দেবী পর্ব ২৭

0
305

#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি (ছদ্মনাম)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
২৭ঃ

কাকন সকালে সবার আগে সুভার কাছে গেলো। গিয়ে বললো, “আমি মহিলাশালায় যেতে চাই আম্মা। এগুলো ভুলে যেতে চাই তাই আপনার ছেলে নিষেধ করলেও আপনি আমায় যেতে দিবেন।”

সুভা কাকনের দিকে চেয়ে বললো, “বেশ ভুলে যেতে চাও এটা ভালো কথা। খোকা কে বোঝানোর দায়িত্ব আমার। ”

–“একটা কথা বলবেন আম্মা।ওই কক্ষে কি প্রায় ই লাশ আনা হয়। সিরাজীরা কি এত খুন করে। ”

–“না আর কোনো খুন করা হবে না।আর না কোনো লাশ ওই কক্ষে আনা হবে। খোকার নিষেধ আর কাউ কে খুন করা হলে খোকা নিজে পুলিশ আনবে।”

–“ওনার উচিত ছিল অনেক আগেই পুলিশ জানানো। ”

–“এসব নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না। তুমি যাও তৈরি হও। এসব নিয়ে ঘাটাঘাটি না করাই উত্তম তোমার। ”

সুভা ব্যাতিত কেউ ই রাজি ছিল না মহিলাশালায় কাকমের আসাতে। সুভা নিজে বলেছে কাকন কে যেন মহিলাশালায় দিয়ে আসা হয়। রুহুল মনে প্রাণে চাইছিল যেন কাকনকে যেন বাধা দেওয়া হয়। রুহুল বার বার বলেছিল না গেলে হয় না। কিন্তু কাকন তার কথায় দৃঢ় ছিল। রুহুলের কিছু অভিমান ও হয়েছে যা আসার পথেই কাকন বেশ বুঝেছিল। কিন্তু কাকনের কাছে মহিলাশালায় আসা টাই বেশি জরুরি।
___________________________

পাঁচদিন পর~
আজ পাঁচদিন হলো কাকন মহিলাশালায় এসেছে। এই ক’টা দিন কাকনের ভীষণ ভালো কেটেছে। নিজেকে সেই আগের কাকনের মতোই অনুভব হয়েছে। এখানে কোনো জমিদার বাড়ির বউ আর না কোনো বাড়ির স্ত্রী মনে হয়েছে।তবে দিনশেষে ঘুমানোর সময় রুহুলের বুকের কথা মনে পড়েছে বারংবার। রুহুলের বুকে মাথা রেখে ঘুমানো যে কাকনের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।সেই শক্ত বুকে ঘুমানোর মধ্যে যে শান্তি শিমুল তুলোর নরম বালিশেও সেই শান্তি পায় নি কাকন।

কাকন মাটির সিড়িতে বসে আছে। বার বার গেইটের দিকে তাকাচ্ছে। মনে হচ্ছে একটা বার যদি রুহুল আসে মন্দ কি। এই মানুষ টা যে বর্তমানে কাকনের সবচেয়ে কাছের। তবুও মুখফুটে বলার অধিকার যে মস্তিষ্ক যে দেয় না কাকন কে। লেখিকা স্রোতস্বীনি। হৃদয় ও মস্তিষ্কের কেন এত বিরোধিতা। শুনেছে ঢাকা গিয়েছে রুহুল তাই কাকন কে একটা বার দেখতে ও আসে নি । কাকনের ইচ্ছে করছে রুহুল কে এক পলক দেখার। রুহুল এর ভালোবাসা কাকন কে রুহুলের প্রতি আসক্ত করেছে। তবে মন টা উদাস কেন সিরাজী বংশেই রুহুলের জন্ম হলো।

ফাতিমা কাকনের কাছে এলো হাতে নিয়ে তেলের বোতল। ফাতিমা তেল এনে কাকনের হাতে দিলো। দুকদম ফেলেই শিড়ি বেয়ে বাড়ান্দায় ওঠা যায়। কাকন উপরের সিড়তে বসা ছিল।ফাতিমা নিচের সিড়িতে বসলো তারপর বললো, “আমারে একটু তেল দিয়া দে তো কাকন?”

কাকন হেসে তেলের বোতল টা নিলো। বললো, –“আসেন , বসেন আপা আমি দিয়ে দিচ্ছি।”

–“হুম তোর হাতে তো জাদু আছে। আমার মাথা ঠান্ডা হইয়া যায়। তা তর শাশুড়িরে তেল দিয়া দেস না? ”

–“না ওনাকে কখনোই আমি তেল দিয়ে দেই নি আপা। উনি নিজেই নিজের মাথায় তেল দেয় বোধহয়। ”

–“তাই কি তুই জোর কইরা দিয়া দিবি।তর শাশুড়ি বড় ভালা মানুষ কাকন।তার কথা মত চলিস,সম্মান দিবি। ”

–“ওই বাড়িতে উনিই তো আমার সবচেয়ে বেশি আপন আপা। তবে ওনার উপর জোর ঘাটাবার সাহস নেই।”

–“হুম এইডা ঠিক। তয় তর সুয়ামি কিন্তু তর শাশুড়ির মতো হইছে তর শাশুড়ি খুব সুন্দর গঠন হের।

–“জি আপা।আমার কাছে সাহেবের চোখ দুটি খুব প্রিয়। ওনার চোখ দুটিতে আমি আমার আসল ভালোবাসা খুজে পাই। এই চোখ জোড়া দেখলেই মনে হয় নয়ন জুড়ে আমার জন্য ভালোবাসা রয়েছে। ”

–“হুম বুঝলাম। তা একটা কথা ক দেহি?”
–“কি কথা আপা?”
–“এই কয়দিন এত মনমরা হয়া আছা কেন? ”
–“কই না তো। মন মরা হবো কেন।”
–“মিথ্যার কথা কইবি না কাকন আমি বুঝছি। তুই কি কোনো কিছু নিয়া দুশ্চিন্তায় আছা কাকন?”

-কাকন মনে মনে বললো, “কিছু কথা এমন থাকে আপা যা কাউকে বলা যায় না”।
তবে মুখ ফুটে বললো, “তেমন কিছুই নয়। অনেক সুখে আছি আমি সেখানে। অনেক সুখে। দুয়া করবেন এই সুখ যেন আমি হারিয়ে না ফেলি”

ফাতিমা বললেন,”তুই সারাজীবন সুখে থাকবি। আমার দুয়া সব সময় তোর সাথে আছে। ”
_______________________

দুলাল সিরাজী নিজে আজ মহিলাশালায় এসেছে কাকন কে নিতে। যেহেতু রুহুল কাজের ব্যস্ততায় আছে। আর ঢাকায় একটা ফ্যাক্টরি দিচ্ছে তাই সেখানেই থাকতে হচ্ছে রুহুলের। মহীবুল আর হেলাল এর ওপর সিরাজপুরের দায়িত্ব। তার উপর সাতদিন পর সামিয়ার বিয়ে। সেই সাথে আবারো মেহমান আসা শুরু করেছে সিরাজী মঞ্জিলে। কাকন বাড়ির বড় বউ সেই সুবাদে কাকন কে আজ সিরাজী মঞ্জিলে থাকতেই হবে।লেখিকা স্রোতস্বীনি। তাই দুলাল সিরাজী কাকন কে নিতে এসেছে। দুলাল সিরাজী কে দেখেই কাকন উঠে দাড়ালো তারপর সালাম দিলো।

দুলাল সিরাজী কে ফাতিমা বসতে দিলো। কাকন কে বললো পান বানিয়ে আনতে আর শরবত দিতে। সেই কথা অনুযায়ী কাকন পান আর শরবত এনে দিলো দুলাল সিরাজী কে।

দুলাল সিরাজী পান মুখে দিতে দিতে বললেন,” যাও কাকন তুমি তয়ার হইয়া আসো। আমি ততক্ষণে এইখানে বসি। ”

কাকন দুলাল সিরাজীর কথায় মাথা নেড়ে কক্ষে চলে গেলো। আবার এই চিরচেনা ঘর, আপন মানুষ গুলো কে ছেড়ে চলে যেতে হবে। না জানি আবার কবে আসতে পারবে। এই ঘরটায় কাকন সবচেয়ে বেশি শান্তি পায়। কাকন নিজের সব জিনিস কাপড়ের ব্যাগে ভড়লো। তারপর সকলের থেকে বিদায় নিয়ে চললো সিরাজী মঞ্জিলের উদ্দেশ্যে।গেইটের কাছে সব মেয়েরা দাঁড়িয়ে আছে।কাকনের ভিতরেও কেমন কষ্ট লাগছে। তবুও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে হাসি মুখে গেইট দিয়ে বের হলো। ফাতিমা বরাবরের ন্যায় আজ ও কাকন কে বিদায় দেওয়ার সময় নিজের চোখ ভিজালেন।

কাকন মুচকি হেসে গরুর গাড়িতে উঠবে এমন সময় ফেলে যাওয়া জিনিসটার কথা মনে পড়লো কাকনের।
দুলাল সিরাজীর দিকে চেয়ে বললেন, “দাদাজান আসলে আমার একটা দরকারি জিনিস ফেলে রেখে এসেছি। আমি যেয়ে নিয়ে আসি। ”

দুলাল সিরাজী পানের পেচকী ফেলে বললেন,”আচ্ছা দরকারি জিনিস যেহেতু যাও তাড়াতাড়ি নিয়া আইসো।”

কাকন দৌড়ে মহিলাশালার কক্ষটিতে গেলেন। নিজের জং ধরা ট্রাঙ্কটি খুলে কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা জিনিসটা ব্যাগে তুলে নিলো। এটিই যে এখন ভীষণ দরকার এখন কাকনের। তারপর আবারো বেরিয়ে এলো কক্ষ থেকে। গরুর গাড়িতে চড়ে কাকন চললো শশুড় বাড়ি।

গরুর গাড়ি চলতে চলতে পৌছাল বকুল তলা।কাকনের চোখ গেলো বকুলতলার সেই বকুল গাছটিতে। এই জায়গা টা দেখলেই কাকনের খুব ভয় করে। কাকনের মনে হয় এই বকুলতলা ওর জন্য নরক। যেখানে ওর সর্বদা বিপদ হবে। বৈশাখের শুরুতেও তো এই বকুলতলায় সকলে কাকন আর রুহুল কে কত বাজে মন্তব্য করেছিল। কিন্তু মান -সম্মান খোয়ানোর ভয়ে দুলাল সিরাজী বিয়েই দিয়ে দিল কাকনের। কই একটা বার কাকনের মতামত জানতে চাইলো না। কাকনের ও তো মতামতের দরকার ছিল।

নানা ভাবনার মাঝেই কাকন সিরাজী মঞ্জিলে পৌছালো। প্রহরী মাথা নত করে গেইট খুলে দিলো।
কাকন ও অন্দরমহলে চলে গেলো।
______________________

কাকন সিরাজী মঞ্জিলে এসে সকলের সঙ্গে কথা বললো। আলেয়া রোকেয়া আবারো এসেছে। ননদ গুলো কাকন কে পেয়েই জড়িয়ে নিলো। সামিয়া তো নিযের কাছেই কাকন কে বসিয়ে দিলো। কাকন হাতের ব্যাগ টা রানুর কাছে দিলো আর বললো ব্যাগ টা যেন স্বযত্নে কাকনের কক্ষে রাখা হয়। রানু ব্যাগ নিয়ে কাকনের কক্ষে রাখতে গেলো।

বসার ঘরে বেশ কিছুক্ষণ কাকন ননদ দের সাথে কথা বললো। আলেয়া গর্ভধারণ করেছে। পাঁচ মাসে পেট হালকা বড় হয়েছে। এটা তিন নাম্বার সন্তান। আলেয়ার আরো দুটো সন্তান আছে। কাকন বেশ খুশি হয়ে আলেয়ার ছোটমেয়ে কে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগল। আর বড় ছেলেটা রোকেয়ার ছেলেকে নিয়ে খেলাধুলা করছে।

বাচ্চা কোলে কাকনকে দেখে দাদিমার বংশধরের কথা মনে পড়লো। কাকনের কাছে যেয়ে বসলেন। তারপর
বললো, “তর মনে হয় পোলাপান ভাল্লাগে তাই না”

কাকন মুচকি হেসে বললো, ” ভীষণ ভালো লাগে দাদিমা।দেখেন কি মিস্টি মেয়ে। ”

দাদিমা রোকেয়াকে ইশারা করলেন কাকনের কোলে থেকে বাচ্চা টা নিয়ে নিতে। রোকেয়া এক প্রকার জোর করেই নিলো। কাকন বাধা দিতে চাইলে দাদিমা হাত ধরে রাখলেন। বললো, “পরের পোলাপান এমন ডাই হইবো। তুই কিছুক্ষণ রাখতে পারবি তারপর যার তা হেতিই নিয়া নিবো। তার জন্য তর কি করা লাগবো? ”

আকস্মিক এমন ঘটনায় কাকন বললো, “মানে? ”

–“মানে খুব সহজ, তুই নিজে তর কোল ভইড়া পোলাপান নে। যখন খুশি আদর করবার পারবি, কোলেও নিবার পারবি। কি নিবি তো পোলাপান? ”

দাদিমার কথায় কাকন মাথা নিচু করে ফেললো। বললো,”দাদিমা, আসলে আমি মানে উনি তো..”

দাদিমা কিছুটা রাগান্বিত হয়ে বললেন, “কিসের আসল নকল,,তরে তো আগেও কইছি আমার মানিকের ঘরে তাড়াতাড়ি পোলাপান চাই। সামিয়ার বিয়া পার হইয়া গেলেই জানি সুখবর ডা পাই কইয়া দিলাম আমি। ”

সকলের সামনে এমন ঝাজালো কথায় কাকন মাথা নিচু করে ফেললো। বাচ্চা তার ভালো লাগে কিন্তু বাচ্চা তো রুহুল এখনি চায় না। রুহুল বলেছে কাকন বাচ্চা নেওয়ার জন্য উপযুক্ত নয়। তারপর ও কেন বারবার এগুলো শুনতে হয় কাকন কে।

দাদিমা যেন রেগেই বসার ঘর ত্যাগ করলেন। এমন অবস্থায় বসার ঘরে পিন পিন নিরবতা।কাকন ঠিক ই মন খারাপ করে মাথা নিচু করে বসে রইলো।

আলেয়া কাকনের কাছে বসে বললো, “ভাবিজান তুমি কিছু মনে কইরো না। দাদিমা তো এমন ই।”

কাকন আলেয়ার দিকে মুখ ফুলিয়ে বললো, ” আমি ওনাকে বলেছিলাম বাচ্চার কথা। উনি বলেছে আমার ১৮ বছর হলে বাচ্চা নেবে। উনি শিক্ষিত মানুষ উনি নাকি বই এ পড়েছে অল্প বয়সে বাচ্চা হলে মায়ের মৃত্যুর ঝুকি থাকে। আর উনি আমাকে হারানোর ভয়ে এখনি বাচ্চা চায় না এখন আমার কি দোষ আপা। ”

কাকনের কথায় আলেয়া-রোকেয়া হেসে দিলো। রোকেয়া বাচ্চা টিকে কাকনের কোলে দিয়ে বললো, “বাহ আমাদের দাদাভাই দেখি বউ হারানোর ভয়ে বাচ্চাই নিতাছে না, হাহাহা।”

কাকন এবার লজ্জা পেলো। আলেয়া বললো, “হুম আমার দাদাভাই আসলেই বউ পাগল হইয়া গেছে।বউ এর জন্য এত ভয় যে বাপ হইতাছে না।”

সামিয়া কাকনের গলা জড়িয়ে ধরে বললো, ” আরে ভাবিজান মঞ্জিলে নাই দেইখা দাদাভাই সেই যে ঢাকা গেছে আর আসতাছেই না”

আলেয়া বললো, “ক্যান গো ভাবি আমারা ভাই ডারে এত কষ্ট দেও। জানোই তো তোমারে ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না। আর যাও না জানি কইয়া দিলাম।”

কাকন হেসে বললো, “কেবল তো শুরু, আরো অনেক কষ্ট দেবো তোমার ভাই কে। একটিবারের জন্য ও আমায় দেখিতে যায় নি মহিলাশালায়। তোমরা বসো আমি আম্মার সাথে কথা বলে আসি। ”
কথাটি বলেই কাকন উঠে পড়লো। এখন সে সুভা কে খুজছে। সুভার সাথে দেখা করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু রন্ধনশালায় নেই। তাই ভাবলো কক্ষে যেয়ে হাত মুখ ধুয়ে এসে সুভার কাছে যাবে।
_______________________

সিড়ি বেয়ে উপরে উঠছিল কাকন।কিন্তু দেখলো হেলাল তিনতলা থেকে নামছে। কাকন কিছুটা অবাক হলো তিনতলায় হেলাল কেন গিয়েছিল। আবার কি কোনো লাশ রাখতে। কিন্তু সুভা যে বললো আর কোনো লাশ ওই কক্ষে রাখা হবে না। এটা রুহুলের নিষেধ।

কাকন হেলালের পথ আটকে ধরলো। বললো, “আপনি তিনতলায় গিয়েছিলেন ছোটভাই।দাদাজান তো বলেছিল সেখানে যাওয়া নিষেধ। ”

-হেলাল আমতা আমতা করে বললো, ” না মানে তিনতলার সামনের ঘরে বড় বড় হাড়ি পাতিল আছে যেগুলা সামিয়ার বিয়ার সময় রান্দার কাজে লাগবো তাই দেখতে গেছিলাম আছে কি না।”

–” ওহহ ওইখানে আছে কি সব?”
–“হ্যাঁ আছে তো। আমি যাই রানু রে ডাইকা ওগুলা নামাই।

–” রানু কে লাগবে না চলুন আমি আপনাকে সাহায্য করবো চলুন।”

–“না না তোমার কাম করা লাগবো না ভাবিমা। আমরা তো আছিই।আমি থাকতে তুমি কেন কাম করবা। ”

–“হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক ই বলেছেন। আপনিই তো আছেন। এই বাড়িতে আপনাকে আমি আমার নিজের ভাই মনে করি। আপনি কি আমাকে আপনার বোনের জায়গা দিতে পারবেন না ছোট ভাই। ”

কাকনের এহেন কথায় হেলাল ভড়কে গেলো। রুহুলের স্ত্রীকে বোনের জায়গা দেবে হেলাল যা তার কাছে হাস্যকর। তবে বললো, “হুম মনে করি। তুমি যাও ভাবিমা। কেবল আসলা মঞ্জিলে যাও, বিশ্রাম নেও।

কাকন হেসে বললো,” ঠিক আছে।”
কথাটি বলে কাকন চলে যাবে তখন ই দেখলো মহীবুল নামছে। মহীবুল কে দেখেই কাকন আন্দাজ করলো হাড়ির জন্য যায় নি তারা।কাকন নিজ কক্ষের দিকে গেলো কারন লোকটাকে কাকনের পছন্দ নয়।

মহীবুল তিনতলা থেকে নেমে হেলাল কে নিয়ে নিচে নামলো। তারপর হেলালের কক্ষে গিয়ে বিছানায় পা তুলে দিয়ে বসে বললো,, ” কেডায় যে এই কাম ডা করলো। বা* আমাগো ঘাড়েই সব চাপায় এই বুইড়া। ”

হেলাল বিরক্তিকর মুখ বানিয়ে বললো, “ঠিক কইছা মহী ভাল্লাগে না আর এত কাম। তুই ঘর ডা ভালো কইরা তালা লাগাইছা তো। না জানি কেডায় ওই ঘরে গেছিলো। ”

মহীবুল সিগারেট ধরিয়ে টান মারলো বললো, “কেডায় আর যাইবো তর বাপের বড় বউ ছাড়া। ”

হেলাল তাচ্ছিল্যের সাথে বললো, ” হ,,বেছারি বড়াম্মার জন্য মায়াই হয় বুঝলি মহী। চোক্ষের সামনে আপন মানুষের লাশ দেইখাও কিছুই করতে পারে নাই,হাহাহা।”

মহীবুল বললো, ” যা ই কস রে হেলাল। ভাগ্য ভালো ওইদিন রুহুল আছিল না। তা না হইলে সিরাজী মঞ্জিলে ভয়াবহ আগুন জ্বলতো।”

হেলাল বললো, “তাইলে সবার আগে বুইড়া সিরাজি রে জ্বালান লাগতো। ইশ ওই কচি মালডা যদি বাইচা থাকতো ভাই, কসম আমি না খাইয়া ছাড়তাম না।”

মহীবুল হুহা করে হেসে বললো, “সালা তুই তো দেহি আমার থিকাও বড় লু’ইচ্চা। জাত দেহোস না। ”

হেলাল বললো, “তর থিকাই শেখা সা’লা। কম তো আর যাস নাই জীবনে অন্ধকার গলিতে। ওইখানে মনেহয় খুব জাত দেখছা তুই। ”

–” যামুই তো। আমি তো আর রুহুল সিরাজী না যে কবে বউ হইবো আর সেই আশায় জীবন পার করমু।”

–“দাদাভাই বুঝলি ভাবিমা রে অনেক ভালোবাসে।দেহোস না বোইনেরা ভাবিজান কয়। আর আমাগো দুই ভাই রে ভাবিমা কইতে কইছে। বা* ওইরম মা’ল রে ভাবিমা কইতে ও রাগ লাগে সা’লা ****।

–” একটা কথা শুইনা রাখ আমি তোর ভাই এর মতো হমু না। তোর ভাই তো সুন্দরী বউ এর আঁচল ধইরা থাকে। আমার বউ সুন্দরী হইলেও আমি বা* ঘরেও খামু বাইরে ও খামু। ”

হেলাল আফসোস এর স্বরে বললো,”চাইলে সব ই খাইতে পারমু জীবনে। কিন্তু যদি ওইডারে রে খাইতে পারতাম কাম হইতো। ”

মহীবুল সিগারেট ফেলে বললো,”নাম জানি কি আছিল”

–“কি জানি নাম,, ওহ হ্যাঁ ‘দেবী’। ”

#চলবে…….

#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি

বিদ্রঃ দয়া করে কেউ কপি করবেন না। ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করে পাশে থাকবেন, ধন্যবাদ।

®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি ✍️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here