সুপ্ত বাসনা পর্ব ৬

0
1329

#সুপ্ত_বাসনা
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ৬

“আমি জানি,আমি ফেরেশতা নই,তবুও আমার কিছু আশা-আকাংখা আছে।” ইলহান সাহেব নিশ্চুপ,আর একটুও কথা বাড়াননি ছেলের সাথে।ইমান নিজের কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে মিম’কে ফোন করে বলে,
– “কোথায় তুমি ব্রো? আমার কিছু জরুরী কাজ আছে।” মিম হাতিরঝিলে বসে বসে আইসক্রিম খেতে খেতে ইমান’কে বলল,
– “ক্ষমা করবেন,স্যার! আমি আজ অনেক দিন পর ঘুরতে এসেছি নিজের গার্লফ্রেন্ডের সাথে।” ইমান বাঁকা ঠোঁটের হাসি দিয়ে বলে,
– “হ্যাঁ,ভাই! তোমার কপাল,এতোকিছুর পরেও তোমার গার্লফ্রেন্ড তোমাকে’ই ভালোবাসে।” মিম মিটিমিটি হেসে ইমান’কে বলে,
– “জ্বি,স্যার! এখন রাখি? আপনি একটু সাবধানে চলাফেরা করবেন রাস্তাঘাটে।”
– “ওঁকে,বাদদেও; এনজয় করো মিহ! আজকে দিন টাকে।” মিম মনেমনে ব’লে,
– “হ্যাঁ,উল্লুক! সে আর বলতে? পার্লারে যাবো,হেয়ার স্পা করবো আর কাশবনে যাবো ঘুরতে আমার প্রিয় বান্ধবীদের সাথে।” এদিকে মিম’কে ছাড়া, সারাটা দিন ইমানের খুব ব্যস্ততায় কেটে গেছে।রুহুল আমিন’কে ইমানের একটু ও পছন্দ নয় আর আজ সেই মিমের সব কাজ গুলো করে দিয়ে গেছে।মিম ঘুরেফিরে সন্ধ্যায় বাসায় এসে দেখে,
ইমান ফ্রেশ না হ’য়েই বিছানায় শুয়ে পরেছে আলগোছে।মিম গিয়ে কি মনে করে ইমানের গায়ে নিজের হাত ছোঁয়া তেই ইমান ওকে বলে,
– “মিহ! আমার কাঁধ টা একটু ম্যাসাজ করে দেবে? উফফ,আর শুয়ে থাকতে কিছু তেই ভালো লাগছে না এভাবে।অফিস থেকে ফরার পর থেকেই বাম পাশ টায় অসহ্য ব্যাথা করছে।” মিম ইমানের কাঁধ ম্যাসাজ করে দিতে দিতে ওকে বলে,
– “মনে হয় স্যার! গতকাল রাতে আপনার ঘুমতে কোনো অসুবিধে হয়েছে?” ইমান বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে মিম’কে বলে,
– “হুমম,কে যেন আমার বিছানা গুছতে এসে নরম বালিশের বদলে শক্ত বালিশ রেখে দিয়েছে?”
– “আপনি আমাকে ডেকে নিতে পারতেন? আমি বদলে দিতাম,আজকাল আপনার কি যে হয়েছে?” ইমান ঢলতে ঢলতে বাথরুমে গিয়ে মিম’কে বললো,
– “তেমন কিছু না,মিহ! ও জাস্ট আমায় প্রেম রোগে ধরেছে।” মিম চোখ বড়সড় করে মনেমনে বলে,
– “কি আশ্চর্য? এই….নতুন মেয়ে টা আবার কে?” ইমান বাথরুম থেকে বাথ টাওয়াল গায়ে জড়িয়ে এসে মিম’কে,
– “কেউ না ইয়ার,জাস্ট কিডিং হে হে হে।” মিম ইমান’কে ওই….অবস্থায় দেখে দু’হাত দিয়ে নিজের চোখ চেপে ধরে বলে,
– “আমি গেলুম স্যার! বড্ড বেশি ঘুম পাচ্ছে।” ইমান হঠাৎ মিমের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের নগ্ন শরীর মুছতে মুছতে বলল,
– “তোমার মেশিন অচল থাকা স্বত্তেও,তোমার গার্লফ্রেন্ডের এতো প্রেম? বিশ্বাস করো আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে সেই মহান মহীয়সী নারী’কে।” মিম তখন আমতা আমতা করে ইমান’কে বলে,
– “স্যার! আপনা’কে দেখালেই,আমার ডিভোর্স কনফার্ম আর তাই আমি দেখাতে চাচ্ছি না আপনা’কে।” ইমান হাসতে হাসতে নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে মিম’কে বলে,
– “তুমি না ছেলে? তাহলে কেন চোখ ঢেকে রেখেছ দু’হাতে?” মিম কয়েক পা পিছিয়ে গিয়ে বলে,
– “স্যার! আপনি হয়তো জানেন না,আমাদের ইসলামের পুরুষের সৃষ্টি সংযত রাখতে বলা হয়েছে আর জেনাকারির জন্য কঠিন শাস্তির বিধান করা হয়েছে।আপনা’কে আমি জানি না ঠিক কতটুকু বলে বোঝাতে পারবো,তবে আজ আমি কিছু হাদিস বলে শোনাতে চাই আপনাকে,
– “ইসলামে যিনা, ধর্ষণ, সমকামিতা মারাত্মক অপরাধ এবং তার জন্য আলাদা আলাদা শাস্তির বিধান ও রয়েছে।আল্লাহ তাআ’লা বলেন,তোমরা জিনার ধারে কাছেও যেয়ো না।কারণ এটি একটি লজ্জাজনক ও নিকৃষ্ট কর্ম, যা অন্যান্য নিকৃষ্ট কর্মের পথ খুলে দেয়।’ (সূরা: ১৭ (আল-ইসরা/বনি ইস্রাঈল), আয়াত: ৩২)।
ইসলামে দৃষ্টিতে যিনা, ধর্ষণ, সমকামিতা, অনাচার, পশুকাম সুস্পষ্ট হারাম ও শিরক এবং হত্যার পর বৃহত্তম অপরাধ।পবিত্র আল কোরআনে উল্লেখ করা আছে, “যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে। কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা: ফুরকান, ৬৮-৭০)। আল্লাহ তাআ’লা বলেন, ” তোমরা ব্যভিচারের ধারে কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।” (সূরা: ইসরা, আয়াত: ৩২)।
যিনা বা জিনা হলো অবিবাহিত দুইজন মানুষের মধ্যে যৌনক্রিয়া।ব্যুৎপত্তিগতভাবে,যিনা হলো ইসলামি বৈবাহিক নিয়ম অনুযায়ী পরস্পর অবিবাহিত একাধিক মুসলিমের মাঝে অবৈধ যৌন সম্পর্ক বিষয়ক একটি ইসলামি নিষেধাজ্ঞা।বিবাহোত্তর যৌনতা এবং বিবাহপূর্ব যৌনতা, যেমন:- পরকীয়া, (পারস্পারিক সম্মতিতে বিবাহিতের অবৈবাহিক যৌন সম্পর্ক)। ব্যভিচার,(দুজন অবিবাহিতের পারস্পারিক সম্মতিতে যৌনসঙ্গম), সমকামিতা (সমলিঙ্গীয় ব্যক্তিদ্বয়ের পারস্পারিক সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক), অনাচার (পরিবারের সদস্য বা অবিবাহযোগ্য রক্তসম্পর্কের ব্যক্তির সঙ্গে যৌনসঙ্গম), পশুকামিতা (অমানব পশুর সঙ্গে যৌনসঙ্গম) এবং ধর্ষণ (জোরপূর্বক অবৈবাহিক যৌনসঙ্গম) এর অন্তর্ভুক্ত।যিনা কবিরা গুনাহ যা তাওবাহ ব্যাতিরেকে মাফ হয় না।কোরআন শরিফে বলা হয়েছে, ”লা তাকরাবাল যিনা’ যার অর্থ ‘তোমরা যিনার ধারে-কাছেও যেও না।”
প্রাচীন অপসংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় ইসলামের প্রাথমিক যুগে একজন বিবাহিত বা অবিবাহিত মুসলিম পুরুষ তার নিজ মালিকানাধীন কোনো ক্রীতদাসীর সঙ্গে উক্ত ক্রীতদাসীর সম্মতিতে অথবা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন ক্রিয়াকলাপ করতে পারত এবং এ ধরনের যৌনতা জিনা হিসেবে গণ্য হত না। পরবর্তীকালে এই…. প্রচলন চিরকালীন রহিত করা হয়।কারণ ইসলামে জিনা একটি হুদুদ আইনের শাস্তিযোগ্য পাপ অথবা আল্লাহর বিরুদ্ধাচারকারী একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।কোরআন এবং হাদিসসমূহে এটি উল্লেখিত রয়েছে।কোরআনের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, যেকোনো প্রকারের যৌন ক্রিয়াকলাপ যা বৈধ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ব্যতীত সম্পাদিত হয় সেগুলো জিনা বলে গণ্য হবে, এবং তা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য সমানভাবে শাস্তিযোগ্য।সমকামমূলক যৌনক্রিয়াও যিনা; কেননা ইসলামে দুজন সমলিঙ্গীয় মানুষের মধ্যে বিবাহ অনুমোদন নেই।কোরআনের বেশ কয়েকটি জায়গায় জিনা সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রথমটি হলো কোরআনের সাধারণ নিয়ম যেখানে মুসলিমদের জিনায় লিপ্ত না হতে আদেশ দেয়া হয়েছ।এছাড়াও,কোরআনে সর্বপ্রথম সূরা নিসায় জিনার শাস্তি সম্পর্কিত সাময়িক অস্থায়ী নির্দেশনা অবতীর্ণ করা হয়েছে,সেখানে বলা হয় “আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন পুরুষকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ করে রাখ, যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে তুলে না নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোনো পথ নির্দেশ না করেন।” যার মানে দাঁড়ায়, তোমাদের মধ্যে যে দুজন সেই কুকর্ম বা ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর, অতঃপর তারা যদি উভয়ে তওবা করে এবং অনুশোচনা,অনুতাপ করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চই আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু।’(সূরা: নিসা, আয়াত: ১৫-১৬।” এগুলো ছাড়াও ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর।আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক।মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। (সূরা: ২৪ (আন-নুর), আয়াত: ২)।কোরআনে আরো বলা হয়েছে,
কোরআনের পর ইসলামের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পাণ্ডুলিপি উৎস হাদিসে; হাদিসে জিনাকে সঙ্গায়িত করা হয়েছে সব প্রকারের বিবাহবহির্ভূত যৌনসঙ্গম হিসেবে।
আবূ হুরায়রা সুত্রে নবী মুহাম্মদ (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, ‘আদম সন্তানের ওপর যিনার যে অংশ লিপিবদ্ধ আছে তা অবশ্যই সে প্রাপ্ত হবে। দু-চোখের যিনা হলো, নিষিদ্ধ যৌনতার প্রতি দৃষ্টিপাত করা, দু’কানের যিনা হলো শ্রবণ করা, রসনার যিনা হলো কথোপকথন করা, হাতের যিনা হলো স্পর্শ করা, পায়ের যিনা হলো হেঁটে যাওযা, অন্তরের যিনা হচ্ছে আকাংখা ও কামনা করা। আর যৌনাঙ্গ অবশেষে তা বাস্তবায়িত করে অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে।’(সহিহ বুখারি, ৮: ৭৭:৬০৯, সহিহ মুসলিম, ৩৩: ৬৪২১)।হাদিসে জিনার শাস্তির বর্ণনা এসেছে জনসম্মুখে বেত্রাঘাত এবং পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড হিসেবে, এটি পাওয়া যায় মূলত হাদিসের ‘কিতাব-আল হুদুদ’ নামক সংকলিত খণ্ডাংশে।

‘উবাদা বিন আস-সামিত বর্ণনা করেন: আমি আল্লাহর রাসূলকে বলতে শুনেছি, আমার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর।আল্লাহ সেসব নারীদের জন্য আদেশ জারি করেছেন।যখন একজন অবিবাহিত পুরুষ একজন অবিবাহিত নারীর সঙ্গে ব্যভিচার করে, তাদেরকে একশত বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য নির্বাসন পেতে হবে। আর বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে বিবাহিত নারীর ব্যভিচারের ক্ষেত্রে, তাদেরকে একশত বেত্রাঘাত এবং পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করতে হবে। (সহিহ মুসলিম, ১৭)

আল্লাহর রাসূল বিবাহিত ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীকে পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি প্রদান করতেন এবং, তাঁর পরে, আমরাও পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি প্রদান করতাম, আমি ভয় করি যে কালের অতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে, মানুষ হয়তোবা এটি ভুলে যাবে এবং হয়তো বলবে, আমরা আল্লাহর কিতাবে পাথর নিক্ষেপের শাস্তি খুঁজে পাইনি, এবং আল্লাহর নির্দেশিত এই কর্তব্য পরিত্যাগ করে বিপথে যাবে। পাথর নিক্ষেপ হলো আল্লাহর কিতাবে দেয়া ব্যভিচারী বিবাহিত পুরুষ ও নারীদের জন্য ধার্যকৃত একটি দায়িত্ব যখন তা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়, অথবা যদি গর্ভধারণ ঘটে, অথবা যদি দোষ স্বীকার করা হয়। (সহিহ মুসলিম, ১৭: ৪১৯৪)। এছাড়াও আরো অনেক কিছু সুস্পষ্ট ভাবে আমাদের ইসলামী শরী’য়তে উল্লেখ করা আছে।স্যার! আপনি যে গুলো করে বেড়াচ্ছেন,সে গুলো একদম ঠিক না।আমি কি করে বোঝাই আপনা’কে?” ইমান কিছুক্ষণ চুপ থেকে মিম’কে বলে,
– “তুমি এখন আসতে পারো,মিহ! আমার কিছু জরুরী কাজ আছে।” মিম দাঁড়ায় নিঃ; দৌড়ে নিজের ঘরে চলে আসে।ইমান মিসেস রাইমার হাতে ভাত খাচ্ছিলো,তখন হঠাৎ মিমের বলা কথা গুলো ইমানের কানে বেজে ওঠে।ইমান এদিক-সেদিক তাকিয়ে দেখে মিম কোথায় নেই,ভাবল,
– “নিশ্চিত ঘুমিয়ে পরেছে।” মাঝরাতে হঠাৎ ইমান নিজের বিছানা ছেড়ে উঠে এসে মিমের ঘরের দরজা ধাক্কাতে থাকে।মিম কোনো মতে উইগ টা লাগিয়ে বাহিরে এসে ঘুম ঘুম চোখে ইমান’কে জিজ্ঞেস করে,
– “স্যার! যে? কি হয়েছে? কি হলো? এতো রাতে?” ইমান দেওয়ালে সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে মিম’কে বলে,
– “তেমন কিছু হয়নি,মিহ! আসলে আমার একা-একা ঘুম আসছে না আজ রাতে, তুমি প্লিজ শুতে চলো না মিহ! শুতে চলো না প্লিজ আমার সাথে।” মিম না চাইতেও তখন ইমানের ঘরে শুতে চলে যায় তার সাথে।বিছানায় এক পাশে মিম আর অন্য পাশ ইমান দখল করে আছে; কারো মুখে কোনো শব্দ নেই, শোয়ার পর মিম মাঝখানে বালিশ দিয়ে রাখে আর তাই দেখে ইমান হঠাৎ করেই হাসতে থাকে।হাসতে হাসতে বলে,
– “মিহ! তোমার পুরুষত্ব নিয়ে আমার সত্যিই সন্দেহ আছে।” মিম বিরক্ত হয়ে ইমান’কে বলল,
– “থাকুক না স্যার! আপনি ঘড়িতে দেখেছেন ক’টা বাজে?” ইমান বিছানায় উল্টি-পাল্টি করতে করতে খেয়াল করে দেখে,মিম’কে দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনো মেয়ে তার পাশেই শুয়ে আছে।ইমান মিটিমিটি হেসে মনেমনে বলে,
– “কি ঢং রে বাপু? কি করতে মাঝে বালিশ দেওয়া লাগে? আমি ‘গে’ নই বন্ধু,যে খেয়ে ফেলবো তোমাকে।”

অতঃপর ভোররাতে,আজানের শব্দে মিমের ঘুম ভেঙে যায় সাথে সাথে; পরক্ষণেই, সে পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে ইমান নিজের ডান হাত রেখেছে ওর বুকে।বেচারি লজ্জায় শেষ,
মনে হচ্ছে যেন এখুনি তার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে।ভেবেই পাচ্ছে না সে,যে এখন কি হবে? ঠেলাঠেলি করেও বিশেষ কোনো লাভ হয়নি,ইমান নিজের মতোই ঘুমিয়ে আছে।তারপর মিম বাধ্য হয়ে এক রকম ধাক্কা মে’রে ইমান’কে ফেলে দেয় বিছানা থেকে।ইমান হঠাৎ এভাবে বিছানা থেকে পরে গিয়ে আহাম্মকের মতো তাকিয়ে থাকে মিমের দিকে,মিমের মুখে কোনো কথা নেই,সে গাল ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে ইমানের দিকে।ইমান কিছু বলতে যাবে,তখন মিম বলে ওঠে,
– “ভালো হয়েছে স্যার! খুব ভালো,আপনি পরে গেছেন বিছানা থেকে; আপনার জন্য এটাই ঠিক,হ্যাঁ,এটাই ঠিক আছে।”
– “আগে বলো,মিহ! তুমি কেন লাথি মে’রে ফেলে দিলে আমাকে?”
– “আজ্ঞে স্যার! আপনি কেন হাত রেখেছিলেন আমার বুকে? আপনার লজ্জা করে না? কোনো হাদিস শুনিয়ে দেখছি লাভ নেই আপনাকে আর হ্যাঁ,আমি লাথি কোই মারলাম স্যার? শুধু ধাক্কা মে’রে ফেলে দিয়েছিলাম আপনা’কে।” ইমান এইবারও প্রথমবারের মতো আহাম্মক হয়ে তাকিয়ে আছে মিমের দিকে,তার মুখে এবারো কোনো শব্দ নেই,সে শুধু হাসতে হাসতে উঠে চলে যায় ইমানের ঘর থেকে।

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here