You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_17
“ঈশা তুমি কি আমার কথা শুনবেনা কখন থেকে ডাকছি তোমায়!
” না শুনবো না। আমি কতবার বলেছি দেয়ালে আমাদের তিনটে ছবি হবে কিন্তু তুমি পাচঁটা ছবি দিলে কেন?
“দেখো পাচঁটা ছবি দেয়ালে কত সুন্দর মানিয়েছে!
” যাই হোক আমি যেহেতু বলেছি তিনটে ছবি হবে তবে তিনটে ছবি হবে।
“ওকে,যথা আজ্ঞা মহারানী।
ঈশার পছন্দ মতো ঈশান নিজের রুমকে সাজিয়ে নিয়েছে ঈশার মতো করে। ঈশার প্রিয় রং পিংক। তাই পিংক কালারের দেয়ালের রং করা হয়েছে। চাদর,পর্দা, টুকটাক বেশির ভাগ পিংক কালারে সাজানো হয়েছে।দুজনে মিলে ঘরটাকে সাজিয়ে কিছুটা বিশ্রাম করে যখন ঈশান দেয়ালে ছবি সাজায় তখনি ঝগড়াটা শুরু হয়।
ঈশান ক্লান্ত হয়ে আবারো বিছানায় ধপাস করে শুয়ে যায়।তাকে দেখেই রেগে যায় ঈশা,
” আবার বিছানাটা এলোমেলো করে দিলে৷ তোমায় বলেছিনা আমি এই বাড়িতে আসার আগে তোমার এই রুমে থাকা চলবেনা।গেস্ট রুমে থাকবে তুমি।
“ঈশা আমি ভীষন ক্লান্ত। স্বামীর সেবা করো এতে করে আমি সন্তুষ্টি হয়ে তোমার জন্য মন থেকে প্রার্থনা করবো।
” কিসের সেবা যাও…! কোন ক্লান্ত তুমি হওনি সব বাহানা আমি বুঝিনা ভেবেছো?
ঈশার হাত টেনে ঈশান ধপাস করে তাকেও বিছানায় ফেলে।
“উহু এই ভাবে কেউ হেচকা টানে ব্যাথা পেয়েছি আমি (ব্যাথায় আর্তনাদ করে ঈশা)
ঈশা ব্যাথা পেয়েছে শুনেই ঈশান ব্যস্ত হয়ে পরে।মনে মনে নিজেকে হাজারয়া গালি দিতে থাকে।
” কোথায় ব্যাথা পেয়েছো দেখি!ঈশু কোথায় লেগেছে তোমার।
ঈশা ঈশানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে পরে।
“একটুও ব্যাথা পায়নি আমি…।একটু মিথ্যা বলেছিলাম।আমি দেখতে চেয়েছি তুমি ঠিক কি করবে!কিন্তু গুন্ডা ঈশানতো আমার কষ্টে যেন নিজেই দিগুন ব্যাথা পায়।
কথাটি বলেই ঈশা হাসতে শুরু করে। ঈশান দাত কিড়মিড় করে দাঁড়িয়ে বলে,
” তবে রে, আজ তোমায় ভাগে পাই।দেখিয়ে দেবো এই ঈশান কি কি করতে পারে।
ঈশানের কথা শুনেই দোড় লাগায় ঈশা। তার পেছনে ঈশান। দুজনের দৌড়াদৌড়ি লাফালাফি তে পুরো রুম আবারো লন্ডভন্ড হয়ে যায়।
“আমাকে ধরার সাধ্য নেই তোমার গুন্ডা ঈশান!
” তবে রে দাড়া…..
কথাটা বলেই ঈশান ঈশার পেছনে আবারো দোড় লাগায় । ঈশা নিজেকে বাচাতে বারান্দায় দোড় দিলেই টাল সামলাতে না পেরে বারান্দার কার্নিশ বেয়ে নিচে পরে যায়। তখনি ঈশান গগন বিহীন চিৎকার দিয়ে উঠে,
“ঈশায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া…..
ঈশান লাফিয়ে উঠে যায় ঘুম থেকে।বুকে হাত দিয়ে চারিপাশটা পরখ করে দেখে এটা তার ইউএসের রুম আর যে রুমটার সপ্ন দেখছিলো সেটা বিডির বাড়িটার রুম।ঈশান এখনো শকের মধ্যে আছে বুকের ভেতরটায় কে যেন ড্রাম বাজাচ্ছে।
প্রায় সাড়ে তিনমাস আগে ঈশানের যখন রেসপন্স আসে।তখন আবারো নতুন করে ট্রিটমেন্ট শুরু হয়। সবার মাঝে ছড়িয়ে পরে আশার আলো।ঈশানের রেসপন্স এসেছে খবরটা অনুকে জানানোর পর অনু খুশিতে কেদে দেয়। শর্ত অনুযায়ী রাসেলের সাথে আর যোগাযোগ করে না সে। এদিকে রাসেলো এক মূহুর্তের জন্য অনুকে ভুলতে পারেনা।সে খুব করে চায় অনু আবারো মেসেজ দিক।কিন্তু অনু তার কথাই রেখেছে।এই তিনমাস আর কোন যোগাযোগ হয়নি তাদের।
গত দুই সাপ্তাহ আগেই ঈশানকে বাড়িতে আনা হয়েছে।সম্পূর্ণ জ্ঞান ফেরার পর থেকেই ঈশাকে খুজে গেছে।নানান মিথ্যা বাহানায় রাসেল তাকে শান্ত করেছে।বাসায় আসার পর থেকে ঈশার সাথে কথা বলার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু রাসেল বলেছে বিডিতে গিয়ে ঈশাকে সামনা সামনি যেন চমকে দেয়।
তবুও দৈর্য্যর সীমা থাকছে না ঈশানের সে ঈশাকে দেখতে না পায় অন্তত্য কথা বলতে চায় সে।এদিকে রাসেল পড়েছে মহা ঝামেলায়।কোথায় পাবে সে ঈশাকে।হুট করেই মনে পড়ে ঈশার গাওয়া রবীন্দ্র সঙ্গীতের সেই চারলাইন ভিডিও করে ঈশান তাকে পাঠিয়েছিল।ঈশানকে সেই ভিডিওটা সেন্ড করে দেয় রাসেল। তারপর থেকেই উঠতে বসতে খেতে,ঘুমাবার আগে সারাদিন ঈশার গানটাই শুনে যায় ঈশাণ।আর মোবাইলের স্কিনে তাকিয়ে দেখতে থাকে ঈশার মায়ামাখা মুখটির ছবি।
এদিকে ঈশানের এমন পাগলামি দেখে কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারে না ঈশানের মা মাহমুদা।ছেলের শোকে তার করুন অবস্থা।
বর্তমান………
ঈশান বিছানা থেকে লাফিয়ে নেমে, দ্রুত ফ্রেশ হয়ে শার্ট গায়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।নিচে রাসেলকে দেখে দ্রুত সিড়ি দিয়ে নেমে বলে,
“রাসেল আমি বিডিতে যাবো।দ্রুত ব্যবস্থা কর।
ঈশানের কথায় চমকে যায় মাহমুদা আর আবিদ।
” ঈশান কি বলছিস তুই?অপেক্ষা কর আমরা পরে যাবো বিডিতে। (রাসেল)
“চুপ একদম চুপ আমি আর অপেক্ষা করতে পারবো না। তোর যদি আমার সাথে যেতে মন চায় তবে যাবি না হলে আমি একাই যাবো।প্রায় তিন বছর আমি আমার ঈশাকে দেখিনি আর তুই বলছিস…
ঈশান এগিয়ে যেতে নিলেই রাসেল তার পথ আটকে দেয়।
” আরে ঈশান তুই বল তোর কি হয়েছে এত উতলা হচ্ছিস কেন। একসাপ্তাহ পর যাবো আমরা!
“আর এক ঘন্টাও আমি অপেক্ষা করবো না।আমি সপ্নে দেখেছি আমার ঈশার বিপদে আছে আমাকে যেতে হবে!(বিড়বিড় করে)
“দেখ বাবা তুই সুস্থ হ তারপর নাহয় ঈশার কাছে ফিরিস।(আবিদ)
” আমি সুস্থ আছি পাপা আমি আজকেই যাবো বিডিতে।
“ঈশান প্লিজ আমার কথা শুন! (রাসেল)
” তোকে চুপ থাকতে বলেছি আমি। আমি যাবো মানে যাবো কে ঠেকায় আমায় আমি দেখবো ।
ঈশান দ্রুত এগিয়ে যায় তখনি তার কানে ভেসে আসে একটি অবিশ্বাস্য কথা।
“তোর ঈশা আর বেচেঁ নেই বাবা।(মাহমুদা)
কথাটি শুনেই ঈশানের সারা শরীরে ঝংকার দিয়ে উঠে।
“ঈশা নেই মানে, কি বলছে এইসব?
পেছনে ঘুরে প্রথমে তার মায়ের দিকে তাকায়।মাহমুদা ঠোটঁ কামড়ে নিশব্দে কাদছেঁ। আবিদ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।ঈশান তার মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে ভ্রু কুচকে বলে,
” কি বলছো মম তুমি?
” আমি ঠিকি বলছি বাবা।
“আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।(অবাক হয়ে)
মাহমুদা মুখ ফিরিয়ে নেয় । ঈশান এবার রাসেলের দিকে তাকায়। রাসেল মাথা নিচু করে নিঃশব্দে কাদছে।নাক,গাল বেয়ে চোখের পানি পরছে।ঈশান রাসেলে কলার টেনে বলে,
“,কথাটা কি সত্যি রাসেল?
রাসেল চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।ঈশান এবার রাসেলের গালে ঠাসস করে চড় লাগিয়ে দেয়।আবিদ আর মাহমুদা কিংকর্তব্যবিমূট হয়ে ঈশানের দিকে তাকায়।
রাসেলের হাত টেনে ঈশান নিজের মাথায় নিয়ে বলে,
” আমার কসম রাসেল সত্যিটা বল।
“আ..আমরা ঈশাকে বাচাঁতে পারলাম না ঈশান।প্রায় ৪২ ঘন্টা পর নদী থেকে ঈশার লাশ উদ্ধার হয়। (কেদে)
ঈশান দুই পা পিছিয়ে যায়।তার নিজের শরীরের ভর নিজের ধরে রাখতে ভিষন কষ্ট হচ্ছে।রাসেল এগিয়ে আসলেই ঈশানের মুখ থেকে দুটো শব্দ বেরিয়ে আসে,
” আমার ঈশা….
হঠাৎ করেই রাসেলের বুকের উপর ঢলে পরে ঈশান।রাসেল দুই হাতে আকড়ে ধরে ঈশানকে।
ঈশান যখন চোখ খুলে তাকায় তখন হাতের মধ্যে ক্যানোলার সুই দেখতে পায়।একটানে সুই বের করে বিছানা থেকে নেমে যায়৷ শরীরের সব শক্তি যেন আজ ফুরিয়ে গেছে।।
রাসেল রুমে ডুকে খেয়াল করে ঈশান দাড়াতে চেষ্টা করছে কিন্তু বার বার বিছানায় ঢলে পরছে।রাসেল দরজা বন্ধ করে দ্রুত ঈশানের সামনে দাঁড়ায়।
“ঈশান তুই…
” চুপ একদম চুপ।তুই সত্যটা আমার কাছে কেন গোপন করলি। আমার ঈশা মরেনি বেচেঁ আছে আমি যানি বেচেঁ আছে।সে আমাকে সেই জোনাক পোকার আলোকে সাক্ষি রেখে বলেছে ছেড়ে যাবেনা তবে কি করে গেলো সে?
ঈশান এবার চিৎকার দিয়ে কেদে উঠে।তার বাম হাতের সুইয়ের স্থান থেকে গড়িয়ে রক্ত ঝরছে।রাসেল এগিয়ে এসে ঈশানকে জড়িয়ে ধরে।
“আমার ভালোবাসা কি মিথ্যা ছিল রাসেল৷ ঈশা আমাকে ছেড়ে কেন চলে গেল।আমি বাচবো কাকে নিয়ে?কত ভালোবাসতাম তাকে?এই রাসেল তুই বল ঈশা ফিরে আসবে বলনা আমার আর সহ্য হচ্ছে না এই কষ্ট।
” ঈশান তুই শান্ত হ।আমরা আছি তো(চোখের পানি মুছে)
“শান্ত হবো মানে?আমার ঈশা যদি না বাচেঁ তবে আমি বেচেঁ থাকবো কি করে। আমার যে বেচে থাকার ইচ্ছেটাই মরে গেছে।
হুট করেই ঈশান বলে,
” অনু কই রাসেল?
“ওর বিয়ে হয়ে গেছে দুই বছর আগেই!(ঢোক গিলে)
ঈশান অবাক হয়ে রাসেলের দিকে তাকায়।রাসেল পাথর হয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে।
” ক..কি বলছিস তুই। তুই না অনুকে ভালোবাসিস।
রাসেল এবার চট করেই ঈশানকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেদেঁ উঠে,
“আমার কিচ্ছু করার ছিল না ভাই।অনুও চায় নি আমাদের মিল হোক। দুজনের সিধন্তেই আলাদা হয়েছি।তখন আমার কাছে তুই সবচেয়ে ইনপটেন্ট ছিলি। ভালোবাসার থেকেও দায়িত্ব বড় ঈশান।যে যাওয়ার সে চলে গেছে।
ঈশান নিজেও চিৎকার দিয়ে কেদে উঠে।রুমের ভেতর দুজন মানুষের চিৎকার শুধু দুজনেই শুনে।শুধু যানে না বাইরের সার্থপর দুনিয়া।
ঈশান সম্পূর্ণ পালটে গেছে একপ্রকার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।কারো কথা শুনে না কারো বারন মানে না। সারারাত নাইট ক্লাবে থাকে সকালে বাড়ি ফিরে।একের পর এক সিগারেটের ধোয়া উড়াতে থাকে।একের পর এক মদের বোতল সাবাড় করে,মাঝে মাঝে সুইসাইড করার চেষ্টা করে। ব্যস তার দৈনিন্দিন জীবনের রুটিন এখন এটাই।
রাসেল অনেক বার চেষ্টা করেছে ঈশানকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কিন্তু ঈশান কারো কথার পাত্তা দেয় না।ঈশানে এই জীবনের গতি প্রায় ১ মাস ধরে চলে আসছে।
রাত তিনটের সময়, ঈশানের রুম জুড়ে ঈশার ছবি লাগিয়েছে ঈশান।মিষ্টি করে হাসা ঈশার মুখ খানা দেখে ঈশানের বুকের ভেতরটা খা খা করে উঠে। ঈশার ছবির সামনে দাড়িয়ে বলতে থাকে।
” যানো ঈশা আমার না ভাবতেই কষ্ট লাগে তুমি নাকি এই দূনিয়ায় নেই।কে কি বলেছে আমি মানিনা আমি জানিনা।আমি শুধু যানি আমার ঈশা আমাকে ঠকাবেনা। সে আমায় হাজারটা জোনাকি পোকার আলোকে সাক্ষি রেখে বলেছে সে আমায় ছেড়ে যাবে না। তাহলে ঈশা আমায় কি করে ছেড়ে যাবে? আমি যানি তুমি ফিরে আসবে আমার হৃদয়পিঞ্জিরায়।দেখো তোমার ঈশান এখন যত ছাইপাশ খেয়ে দিন কাটায়। যানো ঈশা এখন আর ঘুমের ওষুধ না খেলে ভালোলাগে না।দুচোখে আমার ঘুম নামে না। আর ঘুম না আসলে আমি তোমায় নিয়ে কি করে সপ্ন দেখবো।
ঈশানের কেন যানি নিজের জীবনের উপর নিজের তিক্ততা ছড়িয়ে গেছে। এত রাতে হয়তো আশে পাশে সবাই ঘুমিয়ে আছে কিন্তু ঘুমিয়ে নেই একজনের সে যে তার প্রিয়তমার অপেক্ষায় দিন গুনছে।ঈশান ড্রয়ার থেকে ছোট্ট একটা চাকু নিয়ে মেঝেতে বসে পরে। একটি ড্রিংক্সের বোতল খুলে দুই তিন ঢোক গিলে আবার ছুরিটার দিকে নজর দেয়। তারপর বাম হাতে খুব দৈয্য সহকারে কেটে ঈশার নাম লিখতে থাকে। এইসব পাগলামী দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে ঈশানের।হাত থেকে গল গল করে রক্ত ঝরে সাদা টাইলস রক্তে লাল হয়েছে।পকেট থেকে দুটো ঘুমের ওষুধ নিয়ে আবারো মুখে পুরে দুই তিন চুমুক ড্রিংস করে।
অল্প সময়ের মধ্যেই ঈশানের চোখে নেমে আসে রাজ্যর ঘুম।এদিকে হাত থেকে রক্ত ঝরছে বেশামাল ভাবে।
সকালে ভোরের আলো ফুটতেই রাসেল ঈশানের রুমে ডুকে কিন্তু ঈশানের অবস্থা দেখেই ভয়ে সে জমে যায়। কেন করছে এইসব ছেলেটি কি পাগল হয়ে যাবে।দ্রুত ফাস্ট এইড বক্স এনে ব্যান্ডেজ করে দেয় সে।হাতে কিছু পানি নিয়ে ঈশানের মুখে ছিটা দিতে থাকে।সঙ্গে সঙ্গে ঈশান ধড়ফড় করে উঠে বসে ঈশাকে ডাকতে থাকে।
“ঈশা ঈশা…..
” তোর ঈশা না আমি এসেছি!আমাকে তো ভুলে গেছিস মনে হয় আমি রাসেল।
ঈশান ভালো করে রাসেলকে পরখ করে নিজের হাতের দিকে তাকায়।হাতে ব্যান্ডেজ দেখে ঈশানের দিকে তেড়ে এসে বলে,
” তোকে ব্যান্ডেজ করতে কে বলেছে, কুত্তা তুইকি আমাকে শান্তিতে থাকতে দিবিনা।
ঈশানের মুখে এখন এসব কথা কমন সে বর্তমানে অহেতুক ভাষায় সবাইকে গালাগাল দেয়। তাই রাসেল ঈশানের দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
“ঈশান প্লিজ ভুলে যা সব কিছু মেয়ে লাগবে তোর ক্লাবে চল ভালো ভালো মেয়ে পাবি(ভ্রু নাচিয়ে)
ঈশান এবার রাগের মাথায় রাসেলের কলার টেনে ধরে।
” তোর লাগলে তুই যা আমাকে আর যদি এইসব বলেছিস তাহলে জবাই করে রেখে দেবো…(দাতে দাত চেপে)
“,তাহলে এমন কেন করছিস ফিরে আয় না স্বাভাবিক জীবনে।যে যাওয়ার সে গেছে না পাওয়ার শোকে কি বিলিন করে দিবি সব কিছু আমরা কি তোকে ভালোবাসি না?তোর নিজের বিজনেস আমি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এখনো একটা ভালো পজিশনে রেখেছি।কিন্তু এর মাঝে আমাদের কত কোটি টাকা লস হয়েছে তোর ধারণা আছে? প্লিজ ঈশান তুই স্বাভাবিক কর নিজের জিবনটা ঘুছিয়ে নে!
” ঈশাকে এনে দে আমি কথা দিচ্ছি তোদের সব কথা শুনবো তোরা শুধু আমার ঈশাকে আমার কাছে এনে দে।
“ঈশাকে আমি কোথায় পাবো সে মৃত বুঝতে পারছিস সে মরে গেছে। আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তার জানাজা পড়েছি,সবাইকে কবর দিতে দেখেছি তাহলে…(চিৎকার দিয়ে)
ঈশান এবার আরো রেগে যায় খালি থাকা একটি ড্রিংসের বোতল তুলে মেঝেতে আছাড় দেয়।সঙ্গে সঙ্গে পুরো রুমে কাচঁ ভাঙা ছিটিয়ে ছড়িয়ে যায়।ঈশান দাত চেপে রাসেলের দিকে তাকিয়ে বলে,
” আমার ঈশা আছে! সে আমাকে কথা দিয়েছে সে আমাকে ছেড়ে যাবে না।তোরা, তোরা সবাই আমার ঈশাকে লুকিয়ে রেখেছিস।
ঈশান দ্রুত ফোন নিয়ে ঈশার গাওয়া ৪ লাইনের রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে থাকে।এই ভয়েজ শুনলে ঈশানের যেন পুরো মস্তিষ্ক শীতিল হয়ে যায়।ঈশান বিড়বিড় করে নিজেও গায়…আমি তোমারো বিরহে রহিব বিলিন….!
দরজার বাইরে থেকে অঝরে চোখের জল ফেলছে ঈশানের বাবা মা।ছেলেকে কি আগের জীবনে তারা আর কিছুতেই পাবেনা!
বাংলাদেশের কোন এক অঞ্চলে হঠাৎ করেই ঝুম বৃষ্টি নেমেছে।বৃষ্টির শব্দে মুখরিত পুরো অঞ্চল।কিন্তু বৃষ্টি দেখেই চমকে যায় একটি মেয়ে।দ্রুত দু পা চালিয়ে ছাদে উঠে বৃষ্টির ফোটা গুলোকে ছুয়ে দিচ্ছে।আকাশের দিকে তাকিয়ে অনবরত চোখের অশ্রু ঝরছে তার। এই বৃষ্টিতেই নেমে এসেছিলো তার জীবনের ভালোবাসা।বৃষ্টিতো পবিত্র, বৃষ্টি মানেই শুদ্ধতা কিন্তু বৃষ্টি দেখলেই মেয়েটার কেন যেন অভীশপ্ত মনে হয়।কারন বৃষ্টির ধারায় নেমে এসেছিল তার জিবনে ভালোবাসা নামক অভিশাপ। ছাদের দিকে পা বাড়াতেই পেছন থেকে কেউ তাকে ডেকে উঠে,
“ইরা খবরদার ভিজবি না। বৃষ্টির পানি তোর সহ্য হয় না।
মেয়েটি কোন বাধা না মেনে আবারো ভিজতে চলে যায় । মনের দুঃখ গুলোকে কিছুটা উড়াতে সে এখন কাদবে আর সেই চোখের জল ভিজিয়ে নিয়ে যাবে বৃষ্টির ফোটারা।আকাশের দিকে তাকিয়ে অম্লান হেসে মেয়েটি বলে,
” ভালো থেকো ভালাবাসা..!
#চলবে……
?পর্বটা কেমন হয়েছে যানাবেন….!