স্বর্ণলতা part 36

0
348

#স্বর্ণলতা
পর্বঃ৩৬
_____________
স্বর্ণলতা মেপে মেপে পা ফেলে স্নেহার ঘরে ঢুকলো।বাইরে এখন শত্রুদের গোল মিটিং।এসব শুনে তার কাজ নেই।তার এখন আসল রহস্য জানতে হবে।তাই সে সোজা স্নেহার ঘরে চলে গেলো।
গিয়ে দেখলো স্নেহা সৈকতের কোলে শুয়ে আছে।আর অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে।পাশে মেহুল ও বসে আছে।সৈকত এর মুখেও একরাশ দুঃখ।মনে হচ্ছে কালোছায়ায় মনের চারপাশ ঘিরে রেখেছে।স্বর্ণলতা সাবলীল ভঙ্গিতে স্নেহাকে ডাক দিলো-
–”আপু! কাঁদছো কেনো?ভাইয়া,আপনার ই বা কি হয়েছে?’
স্বর্ণলতা কে দেখে স্নেহা মাথা তুললো।মনে হচ্ছিলো ওকে দেখে ও আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে।

এক ঝটকায় উঠে গিয়ে স্বর্ণলতা কে জাপটে ধরলো।কান্নার শব্দ আস্তে আস্তে আরও বাড়ছে।স্বর্ণলতা হকচকিয়ে গেলো।তাকে থামানোর চেষ্টা করতে লাগলো-
–”আপু।প্লিজ কান্না করো না।কি হয়েছে আমাকে বলো।তোমার কি বাচ্চার জন্য মন খারাপ?বিশ্বাস করো আমি তোমাদের কোন কথাই মনে রাখিনি।সেদিন তোমাকে অসম্মান করেছি।সত্যি আমি লজ্জিত। আপুরে! কি দহনে জ্বলছি যে আমি, আমার আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা।যখন শুনলাম আমার বাচ্চাকে জবাই করা হবে আমি যেনো বেঁচে থেকেও মরে গিয়েছিলাম।কত কষ্টে করে নিজের শরীর টা কে টেনে নিয়ে গিয়েছি আমি জানি আর মন্টু জানে।এই শরীর নিয়ে বাচ্চাকে উঠিয়ে কত জোরে দৌড়িয়েছি।কিন্তু আমার সে সব চেষ্টা ব্যর্থ।আমার সোনামনি কে আল্লাহ আগেই তুলে নিয়েছিলো।”

স্নেহা স্বর্ণলতার এসব কথা শুনে ও যেনো নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছেনা।মুখ তুলে স্বর্ণলতার কপালে চুমু দিলো।দুচোখ ভর্তি পানি।ওকে শক্ত করে জাপটে ধরে কান্নার শব্দ আরও দ্বিগুণ করে ফেললো।আর অস্পষ্ট স্বরে বললো-
—”আমি না পারলাম আমার সন্তান কে বাঁচাতে না পারলাম তোমার সন্তান কে বাঁচাতে।মা হিসেবে আমি ব্যর্থ।ফুপি হিসেবেও আমি ব্যর্থ।”

—”আপু।আমি সবসময় দেখে এসেছি বাচ্চার জন্য তুমি
ও বাড়িতে যেতে চাইতে না।ভয় তো তোমার ও ছিলো।কিন্তু তুমি কেনো এমনটা করতে? মামার জন্য?আর তুমিও আমাকে বলেছিলো আমাকে অনেক কিছু তোমার বলার আছে।”
এবার মুখ তুলে স্নেহা স্বর্ণলতার দু গাল স্পর্শ করে বললো-
—“বোনরে!আমার স্বর্ণের মতো জলজল করা এক তারা।তোমাকে তো বাঁচাতে পারবো না রে!আমি এখন বলেই কি করবো?আবার তোমাকে ওদের হাতে বলি হতে হবে।নীরব এর মতো পশুর সাথে তোমার বিয়ে দিচ্ছে ওরা।
আমি নিজেকে স্বান্তনা দিতে পারছিনা।আমি তোমাকে বাঁচাতে পারবো না এই কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে আমার”।

স্বর্ণলতা এবার মেহুলের দিকে তাকিয়ে বললো-
—”মেহুল।তোমাকে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্বাস করতে পারি?”
মেহুল মাথা নিচু করে রইলো।হয়তো সে কাঁদছিলো।স্বর্ণলতার চোখে অবিশ্বাসের চাহনি মেহুল কে হয়তো খুবলে খায়।শুধু মুখ খুলতে ভয় পায়।মামা তো মানুষ না।তার দয়া নেই।মায়া নেই।তার ভয়ে গুটিয়ে থাকে সবসময় ।আর জঙ্গলের ঘটনার পর সে ভীষন আতঙ্কে থাকে।মন্টু যে কাজ করেছে তার শাস্তি যে কতটা ভয়ানক হয়েছে তা সে ঠিকি দেখেছে।
স্বর্ণলতা হালকা কেশে মেহুল কে বাইরে গিয়ে পাহারা দেওয়ার জন্য বললো।

আসলে বাইরে পাহারা দেওয়ার জন্য মেহুল কে বিশ্বাস করার খুব একটা প্রয়োজন নেই।কারন মেহুল আর যাই করুক এতো বড় বিপদ সে ঘটাবে না।মামা আসলে অবশ্যই সে বলবে।কিন্তু স্বর্ণলতা চাচ্ছিলো না তাদের এই আলোচনার মাঝে মেহুল থাকুক।তাই কৌশলে মেহুল কে সরিয়ে দিলো।

—”আপু।আজকে আমার বিয়ে নীরবের সাথে হচ্ছে সেটার জন্য তুমি কান্না করছো?”

—”হুম স্বর্ণ।স্নেহা সেই কখন থেকেই নিজেকে দোষারোপ করছে।এদিকে ওর কষ্ট অন্যদিকে আমার ছোট্ট বোনের মতো যাকে দেখেছি তার আজ এতো বড় ক্ষতি হতে যাচ্ছে।আমি কিভাবে এগুলো সহ্য করবো!”

—”নিশ্চিন্তে থাকেন ভাইয়া।আর আপু মন খারাপ করোনা।বিয়েটা হচ্ছেনা।”

চোখ কপালে উঠে গেলো স্নেহা এবং সৈকতের।একরাশ খুশি যেনো তাদের মনের কালোছায়া টাকে নিমিষেই সরিয়ে ফর্সা করে তুললো।
একগাল হেসে স্বর্ণলতা কে স্নেহা জিজ্ঞেস করলো-
—”সত্যি???”

—”হুম আপু সত্যি”।
এরপর সৈকত বিস্মিত হয়ে বললো
—”কিন্তু স্বর্ণলতা এটা কিভাবে সম্ভব!

—”আচ্ছা সেসব বলছি তবে একটা কথা আমাকে বলোতো মামার দরকার বাচ্চা।তাহলে সেটা তো নীরব কে আমার সাথে থাকতে দিলেই হতো।তাহলে এতো খরচ করে বিয়ে কেনো দিচ্ছে?”

স্নেহা একবার দরজার দিকে আরেকবার সৈকতের দিকে তাকিয়ে বললো-
—”এটার কারন দুটো।
প্রথম কারন-মামা যে সাধন করছেন।এতে অবৈধ বাচ্চা তার কোন কাজে আসবে না।আত্মার শুদ্ধি বলে নাকি একটা বিষয় আছে।আমি জানিনা এই নিয়ম সে কোথায় পেয়েছে।তার ভাষ্যমতে নারী,নক্ষত্র মিলে যাবে এমন নারীর বৈধ সন্তান তার চাই।যে নারী তার স্বামীর সাথে বৈধ ভাবে মিলনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম নিবে।”
দ্বিতীয় কারন-মামার অনেক গুরু ও আছে।আবার অনেক শিষ্য আছে।তাদের ভোজ না করে সে বিয়ের কার্য সম্পন্ন করতে পারবে না।রূপক আর তোমার বিয়েতে এমন কিছু লোক এসেছিলো।তুমি হয়তো খেয়াল করো নি।তাই গোপনে তোমাদের বিয়ের কার্য সম্পন্ন করতে পারছেনা।এখানে যারাই আসবে গ্রামবাসী সেজে আসবে।কিন্তু আসলে তারাও তাদের দলেই।মামা তো এতো বোকা না যে গ্রামের সবাইকে দাওয়াত করে খাইয়ে বিপদ ডাকবে।”

স্বর্ণলতা এবার বলে উঠলো-
—”নীরব তো আমার ভাই।তাহলে ওর সাথে বিয়ে টা কিভাবে দিচ্ছে?”

—”ও তোমার আপন ভাই না।তোমার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে তার জন্ম।তুমি তো সেটা জানোই।যেটা জানোনা সেটা হলো ও তোমার বাবার ও সন্তান না।”

—”কি বলছো আপু?”

—”হ্যাঁ স্বর্ণলতা।তোমার মা মারা যান নি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।আর তোমার বাবা কেও মেরে ফেলা হয়েছে।”

—”কে মেরেছে আমার বাবা,মা কে?”

—”তোমার মা কে মেরেছে তোমার বাবা।আর তোমার বাবা কে মেরেছে তোমার সৎ মা।তোমার মা তাদের টার্গেট ছিলো।আর বাচ্চার টার্গেট ছিলে তুমি স্বর্ণলতা।এইজন্য তোমার বাবা কে ফুসলিয়ে নীরবের মা পরকীয়ায় লিপ্ত হয়।আর তোমার মা কে বারবার খুন করার কথা বলে।
তোমার মা যখন জানতে পারে তোমার বাবার শোভা নামের কারও সাথে সম্পর্ক তখন তোমার মা তোমাকে পেটে নিয়ে খোঁজখবর চালায়।আর তোমার মা সব জেনে যাওয়ার পর তোমার বাবাকে বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করে।কিন্তু সে যে কোন মন্ত্রবলে বশ ছিলো আল্লাহ জানেন।”

স্নেহা বলতে বলতে থেমে গেলো।পাশে থাকা পানির গ্লাস উঠিয়ে ঢকঢক করে পানি খেলো।এরপর শাড়ির আঁচলে মুখ মুছে আবার বলতে শুরু করলো-
—”তোমার মা ওদের এসব নোংরা জিনিস ধরতে পেরে কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।তোমাকে জন্ম দেওয়ার সম্ভবত ৩ মাস পর তোমার মা কে খুঁজে পাওয়া যায়।এরপর তো আর মামা চাইলেও তোমাকে বলি দিতে পারবে না।
কিন্তু যখন তোমার নারী, নক্ষত্র, জন্মসময় সব এতো আশ্চর্যজনক ভাবে তোমার মায়ের সাথে মিলে যায় তখন মামার চোখ চকচক করে ওঠে।
স্বর্ণলতা বললো-
—”জাফর মামা এখানে আসলো কি করে আপু?আমার সৎমা কে সে কি আগে থেকে চিনতো?”

—”তোমাকে আরেকটা খবর দেই।শোনার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও।তোমার সৎ মা আর আমার মা দুজন আর কেউ না দুজন আপন বোন।তা নাহলে তাদের এতো মিল হয় কি করে?তোমার কি একটুও সন্দেহ ও হয়নি?আর মামা কে দেখছো না?সে আমাদের কেউ না।সে একজন তান্ত্রিক।যার খপ্পরে আমার খালা আর আমার মা পড়ে যায়।একটা সময় আমরাও আসক্ত হয়ে পড়ি।এসব যে কত বাজে জিনিস তা এখন হারে হারে টের পাচ্ছি।মামার জন্য আমি আমার বাবাকে হারিয়েছে।কারন আমার বাবাকেও খুন করে আমার ই মা।কারন বাবা সবকিছু জেনে গিয়েছিলো।

আর তোমার মা কে প্রান দিতে হয় তার নিজের স্বামীর হাতেই।আমি যতটুকু শুনেছি মৃত্যুর কিছু মূহুর্ত আগ পর্যন্ত-ও নাকি তোমার মা ছটফট করেছিলো তোমার বাবার চিন্তায়। এতোটাই ভালোবেসেছিলো তোমার বাবা কে।মৃত্যুর মুখে ও সে দাড়িয়ে বলেছিলো ‘আপনি সাবধানে থাকবেন।ওরা আপনাকে মেরে ফেলবে’।
কতটা ভালোবাসলে মানুষ নিজের খুনীকেই সাবধানে থাকতে বলে।তোমার বাবা ও তোমার মা কে ভালো বাসতো।তোমার মায়ের নাম ছিলো লতা।আর তোমার বাবা তোমার নাম আর তোমার মায়ের নাম আগেপিছে করে রেখে তোমাকে স্বর্ণলতা বলে ডাকতো।এতো সুখী একটা পরিবার বিষাক্ত পোকাড় আক্রমনে নিমিষেই যেনো ছারখার হয়ে গেলো।
তোমার মায়ের মৃত্যুর পর শোভাখালা তোমাদের ঘরে যায়।তুমি তখন ভালোই ছোট। ও তোমাকে নানাভাবে অত্যাচার করতো। সেটা তো তুমি দেখেছোই।”

স্বর্ণলতার দুচোখ ভিজে উঠলো।আর কাঁপা কাঁপা কন্ঠস্বরে বলে উঠলো-
—”আর বাবাকে খুন করলো কেনো?”

—”তোমার বাবা জেনে গিয়েছিলো তার স্ত্রীর পেটে তার সন্তান বড় হচ্ছেনা।বরং যে তাকে তার স্ত্রীর ভাই বলে জানতো তার সন্তান তার পেটে বড় হচ্ছে।”

—”ভাই বলে জানতো মানে?কে?”

—”আর কে?জাফর নামক হারামী টা”।

—”ছিঃ!!! নীরব তাহলে ঐ পশুটার সন্তান।তাই তো বলি এই পশু টা কেনো এমন হয়েছে।আমার বাবা তো এতো টা জঘন্য ছিলো না।তাহলে ও এমন কেনো হলো!এতো নারী লোভী কেনো?আসলে যেমন বাপ তার তেমন ছেলে।”

—”খুব ঘৃনা হচ্ছেনা স্বর্ণ?ছিঃ কতটা নোংরা অতীত!!
তুমি জানো তোমাকে বলতেই আমার লজ্বায় মাথা কাটা যাচ্ছে।জাফর নরপশু।শুধু ওরজন্য আমি ভয় পেতাম।আমার বাচ্চার জন্য খুব ভয় হতো।উপায়ন্তর না দেখে তোমার ভাইয়া কে সবকিছু খুলে বলি।”
—”নীরব জানে ও মামার সন্তান?”

—”হয়তো নীরব জানে না।আর শোভা খালা আর মামা এদের দুইজনের অনিচ্ছা সত্বে বাচ্চাটা হয়ে গিয়েছিলো।পরে তোমার বাবার নামে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলো।আর মজার বিষয় কি জানো?মামা কিন্তু এ বাচ্চাকে নেওয়ার কথা বিন্দু মাত্র তোলেনি।সে কখনো নীরবের নারী,নক্ষত্র মিলিয়েও দেখেনি।আমাদের বোঝাতো যে তোমার টা তো মিলে গিয়েছে ওর টা দেখে আর কি হবে!এদিকে তোমার বিয়ে হবে বাচ্চা হবে তারপর সেই বাচ্চা তোমার থেকে নিয়ে যাবে।কতটা দীর্ঘ অপেক্ষা। তবুও সে একবারের জন্য ও বলেনি নীরব কে দিয়ে তার কাজ হবে কিনা।উল্টো কেউ বললে ভয়ংকর রেগে যেতো।”
স্বর্ণলতা তাচ্ছিল্যের সূরে বললো-
–“নিজের বেলা ষোলআনা!”

—”এসব দেখেই তোমার ভাইয়া কে সব খুলে বলেছিলাম।কারন সে আমাকে ঐ বাড়িতে থাকতো বলতো।আমি কি করতাম বলো!”

স্বর্ণলতা চাপা কন্ঠস্বরে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো-
–”ইশ! একটাবার যদি আমাকে বলতা তাহলে আমার বাচ্চা টা বেঁচে থাকতো।”
কিন্তু এই কথা স্নেহা শুনতে পেলো না।স্নেহা কিছুক্ষন চুপ থেকে আবার বললো-
—”তোমার বাবা কে কতটা যন্ত্রণা দিয়ে যে মেরেছে।আর কত নাটক সাজিয়েছে ওরা।লাশ দাফন করার পরও ওরা উঠিয়ে নিয়ে সাধন করেছে।’মরা সাধন’
আমার বাবা,তোমার মা,বাবা কে মরেও শান্তি দেয়নি।
তুমি যখন প্রথম বার নীরব আর শোভা খালাকে কোদাল হাতে বাইরে যেতে দেখেছিলে সেদিন ওরা কবরস্থানে যাচ্ছিলো অন্য আরেকটা সদ্য কবর দেওয়া লাশ তুলতে।ওদের সুরক্ষার জন্য আরেকটা গোপন পথ ছিলো।যখন বুঝতে পারে কেউ ওদের পিছু নিচ্ছে তখন ওরা অন্যরাস্তা দিয়ে তোমার আগে চলে আসে।আর তোমাকে ভুল প্রমানিত করে।

আর সেদিন যে লাশ ওরা তুলতে যাচ্ছিলো তা এক কিশোরি মেয়ের।যে কিনা সৎ মায়ের অত্যাচারে আত্মহত্যা করেছিলো।তারা কাউকে ছাড়েনি।সব কিছু তাদের ইচ্ছাতেই হয়েছে স্বর্ণ।”

স্বর্ণলতা পুরো নিস্তব্ধ হয়ে রইলো।সে কি বলবে বুঝতে পারছে না।আগে তো শুধু জানতো তারা তার বাচ্চার খুনী।কিন্তু এখন তো জানতে পারছে তার বাবা,মা সবার ই খুনী।কিভাবে তাদের শাস্তি দিলে স্বর্ণলতার মন শান্ত হবে!কতবার খুন করলে তাদের মৃত্যু যন্ত্রণায় স্বর্ণলতার প্রতিশোধের আগুন নিভবে।হয়তো হাজার বার জীবত করে হাজার বার খুন করলেও প্রতিশোধের আগুন ফুরাবে না।
স্নেহা আবারও বলতে শুরু করলো-
—”আজ প্রথমবার ওদের ইচ্ছা হয়তো পূরণ হয়নি।তোমাকে বিয়ে দিতে পারলো না তারা।কিন্তু কিভাবে এটা সম্ভব হলো স্বর্ণলতা।”?
স্বর্নলতা স্নেহার দিকে না তাকিয়েই উত্তর দিলো-
—”রূপকের জন্য।ও এসে বিয়ে বন্ধ করেছে।”

স্নেহা,সৈকত বিস্মিত হয়ে বললো-
—”কি বললে রূপকের জন্য মানে?ও আসবে কোথা থেকে! তুমি কি ওকে কোথায় দেখেছো?”

—”এতো আশ্চর্য হচ্ছো কেনো আপু!! তুমি যেহেতু সবকিছু জানো তাহলে তো তোমার জানার কথা যে রূপক মারা যায়নি।কারন ও তো তোমাদের দলেই।মামা নাকি ওকে কথা দিয়েছিলো আমাকে ওর হাতে তুলে দিবে।”

এবার স্নেহা সৈকতের দিকে আর সৈকত স্নেহার দিকে তাকালো।আর সৈকত বলে উঠলো-
—”তুমি সেদিন আমার চিরকুট পেয়েছিলে?যেখানে লেখা ছিলো ‘তোমার জঙ্গলে যাওয়ার সঙ্গী থেকে দূরে থাকতে?”

—”হুম পেয়েছিলাম তো।ওটা আপনি লিখেছিলেন?”

—”আমিই লিখেছিলাম।ওখানে কি কোথাও লেখা ছিলো রূপকের থেকে দূরে থাকতে?”

—”মানেহ!! কি বলছেন এসব?আমি তো জঙ্গলে রূপককে নিয়েই গিয়েছিলাম।”
স্নেহা স্বর্ণলতা কে বলে উঠলো-
—”শান্ত হও স্বর্ণ।তোমাকে এখন যা বলবো তা শুনে তুমি হয়তো নিজকে সামলাতে পারবে না।শক্ত করো নিজেকে।আর প্রস্তুত হও ভয়ংকর আরেক সত্যি শোনার জন্য।”

চলবে………….
Sharmin Sumi

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here