#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি (ছদ্মনাম)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
২১ঃ
—“ভালোবাসা হলো এক বিষাক্ত মরনব্যাধি,
একবার যাকে আক্রমণ করে শেষ নিশ্বাস
অব্দি বেদনাময় সুখ দেয় “—
_____________________________________________
আঠারো বছর পর ~
“আল্লাহু আকবার” ধ্বনি কর্ণগোহর হচ্ছে রুহুলের। বাড়ান্দায় দাঁড়িয়ে অতীতে ডুব দিয়েছিল রুহুল। কত সুন্দর ই না ছিল বিবিজানের সাথে কাটানো দিন গুলি। কত সুন্দর মনোমুগ্ধকর মুহুর্ত। বিবিজানের সাথে কাটানো দিন গুলি রুহুলের জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন ছিল। কতটা মধুর, কতটা সুখের তাইতো সেই স্মৃতি টুকু বুকে জড়িয়েই বেঁচে আছে রুহুল। তবে এই নিসঙ্গতার সঙ্গী হয়েছে অসীম বেদনা-বিরহ।
কি এমন হতো যদি “দেবী” নামক নারী টি সব কিছু তছনছ না করতো। না জ্বালাতো রুহুলের ভালোবাসার সংসার। কি এমন হতো যদি জীবনের শেষ অব্দি নিজের কাছের মানুষ গুলো নিয়ে শেষ নিশ্বাস অব্দি বাঁচতে পারতো রুহুল।
কিন্তু ভাগ্যবিধাতার লিখন যে বড়োই নিষ্ঠুর-নির্মম
ছিল। পৃথিবীর নিষ্ঠুরতার কাছে হেরে গিয়েছিল
রুহুল- কাকনের পবিত্র প্রণয়বন্ধন। সেই পবিত্র
ছোয়া, পবিত্র পরশ, পবিত্র প্রণয় সব কিছু ধ্বংস
করে দিয়েছিল “দেবী”।
রুহুল অতীতের সকল ভাবনা থেকে বর্তমানে ফিরে এলো। রাত শেষ তবে সূর্য পুরোপুরি উদয় হয় নি। আজকের রাতে এক মুহুর্ত ও ঘুমানো হয় নি রুহুলের।মাথা টা যেন কেমন করছে। রুহুল কক্ষে যেয়ে ওজু করে নিলো। উদ্দেশ্য এখন মসজিদে যাবে।
রুহুল মসজিদে জামায়াতের সাথে ফজর নামাজ আদায় করলো। নামাজ শেষে মক্তবে গেলো। ছোট ছোট বাচ্চাদের সাথে দেখা করা দিনকার অভ্যাস হয়ে গেছে।এরপর সিরাজপুরের সব কিছুর খোজ খবর নেওয়ার জন্য হাটতে শুরু করলো।
হাটছে আর গায়ে লাগছে প্রকৃতির বসন্তের শীতল বাতাস। ফজর নামাজ আদায় শেষে প্রকৃতিতে যে বাতাস পাওয়া যায় তাতে হৃদয়ে শান্তি দেয়।বসন্তের আগমণ হয়েছে।লেখিকা স্রোতস্বীনি।প্রকৃতিতে বসন্তকে ঋতুরাজ বলা হয়। কি সুন্দর রুপ ধারণ করেছে প্রকৃতি। এই প্রকৃতি কত সুন্দর, বৈচিত্র্যময় অথচ রুহুলের সব টুকু জুড়ে কেবল বিরহ।
হাটছে রুহুল, এত গুলো বছরে রাস্তা গুলো পাকা হয়ে গিয়েছে। মসজিদ, পাঠশালা, হাসপাতাল সব কিছুতেই উন্নতি। আর এই সব কিছু করেছে রুহুল নিজেই।
পথে দেখা হলো মৌলভি সাহেবের সাথে। রুহুল কে দেখেই বললো,”আসসালামু আলাইকুম সিরাজী আব্বা, কেমন আছেন? “(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)
–“ওয়ালাইকুম আসসালাম। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তায়লা ভালো রেখেছে । আপনার কি অবস্থা?”
–“আছি ভালো আছি। তা আম্মার অবস্থা কেমন। সে কি আগের চেয়ে ভালো হইছে? ”
রুহুলের মুখ টা ছোট হয়ে গেলো। খুব সাধারণ ভাবেই বললো, “জি না , ওনার অবস্থা আগের চেয়েও খারাপ হয়ে গেছে। খুব শীঘ্রই শহরে নিয়ে যাবো ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু যেতে চান না তো এজন্য অনেক কষ্ট পোহাতে হয় আর কি ।”
–“হ্যাঁ সেইডা আমিও শুনছি। তয় একখান কথা কই শুরুতেই কবিরাজ দেখাইলে এতদিনে সুস্থ থাকতো।”
–“আমি এধরণের কাজে বিশ্বাসী নই।আমি যতদিন বেঁচে আছি ওনাকে ডাক্তারের চিকিৎসা করেই যাবো।”-
কথাটি বলেই রুহুল আবারো হাটতে শুরু করলো। পিছনে মৌলভি সাহেব রুহুলের অবজ্ঞায় মুখটি ছোট করে ফেললেন।
হাটতে হাটতে রুহুল চলে এলো মহিলাশালার সামনে।
টিনের গেইটের পরিবর্তে এখানে আজ লোহার বড় গেইট। উপরে স্পষ্ট লেখা “সিরাজী মহিলাশালা”।রুহুলের হৃদয়ের গতি বেড়ে গেলো মুহুর্তেই।এই সেই স্থান যেখানে কাকন কে প্রথম দেখেছিল রুহুল। শুভ্রপরীর মতো দেখতে সেই কাকন রুহুলের মনে ভালোবাসার প্রাসাদ তৈরি করে দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রাসাদে শেষ অব্দি আশ্রয় টুকু হলো না দুজনের।
রুহুল দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।
“রুহুলের প্রণয়ের শুরু হয়েছিল কাকন কে নিয়ে,
-কিন্তু রুহুলের বিরহের শুরু করেছিল ‘দেবী’! ”
_________________________
অতীতঃ~
চোখ খুলে সকালে ভালোবাসার মানুষের মুখ দেখতে পাওয়া আনন্দের। রোজ সকালে ঘুম ভেঙে কাকনের ঘুমন্ত মুখোশ্রী দেখলে দিন টি ভালো যাবে এমন ধারণাই রাখে রুহুল।
ঘুম ভেঙেছে তিরিশ মিনিটের অধিক। কিন্তু ঘুমন্ত কাকন কে দেখে রুহুলের সময়ের খেয়াল নেই।এই বিবিজান কে সারাজীবন দেখে গেলেও হৃদয়ের ক্ষুধা মিটবে না। রুহুলের ইচ্ছে করছে কাকন কে আদুরে ঘুম ভাঙিয়ে দিতে। রুহুল ইচ্ছে করে কাকনের ঘাড়ে কাকনের খোলা চুল গুলি দিয়ে শুরশুরি দিতে লাগলো।
ঘাড়ে শিরশির অনুভূতি হতেই কাকনের গভীর ঘুম নিমিষে ভেঙে গেলো। চোখমুখ খিচে চোখ খুলে তাকালো কাকন। হাসতে থাকা রুহুল কে দেখেতে পেলো কাকন। সাতসকালে রুহুল কে এভাবে হাসতে দেখে কাকনের ভালো লাগা অনুভব হলো। রুহুল যে তার দেখা সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ। রিতা ঠিক ই
বলেছে, “কাকনের ই কপাল”।
ললাটে রুহুলের অধরের ছোয়ায় ঘোর ভাঙলো কাকনের। রুহুল কাকনের গালে হাত রেখে
বললো, “সুপ্রভাত এবং ধন্যবাদ বিবিজান”
কাকন আস্তে করে বললো, “ধন্যবাদ কেন?”
রুহুল দুষ্টু হেসে উত্তর দিলো, “এত সুখের রাতের পর এত সুন্দর সকালে আমার সাথি হওয়ার জন্য। ”
রুহুলের কথা শুনে কাকন লজ্জায় রাঙা হয়ে গেলো। রাতের কথা মনে পড়তেই কাকন রুহুলের হাত ছাড়িয়ে উঠতে চাইলো। কিন্তু কাকন ব্যার্থ হলো।
রুহুল হাত ধরে ফেললো তারপর কাকন কে নিজের দিকে ফিরিয়ে বললো, ” এতো লজ্জা কেন পান লজ্জাবতী। লজ্জা পেলে আমার পবিত্রফুল কে যে আরো সুন্দর লাগে। তখন আমার এই লজ্জাবতী ফুলটাকে ছুয়ে দিতে ইচ্ছে করে।”
কাকন মাথা নিচু করে বললো, “ছ..ছাড়ুন, দেরি হয়ে যাচ্ছে আমার,কাজ আছে। ”
–“উহু,,আজকাল সময় ই দিতে পারি না আপনাকে, আর যতটুকু সময় পাই আপনি শুধু আমার থেকে দূরে যেতে চান কাজের বাহানা দিয়ে। ”
–“বাহ রে আপনার কাজ কাজ আর আমার কাজ বুঝি কাজ না। আপনি থাকুন গিয়ে আপনার কাজ নিয়ে আমি তো আর আপনার কেউ না”
–“হাহাহাহা,,আমার বিবিজানের বুঝি রাগ হয়েছে। বেশ এখন থেকে থেকে কাজ বাদ দিয়ে সারাদিন বুকে করে রাখবো কেমন।”
কাকন ইচ্ছে করেই বলল,”কেন আপনার এই বুকে রাখবেন কেন, কি আছে আপনার বুকে যে সেখানে রাখবেন শুনি?”(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)
রুহুল নিজের বুকে কাকনের মাথা নিয়ে বললো, “শুনতে পাচ্ছেন আমার হৃদয়ের ধ্বনি, প্রত্যেক ধ্বনি তে কেবল একটিই শব্দ ‘ ভালোবাসি বিবিজান’।”
কাকন মাথা তুলে চাইলো রুহুলের পানে। রুহুলের পাজরে হাত রাখলো। সত্যিই রুহুলের বুকে মাথা রাখলে কাকন সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা অনুভব করে।
রুহুল আবারো বললো, ” মায়ের পায়ের নিচে আপনার বেহেস্ত হবে কিন্তু আমার বুকে আপনার জন্য বেহেস্তর শ্রেষ্ঠ সুখ রেখেছি। একবার ভালোবেসেই দেখুন না বিবিজান, সকল সুখ আপনার পদতলে এনে দেবো।”
রুহুলের কথায় কাকনের চোখ বেয়ে নোনাজল বেরোলো। ও তো কেবল ঠাট্টার ছলে রুহুলকে বলেছিল।লেখিকা স্রোতস্বীনি। লোকটা এত ভালো বাসে কাকন কে। অথচ বিনিময়ে কাকন কিনা একটাবার মুখফুটে ভালোবাসার কথা বলতে পারছে না। কাকন রুহুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো, “এত কেন ভালোবাসেন আমায়?”
–“কেন ভালোবাসি জানি না। আমি শুধু এইটুকুই জানি আমি আপনাকে ভালোবাসি।ভালোবাসা হঠাৎ করেই মানবহৃদয়ে নিজের স্থান করে নেয়। এই আমিও আপনাকে অকারণেই ভালোবাসি বিবিজান । ”
কাকনের হঠাৎ সুভার বলা কথা গুলো মনে পড়লো। রুহুল কে ছেড়ে দিয়ে গায়ের আচল ঠিক করলো তারপর খোপা করে বিছানা থেকে নেমে বললো,”আব্বা ও তো আম্মাকে অনেক ভালোবাসতো, কিন্তু… ”
রুহুল কাকনের কথা শেষ না করতে দিয়েই মুখোমুখি দাড়িয়ে গেলো। কাকনের হাত নিজের বুকের বা পাশে রেখে বললো, “আমার এই হৃদয়ে কেবল আপনার ই স্থান বিবিজান।আমার দেহে প্রাণ থাকতে আপনি ব্যতীত এই হৃদয়ে আর কেউ স্থান পাওয়া তো দূর ছুতেও পারবে না”
কাকন রুহুলের বুকে অধর ছোয়ালো। তারপর নোনাজল ভড়া চোখ দুটি নিয়ে রুহুলের চোখে রেখে বললো,”আপনার এই বুকেই যেন আমার শেষ ঠাই হয় ”
________________________
সকালের সকল কাজ শেষ। সুভা আচার বানাচ্ছে। কাচা আমের আচার করে তা সংরক্ষণ করবে সারা বছর। তবে এই আচার সামিয়ার জন্য বানানো হচ্ছে। অল্প চিনি দিয়ে বেশি করে ঝাল দিয়ে। আর পাশে বসেই কাটাকাটি করছে কাকন। মহীবুলের মা মাছ কাটছে আর সাথে আছে রানু। মালেকা শাশুড়ির মাথায় তেল দিয়ে দিচ্ছে।
সুভা আচার নাড়ছে ঠিক ই কিন্তু আড়চোখে কাকন কে দেখছে। এই মুখখানা সুভা কে ভীষণ তৃপ্তি দেয়। হয়তো রুহুল এর জন্যই। সে বরাবরই রুহুল আর বিলাল কে নিজের হাত পায়ের বেড়ি মনে করে এসেছে। আর রুহুলের জন্যই নিজের সব টুকু ফিরে পাওয়ার সুযোগ হারিয়েছিল। যার কারনে রুহুল মায়ের ভালোবাসা খুব একটা পায় নি। কিন্তু রুহুল তার মাকে ভীষণ ভালোবেসেছে। সুভার ধারণা কাকন রুহুল কে ভালোবাসে যার জন্য রুহুল এখন সুখের মুখ দেখছে, হাসিখুশি থাকছে। সুভা মনে প্রাণে চায় ছেলের দাম্পত্য জীবনের সকল বাধা বিপত্তি যেন দূর হয়। আর দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়। হাজার হলেও নিজের নাড়ি কাটা সন্তান। ছোট নিশ্বাস ফেলে সুভা নিজের কাজে মন দিলেন।
সামিয়া কে দেখে বেশ অবাক হয় কাকন। এই মেয়েটা এত টক কিভাবে খায়। কাকন সামিয়া কে বললো, “তুমি এত টক কিভাবে খাও গো?”
সামিয়া খেতে খেতে বললো, “আমাকে সারাদিন রাত টক খাইতে দিলে আমি তাই খাবো। ”
–“এত কেন পছন্দ করো টক খেতে সেটাই তো
জানতে চাই? “(লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)
–“জানিনা তবে টক খাইতে আমার সেই ভাল্লাগে। জানো একবার আম গাছে উঠছিলাম আম পারতে ৪ মাস ভাঙা পাও নিয়া ছিলাম হাহাহাহা”
–“তুমি সত্যিই অদ্ভুত সামিয়া ”
–” আর তুমি আমার দেখা সবচেয়ে ভিন্ন মাইয়া ভাবিজান যে কি না টক পছন্দ করো না।যদিও খাও তাও মন মর্জি। ”
দাদিমা বললেন, “কাকন তুই একবার খালি পুয়াতি হ দেখবি তর ও সারাদিন চুকা খাইতে মন চাইবো”
সামিয়া বললো, “আপনিও কি পুয়াতি হইলে সারাদিন চুকা খাইছেন দাদিমা, আর আপনে নাকি ছয়বার পুয়াতি হইছিলেন?”
কাকন সহ সকলেই মুখিচেপে হাসলো। ছেলে বউ দের সামনে এমন কথা শুনে বিব্রত হলো দাদিমা।
দাদিমা সামিয়ার চুলে টান দিয়ে বললো,”শয়’তান ছেমরি। এই হেলালের মা তোমার এই মাইয়া পাইকা গেছে খালি বুড়া বুড়া কথা কয়।”
মালেকা মুখ চিপে হেসে বললো, “এই সামিয়া চুপ চাপ আচার খা, কথা কইস না তো। ”
মহীবুলের মা বললো, “হ্যা গো বউ বিয়ার তো মেলাদিন ই হইলো এখন একখান পোলাপান নেও, উটকি পারতি তো দেহি না তোমারে। ”
কাকন মাথা নিচু করে আবার কাজে মন দিলো। এর উত্তর যে তার কাছে নেই। ভীষণ লজ্জা পেলো এমন প্রশ্নে। সামিয়া কাকনের বিষয়টি বুঝতে পারলো। তাই কথা টি ঘোরানোর জন্য সামিয়া বললো, “আচ্ছা ভাবিজান আপনে কি খাইতে বেশি পছন্দ করেন। মিস্টি,ঝাল নাকি টক ?
–” মিস্টি আমার ভীষণ প্রিয়।”
–“আমারো ভালো লাগে।তবে টক বেশি ভাল্লাগে। আচ্ছা কোন মিস্টি বেশি পছন্দ আপনার ? ”
–“রসমালাই খেতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি।রসমালাই দিয়ে লুচি খেতে আমার দারুণ লাগে। মা আগে অনেক করে দিতো। ”
কাকনের কথায় সুভা কাকনের দিকে চাইলো। সুভার নিজেরও এই খাবার টি ভীষণ পছন্দের ছিল। মা করে দিলে পরিবারের সবাই মিলে প্রতিযোগিতা দিতো কে কয়টা খেতে পারে। কত সুন্দর দিন কাটতো তখন।
সামিয়া বললো, “ঠিক আছে আপনারে আমি রসমালাই এর ব্যবস্থা কইরা দিমু। আর বড়াম্মা লুচি বানিয়ে দিবো তখন খাইয়েন।”
কাকন নির্বিকারে বললো,” আমি আর কখনোই রসমালাই দিয়ে লুচি খাবো না সামিয়া।”
–“কেন? ” (লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি)
–“কেননা আমার বাবারও ভীষণ পছন্দের খাবার ছিল। যেহেতু বাবা নেই তাই আমি খেতে পারবো না।”
-“এইটা কি বলেন ভাবি, উনি নেই তো কি হইছে?”
–” সে তুমি বুঝবে না সামিয়া। যে খাওয়া শিখিয়েছে তাকে ছাড়া কিভাবে খাবো, আমার মুখে উঠবে না। ”
–“আপনি সত্যিই অনেক ভালো ভাবিজান”
সুভা কাকনের মুখ পানে চেয়ে রইলেন। বাবার প্রতি কতটা ভালোবাসা। মেয়েরা বোধহয় এমন ই বাবাই তাদের প্রথম প্রেম। সুভা কাকন কে পরখ করতে বললেন,” আমি যদি তোমার সাথে খাই খাবে?”
কাকন কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো সুভার দিকে। তারপর বললো, “আম্মা, আপনি আমার সাথে খেলে আমার সৌভাগ্য, তবে এই খাবার আমার মুখ তুললে পেট শান্তি পাবে, কিন্তু হৃদয়ে অশান্তি হবে। ক্ষমা করবেন। ”
সুভা কাকনের মাথায় হাত রেখে বললো, “বাবা কে ভীষণ ভালো বাসতে বুঝি?”
–” পৃথিবীতে বাবার আগে কাউকে ভালোবাসতে শিখিনি আম্মা। উনিই আমার প্রথম ভালোবাসার মানুষ ছিলেন। আর বাবার পরেই ছিলেন মা। ”
মালেকা প্রশ্ন করলেন, “তোমার বাপ-মায়ের নাম কি ছিল গো কাকন বউ?”
কাকন উত্তর দেবে ওমন সময় সিরাজী মঞ্জিলের আরেক কাজের মেয়ে তরিপা ছুটে এলো।যেন দৌড়ে এসেছেন হাপাচ্ছে খুব।তরিপা এসে সকলের উদ্দেশ্যে বললো, “আম্মারা তাড়াতাড়ি আহেন, দেহেন কারা আইছে? ”
তরিপার কথা শুনে সকলেই সেই দিকে মন দিলো। দাদিমা বললেন, “কেডায় আইছে?”
–“আপনারা আইসাই দেহেন আগে, শহর থিকা আইছে আর রুহুল দাদাভাই রে ডাক দেন।”
সকলেই কাজ ফেলে চললো দেখতে কে এসেছে।
আর তারাই বা কে আর কেনই বা রুহুলনকে
ডাকতে বলেছেন?
চলবে….
#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি
বিদ্রঃ দয়া করে কেউ কপি করবেন না। ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি ✍️