অস্তিত্বের খোজে part 43

0
722

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ৪৩



– শুভ্র পরীকে আবার কল দেয়।

– পরী ফোন রিসিভ করে বলল,,,,,,, ফোন দেন কিয়ের লায়।

– আবার এসব ভাষা শুরু করছো? আমার দিকে তাকাও।

– পরী দুর থেকে শুভ্রের দিকে তাকায়। শুভ্র হাঁসছে,,,,,

– শুভ্র তোমার কাছে যাই! নাকফুল টা পড়ে দাওনা।

– আগে তোমার বলা উচিত ছিল পরী! বাসায় বললে পড়ে দিতাম এখানে সম্ভব না।
I Love You Sona ♥♥♥♥ বলে ইশারায় কয়েকটা কিস করল শুভ্র। দারুন লাগছে তোমাকে।

– পরীর খুশি দেখে কে,,,,,,, I Love you too my heart বলেই কিস করতে যাবে এমন সময় শুভ্র বলল মানসম্মান আর তুমি রাখবা না। এখন না বাসায় গিয়ে করো।
মাকে পাইছো?

– নাহ্…

– তোমার পিছন দিকে একটু দুরে তাকাও ওখানে মা দাড়িয়ে আছে। তুমি যাও আমি এখান থেকে দেখছি তোমায়।


– তুমি আমাকে এতক্ষন ধরে খুঁজছিলা তাইনা! আমার জন্যই দাড়িয়ে ছিলা হুম……. বলেই ফোনে শুভের সাথে কথা বলতে বলতে অনিতার দিকে পা বাড়ালো পরী।

– সবই তো বোঝ কেন দাড়িয়ে ছিলাম এত্ত ব্যাস্ততার মধ্যও। নিজের রানী কে সেভ করে রাখতে হয় ম্যাম। পরী অনিতার কাছে গেলে শুভ্র বলল মার সাথেই সবসময় থাকবা বলে শুভ্র কল কেটে দিয়ে অন্য দিকে চলে গেল।


– পরী কই ছিলা এতক্ষন? কখন থেকে খুজছি তোমায়।

– দাদুর সাথে ছিলাম মা। আপনাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
আচ্ছা মা! এত্তগুলো সব লোক অর্পিতাকে হলুদ মাখাবে? তাহলেতো অর্পিতার গাল আর গাল থাকবেনা।

– ধুর পাগলি কি যে বলনা তুমি। দেখইনা কি কি হয়। তোমাকে অর্পিতা ডাকছিল যাও ওদিকে আছে। আর শোন তোমাকেও কিন্তু খুব সুন্দর লাগছে।

– শুকরিয়া মা বলে পরী অর্পিতার কাছে যেতেই নিদ্রা ওকে টেনে নিয়ে গেল অনিলের কাছে।


– অনিলের কিছু বিদেশী বিজনেস পার্টনার ছিল সেখানে। অনিল তার ২ পুত্রবধূ কে তাদের সাথে পরিচয় করে দেয়। জান্নাত ওর মাকে দেখে মাম মাম বলে ডেকে উঠল।


– পরী জান্নাত কে কোলে নিল এবং কয়েকটা কিস করে বলল আমার মাকে আজ বেশ লাগছে তো?

– অনিল আবার জান্নাতকে কোলে নিয়ে বলল পরী! আমি ওকে নিয়ে আছি। ওকে নিয়ে টেনশন করতে হবে না তোমরা ইনজয় কর।


– না বাবা আমার সমস্যা নাই ওকে নিয়েই ইনজয় করতে পারব বলে জান্নাত কে কোলে নিয়ে অর্পিতার কাছে চলে যায় পরী আর নিদ্রা।

– অর্পিতা আর রনক একসাথে বসে ছিল। নিদ্রা আর পরী সেখানে যেতেই অর্পিতা জান্নাতকে কোলে নিয়ে একটা কিস করে বলল জান্নাত তোমাকে দারুন লাগছে বাবা।

– রনক কখনও পরীকে দেখেনি বা পরীও ওকে দেখেনি। চট করে রনক নিদ্রা কে বলল বউদি আপনাকে তো চিনি কিন্তু শুভ্রর বউ কোনটা তাকে দেখালেন না তোহ্।


– রনক! এটাই ছোট বউদি বলে পরীকে দেখিয়ে দিল অর্পিতা।

– রনক অনেকক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল আপনিই তাহলে সেই পরী! আপনি আমার অনেক ছোট তাছাড়া শুভ্র আমার ফ্রেন্ড তাই নাম ধরেই ডাকলাম কিছু মনে করেন না।

পরী! তোমাকে দেখে এমনি আকিক পাগল হয়নি। ওর পাগল হওয়ার যুক্তি আছে বটে কথাটি মনে মনে রনক বলে একটা মুচকি হাঁসি দিয়ে উঠল।

– পরী শুধু একটা মুচকি হেঁসে মাথা নাড়াল। নিদ্রার সাথে অনেক কথা হয় রনকের কিন্তু পরী আর একটাও কথা বলে না রনকের সাথে।


– রনকের ২ বউদিকে দেখে পরী হা করে তাকিয়ে নিদ্রাকে বলল ওটা শাড়ী না মশারি আপু! এত্ত পাতলা পোষাক কেউ পড়ে?

– এই চুপ কর ওরা যা মনে তাই পড়ুক একটা কমেন্টও করবা না। টিকটক দেখে ভালয় ডায়লগ শিখছো দেখছি। ওরা বর পক্ষ আর আমরা কনে পক্ষ তাই ওরা বেশি ভাব দেখাবে। তাই চুপচাপ করে শুন আর দেখ।


– অর্পিতার বন্ধু- বান্ধবীরা ২৪ জন এসেছে। সবাই একই ড্রেস মাচিং করে পড়েছে। দেখতে চমৎকার লাগছে। ছেলেরা পাঞ্জাবি পাজামা আর মাথায় পাগড়ী এবং মেয়েরা স্কার্ট পড়েছে সাথে চুলে ফুল দিয়ে খোপা করা।


– প্রথমেই ওরা ডান্স শুরু করল। একজন করে ডান্স করছে আর ভিতরে ঢুকছে। বিভিন্ন হিন্দী গানের তালে তালে।


– এবার রনকের অনেকগুলো ফ্রেন্ড পাঞ্জাবি আর ধুতি পাজামা পড়া আর মেয়েরা শাড়ী পড়া ছিল তারাও এক এক করে একই ভাবে ঢোকে।


– আমি কখনও এত্ত জাক জমক বিয়ে দেখিনি। সবাই হলরুমের ভিতর ঢুকছে আর অনেক গুলো মেয়ে বিভিন্ন ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরন করছে তাদের।


– এবার রনকের ২ বউদি এক সাথে ডান্স করল হিন্দি গানের। আমার তো মনে হল মাদ্রাজি গানের দাপানো নাচ ছাড়া আর কিছু না। আমি হাঁসতে গিয়ে নিদ্রা আপু আমার মুখ চিপে ধরল। পরী কি করছো! ওরা যদি জানে তুমি ওদের দেখে হাঁসছো তাহলে এর পরিনিত খুব খারাপ হবে।


– পরী চুপ করে গেল নিদ্রার কথা শুনে। স্যরি আপু। নিদ্রা রনকের বাবা মা সহ সবার সাথে কথা বলল পরীকে সাথে নিয়ে গিয়ে।


” হাভে তুহ্ লং ভে মে লাচি,,,,,,,তেরে পিচ্ছে আগা ওয়াচি ” শিরোনামে নিদ্রা আপু একটা ডান্স করল। আপুর এত্ত গুন। চমৎকার নাচ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেখাল।

অনেকে ডান্স করে দেখালো এমন কি কাপল ডান্স করেও দেখাল। ইংলিশ আর হিন্দি গান সব। একটা বাংলা ডান্সও করলনা কেউ।


– স্টেজের লাইট অফ। এটা নিদ্রার প্লান ছিল। কিন্তু গান শুনে হতবম্ভ হয়ে গেল নিদ্রা। অন্য গানে পরী ডান্স করছে! ও গড মানসম্মান রেখ একটু । এটার কথা ছিলনা তো!

পরী আর নিতাই এর প্লান ছিল এটা।

” ডানা কাটা পরী…………
হুম স্টেট্যাস আমার সিঙ্গেল দে…….খে,,,,,,,,,হায়
প্রেমের ছড়াছড়ি…….. হায়রে কি যে হায়রে কি যে করি
আমি ডানা পরী আমি ডানা পরী”
শিরোনামে বাংলা গানের নাচ করছে পরী। একটু পর নিতাইয়ের এন্ট্রি।

” হো…….অ এঞ্জেল এঞ্জেল এঞ্জেল,,,,,,, আমিও তো সিঙ্গেল
বাজছে মনের জিঙ্গেল প্যা প্যা প্যা প্যা…… বলেই নিতাই নেমে যায়।

পরী বাঁকিটা কমপ্লিট করে নাচ শেষ করে স্টেজ থেকে নেমে নিতাইয়ের কাছে গিয়ে বলল দাদু আমরা পেরেছি…… ইয়াহু বলেই একটা চিৎকার দিল।


– পুরো অনুষ্ঠানের মেহমানরা তো দেখে অবাক হয়ে গেল নিতাই এর এন্ট্রি দেখে। শুভ্র এটা দেখে প্রচুর হাঁসছে। এই ২জন পারেও বটে।
কৌশিক এসে শুভ্রকে বলল পরীতো ফাটিয়ে দিল। সব থেকে বেষ্ট ডান্স ছিল তার মধ্য ভালবাসা ছিল। দাদুকে কত খুশি দেখাচ্ছে। দাদু যদি ইয়াং হত তাহলে তোর চান্স ছিল না শুভ্র!


– বিমলাকে কয়েকজন বলল তোমার পতি কার সাথে নাচ করে দেখাল তাও এই বয়সে?


– ওটা শুভ্রর বউ। ওদের ২জনের মধ্য অনেক গভীর সম্পর্ক তাই এভাবে নাচছে। সবাই তো বেশ অবাক হল। এরকম সম্পর্ক অনেকের মধ্য থাকেনা। এখনও এমন সম্পর্ক আছে বলে দুনিয়াতে পারিবারিক সম্পর্ক টিকে আছে বিমলা।
বিমলা হেঁসে পরীর কাছে গেল।


– এই পরী এই গানের নাচ কবে শিখলা। বেশ হইছে বলে নিদ্রা খুশিতে পরীকে জড়িয়ে ধরল। পরীতো হাঁপিয়ে যাচ্ছে।

– ঐ ছুড়ি তুই আবার আমার স্বামীকে নিয়ে নাচছিস!


– তুমিতো পারোনা তাই আমিই না হয় নিয়ে নাচলাম তাই বলে হিংসে করবা বিমলা সুন্দরী?


– বিমলা সুন্দরী কথাটা শুনে বিমলা এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল আমার আর সম্মান রাখবিনা বলেই বিমলা চলে গেল।


– এই পরী বলেই দুর থেকে ইশিতা চিৎকার দিয়ে এসে পরীকে জড়িয়ে ধরে বলল কেমন আছো?

– আলহামদুলিল্লাহ্ ভাল আছি। আপনি কেমন আছেন আপু?

– হুম ভাল। তোমার নামের সাথে গান একদম পারফেক্ট। অসম্ভব সুন্দর লাগছে তোমাকে। একদম ডানা কাটা পরী।

– শুকরিয়া আপু। নিশু ভাইয়া আর বাসার সবাই আসেনি!

এমন সময় অর্পিতার বান্ধবীরা
” লীলা বালি লীলা বালি
ভরোজও বতী সইগো
কি দিয়ে সাজাইবো তোরে” গানের নাচ করে হলুদ অনুষ্ঠানটি শুরু করল।



– আগে পরিবারের সবাই হলুদ মাখালো। এই প্রথম আমি আর শুভ্র প্রথম একসাথে অর্পিতাকে হলুদ মাখালাম। শুভ্র অর্পিতাকে একটা বক্স উপহার দিল। জানিনা সেখানে কি ছিল। আমিও অর্পিতাকে এক বক্স কিটকাট চকলেট উপহার দিয়ে বললাম অর্পিতা এটাই আমার কাছে ছিল।


– অর্পিতা পরীকে জড়িয়ে ধরে বলল আজকের সেরা উপহার বউদি এটা বলেই বের করে খেতে লাগল। শুভ্রতো পরীর কান্ড দেখে রেগে গেল কিন্তু কিছু না বলে উঠে গেল।


– পরী তুমি আসলেই আজব। এমনি তোমাকে দেখে আকিক ক্রাস খায়নি। যেকোন ছেলে তোমায় এবং তোমার ব্যবহার দেখে ক্রাস খেতে বাধ্য। অনেক নিষ্পাপ তুমি একটা মেয়ে। আমি সত্যি কথা গুলো বলছি। তবে তোমাকে ছোট বোনের মতই আমি দেখি। আমার কোন বোন নাই। আমি আবার মুখের উপর সত্যি কথা বলি।( রনক)


– পরী কিছু না বলে উঠে গিয়ে শুভ্রর কাছে দাড়ায়। কথাটা পরীর খুব খারাপ লাগছে ।

– দুনিয়াতে আর কোন গিফট্ পাওনি যে হলুদে চকলেট দিতে হবে তোমার। বাচ্চামো কেন কর?

– স্যরি বলেই পরী একদম শুভ্রর গা ঘেষে চুপ করে দারিয়ে রইল। কারন রনকের কথায় আকিকের নাম শুনে ওর প্রচন্ড খারাপ লাগছে। ওর জন্য এদের ২ ফ্রেন্ডের মধ্য এত শত্রুতা।


– ২ পরিবার মিলে অনেক পিক তোলা হল। শেষে শুধু শুভ্রদের পরিবারের পিক তোলা হল। এবার শুভ্র পরীকে একদম কাছে টেনে নিল আর কোলে জান্নাত ছিল শুভ্রের। অনেক গুলো পিক তুলল।


– হলুদের অনুষ্ঠান জমে গেছে। অনিল এসে পরীর কাছ থেকে জান্নাত কে কোলে নিয়ে অন্য দিকে চলে গেল। হয়ত সবার সাথে পরিচয় করে দিবে অনিলের মাধুরীকে।


– হাই পরী! কেমন আছো?( রোমান)

– জ্বী ভাইয়া ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?

– ভালো আছি। চিনতে পারছো দেখছি। তুমি যে এত্ত নাইস সেদিন আবছা আলোতে বুঝতে পারিনি। দারুন লাগছে তোমাকে।

– হঠাৎ কেউ পরীর চোখ ধরে চুপ করে রইল।

– পরী হাত দিয়ে দেখলো একটা ছেলের হাত। তাই ঝিটকে ২ হাত পিছনে গিয়ে তাকিয়ে দেখে নিশু। অহ্ ভাইয়া আপনি! আমি তোহ্ ভয় পেয়ে গেছি।

– তুমি আবার আমাকে ভয় পাও বলে নিশু হেঁসে উঠল।

– পরী দি আপনাকে অনিল আঙ্কেল ডাকছে কি জন্য যেন বলে একটা মেয়ে পরীকে ডেকে নিয়ে গেল। কিন্তু পরী নিজেও জানেনা তার জন্য বিপদ দাড়িয়ে আছে।


– পরী কিছু দুরে যেতেই কেউ যেন ওর মুখ চিপে ধরে একটা পান্ডেলের আড়ালে নিয়ে গেল। একদম নিরিবিলি জায়গা। এটা আর কেউ না আকিক ছিল।

– আকিক কে দেখে পরী ভিষন ভয় পেয়ে ধাক্কা দিয়ে ওকে দুরে সরে দেয়।

আপনার সাহস কি করে হয় আমার গায়ে হাত দেওয়া বলেই পরী একটা চড় দেয় আকিককে।

– আকিক ভিষন রেগে গিয়ে পরীর একদম কাছে এসে ওর বাহু শক্ত করে ধরে বলল মেয়ে মানুষের এত্ত তেজ থাকা ভালো নয়। আমি ইচ্ছা করলে অনেক কিছু করতে পারি এখন। কাল সকালে নিজের এই সুন্দর মুখ কাউকে দেখাতেও পারবেনা।

– ছাড়ুন বলছি আমাকে বলেই চিৎকার করে উঠল পরী। কিন্তু এত্ত মানুষের ভীরে চিৎকার কোন কাজে দিলনা।

– পরী! আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। তুমিতো শুধু আকিকের হওয়ার কথা ছিলা। কিন্তু শুভ্র এসে সব নষ্ট করে দিছে। আকিক ফোন বের করে বলল দেখ যেদিন তোমাকে দেখতে গিয়েছিলাম সেদিন এই পিকটা উঠাইছিলাম। সেদিন শুধু তুমি আমার জন্য সেজেছিলা। কেন এমন হল। আমি তো এমনটা চাইনি।

– দেখেন ভাইয়া ভাগ্য বলে কিছু আছে। আমি বা শুভ্র কেউ কাউকে চাইতাম না। বিয়ের পর আমাদের সম্পর্ক হয়েছে। ও আমাকে খুব ভালবাসে। প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন। আমার মেয়ে আছে একটা।


– কোন কথায় আকিকের কানে যাচ্ছেনা। পরীর একদম কাছে এসে এক ধানে তাকিয়ে আছে। পরী নেশা ধরে যায় তোমায় দেখলে। ঠিক থাকতে পারিনা। ৩ বছর পার হয়ে গেছে তবুও ভুলতে পারছিনা। তোমাকে শুভ্রর সাথে দেখলে আমার খুব কষ্ট হয়।


– পরীর চোখ দিয়ে ঝর ঝর করে পানি বেয়ে যাচ্ছে। ঘৃনা আর লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে।

– পরী! তোমাকে এমন একটা জায়গায় আনছি এখানে কেউ আসবেনা। তার ভিতর পুরো দমে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। তোমার খোঁজ অবদি কেউ নিবেনা। সবাই সবার কাজে ব্যাস্ত। এখানে যদি তোমাকে রেপও করি তাহলে কোন রিক্স নাই। রেপ করলে কি শুভ্র তোমায় নিবে!
না নিলে আমার জন্য ভাল।


– সত্যিই কোন রিক্স নাই তাইনা আকিক! আমি বেঁচে থাকতে তুই ওকে রেপ করতে চাইবি আর আমি শুভ্র বসে বসে দেখবো সেটা? একদম ১০ হাত মাটির নিচে পুতেঁ ফেলব তোকে।


– আকিক চমকে পিছনে তাকিয়ে দেখে শুভ্র রাগী চোখে ওদের দিকে তাকিয়ে একটু দুরে দাড়িয়ে আছে। আকিক পরীকে ছেড়ে দেয়।

– পরী শুভ্রর কাছে আসতেই শুভ্র গায়ের শক্তি দিয়ে পরীকে একটা থাপ্পড় মারে। পরী সাথে সাথে আকিকের দিকে তাকায়। আকিক তাচ্ছিল্য সহকারে হেঁসে ওঠে। যেটা পরীর কাছে প্রচন্ড কষ্টকর।


– এই তোমাকে কতবার বলেছি কেউ ডাকলে একা একা যাবেনা! একা কেন এসেছো এদিকে। ফোন কই তোমার? কত বার কল দিছি……….

তোমাকে যেন এখানে আর ১ মিনিটও না দেখি। বাহিরে গাড়ী আছে। আর একটা কথা না বলে বাসায় যাও। এক্ষুনি……


– অনেকটা দুরে তন্নী দাড়িয়ে ছিল। শুভ্রকে ফলো করতে করতে এখানে চলে আসছে। এটাই তাহলে শুভ্রর বউ। বাহ্ বউকে দেখছি ভালয় শাসন করে। বেশ ইন্টারেস্টিং তোহ্। দেখি জল কতদুর গড়ায় বলে তন্নী দাড়িয়েই রইল।


– পরী শুভ্রর থাপ্পড় খেয়ে যতটা কষ্ট না পাইছে তার থেকে আকিকের তাচ্ছিল্য হাসি দেখে প্রচন্ড রেগে গেছে। আকিকের সামনে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে শুভ্রর বুকে কয়েকটা কিস করল এবং কঠোর চোখে আকিকের দিকে তাকাল। আকিক বেশ ভয় পেয়ে গেছে পরীর তাকানো দেখে।


– পরী ছাড়ো কি করছো। বাসায় যাও। কিন্তু পরীর কোন ছাড়ার নাম নাই। শুভ্র এদিক ওদিক তাকাতেই তন্নীকে দেখতে পেল। এই মেয়ে আমার সংসার ভাঙ্গার জন্য দেখছি উঠে পড়ে লাগছে বলেই পরীকে একটু উচু করে তুলে ওর ঠোটে কয়েকটা কিস করল। এভাবে আরও কয়েকটা কিস করে পরীকে ছেড়ে দিল।

শুভ্রর এই কিসের অর্থ এক ঢিলে ২ পাখি শিকার করা। তন্নী আর আকিক বেশ অবাক হয়ে গেল এদের এমন ভালবাসা দেখে। তন্নী তোহ্ মনে মনে বলল শুভ্র যদি আমাকে বিয়ের পর কারো সামনে এভাবে এত্ত জোড়ে চড় মারে,,,,,,,,, জড়িয়ে ধরা তো দুরে থাক ওর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যেত। আর এ দেখছি পুরোই উল্টো।


– শুভ্রর কিস গুলো পেয়ে পরী শুভ্রকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।


– পরী ছাড়ো। এটা আমাদের বেডরুম না যে এখন রোমান্স করবা। বাসায় যাও।


– পরী শুভ্রকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় কিন্তু তন্নীর ফাঁদ থেকে আর বাঁচতে পারেনা না পরী। যেটা শুভ্রর নজরে আর পরে না।


– আকিক কি ভেবেছিস তুই পরীকে খুঁজে পাবোনা আমি! এত্ত কিছু সামাল দিতে পারি নিজের বউকে আগলে রাখতে পারবোনা?

আজ অর্পিতার গায়ে হলুদ তাছাড়া তোর হাল এমন করে ছাড়তাম তুই নিজেও কল্পনা করতে পারতিস না।
আকিক এত্ত খারাপ তোহ্ তোর চরিত্র ছিল না! প্রতিযোগিতা লাগছিস আমার সাথে? আমাদের আলাদা করে দেখাস বলে শুভ্র চলে যায়।


– এদিকে তন্নী পুরোপুরি পরীর ব্রেন ওয়াস করে ছেড়ে দিছে এতটুকু সময়ে। পরী জান্নাতকে নিয়ে চলে বাসায় চলে যায়।

– শুভ্র একটা নিরিবিলি জায়গায় দাড়িয়ে পরীকে কল দিচ্ছে কিন্তু ধরছেনা। শেষে বাসায় কল দিল। কাজের লোককে বলল পরী কি বাসায় গেছে?

– হ্যাঁ অনেকক্ষন আগে বাসায় আসছে তো।

– আচ্ছা ঠিক আছে বলেই শুভ্র কল কেটে দিয়ে পা বাড়াতেই তন্নী পিছন দিক থেকে শুভ্রকে জাড়িয়ে ধরে। শুভ্রও না দেখেই ধাক্কা দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দেখে তন্নী।

শুভ্র প্রচন্ড রেগে গিয়ে বলল এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হয় আমার গায়ে হাত দেওয়া! ৪ বছর আগের থাপ্পড়ের কথা ভুলে গেছ?



– আমার ভিতর কি কম ছিল যে আমি তোমার বউ হওয়ার যোগ্য ছিলামনা। ৪ বছরের বেশি সময় ধরে তোমায় ভালবাসি আর সেখানে একটা মেয়ে এসে তোমার সাথে সংসার করবে? এটা আমি কি করে মেনে নেই…


– দেখ তন্নী যার ভাগ্য যার সাথে আছে তার সাথে সে হবে।
পরীর সাথেও আমার তেমন দুর্ঘটনাবশত ভাগ্য একসাথে জুড়ে গেছে। তাই প্লিজ পাগলামো করনা। নিজে বিয়ে করে নাও আমার পিছে না ঘুরে।

– আমি পারবনা শুভ্র প্লিজ বোঝার চেষ্টা কর।

– পাগল হয়ে গেছ তুমি। আমি বিবাহিত আমার একটা মেয়ে আছে ওরা আমার জিবন আমি তাদের ছেড়ে তোমার কাছে আসবো!

– শুভ্র তুমি কোনদিন সুখী হবানা দেখ। বাসায় যাও তোমার বউয়ের এবার রুপ ভাল করে টের পাবে আমি সেই ব্যবস্থায় করেছি। দেখলাম বউ তোমাকে খুব ভালবাসে সেটাও এবার দেখবো সেই ভালবাসা কতদুর অবদি যায়।

– শুভ্র মুচকি হেঁসে বলল এর মধ্য পরীর ব্রেন ওয়াস করে ফেলেছো দেখছি! আমাকে ভয় দেখাচ্ছো?

আমার পিছে না পরে নিজের টা নিয়ে ভাব তাহলে তোমারই উপকার হবে। তোমার তো লজ্জা বলতে কিছু নাই শুধু লজ্জা কেন বেহায়া একটা মেয়ে তুমি। আমি সব দিক দিয়ে পারফেক্ট তাই আমাকে ছাড়তে পারছোনা না তাই না! কিন্তু এর আগের রের্কড বলে ডর্জন খানেক রিলেশনে মেতে উঠেছিলে তুমি। আমার মুখ খুলে নিওনা।

তুমিতো ৪ বছর আমার পিছে ঘুরছো আর এমনও মেয়ে আছে যে তার দিগুন সময় ধরে আমায় এখনও চায়। তাই নিজেকে নিয়ে এত্ত উৎফুল্লতা করার মত কিছু নেই তোমার…… বুঝছো?

শুভ্র সেখান থেকে চলে আসে কিন্তু মনে ভয় থেকেই যায় এই পরী কি না কি করে ফেলে তার জন্য।


– ১২ টায় অনুষ্ঠান শেষ করে সবাই বাসায় ফিরলো। শুভ্র রুমে এসে দেখলো দরজা ভিতর থেকে চাবি দেওয়া তাই চাবি বের করে লক খুলে ভিতর ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।

পুরো রুমে জিনিসপত্র ছড়ানো ছিটানো। অনেক জিনিস ভাংচুর। পরীর লেহেঙ্গা ফ্লোরে পরে আছে গহনাও। জান্নাত বেডে ঘুমিয়ে আছে কিন্তু পরী নাই। পুরো ফ্লোরে পানি ছড়ানো।
পরীকে না দেখে শুভ্রর বুকের ভিতর ভয় হতে শুরু করলো…….

চলবে——

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here