টুয়েন্টি মিনিটস (চ্যাপ্টার-০১) পর্ব ৫

0
332

#টুয়েন্টি_মিনিটস (চ্যাপ্টার-০১)
পর্ব-০৫
লেখা: ShoheL Rana শামী

জাকারিয়া সাহেবদের উঠোনে রীতিমতো একটা উৎসব হয়ে আছে। বাহির থেকে ফিরে এসে রিহান অবাক হয়ে দেখে, বাড়ির পুরুষরা বাইরে পায়চারি করছে। আশেপাশের আরও কয়েক বাড়ির পুরুষ, ছোটো-ছোটো ছেলেমেয়েরা হৈ-হুল্লোড় করছে। কিন্তু ভেতরে মহিলাদের চিৎকার চেঁচামেচি ও আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। কী হয়েছে দেখার জন্য ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় রিহান। বৃদ্ধ জাকারিয়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ায় সে। অন্যদের আনন্দ যাতে ক্ষান্ত না হয় তাই নিচু স্বরে প্রশ্ন করে, ‘দাদামশাই, কী হয়েছে এখানে? এত আনন্দ উৎসব কেন?’

‘ওরে রিহান মিয়া, আসো আসো। খুশিতে শামিল হও। আজ আমার আরেকটা নাতি আসতে চলেছে পৃথিবীতে।’ রিহানের কাঁধে মৃদু হাত চাপড়ালেন জাকারিয়া সাহেব। উনাকে এতটা খুশি হতে দেখেনি রিহান আগে। রিহান অবাক হয়ে বলে, ‘আরেকটা নাতি মানে?’

‘আরে খিজির আজ বাবা হবে। খিজিরের সন্তান আসতে চলেছে। এই নাও, আট পয়সা। ঐ সময় তুমি পাঁচ পয়সা খুঁজছিলে, আমি তিন পয়সা দিয়েছিলাম। এখন খুশিতে আট পয়সা মানে দুই আনা দিলাম। নাও।’ বলতে বলতে জাকারিয়া সাহেব রিহানের পকেটে এক আনার দুইটা মুদ্রা ঢুকিয়ে দিলেন। রিহান এবার হিসাবটা মিলানোর চেষ্টা করলো। মুদ্রার হিসাব না। কে আসতে চলেছে তার হিসাব। খিজির মানে ইউসুফের ছোটো চাচা। আর খিজির শুধুমাত্র একটা মেয়ে সন্তানের বাবা হয়। সেটা রিহানের দাদি। তারমানে দাদি আসতে চলেছে! এই পরিবারে বউদের বাইরের পুরুষদের সামনে আসতে নেই। গর্ভবতী বউ হলে তো একেবারেই নিষেধ৷ তাই রিহান ধারণাও করতে পারেনি এত তাড়াতাড়ি দাদির মুখ দেখতে পাবে। উত্তেজিত হয়ে রিহান তখন বললো, ‘দাদামশাই, আমি কিন্তু জানি ছেলে হবে না-কি মেয়ে হবে।’

‘আরে ছেলে হবে, ছেলে হবে।’ জাকারিয়া সাহেবের খুশি যেন ধরে না। ঐ সময় খিজির এলো বেশ কিছু চকলেট হাতে নিয়ে। বাচ্চাদের মাঝে চকলেটগুলো বিলিয়ে সে নিজের খুশি ভাগ করতে লাগলো। বাচ্চারাও খুশিতে বলাবলি করতে লাগলো, ‘ছেলে হবে, ছেলে হবে।’ একটা বাচ্চা ছেলে তখন বলে উঠলো, ‘আমি বলছি মেয়ে হবে।’ তখন খিজির তাকে আরও দুটো চকলেট বেশি দিয়ে মত পালটিয়ে নিলো। আনমনে মৃদু হেসে ওঠলো রিহান। কী চমৎকার দৃশ্য। একটা বাচ্চা শিশুর আগমন উপলক্ষে সবার এই খুশি, উৎসব তার যুগে এসে হারিয়ে যাবে। বাচ্চা হওয়ার আগমুহূর্তে সবাই ছুটবে হাসপাতালে। কত পরিবর্তন হয়ে যাবে ঐ সময়টাতে গিয়ে!

সবার খুশিতে এবার জল ঢাললো রিহান। জাকারিয়া সাহেবের দিকে তাকিয়ে সে বলে উঠলো, ‘দাদামশাই, আমি বলছি আপনার একটা সুন্দর নাতনি হবে। খুব ফুটফুটে একটা মেয়ে অতিথি আসতে চলেছে।’ বলেই মৃদু হাসলো রিহান। সে দেখেছে, বৃদ্ধ বয়সেও তার দাদি খুব সুন্দর। অল্প বয়সে না জানি কত সুন্দর ছিল! সেই ধারণা থেকে বলেছে রিহান কথাটা। কিন্তু তার কথাটা পছন্দ হয়নি জাকারিয়া সাহেবের। মুখটা কালো করে তিনি রিহানের পকেটে যত মুদ্রা ছিল, সব বের করে নিলেন। তারপর উঠোনের বাচ্চাদের দেখিয়ে বললেন, ‘ওরা ছোটো বাচ্চা, ওরা বলবে। তুমি কেন বলবা এই কথা?’

‘আমার কথা ঠিক হবে দেখে নিয়েন। আমি ওর কী নাম হবে তাও জানি। ওর নাম হবে সাহারা।’ অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে রিহান তার দাদির নামটাও বলে দিলো। কিন্তু কেউ সে কথার গুরুত্ব দিলো না। জাকারিয়া সাহেব কেবল একটা ধমক দিলেন রিহানকে, ‘চুপ।’

‘ঠিক আছে চুপ করলাম। কিন্তু পয়সাগুলো দিয়ে আবার নিয়ে নিলেন যে?’

‘যা দিছি নিয়ে নিছি…’

‘কিন্তু ওখানে তো আরও পাঁচ পয়সা বেশি নিছেন। আট পয়সা দিছেন, তেরো পয়সা নিছেন পকেট থেকে।’

‘সকালে দিছিলাম তিন পয়সা। মোট এগারো পয়সা। এই নাও তোমার দুই পয়সা।’ বলেই দুই পয়সা ফিরিয়ে দিলেন তিনি রিহানকে। রিহান অবাক হয়ে তাকায় লোকটার দিকে। মনে মনে বললো, ‘আহ! আমার পূর্বপুরুষ। খুশি হয়ে টাকা দেয়, তা আবার হিসাব করে নিয়েও নেয়।’ ভাগ্যিস দুই পয়সা ফেরত পেয়েছে সে। নয়তো আবার দূরের পথটা হেঁটেই মাস্টার সাহেবদের বাসায় যেতে হতো।

ভেতরে থেকে এবার একটা বাচ্চার কান্না ভেসে এলো। সবাই ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে ওঠলো বাইরে। ধাত্রী এসে খিজিরের খোঁজ করে বললো, ‘ওরে খিজির, এদিক আয়। তোর একটা খুব সুন্দর মেয়ে হয়েছে। দেখে যা।’

ধাত্রীর কথা শুনে জাকারিয়া সাহেব রিহানের দিকে এমনভাবে তাকালেন যেন সব দোষ তার। সে কথাটা না বললে ওটা ছেলে-ই হতো। রিহান মুখ নিচু করে মনে মনে বললো, ‘আমার কী দোষ?’

মেয়ে হয়েছে শুনে খিজিরের একটু মন খারাপ হলেও অখুশি সে হলো না। দৌড়ে ভেতরে গেল প্রথম সন্তানের মুখ দেখতে। সবচেয়ে অখুশি দেখা গেল জাকারিয়া সাহেবকে।

‘শয়তান বুড়ো, আমার দাদির আগমনে বেজার হচ্ছিস?’ মনে মনে বুড়োর গুষ্টি উদ্ধার করলো রিহান। নতুন অতিথির আগমনে সবচেয়ে বেশি খুশি হতে দেখা গেল ইউসুফকে। সে খুশিতে উঠোনে লাফিয়ে লাফিয়ে নাচতে লাগলো। আগে থেকেই হয়তো বুঝতে পেরেছে সে সদ্য জন্ম নেয়া মেয়েটা একদিন তার হৃদয়ের রানি হবে। রিহান ইউসুফকে ডাক দিলো, ‘ইউসুফ…’

‘কী…ই..ই.. ডাকছো কেন আমায়?’ গলা টেনে প্রশ্ন করলো ইউসুফ। এখনও সে রিহানের উপর রেগে আছে।

‘পয়সা নিবা? পয়সা? নাও।’ বলে একটা পয়সা দেখালো রিহান। পয়সার লোভে দৌড়ে এলো ইউসুফ। বাকি বাচ্চারাও কোমরে হাত দিয়ে আগ্রহ নিয়ে চেয়ে রাইলো রিহানের দিকে৷ যদি তাদেরকেও পয়সার জন্য ডাকা হয়! কিন্তু রিহানের কাছে আছে কেবল দুই পয়সা। ওখান থেকে এক পয়সা ইউসুফের হাতে দিয়ে তাকে নিজের কক্ষে নিয়ে গেল। পয়সা পেয়েই মুহূর্তে ইউসুফ শত্রু থেকে বন্ধু ভেবে নিলো রিহানকে।

‘আমাকে ডাকছো কেন?’ জিজ্ঞেস করলো ইউসুফ। পয়সা পেয়ে সে বেশ খুশি। খুশির ছাপ তার সারা চেহারায়৷ নেড়েচেড়ে দেখতে লাগলো সে পয়সাটা। রিহান তাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘তোমার ছোটো চাচার মেয়ে হয়েছে, তুমি খুশি হয়েছো?’

‘হ্যাঁ, খুব খুশি হয়েছি। ওকে আমি খুব আদর করবো।’

‘শুধু আদর করলে হবে? যত্নও নিতে হবে। কারণ, বড়ো হয়ে সে হবে তোমার বউ।’

‘যাহ্, কী বলছো? দাদুকে বলে দিবো, দাদু… দা…দু…’ চিৎকার করে উঠলে রিহান ইউসুফের মুখ চেপে ধরে। তারপর চাপা কণ্ঠে বলে, ‘আস্তে আস্তে… শুনো, তোমাকে কেন ডেকেছি জানো?’

‘কেন?’ ইউসুফের কণ্ঠও নিচু হয়ে এলো।

‘আমি তোমাদের যুগের কেউ না। আমি ভবিষ্যত থেকে এসেছি। ভবিষ্যত বুঝো। মানে আমার এখনও জন্ম হয়নি। আজ থেকে আরও আটচল্লিশ বছর পর জন্ম হবে আমার। বুঝছো কিছু?’

বোকার মতো চেয়ে থাকে ইউসুফ। কিছুই বুঝেনি সে। একটা লোকের জন্ম হয়নি, তারপরও লোকটা তার সামনে এসে কথা বলছে। এসব ব্যাপার কিছুই মাথায় ঢুকছে না ইউসুফের। খানিক পর ভীতি স্বরে জিজ্ঞেস করলো, ‘তুমি কি ভূত?’

‘না, আমি মানুষ। কী বলতে চাচ্ছি শুনো। তুমি জানো, বুড়ো বয়সে তুমি ঐ মেয়েটাকে দেখতে পাবে না?’

‘কেন?’

কয়েক মুহূর্ত চুপ থাকলো রিহান। কারণটা বলে সে বাচ্চা ছেলেটার মনে ভয় ঢুকিয়ে দিতে চাচ্ছে না। যদি সে জানে, অকালে তার মৃত্যু হবে, তবে যতদিন বাঁচবে, একটা ভীতি নিয়ে বাঁচবে। তাই রিহান কৌশলে বললো, ‘কারণ, তোমার আর সাহারার মাঝে একটা দূরত্ব হবে। সাহারা কে জানো?’

ডানে-বামে মাথা নাড়ে ইউসুফ।

‘ঐ মেয়েটার নাম হবে সাহারা। তাই এখন থেকে ওর খুব যত্ন নিয়ো কেমন? সবসময় ওর কাছাকাছি থাকবা। আমি কে জানো?’

‘কে?’

‘আমি তোমার নাতি। তুমি আমার দাদা।’

জোরে হেসে ওঠলো এবার ইউসুফ। লজ্জাও পেয়েছে। ‘সাহারা ওর বউ হবে’ কথাটাতে সে লজ্জা না পেলেও ‘রিহান ওর নাতি’ কথাটাতে সে বেশ লজ্জা পেয়েছে। পরক্ষণে সে হাসতে হাসতে আরও কয়েকটা বাচ্চার নাম ধরে ডাক দিলো। মুহূর্তেই কয়েকটা বাচ্চা এসে হাজির। ভেবেছে হয়তো তাদেরকেও পয়সা দিতে ডাকছে। বাচ্চারা হাজির হলে ইউসুফ বলে, ‘এই দেখ দেখ, এই লোকটা না-কি আমার নাতি। আমি না-কি ওর দাদা।’

কথাটাতে বাচ্চাগুলো যেন ভীষণ মজা পেয়েছে। সবাই মুখ চেপে ধরে হাসতে লাগলো। রিহান ইউসুফের হাত থেকে পয়সাটা নিয়ে নিলো। সবার হাসি তখন থেমে গেল। ইউসুফ পয়সাটা পুনরায় পাওয়ার জন্য রিহানের গা ঘেঁষলেও রিহান দিলো না। তার উদ্দেশ্য ছিল পয়সার লোভ দেখিয়ে ইউসুফকে আড়ালে নিয়ে আসা। পয়সা দেয়াটা তার উদ্দেশ্য ছিল না। ওটা দিয়ে দিলে সে আবার সুফিয়াকে দেখতে যেতে পারবে না। দেড় পয়সা ভাড়া লাগে ওখানে যেতে। কেন যেন সুফিয়া মেয়েটাকে বারবার দেখতে মন চায়। চেহারায় একটা বড্ড মায়া কাজ করে তার। মন টানে তার প্রতি। কিন্তু, ইউসুফকেও হতাশ করতে চাইলো না রিহান। বললো, ‘তোমাকে আমি আরেকদিন পয়সা দেবো। আজ আমার কাছে শুধু দুই পয়সা আছে।

‘এ্যা? শুধু দুই পয়সা? তোমার সমান হলে আমার পকেটে কত পয়সা থাকে দেইখো।’ বলেই ইউসুফ তার সমবয়সীদের নিয়ে চলে যাচ্ছিল। যেতে যেতে এমন এক চাহনি দিয়ে রিহানকে বুঝিয়ে দিলো, ‘শত্রু কখনও বন্ধু হয় না।’ রিহান হাসে তার পিচ্চি দাদার রাগ দেখে। পিচ্চি বয়স থেকেই অনেক পাকা ছিল দাদা।

পরদিন সকাল বেলায়, রোদ যখন একটু কড়া হচ্ছিল, রিহান পৌঁছলো তখন সুফিয়াদের বাড়ি। ওদের বাড়ির চারপাশটা বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা। বেড়ার উপর কয়েকটা শিমগাছ শাখা ছড়িয়ে ওপাশে গিয়ে পড়েছে। সদ্য গোসল শেষ করে সুফিয়া বেড়ার উপর ভেজা কাপড় শুকোতে দিচ্ছিল যেখানটায় শিমগাছের শাখা ছড়ায়নি। তোয়ালে দিয়ে ভেজা চুলগুলো সে প্যাঁচিয়ে রেখেছে। নীল ব্লাউজের সাথে আজ সে সাদা শাড়ি পরেছে। মনে হচ্ছিল কোনো সাদা পরি নেমে এসেছে আকাশ থেকে। রিহান দাঁড়িয়ে দেখছিল তাকে। বেড়ার ওপাশে দুটো ছাগল এসে শিমগাছগুলো খেয়ে ফেলছিল বলে তাড়াতে গেল সুফিয়া। তখন নজর গেল তার রিহানের দিকে।

‘আপনি? কখন এলেন?’ গায়ের কাপড় ঠিক করলো সুফিয়া। ‘দাঁড়িয়ে আছেন কেন ওখানে?’

‘আংকেল নাই আজ?’

‘আপনাকে আংকেল আসতে বলেছিল? না-কি আমি আসতে বলেছিলাম?’

‘এমনি জিজ্ঞেস করলাম। একটু ভালো করে বললেই তো হয়।’

‘ভালো কি থাকতে দিবেন? একটু পরই তো শুরু করবেন আপনার ভবিষ্যতের ইতিহাস।’

‘আজ শুরু করবো না ভাবছি।’

‘ভেতরে আসুন। বাবা আছে ভেতরে। ওহ্ শুনুন, আজ বেশি দেরি করবেন না যেতে। আর বাইরে বের হবেন না বিকেলে।’

‘কেন?’

‘শুনছি আপনাদের ওখানে আজ ব্রিটিশ আর্মিরা যাবে। পাড়ার জোয়ান ছেলেদের ধরে ধরে হাতে বন্দুক ধরিয়ে দিবে। ট্রেনিং দিবে জার্মানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য। গোলাগুলি হতে পারে।’

‘সব খবর রাখেন দেখি। আমি জানতাম না।’

‘আপনি জানবেন কেমনে? জানেন তো শুধু ভবিষ্যতের কথা।’

‘যা জানি, তাই-ই তো বলি।

সুফিয়া চোখ বড়ো বড়ো করে তাকালো রিহানের দিকে। রিহান চুপসে গেল। সুফিয়া আবারও বললো, ‘কী বলছি শুনছেন? বের হবেন না বিকেলে। পারলে কয়েকদিন এখানেই থাকুন। বাবার সাথে রাতে ঘুমাবেন। ওদিকে যাওয়ার দরকার নেই। ট্রেনিং চলবে কয়েকদিন।

‘কিন্তু ও বাড়ির লোকজন যদি আমাকে না পেয়ে চিন্তা করে?’

কথাটাতে যেন মজা পেল সুফিয়া। ‘হিহিহি’ করে হেসে ওঠলো হঠাৎ সে। হাসতে হাসতে বললো, ‘ওরা চিন্তা করবে আপনার জন্য? ঠিকমতো তিনবেলা খেতেও দেয় না।’

ভেতরে ঢুকলো ওরা। জাফর মাস্টার বিছানায় শুয়ে শুয়ে একটা বই পড়ছিলেন। রিহানকে দেখে উঠে বসলেন।

‘রিহান আসছো না-কি? আসো, বসো এখানে।’ বিছানার একপাশে রিহানকে বসালেন জাফর মাস্টার। সুফিয়া ভেতরে গেল। জাফর মাস্টার শুরু করলেন এবার সুফিয়ার বাকি কথা, ‘শুনো, ওদিকে ব্রিটিশ আর্মিরা যাবে আজ। সারাবিশ্বে যুদ্ধ হচ্ছে জানো তো। ব্রিটিশরাও অস্ত্র তুলেছে জার্মান, জাপানদের বিরুদ্ধে। অবশ্যই এটা ভালো। হিটলারের পরাজয় আমরাও চাই। কিন্তু, ব্রিটিশরাও আমাদের কম অত্যাচার করছে না। আমাদের এই ভূখণ্ডকে তারা সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।

‘আংকেল, একটা কথা বলি?’

‘হুমম, বলো।’

‘একদিন এই ভূখণ্ড ব্রিটিশমুক্ত হবে। হিটলারেরও পরাজয় হবে। এবং আমাদেরও নিজস্ব একটা দেশ হবে।’

দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন জাফর মাস্টার। রিহানের কথা হয়তো বিশ্বাস করেননি উনি, তবে শুনতে ভালোই লাগছে তাঁর। রিহান আবার বললো, ‘আমি সব জানি আংকেল। আমি যে ভবিষ্যত থেকে এসেছি, বিশ্বাস করেন বা না করেন, তবে এটাই সত্য হবে দেখে নিয়েন।’

সেই মুহূর্তে সুফিয়া খাবার নিয়ে ঢুকলো ভেতরে। রিহান চিন্তায় পড়ে গেল। ভবিষ্যতের কথা বলেছে রিহান আবার, সুফিয়া শুনে ফেললো না তো?

[[চলবে…]]

(সবার গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here