বোনু
সিজন_০২
Part_27
#Writer_NOVA
ঢাকার সবচেয়ে বড় কমিউনিটি সেন্টারকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। আজ এখানে ৫ টা বিয়ে একসাথে হবে।
১/ নিবরাজ❤️মেহরুন,
২/ আইজান❤️রিম
৩/ মেহরাব ❤️নীলা
৪/ ঐশিক ❤️আরুহি
৫/ রিশিক ❤️তমা
খান,মির্জা পরিবার মিলে বড় করে আয়োজন করেছে।স্টেজের মধ্যে ৫ টা ফুল দিয়ে সাজানো চেয়ার রাখা।মাঝখানেরটা মিহুর জন্য। বাকি চারটায় চারজন বউ সেজে বসে আছে।প্রত্যকের গায়ে আলাদা আলাদা রঙের লেহেঙ্গা। রিমের গায়ে আকাশি,আরুহির গায়ে গোলাপি,তমার গায়ে ফিরোজা, নীলার গায়ে মেরুন রঙের। মিহু এখনো আসেনি।মিহু আজ গাঢ় লাল রঙের লেহেঙ্গা পড়েছে। প্রত্যেকের লেহেঙ্গা ভারী স্টোনের কাজ।সাথে একগাদা গয়না।সবার পোশাক যার যার হাসবেন্ড দিয়েছে। কিন্তু মিহুর বিয়ের লেহেঙ্গা ওর তিন ভাই ইংল্যান্ড থেকে অর্ডার করে বানিয়ে নিয়ে এসেছে। যার যার বউয়ের লেহেঙ্গার রং মিলিয়ে ছেলে ৫টা শেরওয়ানি পরেছে।
রাজ ও জানের সব বন্ধু ছোটাছুটি করে কাজ করছে। বন্ধুর বিয়ে বলে কথা।অর্কও এসেছে। ওরা দুই ভাই সবার আগে অর্ককে দাওয়াত করেছে।আর বন্ধুর বিয়েতে কি সে না আসতে পারে।
অর্কঃ শেষ পর্যন্ত তুই সফল হলি ভাই।তুই বৌদিকে হাসিল করে নিলি।বলতে হবে তোর ভালোবাসার জোর আছে।
নিবরাজঃ আমার ভালোবাসা সত্যি ছিলো।আর আমি বিশ্বাস করতাম একদিন ওকে আমি নিজের করে পাবো।আল্লাহ আমার মনের আশা পূরণ করেছে।
অর্কঃ এবার আমার জন্য একটা খুঁজে দে।আমিও তোদের মতো ভালোবেসে বিয়ে করি।তোরা করেছিস আর আমি যদি না করি তাহলে বন্ধুত্বের অপমান করা হলো না।
আইজানঃ আজ অনেক মেয়ে আসবে।তার থেকে নিজের জন্য একটা খুঁজে নিস।তবে সাবধান, মেকআপ সুন্দরীর পাল্লায় পরিস না।মন দেখে, মানুষ চিনে নিস।
অর্কঃ ওরে বোকা,আমি সব যাচাই-বাছাই করেই নিজের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিবো।যে তার পুরোটা দিয়ে আমাকে ভালোবাসবে।তোরা থাক,আমি আমার জীবনসঙ্গী খুঁজতে চললাম।
অর্ক মুচকি হেসে অন্য দিকে চলে গেল।বিয়ের ৩ দিন আগে স্কটল্যান্ড থেকে ফিরেছে।নিবরাজের অন্য বন্ধুদের সাথে ওর ভালো ভাব জমে গেছে।ছেলেরা মেয়েদের থেকে অনেক দ্রুত বন্ধু তৈরি করতে পারে।তাহলে অর্ক কেন পারবে না বলুন।
নিবরাজঃ সবাই এখানে,আমার বউ কই?
আইজানঃ দেখে আয় পার্লারের দোকান নিয়ে বসছে।আজকে আসতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।
নিবরাজঃ চুপ কর তুই।
আইজানঃ ভাই, ঐদিকে দেখ।তোর বউতো আজকে উড়ে যাবে।পিলারের সাথে বেঁধে রাখিস।
রাজ হা করে তাইকি আছে।মিহুর গায়ে জমকালো লেহেঙ্গার সাথে ভারী সাজ।মাথায় থাকা ঘোমটার ওড়নাটা বিশাল বড়। পুরো একটা শাড়ির সমান হবে।ঘোমটাটা পেছন থেকে ঐশিক ও রিশিক ধরে রেখেছে। আর মেহরাব একটা পাখা নিয়ে মিহুকে বাতাস করছে।
আইজানঃ ভাই, মনে হইতাসে তুই প্রিন্সেস বিয়ে করছিস।দেখিস না ওকে সমলাতে ওর তিন ভাই লাগছে।
রিশিকঃ ভাই, আর কতক্ষণ ধরে থাকবো?
ঐশিকঃ স্টেজে উঠিয়ে দিলেই তোদের কাজ শেষ।
মেহরাবঃ এমন ভাব করতাছে যে ওর একাই বিয়ে। আর আমরা ঘোড়ার ঘাস কাটবো।
মিহুঃ কথা কম বল হুলো বিড়াল ।জোরে বাতাস দে।আমার মেকআপ নষ্ট হইয়া যাইবো।বকবক কম করিস।আমি তো আজকে চলে যামু।একটু সেবা-যত্ন করবি না।
মেহরাবঃ তুই গেলে আমি বাচি।
মিহুঃ সত্যি বাঁচবি ভাইয়ু? আমি তোদের অনেক অশান্তি করতাম তাই না।চাইলেও আর সবসময় তোদের সাথে থাকতে পারবো না। আমি চলে গেলে সত্যি তোরা ভালো থাকবি।দেখবি বাড়িটা কেমন শূন্য শূন্য মনে হবে।তোদেরকে আমি আর জ্বালাবো না।আমার নামে তোদের কাছে কোন বিচার আসবে না। আমার জন্য কোন ছেলেদের মারতে যাবি না। এই শান্তিগুলো কি তোদের সহ্য হবে ভাইয়ুরা?
(কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)
☘️☘️☘️
তিন ভাই চুপ হয়ে গেলো। সত্যিই তো ও চলে গেলে বাড়িটা খালি হয়ে যাবে। সবাইকে মাতিয়ে রাখার জন্য কেউ থাকবে না। সবসময় হৈচৈ মুখরিত বাড়িটা স্তব্ধ হয়ে যাবে।এগুলো ভাবতেই তিন ভাইয়ের চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো।
ঐশিকঃ একদম কাঁদবি না। মেকআপ নষ্ট হয়ে যাবে।
মেহরাবঃ ইমোশনাল ব্লাকমেল তো ভালোই পারিস।
রিশিকঃ হয়েছে এবার চল।তোকে স্টেজে উঠালে আমরা একটু অন্যদিক দেখতে পারবো।
মিহুকে চেয়ারে বসাতেই চারিদিক থেকে ক্যামেরার ঝলকানি শুরু হয়ে গেলো। তিন ভাই নিচে নেমে এলো।মিহুর কথা শুনে সত্যিই ওদের মন খারাপ হয়ে গেছে। মেহরাব ঐশিককে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলো।মিহুর সামনে কাঁদলে নিশ্চয়ই বন্যা বানিয়ে ফেলতো।
মেহরাবঃ ভাই, ওকে ছাড়া কিভাবে থাকবো?বাড়িতেই আসলেই তো ওর কথা মনে হবে।ওকে এক মুহুর্ত না দেখলে তো আমার ভালো লাগে না। সেই বোনটা চলে যাবে,ভাবতেই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে। আমার মনে হচ্ছে ছোট থাকলেই ভালো হতো।কত তাড়াতাড়ি ও বড় হয়ে গেলো।
ঐশিকঃ শান্ত হো মেহরাব।মেয়ে যখন হয়েছে বাবার বাড়িতো ছাড়তেই হবে।মন খারাপ করিস না।আমারও কান্নায় চোখ ভারী হয়ে আসছে।আজ ইশি থাকলে কত খুশি হতো।আমাদের ৫ ভাই-বোনের একসাথে বিয়ে হতো
রিশিকঃ ইশির কত ইচ্ছে ছিলো আমাদের বিয়েতে মজা করবে।কিন্তু ও সবার আগে আমাদের ছেড়ে চলে গেল।আর এখন হির বোনুও চলে যাবে। আমার ভেতরটাও দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে।
পেছন থেকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ পেয়ে তিন ভাই পেছনে ঘুরলো।তাকিয়ে দেখলো মিহু কাঁদছে। এতক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব কথা শুনছিলো।ঐশিক সামনে যেতেই জড়িয়ে ধরে জোরে কাঁদতে শুরু করলো।
মেহরাবঃ বিচ্ছু থাম।এভাবে কাঁদিস না।
মিহুঃ আমি আজকে তোদের ছেড়ে চলে যাবো।তোরা কি আমায় ভুলে যাবি ভাইয়ু?(কান্না জড়ানো কণ্ঠে)
রিশিকঃ কি বলছিস তুই?ভুলে যাবো কেন?
মিহুঃ মাঝে মাঝে গিয়ে আমাকে দেখে আসিস।আমি তোদের ছাড়া কি করে থাকবো।
ঐশিকঃ হির বোনু,এমন পাগলামি করিস না।তুই কান্না করলে কিন্তু আমরা কান্না কন্ট্রোল করতে পারবো না।
মিহু ঐশিককে ছেড়ে রিশিককে জড়িয়ে ধরলো। রিশিক অন্য দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছে।
মিহুঃ আমি তোদের ছেড়ে কোথাও যাবো না। কোথাও না।করবো না আমি বিয়ে। তোদের কাছেই থাকবো।
মেহরাবঃ পাগল হলি তুই, কি বলছিস এসব?
মিহুঃ আমার সবসময় মনে হয়েছে আমার তিন ভাই আছে। আমার কোন বিপদ হবে না। তাই তোদের সাথে সাথে থাকতাম।আজ থেকে তোদের ছেড়ে আমার একা একা অন্য বাড়িতে থাকতে হবে।ভাবতেই বুক কেঁপে উঠছে।(কাঁদতে কাঁদতে)
ঐশিকঃ হয়েছে আর কাঁদতে হবে না।মেকআপ নষ্ট হয়ে গেলে কিন্তু পরী থেকে পেত্নী হয়ে যাবি।
মিহুঃ আমি না থাকলে কি নিয়ে থাকবি তোরা??
মেহরাবঃ বউ নিয়ে ?।
মেহরাবের কথা শুনে এই সিরিয়াস মুহুর্তেও সবাই একসাথে হেসে উঠলো। মিহুকে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে এবার তিন ভাই হাসি মুখে ঘুরছে।এখন আর কান্না করা যাবে না। কান্না করলেই মিহু ভেঙে পরবে।তিন ভাইয়ের প্রচুর কান্না আসছে।কিন্তু তারপরেও নরমালভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেন্টার ভর্তি মানুষ। মিহু এদিক সেদিক তাকিয়ে কাউকে খুঁজছে। রিম ওর ডান পাশে বসা।ও জিজ্ঞেস করলো
রিমঃ কাকে খুঁজছিস হির?
মিহুঃ ওরা এখনো আসে নাই কেন?
রিমঃ কারা?
মিহুঃ আমাদের বাকি ৫ হারামী ফ্রেন্ড।
রিমঃ চিন্তা করিস না চলে আসবে।
☘️☘️☘️
১ ঘন্টা পর…….
সায়েম,কিরন,রুশান,কায়সার,আভা,আফরা চলে এসেছে। ওরা ৫ জন মিহুর সামনে এসে হাজির হলো।
মিহুঃ এত দেরী হলো কেন তোদের?
রুশানঃ মাইয়া জাত শালার ঢংগী জাত।কখোন থিকা ওদের ২টার জন্য দাঁড়াই আছি।কিন্তু ওদের আসার নাম,গন্ধও নেই।
সায়েমঃ ৫ মিনিট বইলা ১ ঘন্টা কাটায় দিছে।তারপরেও ওদের ৫ মিনিট শেষ হয় নাই। কল দিসি,বলে কিনা আরো ৫ মিনিট লাগবো।ক তো কি করতে মন চায়?ইচ্ছে করতাছিলো তুইল্লা আছাড় মারি।
রিমঃ মারলি না কেন?
কিরনঃ তুলতে গেলেতো আমরাই চাপা পইরা যামু।মুটকি দুইডা।
আভাঃ সাবধানে কথা কইস কিন্তু। নইলে ঘুষি মাইরা সামনের দাঁত ফালায় দিমু।বেশি খাইতে পারবি না।
রুশানঃ তোগো আটা-ময়দা মাখতে মাখতেই তো এত দেরী হইয়া গেছে।
আফরাঃ কি কইলি?রুশান কিছু কইতাছি না দেইখা পটরপটর করিস না।অনেকক্ষণ ধইরা সহ্য করতাছি।তুই সব মাইয়াগো অপমান করতাছত।
রিমঃ খালি হাতে খাইতে আইয়া পরছোত?আমাদের জন্য কোন গিফট আনোস নাই।(ভ্রু কুঁচকে)
সায়েমঃ ফ্রেন্ডের বিয়া আবার কিসের গিফট? খামু-দামু,সেলফি তুলমু,ঘুইরা ফিরা যামুগা।
মিহুঃ কি নাদানের নাদান রে?গিফট ছাড়া খাইতে আইয়া পরছে।শরম করে না তোগো?অন্যের বন্ধুগো দেখি না খাইয়া গিফট দিয়ে চলে যায়।আর তোরা গিফট না দিয়া খাইয়া চইলা যাবি।ছিঃ ছিঃ আগে জানলে তোগো দাওয়াতই করতাম না। গেইট দিয়া ঢুকছোস কেমনে?তোগো তো বাইর কইরা দেওন উচিত।
আফরাঃ এমনভাবে অপমান করতাছত কে?
রিমঃ গিফট না নিয়া আইছোত কে?
আভাঃ দিমু না তোগো গিফট।দেখি কেমনে বাইর করোস?
রুশানঃ আমি আজকে ৫ টা রোস্ট খামু।
মিহুঃ তোগো খাইতে দিলে তো খাবি।
সায়েমঃ তুই খাইতে দেওনের কেডারে?চুপ কইরা এখানে বইসা থাক।কামে দিবো।তোরা,দুইটায় আমাদের যেই পকেট খালি করছোত তার বদলা নিমু।
কিরনঃ ডেকচির মধ্যে খাইতে বসমু।দেখি কে আটকায় আমাদের??
রুশানঃ বেশি কথা কইস না।হিরকে দিয়া বিশ্বাস নাই।এই বিয়ার সাজেই আমাদের স্টিক নিয়া দৌড়ানি দিতে পারে।তখন কিন্তু আমরা আর এইখানে ঢুকতে পারমু না। না পারলে তো রোস্ট-পোলাও খাইতে পারমু না।(নিচুস্বরে)
মিহুঃ ঐ ঐ রুশান, কি ফুসুরফাসুর করাতছত??
সায়েমঃ আমরা আজকে হাতের কব্জি ডুবাই খামু।আমাদের দুই ফ্রেন্ডের বিয়ে বলে কথা।
মিহুঃ খাওয়াইতাছি তোগো?
রিমঃ নাদানের মতো গিফট না নিয়া আইয়া পরছে।আবার কব্জি ডুবাই খাইবো?চেয়ার-টেবিলে খাইতে দিমু না। গেইটের সামনে প্লেট নিয়া,দাঁড়ায় থাক।হাড্ডি-গুড্ডি কিছু খাইতে দিমু নে।আর যদি ভেতরে বসতে চাস তাহলে নিচে পাটি বিছাইয়া বসতে দিমু নে।
আভাঃ দরকার পরলে তোদের মাথার ঘোমটা খুলে বিছাইয়া খামু।তারপরও না খাইয়া যামু না।
মিহুঃ জীবনে বিয়ার দাওয়াত খাস নাই?
রিমঃ মনে হয়।নইলে খাওনের লিগা এমন করতো না।
আফরাঃ পেটে ইঁদুরে ড্রাম বাজাইতাছে।খাইতে চল।
রুশানঃ কেন? বিয়ার দাওয়াত খাবি দেইখা কয়দিন ধইরা না খাইয়া রইছত?
আফরাঃ ঐ ছেমড়া কি কোস?কয়েকদিন খামু না কে?
কিরনঃ তোরা তো বিয়ার দাওয়াত পাইলে আগে থাকতে খাওয়া-দাওয়া ছাইরা দেস।বিয়ের দাওয়াতে বেশি কইরা খাইতে পারবি বইলা।খাদকনিগুলি।
আভাঃ নিজেদের কথাগুলো আমাদের দিয়া বুঝাইতাছত কে?
সায়েমঃ ঐ আফরা বল তো কয়দিন ধইরা খাস না?
রিমঃ একসপ্তাহ?।
আফরাঃ ??
সবাইঃ??
রুশানঃ আমি শুধু সকালে খাই নাই। দুপুরে বেশি কইরা পোলাও-মাংস খামু দেইখা।
রিমঃ এখনো দাঁড়ায় রইছোত কে?যাস না,কে আইতে কইছে তোগো?
মিহুঃ ওরা এমনে যাইবো না।ওগো সম্মান কইরা পালকিতে নিতে হইবো।
☘️☘️☘️
মিহু কতগুলো গার্ডকে ডাকলো।সবার মুখ কালো হয়ে গেলো। ওরা এমনটা আশা করেনি।
সায়েমঃ তুই কি সত্যি আমাদের বের করে দিবি?(মন খারাপ করে)
রিমঃ তয় কি মনে হয়?
আভাঃ হির,গিফট আনি নাই বলে কি না খাওয়াইয়া গার্ড দিয়া বাইর কইরা দিবি?
আফরাঃ তোদের বের করতে হবে না। আমরাই চলে যাইতাছি।চল সবাই। বিয়ের দিনই ওরা আমাদের ভুলে গেছে। (মুখ ভার করে)
গার্ড মিহুর সামনে আসতেই ও তাদেরকে চেঁচিয়ে বললো।
মিহুঃ এখনো তাকিয়ে তাকিয়ে কি দেখছো?যাও এগুলারে উঠায় নিয়া টেবিলে বসায় দিয়ে আসো।কতক্ষণ ধইরা বকবক করছে।ওগো তো খুদা লাগছে নাকি? না খাইয়া এই জায়গায় আইয়া ঢং করতাছে।সবকিছু পারফেক্ট হওয়া চাই। আমার ফ্রেন্ডদের যাতে কোন যত্নের ত্রুটি না হয়।যদি কোন ভুল হয় তাহলে তোমাদের কারো চাকরি থাকবে না।
সবাইঃ ??
পাঁচ জন এসে মিহুকে জড়িয়ে ধরলো। ওরা ভাবছিলো মিহু ওদের সত্যি বের করে দিবে।
মিহুঃ হইছে, ছাড় আমায়।আমারতো গরম লাগতাছে।
কিরনঃ আমরাতো ভাবছিলাম—-
রিমঃ কানের নিচে কষাইয়া একটা চড় মারমু।এমনটা ভাবলি কি কইরা তোরা?তোদের সাথে আমরা দুই জা মিলে মজা করছিলাম।
মিহুঃ আর এগুলিতে সব সত্যি ভাইবা নিছে। তোরা হলি আমাদের কলিজার টুকরা।তোরা আজকে না আসলে আমি বিয়াই করতাম না।
সায়েমঃ সরি,আমরা কতকিছু ভাইবা ফালাইছি।
মিহুঃ হইছে খাইতে যা।যত মন চায় তত খাবি।আজকে তোদের ফ্রী অফার।
রিমঃ আমাদের জন্যও নিয়া আসিস?।তোদের পাঁচটার জন্য আমি আর হির এখনো কিছু খাই নাই।
আভাঃ হির সত্যি!!!!
মিহুঃ হুম?।
৫ জন এবার ওদের জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলো।মিহুর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে।
রুশানঃ আগে তোদের খাইয়ে তারপর খামু।
মিহুঃ আগে তোরা খাবি।
আফরাঃ না তোরা।
রিমঃ না তোরা।
সায়েমঃ বোঝস না কে?আগে তোদের খাইয়ে তারপর যদি আমরা খাই তাহলে বেশি খাইতে পারুম।
সবাইঃ ??
মিহু,রিম স্টেজ থেকে উঠে ওদের সাথে অন্য একটা রুমে গেল। সেখানে গিয়ে ওরা পাঁচ জন মিহু ও রিমের হাতে দুইটা গহনার বক্স ধরিয়ে দিলো।
আভাঃ এগুলো তোদের জন্য।
রিমঃ কি এগুলো?
রুশানঃ খুলে দেখ।
মিহুঃ আমরা তো মজা করছিলাম।তোরা এগুলো কেম করতে গেলি?(রেগে)
কিরনঃ দেখ পছন্দ হয়েছে কিনা?
মিহু ও রিম বক্স খুললো।ভেতরে স্বর্ণের নেকলাস ও এয়ারিং।দুজনেরটা একরকম ডিজাইন।
রিমঃ খুব সুন্দর ?।
মিহুঃ তোদের চয়েজ ভালো।
সায়েমঃ তোদের দুজনকে একরকম ডিজাইনের দিয়েছি।কে জানে,ভিন্ন দিলে আবার দুজন চুলোচুলি শুরু করিস যদি।হির বলবো রিমেরটা সুন্দর, রিম বলবে হিরেরটা সুন্দর। তোরা করতেও পারিস।তোদের দিয়ে বিশ্বাস নাই।
রিমঃ কি বললি তুই?
মিহুঃ আমরা এরকম?
আফরাঃ ওদের কথা ছাড় তো।তোরা বস,আমরা খাবার নিয়ে আসছি।
আফরা খাবার নিয়ে এলো।সেখানে বসে ওরা ৫ জন মিলে ওদের দুজনকে খাইয়ে দিচ্ছে। কিছুখন পর ওর তিন ভাই রুমে ঢুকলো। তিন ভাইও মিহুকে খাইয়ে দিলো।
ঐশিকঃ আরেকটু হির।
মিহুঃ না বড় ভাইয়ু,যা খাওয়াইছো তাতেই পেট ফুলে ঢোল হয়ে গেছে।কেউ বোধহয় নিজের বিয়েতে এতো খাবার খায়নি। আরো বেশি খেলে মরেই যাবো।
রিশিকঃ অল্প একটু।
মিহুঃ একদম না। আর পারবো না।
খাবার শেষ হওয়ার পর তিন ভাই মিলে আবার বোনকে স্টেজে উঠিয়ে দিলো।
#চলবে
#Part_26
https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/3032515133643885/