crazyness part_4

0
4783

crazyness
part_4
#sarika_Islam

সানাম নিরবে চোখের পানি ফেলছে,হঠাৎ কাধে কারো হাতের ছোয়া পায়,,সে তারাতারি চোখের পানি মুছে পিছে ফিরে,,সানিয়া দাঁড়িয়ে আছে,,,

_কিরে তুই ঘুমুসনি?
_বোন কান্না করছে আর ছোট বোন আরামসে ঘুমাবে তাকি হয়?
_ওলে আমাল বোনটা বড় হয়ে গেছে,,(গাল টেনে)আর ওয়েট ওয়েট কে বলেছে আমি কান্না করছি?আমি মটেও কান্না করছি না ওকেহ,(চোখের পানি মুছে)
_হুম ওকেহ,,তাহলে এখন বল কি কারনে আমার বোনটা কান্না করছে?

সানিয়ার কথা শুনে যেন সানামের আরও কান্না পেল,,সে ফুপিয়ে কাদছে,,সানিয়া সানামকে ধরে বিছানায় বসালো,,সানাম হাতে ফোন নিয়ে বলল,,

_দেখ সানিয়া রাতে ও আমাকে একবারও কল করলনা,(বলে কাদতে লাগলো)
_কে?(ভ্রু কুচকে)
_ইয়ামান,,(ফোনের দিকে তাকিয়ে আনমনেই বলে দিল)
_কিহহহহ!!(সানিয়া শকড হয়ে)

সানাম সানিয়ার দিকে তাকায়,,

-এ,,এ,তে শকড হওয়ার কি আছে?(হেচকির জন্য ঠিক ভাবে কথাও বলতে পারছে না)
_এই সানিয়া,,(বলেই সানিয়াকে হাল্কা ধাক্কা দিল)
_হুম হুম,,
_কি হলো তোর?
_তুই ইয়ামান ভাইয়ার ফোনের জন্য কান্না করছিস?লাইক সিরিয়াসলি?
_হুম (স্যাড হয়ে)
_কেন কেন?

সানাম কিছু বলতে যাবে তার আগেই সানিয়া বলে উঠে,,

_ওয়েট ওয়েট এনিহাউ তুই ভাইয়ার প্রেমে টেমে পরে গিয়েছিস নাতো?
_হুম তাতো অনেক আগেই তুই আজকে জানলি ওয়াওওওওও,,,(বিরক্ত নিয়ে)
_তাহলে তুই ভাইয়াকে ইগ্নোর করিস কেন?তাকে বিয়ে কেন করলি না?তার সামনে এমন ঢং করিস কেন?(সানামের সামনে দাঁড়িয়ে মাজায় দুই হাত গুজে)
_রিলেক্স মেরি বেহনা,,একসাথে এত্ত প্রশ্ন?(সানিয়ার হাত ধরে তাকে বসিয়ে)
_হুম সব বল,,
_কি বলবো?
_যা যা জিজ্ঞেস করলাম?
_প্রথম থেকেই তাকে ভালোবাসি কিন্তু মাঝখান দিয়ে তার ওভারলোড পাগলামো দেখে খুবি ভয় পাই তারপর এখন তার এত্ত ভালোবাসা দেখে আমিও আবার প্রেমে পরসি,,(সানিয়ার হাত ধরে)বইন বল এখন কি করুম?

সানিয়া কিছুটা ভাবার ঢং করে বলল,,

_ঘুমিয়ে যা,,(বলেই সানামের কাধে হাল্কা থাপ্পর দিল)

সানাম সানিয়ার এমন কথা শুনে বালিশ দিয়ে সানিয়াকে মারতে লাগলো,,

_কুত্তি বোন টেনশনে মরে যায় আর সে ঘুমুতে বলে বেয়াদপ কোথাকার,,,
_আরে আরে আস্তে,,(নিজেকে বাচাতে বাচাতে)

সানাম মারা বন্ধ করে দেয় আবার সে আপ্সেট হয়ে যায়,,তা দেখে সানিয়া বলে,,

_দেখ হয়ত ভাইয়ার অফিসে কোন কাজ পরেছে তাই তোকে কল দেয় নি দেখিস কাল ঠিকি দিবে,,এত্ত টেনশন নিস না,,
_হুম,,
_আমার খারুস বোন প্রেমে পরেছে ওয়াওওও সো ইন্টারেস্টিং,, (আস্তে)
_এই কি বললি তুই?
_কই কিছু নাতো ঘুমা এখন,,

বলেই ঘুমুয়ে গেল,আর সানাম ইয়ামানের ইয়াদে ডুবে আছে,,কখন যে সানামের চোখ লেগে যায় সেও ঘুমিয়ে যায়,,,

সকালে,,

সানাম তারাতারি ঘুম থেকে উঠে কলেজের জন্য রেডি হয়ে নিল,,মনমরার মতো খাবার টেবিলে বসে আছে নাস্তাও করছে না,,সানামের বাবা সানামকে জিগ্যেস করল,,

_কিরে সানাম কি হয়েছে তোর এমন মনমরা হয়ে বসে আছিস কেন?(খাবার খেতে খেতে)
_কই কিছু না,,(বলেই খেতে নিল)

সানামের বাবা নাস্তা কামপ্লিট করে অফিসের জন্য বের হলো,,সানাম এখনও আগের মতোই নাস্তার প্লেট সামনে নিয়ে খাবার নাড়াচাড়া করছে,,তা দেখে তার মা বলল,,

_কিরে মা কি হয়েছে তোর?(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)

মায়ের এমন নরম ভাসায় জিজ্ঞেস করায় সানাম কান্না করে দিল,,মাকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো,,

_আরে কি হয়েছে বল তো?
_মা মা আমি ইয়ামান ভাইকে বিয়ে করতে চাই আর তা ইন্টারের আগেই,,তুমি তুমি এক কাজ করো এখনি করিয়ে দাও,,(বলেই কাদতে লাগলো)

তার মা পুরুই শকড তার মেয়ে এইসব কি বলছে?কাল পর্যন্ত যে মেয়ে ইয়ামানকে সহ্য করতে পারতো না আজ সে তাকে বিয়ে করতে চাইছে?ভালোবাসাতে সত্যিই অনেক শক্তি থাকে শক্ত মনকেও মোমের মতো গলিয়ে দেয়,,,
এইসব ভেবেই সানামের মা মুচকি হাসলো,,মেয়ের সামনের চেয়ারে বসলো,,

_আমার মেয়ে তাহলে শেষে ইয়ামানের প্রেমের জালে ফেসেই গেল?(বলেই হাল্কা হাসলো)
_মা তুমি হাসছ?(হেচকি তুলতে তুলতে)
_আরে নাহ নাহ,,
_আরে আম্মু জানো কাল সেকি কান্না তোমার মেয়ের,,(মাঝখান দিয়ে খেতে খেতে সানিয়া বলল)
_সানিয়া শাট আপ,,(সানাম বলল)
_ওকেহ,,
_আচ্ছা আম্মু আমি ইয়ামানের অফিসে গিয়ে তাকে সারপ্রাইস দিব তাকে বলবো যে আমি তাকে কত্ত ভালোবাসি,,how much I love him,,(বলেই মাকে জরিয়ে ধরল)
_আচ্ছা যা,,(মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল)

সানাম তারাতারি বের হয়ে গেল,,ঠিকমতো হাটতেও পারছে না পায়ের ব্যাথায় কিন্তু তার খুশির কাছে এই পায়ের যন্ত্রণা ফিকা,,তার এভাবে হাটতে দেখে তার বলল,,

_আরে সানাম তোর তো পা কাটা তুই হাটতে পারবিনা বরং তুই ওকে ফোন করে এখানে ডাক,,
_নাহ মা আমি নিযে গিয়ে তাকে এই খবর দিব,,,
_আচ্ছা ঠিকাছে সাথে সানিয়াকে তো নিয়ে যা,,
_আচ্ছা তারাতারি আয়,,

বলেই সানাম কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো সানিয়া ফটাফট রেডি হয়ে বের হলো,,সানাম আজ তার ইয়ামানের জন্য হাল্কা সেজেছে,,আজ যে সানামের খুশির দিন,,সানাম লাল রঙের লং-টপ্স আর কালো কালারের পেন্ট সাথে কালো কালারের ওড়না নিয়েছে,,চুল দুই সাইড দিয়ে পেচিয়ে সাইড বেনী করেছে আর সামনে কিছু চুল এনেছে,,চোখে লাইনার ঠোঁটে নুড কালারের লিপস্টিক বেশ এতেই যেন সানামের রুপ উপচে পরছে,,সানাম আর সানিয়া রিকশায় বসে আছে,,,সানিয়া সানামকে পিঞ্চ করে বলল,,

_আজ তো তোকে ইয়ামান ভাইয়া দেখলেই খেয়েই ফেলবে,,কি যে কিউট লাগছে উফফফফ,,(বলেই সানামের গাল টেনে দিল)আমি ছেল থাকলে আমিই প্রেমে পরে যেতাম,,
_তোর বাকুয়াস বাদদে তো,,আজ আমি খুব খুশি সানিয়া আজ আমার ভালোবাসা পেয়েছি,উফফফ ভাবতেই কেমন অন্য রকম ফিলিংস হচ্ছে,,
_ওয়হয়,,(বলেই সানামকে কাধ দিয়ে হাল্কা ধাক্কা দিল)

সানাম হাসছে,,কিচ্ছুক্ষন পর রিকশা ঠিক ইয়ামানের অফিসের গেটের সামনে থামলো,,সানাম রিকশার ভাড়া মিটিয়ে ভিতরে ঢুকতে যাবে ঠিক তখনি ইয়ামান একটা মেয়ের হাত ধরে বাহিরে আসছে,,তা দেখে সানাম সেখানেই থেমে যায়,,ইয়ামান মেয়েটার খুব ক্লোজলি ভাবে হাটছে,,যা সানামের একদম সহ্য হচ্ছে না,,সানামের চোখ দিয়ে আপনা আপনি পানি চলে আসলো,,কিছুক্ষন পরই পানিরা আগমন করবে,,সানিয়া একবার ইয়ামানের দিকে তাকাচ্ছে তো একবার সানামের দিকে,,ইয়ামান মেয়েটিকে জরিয়ে ধরলো,,মেয়েটিকে বায় বলে ইয়ামান নিজের গাড়িতে উঠতে যাবে ওই সময় মেয়েটি ইয়ামানকে ডাক দিল,, ইয়ামান পিছে ফিরতেই মেয়েটি ইয়ামানের গালে কিস করল,,সানাম আর দেখতে পারছে না সে কান্না করতে করতে সেখান থেকে চলে আসলো,,সামনে হাটছে শুধু হাটছে আর চোখের পানি মুছচ্ছে,,কোথায় যাচ্ছে না যাচ্ছে সে জানে না,,সানিয়া সানামের পিছু পিছু হাটছে,,,কিছুক্ষন পর সানাম দারিয়ে গেল,,সানামের দারানো দেখে সানিয়াও দারিয়ে যায়,,সানাম চোখের পানি মুছে বলল,,

_আমি কান্না করবো কেন?আমি একটুও কান্না করবো না,,ওই কেরেক্টারলেসের জন্য আমি একটুও কান্না করবো না,,সানিয়া তুই বাড়ি যা আমি কলেজ যাবো,,
_কিন্তু এখন? এখন তো মনে হয় এক ক্লাস ছুটে গেছে,,
_তোকে যেতে বলেছি তুই যা,,

সানিয়া চুপচাপ চলে গেল কারন জানে এখন যত যাই বলুক না কেন সানাম কারো কিথা শুনবে না,,সানাম কলেজে গিয়ে ডিরেক্ট কেম্পাসে চলে গেল,,সেখান গিয়ে টেবিলে বসে মাথা ঠান্ডা করার জন্য আইস্ক্রিম অর্ডার করলো,,সানামের যখন মাথা গরম হয়ে যায় সে আইস্ক্রিম খায় নাহলে তার চলে না,,,অসভ্য লোক কোথাকার আমি নাহয় ভালোবাসি নাই প্রথমে তাহলে কি অপেক্ষা করা যেত না?আমাকে আর একটু মানানো যেত না?নাহ তার তো মেয়ে চাই ইয়ুস করার জন্য যেমনটা আমাকে করতে চেয়েছিল, হুম আমাকে ইয়ুসই করতে চেয়েছিল,,যেই দেখলো আমি ধরা দিচ্ছি না ওমনেই অন্য খাবারে হামলা দিল,,হুহহ সব ছেলেরাই এক কেউ কারো জন্য সাইকো হয় না কেউ কারো জন্য একটু অপেক্ষাও করতে পারে না সব বাজে সব,,সানাম আইস্ক্রিম খাচ্ছে আর নিজে নিজে এইসব আওড়াচ্ছে,,হঠাৎ চোখে পানি চলে আসলো,,

_আরে সানাম যে,,

হঠাৎ পিছন থেকে কারো গলার আওয়াজ পেয়ে সানাম পিছে ফিরলো,,দেখলো রুহান হাসি মুখে দারিয়ে আছে,,সানাম তারাতারি চোখের পানি মুছে ফেলে ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলল,,

_আরে রুহান,,
_আজ এত্ত দেরি?আমি তো ভেবেছিলাম তুমি আসবেই না,,
_নাহ তেমন কিছু না একটু লেট হয়ে গিয়েছিল,,
_ওহহ,আমি বসতে পারি?
_হুম হুম অবশ্যই,,
_আহহহ,,

হঠাৎ সানামের চোখে কিছু চলে গেল,,রুহান তারাতারি উঠে সানামের চোখে ফু দিতে লাগলো,তারা এমন ভাবে আছে দূর থেকে কেউ দেখলে ভাববে তারা হয়ত কিস করছে,,ইয়ামান সানামের সাথে দেখা করতে এসেছিল কাল থেকে ফোনেও কথা হয়নি এত্ত কাজের প্রেসার আর ইদানিং সে অনেক বিজি থাকবে একটা নতুন কন্ট্রাক পেয়েছে তাতে সময় দিতে হবে,, আর সে এসেছিল আজ সানামের সাথে টাইম স্পেন্ড করতে,, সানাম আর রুহানকে দূর থেকে দেখে ইয়ামানেএ মাথায় রক্ত উঠে গেল,,,সে ধপাধপ অয়া ফেলে রুহানকে ধাক্কা দিয়ে ফালিয়ে সানামের হাত শক্ত করে ধরে টানতে লাগলো,,হঠাত এমন কিছু হওয়ায় সানাম আর রুহান দোনজনি শকড,,রুহান ধাক্কার ফলে নিচে পরে গেছে,,সে উঠে দেখলো কেউ একজন সানামের হাত ধরে গরুর মতো টানছে,, সানামও প্রথম ভয় পেয়ে গিয়েছে পরে ইয়ামানকে দেখে কিছুটা রিলেক্স হলো পর মুহুর্তেই ইয়ামানের রঙ তামাসার কথা মনে হতেই সানামেরও মিজাজ চংগে উঠে গেল,,,

এখন দেখা যাক সানামের ইয়ামানের উপর এই রাগটা প্রকাশ করতে পারে কিনা?‍♀️আর বেচারা সানাম ইয়ামানের রাগে তার কি হাল হবে?এখন কি বা করবে ইয়ামান?‍♀️

চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো হ্মনার দৃষ্টিতে দেখবেন?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here