#স্বর্ণলতা
পর্বঃ১২
___________
মেহুল দরজা খুলে রূপককে দেখে চমকে উঠলো।
–“ভাইজান!আপনি রূপক ভাইজান তাই না?
স্বর্ণ আপামনির লগে আপনার ছবি দেখছি।মাশাল্লাহ কি সুন্দর লাগছে যে আপনাগোর।আর স্বর্ণআপা তো সাক্ষাৎ পরী।”
মুখে হাসির রেখা টেনে রূপক বললো-
–“তাই?তোর স্বর্ণ আপা সাক্ষাৎ পরী?”
–“হ ভাইজান।আহেন আহেন ভেতরে আহেন।”
রূপককে দেখে সবাই বেশ খুশি।এতোদিন পর তারা দেখছে।
সবার হৈ চৈ এ স্বর্ণলতা খোড়াতে খোড়াতে ড্রয়ই রুমে এলো।
রূপককে দেখেই ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো।সে কি সত্যি রূপককে দেখছে! মনে হচ্ছে কোন এক দিকহারা পথিক পথের দিশা পেয়েছে।প্রানে জান এসেছে।আজ দুপুরেই তো তার সাথে কথা হলো।সে এত দ্রুত চলে আসলো!তখন ই তো বলেছিলো যে তার আসতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে।তাকে সারপ্রাইজড দেওয়ার জন্য এই কান্ড করেছে সে!
সে কি করবে এখন?তাকে কি জড়িয়ে ধরা উচিত?
সবার সামনে লজ্বার মাথা খেয়ে সত্যি সত্যি রূপকের বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।
হঠাৎ ঝাপিয়ে পড়ায় রূপক বুঝতে পারে নি কে ঝাপিয়ে পড়লো।
বুক থেকে মাথা তুলে সে দেখলো-
একটা সুন্দর মুখ।চোখের পানিতে কাজল লেপ্টে গেছে।ঠোঁট কাপছে।অশ্রুসিক্ত দুটো নয়ন।কাপা কাপা ঠোঁটে বলছে
—“এতোদিন পর আমাকে মনে পড়লো?”
এতো সুন্দর মুখের রিনিঝিনি কণ্ঠ স্বর।অভিমানী কন্ঠস্বরে কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।এ অভিযোগের বিরুদ্ধে তার প্রতিরক্ষার কোন সুযোগ নেই।
সে চাইছে বারবার এমন অভিযোগ আসুক।তার মুখের কথা আটকে গেছে।
স্বর্নলতার রূপে মোহিত সে।
এ রূপের,এ সৌন্দর্যের ব্যাখা দেবার ভাষা নেই তার।
জাফর ভারী গলায় বললো-
—“আরে স্বর্ণ যে!এমনে কেউ পড়ে নাকি জামাইয়ের ওপর?গুরুজন দেখো না।লাজ সরমের মাথা খাইছো নাকি?”
রূপকের মা কিছু বলতে যাবে তখনই তাকে থামিয়ে দিয়ে মামা বললো
—“হ হ বুবু চুপ থাকো।আর কিছু কওন লাগবো না।রূপক আবার নারাজ হইবো”নারাজ হইয়ো না ভাগনে।তোমার স্বর্ণলতা রে আমরা স্বর্ণ কমু।তুমি যে নামে ডাকতা”
রূপক স্মিত হেসে বললো-
—“স্বর্ণ মন খারাপ করোনা। আমি এসে গিয়েছি।”
স্বর্ণলতা বুক থেকে মাথা তুলে রূপককে একবার পরখ করে নিলো।তার বুকে আগের মতো শীতলতা সে খুঁজে পাচ্ছেনা।বহুদিন তাকে ছাড়া ছিলো।তার স্পর্শ কি সে একদম ভুলে গেছে?রূপকের কন্ঠস্বর ও তার অপরিচিত মনে হচ্ছে।স্বর্ণলতা ভেতরে ভেতরে ভীষণ আহত হলো।মাত্র ৫ টা মাস দূরে থাকায় রূপকের স্পর্শ,কন্ঠ,রূপকের বুকে শীতল ছায়া কিভাবে সে ভুলে যেতে পারে!
তার তো রূপককে সারাজীবন মনে রাখার কথা ছিলো।নিজেই নিজেকে দোষারোপ করতে করতে নিজমনে বলতে লাগলো-
‘আমি যেটা দেখছি,যেটা উপলব্ধি করছি সেটা তো অন্য কেউ করছে না।তবে আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি?রূপকের চেনা স্পর্শ আমার কাছে অচেনা লাগছে! ক’দিন পর কি আমি সবাইকেই ভুলে যাবো?আমার কি কোনো কঠিন রোগ হলো?
নাকি রূপক দূরে গিয়ে বদলে গেলো!এই মানুষটার বদলে যাওয়াতো আমার সহ্যের বাইরে।
মানুষ দূরে গেলো কতকিছু বদলে যায়!আমার আর রূপকের ক্ষেত্রেও তাই হলো?আমাদের ভালোবাসা আর ৫/১০ টা ভালোবাসার মতোই হয়ে গেলো?’
প্রচন্ড রকম মন খারাপ নিয়ে,কারও সাথে টু শব্দটিও না করে
স্বর্নলতা খোড়াতে খোড়াতে রুমে চলে গেলো।
রূপক জিজ্ঞেস করলো-
—“মামা ওর পায়ে কি হয়েছে?”
—“তেমন কিছু না।পায়ে কাটাঁ ফুটছে।বাইরে গেছিলো চেকআপের জন্য।তখন অসাবধানে লাইগা গেছে।আর তর বউ তো কথা শোনেনা।যেনে মন চায় হেনে একলা যায়।ওর দেহাশোনার লিগা একটা মাইয়াও নিয়া আইছি।”
মেহুলকে হাত দিয়ে ইশারা করে রূপক বললো-
—“এই যে এই মেয়েটা?
যাক ভালোই করেছো।এই অবস্থায় একজনকে ওর পাশে খুব দরকার ছিলো।
খানিকক্ষন থাকার পর রূপক উঠতে উঠতে বললো-
—-“মামা তোমরা বসে গল্প করো।আমি একটু ঘরে যাই।”
মামা ব্যাঙ্গ করে বলে উঠলো
—“যাও যাও বউয়ের রাগ ভাঙাইয়া আহো”
রূপকের মা বিরক্তি ভাব নিয়ে বলবো-
—“আহ্ জাফর চুপ করনা।ছেলেটা বহুদূর থেকে আসছে।গিয়ে একটু রেস্ট নিক”।
রূপক ঘরে চলে আসলো।স্বর্ণলতা ওপাশ ঘুরে শুয়ে আছে।চোখের কার্ণিশে টলমলে পানি।চোখের পানিতে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেছে।রূপক ঘরে ঢুকে কোন কথা না বলে সরাসরি গোসলে চলে গেলো।স্বর্ণলতা ওভাবেই শুয়ে থাকলো।
গোসল শেষ করে রূপক মাথা মুছতে মুছতে স্বর্ণলতা কে বললো
—“ম্যাডাম মনের মেঘ কাটলে আগের মতোন আবার ঝাপিয়ে পড়বেন?আপনার স্পর্শ পাওয়ার জন্য ভেতর থেকে ঝড় উঠছে।আর পারছিনা।
স্বর্ণলতা কোন কথা না বলে আগের মতোন তার বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।বুকে মাথা রেখে হু হু করে কেঁদে উঠলো।এ যেন অপ্রাপ্তির পর তৃপ্তিময় এক মূহুর্ত।হাজার তারকা উঠুক
আজ আকাশের পুরোটা জুড়ে।বড় করে উঠুক এক রূপালী চাঁদ।আজকে দুজন নতুন করে আবার জোসনারাত পালন করবে।
মেহুল তাড়াহুড়ো করে ঘরে প্রবেশ করে আবার পেছনে ঘুরে গেলো।
—“সরি আপা ভুল টাইমে চইলা আইছি।নাস্তা রেডি।ভাইজান অনেক দূর থিকা আইছে ক্ষিধা লাগছে হের।”
—“যাও মেহুল।তোমার ভাইজান কে নিয়ে আমি আসছি”
______________=_=____________
সবাই মিলে নাস্তা সারলো।কানাডায় রূপক কি কি করেছে সবকিছু নিয়ে মোটামুটি গল্পের আসর বসে গেলো।পরিবারের প্রত্যেকটা মানুষের মুখে হাসি ঝলমল করছে।এই পরিবারের ভেতরে কোন রহস্য কি করে থাকতে পারে?সব মানুষ গুলোর মুখে কি নিষ্পাপ সরল হাসি।হাসলে প্রত্যেকটা মানুষকে বোধহয় নিষ্পাপ লাগে।
রূপকের মা স্বর্ণলতাকে বললো-
—“স্বর্ণ তুমি কি ঘরে গিয়ে একটু বিশ্রাম করবে?তোমার জন্য ভালো হবে।এমনি প্রেগনেন্ট।৫ মাস পার হয়ে যাচ্ছে।রুমে গিয়ে একটু রেস্ট করো মা।”
রূপক স্বর্ণলতাকে রুমে দিয়ে আসলো।
রূপক চলে যাবে অমনি স্বর্ণলতা বললো-
—“আমার সাথে বসে একটু গল্প করবেন?এতোদিন প্রহর গুনেছি শুধু এই মূহুর্ত গুলোর জন্য”।
রূপক মৃদু হাসলো।এরপর বিছানার ওপর বসে স্বর্ণলতার দুহাত স্পর্শ করে বললো-
—“তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবোনা স্বর্ন”।
রূপক বাহুডোরে জড়িয়ে নিলো স্বর্ণলতা কে।
রূপকের মায়ের প্রবেশ-
—“রূপক একটু শুনে যা তো বাবা।তোর সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।”
—“ঠিক আছে যাচ্ছি মা।
তুমি থাকো আমি শুনে আসছি মা কি বলতে চাচ্ছে।
—“তাড়াতাড়ি আসবেন।আমারও আপনার সাথে অনেক কথা আছে”।
রূপকের মায়ের বাঁকা দৃষ্টি স্বর্ণলতার চোখ এড়ালো না।তবুও সে খুশি।আজকে রূপককে সে কাছে পেয়েছে।আর সে একা না।সে মোটেও ভীত হবেনা।
রূপকের মা রূপককে তার ঘরে না এনে স্বর্ণলতার সামনেই বললো-
—“আমি অত লুকোচুরি পছন্দ করিনা বাপু।তোর বউ পরে ভাববে আমি তোকে কানপড়া দিচ্ছি।
শোন বাবা বউ মার ৫ মাস শেষ হতে চললো।তুই অনেকদিন পর দেশে এসেছিস।যৌবন কাল আমরাও পাড় করে এসেছি বুঝি মনটা কেমন আনচান করে।বউ মার বাচ্চা পেটে।এখন কাছে ধারে ঘেষা যাবেনা।আজকে থেকে তুই তোর মামার সাথে অন্য রুমে ঘুমাবি।যতদিন বাসায় থাকবি ততদিন এই নিয়ম।দিনের বেলা যত গল্প করো না ক্যান রাতে আলাদা থাকতে হবে।”
—“মা! এটা কোন কথা হলো?আমি কি বোকা নাকি?নাকি আমি অশিক্ষিত কোনটা?কি বলছো এসব?এতোদিন বাইরে ছিলাম।আর এখন দেশে এসে এসব শুনছি?”
—“দেখ বাবা আমার কোন স্বার্থ নেই।বউ মার ভালোর জন্য বলছি”।
—তোমার ভালো দেখতে হবেনা।আমি অন্যরুমে শুতে পারবো না”।
—“তোর অন্যরুমে যেতেই হবে”।
—“যদি আমি না যাই?”
—“আমার মরা মুখ দেখবি”
স্বর্ণলতা মুখে হাত দিয়ে বসে পড়লো।কান্না গলায় এসেও যেনো আটকে গেলো।ধরা গলায় বললো-
—“আম্মা এতো ছোট একটা জিনিসে এতো বড় কথা বলে ফেললেন?আপনার ছেলে থাকবে না এ ঘরে।ও চাইলেও ওকে আমি শুতে দেবো না।আপনি নিশ্চিন্তে ঘরে যান।”
জোরালো কন্ঠে রূপক বললো
—“স্বর্ণলতা আমি কোথাও যাবোনা।”
—“আপনাকে যেতে হবে।চলে যান।আপনি খুব ক্লান্ত।রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ুন”।
কথাগুলো বলার সময় স্বর্ণলতার চোখ দুটো টলমল করে উঠলো।অভিমানী কন্ঠে রূপকের মা কে বললো-
—“ভয় পাওয়ার কারন নেই আম্মা।ও যতদিন থাকবে আমার সাথে ঘুমাবে না।আপনাকে কথা দিলাম আমি”।
এক প্রকার জোর করেই রূপককে ঘর থেকে বের করে দিলো স্বর্ণলতা।
বাইরে রূপক এবং স্বর্ণলতার মায়ের কথা কাটাকাটি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে সে।তবুও সে দরজা খুললো না।ভালোবাসা তাকে যতটা মোলায়েম করেছে।রহস্যভেদ করার নেশা তাকে ততটা নির্মম করে তুলেছে।সব রহস্য সে উদঘাটন করবে।
মনে মনে স্বর্ণলতা বলতে লাগলো-
—“রূপককে দূরে সরিয়ে তারা আমাকে দূর্বল করে দিতে চাচ্ছে।কিন্তু তারা তাদের দূর্বলতায় আমাকে তাদের আসল রূপ দেখিয়ে দিয়েছে।
আমাকে পুরোপুরি নিশ্চিত করে দিয়েছে।
তাদের সব রহস্য একদিন ঠিকি উন্মোচিত হবে”।
স্বর্ণলতার সারাটা রাত নির্ঘুমে কাটবে।ভালোবাসার মানুষ এতো কাছে তবুও সে ছুঁতে পারছেনা তাকে।তার সাথে কতশত গল্প করার ছিলো।কিছুই পূর্ন হলো না।
মেহুল আগের মতোই বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।ইশ্ মেয়েটার এতো ঘুম কেনো!
সদর দরজা খোলার শব্দে স্বর্ণলতা শোয়া থেকে উঠে বসলো-
স্বর্ণলতা অতি সাবধানে তার ঘরের দরজা খুলে বাইরে বের হলো।
নীরব কার সাথে যেনো কথা বলছে!কে সে?মুখটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছেনা।এতো রাতে কোথাও কি যাবে?হাতে ওটা কি?
আগের মতো চটের বস্তা!!এবার তাকে হাতেনাতে ধরবে।
সে ও কোমড়ে শাড়ি গুঁজে একটা শাল ওপরে জড়িয়ে নিলো।
তারা সিড়ি বেয়ে বাইরে এলো।স্বর্ণলতা পিছু পিছু হাটা শুরু করলো।তারা বাইরে চলে আসলো।এতো শুনশান নীরবতা বাইরে।কয়টা বাজে কে জানে!ঘড়ি টা দেখে আসা হলোনা।একবার ভাবলো রূপককে ডেকে তুলবে।কিন্তু মামার জন্য সে সিদ্ধান্তের সেখানেই সমাপ্তি ঘটিয়ে নিজেই বাইরে বেড়িয়ে গেলো।
রাস্তায় কুকুরগুলো জোরে জোরে শব্দ করে ডাকছে।কি ভয়ানক এই রাত!
বুকের বা পাশ টাতে ব্যাথা অনুভব করছে স্বর্ণলতা।প্রচন্ড ভয়ে শরীর শীতল হয়ে যাচ্ছে।এ ভয়টা ভবিষ্যতের। সামনে কিসের সম্মুখীন হবে সে?টানটান উত্তেজনা মনের ভেতর উঁকি মারছে।
ল্যাম্পপোস্টের আলোতে দ্বিতীয় ব্যক্তিটির চেহারা দেখতে পেলো স্বর্ণলতা।
একি! এতো মামা!!
মামা আর নীরব এতো রাতে যাচ্ছে কোথায়?
তাদের পিছু নিতে নিতে সেই বড় মাঠের কাছে পৌঁছে গেলো স্বর্ণলতা।সামনে দুজন মানুষ মনের আনন্দে এগিয়ে যাচ্ছে।
একদম জঙ্গলের সামনে এসে দুজন গায়েব!
তারা খুব দ্রুত হাটছিলো।স্বর্ণলতা প্রেগনেন্ট থাকার কারনে এতো জোরে পা মেলাতে পারছিলো না।তবুও চেষ্টা করছিলো। কিন্তু সামান্য একটা মোড় ঘুরতেই গায়েব কি করে হয়ে গেলো!আচ্ছা প্রতিবার এখানেই এসে তারা গায়েব কি করে হয়ে যায়?
তার এবার অলৌকিক চিন্তা মাথায় আসতে লাগলো।সে শুনেছিলো প্রেগনেন্ট মহিলাদের ওপর খারাপ কিছুর কুনজর পড়ে।তারা বাচ্চা নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লাগে।তাকে যে দেখতো সেই বলতো এতো সুন্দর মেয়ের বাচ্চা হবে সাবধানে থাকতে।
কিন্তু কারও কথাই সে পাত্তা দিতো না।এবার সে ঘামতে শুরু করলো।এ পাশ ও পাশ ঘুরে কারও পদ-চিহ্ন ঠাওর করতে পারলো না।তার হাত-পা অবশ হয়ে আসছে।মনে হচ্ছে সে মারা যাবে।তার দৌড়ানোর শক্তি টুকুও নেই।
তার বাচ্চার কথা চিন্তা করে আয়াতুল কুরসি পড়ে এক হাত পেটে রেখে দৌড়াতে শুরু করলো।তার খুব কষ্ট হচ্ছে দৌড়াতে। কিন্তু সে পেছনে ফিরে তাকাতে চাচ্ছেনা।
সে খুব করে প্রার্থনা করতে লাগলো যাতে মামা আর নীরবকে বাসায় না দেখতে পায়।
তবে তার ধারনা সত্য প্রমান হবে।আর যদি তারা ঘরে থাকে তাহলে ভেবে নিবে তার ওপর অশুভ কোন ছায়া পড়েছে।
অনেক কষ্ট হলেও সে বাসা পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলো।পুরো শরীর ঘামের নোনা জলে ভিজে গেছে।হাঁপাতে হাঁপাতে সিড়ি বেয়ে ফ্ল্যাটের সামনে গিয়ে দেখে রূপক দাড়িয়ে।
রূপককে দেখে স্বর্ণলতা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।আর বুকে ঝাপিয়ে পড়ে।প্রচন্ড হাঁপাতে থাকে আর জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে।
স্বর্ণলতাকে বুক থেকে তুলে রূপক প্রশ্ন করে-
—“স্বর্ণলতা এতো রাতে বাইরে গিয়েছিলে কেনো?”
—“মামা আর নীরব বাইরে গিয়েছিলো।ওদের পিছন পিছন আমিও গিয়েছিলাম”।
ভ্রঁ কুচকে স্বর্নলতার দিকে তাকালো রূপক।দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো রূপকের ঘরে।
—“মামা আমার ঘরে স্বর্নলতা।তিনি বেঘোরে ঘুমাচ্ছেন।আর আমি জেগে ছিলাম একটুও ঘুমাই নি।মামা উঠলে আমি বুঝতে পারতাম।এখন কি সত্যি টা আমাকে বলবে?”
চলবে…….
?️Sharmin Sumi