবার জিবন টা কে শেষ করে দিলেন। আমার কথা আমি বলবো খালুকে তো আপনি ভালোবাসতেন তা কে নিজের হাতে কিভাবে মা-র-লে- এটা কেমন ভালোবাসা?
– আমাকে ক্ষমা করে দে সায়ারা আমি কীভাবে ক্ষমা চাচ্ছি তোর কাছে আমি এসবের যোগ্য না। আমাকে নিয়ে চলুন এখান থেকে।
খালা নিচের দিকে তাকিয়ে কান্না করছে কিন্তু আজ সায়ারার তার খালার জন্য কোনো মায়া লাগছে না। বরংচ তার ঘৃনা পাচ্ছে।
পুলিশ সিয়াম আর ওর মা কে নিয়ে চলে গেলো আর ওখান থেকে সায়ন সায়ারা কে নিয়ে নিজেও বাড়িতে ফিরলো। বাড়িততে যাওয়ার পড়ে সায়ারা কে দেখে তার মামা-মামি যেনো প্রান ফিরে পেলো। সায়ারা গিয়ে তার মামি কে জরিয়ে ধরে কেদে দিলো। সায়ারা কে কাদতে দেখে সায়ারার মামি তা কে থামাতে ব্যাস্ত হয়ে গেলো। সবাই জিজ্ঞেস করতেই সায়ান আবার সবাইকে ভিডিওটা দেখালো। সায়ারার মামা মামি চুপচাপ বসে আছে তার বোন এতো খারাপ কাজ করলো আর তা সে জানতেও পারলো না। তাদের দোষ আছে আজ যদি তারা নিজেদের কথা না ভেবে দেশে সবার সাথে থাকতো তাহলে এতো কিছু হতো না। সায়ারা কে থামিয়ে আয়ানার সাথে রুমে পাঠিয়ে দিলো মামি। সায়ান কেও ফ্রেশ হতে পাঠালো নিজে গেলো খাবার গরম করতে। রাতে সবাই একসাথে বসে খাবার খেলো।
রাত ১২ টা বাজে এখম সবাই ঘুমোতে ব্যাস্ত, শুধু ঘুম নাই সায়ারার চোখে সে উঠে বের হলো পানি খেয়ে। পানি খেয়ে ফিরার সময় সায়ান সায়ারার হাত ধরে টেনে নিয়ে ছাদে গেলো।
-কি ব্যাপার সায়ান ভাই এতো রাতে আমাকে ছাদে কেনো নিয়ে যাচ্ছেন?
– আরব গাধি চুপ এভাবে কথা বললে সবাই উঠে যাবে। এতো কথা না বলে চুপচাপ আমার সাথে আয়।
– আরে এতো রাত্ব ছাদে যাওয়া ঠিক না ভাইয়া সকালে আইসেন এখন না।
– তুই চুপচাপ আমার সাথে আস কথা বলবি না নাহলে খবর আছে।
সায়ারা সায়নের কথায় চুপচাপ এবার সায়ানের পিছু পিছু যেতে লাগলো। ছাদে উঠে এবার সায়ারার সামনে হাটুতে ভর দিয়ে বসে সায়ান। সায়ারা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
– কি ভাবে কি বলবো সায়ারা আমি জানিনা,সবার মতো এতো করে নিজের ফিলিংস ঢাক ঢোল পিটিয়ে বলতে পারবো না। ছোট থেকে আমি আমার সাথে সাথে তোকে রাখতাম কারণ ফুপি একটা কিউট পুতুল আমাকে এনে দিয়েছিলো। আমাকে আমার খেলার সাথি এন্ব দিয়েছিলো। আমার পুরাটা সময় তোকে দেখভাল করতে কেটে যেতো৷ একদিন ফুপি আমাকে বলে তোর সব দায়িত্ব আমাকে নিতে তোর খেয়াল রাখতে। আমি তখন ৮ম শ্রেনিতে পড়া একজন মানুষ অতোটাও ছোট ছিলাম না। তখন থেকে ঠিক করেছি আমার জিবনের একমাত্র মেয়ে কেবল তুই হবি আমার স্ত্রী হবি। এরপর মায়ের কি হলো নানান অজুহাত কসম দিয়ে আমাকে তোর থেকে দূরে করে দিলো পিচ্চি। আমার অনেক কষ্ট হতো তোকে ছাড়া থাকতে তবুও আমি নিজের পায়ে দড়ানোর জন্য চুপ থাকি। বিশ্বাস কর আমি যদি জানতাম তুই ভালো নাই আরো আগে আসতাম তোর খোজার জন্য কত চেষ্টা আমি করেছি তুই জানিস না। এরপর তোর কলেজের পাশের হসপিটালে জয়েন করি দূর থেকে তোর খোঁজ নেই। অপেক্ষা করি সঠিক সময় আসার। আজ আমি আমার পিচ্চির কাছে জানতে চাই? আমাকে বিয়ে করবি পিচ্চি এই মানুষ টার পাগলামি সহ্য করবি?
সায়ানের এতো কথা শুনে মনে মনে অনেক খুশি হয়ে যায় সায়ারা সে ও তো তার সায়ান ভাই কে খুব ভালোবাসে
– আমার হাটুতে ব্যাথা করতেছে যলদি বল এভাবে আর কতোক্ষন বসে থাকবো?
সায়ারা সায়ানের কাধে ধরে উঠে দাড় করালো, সায়ানের বুকে নিজের মাথা রেখে বললো।
– আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি সায়ান ভাই।
কাটাক তারা নিজেদের মতো করে তাদের ভালোবাসার সময়।পূর্নতা পাক সবার ভালোবাসা।
.সমাপ্ত।।
সিয়ামের মা কে খুনের দায়ে ফাসি দেওয়া হয়,সিয়াম কে কিডন্যাপ এর কারণে ৫ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। সবাই সবার কৃতকর্মের শাস্তি এইখানেই পেয়ে যায়।
(আমার এই অগছালো বানান ভুল গল্পটাকে এতোগুলা ভালোবাসা দেওয়ার জন ধন্যবাদ। আমার কিছু সমস্যা থাকার কারণে আমি নিয়মিত গল্প দিতে পারি না তাই এখানেই সমাপ্ত করলাম)