You_are_Mine season_2 Poly_Anan part_18

0
1586

You_are_Mine
season_2
Poly_Anan
part_18

নিজের রুমে মেঝেতে হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে ঈশান।এখন রাত প্রায় ১১ টা।চার পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হুইস্কি, ওয়াইন,শ্যাম্পেইনের বোতল।একের পর এক প্রতিটি বোতল সাবাড় করেছে ঈশান।তার চোখের নিচে একদম কালো হয়ে গেছে চুলগুলো এলোমেলো গালের চাপা দাড়িতে পরিপূর্ণ বাম,এবং ডান হাতে অসংখ্য কাটার চিহ্ন। তাকে দেখে বোঝা যায় সে নেশাগ্রস্ত একজন মানুষ।তার পাশে থাকা গিটারটি সে হাতে তুলে নেয়।তারপর কিছুক্ষন সেটির দিকে তাকিয়ে দুটো চুমু খায়।টুংটাং গিটারে বাজিয়ে নিজের গলায় সুর ধরে। কিন্তু পরিপূর্ণ সুর তার গলায় আসছে না। প্রতিদিনের মতো আবারো ভাঙ্গা গলায় গাইতে থাকে ঈশার গাওয়া সেই চার লাইন গান।এই চার লাইন গানেই যেন ঈশার অস্তিত্ব তার কাছে বেচেঁ আছে।
গানটি শেষ করেই আবার আপন মনে কিছুক্ষন হাসে। মনে পড়ে যায় ঈশার সাথে কাটানো একটি মূহুর্তের কথা, সেদিন ঈশা বলেছিলো,,

” ঈশান তুমি আমায় কতটা ভালোবাসো?
“ঈশা এটা কোন ধরনের প্রশ্ন তুমি যানো না আমি তোমায় ঠিক কতটা ভালোবাসি।আমি যানি মাঝে মাঝে তোমার মাথায় বোকা বোকা কান্ড ঘুর পাক খায় যেমন এখন, কিসব প্রশ্ন করছো তুমি? আচ্ছা তুমি আমায় কতটা ভালোবাসো ঈশা….?

ঈশানের কথায় ঈশা হাসতে থাকে। তারপর উওর দেয়।
” আমি তোমায় কতটা ভালোবাসি যানি না।শুধু এটা যানি যদি কখনো ভাবি তুমি আমার পাশে থাকবেনা, তোমার ভালোবাসা আমি পাবো না তখনি আমার দম বন্ধ লাগে।সব কিছু পাগল পাগল লাগে।কিন্তু আমি তো কখনো ঈশান শাহরিয়ারের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবো না। কারন ঈশান শাহরিয়ার কে আমি ছাড়লে সে তো আমায় ছাড়বেনা!
“তা ঠিক বলেছো ঈশু যান।
” একটা কথা বলি ঈশান, আমি তোমায় খুব ভালোবাসি,আমি তোমার সাথে কখনো বেইমানি করবো না যদি না পরিস্থিতির শিকার হই।
“আরে দূর পরিস্থিতি দেখবে অনুকূলেই থাকবে।

কথাটি ভেবেই আবারো জোরে জোরে শব্দ করে হেসে দেয় ঈশান। ঈশার আচরন ছিল সেদিন একদম অদ্ভুদ।সেই আচরনের পর থেকেই ঈশান এক একটি ধাপে ঈশাকে হারাতে শুরু করে।

” তুমি বলেছিলে আমার সাথে বেইমানি করবেনা। তুমি ঠিকি বেইমানি করলে আমার সাথে ঈশু জান।আমাকে একা রেখে তুমি হারিয়ে গেলে।কি গো তুমি বলেছিলে তোমার আমাকে ছাড়া নাকি দমবন্ধ লাগে, তাহলে এতটা বছর আমাকে ছাড়া তুমি কি করে আছো? আমার যে তোমাকে ছাড়া দিন কাটেনা রাত যায় না। তুমি কি যানো? তোমায় ঠিক কতটা মিস করি।ভালোবাসা গুলো এমন কেন?শুধু ব্যাথা দেয়। শারিরীক আঘাত ওষুধ দিয়ে সারিয়ে নেবো।ক্ষতটা ও মলম দিয়ে সারিয়ে তুলবো কিন্তু তোমাকে হারানোর ক্ষত আমি কিভাবে সারাবো?তুমি তো যানো ঈশা তোমাকে ছাড়া আমার ঠিক কতটা কষ্ট হয়? তাও চলে গেলে! ভালোবাসা গুলো এমন বিশ্রি কেন?ভালোবাসলেই কি কষ্ট পেতে হবে।তুমি বলেছিলে তুমি চলে গেলেও আমি তোমাকে ছাড়বো না ঠিকি ধরে রাখবো!
কিন্তু ধরে রাখতে আর পারলাম কই ঠিকি ফুড়ুৎ করে উড়াল দিলে।

ঈশান পকেট থেকে ছোট্ট একটা ছুরি বের করে আবারো বাম হাতটায় পোচ দেয়। ঈশানের কাছে এইসব পাগলামো বেশ ভালোই লাগে।টুপ টুপ রক্তের ফোটা গুলো গিটারের উপর পরতে থাকে।আর ঈশান সেই দিকে ক্লান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

রাসেল গুন গুন করতে করতে ঈশানে রুমে ডুকে কিন্তু ঈশানের অবস্থা দেখে সে পুরো স্তব্দ হয়ে যায়।দ্রুত দোড়ে এসে ঈশানের হাত টেনে ধরে।
“ওই তুই কি করছিস পাগল হয়ে গেছিস নাকি?(রাসেল)
” ছাড় আমাকে। তোকে এখানে এত রাতে কে আসতে বলেছে?
” আগে বল হাতের এই দশা কেন করেছিস। এই হাতটা যে তোর কত অত্যাচার সহ্য করছে তা আল্লাহই ভালো যানে।

রাসেল দ্রুত গজ কাপড় এনে ঈশানের হাত ব্যান্ডেজ করতে থাকে।
“ঈশান তুই দুইদিন আগেও আত্নহত্যা করার চেষ্টা করেছিস। এ কাজ গুলো একদম ঠিক না। আমায় দেখ অনুতো বেচে আছে কই আমি ও বেচেঁ আছি! ইভেন ভালোভাবেই বেচে আছি।কিন্তু ঈশা বেচেঁ নেই তুই কেন তার অপেক্ষায় আছিস।যতই তুই তার অপেক্ষায় থাক সে ফিরবেনা আর।প্লিজ আত্নহত্যা নামক অপরাধ করিস না। অন্তত পরিবারের দিকে তাকা।
রাসেলের কথা শুনে শব্দ করে হাসতে থাকে ঈশান। তারপর আবারো কান্না মাখা কন্ঠে বলে,

” আমি তাকে এতটাই ভালোবেসেছি যে, নিজেকে ভালোবাসার জন্য কিছু অবশিষ্ট রাখিনি। তাই আত্নহত্যা নামক অপরাধে আমি বার বার লিপ্ত হচ্ছি।

ঈশান কথাটি বলেই নিশব্দে কেদে দেয়।ঈশানের অবস্থা দেখে রাসেলের বুকের ভেতরটা খা খা করে উঠে।তার নিজেরো ভীষন কান্না পাচ্ছে। কিন্তু সে দুর্বল হলে ঈশানকে সামলানোর কেউ থাকবেনা তাই সে নিজের অনুভূতি গুলোকে গুটিয়ে নেয়।

“ঈশান ধর ঈশা যদি ফিরে আসে, আর তোর তখন মৃত্যু ঘনিয়ে আসে তখন কি করবি?কারন তোর মৃত্যুর কারন তুই নিজেই।দিনের পর দিন যে ছাইপাশ গিলছিস এগুলো প্রভাব তো তোর শরীরে পরবে আর যানিস তো নিশ্চিত মৃত্যু।

ঈশান আবারো ঠোট কামড়ে হাসে। তার গিটারটা হাতে তুলে নেয়। ঈশানের হাতে গিটারটা দেখেই চমকে যায় রাসেল
” কিরে এই গিটার টা এখনো আছে?
“হুম আছে। আমার ভালোবাসা গুলো আমি কখনো কাছ ছাড়া করিনা।তাই সযত্নে রেখে দিয়েছি লুকিয়ে।
” তোর এই গিটারের পেছনেও কিন্তু একটা করুন ইতিহাস আছে.
“হুম..
ঈশান ভাবতে থাকে কিছু বছর আগের কথা।

তখন তার বয়স ১৭.পড়ালেখার পাশাপাশি ঈশানের এক্সট্রা কারিকুলামে অসাধারন।সে গান ভালোবাসতো৷ গুন গুন করে সারাদিন গান গাইতো তাই তার মা তাকে এই গিটারটা কিনে দেন। ঈশান কিছু দিনের মধ্যে গিটার বাজানো শিখে যায়।তার গানের গলার প্রশংসা করতে থাকে তার মিস এবং স্যাররা।ছোট খাটো ফাংশান গুলোতে ঈশান গান গাইতো আর সবার ভালোবাসা সম্মান কুড়িয়ে নিতো।।অবসর সময় সম্পূর্ণ গানকে গুরুত্ব দিতো সে আর তার সাথে ছিলো রাসেল।বিষয়টি ঈশানের বাবা বেশ কিছু দিন থেকেই লক্ষ্য করছিল।

একদিন ঈশান যখন গান গাইছিল তখন হুট করেই কোথা থেকে এসে তিনি গিটারটা ছুড়ে ফেলেন।
সাথে সাথে রাগে ঈশানের চোয়াল শক্ত হয়ে যায়।কিন্তু তার বাবা বলে কিচ্ছু করতে পারেনি সে।তবুও অনেক বার হাতে পায়ে ধরেছিল ঈশান যেনো তাকে গান গাইতে দেওয়া হয় কিন্তু ঈশানের বাবা ঈশানকে সেদিন ধমক দিয়ে বলেছেন, টাকা ছাড়া দুনিয়াতে কিচ্ছু নেই এইসব ছেড়ে সে যেনো বাবার বিজনেস ধরতে নিজেকে যোগ্য গড়ে তোলে।আর সিকিউরিটিকে বলে গিটার টা বাইরে ফেলে আসতে।

সেদিন কিশোর ঈশানের উপর মায়া হয় সিকিউরিটির তাই তিনি গিটারটি লুকিয়ে রাখেন। পরবর্তীতে ঈশানকে ফেরত দেন।ঈশান সেই গিটার সযত্নে লুকিয়ে রাখে আজ এতো বছর।কিন্তু সেই ঘটনার পর থেকে ঈশান আর গান গায় নি।সেদিন যখন ঈশা গান গাইছিল তখন সে মনে মনে ভেবে রাখে ইউএসে আসলে ঈশাকে গিটার টা উপহার দেবে।কিন্তু তার ভাবনা ভাবনাই রয়ে যায়।

বুক চিড়ে বেরিয়ে আসে আরো একটি দীর্ঘ শ্বাস।ঈশানের চোখ বেয়ে পড়ছে অবাধ্য চোখের জল কনা।রাসেল বুঝতে পেরে ঈশানকে শান্তনার বানিতে বলে,
“ঈশান দেখ তুই তোর মত লাইফ লিড কর,তুই তোকে ভালোবাস প্লিজ নিজের ক্ষতি করিস না।।নিজেকে ভালোবেসে জীবনটা স্বাভাবিক ভাবে কাটা,কয়েকদিনের দুনিয়া উপভোগ কর।সব কিছু আগের মতো করে নে।আমরা আছি তোর পাশে প্লিজ! তুই আগের মত আগের জীবনে ফিরে আসতে পারবি , তুই শুধু সম্পূর্ন নিজেকে ভালোবাস।

ঈশান রাসেলের দিকে তাকিয়ে ফিচেল হেসে গিটারটা হাতে তুলে নেয়।টুংটাং শব্দ তুলে ভাঙ্গা গলায় গাইতে শুরু করে।

★সে আমারে আমার হতে দেয় না
সে আমারে আমার হতে দেয় না

কার কপালের কার কপালের টিপ কার হয়ে যায়।
চলে গিয়ে ভুল করেছে
ভুল করে সে ফুল হয়ে যায়
ভুল করে সে ফুল হয়ে যায়
সে আমারে আমার হতে দেয় না
সে আমারে আমার হতে দেয় না।।।

ঈশান এইটুকু গেয়ে একটা ঢোক গিলে।চোখটা বন্ধ করে নেয়। তার গাল বেয়ে চোখের পানি ঝরছে।কাকে বুঝাবে সে ঈশাকে নিজের অস্তিত্ত্বে মিশিয়ে নিয়েছে সে। আর সেই অস্তিত্ব ছাড়া সে বাচবে কি করে।

রাসেল দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে যায়। তার এখন কান্না পাচ্ছে ভীষন কান্না।সে এই কান্না ঈশানকে দেখাতে চায় না।যতই ঈশানকে বুঝাক ঈশা ছাড়া বেচে থাকতে।আসলে ভেতরে ভেতরে সে নিজেও অনুকে ছাড়া ভেঙ্গে চুরমার।সত্যি ঈশা ঈশানকে তার নিজের হতেই দেয় না।আর অনু দেয়না রাসেলকে।প্রান প্রিয় ভালোবাসাটাই এখন আফসোস হয়ে দাড়িয়েছে।কেন ভালোবাসতে গেলো তাদের এতোটা প্রান দিয়ে।কিছুটা তাদের জীবনের জন্য হলেও জমিয়ে রাখতো।

বাংলাদেশে ফজরের সময় একটি মেয়ে নামাযের মোনাজাতে বসে কাদছে। সে চিৎকার দিয়ে কাদছে।এই কান্না নতুন কিছু নয় প্রত্যক ফজরের নামাযে মেয়েটির চিৎকার করে কান্না পুরো বাড়ি হয়ে যায়।অনেকেই শুনতে পায়, আবার অনেকে হয়তো পায় না।তারা তীব্র ঘুমে বিভোর থাকে।মেয়েটি শুধু ডুকরে কেদেই যাচ্ছে কিন্তু মুখ দিয়ে আল্লাহর কাছে কোন অভিযোগ করছেনা।মোনাজাতের দুইহাতে যে চোখের পানি গড়য়ে এসে জমা হয়েছে সে পানিতেই যেন অভিযোগ, চাওয়া পাওয়া, ক্ষমা প্রার্থনার ইংগিত দিচ্ছে মেয়েটি।তার পাশেই নামায শেষ করে উঠে পরে আরেকটি মেয়ে।তার নিজেরো কান্না পাচ্ছে কিন্তু সে কাদছেনা।আর কত কাদবে?এই কয়েক বছর কেদেঁ কেঁদে চোখের পানির যেন সমাপ্ত ঘটেছে।কিন্তু না হুট হাট কোথা থেকে পানিরা জমা হয় আবারো গড়িয়ে পরে চোখের কার্নিশ বেয়ে ঠিক ঝরনার মতো।

নামাযে কান্নায় ভেঙ্গে পরার কিছুক্ষন পর আবারো নিজেকে স্বাভাবিক করে ছাদের দিকে পা বাড়ায় ভোরের আলো ফুটছে ছাদের চারিদিকে শীতল একটা পরিবেশ ছাদের কানির্শে দাঁড়িয়ে আছে তার প্রাণ প্রিয় বন্ধবী অনু।মেয়েটি এগিয়ে যায় অনুর দিকে,

“কিরে একা দাঁড়িয়ে আছিস কেন?
” আমার ভালো লাগছে নারে(অনু)
“চল নাস্তা বানাই। আবার কাজে যেতে হবে আমাদের।
” আমাদের জীবন কি আর স্বাভাবিক হবেনা ঈশা..!
সঙ্গে সঙ্গে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকায় মেয়েটি।
“এই কে ঈশা, তোকে বলেছিনা আমি ইরা৷! ঈশা মরে গেছে। ঈশা সেই সাড়ে তিন বছর আগেই মরে গেছে।
” দেখ তুই ইরা,হিরা যাই নাম দিস তুই কিন্তু আমার কলিজার ঈশা। এটা তো অস্বীকার করা যায় না।
“তুই কি এখন সারা দুনিয়া করবি ঈশা বেচেঁ আছে সে এখানে।
” এভাবে আর কতদিন.? কতদিন এমন ছন্ন ছাড়া থাকবি তুই?
“যত দিন আমার নিশ্বাস আছে?

ইরা বড় বড় পা ফেলে চলে যায়।আর অনু তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে শুধু চোখের জল ফেলে।

ইরা এই এলাকায় আছে তিন বছর হতে চললো।পর্দাশীল একটি মেয়ে। এলাকায় তার বেশ সুনাম।কখনো কেউ এই মেয়েটির মুখ দেখেনি। সর্বদা পর্দার ধারা নিজেকে আবব্ধ করে রাখে।বাড়ির মালিক জাহিদ আর ছেলে জারিফ, তার স্ত্রী রুমনা এই তিনজন নিয়ে তাদের পরিবার। তাদের তিন তলার একটি বাড়ি।নিচের দিক টায় সম্পূর্ণ ভাড়া দোতালায় মালিক রা এবং তিনতলার এক কোনায় ইরা আর অনু থাকে।জাহিদের এলাকায় একটি প্রাইমারি স্কুল আছে। এছাড়াও তার নিজিস্ব ব্যবসা আছে আর সেই ব্যবসার তদারকি করেন তার ছেলে জারিফ।আর ইরাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্কুলের বাচ্চাদের প্রতিদিন দুই/তিনটে করে ক্লাস নেওয়ার জন্য।মূলত ইরা জোর করেই কাজটি করতে চেয়েছে একা ঘরে বসে থেকে আর কত দিন থাকা যায় সে না হয় ছোট্ট একটি কাজ করে তাদের দুইজন মানুষের সংসার আগলে রাখবে।

এভাবেই প্রতিদিন দুটো মেয়ের দিন কাটছে।সামনা সামনি দেখতে তাদের ছন্নছাড়া না মনে হলেও ভেতরের দিকটায় তাদের নিজেদের কাছে নিজেদের অসহায় লাগে।সত্যি দুনিয়ার বুকে এই দুটো মানুষ সত্যি অসহায়।

ঈশান ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে। কিন্তু নিচে নেম যা দেখে তাতে তার ভ্রু কুচকে মুখে বিরক্তির রেখা টেনে আবারো নিজের রুমে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।
পেছন থেকে ঠিকি তাকে ডেকে উঠে সেই ব্যক্তিটি।
“কিরে ঈশান আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিস?
” ন.না ফুফু(জড়ানো কন্ঠে)
“তাহলে উপরে ফিরে যাচ্ছিস কেন?
ঈশান বিরক্ত হয়ে কথা না বাড়িয়ে নিচে নেমে আসে।
” কিরে ঈশান তোর এই অবস্থা কেন মুখের অবস্থা পুরো আফ্রিকার জঙ্গলের মতো।তুই কি শেভিং করিস না? এত পাগল কেউ হয় দেখ যে যাওয়ার সে গেছে এইসব পাগলামো ছাড় আর নিজেকে ভালো করে নে।
“আর কিছু বলবে তুমি ফুফু।
” বলার অনেক কথাই আছে কিন্তু তুই কি শুনবি? আমি যানি শুনবিনা তাই শুধু শুধু তোকে বলে লাভ নেই!
ঈশান তার মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নেয়।
“কিরে বিয়ে শাদী করবি তো নাকি?মেয়ে খুজবো না কি!
” আমি যাচ্ছি আমার এখন কথা বলতে ভালো লাগছেনা।(ঈশান)
“ঈশান তোমার ফুফু তোমায় কিছু জিজ্ঞেস করছে(আবিদ)
আবিদের কথা শুনে ঈশান দাঁড়িয়ে যায়। আর বিরক্তকর দৃষ্টিতে তার দিকে তাকায়।মহিলাটি বুঝতে পারে ঈশান ক্ষেপে যাচ্ছে তাই ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলে,
” যারে তুই তোর রুমে যা। আমি তোর সাথে পরে কথা বলে নেবো..!

ঈশান দ্রুত উপরে চলে যায়।তার ঘা গুলিয়ে উঠছে এই মহিলাকে তার কিছুতেই সহ্য হয় না কিন্তু কেন হয়না তার সঠিক ব্যাখ্যা সে যানেনা।শুধু যানে এই মহিলাকে তার বিরক্ত লাগে কিন্তু তার পাপার আদরের বোন কিছু বলার সাহস নেই ঈশানের।

আবিদ তার বোনের দিকে তাকিয়ে বলে,
” লিপি আয় বসে কথা বলি! সুলতানা আমাদের জন্য কফি নিয়ে এসো।

ঈশানের বাবার একমাত্র বোন লিপি।তার বিয়ে হয়েছে ইউএসেই। দুই মেয়ে আর হাজবেন্ডকে নিজেই তার সংসার। লিপি ঈশানের বাবার খুব আদরের বোন।

গত ১১ ঘন্টা থেকে ঈশানের কোন খোজ নেই! সে লাপাত্তা। ঈশানের মা ডুকরে কাদছেন তার বাবা অফিসের মিটিংএ অন্য একটি এলাকায় আছেন। আর সুলতানার পাশে লিপি বসে বসে এক মনে সুলতানাকে বকে যাচ্ছে।
“কি ছেলে জন্ম দিলে ভাবি!বাবা মায়ের কথা ভাবেনা।বউ পাগল! এইসব ছেলেকে কেন যে এখনো তোমরা নিজের কাছে বেধে রেখেছো আমি হলে ত্যাজ্য করে দিতাম যতসব।
লিপি উঠ চলে যায় নিজের রুমে।

এদিকে রাসেল প্রায় পাগল হয়ে গেছে কোথাও ঈশান নেই। রাস্তার এককোনে হাটু মুড়ে কাদতে বসে সে ইউএসে এখন রাত কিছু মানুষজন হাটা হাটি করছে রাসেল সেইদিকে তাকিয়েই কাদছে যদি দৃষ্টির অগোচরে হলেও ঈশান তাকে দেখতে পায়।হুট করেই রাসেলের নাম্বারে একটি কল আসে।ফোনটি হাতে নিয়েই সে স্তব্দ হয়ে যায়। বাংলাদেশি নাম্বার! অনু ফোন করেছে নাকি?
দ্রুত রিসিভ করে কানে নিয়ে সে সবচেয়ে বড় শক টা খায়।ফোনের অপর পাশে ঈশান….!

” হ্যালো রাসেল!
“হ্যালো, এই রাসেল!
” রাসেলের বাচ্চা কথা বল(দাতে দাত চেপে)
“ইই.ঈশান তুই কোথায়? (ঢোক গিলে)
“বাংলাদেশে!
” কি?তুই বিডিতে কেন গিয়েছিস?
“অনেকদিন ভেবেছি আসবো কিন্তু আজ যখন দেখলাম ফুফি বাড়িতে আর সবাই ফুফিকে নিয়ে ব্যস্ত সে সুযোগে কাজে লাগিয়ে চলে এসেছি!(ঠোঁট কামড়ে হেসে)
রাসেলের বুকের ভেতরটায় মারাত্নক ঝড় শুরু হয়ে গেছে মানে কি বাংলাদেশে ঈশান!
” আয়া আমি আসছি ঈশান খবরদার উলটা পালটা কিছু করবিনা!
“উলটা পালটা তো আমি তখন করবি যখন তুই আমাকে নেওয়ার জন্য ফাদঁ পেতে রাখবে! (ঠোঁট কামড়ে হেসে)
” কি করবি তুই?
“সুইসাইড…..!
#চলবে……

এক পর্বে তিন ধামাকা দিলাম?
★ঈশা বেচে আছে!
★লিপি ফিরে এসেছে!
★ঈশান বিডিতে!
তোমাদের প্রান প্রিয় লিপি ফিরে এসেছে সবাই তাকে অভিনন্দন যানাও..!?
?পর্বটা কেমন হয়েছে অবশ্যই যানাবেন।

?হ্যাপি রিডিং…..!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here