You_are_mine
Poly_Anan
part_18
রাগের মাথায় কোন সিধান্ত নেওয়া যে চরম ভুল তা এখন ঈশা উপলব্ধি করতে পারছে।সূর্যের প্রখর আলোর দিকে একবার তাকিয়ে ভাবতে থাকে ঈশানের ভালোবাসা তো মিথ্যা নয় তাহলে সে কেন প্রমান ছাড়াই বেরিয়ে এলো বাড়ি থেকে। যদি ঈশান এতোক্ষণে যেনে যায় তবে নিশ্চই ঈশাকে ঘৃণ্য ছাড়া আর কিছুই দেবেনা ঈশান।যে ঈশান তার জন্য পুরো দুনিয়ার বিরুদ্ধে যায় তবে সেই ঈশানকে সে অবিশ্বাস করা মোটেও উচিত হয়নি।
যার বুকে মাথা রেখে দিব্বি নিশ্চিন্তে ঘুমনো যায় তাকে হারালে জীবনের শান্তি নামক জিনিস টাই জীবন থেকে ইতি টানবে।
ঈশা ঘুরে দাড়া বাড়ি থেকে বেশি দূর যায়নি সে।তাই পা বাড়ায় ফিরে ঈশানের বাড়ি। তখনি তার সামনে এসে দাড়ায় একটি গাড়ি আর গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে লিমন। লিমনকে দেখেই ভ্রু কুচকে যায় ঈশার।
“ঈশা রাস্তায় একা কি করছো?(অবাক হয়ে লিমন)
” যা ইচ্ছে তাই করছি সর সামনে থেকে!
ঈশা সরে আসতে চাইলে লিমন আবার তার সামনে দাড়িয়ে পথ আটকে দেয়।
“কুল বেবি কুল এতো অস্থির হচ্ছিস কেন।তোর চোখ মুখ স্বাভাবিক লাগছে না কি হয়েছে তোর?
” কিছু হয়নি আমার রাস্তা ছাড়।
“আচ্ছা কই যাচ্ছিস তুই?(ভ্রু কুচকে)
” কোথায় আর যাবো আমার বাড়ি মানে আমার স্বামীর বাড়ি।
লিমনের বোঝা বাকি রইলো না ঈশা তার মত পালটে নিয়েছে।তাই সে আরেকটু ইনোসেন্ট সাজার চেষ্ঠা করে বলে,
“চল তোকে পৌছে দিচ্ছি!
” লাগবেনা আমি একাই যেতে পারবো!
“ঈশা প্লিজ আমার শেষ ইচ্ছা টা রাখ, তোকে আমি বাড়ি পৌছে দিচ্ছি।
” বললাম তো লাগবেনা পাচঁ মিনিটের রাস্তা আমি একাই যেতে পারবো!
“প্লিজ ঈশু চল আমি পৌছে দিচ্ছি।।
ঈশা মনে মনে একবার ভাবে তার এখন বাড়ি ফেরা জরুরি তাই সে সাত পাচ না ভেবে লিমনকে বলে,
” চল!
ঈশান একটি মেকি হাসি দিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে পরে। ঈশা তার পাশের সিটে বসলেই ঈশান মুখের মাঝে একটা রুমাল চেপে ধরে। যার মধ্যে ক্লোরোফর্ম স্পে ছিল।হালকা ছটফট করেই ঈশা সেন্সলেস হয়ে যায়।আর লিমন চলতে থাকে তার গন্তব্যে।
এদিকে বসার ঘরে সোফায় বসে আছেন, লিপি মাহমুদা, আবিদ, লিজা।কিছুক্ষন আগেই লিপির হাজবেন্ড এই বাড়িতে এসেছে লিপিকে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য। কিন্তু যখন যানতে পারেন বাড়ির এতো করুন অবস্থা তখন তিনি নিজেও চুপচাপ সবার সাথেই বসে আছেন। মাহমুদাকে তিনি শান্ত থাকতে বললেও মাহমুদা এক দন্ড শান্ত থাকেনি তিনি ঈশার জন্য অনবরত কেদেই যাচ্ছেন।
হুটকরেই বাড়িতে ডুকে পরে একদল কালো পোষাক পরা লোক।তাদের কাউকে চিনতে পারছেনা আবিদ(ঈশানের বাবা)।কেননা ঈশানের দলে এতো লোক আছে কি না তিনি তা যানেন না
আর ঈশানের লোক তাদের বাড়িতে এইভাবে হামলা করবেন কেন তাও বুঝতে পারছেন। প্রায় ২৫ জনের মতো লোক এসে সবার হাত পেছনে ঘুরিয়ে দড়ি দিয়ে বাধঁতে থাকে।সবাই চিৎকার করতে চাইলে তাদের মুখে টেপ মেরে দেয়।
একে একে সবাইকে একটি বড় মাইক্রোতে তুলে দেওয়া হয়। সম্পূর্ণ কাজটি শেষ হয় প্রায় বিশ মিনিটে।কিছুক্ষণ পর ঈশান বাড়ি ফেরে। বাড়ির পরিবেশ ঠান্ডা দেখে সে একটা বাকা হাসি দেয়।
“বাহ রাসেল দেখছি ভালোই কাজ করছে আমার আসার আগেই সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছে।
ঈশান প্রথমে তার রুমের দিকে পা বাড়ায়।রুমে ডুকতেই নিচে কিছু ছবি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।এগুলো সেই ছবি যেগুলো লিপি ঈশাকে দিয়েছিল।ঈশান একে একে ছবি গুলো দেখতে থাকে।ছবি গুলো দেখে তার ভিষণ হাসি পাচ্ছে।
” বাহ! বাহ! বাহ! ভালোই এডিটিং। কোন মাথা মোটা অবুজ দেখলে সহযে বুঝবেনা এগুলো এডিট।আর আমার বউটা তো মাথা মোটা আমি যানি।হুট হাট রেগে গিয়ে ভুল সিধান্ত গুলোই নেয়।যেমনটা এবারো নিয়েছে।তবে তার এবারের সিধান্তে আমি বেশ খুশি হয়েছি। সে চলে গিয়ে আমার কাজটা বেশ সহজ করে দিয়েছে।(বাকা হেসে)
ঈশান বিড়বিড় করে কথা গুলো বলে পা চালিয়ে ওয়ারডপ এর সামনে যায়।সেখানে ফুলদানির পেছনে একটি স্পাই কেমেরা সেটিং করা আছে।যেটি ঈশানের রুমে প্রায় সময় রাখা হয়। বিশেষ করে যখন ঈশা বাড়িতে একা থাকে।
আর এবারের প্লানিংটা করা ছিল ঈশানের আগে থেকেই।ঈশাকে মিথ্যা বলে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় কারন সে যানতো ঈশান কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগে লিপি বেগম ঈশার কানে বিষাক্ত মন্ত্র পড়বেন ।ঠিক তাই হলো। ঈশান যানতে চায় লিপি কেন তার শত্রুদের সাথে হাত মিলিয়ে তার ক্ষতি করতে চাইছে। কি লাভ লিপির এইসব করে।
লেপটপের সাথে সেটিং করে ঈশান যাওয়ার পর সম্পূর্ণ ভিডিওটা দেখলো কিন্তু কিছু মূর্হুতেই ঈশানের মেজাজ বিগড়ে যায়।মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার কারন ঈশার চোখের পানি।যা ঈশানের একদম সহ্য হয় না।বিছানার চাদর মুড়ে ঈশার কান্নার সিন টা দেখেই ঈশান লেপটপ বন্ধ করে নেয়।
কপালের সামনে আসা অবাধ্য চুল গুলোকে পিছনে সরিয়ে বলে,
“জেঠিমা শুধু শুধু এমনটা কেন করছে কি লাভ তার। আমি বুঝতে পারছিনা আমাদের বাইরের শত্রুর সাথে জেঠিমা হাত কেন মেলালো।
ঈশান রুম থেকে বেরোতে নিলেই ড্রেসিং টেবিলের সামনে ঈশার লকেট আর আংটি দেখতে পায়।যা দেখে সে রেগে বলে,
” সামনে পাই আমি তাকে থাপড়ে দুই গাল যদি লাল না করেছি আমার নাম ঈশান শাহরিয়ার না। সে লকেট আর আংটি খুলে রেখেছে এতো সাহস আসে কই থেকে।একবার বলেছিলাম এই দুটো জিনিস যদি কখনো তার কাছ ছাড়া দেখি তবে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।
ঈশান বড় বড় পা ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে যায় হুট করেই মনে পড়ে লিপির ফোনের কথা।ঈশান নিচে নেমে সোফার উপরে ফোনটি পায়।কিন্তু লক করার কারনে কোন কিছুই করতে পারেনা।পকেটে পুরে ফোনটি নিয়ে হাটা শুরু করে।
আজ খুশি যেনো আকাশে বাতাসে উড়ছে ইমনের দীর্ঘ নয় মাস থেকে করে আসা সপ্ন আজ পূর্ণ হয়েছে।অবশেষে লিমন ঈশাকে কিডন্যাপ করতে সক্ষম হয়।কিছুক্ষন আগে লিমনের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে সে।ইমন খুশিতে আজ আত্নহারা।তাদের প্লান মোতাবেক লিমন সবার সামনে স্বাভাবিক ভাবেই থাকবে কেউ যেনো তাদের সন্দেহ না করে। সবাই ভাববে ঈশা হয়তো কোথাও চলে গেছে।সোফার বসে পায়ের উপর পা তুলে বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে হুস্কির বোতলের মুখ খুলে ইমন।তার পাশে বসে আছে তার বউ।
“বুঝলে রানী তোমার রাজার এতো দিনের প্লানিং সফল হয়েছে এখন শুধু ভালোয় ভালোয় কাজটা মিটে গেলেই হয়।(ইমন তার বউকে রানি বলেই ডাকে)
” কি! সত্যি?তবে আজ পার্টি হয়ে যাক।
“পার্টি হবে অবশ্যই আগে আসল কাজটা সেরে নি?
হুইস্কি মুখে নিতেই বাইরে থেকে গোলাগুলির শব্দ কানে আশে ইমনের।তখনি বাড়ির ভেতরে কিছু কালো পোশাক পড়া লোক ডুকে পরে।ইমন তাদের দেখেই ঘাবড়ে যায়। জানালা দিয়ে বাইরের দিকটা উকিঁ দিলে লক্ষ্য করে সবাই মেঝেতে ছেড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
” কাকে খুজছেন আপনি?। কাউকে পাবেন না সব্বাইকে ফিনিশ করে দিয়েছি!
রাসেলের হুংকারে কেপেঁ উঠে ইমন। যত যাই হোক ঈশানের দলের লোককে বড্ড ভয় পায় সে।কেননা ঈশান বেপরোয়া।নিজের সার্থের জন্য সে সবচেয়ে খারাপ কাজটাও করতে রাজি।যদিও কারন ছাড়া কখনোই ঈশান কারো ক্ষতি করেনা।
“এএ এই বাড়িতে কি তোদের।(ইমন)
“বড়ভাই আপনার ছোট ভাইটাকে যে প্রয়োজন আমাদের (গাল চুলকাতে চুলকাতে রাসেল)
” তাকে তোদের কি দরকার যা বলার আমাকে বল!
“আপনাকে বলবো আমি আপনাকে(ধমক দিয়ে)ওই কুত্তাটা কোথায় আমি তার কলিজা দেখতে চাই ঈশানের কলিজায় যে আঘাত করে তার কলিজা ঠিক কতটুকু আমার না দেখা পর্যন্ত শান্তি নেই।
” দেখ আমার ভাই কিছু করেনি। শুধু শুধু আমার নিরপরাধ ভাইটাকে দোষ দিবিনা।
“যানতাম ভালো কথার মানুষ আপনারা না।আপনি বলবেন তাহলে বলবেন না লিমন কোথায়?
” না কখনো না(দৃঢ় গলায়)
রাসেল তার পাশে থাকা একজন গাডকে কি যেন ঈশারা করে মূহুর্তেই সেই গাড ইমনের বউয়ের গলায় ছুরি চেপে ধরে।
“এই এই তোরা ওর সাথে এমন করছিস কেন।যা বলার আমায় বল ওকে ছেড়ে দে।
” আমি আপনাকেই আগেই বলেছিলাম আপনি নিজেই কথা প্যাচান। যাই হোক লিমন কোথায় আর ভাবিকে কোথায় রেখেছে!
“দেখ আমার ভাই এইসব কিচ্ছু যানে না তোদের ঝামেলা আমার ভাইয়ের ঘাড়ে কেন উঠাচ্ছিস।
” উফফ আবারো সময় নষ্ট আবারো একই মিথ্যা কথা ভালো লাগেনা আর এইসব।
রাসেল কথাটি বলেই গাডকে আবারো ঈশারা করে।গাড এমন ভাবে ছুরি চেপে ধরে তখনি রানীর গলার চামড়া ছিলে গলগল করে রক্ত পরতে শুরু করে।রানী ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে গোংরাতে থাকে।এদিকে রানীর অবস্থা দেখে ইমন যেনো পাগল হয়ে যায় সে গড় গড় করে বলে,
“বলছি বলছি আমার বউটাকে ছেড়ে দে সে নির্দোষ।
” তাহলে বলো কোথায় তোমার ভাই?
ইমন ঠিকানা দিলে। রাসেল গাডদের ঈশারা করে। সবাই এক জোট হয়ে ইমনের হাত পেছন থেকে বেধেঁ দেয় আর মুখে টেপ দিয়ে দেয়।রানীর সাথেও সেইম কাজ করা হয়।
ঈশানকে রাসেল ফোন করে ঠিকানা টা যানিয়ে দেয়।ঈশান আর এক মূহুর্ত দেরি না করে তার দল বল নিয়ে সেই ঠিকানায় বেরিয়ে পরে।
গভীর জঙ্গলের মাঝে একটি ছোট্ট কুড়ে ঘরে আটকে রাখা হয়েছে ঈশাকে।চারিদিকে পচা পাতার গন্ধ আর মশাদের অসহ্য যন্ত্রণায় বিরক্ত হয়ে গেছে লিমন।ঈশার এখনো জ্ঞান ফিরেনি।রাত আটটার সময় গাড়ি এলে বেশ গোপনীয় ভাবে ঈশাকে সরিয়ে দেওয়া হবে।ততক্ষণ লিমনকে এখানেই থাকতে হবে।তার ব্যবহৃত সিম কাড, ফেসবুক সবকিছু থেকে সে দূরত্ব বজায় রাখছে যেন লোকেশান ট্রেক করে তার ঠিকানা যানা সম্ভব না হয়।
ঈশার দিকে তাকিয়ে লিমন বলে,
” অনেক জ্বালিয়েছিস আমায়।কোন মেয়ের পেছনে এতো টাইম ওয়েস্ট করতে হয় নি আমার কিন্তু তোর পেছনে যতটা করেছি।এবার সব কিছুর শোধ আমি নেবো। তোকে বিদায় করে আমিও পাড়ি জমাবো আমার সপ্নের প্যারিসে। ভাইয়া ভাবিও চলে আসবে গোপনে।তারপর তোর বিরহে বিলীন হয়ে যাবে ঈশান উফফ ভাবতেই আমার কলিজা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ সেই বাড়ির সামনে ঈশানের গাডরা জরো হতে থাকে।লিমনের কোন খেয়াল নেই।সে এক মনে ঈশাকে বকেই যাচ্ছে।
হুট করেই দরজায় লাথি পরলে লিমনের ধ্যান ভাঙ্গে। নড়ে চড়ে বসে ভালো করে রুমের দিকে লক্ষ্য করে। ঈশাকে নিয়ে কোন রাস্তাদিয়ে পালানো যায় তা ভাবতে থাকে।পরের বার ধাক্কা দিলে সম্পূর্ণ দরজা খুলে যায়।ঈশানকে দেখে লিমনের মুখে স্পষ্ট আতংকের ছায়া দেখা যায়।সে বিড় বিড় করতে করতে পকেট থেকে রিভালবার বের করে ঈশানের সামনে তাক করে।
“তোর কলিজা আছে বলতে হয়।তুই এই ঈশানের জান টাকে তুলে এনেছিস আবার আমার দিকে রিভালবার তাক করছিস। বাহ বাহ তোর প্রশংসার তারিফ করতে হয় দেখছি!(ঈশান)
” ত..ততুই এখানে কি করে কে দিয়েছে তোকে আমাদের খোজঁ।
“তোর ভাই(বাকা হেসে)
” ভাইয়া দিয়েছে(অবাক হয়ে)
ঈশানের কথায় লিমন অবাক হতে যায়। যত যাই হয়ে যাক ঈশানের উপর প্রতিশোধ নিতে ইমন কখনো পিছপা হবে না তবে ঈশানকে…
লিমনের অন্যমনার সুযোগ নিয়ে ঈশান লিমনের হাতের রিভেলবারটি ধাক্কা দিয়ে ফেলে গাড দের ইশারা করে।সঙ্গে সঙ্গে একদল গাড এসে লিমনের হাত পা বাধতে শুরু করে।
“খবরদার এ যেনো পালাতে না পারে। যদি হাত ফসকে যায় তবে একজনেও আর আস্ত থাকবেনা।
লিমনকে তুলে সবাই গাড়িতে বসায়।ঈশান ঈশার সামনে বসে পরে। ঈশার চোখ মুখ নিস্তেজ হয়ে আছে। তার যেনো প্রাণ নেই । গালের উপর তিন আঙ্গুলের ছাপ।ঈশানের বুঝতে আর বাকি রইলো না লিমন ঈশার গায়ে হাত তুলেছে।চুল সব গুলো এলো মেলো হয়ে আছে।নিশ্চই চুল ধরেও টেনেছে। এইসব ভাবতেই ঈশানের রাগ আরো দিগুন হয়ে যায়। হাত পায়ের বাধন খুলে ঈশাকে কোলে তুলে নেয়।ঈশার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,
” তোকে মারবো আমি আদর ও করবো আমি এইছাড়া অন্যকেউ তোর গায়ে একটা ফুলের টোকাও দিতে পারবে না। কিন্তু ওই লিমন তোকে আঘাত করেছে ওর দুই হাত আমি আর আস্ত রাখবো না।
এতোক্ষনে তুলে এনে সবাইকে বাংলোতে রাখা হয়।
ঈশানের বাংলোর একরুমে লিপি,লিমন ইমন কে রাখা হয়েছে।অনন্য রুম গুলোতে বাকিদের আটকে রাখা হয়েছে।লিপি ইমন আর লিমন একে অন্যর দিকে দেখা দেখি করছে। কি ভেবেছিল তারা কি হলো।দলের একজন তাদের বলেছিল ঈশান কক্সবাজার থেকে না ফেরার সিধান্ত নেয়। আর সেই খুশিতে নিশ্চিন্ত ছিল তারা কিন্তু হুট করেই ঈশানের আগমনে তারা ঘাবড়ে যায়।
“তারপর বলে ফেলুন কি ছিল আমার আড়ালে। আইমিন আপনাদের এতো ভালো সম্পর্ক কি করে।
ঈশানের কথা শুনে লিপি একবার ঢোক গিলে।তারপর না বুঝার মতো করে বলেন,
” কি বলছিস তুই আমি এদের চিনি না এরা কারা শুধু শুধু তোর মায়ের বয়সী একজনের সাথে এ…….
লিপিকে আর কোন কথা বলতে না দিয়ে ধমকে উঠে ঈশান।
“এই খবরদার আপনার ওই মুখে আমার মায়ের কথা উচ্চারন করবেন না। আমার মা আপনার মতো এতো অন্যর ক্ষতি করতে উঠে পড়ে লাগেনা।আমি আগেই বুঝেছি বাড়ির ভেতর আর বাইরে কিছু একটা তো চলছে। ঈশান শাহরিয়ারের বাড়িতে এক মাছি ডুকতে পর্যন্ত অনুমতি লাগে আর সেখানে টানা ৪ বার লিমন কি করে আমার বাড়িতে ডুকে অদ্ভুদ!
ঈশানের কথা শুনে লিমন ঢোক গিলে আর ইমন তার দিকে আড় চোখে তীর্যক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। সে আগেই লিমনকে সাবধান করেছিল ঈশানের বাড়িতে যেন না ডুকে।একবার ধরা পড়লে সব চাল ভেস্তে যাবে।আর ঘটনা তাই ঘটলো।
ঈশান লিমনের দিকে তাকিয়ে বলে আমার কলিজায় আঘাত করেছিস সেই শাস্তি তুই অবশ্যই পাবি একটু ওয়েট কর।
ঈশান গাডদের ঈশারা করলে তারা একটি উত্তপ্ত লোহার পাত নিয়ে আসে।ঈশান সেটি হাতে তুলে নেয় এবং লিমনের হাতে জোরে চেপে ধরে।অসহ্য যন্ত্রনায় লিমনের চিৎকারে পুরো বাংলো ছড়িয়ে যায়।পাশের রুম থেকে একে একে সবাই শুনতে থাকে চিৎকার কিন্তু কেউ বুঝতে পারছেনা কে এমন চিৎকার দিচ্ছে।
” আমি শুধু সত্যটা যানতে চাই। (দাতে দাত চেপে)
লিমনের দুইহাত একই ভাবে ঝলসে দেয় ঈশান। এইসব দেখে লিপির জান যেন যায় যায় অবস্থা।ইমনের দিকে তাকিয়ে ঈশান বলে,
“এর আগেও আমার সাথে বহুবার চাল চেলেছিস কিন্তু কোন চাল আমি সফল করতে দেই নি কিন্তু এবার তোরা আমার ঘরের লোককে আমার বিরুদ্ধে শত্রু বানালি। আর না এবার এর শেষ আমি দেখেই ছাড়বো!
ইমনের বাম হাতের উপর লোহার পাত টা চেপে ধরে ঈশান। অসহ্য যন্ত্রনায় ছটফট শুরু করে সে।
এবার ঈশান ঘুরে তাকায় লিপির দিকে,
“আপনি কি ভালোয় ভালোয় বলবেন নাকি আমি আপনার সাথে ও সেইম কাজটি করবো?
” ব্বব্ব বলছি বলছি?(ভয়ে ঢোক গিলে)
“ওকে তবে চলুন সত্যিটা যানা যাক…!রাসেল…
” হ্যা বল!
“সবাইকে বসার ঘরে এনেছিস
” হ্যা নেওয়া হয়েছে।
“ওকে তবে এদের ও নিয়ে যা।
আজ মুখো মুখি সবাই। ঈশার কিছুক্ষণ আগেই জ্ঞান ফিরেছে।লিজা আর আমজাদ অবাক হয়ে লিপির দিকে তাকিয়ে আছে।কিছুই তাদের বোধগাম্য হচ্ছে না আসামীর কাতারে লিপির নাম কেন।এদিকে রেগে গেছেন ঈশানের বাবা।
” ঈশান তুমি এইভাবে আমাদের তুলে এনেছো এখন আবার জেঠিমার হাত বেধে রেখেছো কেন?
সত্যি তুমি ভদ্রতা বলে কিচ্ছু শিখোনি।
“আহ বাবা একটু দৈর্য ধরো। কি হচ্ছে দেখতে দাও!
ঈশানের কথায় আবিদের সাথে সাথে সবাই কৌতুহল দমিয়ে নেয়।তখনি রাসেল একটি ভিডিও ওপেন করে।আর মনোযোক দিয়ে সবাই তা দেখতে থাকে।
সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে লিমন পাচিল টপকে বাড়ির ভেতরে ডুকছে দুইজন সিকিউরিটি গাড দেখা সর্তেও তাকে বারন করেনি।(আগেই টাকা খাইয়ে লিমন তাদের দমিয়ে দিয়েছিল)
লিমন সোজা চলে যায় লিপির বারান্দার সামনে আর বেশ কিছু ক্ষন তাদের মধ্যে কথা হয়।একদম শেষ ভিডিওতে দেখা যায় একটি পেকেট বারান্দা দিয়ে ছুড়ে লিমন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে।
সবাই অবাক হয়ে ভিডিওটি এতোক্ষন দেখছিল। কিন্তু সত্যিটা কি কেউ বুঝতে পারছেনা।
” তা জেঠিমা এবারো কি অস্বীকার করবেন লিমন আর ইমনের সাথে আপনার সম্পর্ক নেই?
লিপি মাথা নিচু করে নেয়।
“আমি বুঝতে পারছি এখানে কিছু গোলমাল আছে শুধু আমি আপনার শিকারোক্তি চাইছি!
লিপি এবারো চুপ করে আছে তার চোখে জল।কি করে বলবে একের পর এক অন্যায়ের কথা। লিমন আর ইমন নিস্তেজ হয়ে গেছে।তারা কিছুক্ষন পর পর ব্যথায় গোঙ্গরাচ্ছে।
লিপিকে চুপ থাকতে দেখে সবার মাঝ থেকে সামনে আসে লিজা।তার মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,,
” কি সত্যি লুকিয়ে আছে তা আমিও জানতে চাই! একের পর এক চুপি চুপি ফোন আলাপ কার সাথে তা আমিও যানতে চাই মা।আমার কসম তুমি সত্যিটা বলবে!
লিজার কথায় সবাই লিজার দিকে অবাক হয়ে তাকায়।লিপি তার দিকে ছল ছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
লিজা আবারো বলে,
“আমরা সত্যটা জানতে চাই শুধু। তোমার পাপ পূর্ণ হয়ে এসেছে আর কোন কথা লুকিয়ে লাভ নেই। ভালোয় ভালোয় সত্যিটা বলো।
লিপি কাঁপা কাপা ঠোঁটে বলে,
“আমি কিছুতেই বলতে পারবো না। আমি কিচ্ছু যানিনা।
লিজার মনে তার মায়ের জন্য বড্ড বেশি ক্ষোভ। তার বাবার সাথে যে তার মা অন্যায় করছে তা সে ভালো করেই যানে।ঈশানের হাত থেজে ছোট্ট একটা ছুরি নিয়ে নিজের হাতে ধরে বলে,
” আমার রাগ সম্পর্কে তোমার ভালোই ধারনা আছে মা। যদি আজ সত্যিটা না বলো তবে আমি কি করবো নিজেও যানি না।
ঈশান চুপ চাপ দাঁড়িয়ে লিজার অভিনয় দেখছে কারন লিজাকে সম্পূর্ণ বিষয়টি আগে থেকেই ঈশান শিখিয়ে দিয়েছে।লিজা হাতে ছুরি চেপে ধরতেই। লিপি চিৎকার দিয়ে বলে,
“মা মা বলছি তুই কিছু করিস না মা বলছি তোকে।
” বেশ তবে বলো।
“হ্যা বলুন কেনো আপনি আমার ক্ষতি করতে উঠে পরে লেগেছেন(চিৎকার দিয়ে ঈশান)
“কারন তুই………
#চলবে…..
লিপি, ইমন আর লিমনের মাঝে কি ছিল তার রহস্য কালকেই ভাঙ্গা হবে?।