#সন্ধি_হৃদয়ে_হৃদয়ে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব___২৭
চক্ষু গহ্বর থেকে জল গড়িয়ে যাচ্ছে অবলীলায়। অকস্মাৎ প্রশ্নে শ্রেয়ার কন্ঠনালিতে রোদনের শব্দ আটকে গেলেও ,সে বিস্মিত। তূর্য এমন প্রশ্ন করবে ভাবে নি ও। বিধস্ত,রক্তিম মুখ তুলে টলমলে,লালচে নয়ন যুগল নিক্ষেপ করলো বিছানায় বসা ভাবলেশহীন তূর্যর দিক। কপালে কতশত ভাঁজ ফেলে চেয়ে আছে ওর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টে। গলা ভেজা ভেজা শ্রেয়ার,কম্পন বিশদ,
‘ রহিমা খালার কাছ থেকে জানতে পারি আপনি এক বছর ধরে পাগ’ল। এটা শোনার পর বার বার বাবা মায়ের পরিণতির কথা মনে পড়ছিল। আমি প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়। তখন রুমে কেউ ছিল না। আমার জ্ঞান ফেরার পর আয়ুশ ভাইয়া ও বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের ডাকতে বেরিয়ে যান তিনি। এ সুযোগে আমি দুর্বল দেহে সিঁড়িঘর পর্যন্ত আসি। উদ্দেশ্য যে করে হোক এ বাড়ির চৌকাঠ পেরিয়ে এতিমখানায় যেতে হবে। মাদারকে জিজ্ঞেস করতে হবে কেন জেনে শুনে আমাকে আবার আমার অতীত ফিরিয়ে দিল?কেন আমার জীবনের সবথেকে বড় ভীতির দিকেই আমাকে ঠেলে দিল?সিঁড়ির কাছ পর্যন্ত যেতেই দেখি নিচে তেমন কেউ নেই। আমি বিয়ের রাতেই দেখেছিলাম কোনো মেহমান নেই কারণ আমাদের বিয়েটা সম্পূর্ণ ঘরোয়া ভাবে হয়েছিল। একজন সার্ভেন্ট ছিল তিনি চলে যেতেই সাথে সাথেই বেরিয়ে যায় আমি। গেইটে গিয়ে দেখি দারোয়ান উপস্থিত। আমাকেই দেখেই ভ্রুঁ কুঁচকে নানান প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে শুরু করলেন। কোথায় যাবো,এই বেশে যাচ্ছি কেন,অসুস্থ দেখাচ্ছে হেনতেন। আমি ওনার কথা পরোয়া না করেই সেই এলোমেলো অবস্থায় বেরিয়ে পড়ি। তখন হয়ত ওনি ভিতরে গিয়ে সবাইকে সবটা জানায়। একটা অটো ধরে কোনোমতে আসি এতিমখানায়। আমার কাছে ভাড়া অব্দি ছিল না,এতিমখানার দারোয়ান কাকা এসে মিটালেন। আমাকে এমতাবস্থায় দেখে চমকে গেলেন তিনিও। শরীর টা আর চলছিল না একদম, সেই অবস্থায় গেইটের পাশে মাটিতে বসে পড়ি। উনি মাদারকে ডেকে এনে আরো কয়েকজন মিলে আমাকে ভিতরে নিয়ে যান। আমাকে দেখে সবচেয়ে বেশি অবাক হয় মাদার। একটা কালো আঁধার নেমে এসেছিল ওনার মুখে। কাঁপা কন্ঠে বললেন,” বিয়ের পরের সকালে এভাবে চলে এলাম কেন?কি হয়েছে?”
ফুপিয়ে উঠলাম মাদারের প্রশ্নগুলোতে। দুর্বল কন্ঠে চিল্লিয়ে বললাম,” কি করে আমাকে নর’কে ঠেলে দিলেন মাদার?আমার অতীত জেনেও পাগলের সঙ্গে বিয়ে দিলেন আমাকে। এতিম বলে অবিচার করলেন। ” এসব শুনে ঠিক কতক্ষণ তব্দা খেয়েছিলেন মাদার তার হিসেব নেই। তবে ধপ করে দেহের ভার ছেড়ে দিয়েছিলেন এতিমখানার ছোট্ট বিছানায়। শক্ত,কঠোর মানুষ টার চোখ দিয়ে কি সুন্দর দু’ফোটা জল গড়িয়ে গিয়েছিল,যা আমরা কখনও দেখি নি। হাত বাড়িয়ে আমাকে বুকে জড়িয়ে বলেছিলেন,আমি এসব জানতাম না রে মা। আমাকে ক্ষমা করে দে। তাদের এতিমখানা, সবসময় থেকে উদার মানবিকতার মানুষ হিসেবে চিনি তাদের। কখনও খারাপ কিছু দেখি নি। আর ছেলেটাও সুস্থ ছিল,তার মধ্যে অসুস্থ হয়ে গেছে এসব কিছুই কেউ শুনে নি।
আমি মাদারকে বলি কি করবো এখন?মাদার আমাকে বললেন,যদি ভয় মোকাবেলা করার সাহস থাকে তাহলে ফিরে যেতে। আর যদি না থাকে,নিজের জীবন টা অন্য ভাবে গুছাতে চাই তবে এ শহর ছেড়ে অন্য শহরে পাড়ি জমাতে। কারণ বয়স অনুযায়ী এতিমখানায় থাকার অধিকারও আমার নেই। মাদার চাইলেও নিয়ম নীতির বাহিরে গিয়ে রাখতে পারত না। সিদ্ধান্ত টা আমার উপর ছেড়ে দেন উনি। তখন আমার মধ্যে শুধু ভয় কাজ করছিল তাই কোনোকিছু না ভেবে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। মাদার তার পরিচিত একজনের মাধ্যমে সেখানকার এক কোচিং সেন্টারে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু থাকার জায়গার, পড়াশোনার এসব পারে না। মানুষ টার সামর্থ্যই বা কতটুকু ছিল। সারাজীবন কাটিয়েছে এতিমখানায় বাচ্চাদের রক্ষণাবেক্ষণে। আমার জন্য নিজের চাকরির কথা চিন্তা না করে এতটুকু করেছিলেন তাতেই মনে হচ্ছিল আমার না পাওয়ার ভিড়ে কিছু মুহুর্তের জন্য হলেও একজন মা পেয়েছি যে প্রকৃত অর্থেই আমার ভালো চেয়েছে। ‘
তূর্য বিছানা ছেড়ে মোবাইল হাতে নিয়ে পড়ার টেবিলের সামনে থেকে চেয়ার টা টেনে শ্রেয়ার মুখোমুখি রাখল। বসল তাতে। মাঝে দূরত্ব হিসেবে রইল ছোট্ট টি টেবিল খানা। শ্রেয়া কথা থামিয়ে দিতেই শীতল কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
‘ ব্যাস এতটুকুই?’
এক মুঠো চমকে ভরে উঠল শ্রেয়ার মন। এত শীতল কন্ঠ!মুহুর্তেই বক্ষস্থলে সমুদ্রের উতালপাতাল ঢেউ গর্জে উঠলো যেন। মাথা নাড়ায় ও। ধরা কন্ঠে প্রতুত্তর করে,
‘ না। আরো কথা বাকি আছে। ‘
তূর্য দেয়ালে টানানো ঘড়িটার দিকে চেয়ে বলে,
‘ চার মিনিটের স্থলে চৌদ্দ মিনিট নষ্ট করলে। আর কতক্ষণ? কেঁদেই পাঁচ মিনিট পার করলে। এত লড়াই করে কি লাভ হলো?সেই দুর্বল শ্রেয়সীই রয়ে গেলে। অতীতের কথা মনে করে না কেঁদে সেগুলোকে নিজের শক্তি বানালেই পারতে। নারী মানেই কি দুর্বল? না। আমি কখনও সেটা ভাবি না। তাহলে তুমি কেন ভাবো?চোখের জল মুছে জলদি বলবে নাকি উঠে যাবো?ভাবলাম এক রাতে কিছুটা হলেও শক্ত হওয়ার শিক্ষা দিতে পারলাম, তাই তো গড়গড় করে সব বলছো। কিন্তু এখন দেখা গেল কাঁদতে কাঁদতে বেহুঁশ হয়ে যাবে। বেঁহুশ হলে আমি কোলে নিব না। এখানেই ফেলে রাখবো। ‘
শ্রেয়া কিভাবে বাকি কথাগুলো বলবে বুঝতে পারছে না। হয়ত এগুলো শোনার পর তূর্যর মনে ওর জন্য ঘৃ*ণা বেড়ে যাবে। ছিটকে দূরে সরিয়ে দিবে ওকে। তবুও লুকিয়ে রাখা সমীচীন হবে না।
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো,
‘ সেদিন পালিয়ে যাবার পর আপনার মা গিয়েছিলেন এতিমখানায় আমাকে ফিরিয়ে আনতে কিন্তু তাদের দেখে আমি পিছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যায়। মনে এটাই কাজ করছিল,তারা আমাকে ধরে বেঁধে নিয়ে যাবে। আপনি আমাকে মে’রে ফেলবেন। যে করেই হোক বাঁচতে হবে আমার। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পর কি হয়েছিল আমি আর জানি না। ‘
মাথা নত করে অপরা*ধীর ন্যায় বসে আছে শ্রেয়া। কথাটা বলতে গিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস আটকে যাওয়ার উপক্রম। এখনও নিঃশ্বাস ফেলতে কষ্ট হচ্ছে। তূর্যর দিকে মুখ তুলে তাকাতে পারছে না। অপর পাশ থেকেও কোনোরূপ প্রতিক্রিয়া আসছে না দেখে অভ্যন্তরে ভয়ানক অনুভূতিরা খেলা করছে। তূর্য কি ওকে জীবন থেকে সরিয়ে দিবে?শুনেছিল অহমিকার স্বার্থপরতার জন্য তাকে ঘৃ*ণা করে। কিন্তু একটা সময় সেই মেয়েটাকে বিয়ে করার জন্য পরিবারকে রাজি করিয়েছে,ভার্সিটি লাইফ থেকেই শুরু হয়েছিল দু’জনার প্রেমকথন। তাকে যদি মনেপ্রাণে শুধু একটা কারণবশত ঘৃ*ণা করতে পারে তাহলে ওকে জীবন থেকে ছিটকে ফেলে দেওয়ার তো কতগুলো কারণ রয়েছে।
তূর্য টি টেবিলে মোবাইলটা রেখে গম্ভীর কন্ঠে বললো,
‘ কথা এখনও অসমাপ্ত রয়ে গেল শ্রেয়সী। তোমার ফিরে আসার গল্পটা বলবে না?আমি এত দরদী মানুষ দেখতে পারি না। এতই যখন পরিবারের মর্ম বুঝো, স্বামীর গুরুত্ব বুঝো না?স্বামীর কাছ থেকে কিছু লুকাতে নেই সেটা জানো না?যার সাথে প্রতি পদে পা রাখতে হবে তোমার,মৃ*ত্যু অবধি একসঙ্গে নিঃশ্বাস ফেলতে হবে তার কাছে নিজেকে খোলামেলা করে, নিজের মনটাকে উন্মুক্ত করে মেলে ধরা উচিত না?’
শ্রেয়া স্তব্ধ, কিংকর্তব্য বিমূঢ়! দৃষ্টি অবিচল। তূর্য কেমন করে জানলো?ওর মনের প্রশ্ন টার উত্তর সরাসরিই দিয়ে দিল তূর্য। কন্ঠে কঠোরতা এঁটে বললো,
‘ আমি সুস্থ হবার পর অহমিকা কে নিজের কাছে পাই। কিন্তু তখন সে আমার ঘৃ*ণার তালিকায়। কিন্তু মা উঠে পড়ে লেগেছে ওকে বাড়ির বউ বানানোর জন্য। চট্টগ্রাম যাবার আগের দিন রহিমা খালা এসে আমাকে বিয়ের সত্য জানায়। ওনার কাছে মনে হতো ওনার জন্যই তুমি চলে গিয়েছো। ভীষণ অনুশোচনায় ভোগেন। আমি প্রথমে অবাক হই বিবাহিত জেনে। আসলে আমার পরিবার আমার মানসিক অবস্থার সুযোগে একটা অচেনা,অজানা মেয়ের সাথে বেঁধে দিল এটা ঠিক মানতে পারছিলাম না। সেই সাথে তীব্র রাগ হচ্ছিল কি করে নিজের স্বামীকে কেউ ছেড়ে যেতে পারে!পাগল হলেই ছেড়ে চলে যাবে!মানুষ ঠকা*লেও কেউ স্বামীর ভাগ ছেড়ে চলে যেতে পারে!তোমাকে ঠিক অহমিকার মতো মনে হচ্ছিল সেই মুহুর্তে। অজান্তেই অনেক বেশি ঘৃ*ণা জন্ম হয় তোমার জন্য। পরে যখন জানতে পারি তুমিই আমার বউ তখুনি তোমার বর্তমান আচরণে মনে হলো মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ থাকে। একটাবার ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখি। তোমার অতীত,বর্তমান সম্পর্কে সবটা জানলাম। আর প্রিয়ু আয়ুশের বিয়ের আগের দিন জানলাম তোমার ফিরে আসার গল্পটা। দারোয়ান কাকা বলতে চায় নি,তবে আমার কাছে লুকিয়ে চুরিয়ে পারবেন না তিনি সেটা খুব ভালো জানতেন। ফিরে এলে ঠিকি কিন্তু লড়াই করে টিকতে পারলে না। আমি আগেও বলেছি তুমি আমার ঘৃ*ণার তালিকায় যোগ হতে পারো নি। আমার অর্ধাঙ্গিনী হতে পেরেছো। চোখ বুজার,শেষ নিঃশ্বাস ফেলার আগ পর্যন্ত তোমাকে ছাড়ছি না আমি। ভেবো না আবার ভালোবাসি। তুমি যেদিন গাধী থেকে ব্রিলিয়ান্ট হবে সেদিন তোমার কিছুই ভাবতে হবে না,দেখবে সবটুকু পানির মতোন পরিষ্কার। ‘
‘ আপনি আম্মাকে কিছু বলবেন না তো?’— প্রশ্ন টা করে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকালো শ্রেয়া। তূর্য নিরুত্তর থেকে ওকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। মেসেজের টুংটাং শব্দে টি টেবিলের উপর অবহেলিত হয়ে পড়ে থাকা মোবাইল টার দিকে দৃষ্টি তাক করলো শ্রেয়া। নিমেষে দেহে,রন্ধ্রে রন্ধ্রে তরঙ্গ খেলে গেল। ওর প্রথম বার, তিন বছর পূর্বের বধূ বেশে রূপের একটা ছবি জ্বলজ্বল করছে তূর্যর লক স্ক্রিনে। দোপাট্টা টা লম্বা করে টানা। কয়েক গাছি চুল বেরিয়ে কপোল ছুঁয়ে আছে। ঠোঁট রাঙানো লাল বর্ণে। চেহারা জুড়ে লাজুকলতার আবরণ। কি মোহনীয় ছিল সেই সময়টা! মন জুড়ে ছিল জীবনসঙ্গী কে দেখার ভাবনা, হাজারো জন্ম নেওয়া অনুভূতি। কিন্তু এ ছবিটা পেল কোথায় মানুষ টা?ওর যতটুকু মনে পড়ে এই বাড়িতে আসার পর পর ছবিটা আয়ুশী তুলেছে। তাহলে কি আয়ুশীই দিয়েছে? হতে পারে,মেয়েটা একটু চঞ্চল ধরনের। তবে ছবিটা তূর্যর লক স্ক্রিনেই কেন?এখন প্রশ্ন করলে এক কথা থেকে আরেক কথা টানবে, তাই চুপ থাকাই শ্রেয় ঠেকল ওর নিকট। তূর্যকে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে ঝটপট দৃষ্টি সরিয়ে অন্যত্র নিবদ্ধ করলো। তবে আঁড়চোখে বিঁধে তার হাতে একটা মগ,তাতে বোধহয় পানি ও অন্য হাতে একটা নরম তোয়ালে।
তূর্য মগ ও তোয়ালে নিয়ে ওর সামনে বসে আদেশের সুরে বলে,
‘ মোবাইলটা সোফায় রাখো। ‘
কথামতোন রাখল শ্রেয়া। ঠোঁট দুটো একটুখানি প্রসারিত করে প্রশ্ন করলো,
‘ পানি কেন স্যার?’
সঙ্গে সঙ্গেই জবাব এলো,’ তোমার চেহারা দেখে ভয় পাচ্ছি আমি। কাজল মেখে শাঁকচুন্নি লাগছে পুরো। হার্ট অ্যাটাক হবার আগেই নিজেকে বাঁচাতে পানি নিয়ে আসলাম মুছে দিতে৷’
শ্রেয়া দুই অধর আলগা হয়ে এলো। উঠে যেতে নিলে হাতে টান অনুভব করে। চেয়ে দেখে তূর্য চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে। ভয়ে ভয়ে বসে পড়লো পুনরায়। সে তো আয়না দেখবার জন্য উঠতে চাইছিল। তূর্য তোয়ালে ভিজিয়ে মুছে দিল ওর সারা মুখশ্রী অতি যত্নে। শুধু স্বামীর হক পালন করে বলেই এত যত্ন,আর যদি ভালোবাসত?শ্রেয়া এ মুহুর্তে একটা ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নিল। যে করেই তূর্যর মনে নিজের জন্য ভালোবাসা জাগাবে,ভীতু হয়ে দূরে দূরে সরে থাকবে না। পাথরেও তো ফুল ফোটে,তূর্য তো মানুষ। ভালোবাসা হাসিল করেই দম নেবে ও। কিন্তু একটা কথা মনে পড়তেই বলে,
‘ বললেন না তো,আম্মাকে কিছু বলবেন না স্যার প্লিজ। ওনি কষ্ট পাবেন। ‘
‘ মহান উদারতার নানী আমি বলেছি বলব?বেশি কথা বলো তুমি। চুপ থাকো। ‘– ধমকে উঠলো তূর্য।
মুখ মুছে দিয়ে ফের বললো,’ বাহিরে যাও। ‘
শ্রেয়া তড়িঘড়ি করে বলে উঠলো, ‘ কেন স্যার?’
‘ নতুন বউ রুমে বেশিক্ষণ বসে থাকলে মানুষ কি ভাবে জানো না?এই তুমি অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ো?মাথার গিলু এত কম। ‘
তূর্য একটু ঝুঁকে এসে গাঢ় কন্ঠে আওড়ালো,’ মানুষ বলবে আমি তোমাকে বেশি বেশি আদর করছি। এতই আদর করছি যে রুম থেকে বের হতে পারছো না। সত্যিই কি তাই?’
শ্রেয়া চট করে সোফা ছেড়ে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়াল। মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে সাহস জুগিয়ে মিনমিন করে বলেই ফেলল,’ সত্যি হলেও পারত স্যার। ‘
তূর্য ভ্রুঁ কুঁচকে বললো,’ কি বললে?’
‘ কিছু না। ‘
উত্তর দেওয়া মাত্র শ্রেয়ার কর্ণে এলো,
‘ দুর্বল চিত্তের মেয়েদের আদর নেওয়ার শক্তি থাকে?আগে হরলিক্স,কমপ্লেন খেয়ে শক্তি জোগাও। ‘
#চলবে,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)