তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর পর্ব ৪

0
394

#তুমি_অন্য_কারো_সঙ্গে_বেঁধো_ঘর(০৪)
তামিম বাসায় ফিরলো রাত ১০টায়।অন্যদিন তামিমের জন্য নবনী ডাইনিং টেবিলে বসে অপেক্ষা করে, তামিম এলে একসাথে খায়।কিন্তু আজ আর অপেক্ষা করে নি।নিজের খাবার রাত ৮ টার মধ্যে খেয়ে রুমে গিয়ে বই নিয়ে বসে পড়েছে।
নবনীর মন আজ ভীষণ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।বিয়ে হয়েছে নবনীর ৩ বছর। এই ৩ বছরে নবনী জীবনের সব শখ আহ্লাদ বাদ দিয়ে দিয়েছে সবাইকে খুশি রাখতে।হাতে মেহেদী পরার খুব শখ ছিলো নবনীর,দুহাত ভরে কাঁচের চুড়ি পরতে ভালোবাসতো।ভালোবাসতো টানাটানা দুই চোখে গাঢ় করে কাজল দিতে।

নবনীর জন্য মেহেদি,চুড়ি,কাজল আনতে বাবার কখনো ভুল হতো না।নবনী বসে বসে সাজতো বাবা কুপির আলোয় মেয়ের দিকে তাকিয়ে নবনীর মা’কে ডেকে বলতো,”নবনীর মা দেইখা যাও তুমি,আমার ঘরে আল্লাহর ওই আসমানে চান্দ পাঠাইয়া দিছে।ও নবনীর মা দেইখা যাও আমার কুঁড়ে ঘরে এক রাজকন্যা বাস করে। আল্লাহ আমার মায়েরা বড় যতন কইরা বানাইছে রে নবনীর মা।আমার সবগুলা পোলামাইয়া এক একটা চান্দের টুকরা। ”

রাবেয়া বেগম সামনে আসতেন না।তবে নবনী মায়ের কান্নার শব্দ শুনতে পেতো।কে জানে হয়তো রাবেয়া ভয় পেতেন গরীব ঘরে এমন রূপ নিয়ে জন্ম নেওয়া মেয়ের ভবিষ্যতে সুখের কথা চিন্তা করে।

নবনীর বাবা গরীব হলেও তিনি সবসময় সন্তানের খুশির কথা আগে চিন্তা করতেন।নবনীর মনে আছে,বাবার ছোট একটা চায়ের দোকান আছে।ঈদের সময় বাবা দোকানের জন্য মাল না উঠিয়ে ৪ ছেলেমেয়ের,স্ত্রীর জন্য ঈদের কাপড় কিনতেন।

নবনীর মা রাবেয়া ভীষণ রাগ হতো এই স্বভাবের জন্য।কিন্তু নবনীর বাবা হাশেম আলী এসবে পাত্তা দিতো না।তিনি হেসে বলতেন,”আমার পোলামাইয়ারা নতুন কাপড় পইরা হাসিমুখে ঘুরতাছে এইডাই তো আমার জন্য ঈদের বড় আনন্দ। এই আনন্দ আমি পামু কই?
দোকানে লাখ টাকা বেচাকিনা কইরা কি এই আনন্দ কিনতে পারুম?”

রাবেয়া বলতো,”এরপর যে পোলামাইয়া না খাইয়া মরবো,সেই কথা কি ভুইল্লা গেছেন?”

হাশেম আলী ভুলে নি কিছু,ভুলতো না।কিস্তি থেকে টাকা তুলতো তারপর দোকানের জন্য মাল কেনার জন্য।বছর ধরে সুদসমেত সেই কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে করতে জীবন শেষ হয়ে যেতো।

নবনী যখন বড় হলো,বুঝতে শিখলো সব তখন থেকে আর ঈদের জামা গায়ে দেয় না।অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা শিশুরা অল্পবয়সেই বুঝদার হয়ে যায়। তেমনি নবনীরা চার ভাইবোন সবাই কম বয়সেই বুঝে গিয়েছিলো তাদের সংসারের আসল রূপ কেমন।
এরপর থেকে কেউ কখনো বাবার কাছে ভালো খাবারের,ভালো কাপড়ের আবদার করে নি।গ্রামের ছোট বাচ্চাদের পড়াতো চার ভাইবোন মিলে।নবনীর মনে আছে ক্লাস সিক্সে থাকতে সে সিক্সের অন্য এক মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতো।মাসে ২০০ টাকা বেতন পেতো।সেই টাকা পেলে নবনীর আনন্দের সীমা থাকতো না।বাবার হাতে তুলে দিতো সেই টাকা।চার ভাইবোন মিলে মাসে প্রায় ১ হাজার টাকার মতো পেতো বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে,আরবী পড়িয়ে।অভাবের সংসারে বাড়তি ১ হাজার টাকার মূল্য ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ জানে না।

হাশেম আলী চোখের সামনেই দেখলেন তার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কি ভীষণ বুঝদারের মতো কাজ করছে।প্রতিদিন নির্দ্বিধায় ডাল,শাক দিয়ে বিনা অভিযোগে খাবার খেয়ে উঠে যায়।হাশেম আলী তখনই ভেবে রাখেন,ছেলেমেয়েদের যেকোনো ভাবেই হোক লেখাপড়া করিয়ে যাবেন তিনি,নিজের শরীরের রক্ত বিক্রি করে হলেও।যাতে তাদের সন্তানদের এই অভাবের সাথে যুদ্ধ করে বড় হতে না হয়।

বাবার কথা ভাবতেই নবনীর বুক ফেটে কান্না এলো। কতোদিন বাবাকে দেখে না।হাশেম আলী মেয়েকে দেখতে এসেছিলেন ২ বছর আগে। তাহেরা নবনীর মা’কে সেদিনই ফোন করে বলেছেন হাশেম আলী যাতে আর তাদের বাসায় না আসে।আশেপাশের ফ্ল্যাটের লোকজন হাশেম আলীর পোশাকের দিকে তাকালেই না-কি বুঝে যায় তার দৈন্যতা। তাহেরার প্রেস্টিজে লাগে।প্রতিবেশিরা হাসাহাসি করুক এটা তাহেরা চায় না।

নবনীর সেদিন ইচ্ছে করেছিলো মরে যেতে।এ কথা ঠিক দুজন প্রতিবেশী তাহেরাকে জিজ্ঞেস করেছিলো উনি কে হন তাহেরার।তাহেরা নিজের সম্মান বাঁচাতে বলেছিলো তাদের গ্রামের বাড়ির পাহারাদার।

হাশেম আলী লিফট ব্যবহার করতে জানেন না বলে সিড়ি দিয়ে ৪ তলায় নবনীদের বাসায় এসেছিলো।সিড়িতেই অনেকে হাশেম আলীকে দেখে।এরকম অভিজাত ফ্ল্যাটে এরকম গেস্ট কারো আসে না।তাই কৌতুহলী হয়ে কেউ কেউ জিজ্ঞেস করেছে।

নবনী বলতে চেয়েছিলো উনি নবনীর বাবা,কিন্তু তাহেরা আর তামিমের চোখ রাঙানির সামনে বলতে পারে নি।

এসব ভাবতে ভাবতে নবনী নামাজের জায়নামাজ বিছিয়ে সিজদাহ্তে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।অনেকক্ষণ কান্নার পর নিজেকে শান্ত করে এক সিদ্ধান্ত নিলো। সেটা সে কাউকে বলবে না বলে ঠিক করলো।শুধু একদিন করে দেখিয়ে দিবে।

তাহেরা ছেলে বাসায় ফিরতেই খপ করে হাত চেপে ধরে লুবনার রুমে নিয়ে গেলেন।তারপর দরজা বন্ধ করে বললেন,”কাহিনি কি সোজাসুজি বল,কে ওই মেয়ে?”

তামিম তখন রাগের মাথায় যদিও কথাটা বলেছিলো কিন্তু সে চায় নি কখনো বাসায় এসব জানাজানি হোক। আমতাআমতা করে বললো,”আরে দূর মা,কি বলো,এরকম কিছুই না।আমার এক কলিগ আমাকে একদিন কল দিয়েছে এসব নিয়েই নবনী মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছে।আমাকে প্রতিদিন এসব নিয়ে কথা শোনায় তাই তখন রাগের মাথায় এই কথা বলে ফেলেছিলাম।”

রাবেয়া হেসে বললো,”তামিম,যেমন করে আমি জানি,তেমন করে তুই ও ভালো করে জানিস নবনী মিথ্যা কথা বলার মতো মেয়ে না।ও কখনো কারো নামে মিথ্যা বলে নি।আজকে লুবনা যা বলেছে ওসব মিথ্যা বলেছে এটা আমি যেমন বুঝি,তুই ও বুঝিস,লুবনাও জানে সেটা। আমার কাছে গোপন করিস না।তুই যদি চাস ওই মেয়েকে ও তোর সাথে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো আমি তোর বাবা বিদেশ চলে গেলে।সত্যি করে বল আমাকে তুই। ”

তামিম কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো,”আমার এক কলিগ আছে মা,নিতু।আমার ওকে ভালো লাগে,ওর ও আমাকে ভালো লাগে।মাঝেমাঝে কথা হয়।এমন না যে আমি সত্যিই ওকে বিয়ে করতে চাই বা ওকে না পেলে মরে যাবো এরকম কিছু না মা।”

তাহেরা ছেলের গালে চড় মেরে বললেন,”এরকম কিছু না মানে কি?
অবশ্যই ওই মেয়ের সাথে তোর বিয়ে দিবো আমি।নবনী হচ্ছে ফকিরের মেয়ে ফকির।তুই একবার ভাব তো,মাস শেষে বউয়ের ২৫ হাজার টাকা বেতন আমার হাতে তুলে দিবে!৫০০ টাকার ৫০ টা নোট!তুই চিন্তা করবি না বাবা,ওই ফকিরের মেয়ে ফকিরকে আমি রাখবো না। ”

তামিম কিছুটা ভয় পেলো।বাবা মা দুজনেই তামিমের প্রিয়। নবনীকে তার বাবা পছন্দ করে এনেছে। নিতুকে বিয়ে করলে বাবা ভীষণ মনে কষ্ট পাবেন। বাবাকে তামিম কষ্ট দিতে চায় না।তার লক্ষ্য তো নিতুকে কৌশলে একবার বিছানা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া। নিতু যতোই বলুক বিয়ের আগে না,কিন্তু তামিম জানে আস্তে আস্তে সে নিতুকে কনভিন্স করতে ঠিকই পারবে।

তাহেরা বেগম হাসিমুখে উঠে এলেন ছেলেকে খাবার দিতে।টেবিলে বসে তামিম খাচ্ছে,হামিদুর রহমান উঠে এলেন চা খাওয়ার জন্য। নবনীকে ডেকে বললেন,”আমাকে এক কাপ চা দিতে পারবে নবনী?”

কান্না করতে করতে নবনীর চোখ লেগে এলো কিছুটা। শ্বশুরের ডাক শুনে উঠে গেলো বাহিরে।রান্নাঘরে নবনী চা বানাচ্ছে তখনই হামিদুর রহমানের ফোন বেজে উঠলো।তাহেরা আড়চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো কে?

হামিদুর রহমান জবাব দিলেন পাত্রপক্ষের কল।তাহেরা খুশিতে ডগমগ হয়ে বললেন,”স্পিকার দিয়ে কথা বলেন।”
হামিদুর রহমান লাউড স্পিকার অন করে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে ঘটকের গলা ভেসে এলো। রান্নাঘর থেকে নবনী স্পষ্ট শুনতে পেলো ঘটক বলছে,”ভাইসাব,এই বিয়ে হবে না।ছেলের মেয়েকে পছন্দ হয় নি।”

তাহেরা বেগমের মাথায় যেনো বজ্রপাত হলো এই কথা শুনে। হামিদুর রহমান সাহেব ও কিছুটা দমে গেলেন।তারপর জিজ্ঞেস করলেন,”কেনো ভাই?আমার মেয়ের দোষ কি?”

ঘটক বললো,”এসব যদিও বলা ঠিক না তবুও বলছি,ছেলে তো আপনি দেখেছেন।মাশাল্লাহ,বড় চাকরি,দেখতে ও ভালো। কিন্তু ছেলে আপনার মেয়ের হাত পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখেছে মেয়ের মুখ ধবধবে সাদা কিন্তু হাত পা কালো। ছেলে একজন সরকারি চাকরিজীবী,সমাজের উঁচু শ্রেণীর মানুষ। অন্য ১০ খানে বউকে নিয়ে যেতে হবে,কালো বউকে দেখলে নাকি সবাই ছেলেকে নিয়ে হাসাহাসি করবে।এজন্য ছেলে নিষেধ করে দিয়েছে।তাছাড়া আপনার আশেপাশের মানুষকে ছেলের মা আপনার মেয়ের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছিলো,সবাই বলেছে আপনার মেয়ে নাক উঁচু স্বভাবের,ভীষণ দেমাগি। মানুষকে সম্মান দিতে পারে না। প্রায়সময় নিজের বড় ভাইয়ের বউয়ের সাথে ঝগড়া করতে শোনা যায়। ”

নবনীর মন খারাপ হয়ে গেলো এসব শুনে। আজকাল বিয়ের বাজারে এভাবে মেয়েদের কেনো মূল্যায়ন করা হয় তা নবনীর জানা নেই।সবার সবাইকে ভালো না লাগতে পারে তারজন্য এভাবে কেউ বলে না-কি! তাছাড়া লুবনার বয়স কতোই বা,২৩-২৪ বছর। এখনো ছেলেমানুষ।একটুতে রেগে গিয়ে চিৎকার করে,এসবকে আশেপাশের মানুষ এরকম সিরিয়াসভাবে নেয় কেনো?
এসব কথা পাত্রপক্ষকে বলতে হয় না-কি!
নবনী মনে মনে বললো,”আল্লাহ,লুবনার জন্য তুমি এর চাইতে ভালো কোনো পাত্রের ব্যবস্থা করে দাও।”

তামিমের আর খাবার খাওয়া হলো না।হামিদুর রহমান নবনীকে ডেকে বললেন চা না বানাতে। খেতে ইচ্ছে করছে না তার এখন আর।

নবনী ত্রস্ত পায়ে নিজের রুমের দিকে যেতে লাগলো। যাতে তাহেরা বেগমের সাথে দেখা না হয়।কিন্তু তাহেরা বেগম নবনীকে দেখেই বলতে লাগলেন,”সব দোষ এই ছোট লোকের মেয়ের।এই ছোট লোকের মেয়ে ভালো করে রান্নাবান্না করে নি,বেশি আইটেম রান্না করে নি তাই তো ওরা সম্বন্ধ নাকচ করে দিলো আমার মেয়ের খুঁত ধরে। আসল কথা তো আমার মেয়ে না।মূলত খাবারের জন্যই ওরা এসব বলেছে।
আমার মেয়ে কোনোদিন ও কারো সাথে ঝগড়া করে না।এই ফকিন্নির মেয়ের সাথে তো ও পারতে কথাই বলে না।এসব কানপড়া এই ফকিন্নির মেয়ে আশেপাশের বাসায় গিয়ে দিয়ে আসছে এজন্য মানুষ এসব বলতে পারছে।নয়তো ভেতরের খবর বাহিরের মানুষ কিভাবে জানবে?”

শাশুড়ীর চিৎকার শুনে দিশা বের হয়ে এলো। এসে এসব শুনতে পেয়ে মুচকি হাসলো। দিশা মাঝেমাঝে সবার ফ্ল্যাটে যায়,বাসার কথা উঠলে এসব সে নিজেই বলে দেয়।মিথ্যে তো কিছু বলে না।বাসায় শাশুড়ী ননদ যা করে তাই বলে।

নবনী এবার চুপ থাকতে পারলো না।রেগে গিয়ে জবাব দিলো,”মা,কাউকে কারো পছন্দ করতে হলে ১০ রকমের খাবার খেয়ে পছন্দ করতে হয় না।এক গ্লাস পানি দিলেও যাকে পছন্দ হবার তাকে পছন্দ হয়ে যাবে।আর আপনার বাসায় চাকরের কাজ করতে করতে আমি দম ফেলার সময় পাই না,সেখানে মানুষের বাসায় গিয়ে গিয়ে এসব নিয়ে আলোচনা করার সময় আমি কোথায় পাবো!”

তাহেরার ইচ্ছে করলো নবনীর গালে আরেকটা থাপ্পড় বসাতে কিন্তু হামিদূর রহমান সাহেব সামনে থাকায় সেই ইচ্ছে দমন করলো।

নবনী আর সহ্য করতে পারলো না।সোজা শ্বশুরের কাছে গিয়ে সবকিছু বললো যা যা ঘটেছে এখানে তিনি না থাকার সময়। এ ও বললো,এই বাসায় নবনী আর থাকতে পারবে না।তার বাবার বাড়ি গরিব হলেও সেখানে শান্তি আছে।ভালো খাবার খেয়ে এই অশান্তি ভোগ করতে করতে নবনী হাফিয়ে গেছে।এসব থেকে মুক্তি চায় সে।

হামিদুর রহমান সাহেব চমকে গেলেন এসব শুনে।মাথায় রক্ত উঠে গেলো তার।নবনীকে জিজ্ঞেস করলো,”ওই মেয়ের নাম্বার আছে তোমার কাছে? ”

নবনী বললো,”হ্যাঁ আছে বাবা।”

হামিদুর রহমান নাম্বার নিয়ে আসতে বললেন।তামিম বসে বসে দোয়া ইউনুস পড়তে লাগলো। নবনী হামিদুর রহমানের ফোনে নাম্বার তুলে ডায়াল করলো,রিং হতে লাগলো। তামিম বারবার মনে মনে বলতে লাগলো,”আল্লাহ ফোন যাতে না তোলে,নিতু ফোন তুলিও না প্লিজ।”

তামিমকে নিরাশ করে ওপাশ থেকে সুরেলা গলায় নিতু সালাম দিয়ে বললো,”কাকে চাই?”

চলবে…..

রাজিয়া রহমান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here