দেবী পর্ব ২৬

0
310

#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি (ছদ্মনাম)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
২৬ঃ

বিদঘুটে পচা দুর্গন্ধে ভরা কক্ষটিতে মেঝের মধ্যে বসে আছে কাকন। যে জিনিসটার সাথে পা বেজে কাকন পড়ে গিয়েছে সেই জিনিসটা হলো কংকাল। হ্যাঁ একজন মানুষের কংকাল। তবে একটা নয় মেঝেতে আরো অনেক গুলো মানুষের কংকাল ফেলে রাখা হয়েছে। এগুলো দেখে ভয়ে কাকন হাতের হারিকেন টাও ফেলে দিয়েছে। কেমন যেন শরীর নড়ছে না কাকনের। এখান থেকে যে বের হবে সেই শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছে। হারিকেন টা আবারও তুললো কাকন। কংকাল গুলোর পোশাক ও কেমন ছিড়ে গেছে। মাংস গুলো যে পোকামাকড়ের পেটে গেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে একটা উত্তর মেলানোর জন্য কাকন হারিকেন দিয়ে পোশাক গুলো দেখার চেষ্টা করলো।লেখিকা স্রোতস্বীনি। ভালোভাবে সব গুলো কংকাল পরখ করলো। কিছুদূর এগিয়ে দুটো কংকাল একসাথে দেখলো। সামনের কংকালের হাত দুটো দেখে থমকে গেলো কাকন।কাকনের শরীর কেমন যেন অসার হয়ে গেলো।হাতের হারিকেন টা আবারো মাটিতেই পড়ে রইলো। আর মেঝেতেই লুটিয়ে পড়লো কাকন। জ্ঞান হারিয়ে সেই গুপ্ত কক্ষের মেঝেয় চোখের পাতা বন্ধ হয়ে গেলো কাকনের। এই গুপ্ত ঘরে অজ্ঞান কাকন কে পোকামাকড় ছেয়ে ধরলো।
______________________

অন্যদিকে সামিয়া তার চিঠির বিষয়টা কাকন কে বলতে চায়। যেহেতু এখন রুহুল নেই আর বৃষ্টি ও হচ্ছে তাই এখন দুজন মিলে মুড়ি-চানাচুর খাবে আর গল্প করবে। সামিয়া চিঠিটা কোমড়ে গুজলো তারপর মুড়ি মাখিয়ে নিয়ে চললো কাকনের উদ্দেশ্যে। কয়েকবার ডাকলো কাকন কে। কিন্তু কাকন কে ডাকার পরেও কক্ষ থেকে কোনো সাড়াশব্দ এলো না। অতপর সামিয়া দরজা খুলে কক্ষে ঢুকলো। কিন্তু কক্ষের কোথাও কাকন নেই।বাড়ান্দায় উঁকি দিয়েও কাকন কে দেখতে পেলো না। ওর খটকা লাগলো এই বৃষ্টির মধ্যে ভাবিজান গেলো কোথায়। সামিয়া তবুও পুরো দোতলা খুজলো। নিচতলার সকল কক্ষে গিয়ে ও কাকন কে খুজে পেলো না। এবার সামিয়ার ভয় হতে লাগলো কাকন কোথায় গেলো।যদি কারো অনুমতি ব্যাতিত কোথাও যেয়ে থাকে তাহলে কেলেংকারী হয়ে যাবে।সিরাজী মঞ্জিলের বউ রাতের বেলা না বলে কোথাও গিয়েছে সর্বনাশ।

এখন তো বাড়িতে তেমন কোনো পুরুষ মানুষ ও নেই। জামাল ও অসুস্থ। সামিয়া একা এখন কোথায় খুজবে কাকন কে। তার উপর বৃষ্টি ও হচ্ছে বাইরে। রুহুল কে কি খবর দেবে। না তার আগে সুভাকে জানাতে হবে।
সামিয়া হন্তদন্ত হয়ে সুভার কাছে গেলো। সুভা সবে বিলালের কাজ সেড়ে রন্ধনশালায় পা রেখেছে। সামিয়া সুভার কাছে রন্ধনশালায় ছুটে গেলো।

সামিয়ার এমন অবস্থা দেখে সুভা বলল, “কি হয়েছে সামিয়া বুড়ি, এত হয়রান হয়েছিস কেন?”

সামিয়া হাপাতে হাপাতে বললো, “বড়াম্মা ভাবিজান রে কোথাও পাইতাছি না”

সুভা স্বাভাবিক ভাবেই কাজে মন দিয়ে বললো,”পাচ্ছিস না মানে,, আছে কোথাও হয়তো। ভালো করে খুঁজে দেখ গিয়ে। ”

সামিয়া ব্যাকুল হয়ে বললো, “না বড়াম্মা ভাবিজান সত্যি নাই । আমি পুরা মঞ্জিল খুজছি।”

সামিয়ার কথা সুভা হাতের কাজ ফেলে উঠে দাড়ালো।বললো, “কাকন মঞ্জিল নেই। তাহলে যাবে কোথায়। মহিলাশালায় গেলেও তো বলে যায়। কোথাও না বলে যাওয়ার মতো মেয়ে তো কাকন নয়।”

–‘সেইডা তো আমিও ভাবতাছি বড়াম্মা।”
–“চল আমি কাকন কে খুজবো তোর সাথে। ”
–“ঠিক আছে বড়াম্মা।তয় দাদাভাই রে কি খবর দিমু”।
-“না আগে আমরা খুজি। যদি মঞ্জিলেই থাকে। ”

সুভা আবারও আরেক দফা কাকন কে খুজতে লাগলো। সামিয়া ও বেশ হয়রান এখন। সেই সাথে চিন্তা ও বেড়ে যাচ্ছে। সুভা নিরুপায় হয়ে ভাবলো রুহুল কে খবর দিবে এবং রুহুল কে জানানো দরকার। দোতলা থেকে সিড়ি বেয়ে নিচে নামবে সুভা কিন্তু তখনি কিছু একটা ভেবে দৌড়ে তিনতলার সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো। আকষ্মিক এমন ভাবে সুভার যাওয়া তে সামিয়া অবাকের চরম পর্যায়ে। তার চেয়ে বড় কথা তিনতলায় সকলের যাওয়া নিষেধ অথচ সুভা এভাবে গেলো। সামিয়া আর সাহস পাচ্ছে না তিনতলায় উঠার। তবুও মন কে শান্ত করে সিড়ির কাছে দাঁড়িয়ে রইলো।

অন্যদিকে সুভা অন্ধকার কেও ভয় করছে না। ছুটে চলছে। কাকন কাকন করে কয়েকবার ডাকলো তবুও সাড়া পেলো না। সুভা অন্ধকারেই সেই কক্ষের দিকে ছুটে গেলো। আলোর রেশ পেয়ে বুঝতে বাকি রইলো না কাকন সেখানে। সব কিছু সড়ানো ছিটানো দরজার বাইরে। সুভা ঢোক গিলে কক্ষ টিতে প্রবেশ করলো। হারিকেন টি নিচে পড়ে আছে। তার সাথেই কাকন মাটিতে লুটিয়ে আছে। সুভার সব ভয় উবে গেলো। দ্রুত কাকনের কাছে বসে কাকনের মাথা নিজের কোলে তুলে নিলো। কাকনের গালে হালকা চাপড় মেরে জ্ঞান ফেরানোর প্র‍য়াস করলো। বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পর ও জ্ঞান ফিরে এলো না। সুভা কাকন কে ফেলে রেখেই দৌড়ে নিচে নেমে এলো।

সিড়ির কাছেই বসে ছিল সামিয়া। সুভা কে দেখে সামিয়াও সাথে সাথে নিচে নামলো।জিজ্ঞেস করলো, “বড়াম্মা ভাবিজান কে পাইছেন। এত দোড়ায়তাছেন কেন, কি হইলো বড়াম্মা কথা কন। ”

কিন্তু সুভার সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। সে স্টিলের জগ ভর্তি পানি নিয়ে আবারো ছুটলো তিনতলায়। কেউ সিরাজী মঞ্জিলে আসার আগে কাকনের জ্ঞান ফেরাতে হবে তা না হলে বিপদ।

সুভা তিনতলার সেই কক্ষে গিয়ে পানির ছিটা দিতে লাগলো কাকনের চোখ মুখে। কিছুক্ষণ পর কাকনের জ্ঞান ফিরলো। মাথাটা কেমন ভার ভার করছে।জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকলো।পিটপিট চোখ খুলে আবছা আলোয় সুভার মুখখানি দেখলো। চোখের কোণা বেয়ে দু ফোটা জল প্রস্রবণ হলো। কাকন মাথায় হাত দিয়েই সুভার কোল থেকে মাথা তুলে বসলো। চারিদিকে চোখ বুলিয়ে আবারো দেখলো। গায়ের লোম গুলো দাড়িয়ে গেলো কাকনের। লেখিকা স্রোতস্বীনি। কত গুলো মানুষের দেহ এখানে পোকামাকড়ের ভোগ হয়েছে। না জানি এদের পরিবার গুলো শেষ দাফন টাও করতে পারে নি।

সুভা কাকনের হাত ধরে টেনে তুললো। এক প্রকার জোর করেই বের করিয়ে আনলো কক্ষ থেকে। দরজা আটকিয়ে দিয়ে কাকন কে নিয়ে তিনতলা পার করে দোতলায় এসে রুহুলের কক্ষে নিয়ে বিছানায় ছুড়ে ফেললো কাকন কে। তারপর দরজা আটকে দিলো।

কাকন কিছু বলবে তার আগেই সুভা কাকন কে জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করলো। কাকন চাইলেও বাধা দিতে পারলো না। কিন্তু সুভা এভাবে কাদছে কেন।না জানি কত দিনের কান্না যা আজ সুভা কাকন কে জড়িয়ে ধরে কাদছে। বহুদিনের চাপা কষ্ট যখন চোখের পানি হয়ে বের হয়, হৃদয়ে তখন আলাদা শান্তি লাগে। সুভাও আজ খুব কাদছে। সে কাকন কে ধরে নিজের সকল কষ্ট পানিরুপে ছাড়লো দুচোখ বেয়ে। সুভার এমন কান্নায় কাকন ও কেদে দিলো। সেও সুভাকে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো। এভাবে দুজন চোখের পানি ফেলল।

বেশ কিছুক্ষন পর সুভা নিজের মনকে আবারও আগের ন্যায় শক্ত করলো। তারপর কাকন কে ছেড়ে দিয়ে আচলে নিজের চোখ মুছে কাকন কে জিজ্ঞেস করলো , “ওইখানে কেন গিয়েছিলে কাকন?”

কাকন মাথা নিচু করে ফেললো। এই প্রশ্নের উত্তর যে সে দিতে পারবে না।
সুভা আবারো বললো, ” আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি উত্তর দাও কাকন । ”

কাকন সুভার চোখে চোখ রেখে বললো, “বন্ধ দরজার পেছনের সত্য দেখতে গিয়েছিলাম।”

সুভা কাকনের এমন চাওনি আগে কখনো দেখে নি। সুভা কাকন কে বললো, “যে সত্যি দেখেছো সে সব ভুলে যাও । আমি আর তুমি ব্যতীত কেউ যেন না জানে সেই কক্ষে তুমি গিয়েছিলে। কিছু জিনিস দেখেও হজম করতে হয় কথাটা মাথায় রেখো। ”

কাকন সুভার দিকে তাকিয়ে আবারও বললো,”সবার তো আপনার মতো হজম করার ক্ষমতা নেই আম্মা।কেউ কেউ হজম নয় বরং ওগরাতে চায়। ”

কাকন সুভার হাত দুটি ধরে মিনতির সুরে বললো, “ওগড়াতে পারলে অনেক কিছুই ওগড়ানো যায়। কিন্তু সেই ওগড়ানো তে যদি প্রলয় শুরু হয় সেই প্রলয় বন্ধ করতে রক্তারক্তি হয়ে যায় কাকন। আর জান যায় নির্দোষ ব্যক্তিদের। ”

–“তাই বলে কি সারাজীবন অন্যায়ের হজম করেই যেতে হবে আম্মা।”

–“হ্যাঁ এই সিরাজী মঞ্জিলে তাই করেই যেতে হবে। খোকা কে জানালেও সমস্যা নেই কিন্তু খোকা ব্যতীত কাকপক্ষী টিও যেন টের না পায় তুমি সেই কক্ষে গিয়েছিলে।”

–“তাদের কে কেন মারা হয়েছিল আম্মা?”

–“আগেই বলেছি সিরাজী মঞ্জিলে মান-সম্মান কে সবার আগে রাখা হয়। তাদের বংশের মান এর চেয়ে বড় কিছুই নয় তাদের কাছে।”

–“কিন্তু আ….”

–“কোনো কিন্তু নয়, পারলে হাত মুখে পানি দিয়ে শুয়ে থাকো। ক্লান্ত দেখাচ্ছে তোমায়। ”

কথাটি বলেই সুভা দরজা খুলে চলে গেলো। কিন্তু কাকন সুভার যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো। মুখ ফুটে বললো, –” সত্যিই আপনি আমার দেখা সেরা অভিনেত্রী আম্মা ”
কথাটি বলেই চোখের পানি মুছে নিলো কাকন ।তারপর বিছানা থেকে নেমে দাড়ালো কারন তাকে যে এখন তৈরি হতে হবে।
______________________________

আজ রাতে কাকন আর কক্ষ হতে বের হয় নি। রানু একবার এসে ডেকে গেছে কিন্তু সে বলে দিয়েছে খাবে না।তার মাথা ব্যাথা করছে তাকে যেন ডাকা না হয়। কাকন এর মনে অশান্তি অনুভব হচ্ছে। কিচ্ছু ভালো লাগছে না। এত গুলো লাশ কি ভাবে খুন করতে পারলো সিরাজীরা। ওর জানা মতে কেবল দুজন মানুষকে খুন করেছিল। আদোও কি সিরাজপুরের মানুষ জানে এদের নিষ্ঠুরতা। জানলে বোধহয় এত টা সম্মান করতো না। পুরনো জমিদারি সব কিছুতেও আভিজাত্য অথচ তাদের ভিতর টা নর্দমার কীট মনে হচ্ছে কাকনের কাছে।

কাকন কিছুদিন এখান থেকে দূরে থাকতে চায়। বেশ কিছুদিন হলো মহিলাশালায় ও যেতে পারছে না। সারাদিন এই চার দেওয়ালের মাঝে ভালো লাগছে না কাকনের। মনে মনে ঠিক করে নিলো মন শান্ত না হওয়া অব্দি সে সিরাজী মঞ্জিলে আসবে না।কিছুদিন ফাতিমার কাছে যেয়ে থাকবে।

শরীর টাও কেমন দুর্বল লাগছে তাই কাকন বিছানায় গা,এলিয়ে দিলো। মাথার মধ্যে নানা চিন্তা ঘুরপাক করছে। কাকন এক্ষেত্রে রুহুল কেও বিশ্বাস করতে পারছে না। কিন্তু সুভা কে বললে সাথে যে কাকন কে আরো অনেক কিছুই বলতে হবে। এভাবে নানা চিন্তা ভাবনা করতে করতে ক্লান্তিতে কাকনের চোখ কখন যে লেগে গেলো সে নিজেও বুঝলো না।
_______________________

রুহুল রাতের খাবার খেয়ে বসার ঘরে গেলো। আসার পর থেকে একবারের জন্য ও বিবিজান কে দেখে নি। দাদাজানের সাথে কথা শেষে রোজকার ন্যায় আজ ও বিলাল সিরাজীর কক্ষে গেলো আব্বার খোজ করতে। বিলাল সিরাজীর কান্নারত চোখ দুটি রুহুলকে ভীষণ পীড়ন দেয়। সে বোঝে না তার আব্বা কেন এত কাদে। রুহুল নিজ পিতার চোখ মুছে দিলো। সব গুলো ওষুধ দেখলো আর যা যা শেষের দিকে সেগুলো দেখে রাখলো কাল সেগুলো আনার ব্যবস্থা করবে। বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে একবার আম্মার দিকে চাইলো। তার আম্মার পানসে চোখ-মুখ দেখে বুঝতে বাকি রইলো না তার আম্মার মন খারাপ ।লেখিকা স্রোতস্বীনি। রুহুলের খুব ইচ্ছে করলো জিজ্ঞেস করতে কিন্তু সাহস পেলো না। নিজ গর্ভধারিণী মা সুভা অথচ মায়ের মন খারাপের কথা জিজ্ঞেস করতে কত জড়তা রুহুলের।

রুহুল ছোট নিশ্বাস ফেলে কক্ষ থেকে বের হয়ে গেলো। শুধু কানে ভেসে আসলো মায়ের বাণী,”কাকনের শরীরটা ক্লান্ত। ঘুমিয়ে থাকলে ডাকিস নে যেন। ”

কাকনের কথা শুনে একবার মায়ের পানে তাকালো। তারপর দ্রুত পা চালালো নিজ কক্ষের দিকে। আস্তে করেই দরজা খুললো। দরজা খুলে ঘুমন্ত বিবিজান কে দেখলো। নাক আর গাল কেমন লাল হয়ে আছে। কাকন কি তাহলে কেদেছে কিন্তু কেন। রুহুলের নিজের উপর রাগ লাগলো। ইদানীং সে কাজের ব্যস্ততায় কাকনের দিকে নজর ই দিতে পারে না।

রুহুল কাকনের পাশে বসে ওর দিকে ঝুকে ঘুমন্ত মুখোশ্রী দেখলো। মুখে পড়া চুল গুলো কানের পিছে গুজে দিলে কাকন কিছুটা নড়ে উঠলো। কাকন মুখে গরম নিশ্বাস অনুভব করেই চোখ খুলে চাইলো। কখন চোখ লেগে গিয়েছিল টের ই পায় নি।

কাকন বিছানার চাদর ধরেই উঠে বসলো। এখনো রুহুল তার দিকে কিছুটা ঝুকে আছে। কাকনের গালে হাত রেখে রুহুল বললো, “আপনার কি হয়েছে বিবিজান?”

কাকন নিজের ভেতর টাকে শক্ত করলো। তারপর বললো, “কই কিছু না তো ”

–“মিথ্যে বলছেন কেন।আম্মা নিজে বলেছে আপনি ক্লান্ত। খুব বেশি কাজ করতে হচ্ছে কি আপনার। আর আপনার চোখ মুখ ও প্রমাণ আপনি কেদেছেন। ”

–” আসলে তেমন কিছু না। আমি ফাতিমা আপার কাছে যেতে চাই এ জন্য ওনার কথা মনে পড়ে কেদেছিলাম ”

–“আপনি কি এখনো ছোট বাচ্চা যে কোতাহ্ব যাওয়ার জন্য কাদবেন। ফাতিমা আপার কাছে যেতে চান আমাকে বললেই তো আমি নিয়ে যেতাম। এভাবে কাদার কি আছে বলেন দেখি। ”

কাকন বিরক্তিতে বললো, “কিছুই নেই। ইচ্ছে হয়েছিল তাই কেদেছি হয়েছে। ”

কাকনের এমন কথায় রুহুল কাকনের হাত ধরলো। বলল,”কি হয়েছে এমন করছেন কেন আমার সঙ্গে”

কাকন কেদে দিলো।তারপর বললো, “আজ আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। আমাকে কয়েকটা দিন থাকতে দেন না ফাতিমা আপার কাছে। ”

— “আবার কাদছেন আপনি কান্না থামান। আমি কাল ই নিয়ে যাবো আপনাকে মহিলাশালায়। ”
–“হুম”

রুহুল কাকনের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,
–” আপনাকে বলেছিনা আপনি কাদবেন না। আপনি শুধু হাসবেন। আমি আমার বিবিজানের চোখে পানি দেখতে চাই না। আমি চাই না আমার সন্তান যেন তার মাকে কাদতে দেখে বুঝেছেন আপনি। আজকের পর থেকে আর কাদবেন না মনে থাকবে। ”

–“আপনি সত্যিই আম্মার মতো হয়েছেন।জীবনসঙ্গী কে স্বার্থহীন ভাবে ভালোবাসেন।”

–“আপনাকে আগেই বলেছি আমি আপনাকে বিশ্বাস করি। আর বিশ্বাস ভালোবাসাকে পরিপূর্ণতা দেয়। আমার সেই পরিপূর্ণ ভালোবাসা কেবল আপনি ”

কাকন নাক টেনে বললো, “ভালোবাসেন আমাকে? ”
রুহুল মুচকি হেসে বললো, “ভালোবাসি”

কাকন রুহুলকে জড়িয়ে ধরলো। এই মানুষটা এত কেন ভালোবাসে তাকে। এত বিশ্বাস, এত ভালোবাসা।

চলবে…

#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি

বিদ্রঃ দয়া করে কেউ কপি করবেন না।ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করে পাশে থাকবেন, ধন্যবাদ।

®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি ✍️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here