You_are_mine season_2 Poly_Anan part_3

0
2566

You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_3

রাগে ঈশার সবকিছু ভাঙ্গতে ইচ্ছে করছে।এই ঈশান শাহরিয়ার লোকটা এতো খারাপ কেন…! তার পার্সনাল জীবনটাকে পুরো রস কসহীন বানিয়ে ছাড়ছে।
সে একটু আগে ফেসবুকে ডুকে পুরাই শক।এটা তার আইডি নাকি অন্যকারো সে নিজেও বুঝতে পারছেনা।আইডির প্রোফাইলে ঈশার একটি মিষ্টি হাসির পিক ছিল কিন্তু তার পরিবর্তে টম এন্ড জেরির পিক।আইডিতে হাজার হাজার ছবি ছিল কিন্তু সেই আইডিতে কোন পিক নেই। ফ্রেন্ড লিস্ট চেক করে আরো বড় ধাক্কা।গুটি কয়েক ফ্রেন্ড ছাড়া আর কেউ নেই।

হাতের সামনে একটি বালিশ পেয়ে তা ছুড়ে ফেলে ওরনা মাথায় জড়িয়ে অনুর কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় এদিকে ঈশার বাবা মা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে
হঠাৎ ঈশা এতো রেগে গেল কেন?

অনু এখনো কাথাঁ জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে।ঈশা এতে আরো রেগে যায় যত সমস্যা এই মেয়ের জন্য এই মেয়েকে কে বলেছিল সেদিন পাকনামি করতে। তাকে ব্লাকমেইল করে এখন ২ বছরের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।২ বছর কি সহ্য করবে? ২ দিনেই ঈশা পাগল হয়ে গেছে। তার নিজেকে বদ্ধ কারাগারে কয়দীর মতো লাগছে। যদি যানতো মাথা ফাটানোর দায়ে তাকে এতো বড় শাস্তি দেওয়া হবে তবে সে আরো দুইচারটা আঘাত আরাও বেশি দিতো।

“এই অনু,অনু উঠ। এখনো কিসের ঘুম! কিছুক্ষন পর আযান দেবে এই অনু…
” উহু..
“আরে উহু কি উঠ বলছি খুন করে ফেলবো তোকে আমি.. আমার আইডি খেয়ে দিছে ওই শয়তানটা..
অনু এবার সাথে সাথে চোখ খুলে,
” মানে কি?
“কাল দেখ ঈশান শাহরিয়ার আমাকে মেসেজ দিয়েছে আমি তার কথা শুনলাম না। এখন আমার আইডি পুরো সাদা ভাত করে ছেড়েছে!
” মানে কি ত..তোর আইডি হ্যাক হয়েছে(অবাক হয়ে)
“তা নয়তো কি! এবার আমি কি করবো আমার ইচ্ছে করছে খুন করতে এই ছেলেটাকে!
” কি বলছিস কি তুই?আমার মাথায় ডুকছেনা!
“যা শুনেছিস আমি তাই বলেছি।(দাতে দাত চেপে)
“তুই আমার সাথে পার্সোনাল কথা থাকলে ফোন করে বলবি এই ছেলেটা যে ডেঞ্জারাস তা কিন্তু প্রতিটা ধাপে ধাপে প্রমান দিচ্ছে।

ঈশা গভীর চিন্তায় পড়ে যায় কি করে পাবে এর সমাধান।আর অনু ঈশার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,
“আমার যা বুঝার বোঝা শেষ ঈশা।ওই ঈশান শাহরিয়ার মানুষটা ডেঞ্জারাস তোকে সহযে ছাড়বেনা।তবে সত্যি যদি সে তোকে ভালোবাসে তবে সেই মানুষটা যেন তোকে পায়।

রাত বারোটার কাছাকাছি ঈশা ঘুমাতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সময় অনু তাকে কল করে,
” হ্যা বল!
“ঈশা ছাদে আয় প্লিজ!
” এতো রাতে ছাদে কি অনু আমি পারবো না!
“প্লিজ ঈশু প্লিজ আমার কথাটা রাখ তুই ছাদে আয়!
” ওকে আসছি!

ঈশা ভাবতে থাকে তাকে ছাদে কেন ডাকা হয়েছে অবশ্য এই মেয়ের বিশ্বাস নেই নিশ্চই উলটা পালটা কোন মতলব করছে।ঈশা ছাদের দরজা খুলে দিতেই স্তব্দ হয়ে যায় পুরো ছাদ নিয়ন বাতির আলোতে আলোকিত। ছোট ছোট লাইট গুলো দিয়ে পুরো ছাদ সাজানো হয়েছে।

মাঝখানে একটি টেবিলের উপরে একটি কেক রাখা।টেবিলের চারপাশে লাল সাদা বেলুন।ঈশাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে দিহান আর অনু জন্মদিনের শুভেচ্ছা যানাতে থাকে।ঈশার চোখের কোনে জল চিক চিক করছে ঈশানের কান্ডে সে ভুলেই গেসিলো আজ তার জন্ম দিন।

“ওই দাঁড়িয়ে আছিস কেন!এদিকে আয় (দিহান)
ঈশা তাদের সামনে দাঁড়িয়ে হাসতে থাকে।
” কিরে খুশি হয়েছিস?(অনু)
“খুব খুশি!(চারপাশটা দেখতে থাকে)

“দিহান ছুরি কোথায়?(অনু)
” আমি তো আনলাম না!
“বোকা ছেলে ছুরি ছাড়া আমরা কেক কাটবো কি করে,
” তুই আনলি না কেন মনে করে,আমি তো ছাদেই ছিলাম দোষ তোর!

দিহান আর অনুর ঝগড়া দেখে ঈশা একটা ধমক দেয়!
“এই সামান্য ছুরি নিয়ে এখন ঝগড়া শুরু করেছিস! যা নিয়ে আয়!
” তুই একা ছাদে থাকতে পারবি(ভ্রু কুচকে দিহান)
“না পারার কি আছে? আমার সাথে তো তুই থাকবি!
” না মানে আমার একটু ওয়াশরুমে যেতে হবে আর ছুরি কোথায় রেখেছি আমরা কেউ যানিনা।তাই অনুকে তারাতাড়ি ছুরি খুজতে হবে।

“এই যা তো যা এই ঈশা ভয় পায় না।ভয় পাওয়ার কি আছে তোরা যা আর তাড়াতাড়ি আসিস কিন্তু।
” ওকে ঈশু বেস্ট অফ লাক(অনু)

অনু আর দিহান দুজনেই নিচে চলে যায়।ঈশা পুরো ছাদটা ঘুরে দেখছে হুট করেই ছাদের লাইট গুলো অফ হয়ে যায়।অন্ধকারে ছেয়ে যায় পুরো ছাদ।এবার ঈশার ভয় লাগছে চোখ মুখ খিচে মাথা চেপে রাখে।অন্ধকারে সে বুঝতে পারছেনা কোন দিকে যাবে।অন্ধকারে তার বড্ড ভয় করে। হঠাৎ তার ঘাড়ের পাশে কারো নিশ্বাস পায়।নিশ্বাস উঠা নামার যে প্রতিধ্বনি তাতে ঈশার সারা শরীর জুড়ে যেন কারেন্ট বয়ে যায়
“ক..কে!
” আমি জান!(ফিস ফিস করে)
ঈশা এবার চমকে পেছনে ঘুরলে বলিষ্ঠ কারো দেহের সাথে ধাক্কা খায়।হাত দুটো ঈশাকে তার বাহুতে বন্ধ করে দেয়।
“শুভ জন্মদিন জান!শুভ জন্ম দিন!(ফিস ফিসিয়ে)
ঈশা কাপছে কি হচ্ছে তার সাথে সে কিছুই বুঝতে পারছেনা।

” ক…কে আপনি?
“আমি কে তোমার তা না জানলেও চলবে! শুধু তুমি যেনো রাখো তুমি আমার! যত চালাকি করনা কেন আমার কাছ থেকে তোমার মুক্তি নেই!
” আমি যানতে চাই কে আপনি (চিৎকার দিয়ে নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে যায়)

লোকটি ঈশাকে আরো শক্ত করে ঝাপটে ধরে বলে,
“মনে পরে সেই দিনের কথা চা বাগানের মাঝে হারিয়ে যায় এক ছোট্ট পরি।ভয়ে, আতঙ্কে সেই পরি টি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।তারপর সেই পরি যখন চোখ খুলে দেখতে পায় সে কারো বাহু ডোরে আবব্ধ।তুমি সেদিন আমার বাহুডোর ছেড়ে চলে গেলেও আমার মস্তিষ্ক, মন ছেড়ে যেতে পারো নি।তোমাকে আবারো একবার দেখার লোভ আমাকে ফিরিয়ে এনেছে!খুজে গেছি কয়েক বছর। আবারো যখন সেই ছোট্ট পরিটির দেখা আমি পেয়ে গেলাম তখন তো আর তাকে আমি কিছুতেই ছাড়ছিনা।
ভালোবাসি বড্ড ভালোবাসি আমার মায়াবী পরিটাকে।

ঈশা জমে গেছে কি বলছে এই লোকটা! কে এই লোকটা। ঈশার ভাবনার মাঝেই ঈশার কপালে কারো উষ্ণ ছোয়ার অনুভূতি পায়। সে নড়ে চড়ে উঠলে লোকটি ঈশার চোখ দ্রুত একটি রুমাল দিয়ে বেধে দেয়।। ঈশা নিযেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে লোকটি ঈশাকে সরিয়ে পালিয়ে যায়৷ ঈশা যখন চোখ থেকে রুমাল খুলে ছুড়ে ফেলে তখন দেখে আগের মতো চারিদিক আলোকিত।অনু আর দিহান ও হাসতে হাসতে তার দিকেই আসছে।

ঈশার দিকে তাকিয়ে অনু কিছু একটা আচঁ করতে পারে …
” কি হয়েছে ঈশা?
“এখানে কেউ আছে!
” কে আছে?
“যানি না তবে কেউ আছে!
” দূর কেউ নেই তোর মনের ভ্রম আয় কেকটা কাট।

ঈশার মনের ভয় মনের মাঝে লুকিয়ে রেখে কেকটা কাটে। কিছু ক্ষন পর দিহান বলে,
“ঈশা..!
” হুম!
“চোখটা বন্ধ করবি প্লিজ।
” কিন্তু কেন?
“আহ কর না।

ঈশা চোখ বন্ধ করার কিছুক্ষন পর অনু তাকে চোখ খুলতে বলে,
চোখ খুলেই তার মুখ হা হয়ে যায়।অনেক গুলো ফানুস একসাথে আকাশে উড়ছে।দিহান ছাদের লাইট গুলো অফ করে দিয়েছে।ফলে ফানুসের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে।এক সঙ্গে এতো ফানুস আগে কখনো দেখেনি ঈশা।
” দোস্ত এইসব এরেজমেন্ট কে করেছে(অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ঈশা)
“দুলাভাই..!(আনমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে)

অনুর উওর শুনে দিহান পাশ থেকে তাকে ধাক্কা দেয়। কিন্তু দুলাভাই কথাটা শুনেই ঈশার ভ্রু যুগল কুচকে যায়।
” দুলাভাই মানে?
“ম..মানে দ..দিহানের দ.দুলাভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করে সবটা এরেঞ্জ করি আর কি।(হাফ ছেড়ে)
” হ হ্যা আমি দুলাভাইকে যানালে তখন ভাইয়া সবটা মেনেজ করে দেয়। (দিহান)
“ও আচ্ছা।

রাত প্রায় দুইটার কাছাকাছি রুমে ডুকে ঈশা। রুমে ডুকতেই আরেকটা ধাক্কা খায় সে।বিছানার উপরে বড় একটি গিফট বক্স।ঈশাকে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার বাবা বলে,
” মামনি একটা সেল ম্যান এসে এটা দিয়ে গেছে!
“কখন দিয়ে গেছে বাবা?
” তুমি বেরিয়ে যাওয়ার পরেই প্রায় রাত সাড়ে ১২ টায়।
“এতো বড় গিফট আমায় কে দিবে বাবা(ভাবতে ভাবতে)
” আমি কি করে যানবো মামনি।তুমি বরং এখন ঘুমিয়ে যাও সকালে তোমার গিফট তুমি পেয়ে যাবে।
“ওক্কে বাবা”(মুজাহিদকে জড়িয়ে)
মুজাহিদ তার মেয়ের কপালে ভালোবাসার পরশ একে দেয়।দিন দিন চোখের পলকে মেয়েটা বড় হয়ে যাচ্ছে।

ঈশা গিফট বাক্সটা বেশ সাবধানতার সাথে খুলছে।
কি আছে এর ভেতর..? কে দিলো..?হাজারটা প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরছে। র‍্যাপিং কাগজটি খুললেই ঈশার চোখ বড় হয়ে যায়।বেশ কিছু গিফট আলাদা আলাদা ভাবে প্যাকিং করা ঈশা একটা একটা করে খুলতে শুরু করে।বড় প্যাকেট থেকে অফ হোয়াইট রং এর একটি গাউন বের করে।পুরো গাউন জুড়েই স্টোনের কাজ। ঈশা অবাক হয়ে গাউনটার দিকে তাকিয়ে আছে।এতো বড় আর ভারী গাউন কে দেবে তাকে।গাউনটার ভাজের ভেতরে একটি চিরকুট বেরিয়ে আসে তাতে লেখা…

আমার ছোট্ট পরিটাকে এই গাউনে হুরপরির মতো লাগবে।শুভ জন্মদিন ঈশু। তোমাকে এই গাউনে দেখার অপেক্ষায় থাকবো….. ভালোবাসি..!

ঈশার বুঝতে বাকি নেই এইসব কে করছে। সব প্যাকেট থেকে কিছু অর্নামেন্টস,চকলেট চিরকুট বের করে।ঈশার মনের ভেতর একটা ভয় ডুকে গেছে ঈশান নামক বিপদটা ঘাড়ের উপর পরেছে। এখন আবার অন্য বিপদ এইসব কি হচ্ছে তার সাথে।রুমের লাইট অফ করে কাথা মুড়িয়ে শুয়ে পরে সে।

এদিকে ঘুম নেই ঈশানের চোখে তবে চোখে মুখে ফুটে আসে আনন্দের হাসি।কত বছর পর ঈশাকে সে কাছে পেয়েছে।ভাবতে থাকে প্রায় তিন থেকে চার বছর আগের কথা।

মায়ের কাছে বাংলাদেশের গল্প শুনলেও ঈশানের বাবার মুখে বাংলাদেশ নামক শব্দটাও তেমন শুনা যায় না ।হুট করেই একদিন সিধান্ত নেয় সে বাংলাদেশ ঘুরতে যাবে। তার বাবা আবিদ শত বার বারন করলেও সে কারো কথাই শুনে নি।ছোট থেকেই ঈশান এক রেখা প্রকৃতির যা করতে মন চাইবে তা করেই ছাড়বে।ঈশান রাসেল দুজনে মিলে বাংলাদেশ ঘুরতে এলো।

একদিন সিলেটের চা বাগানে বিকালের সময় ঈশান একাই ঘুরতে বের হয়।রাসেল তার রুমে ঘুমাচ্ছে।চা বাগানের ছবি তুলতে তুলতে ঈশান অনেক গভীরে চলে যায়।অন্ধকার নেমে এসেছে।তাই হোটেলে ফেরার জন্য দ্রুত পা চালায় মাগরিবের আযান টাও দেওয়া শেষ হয়তো। তখনি ঈশানের কানে আসে একটি মেয়ের কান্নার আওয়াজ।ঈশান চারিদিকে খুজতে খুজতে একটি মেয়েকে দেখতে পায়। মেয়েটি কানে হাত চেপে কেদে যাচ্ছে।ভয়ে মেয়েটা জড়ো সড়ো হয়ে গেছে ঈশান মেয়েটির সামনে দাড়ালে মেয়েটি ভয়ে ঈশানের দিকে তাকিয়ে একটি চিৎকার দেয় আর সাথে সাথে সেন্স লেস হয়ে যায়।

ঈশান তখনো বুঝতে পারেনা মেয়েটি তাকে দেখেই ভয় পেয়েছে।ঈশান তার বাহুডোরে মেয়েটিকে জড়িয়ে নেয়।একটি গাছের গুড়ির পাশে ঈশান মেয়েটিকে নিয়ে বসে পরে এবার ধীরে ধীরে সম্পূর্ন অন্ধকার নেমে আসে।এই মূহুর্তে মেয়েটাকে নিয়ে লোকালয়ে ফেরা মোটেও সম্ভব নয়।মোবাইলের ফ্লাশ লাইট জ্বালিয়ে ঈশান মেয়েটিকে দেখে থমকে যায়।দেখতে বাচ্চাদের মতো নিষ্পাপ একটি চেহারা। গালের দিকটা হালকা ভাজ হয়তো হাসলে টোল পড়ে। চোখের দিকটায় সামান্য কাটা দাগ আর থূতনিতে গর্ত এক মোহ মায়ায় ঈশানকে মেয়েটার প্রতি আকৃষ্ট করে তুলে।

ঈশানের ফোনে চার্জ শেষ হওয়ায় মোবাইল অফ হয়ে যায়। বিরক্ত কর মশার কামড়ে ঈশান অতিষ্ঠ। চারিদিকে সুনসান নীরবতা। ঈশান তার পরনের শাট দিয়ে মেয়েটির হাত পা ঢাকার চেষ্টা করে ধীরে ধীরে এই অন্ধকারে ঈশান নিজেও ঘুমিয়ে যায়।

চারিদিক থেকে ভেসে আসে “ঈশা ঈশা” নামের প্রতিধ্বনি তখনি ঘুম ভেঙ্গে যায় ঈশা আর ঈশানের।ঈশা দাড়াতে নিলেই ঈশান তার হাত আটকে ধরে সেই দিনের ঈশা হয়তো ভেবেছিল তার সামনে থাকা ছেলেটা তার সাথে বাজে কিছু করতে চাইছে আর সেই ভাবনা থেকেই আঙুল দিয়ে মাটি খামছে মেয়েটি ঈশানের চোখে মারে।

আর তখনি পালিয়ে যায়।মেয়েটি পালিয়ে যায় ঠিকি তবে মন মস্তিষ্কে রয়ে যায়।মেয়েটির কথা বার বার মনে পরায় ঈশান বিরক্ত হয়ে ইউএসএ ফিরে যায় কিন্তু সেখানেও একই অবস্থা।তাই মিথ্যা বলে আবারো বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখে আর খুজতে থাকে।কিন্তু বেশ অলৌকিক ভাবে পেয়েযায় মেয়েটিকে ঈশান।
তাই তো সেদিন শাস্তি দেওয়ার পরির্বতে ঈশান ঈশাকে নিজের কাছে রাখার কৌশল এটে ফেলে।

এইসব ভাবতে ভাবতে হুইস্কির বোতলে আরেকটি চুমুক দেয়।পাশেই বসে আছে তার তিন বন্ধু সবাই নেশায় বুদ হয়ে আছে।

“অনু আমি কিন্তু আর কলেজ যাবো না। যা পড়বো বাড়িতে থেকেই পড়বো!
” কিন্তু কেন কি হয়েছে আর আজ হঠাৎ ক্লাস থেকে কেন পালালি?আজ কিন্তু রিক্স ছিল। প্রত্যাকটা স্যার মেম যেভাবে ঈশা ঈশা করছে আমার তো মনে হয় বাকিরা তোকে খুজে চলছে। এবার ধরা খেলে সাথে আমিও ফাসবো(মন খারাপ করে)।।

“বোকা মেয়ে এইজন্য আর কলেজে যাবো না।কলেজে উঠেছি কোথায় একটু আনন্দ করবো মাস্তি করবো, তা তো দূরের কথা, কোথা থেকে কে এসে আমাদের পুরো স্বাধীনতাটা মাটি করে দিচ্ছে।স্কুলের বাচ্চাদের মতো আদেশ ছুড়ে দিল সারাদিন পড়তে হবে ক্লাসে পড়া পারতে হবে রিডিকিউলাস!দেখলি তো দেখলি আজ প্রত্যাকটা স্যার মেম সবার আগে আমাকে পড়ার জন্য দাড় করিয়েছে।মানে কি অনু এইভাবে চললে আমি শেষ। আমি আর কলেজে আসবো না মনে রাখিস তুই!

” নিয়মিত কলেজে না এলে পা ভেঙ্গে আমি বাসায় বসিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে দেবো(রেগে)

সামনে থেকে কারো রাগান্বিত কন্ঠো শুনে দুজনে সামনে তাকায় কিন্তু সামনে মানুষটিকে দেখেই দুইজন দুই দিকে ছিটকে দূরে দর যায়।

অনু পালাতে নিলেই ঈশান তার দিকে তাকিয়ে বলে,
“এইযে শালিক পাখি খবরদার পালাতে চেষ্টা করবেন না।আমি কি তা কি আপনি যানেন!

ঈশা পালাতে নিলেই ঈশান বলে,
” এই যে এই বন্ধু ভাবী খবদার চালাকি করবেন না। এটা ঈশান শাহরিয়ারের চোখ ফাঁকি দেওয়া সহজ নয়।বন্ধুর ভাবী আপনাকে ফিরে আসার অনুরোধ যানাচ্ছি(দাতে দাত চেপে)

ঈশা বেক্কেলের মতো ঈশানের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে, বন্ধুর ভাবি মানে কি?

“তারপর বলো কলেজ থেকে পালিয়ে এলে কেন?
” ক…কলেজে যেতে ভালো লাগেনা(চোখ বন্ধ করে)
ঈশান অনুর দিকে তাকিয়ে বলে,
“তোমার ভালো লাগেনা কেন?
” ই..ঈশা যেখানে আমি সেখানে(থতমত খেয়ে)
“তোমরা এখনো পড়া লেখা নিয়ে সিরিয়াস হতে পারো নি কয়েকদিন পর এইচএসসি তারপর ঝড়ঝাপটা ভার্সিটি ভর্তি… কোন ভার্সিটির সপ্ন?

ঈশা অনুর দিকে তাকিয়ে আছে অনু তার দিকে। তাদের মাথায় এইসব চিন্তা কখনো তেমন একটা আসেনি।ঈশান বুঝতে পারে এদের এতো সহযে টাইট দেওয়া যাবে না আরো কিছু কৌশল ভাবতে হবে।

” কি হলো কথা বলছো না কেন তোমরা(ধমক দিয়ে)
ঈশানের ধমকে দুইজনেই কেপেঁ উঠে।
“ভবিষৎত সপ্ন কী তোমাদের?
” বিয়ে…! (অনু, ঈশা)
“হোয়াট…?
” না মানে..!
অনু ঈশা দুজনের মুখ থেকেই বিয়ে শব্দটা মনের অজান্তেই বেরিয়ে গেছে এখন কি করে এই ঈশানকে সামলাবে দুইজন দুজনের দিকে তাকিয়ে ঈশারা করছে।

“না মানে বলছিলাম অনেকদিন হয়েছে কাউকে বিয়ে করতে দেখিনি, তাই সারাদিন ব..বিয়ে বিয়ে করি তো মুখ ফিচলে তাই বিয়ে শব্দটা বেরিয়ে গেছে..!(হাফ ছেড়ে বেচে অনু)

“বাইদা ওয়ে ঈশা তোমাকে সকালে আজ কোন ছেলেটা যেন প্রপোজ করেছিল(বাকা হেসে)

ঈশার এবার মাথা ভন ভন করছে। ছেলেটা ঈশাকে প্রপোজ করেছিল কলেজের পেছন দিকটায় সেখানে দিহান আর অনু ছাড়া কেউ ছিল না।
” ক.কোথায় কে করবে কেউ না(ভয়ে ঢোক গিলে)
“কেউ তো করেছে, আবার তুমি তা একসেপ্ট ও করেছো বিকেলে ঘুরতে যাবে কত প্লানিং তোমাদের, কি আমি ঠিক বলেছি তো?

অনু আর ঈশা দুইজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে কি হচ্ছে তার সাথে এই লোকটাতো পুরো জিন্দেগী নিম পাতা বানিয়ে ছাড়ছে।

” দ..দেখুন আপনি আমার পার্সনাল লাইফ নিয়ে খবরদার বাড়াবাড়ি করবেন না। (রেগে)
“তুমি কি দুই বছরের কথা ভুলে গেছো? তোমার বাহ্যিক চলা ফেরার দিকে আমি অবশ্যই বাড়াবাড়ি করতে পারবো। সো বি কেয়ারফুল…!

ঈশান নিজের ফোন ঈশার দিকে ধরে রাখে,সেখানে দেখা যাচ্ছে একটি রক্তাক্ত ছেলের শরীর মাটিতে পরে আছে।আর ছেলেটি হলো সকালে ঈশাকে প্রোপজ করা সেই ছেলেটা।

” আমার কথা গুলোকে একদম হেলা ফেলা দেখবেনা ঈশা।তোমার উপর রাগটা কন্ট্রোল করতে পারি বলে এখনো সবটা সামলে গেছি। যদি রাগটা কন্ট্রোল না হতো তবে তুমি আর আজ বাংলাদেশের মাটিতে থাকতে না!
“তবে কোথায় থাকতাম(ভ্রু কুচকে)
” ইউএসে? (বাকা হেসে)

ঈশান চোখে চশমা পরে চলে যায়।আর ঈশা বেক্কেলের মতো ভাবতে থাকে সে ইউএসে যাবে কেন।
#চলবে….

?পর্বটা কেমন হলো যানাবেন….!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here