শ্রেয়সী
লেখাঃখাইরুন নেছা রিপা
পর্বঃ৪৬ ও অন্তিম পর্ব
সহসাই শিহাব পিছু ডাকলো বিন্দুকে। বিন্দু স্থির হয়ে দাঁড়ালো। সামনে তাকিয়েই উত্তর দিলো,
–কিছু বলবেন?”
–সুখে আছো তুমি?”
–আমাকে দেখে কী আপনার খুব অসুখী মনে হয়?”
শিহাব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। বিন্দু পেছন থেকে কোনো উত্তরের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইলো না এগিয়ে চললো সামনের দিকে।
শিশির মুখটা কাচুমাচু করেই বসেছিলো অনেকটা দূরে। প্রতিটা মুহূর্ত হাজারো চিন্তায় বিভোর ছিলো। বিন্দুকে এগিয়ে আসতে দেখেই উঠে দাঁড়ালো। বিন্দুর মুখটা হাসি হাসি দেখাচ্ছে। ভিষণ ভয় লাগছে শিশিরের। না জানি এখন এসেই বলবে, “আমি শিহাবের সাথেই থাকতে চাই।”
শিশির কোনরকম ঢোক গিললো। বিন্দু এসে একদম মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। বিন্দুর চোখে-মুখে হাসির রেখা ঢেউ খেলছে। শিশির বিন্দুর দিকে অসহায় ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে। হুট করেই বিন্দু বলে উঠলো,
–খুব পাকনামি তাই না? আজ বাড়িতে চলুন আপনার হচ্ছে…! ”
শিশির ভয়ে ভয়ে বললো,
–কী করেছি আমি?”
বিন্দু দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–আহা! কচি খোকা উনি কী করেছেন জানেন না। এখন জানতেও হবে না তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলুন মেয়েটা হয়তো আমাকে না পেয়ে কাঁদছে।”
শিশির আর কোনো কথা বাড়ালো না। তবে শিশিরের বুকের ভেতর থেকে ভয়টা সরে গেছে। যাক বিন্দু যাবে না এটা ভেবেই শান্তি। দু’জনে পার্ক ছেড়ে বেড়িয়ে আসলো। শিশির বাইক স্টার্ট দিতেই বিন্দু দু’হাতে শিশিরের পেট জড়িয়ে ধরলো। শিশিরের পিঠে মুখ ঠেকিয়ে বললো,
–কী কী কথা হয়েছে জানতে চাইবেন না?”
–কিছু কথা থাক না ব্যক্তিগত! সব কিছু শুনতে হবে, জানতে হবে এমন কোনো মানে নেই তো।”
বিন্দুর ঠোঁটের কোণে স্ফীত হাসির রেখা টেনে শিশিরের পিঠে চুমু আঁকলো। শিশির হাসছে তৃপ্তির হাসি। বিন্দু স্পষ্ট শিশিরের অনুভূতিটা বুঝতে পারলো। একেই বোধহয় বলে মনের টান! বিন্দু শিশিরের পিঠে আবারও একটা চুমু আঁকলো। শিশির বাইকটা সাইড করে নিজের মাথার হ্যামলেটটা বিন্দুকে পড়িয়ে দিলো।
–এটা আমাকে পড়ালেন কেন?”
–তুমি আজ যা শুরু করেছো। আমার লজ্জা লাগছে।”
শিশিরের কথা শুনেই বিন্দু খিলখিলিয়ে হেসে ফেললো। মাথাটা নাড়িয়ে চুলগুলো সামনে এনে শিশিরকে সুরসুরি দিতে লাগলো।
–বিন্দু প্লিজ দুষ্টুমি করো না। আমার তোমাকে নিয়ে বাইকে করে কোথাও গেলে ভয় লাগে।”
বিন্দু হেসে আরও জোরে জড়িয়ে ধরে বললো,
–বউ পাশে থাকলে তো সাহস পাওয়ার কথা আর আপনার উল্টো ভয় লাগছে?”
–যা শুরু করেছো ভয় না লেগে উপায় আছে!”
বিন্দু দেখলো রাস্তার পাশে একজন ফুসকাওয়ালা। বিন্দু চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো,
–আমি ফুসকা খাবো।”
শিশির আর বিন্দু দু’জনে মিলে একই প্লেট থেকে ফুসকা খাচ্ছে।
হুট করেই একটা বড় গাড়ি পেছন থেকে এসে শিশিরকে ধাক্কা দিলো। চোখের পলকেই গাড়িটা অনেক দূর চলে গেল। শিশিরের হাত থেকে ফুসকার প্লেটটা পড়ে গেল। বিন্দু দু’হাতে মুখ চেপে দাঁড়িয়ে রয়েছে। চোখগুলো যেন কোঠর ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। শিশিরের নিস্তেজ শরীরটা রাস্তার পাশে পড়ে আছে। চোখ জোড়া বন্ধ। পুরো শার্ট রক্তে মাখামাখি। মাথা ফেটে গিয়ে ফিনকির মতো রক্ত বের হচ্ছে।
বিন্দু চিৎকার করে উঠলো। চারপাশে মানুষের সোরগোল শুরু হয়ে গেল। সবাই বালবলি বলছে, ” এটা কোনো এক্সিডেন্ট না। ইচ্ছে করেই ধাক্কা দিয়েছে।”
–প্লিজ কেউ আমাকে সাহায্য করুন। ওনাকে বাঁচাতে হবে।”
কয়েকজন লোক মিলে একটা আটো ভাড়া করলো। বিন্দু শিশিরের মাথাটা একটা রুমাল দিয়ে বেঁধে দিলো। বিন্দু শিশিরকে ডাকতে লাগলো,
–এই যে শুনছেন? প্লিজ চোখটা খুলুন।”
আচমকাই শিশির চোখটা মেললো। বিন্দু কান্নার মাঝেও হাসছে!
–আপনার সাথে আমার অনেক বুঝাপড়া আছে। কোথায় যাবেন আপনি, হ্যাঁ? এত সাহস কী করে হয় আপনার নিজের বউকে অন্যকে দিয়ে দেওয়ার।”
শিশিরের চোখটা আবারও বুজে আসছে। বিন্দু ধমক দিয়ে বললো,
–একদম চোখ বন্ধ করবেন না আপনি। আর অল্প কিছুক্ষণ। কণাকে দেখবেন না আপনি? আপনার মেয়ে কণা!”
শিশিরের চোখের কোণ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। চোখের পাতা একটুও নড়ছে না। নিষ্পলক বিন্দুর দিকে তাকিয়ে আছে।
বিন্দু গালে হাত দিয়ে কয়েকবার ডাকলো। তবুও একইভাবে শিশির তাকিয়ে আছে। বিন্দুর হাত, সারা গা রক্তে লেপ্টে গেছে। হসপিটালে আনার পর একজন ডাক্তার এসে হাতের নার্ভ চেক করে নার্সের উদ্দেশ্যে বললেন,
–ইমিডিয়েটলি ওনাকে ইমার্জেন্সীতে নিয়ে যাও!”
আজও সেইদিনকার পার্কে দু’জন দু’প্রান্তে বসে আছে। কারও মুখেই কোনো কথা নেই। নিরবতা ভেঙে শিশিরই বললো,
–কেমন আছিস?”
–ভালো।”
–বাসার সবাই কেমন আছে?”
–ভালো।”
–আমাকে জিজ্ঞেস করবি না, আমি কেমন আছি?”
শিহাব বিচলিত হয়ে শিশিরের দিকে তাকালো। শিশির ঠোঁটের কোণে লম্বা হাসি টেনে বললো,
–আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি। আমার মেয়ে, বউ, মা, বোন সবাইকে নিয়ে খুব সুখে আছি৷ তোর কী সুখ পেতে ইচ্ছে করে না?”
শিহাব হা করে শিশিরের দিকে তাকিয়ে আছে। শিশির আবারও বলতে শুরু করলো,
–আমি জানি তো, তোরও ইচ্ছে হয় আমার মতোই সুখে থাকতে। কিন্তু কী বল তো, ওই যে হিংসে নামক অস্পর্সীয় একটা বস্তু আছে না, ওটা তোকে শান্তিতে থাকতে দেয় না। ভুলে যা না সবকিছু। সুন্দরভাবে লাইফটাকে লিড কর, দেখ জীবন কত সুন্দর! এই যে তুই হিংসার বশবর্তী হয়ে আমার এত বড় একটা এক্সিডেন্ট করলি ভাবছোস আমি মরে যাই বা পঙ্গু হয়ে গেলে বিন্দু তোর কাছে চলে যেত। কিন্তু দেখ আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি। আমার কিচ্ছু হয়নি। শুধুমাত্র ডাক্তারের পরামর্শে কিছুদিন ক্রাচে ভর করে হাঁটতে হবে তারপর ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে উঠবো। তুই জানিস শিহাব, আমি যদি সেদিন মরেও যেতাম বিন্দু কখনও তোর কাছে ফিরতো না। এটা আমার বিশ্বাস! আর কী বলতো? স্বয়ং আল্লাহ আমার জুড়ি বেঁধে দিয়েছেন বিন্দুর সাথে তাহলে সেখানে তোর বা আমার আর কী বা করার থাকতে পারে? যেখানে তুই অনায়াসেই বিন্দুকে বিয়ে করতে পারতি সেখানে তুই বিয়ে করলি না তখন এটা কেন হয়েছে জানিস এটা আল্লাহর ইচ্ছা। কারণ আল্লাহ চায়নি তুই বিন্দুকে নিজের করে পাস। আমি চাইলেই কোনো স্টেপ নিতে পারতাম। তুই তো ভালো করেই জানিস আমি বরাবরই এসব ঝামেলা পছন্দ করি না। আর শোন শিহাব, হিংসা পতনের মূল। তুই যতই আমার ক্ষতি করতে চাইবি ততই তুই অশান্তিতে ভুগবি দেখে নিস একটুও সুখ পাবি না। সব কিছু ভুলে গিয়ে নতুনভাবে শুরু কর। দেখবি খুব ভালো আছিস। নিশ্চিন্তে রাতে ঘুমাতে পারবি। একবার নিজের দিকে তাকিয়েছিস? চোখের নিচে গাঢ় কালির রেখা পড়েছে। একটু যত্ন নে নিজের। আর কত হিংসে করবি?”
কথাগুলো বলেই শিশির ক্রাচে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। শিহাবের কথা শোনার মতো প্রয়োজনবোধ করলো না। শিহাব কাঁদছে! খুব কাঁদছে। সত্যিই সে হিংসায় জ্বলেপুড়ে একটা জানোয়ারে তৈরি হয়ে গেছে!
বিন্দু সারারাত জেগে পুরো বইটা শেষ করলো। হালকা গোলাপী মলাটে মোড়ানো একটা বই যার ওপর কালো কালিতে তিনটা বড় অক্ষরে লেখা, ‘শ্রেয়সী’ আর তার ঠিক একটু নিচেই লেখা “মাহমুদুল হাসান শিশির!” বিন্দু গভীরভাবে বইটাতে নিজের ঠোঁট ছোঁয়ালো। চোখ জোড়া জলে ছলছল করছে। মানুষটা তাকে এতটা ভালোবাসে বইটা না পড়লে হয়তো কখনো জানাই হতো না। মানুষটা এত চাপা কেন! কোনো কিছুই বুঝতে দেয় না।”
শিশির স্কুলের একটা কাজে ঢাকাতে গিয়েছে। সেই সুযোগেই রাত জেগে বইটা পড়তে পেরেছে বিন্দু। শিশিরের প্রিন্সিপাল স্যার কিছুতেই শিশিরকে স্কুল থেকে ছাড়লেন না। সব জেনেশুনেই রিদিকে বিয়ে করলেন শিশিরের সেই প্রিন্সিপাল স্যার। কণাও সেই স্কুলে পড়াশোনা করে। কণা এবার ক্লাস টেনে পড়ে। রিদির দুইটা বাচ্চা একটা ছেলে আর একটা মেয়ে। আর বিন্দু আর শিশিরের আর কোন সন্তান হয়নি। ট্রাই করেছিলো কিন্তু কেন যেন আর হয়নি। অবশ্য এ নিয়ে শিশির আর বিন্দুর কোনো মাথাব্যথাও নেই। নতুন চিকিৎসাও করায়নি।
–মা দরজাটা খোলো।”
বিন্দু দরজা খুলেতেই কণা হাসিমুখে রুমে ঢুকলো। কণার হাসিটাও একদম শিশিরের মতো। বিন্দু মুগ্ধ হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
–মা বইটা কেমন লেগেছে?”
বিন্দু কিচ্ছু বললো না, গম্ভীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
–মা ভাবছো তোমার অতীত জেনে ফেলেছি আমি যদি কখনো তোমাকে কটূক্তি করি…৷ মা ভুলে যেও না আমি আমার বাবার মেয়ে। মাহমুদুল হাসান শিশির আমার বাবা। ওনার রক্তই আমার শরীরে বইছে। তবে জানো যখন বাবার ডায়রিটা পড়ি তখন প্রচুর হাত কাঁপছিলো আমার মনে হয়েছিলো ডায়রিটা হাত থেকে পড়ে যাবে। যদি আমি সত্যি সত্যিই ওই লোকটার মেয়ে হয়ে যাই! আমি কান্নাও করেছিলাম খুব। কিন্তু পরের অংশ পড়ে আমার সব খারাপ লাগা ভ্যানিশ হয়ে যায়। সত্যিই আমি গর্বিত বাবার মেয়ে হতে পেরে।”
বিন্দুর চোখে জলজল চিকচিক করছে। ঠোঁটের কোণে প্রশস্ত হাসি। কণা আবারও বলতে লাগলো,
–মা কাল তো বাবার জন্মদিন ভাবছি বাবার এই জন্মদিনে আমার পক্ষ থেকে বাবাকে এটা উপহার দেব।”
–তুই এসব করলি কখন?”
–একদিন আমি রাত বারোটার সময় তোমাদের রুমে আসি একটা দরকারে তখন দেখি বাবা কী যেন ডায়রিতে পড়ছে। তবুও না দেখার ভান করে দরজায় নক করলাম। দেখলাম বাবা বইটা তাড়াতাড়ি লুকিয়ে ফেলেছে। আর তুমি তো বেঘোরে ঘুমাচ্ছিলে। তখনই আমার লোভ হয় ডায়রিতে কী আছে জানার জন্য। আর আমিও বাবার চাবি তোমার থেকে চুরি করে নিয়ে নেই। তারপর পুরো ডায়রিটা পড়ি। খুব লোভ হয়, তোমার আর বাবার এত সুন্দর জীবনের গল্পটাকে বইয়ের মলাটে রুপ দেওয়ার। কিন্তু কিভাবে কী করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। পরে প্রিন্সিপাল আংকেলের সাথে কথা বলি। আংকেলের পরিচিত প্রকাশনী আছে। সেখানে গিয়ে কথা বলেন। ব্যস হয়ে গেল। বাবা ডায়রির উপরে বইটার কী নাম দেয় জানো?”
বিন্দু উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
–কী?”
–শিশিরের বিন্দু কণা! কিন্তু আমি বইটার নাম দেই ‘শ্রেয়সী’! তারও অবশ্য একটা কারণ আছে। কারণটা হলো, শিশিরের বিন্দু কণা যদি বইয়ের নাম দেই তাহলে সবাই বুঝে ফেলবে গল্পের টুইস্ট। কণা আসলে কার মেয়ে সবাই বুঝতে পারবে আগে থেকেই তাই ইচ্ছে করেই নামটা চেঞ্জ করে দিয়েছি। আরও একটা কাজ করেছি আমি। গল্পের শেষে লিখে দিয়েছি পুরো গল্পটা কাল্পনিক। কারণ পুরো পৃথিবীকে এই সত্যটা আমি জানাতে চাই না। কিছু সত্য আড়াল থাক। থাক না কিছু সত্য ব্যক্তিগত!”
–তোর আংকেল তো সব সত্য জেনে ফেললো। তাহলে?”
–উঁহু আংকেল এখনো পড়েননি। আর এটা যে তোমাদের গল্প তাও ওনাকে জানাইনি। বলেছি শুধু এমনিতেই একটা গল্প। আর সবচেয়ে আনন্দের খবর কী জানো?”
বিন্দু মুগ্ধ হয়ে মেয়ের কথা শুনছে। হালকা হেসে বললো,
–কী?”
–বইটার প্রি অর্ডার চলছে। প্রকাশনী থেকে যখন পোস্ট দিলো সেয়ার করে নিজের আইডিতে রেখেছি আমি। গল্পের কয়েক পর্ব দিয়েছিলাম, আল্লাহ এত এত অর্ডার পড়েছে তুমি জাস্ট ভাবতে পারবে না। সবাই তো আবার বাবার অটোগ্রাফও চায়। আমি বুঝতেই পারছি না বাবা কখনো কোনো গল্প লেখেনি তাহলে সবাই অযথা কেন বাবার অটোগ্রাফ চাইছে। আর আমি প্রিন্সিপাল আংকেলকে দিয়ে প্রকাশনীর লোকটাকে বলে দিয়েছি, আগে বাবা বইটা পড়বে তারপর সবার বই ডেলিভারি হবে তার আগে না। আমি চাই আমার বাবা-মা বইটা সবার আগে পড়ুক। তুমি তো পড়ে ফেলেছো। এইবার বাবার পালা। আচ্ছা মা বাবা কী খুশি হবে বইটা পেলে?”
বিন্দু ধরা ধরা গলায় বললো,
–মানুষটা বইটা পেলে কী যে করবে আমি জানি না। তবে এটা জানি মানুষটা খুব কাঁদবে। তার ভালোবাসার পূর্ণতা যে বইয়ের মলাটে রুপ নিয়েছে। দেখে নিস তুই মানুষটা খুব কাঁদবে!”
কণা চলে গেল। বিন্দু ফোনটা হাতে নিয়ে শিশিরের ছবিটার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। কী মিষ্টি করে মানুষটা হাসে। এত মুগ্ধতা কেন এই হাসির মাঝে! টুপ করেই একটা চুমু খেলো বিন্দু, শিশিরের হাসিমাখা ছবিটাতে। বিড়বিড় করে বললো,
–একদম এত সুন্দর করে হাসবেন না। আমি যে খুন হয়ে যাই একটুও বুঝেন না নাকি? বুড়ো তো আর কম হলেন না এখনও বুঝি আমাকে খুন করতে ইচ্ছে হয় আপনার মায়ার জালে জড়িয়ে….!”
হাসছে শিশির! উঁহু, শিশিরের ছবি! প্রতিয়তমার স্পর্শে যেন প্রানবন্ত হয়ে উঠেছে ফোনের স্কিণের শিশির! আর গভীরভাবে দূর থেকে প্রিয়তমকে অনুভব করছে শিশিরের বিন্দু!
সমাপ্ত।
গল্পটা কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না। আজ অন্তত নাইস লিখবেন না প্লিজ। যারা সাইলেন্ট রিডার তাদের কাছেও অনুরোধ আজ অন্তত নিজেদের মন্তব্যটা জানাবেন আজ না হয় একটু কিপ্টামি নাই করলেন। এখন বলি কিছু নিজের কথা। গল্পটা লেখতে গিয়ে হয়তো অনেকটা লেট হয়েছে তার পেছনেও কিছু কারণ আছে। কারণ আমি অসুস্থ। তবুও গল্পটা শেষ করতে পেরেছি ভেবেই ভালো লাগছে। চেয়েছিলাম গল্পটা সেড এন্ডিং দিতে৷ গতকাল লিখেও ফেলেছিলাম সেড এন্ডিং পুরো পর্ব। কিন্তু আমারই এত বেশি খারাপ লাগছিলো যে কী বলবো। পরে আবার সেই পর্বের অনেকখানি ডিলিট দিয়ে আবার নতুন করে লিখলাম। যাই হোক যারা আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন তাদের অনেক ধন্যবাদ৷ আর একটা কথা না বললেই নয় কারও কারও কমেন্ট আমার জন্য অনেক অনুপ্রেরণার ছিলো। নিজের কিছু ভুল আমি কমেন্টের মাধ্যমেও ঠিক করতে পেরেছি। আশা করি এভাবেই সামনের দিকেও আপনারা আমার পাশে থাকবেন। আর হ্যাঁ, পুরো গল্পটা কেমন লেগেছে অবশ্যই জানবেন। ধন্যবাদ ??