অস্তিত্বের খোজে part 38+39

0
671

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ৩৮



– দুপুরে খাবারের সময় অনিল এসে দেখে সবাই আছে কিন্তু পরী নেই।
অনিতা! পরী আসেনি?


– যে ধমক দিছো সে কি আর আসবে?(অনিতা)


– অনিল আর কিছু না বলে পরীর রুমের দিকে পা বাড়াল।


– মা! বাবা পরীকে কি বলছে!(কৌশিক)

– কি আর বলবে,,,,,,জান্নাতকে ধমক দেওয়ার জন্য আচ্ছামত পরীকে শাসিয়েছে।

– ঠিক করছে,,,,,,এর আগেও ওকে দেখছি জান্নাতের সাথে এমন ব্যবহার করতে।

– আর তুমি বুঝি অনিলের গায়ে কোন দিন হাত দাওনি বিমলা! তোমার ঢোল কি সবার সামনে বাজাবো? তুমি কেমন ছিলে আগে……..(নিতাই)

– এবার বিমলা চুপ করে রাগে গজ গজ করতে লাগল।

– সবাইতো হেঁসে শেষ বিমলা আর নিতাইয়ের কান্ড দেখে।



– পরীর রুমে কাছে এসে পরীকে কয়েক বার ডাকতেই পরী বলল,,,,,, ভিতরে আসুন বাবা দরজা খোলাই তো আছে।


– অনিল রুমে ঢুকে বলল,,,,,, তুমি এখনও বাচ্চায় রয়ে গেলা পরী। জানোনা নক না করে কারো রুমে প্রবেশ করা ঠিক না?

– আমি আর কোন কথা না বলে চুপ করে বসে রইলাম।

– আমার উপর কি অত্যাধিক রাগ করেছো মা?

– এবার আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগল। চোখ ২টি মুছে বললাম,,,,,,,, না বাবা রাগ করবো কেন। আমি ভুল করছি আপনি শাসন করবেন এটাই স্বাভাবিক।

– রাগ করোনি ভাল কথা তোহ্ কাঁদছো কেন?

– আমি আর নিজেকে আটকাতে পারলাম না। কান্না করতে করতে বললাম,,,,,,, ভাল করে বললেই পারতেন তাই বলে ওভাবে বলবেন ?

– অনিল হেঁসে বলল,,,,,,,পরী! মাধুরী শুধু আমার নাতনী না ও আমার কাছে সব থেকে স্পেশাল একজন ।
যেদিন কারন টা জানবা সেদিন থেকে এই রাগটা কেন করেছিলাম তখন বুঝতে পারবা।
অনিল জান্নাতকে কোলে নিয়ে বলল,,,,,,, নিচে আসো বলে অনিল চলে গেল রুম থেকে।

– আমিও চোখে মুখে পানি দিয়ে ভাল করে নিজেকে ঠিক করে নিচে গেলাম।

– অর্পিতা আজ তুই আমার কাছে না বসে তোর দাদুর কাছে গিয়ে বস। আজতো আমি আমার অন্য ২মেয়েকে নিয়ে এক সাথে খাব।

হুম নিদ্রা আর পরীকে ২ পাশে নিয়ে খেতে বসেছে অনিল। নিজে খাচ্ছে আর একটু একটু করে জান্নাতের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে।

– এমন বাবার উপর কেউ রাগ করে থাকতে পারে! আমার তো চোখ ছলছল করতে লাগল।



– তোমরা ২ বউদি যেদিন থেকে বাসায় আসছো সেদিন থেকে আমার ভালবাসা কমে গেছে। (অর্পিতা)

– কেন রে তোকে আমি এত্ত ভালবাসি সেটা দিয়ে তোর হয়না! ওদের দিকেই তোর নজর দিতে হবে? (নিতাই)



– বিকেলের দিকে নিদ্রা আপু আর অর্পিতা আমাকে এসে বলল,,,,,,চল পরী আজ বাহিরে যাই।

– কই যাবেন আপু?

– এইতো বাহিরে একটু কাজ ছিল। আমরা ৩ জন শুধু যাব।

– শুভ্রকে কল দিয়ে বলি!

– আরে রাখো তো! ও যেতে দিবেনা ওকে ভাল করেই চিনি। শুভ্র ফিরে আসার আগেই চলে আসব বলে আমার ফোনটা কেড়ে নিল নিদ্রা আপু। জলদি রেডী হও।

– আপু আমি না বলে গেলে শুভ্র রাগ করবে। একটু বলি আর তাছাড়া জান্নাত কে রেখে গেলে তো আমায় আস্ত রাখবেনা।

– মা আর বাবাকে বলেই যাব। চিন্তা করনা।

– আর কিছু না বলে রেডী হতেই নিদ্রা আপু বলল,,,,,, শাড়ী না গর্জিয়াস কোন ড্রেস পর বলেই উনি চুজ করে দিল। আমাকে রেডী করে মার কাছে নিয়ে গেল।

– বাবা আমরা ৩ জনে বাহিরে যাচ্ছি। কাছেই যাব। ৭ টার আগেই চলে আসবো। জান্নাত কে রেখে যাব আপনাদের কাছে।(নিদ্রা)


– যাচ্ছো ভাল কথা কিন্তু জলদি এসো বাবা। আর পরী কে যে নিয়ে যাচ্ছো শুভ্র জানে! ওর কিন্তু অভিবাবক আমি না। যার জিনিস তাকে বলে নিয়ে যাও।( অনিল)

– আচ্ছা ঠিক আছে বলে নিদ্রা পরী আর অর্পিতাকে নিয়ে বের হল।



– নিদ্রাই ড্রাইভ করছে।

– আপু তুমি ড্রাইভ করতে ও পারো?(পরী)

– এটা তো আমার বা হাতের খেলা। আজ তোমাকে অনেক কিছু দেখাব। বাসায় বসে বসে তুমি বোরিং হয়ে গেছ পরী। তাই তোমাকে নিয়ে বের হইছি বলে অর্পিতার দিকে তাকিয়ে নিদ্রা হেঁসে উঠল।

– এদের প্লান পরীকে আজ পুরো ঢাকা শহরের সব বড় বড় কিছু দেখাবে।

– আপু নাক ফুটা করে কোথায়। তুমি নাকফুল পড় আমি পড়তে পারিনা। ভাল লাগেনা।

– ওকে চল বলেই পার্লারে ওদের নিয়ে গেল নিদ্রা । দেন কাজটা কমপ্লিট করে বের হয়ে আসে। তখন মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেছে।

– আপু বাসায় চলেন। আমার নামায মিস হয়ে গেছে। তাছাড়া শুভ্র চলে আসবে।

– এই চুপ করতো! সব সময় শুভ্র শুভ্র কেন কর হুম। আমরা কি তোমাকে ভালবাসিনা? আর শুভ্র বাঘ না ভাল্লুক যে ওরে এত্ত ভয় পাও…….(নিদ্রা)

– নিদ্রার ধমক শুনে পরী চুপ হয়ে গেল।


– এদিকে নিদ্রা ওদের ২জনকে নিয়ে ওর বান্ধবীদের কাছে চলে গেল। ১০ জন ফ্রেন্ড সেখানে ছিল। অর্পিতা তো সেই খুশি। নিদ্রা সবাইকে পরীর সাথে পরিচয় করে দিল।

– এই এটা শুভ্রর বউ! ( নিদ্রার বান্ধবী)

– হুম এটা আমাদের শুভ্রর পরী।

– তোর দেবরটা যা,,,,, দেখলে চোখ ফেরানো যায় না । তার বউ সুন্দ,,,,র ঠিক আছে তবে একটু স্মার্ট কম। আর সিঁদুর নাই কেন। তোদের পরিবার যা কড়া এ সিঁদুর না পড়েই ওকে বের হতে দিল?


– বউদি মুসলিম আপু। ( অর্পিতা)

– অহ্ লাভ মারেজ বুঝি! না না শুভ্রর যা রুচি তোমার মত মেয়েকে আর যাই হোক লাভ মারেজ করবে না।
তন্নী কি অসুন্দর ছিল এর থেকে! কোন অংশে কম ছিলনা। তবুও শুভ্র ওর দিকে ভুলেও তাকায়নি। আর একে দেখ……..

– নিদ্রাই এবার রেগে গেল ওদের কথা শুনে। এই শোন! তন্নী সহ আমরা এখানে সবাই মেকাপ সুন্দরী। চুল ছোট ছোট করে কেটে ছোট্ট ড্রেস পরে মেকাপ করলে পরীকে আমাদের থেকে হাজার গুন বেশি সুন্দর লাগবে। তাছাড়া ওকে যেটা দেখছিস ও প্রাকৃতিক সুন্দর।


– আচ্ছা পরী! তোমাকে কি শুভ্র ভালবাসে ?

– জ্বী আপুরা,,,,,, আমি ওকে যতটা বেশি ভালবাসি তার থেকে অনেক বেশি ভালবাসে ও আমায়। আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে করি।

– বেশ কথা বলতো তুমি বলেই সবাই একসাথে হাঁসে উঠল। তোমার বরটা কিন্তু সেই জোস্…..

– আমার তো মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। এরা শুভ্রকে নিয়েই পরে আছে। পরপুরুষ কে নিয়ে এদের এত্ত মাতামাতি কেন?
তাও আবার বিবাহিত পুরুষ। মনে হচ্ছে শুভ্রকে এখানে রাখলে ওকে নিয়ে টানাহিচড়া করে দিবে দিবে সবাই। অসহ্য লাগছে।



– শুভ্র বাসায় চলে আসে এর মধ্য। রুমে ঢুকে দেখে পরী বা জান্নাত কেউ নেই। এমনি আজ পরীর উপর দুপুর থেকে ক্ষেপে আছে তার ভিতর নেই। শুভ্র একটু ওয়েট করে গোসল সেরে চেঞ্জ করে পলাকে ১ কাপ কফি দিতে বলে ওর মায়ের রুমে চলে গেল।


– অনিতাই এবার শুভ্রকে দেখে ভয় পেয়ে গেল। কারন ওরা এখনও ফিরে আসেনি।

– জান্নাত ওর বাবাকে দেখে ছোট্টছোট্ট পায়ে খিলখিলিয়ে বাবার দিকে এগিয়ে আসলো।

– শুভ্র হাতটা বেড়ে দিতেই বাবার কোলে ঝাপ দিল জান্নাত। শুভ্র কি আদর করবে জান্নাত ওকে আদর করছে আর গলা ২ হাত দিয়ে ধরে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরেই বাবা বাবা বলে ডাকতে লাগল।

– আজব মেয়ে তো এতক্ষন ওকে রাখলাম কিছু বলল না বাবা আসতেই তার কত্ত কথা।(অনিতা)

– মা! পরীকে দেখছিনা। পরী কই বলেই ওর মেয়েকে আদর করতে লাগল শুভ্র।

– নিদ্রা আর অর্পিতা মিলে ওকে বাহিরে নিয়ে গেছে একটু পর আসবে। কেন তোকে বলে যায়নি! নিদ্রা বলল তো তোকে বলেই যাবে।

– না মা আমি জানিনা। আমার প্রচন্ড খুদা লাগছে দুপুরে কাজের চাপে খাওয়া হয়নি। খাবার দাওতো।

– অনিতা শুভ্র কে নিয়ে নিচে এসে ওকে খাবার দিল। পলা এসে বলল শুভ্র! তুমি না কফি খাবা তাই নিয়ে এলাম।

– ও ভাত খাচ্ছে দেখছিস না। পায়েস টা নিয়ে আয় তো? (অনিতা)

– শুভ্র জান্নাতের মুখে কিছু খাবার দিল কিন্তু ও কিছুই খেল না। ওভাবেই শুভ্রর কোলে বসে রইলাম। শুভ্র খাওয়া কমপ্লিট করে ওর দাদুর রুমে গেল কিছু কাজের কথা বলতে।


– শুভ্র এটা মনে করল,,,,, পরীতো বাসায় সব সময় থাকে তাই একটু বাহিরে গেছে ভালয় হইছে আবহাওয়া চেঞ্জ হলে ওর জন্যই ভাল।

কিন্তু যখন রাত ১০ টা বেজে গেল এখনও ফিরল না তখন বাসার সবাই টেনশনে পরে গেল। ৩ টা মেয়ে ৭ টার সময় ফিরবে বলে এখনো আসছে না।


– শুভ্র ওর দাদুর রুমে বসে কথা বলছে। এমন সময় “”বাবা মাম দুদু বলেই জান্নাত কাঁদতে লাগল।

– এবার শুভ্র পরীর উপর প্রচন্ড রেগে গেল। কেমন মা! বাচ্চার কথা ওর মনে থাকেনা। এত্ত রাত অবদি বাহিরে কেউ থাকে!

– পলা এসে জান্নাতকে শুভ্রর কাছ থেকে নিল।তারপর ফিডার খাওয়াতে নিয়ে চলে গেল।


– জান্নাতের কান্না দেখে আজ বিমলা প্রচন্ড রেগে যায় পরীর উপর। ছুড়ির হুস কবে হবে! বাচ্চার মা হয়ে গেছে কিন্তু বড় হলনা এতদিনে।

একটার পর একটা ভুল করেই যাবে। এই বয়সে আমরা সংসারের সব কাজ করতাম। আর এ কাজতো দুরের থাক নিজের মেয়েকে ঠিকমত সামলায় না।


– শুভ্র আর কিছু না বলে ওখান থেকে উঠে রুমে চলে আসে। পলা এসে জান্নাতকে শুভ্রর কাছে দিয়ে বলল ঘুমাবে মনে হয়। জিদ উঠে গেছে। ওর মাকে চাই। তুমি সামলাও।


– শুভ্র ওকে বুকে নিয়ে হাঁটছে আর অনেক কথা বলে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছে। এক সময় মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়ে। শুভ্র জান্নাতকে বেডে সুয়ে দিয়ে পরীকে কল দিতেই ড্রেসিং টেবিলে ফোন বেজে উঠল।

এবার শুভ্র আরও রেগে উঠল। ফোনটাও নিয়ে যায়নি? সোজা রুম থেকে বের হয়ে কৌশিকের রুমে গিয়ে বলল,,,,,, দাদা বউদি কে কল দাও তো। এত্ত রাত অবদি বাহিরে থাকে কেউ!


– কৌশিক ল্যাপটপে কাজ করছিল। মুখটা তুলে বলল কেবল ১১ টা বাজে। ওরা তো বাসা থেকে বের হয়না। আজ হইছে। করুক না মজা একটু।

– আচ্ছা ঠিক আছে। তাও তুমি কল দাও একবার।

– কৌশিক শুভ্রের কথায় নিদ্রাকে কল দিল কিন্তু রিসিভ হয়না। বার বার কল দেয় রিসিভ হয়না। এবার কৌশিকই ভয় পেয়ে যায়। শুভ্র রুম থেকে বের হয়ে আসে।


– কেউ কোন কথা বলতে পারছেনা কিন্তু বিমলা আজ চটে গেছে ওদের সবার উপর। নিতাই ও থামাতে পারছেনা। ১১ টা বেজে গেল বাইরে ফুর্তি করতে বের হইছে। নিজের বউদের শাসন করতে পারেনা এরা। কাপুষের দল গুলো। আর অর্পিতা! আজ যদি ওরে কিছু না বল বউমা তোমার খবর আছে বলে চিল্লাতে লাগল বিমলা।


– আপু বাসায় যাব। আমার মেয়ে কান্না করছে হয়ত বলে পরী কেঁদে উঠল ফুফিয়ে।

– আচ্ছা চল বলে নিদ্রা আসতেই ওর এক বান্ধবী বলল,,,,, বাহ্ শুভ্রের দেখছি একটা মেয়েও আছে। হ্যাপি ফ্যামিলি।

নিদ্রা! অনেকদিন পর তোকে পাইছি আজ তো তোকে ছাড়ছিনা। চল বলে ওরা এদের ৩ জনকে নিয়ে বারে গেল।

– অর্পিতা আর নিদ্রা তো সেই খুশি। এবার পরী জোরেই কান্না করতে লাগল। আপু বাসায় চল শুভ্র আজ আমাকে মেরেই ফেলবে।

– আরে ধুর! বাদ দাও তো আমি আছিনা সব সামলে নিব। ফোনটা বের করে নিদ্রা দেখল কৌশিকের কল অনেকগুলো। নিদ্রা আগে ওর একটা ফ্রেন্ডকে কল দিয়ে আসতে বলে কৌশিক কে কল দিয়ে বলল,,,,,, জান! আমরা একটা বারে এখন তাই যেতে দেরি হবে বলেই কল কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দিল।


– কৌশিক তো শেষ। বাসায় এই পরিস্থিতি আর ওরা এখন বারে। গড রক্ষা কর। কে কি করবে জানিনা কিন্তু শুভ্র পরীর অবস্থা যে খারাপ করে ছাড়বে সেটা ওকে দেখেই বুঝে গেছে কৌশিক।


– নিদ্রার সেই ফ্রেন্ডটা আসলে নিদ্রা বলল,,,,,, দোস্ত আমরা তো সবাই মেয়ে তাই আমাদের প্রটেক্ট করার জন্য তোকে ডাকছি। আজ মাস্তি করব। তুই যেন ভুলেও কিছু গিলিস না বুঝছোস।


– এই তোর বর কিছু বলবেনা! এখানে এগুলো করছিস।

– ধ্যাত ছাড়তো,,,,,,, জড়িয়ে ধরে কয়েকটা কিস করলে সব ভুলে যাবে। আমার বর এতটাই ভাল। তোদের মত না।

“রোমান” পরীর দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,, মেয়েটা কে আর কাঁদছে কেন?

– শুভ্রর ওয়াইফ। অনেক ভিতু তাই ওকে আজ লাইফটা ইনজয় করাবই। দুনিয়াটা কত্ত সুন্দর আর এ কিছুই দেখেনি বলেই পরীকে নিয়ে বারে ঢুকে পড়ল নিদ্রা। রোমান ও পিছে পিছে গেল।


– সবাই হুস্কির বোতলটা খুলে ইনজয় করতে লাগল। চারদিকে অনেক ছেলে মেয়ে। হাই বিটে গান চলছে।


– নিদ্রা এসে একটা ছোট্ট গ্লাসে ড্রিংক এনে পরীর সামনে ধরে বলল,,,,,, পরী! এটা টপ করে গিলে ফেলতো। দারুন লাগবে। পৃথিবীটা খুব সুন্দর ইনজয় কর।

– আপু খাবনা এসব। ইসলামে নিষেধ এগুলো। আমি বাসায় যাব চলেন।

– ওকে না খাও। জুস খাইতে তো নিষেধ নাই। আমরা সবাই খাচ্ছি তুমি কেন বসে থাকবা। এখানে শুধু এগুলো পাওয়া যায়না সব ভালও পাওয়া যায়। বলেই একটা জুসের ক্যান এনে পরীকে দিয়ে বলল,,,,,দেখ এটা একদম নতুন কেউ খোলে নি অবদি। নিশ্চিন্তে খেতে পারো। ওরেঞ্জ জুস খাও বলে চলে গেল নিদ্রা।


– পরী জুস হাতে নিয়ে দাড়িয়েই আছে। কখন এসেছে বাসা থেকে। কটা বাজে জানেওনা। নিদ্রা আবার ইশারা করল খেতে। এবার পরী খেয়ে নিল পুরোটাই। প্রচন্ড ঝাঝ লাগছে। কি বিশ্রী খেতে।


– ইয়েশ,,,,,, অর্পিতা ও খেয়েছে। সবসময় চুপ করে থাকে ওর ও একটু আনন্দ দরকার।

রোমান সব কাজ দেখে হেঁসে ফেললো। ভাগ্য গুনে এমন জা আর ননদ পায়। যারা এর খুশির জন্য সব করছে।


– আপু আমাকে কি খাওয়াইছেন! আমার গলা জ্বলে যাচ্ছে বলে পরী কান্না করে উঠল।


– নিদ্রা এসে বলল আরে কিছু না। অনেক দামিতো তাই এরকম। চল বাসায় যাব ১২ টা পার হয়ে গেছে।

– কিহ্ ১২ টা বাজে! আমাকে শুভ্র আজ মেরেই ফেলবে। আমি আর বাসায় যাবনা।


– আজব মেয়ে তো এতক্ষন বাসায় যাওয়ার জন্য কাঁদছিল আর এখন না যাওয়ার জন্য কাঁদছে। রোমানের কাছে বেশ আজব লাগে ব্যাপারটি।


– নিদ্রা সবাইকে বিদায় দিয়ে পরী আর অর্পিতাকে নিয়ে গাড়িতে বসে গাড়ী স্টার্ট দিতেই রোমান এসে বলল,,,,,, পারবি তো ড্রাইভ করতে?

– আরে এই অবস্থায় কত্ত ড্রাইভ করেছি। চিন্তা করিস না সামলে নিব বলেই গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেল নিদ্রা।


– তবুও রোমান ওর বাইক নিয়ে পিছে পিছে আসল। কি হতে কি হয় বলা যায়না তো।


– পরী নিশাতে অনেকটা মগ্ন কিন্তু হুস ভালই আছে। বাসার কাছে এসে থেমে হর্ন বাজাতেই পরী গাড়ী থেকে নেমে রাস্তার মাঝখানে এসে বসে পড়ল।

– দাড়োয়ান গেট খুলতেই নিদ্রা নেমে পরীর কাছে এসে বলল,,,,,, পরী রাস্তার মাঝখানে কেন বসছো বাসায় চল।


– না আপু আমি যাবনা,,,,,, আপনারা যান। আমাকে বাঘের খাঁচায় রেখে আপনারা ঠিকিই কেটে পড়বেন সেটা আমি ভাল করেই জানি। তাই আজ আর বাসায় যাচ্ছিনা।


– রোমান কাছে এসে বাইক স্ট্যান্ড করে নিদ্রাকে বলল,,,,, ওকে ড্রিংক করানো তোর একদম ঠিক হয়নি। শুভ্র যেমন ছেলে ভালর ভাল খারাপের খারাপ।
কেন কাজটা করলি!



– আরে বাদ দেতো। ওর ভয়ে এ কিছু করতেও পারেনা। এরও তোহ্ নিজের একটা লাইফ আছে। আর তুই কেন আসতে গেলি আবার!

– পতি ভক্ত মেয়েরা কখনও লাইফ ইনজয় করেনা নিদ্রা। এদের সব সুখ ওদের স্বামীই হয়। আমি চলে যাচ্ছি ভাল থাকিস বলেই আর নিদ্রাকে কোন কথার সুযোগ না দিয়ে রোমান চলে যায়।


– নিদ্রা পরীকে নিয়ে বাসায় চলে গেল। ডাইনিং রুমে যেতেই পলা বলে উঠল তোমাদের আজ কেউ আস্ত রাখবেনা। গিন্নী মা ক্ষেপে আছে।

– এবার এদের উপর বিমলার বকা শুরু হয়ে গেল। ৩ জনই মাথা নিচু করে সব শুনে গেল। কোন কথা বলল না।


– মা! বাদ দাও তো অনেক রাত হয়ে গেছে। ওদের রুমে যেতে দাও। বাসার মেয়ে বাসায় ফিরে আসছে এটাই অনেক।(অনিল)

– এই তোদের জন্য এদের এত্ত সাহস বেড়ে গেছে। যা পারিস তাই কর বলে বিমলা চলে গেল।


– পরী রুমের কাছে এসে আর সাহস পাচ্ছেনা রুমে ঢুকতে। বাঘ বললে ভুল হবে শুভ্রকে সিংহ বললেও ভুল হবেনা।
অনেকক্ষন পর রুমে ঢুকে দেখে শুভ্র কপালের উপর হাত দিয়ে আধাশোয়া হয়ে জান্নাতকে বুকে নিয়ে শুয়ে আছে।
দরজাটা বন্ধ করে শুভ্রর কাছে এসে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকে পরী। শুভ্রর কোন রেসপন্স না পেয়ে মনে মনে একটু খুশি গয়ে বলল,,,,,, যাক বাঁচা গেল। শুভ্র ঘুমিয়ে পড়েছে।

এবার পরী জান্নাতকে শুভ্রর কাছ থেকে নিয়ে কিস করে বিছানায় রেখে দেয়। শুভ্র চুপ করেই আছে।


– ওড়নার পিন খুলে কেবল ওয়াসরুমে পা বাড়াবে এমন সময় শুভ্র উঠে পরে।

– কই ছিলি রাত ২ টা অবদি! একদম ঠান্ডা গলায় বলল শুভ্র।

– পরীর পুরো শরীর কেঁপে উঠল ভয়ে। আজ শেষ আমি।


– শুভ্র একদম পরীর কাছে এসে ববলল,,,,,,
পরী! কিছু জিঙ্গাসা করেছি!


– আসলে শুভ্র আপু বলতেই,,,,, শুভ্র পরীর মুখ থেকে ড্রিংকের গন্ধ পায়।


– পরী তুই ড্রিংক করছিস! এত্তটা অধঃপতন তোর বলেই ঠাশ্ করে একটা চড় মারল পরীর গালে ।

– আমি যখন অন্য ধর্মে ছিলাম আমাকে ছুতে অবদি দিসনি তোর স্বামী হওয়া স্বত্বেও আর তুই কিনা ড্রিংক করেছিস তাও ইসলামে কঠোর ভাবে নিষেধ করা স্বত্বেও।

– আমি শুধু জুস খাইছি শুভ্র! বলে সব ঘটনা খুলে বলল শুভ্রকে।


– যানিস ওরা বারে যাচ্ছে তুই কেন ভিতরে গেছিস। আর ফোন কেন নিয়ে যাসনি। তুই একটা মুসলিম মেয়ে আর তুই এগুলো করেছিস? ওদের না হয় ড্রিংক করা নিষেধ নাই কিন্তু তুই! আর কার হুকুমে বাসা থেকে বের হয়েছিস? আমাকে একবার ফোন দিছিস।

ফোন দিলেতো আমি বউদি কে নিষেধ করে দিতাম। সেটাও তোহ্ করিসনি। ইচ্ছা থাকলে সব হয়। তখন অন্যর কোন এক্সকিউজ কাজে আসে না।

তোর ইচ্ছাই ছিলনা বলেই শুভ্র ওয়াড্রপের ডয়ার খুলে একটা পিন নিয়ে লাইটার জ্বালিয়ে ধরল পিনের নিচে।


– পরীতো প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল। শুভ্র কি করছো। আমি তো বলছি আমার ভুল হয়ে গেছে। আর কখনও হবেনা। কিন্তু শুভ্রর চোখ লাল হয়ে আছে মনে হয় অনেক কান্না করেছে। তাই কোন কথা না বলে কাজ করেই যাচ্ছে।


– শুভ্র এবার উত্তপ্ত পিনটা এনে পরীর মুখ শক্ত করে ধরে বলল জ্বীভটা বের করতো!

– নাহ্,,,,,,,,, তুমি কি করবা বল আগে?

– পরী! আরও খারাপ কিছু করে ফেলব কিন্তু যা বলছি তাই কর।

– এবার পরী জ্বীভ টা বের করতেই শুভ্র চট করে ওর জ্বীভে গরম পিন দিয়ে কয়েকটা ছ্যাকা দেয় আর ডান হাতের তালুতে পিনটা রেখে হাতের মুঠ চিপে ধরে বলে এই হাত দিয়ে ড্রিংক খাইছিস না! খুব ভুল করেছিস বলেই উঠে পড়ে শুভ্র।

– পরী সহ্য না করতে পেরে ধপ করে বসে পরে ফ্লোরে চিৎকার দিয়ে। বার বার হাত মুখের কাছে নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু কিছু করতে পারছেনা।

পরীর চিৎকার চার দেয়ালের মধ্য সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু জান্নাত জেগে ওঠে। শুভ্র ওকে কোলে নিয়ে বেলকুনিতে গিয়ে থাইটা বন্ধ করে দেয়। যাতে জান্নাতের কান অবদি পরীর চিৎকারের শব্দ না আসে।

আর পরী শব্দ করে কেঁদেই চলছে। শুভ্র বাহির থেকে সেটা দেখছে। জান্নাত আবার ঘুমিয়ে পড়লে রুমে এসে ওকে সুয়ে দিয়ে বলল,,,, শব্দ কম করবি! জান্নাত যদি ওঠে তাহলে এবার কিন্তু,,,,,,,, শুভ্রর কথা শেষ না হতেই পরী চুপ করে নিশব্দে কেঁদে যাচ্ছে।


– ওঠ,,,,, আর পুরো ফ্লোর মুছে ফেল যেখানে যেখানে পা দিছিস তারপর গোসল দিয়ে আয়। আর এই নাপাক অবস্থায় তুই জান্নাত কে কিভাবে ছুয়েছিস?


– পরী উঠে পুরো ফ্লোর বাম হাত দিয়ে অনেক কষ্টে মুছে গোসল দিয়ে এলে শুভ্র বলল,,,,, তওবার ২ রাকাত নামায পর। সেজদাহ্ তে গিয়ে মাফ চাবি। ১ ঘন্টা জায়নামাযে বসে থাকবি আর ♥আল্লাহ♥ র কাছে মাফ চাইবি তোর ভুলের জন্য। আমি যেন উঠতে না দেখি।


– শুভ্র যা যা বলছে পরী নিশব্দে তাই করছে আর কান্না করে যাচ্ছে। ১ ঘন্টার বেশি সময় ধরেই বসে আছে পরী জায়নামাযে।
শুভ্র ওযু করে এসে ওকে কোরআন দিয়ে বলল নিম্নে ৫ রুকু কোরআন তেলায়াত করবি তারপর উঠে গিয়ে সুয়ে পরবি।


– পরী সব কাজ কমপ্লিট করে বেডে গিয়ে সুয়ে কাঁদতে লাগল ওর মেয়েকে জড়িয়ে। আর শুভ্র তাহাজ্জুদ নামাযে দাড়িয়ে গেল।

♥আল্লাহ্♥ আমি যতটুকু পারছি পরীকে শাস্তি দিছি ওর কঠিন ভুলের জন্য। কিয়ামত মাঠে জালিমদের কাতারে আমাকে কখনও দাড় করিও না। ওর অজান্তে হারাম জিনিস খাইছে ওকে ক্ষমা করে দাও প্রভু। ইসলামের পরে দুনিয়াতে এই একটা জিনিস আমার খুব প্রিয়। আমি ওকে শুধু দুনিয়াতে চাইনা।পরকালেও জান্নাতে এভাবেই স্ত্রী রুপে চাই। পরকালে জান্নাতুল ফেরদ্দৌসেও একসাথে থাকতে পারি যেন প্রভু। আমি নতুন মুসলিম। পরীর পর্দার ব্যাপারেও সব ঠিক করে ফেলব। একটু সময় দাও প্রভু হজ্জে যাওয়ার আগ অবদি। কারন আমি এমন একটা পরিবারে থাকি সেখানে অনেক কাজ আছে যেগুলো বদলাতে একটু সময় লাগবে।

শুভ্রের চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরে যাচ্ছে। কারন পরীর আর্তচিৎকার ওকে অনেক আঘাত করেছে। কিন্তু করার কিছু নাই। ড্রিংক করা ব্যাপারে কঠোর নিষেধ এবং শাস্তির নির্দেশ দেওয়া আছে ইসলামে।

চলবে——

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ৩৯



– শুভ্র রাতে আর ঘুমাল না। নামায শেষ করে কোরআন তেলায়াত এবং তসবিহ্ পাঠ করতেই ফযরের আযান দিয়ে দেয়। ফযরের সালাত আদায় করে পরীর পাশে এসে দেখে পরী বেহুশের মত পরে পরে ঘুমাচ্ছে। শুভ্র কয়েকবার ডাকল কিন্তু উঠল না। হয়ত নেশার রেশ কাটেনি এখনো।


– পরীর গায়ে হাত দিয়েই দেখল জ্বরে গা পুরে যাচ্ছে ওর। শুভ্র জলদি মেডিসিন বক্স খুলে দেখে জরুরি মেডিসিন টাই নেই।
শুভ্র আর দেরি না করে বাসা থেকে বের হইল মেডিসিন আনতে।
১০ মিনিটের রাস্তা তাই হেঁটেই গেল দোকানে।


– আরে শুভ্রদা আপনি এত্ত ভোরে! কি মনে করে……
ভাল আছেন?

– জ্বী,,,,,, আপনি ভাল আছেন বলে মেডিসিন নিয়ে বাসায় দ্রুত ফিরে কিচেনে গিয়ে স্যুপ বানাইতে লাগল।


– শুভ্র! সাত সকালে রান্না ঘরে কি করিস?(বিমলা)

– একটু স্যুপ বানাচ্ছি দিদুন। কিছু বলবে?

– তুই তো স্যুপ এমনি এমনি খাসনা। পরীর জন্য বানাচ্ছিস?

– হুম,,,,, বলে কাজে মনোযোগ দিল শুভ্র।

– শুভ্র তুই তো বউ পাগল ছেলে না তাহলে এগুলো বানাতে রান্নাঘর অবদি আসলি! কাল ওতগুলো অন্যায় করার পরও।

– দিদুন ইয়াং বয়সে দাদু কি তোমার একটুও যত্ন নেয়নি?

– এবার বিমলা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল শুভ্রের কথায়। কি বলবে আর ভেবে পাচ্ছেনা।

– দেখছো! নিজেরা সব করছো আর আমরা করলেই যতসব দোষ তাই না?
এত্ত কথা না বলে আমার বউটার যত্ন একটু আমাকেই নিতে দাওনা!।ও অসুস্থ বলেই শুভ্র বাটিতে স্যুপ ঢেলে নিয়ে চলে গেল।

– তোরা সবাই কাপুরুষ। কাল ৩ জনকে কেউ কিছু বলেনি। এত্তবড় একটা অপরাধ করল তবুও কোন শাসন নাই! সংসারে নিয়ম কানুন বলতে কিছুই নাই দেখছি। কথা গুলো অনেক চিল্লায় বলল বিমলা।



– রুমে এসে পরীকে কয়েকবার ডাকতেই চোখ খুলল পরী। অসহ্য ব্যাথায় মেয়েটা কথা বলতে অবদি পারছেনা।

– পরী ওঠো,,,,,, যাও জলদি ফ্রেস হয়ে আসো ।

– পরী শুভ্রর কোন কথা না শুনে চুপ করে ওভাবেই বসে রইল।

– পরী……….. আমি তোমাকে কিছু করতে বলেছি!কথা কি শুনবা না?

– এবার পরী সুর সুর করে ওয়াসরুমে উঠে গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসে। মুখে পানি দিতে পারছিল না।
জ্বিভ আর হাতে মারাত্মক ফোসকা উঠে গেছে। পুরো চোখমুখ ফুলে লাল হলে আছে।


– শুভ্র ওকে স্যুপটা এগিয়ে দিয়ে বলল এটা খেয়ে নাও।

– একটু মুখে দিতেই জিহ্বা জ্বলে গেল তাই আর খেতে পারল না। এবার পরীর চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল রাতের ঘটনা মনে হতেই।

– শুভ্র সেটা দেখে আলমারী থেকে ২ টা বক্স বের করল। ২ টাই চকলেটের বক্স ছিল। কাল পরী আর অর্পিতার জন্য এনেছিল। কিন্তু এত কিছু হয়ে যাওয়ার জন্য দিতে পারেনি। একটা চকলেটের বক্স পরীর হাতে দিয়ে বলল এটা খাও। কষ্ট হবেনা আর।



– পরী শুভ্রকে শুধু ভালই বাসেনা অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও করে। এমনি মনমানিল্য হয় কিন্তু কথা অমান্য করে না কখনো শুভ্রর। তাই চকলেট বের করে মুখে পুরে দিয়ে খেতে লাগল।


– শুভ্র মেডিসিন গুলো নিয়ে ওর পাশেই বসে আছে খাওয়া শেষ হওয়ার অপেক্ষায়। খাওয়া শেষ হলে মেডিসিন খাওয়াই দিল।

পরী! আর একটা চকলেটের যে বক্স আছে ওটা অর্পিতাকে তুমি নিজে দিও। ওর ভাল লাগবে তুমি দিলে।

– এবার পরী ফিকরে কাঁদতে লাগল।

– পরী! কান্না বন্ধ করো। কান্না করলে তোমায় ভাল দেখায় না।

– কিন্তু কে কার কথা শোনে বেচারী কান্না করেই চলছে।

– এই কান্না থামাবি! বলেই জোড়ে একটা ধমক দিল শুভ্র।
চোখ মুছে ফেল! আর এক ফোটা যদি চোখ দিয়ে পানি পরে তাহলে কিন্তু…………..

– শুভ্রকে আর কিছু বলতে হয়নি পরী একদম চুপ। চোখে পানি এলেও বার বার চোখ মেলাচ্ছে আর বন্ধ করছে। যাতে চোখ দিয়ে পানি না পরে।

– শুভ্র এটা দেখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে পরীকে জড়িয়ে ধরে কয়েকটা কিস♥♥♥♥করল।
I Love You dear………
আমি ভালবাসি কিন্তু প্রকাশ করি কম বোঝই তো!


– পরীও রাগে শুভ্রর কাছ থেকে নিজেকে বার বার ছুটাতে চেয়েও ব্যার্থ হচ্ছিল।

– শুভ্র এবার ওকে চটাস্ চটাস্ করে আরো জোড়ে জোড়ে কিস করতে লাগল।

– পরীও নখ দিয়ে শুভ্রের পিঠ জোড়ে খামচে ধরে আর একদম বুকে কামড় বসিয়ে দেয় ওর।

– শুভ্র তবুও ওর ইচ্ছা মত আদর করেই গেল কোন দিকে না খেয়াল করে। যতক্ষন না ওর নিজের তৃপ্তি মিটে। একের পর এক কিস করতে লাগল।

– পরী এবার ফুফিয়ে কাঁদতে লাগল।

– শুভ্র পরীর কান্না দেখে ছেড়ে দিল। আর কিছু না বলে উঠে গিয়ে সোফায় সুয়ে পরে। আর একটা কথাও বলেনি পরীর সাথে।

– পরীও কিছু না বলে সুয়ে পড়ল। ওর প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে।



– সাড়ে আটটায় এর্লামে শুভ্রর ঘুম ভেঙ্গে যায়। শুভ্র গোসল করে রেডী হয়ে জান্নাত কে কোলে নিয়ে ওর মার কাছে গেল।


– অনিতা নাস্তা বানাচ্ছিল কিচেনে। আর অর্পিতা পাশে দাড়িয়ে আছে। কালকের ঘটনার পর অর্পিতা একদম সাধু হয়ে গেছে। মায়ের পিছে ঘুর ঘুর করছে শুধু।

– মা! জান্নাতকে একটু রাখ তো তোমার কাছে!

পরীর গায়ে জ্বর আসছে। ওর কাছে একটু যেও।আমি ১২ টার দিকেই চলে আসবো।

– দাদা! বউদির আসলে কোন দোষ ছিল না। আমরাই…… বলা শেষ হওয়ার আগেই শুভ্র ঠাশশশ্ করে একটা চড় মারে অর্পিতাকে।


– আনন্দ করা ভাল অর্পিতা,,,,,,, কিন্তু অতিরিক্ত করা মানে এই নয় যে লিমিট ক্রস করে ফেলবি। সব কিছুর একটা সীমা আছে বলেই জান্নাতকে ওর মায়ের কাছে দিয়ে কোন নাস্তা না করেই শুভ্র অফিসে চলে যায়।


– অর্পিতা তো সেই কান্না। অনিতা তো থামাতেই পারছে না অর্পিতাকে।


– অর্পিতার কান্না শুনে বিমলা আর পলা এসে বলল কি হইছে,,,,,, ও কাঁদছে কেন!


– দাদা আমার গায়ে কোন দিনও হাত তোলেনি। আর আজ আমায় এভাবে মারল বলেই ফিকরে কান্না করে বাসা মাথায় তুলল অর্পিতা।

– অনিতার ওদিকে খেয়াল নাই। শুভ্র প্রতিদিন নাস্তা করে যায় আর আজকে না করেই চলে গেল! অনিতার কি আর খাবার মুখে রুচবে?


– ডাইনিং রুমে অর্পিতা জোরে জোরে কান্না করছে। শুভ্র কোন দিনও একটা ধমক অবদি দেয়নি আর আজ গায়ে হাত তুলল! এটা অর্পিতা মেনেই নিতে পারছেনা।

– ওর কান্না শুনে সবাই ওর কাছে এসে বলল কি হইছে ও কাঁদছে কেন।

– এবার বিমলা খেঁকিয়ে উঠে বলল,,,,,, শুভ্র হয়ে ১ টা মারছে আমি হলে গায়ের ছাল তুলে ফেলতাম সব কটার। আর ঐ ২জন বাঁকি থাকল কেন?

ওদেরও শায়েস্তা করা দরকার। মেয়ে মানুষ মেয়ে মানুষের মত থাকবা নাতে কাল নেশা করে বাসায় ঢুকছে। মানসম্মান বলে এদের কিছু আছে!

উমমমম,,,,,,, মনে ফুর্তি জাগছে একেকটার!


– নিদ্রা তো চুপ করে কথা গুলো শুনছে। কাল এত্ত রাত অবদি বাহিরে থাকা একদমই ঠিক হয়নি। আসলেই তো ভদ্র ঘরের মেয়েরা এত্ত রাত অবদি নিশ্চয় বাহিরে থাকবে না!


– সকালে সবাইকে নাস্তা দিয়ে অনিতা পরীর রুমে গিয়ে দেখে ও ঘুমাচ্ছে। হঠাৎ পরীর হাতের দিকে অনিতার নজর যায়। হাত দেখে শিউরে ওঠে অনিতা। আর বুঝার বাঁকি রইল না শুভ্র অর্পিতাকে কেন ওভাবে মারল। অনিতার চোখে পানি এসে গেল।


– জলদি অনিতা পরীর কাছে গিয়ে হাতে জেল লাগিয়ে দিয়ে গায়ে হাত দিয়ে দেখে জ্বরে শরীর পুরে যাচ্ছে। শুভ্র কেমন হুম ওর মনে কি দয়ামায়া বলতে কিছু নাই! কাউকে কেউ এভাবে শাস্তি দেয়?


– অনিতার আর সকালে খাওয়া হল না। সন্তান না খেলে ও কেমনে খাবে। অনিল, কৌশিক, নিতাই এরা যখন নাস্তা করে বাসা থেকে বের হয়ে গেল তখন অনিতা,,,,,,,, নিদ্রা আর অর্পিতাকে ডাইনিং রুমে বসে ইচ্ছা মত ঝাড়ল। বিশেষ করে অর্পিতাকে।


– শুভ্রর একটা থাপ্পড়ে ভ্যাড়ার মত ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে লাগছিস। পরী যে শাস্তি পাইছে এটার তুলনায় কিছু না। আমার তো মনে হচ্ছে তোমাদের ২ জনকেই মাটিতে পুঁতে ফেলি।


– নিদ্রা কোন কথা না বলে দৌড়ে পরীর রুমে গিয়ে দেখল সত্যিই ওর হাত পুরে গেছে অনেকখানি। নিদ্রার চোখের পানি আর আটকাতে পারল না। কাঁদতে কাঁদতে শুভ্রকে কল দিল।


– হ্যাঁ বউদি বল!


– আমাদের ভুলে শাস্তি তুমি পরীকে কেন দিছো!

– বউদি আমার সামনে অনেকে আছে। তাছাড়া একটু পর আমার একটা মিটিং আছে। বাসায় গিয়ে কথা বলি!


– নিদ্রা কল কেটে দিয়ে পরী পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। সবাই রুমে চলে আসে। নিদ্রা পরীকে জলপট্টি দিচ্ছিল আর চোখের জল ফেলছিল।


– কি অর্পিতা বাসা মাথায় তুলে কাঁদ……..।
দাদা মেরেছে তো!
আর পরী! এত্ত শাস্তি পেয়েও চুপ করে সুয়ে আছে।
এ অভিযোগ কাকে করবে । এর তো কেউ নেই যে তাকে অভিযোগ করবে। (বিমলা)


– অনেকক্ষন পর পরী চোখ মেলে তাকিয়ে সবাই কে দেখে বেশ লজ্জা পেয়ে যায়। কারন তাদের স্বামী- স্ত্রীর ব্যাপার গুলো নিজের রুমের ভিতর সীমাবদ্ধ থাকাটাই শুভ্র এবং পরী ২জনেই পছন্দ করে। কিন্তু আজ সব জেনে গেল। পরী হাতটা চট করে লুকিয়ে ফেলে।


– পরী কেন কথা বলছেনা। এরা কেউ জানেনা। কারন ও কথাই বলতে পারছেনা জ্বিভ পুরে যাওয়ার কারনে। শেষে অর্পিতাকে ইশারা করে চকলেটের বক্স দেখিয়ে দিল।


– অর্পিতা বক্সটা হাতে নিয়ে বুঝল শুভ্র এটা হয়ত গতকাল ওর জন্য নিয়ে আসছিল। অর্পিতা রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে দরজা বন্ধ করে দিয়ে অনেকক্ষন কাঁদল। আজ ওর জন্য দাদা – বউদি সবাই কষ্ট পাইল। নিদ্রাকে যদি ও কথাটা না বলত! পরী কে বাহিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাহলে এমনটা কখনও হত না।



– মেডিসিন গুলো কাজে লেগে গেছে। পরী অনেকটা সুস্থ। জিহ্বা জ্বলছেনা। কথাও বলতে পারছে। জান্নাতকে কোলে নিয়ে ফিডিং করাতে লাগল।


– ১২ টার পর শুভ্র বাসায় আসল। শুভ্র কেবল ফ্রেস হয়ে বেডে বসছে এমন সময় নিদ্রা সোজা রুমে আসল। সাথে পরীকেও নিয়ে আসলো।


– হুম বল বউদি কি বলবা! তখন ব্যাস্ত ছিলাম। এখন ফ্রী বলতে পারো।

– শুভ্র! পরীর জায়গায় আমি যদি তোমার স্ত্রী হইতাম ২ দিনও তোমার সংসার করতাম না।

– নাউযুবিল্লাহ্,,,,,,, বউদি কি বলো সব!

– আমরা দোষ করছি আর শাস্তি ওকে পেতে হবে!

– শুভ্র এবার পরীর দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,, পরী! তুমি কি আমার সাথে সংসার করতে চাওনা?
না তুমিও বউদির কথার মত আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে!

————————————?

– পরীর কোন জবাব না পেয়ে শুভ্র নিদ্রাকে বলল,,,,,, বউদি আমি যে ওকে খুন করিনি এটা ওর ভাগ্য। ও যদি ইচ্ছা করে খেত তাহলে সেটাও করে ফেলতাম।

– তুমি এতটা নিষ্টুর? এই তোমার ভালবাসা! পরীর জন্য তোমাকে কাঁদতে অবদি দেখছি শুভ্র! আর আজ এই কথা,,,,,,,, সামান্য ড্রিংক করাতে।

– বউদি তুমি হয়ত জানোনা এমন একজন সাহাবী ইসলামে ছিল মদ খাওয়ার জন্য নিজের সন্তান কেও হত্যা করেছে। আমিতো তার মত না তাই ওতটুকুই পরীকে শাস্তি দিছি।
ইসলামে সম্পূর্ন হারাম এটা।


– শুভ্র! পরীর মা-বাবা নাই দেখে তুমি ওকে,,,,,,,,,, তাই বলে ইচ্ছা মত অত্যাচার করবে!
ওর কোথাও যাওয়ার জায়গা নাই তুমি ছাড়া আর এটার সুযোগ তুমি নিচ্ছ শুভ্র।
এর ব্যবস্থাও আমি নিচ্ছি বলেই পরীর হাত ধরে বের হয়ে আসল রুম থেকে নিদ্রা।


– নিদ্রার কথাটা শুভ্রের কলিজা ভেদ করল। প্রচন্ড খারাপ লাগল শুভ্রের। পরী শুভ্রের জন্য কি সেটা একমাত্র শুভ্রই ভাল জানে।

কিন্তু পুরো রাত না ঘুমানোর জন্য শুভ্র বেডে শুয়ে পড়তেই ঘুম চলে আসল।
“”

– দুপুর ২ টার সময় অনিতার ডাকে শুভ্রের ঘুম ভেঙ্গে গেল। চোখ মেলে শুভ্র ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,, মা! আর একটু ঘুমাই না?


– না ওঠ খাবার সময় হয়ে গেছে। সেই কাল সন্ধায় খাইছিস এখন অবদি কিছু খাসনি। চল উঠে পর।

– তুমিও তো খাওনি মা! আচ্ছা ঠিক আছে আমি নামায পড়েই যাচ্ছি।


– এরা মা- ছেলে একে অপরের সমস্যা চট করে ধরে ফেলে। অনিতা আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেল।

– শুভ্র নামায পড়ে ডাইনিং রুমে বসে দেখল পরী বসে আছে। আর পাশে নিদ্রাও ।

২ জনেই শুভ্রের দিকে তাকাচ্ছেনা অবদি। শুভ্রও কিছু না বলে ওর মাকে ডাকল।


– অনিতাকে কাছে নিয়ে এক সাথে শুভ্র খেতে বসল। কিন্তু সমস্যা হইল পরীর। ও খেতে পারছেনা। ঝালে জিহ্বা প্রচন্ড জ্বলতে লাগল। অসহায় ভাবে শুভ্রর দিকে তাকালো।


– শেষে শুভ্রর জন্য অঝাল রান্না করা আলাদা তরকারী টা প্লেটে নিয়ে খেতে লাগল। আহ্ শান্তি আর ঝাল লাগছেনা।


– সবাই তো অবাক। এই ঝালখোর মেয়েটা কিনা অঝাল তরকারি অনায়াসে খেয়ে ফেলছে?


– অনিতা ভাবল শুভ্রকে হয়ত শাস্তি দেওয়ার জন্য পরী ইচ্ছা করে এমন কাজ করছে।

পরী! আমিতো এতটুকুই রান্না করেছি। তুমিতো সব নিলা আমার শুভ্র কি খাবে!


– মা! ও খাক,,,,,,সমস্যা নাই ওকে পুরোটাই দাও।

পলা আন্টি দুধ গরম করে নিয়ে আসেন তো। আমি দুধ দিয়েই আজ না হয় ভাত খাব।


– এখন দুধ দিয়ে ভাত খাবি? (অনিতা)

– হুম,,,,, সমস্যা নাই মা। আমি সবসময় খেতে পারি।

– নিদ্রা মনে মনে শুভ্রকে হাজারটা বকা দিয়ে বলল,,,, বেশ হইছে।

– বউদি! তুমি মনে হয় আমাকে বকা দিচ্ছো?

– নিদ্রা বিষম খেয়ে গেল। ও কেমনে জানলো!

– পলা দুধ গরম করে আনলে শুভ্র কিছু মিষ্টি আর দুধ দিয়ে ভাত খেয়ে উঠে গেল।



– শুভ্র রুমে এসে জান্নাত কে নিয়ে আবার ঘুমিয়ে পরে।

– এর মধ্য পরীর সাথে আর কোন কথা হয়নি শুভ্রের।

শুভ্র সন্ধ্যার পর জান্নাত কে নিয়ে বাহিরে ঘুরতে যায়।


– পরী রুমে বসে ফেসবুক এক্টিভ করে চালাচ্ছিল। শুভ্র এমন সময় রুমে আসে ওর মেয়েকে নিয়ে। জান্নাতকে বেডে রেখে ফ্রেস হইতে যায়।

জান্নাত ওর মাকে দেখে খুব খুশি হয়ে দৌড়ে মায়ে কাছে যায়। পরী ওর মেয়েকে কোলে তুলে নিল।
মা! আজ কই গিয়েছিলা বলেই আদর করতে লাগল।
জান্নাত ওর মাকে ছোট ছোট কিস দিয়ে আদর করতে লাগল।
বাব্বা আমার মেয়েটা তো কিসি দিতে শিখে গেছে।


– শুভ্র ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে ল্যাপটপ নিয়ে সোফায় বসে কাজ করতে লাগল।




– নিদ্রা অনিলের কাছে গিয়ে শুভ্রের বিরুদ্ধে নালিশ করল। বাবা! আপনি ওকে কিছু বলেন। গতরাতে পরীকে কি করেছে যানেন,,,,, বলে সব কথা খুলে বলল নিদ্রা।
শুভ্র পরীকে প্রচুর টর্চার করে বাবা। ওখানে অর্পিতাও ছিল।


– অনিল এই প্রথম শুভ্রর উপর প্রচুর রেগে গেল। ও পাইছেটা কী? সবসময় এভাবে ওর সাথে ব্যবহার করবে! দারাও ওর কি হালটায় না করি।
অনিল উঠে সোজা শুভ্রের রুমের দিকে গেল।


– বাবা যে রেগে গেছে আজ দাদাকে আস্ত রাখবেনা। পরীকে কল দিল অর্পিতা।

– পরীর ফোনে কল আসতেই পরী দেখল অর্পিতা কল দিয়েছে।
অর্পিতা! এখন কল দিছে কেন?
রিসিভ করতেই…….


– বউদি! বড় বউদি বাবাকে সব বলে দিছে। বাবা তো সব শুনে প্রচন্ড রেগে গেছে। দাদাকে আর আস্ত রাখবেনা। প্লিজ কিছু করো।
তোমার রাগটা পরে না হয় ঝেড় দাদার উপর এখন কিছু একটা কর বউদি।
বাবা রেগে গেলে সব শেষ করে দেয়।


– শুভ্রর দিকে তাকিয়ে দেখি শুভ্র উঠে গিয়ে আলমারি থেকে কিছু ফাইল বের করছিল। আমি জান্নাতকে রেখে চট করে উঠে গিয়ে দরজা টা খুলে দিয়ে শুভ্রকে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরলাম।
বাবা যেন সরাসরি দেখতে পায় আমাদের তাই দরজাটা একটু খুলে রাখলাম।


– কি ব্যাপার পরী! হঠাৎ জড়িয়ে ধরলা বলেই আমার কাছ থেকে শুভ্র নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ফিরে তাকাল আমার দিকে।


– আমাকে আর পায় কে শুভ্রকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কয়েকটা কিস করতে লাগলাম।


– শুভ্রও পরীর কোমর ধরে একটু উপরে উঠিয়ে ওর ঠোটের কাছে পরীর ঠোট এনে ধীরে ধীরে বলল কি ব্যাপার! এত্ত রোমান্টিকতা আসল কোথা থেকে আমার বউয়ের হুম?
এবার শুভ্র নিজের ঠোট দিয়ে পরীর ২ ঠোট আলিঙ্গল করল আষ্টে পৃষ্টে।


– অনিল শুভ্রর রুমের সামনে এসে থমকে দাড়াল। আর শুভ্রও ওর বাবাকে দেখে ফেলে পরীর ঠোট ছেড়ে দেয়।

পরী বাবা! বলে শুভ্র পরীকে ছাড়াতে গিয়ে পরী আরও জোড়ে শুভ্রকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়। পরীতো এটাই চায় বাবা ওদের এভাবে দেখুক।

চলবে——

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here