অতিরিক্ত চাওয়া ?
নাবিলা ইষ্ক
পর্ব : ৬
রূমের দরজা ওফ করে বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছি। লাইট ওফ! কানে ইয়ারফোন। খারাপ লাগছে প্রচন্ড? স্যারটা অনেক পচা.. তৃষ্ণা স্যার অনেক পচা। গালে পাচ আঙুল বসে আছে! এতো জোড়ে কেউ মাড়ে? পুরো ফেসটা ব্যাথায় মনে হচ্ছে ফুলে যাচ্ছে আমার ! আর যেই গালে মেড়েছে? সেখানে মনে হচ্ছে কেউ লোহা দিয়ে বারি দিচ্ছে!
উনার কাছে আমি আর পড়বো না। যা ইচ্ছে করুক? আমি আর পড়তে যাবো না। আজ আব্বুকে বলবো নিউ টিচার খুজতে। এমন কেনো করেন আমার সাথে! আমি কি সত্যিই অনেক বাজে! আমি আর সবার মতো উনার স্টুডেন্ট নই? পুরাতন স্টুডেন্টসদের নাকি স্যাররা অনেক ভালোবাসেন! তাহলে আমিও তো স্যারের পুরাতন স্টুডেন্ট! ৪ বছর হতে চলল! ৭ম ক্লাস থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত স্যার আমায় পড়াচ্ছেন! কিন্তু আজও স্যার আমায় সজ্য করতে পারেন না!
আজ দু’দিন হচ্ছে আমি স্কুল, প্রাইভেট কোথাও যাচ্ছি না পড়তে। আর যেতেও ইচ্ছে হয় না! আমি যাচ্ছি না বলে তৃষ্ণা স্যার নাকি অনেকবার কল করে বলেছেন আমায় প্রাইভেটে পাঠিয়ে দিতে। আবার বাসায়ও এসেছেন দুইদিনই! স্যার যখন এসেছেন তখন আমি রূম থেকেই বেড় হইনি! দরজা লাগিয়ে কানে ইয়ারফোন গুজে ছিলাম! তার জন্য আব্বু আমায় ঝাড়ি দিয়েছেন! আমিও আব্বুকে ডায়রেক্ট বলে দিয়েছি আমি আর তৃষ্ণা স্যারের কাছে পড়বো না। মা তো বকাঝকা করছেন আমায়! জিজ্ঞাস করছেন কেনো পড়বো না? আমি কোনো জবাব দিতে পারলাম না! শুধু বলেছি নতুন টিচার খুজতে!
স্কুলে যাচ্ছি না কারন অনেক খারাপ লেগেছিল সেদিনের অপমান। সবাই আমায় দেখলেই হাসাহাসি করবে! করবে নাই বা কেনো? ক্লাসে এই স্যার আমায় অযথা মারেন! কোনো রিজন পাই নি আজও! আমি কি লোহা দিয়ে তৈরি যে অকারণে এসে শুধু মাড়বে! এখন থেকে এই স্যারের ক্লাসও এটেন্ড করবো না! যাতে যাই হোক হুহ!
আজ ফ্রাইডে….
মঙ্গলবার, বুধবার আর বৃহস্পতিবার এই তিনটি দিন আমি ঘড় থেকেই বেড় হইনি! নিজের রুমে টিভি দেখেই কাটিয়েছি! সবকিছু বিরক্ত লাগছে আজকাল! এখন ঘুমের ভিতরেও স্যারের থাপ্পড় দেখি! অসজ্য! ভয়ংকর টিচার! এমন টিচার জেনো আর কারো কপালে না পরে!
অনেক্ষণ যাবত হাসান কল দিচ্ছে! ঘুড়তে যেতে বলতেছে ওদের সাথে! আজিব? হাসানটা না একটা আস্ত গাধা! আরেহ নিজের গার্লফ্রেন্ড কে নিয়েই যা নাহ! আমায় কেন ডাকতেছিস ভাই? হাসান আর তার গার্লফ্রেন্ড নিম্মির জড়াজুড়িতে রাজি হলাম ঘুড়তে যাওয়ার জন্য! আর এভাবে ৩দিন যাবত বাড়িতে থেকে বোর হয়ে উঠেছি!
দুপুর ৩ টা বাজছে.. আমি, হাসান, নিম্মি অনেকটা দূরে বেড়িয়েছি। অনেকটা রাস্তা যেতেই সামনে ডার্ক কালারের একটি গাড়ি থামলো। গাড়িটা কার? তা চিনতে বেশি সময় লাগে নি আমার ! গাড়িতো তৃষ্ণা স্যারের। নিশ্চিত আমায় আবার সকলের সামনে চড় মারবেন। আমি উল্টো পথ ধরে তাড়াতাড়ি হাটা ধরলাম মাথা নিচু করে। যত দ্রুত সম্ভব হেটেই যাচ্ছি! ভয়ে বুকের ভেতর মোচড় দিচ্ছে বারবার!
স্যার মে বি আমার পিছনে দৌরে আসছেন আর চিল্লাচ্ছেন… ” বেলি স্টপ দেয়ার।
তারপরও আমি থামছিনা! এখন দৌড় দেওয়া উচিৎ কিন্তু রাস্তায় প্রচুর লোকজন! তাও চিন্তাভাবনা ছেড়ে দৌড় দিতে নিচ্ছিলাম, তখনি পিছনে কেউ হাত ধরে ফেলে। হাওয়ার মতো বেগে সে আমায় তার দিক ঘুড়ায়। তার দিক ঘুড়তেই মাথায় ঠাস করে একটা থাপ্পড় লাগালেন….
আমি এখন কেদেই দিলাম… এ্যা এ্যা এ্যা……!
নিচে তাকিয়ে কেদেই যাচ্ছি… তখনি হাসান বলে উঠলো….?
” আসসালামুয়ালাইকুম স্যার…
নিম্মিও সালাম দিলো…
” আসসালামুআলাইকুম স্যার..
আবারও হাসানের আওয়াজ পেলাম..
” স্যার কি হয়েছে? বেলি কি করেছে?
হাসানের ভয়েস শুনে আমি আরো জড়ে কেদে উঠলাম। কারনটা সজা আমি কিছুই করি নি! আমাকে নিয়ে কিসের এতো সমস্যা এই স্যারের! আশেপাশের অনেকেই আমাদের দিক তাকিয়ে আছে। বেশকিছুক্ষন পর তৃষ্ণা স্যারের আওয়াজ পেলাম….
” হাসান… নিম্মি বাসায় যাও।
হাসান মনে হয় কিছু বলতে চাচ্ছিলো! কিন্তু স্যার ওদের কিছু বলতে না দিয়েই বললেন…
” হোয়াট? যাষ্ট গো…?
ওরা স্যারের এমন ভয়ংকর আওয়াজ শুনে চলে যাচ্ছে। আমিও ভাবছি দৌর দেবো। তার আগেই হাতে স্পর্শ পেলাম। হুম তৃষ্ণা স্যার আমার হাতটা টাইট করে ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন সামনে। আমি মাথা নিচু করে চারপাশের মানুষের অদ্ভুত চাহনীয় দেখছি।
গাড়ীর দরজা ওপেন করে বললেন…
” সিট…!
আমি তো দাড়িয়েই ছিলাম। আমার ভাবটা ছিলো.. আমি গাড়িতে বসবো না। কিন্তু তা তো হলো না উল্টো আরো ব্যাথা পেলাম। ধাক্কা মেড়ে ভিতরে ফেলে দিলো। রাগে দুঃখে আমি এইবার ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেদে উঠলাম। কাদতে কাদতে হিচকি উঠে গেছে। কি হচ্ছে আমার সাথে? ঘর থেকে বেরিয়ে আসাই ভুল হয়েছে আমার!
গাড়ি চলছে আর আমার কান্নার বেগও বাড়ছে। গাড়িটা অনেক্ষানী গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। আমি তাও স্যারের দিক তাকায়নি। আমি নিচে তাকিয়েই কাদছি! ভেবে রেখেছি আর দেখবোই না এই স্যারকে! ভয়ংকর বিটিং করা টিচার!
হঠাৎ আমার কোমড়ে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম। আমি কেপে উঠে সামনে তাকানোর আগেই সেই হাত জোড়ার মালিক আমায় টেনে তার দিক নিয়ে নিলেন। আমি বিশ্ময় নিয়ে সেদিকে তাকাতেই আমার ঠোঁটে তার ঠোঁটের উষ্ণ আভাস পেলাম। মুহুর্তের মধ্যে কি হলো আমার কোনো আইডিয়া নেই। পুরো শরীরের পশম ধীরে ধীরে দাড়াতে শুরু করলো।
কোমড় থেকে এক হাত উঠিয়ে আমার থুতনির নিচের থেকে ধরে গাল পর্যন্ত চেপে ধরলো। মুখটা তারদিক আরো টেনে নিলো। আমার কোমড় তার এক হাতে সম্পুর্ণ আবদ্ধ।
তীব্র থেকে তীব্র ভাবে তার ঠোঁট আমার ঠোঁটের মাঝে আবেশে প্রবেশ করছে। কি হচ্ছে এটা? সেইটার আইডিয়াই নেই। কিন্তু আমার চোখ লাগাম ছাড়া হচ্ছে ধীরে ধীরে চোখ বুঝে গেলো। আর তার ঠোঁটের ছোয়া তীব্র হয়েই যাচ্ছে। তার আচরণ অনেকটা না পাওয়ায় নেশা হাতে পেয়েছে এমন। মাইন্ড কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে আমার। কি হচ্ছে? কেনো হচ্ছে? কে করছে? কোথায় আছি? কিছু মাইন্ডে নেই শুধু এতটুকু আছে তা হলো অচেনা ফিলিং। যেটা পুরো শরীরে শিহরণ লাগিয়ে দিচ্ছে। ঠোঁটের পাশ বেয়ে পানি পড়লো মনে হচ্ছে? আমি উতলা হয়ে দেখার জন্য চোখ খুলতেই দেখলাম তার চোখ বন্ধ অবস্থায় এক চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। যেই পানির ফোটা আমার ঠোঁটে টাচ করতেই তার ঠোঁটের ছোয়ায় মিশিয়ে যাচ্ছে।
আমি তাকিয়ে থাকতে পারলাম না চোখ লাগাম ছাড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ডেইরিমিল্ক ও মে বি আমি এতোটা মজা করে খাই নি। যতোটা মজা নিয়ে সে আমার ঠোঁটের স্বাদ নিচ্ছে। না প্রচন্ড অস্বস্তি হচ্ছে অনুভুতিতে কিছুক্ষণ বাদে মনে হয় আমি মড়েই যাবো? আমার দু হাত তার বুকের দুই সাইডে মেলে দিয়ে কিছুটা ধাক্কা দিতেই।
তার ঠোঁটের ছোয়া আরো তীব্র ভাবে পাচ্ছি আমার ঠোঁটে। আমি চোখ খিচে আমার ঠোঁট চেপে ধরে মুখে ভড়ে নিলাম। সে মনে হলো রেগে গেলো? আমার গাল এমন ভাবে চেপে ধরলো মনে হলো গাল দাতের মাঝে ঢুকে যাবে। আর ঠোঁট তো মুখ থেকে বেড়িয়ে এলো। আর সাথে সাথে তার ঠোঁট দিয়ে আবার চেপে ধরলো। এইবার আরো উতলা হয়েই ঠোটের স্বাদ নিচ্ছে। তার গরম নিস্বাস গুলি আমার গালে এসে বারি খাচ্ছে। আমার শরীর মনে হচ্ছে নিজের থেকে সরে যাচ্ছে।
আমার ঠোঁট মনে হলো আর নেই। সে ঠোঁটে ঠোঁট ছেড়ে দিয়েই অন্যপাশের জানালার দিক তাকালেন। মনে হচ্ছিলো জড়ে জড়ে স্বাস নিচ্ছে। তার একহাতের দু আংগুল কপালে রাখা। আর আমি তো নিস্তব্ধ হয়ে বসে আছি নিচের দিক তাকিয়ে। কি হলো? এইটা লিপ কিস ছিলো? আমার জীবনের প্রথম কিস? তাও স্যারের কাছ থেকে পাওয়া। লজ্জাজনক লাগছিলো ব্যাপারটা আমার কাছে।
সে তো আমায় পছন্দই করেন না। আমাকে তো সজ্যই করতে পারেন না। তাহলে এগুলোর কি মানে ছিলো…?
চলবে…..?
অতিরিক্ত চাওয়া ?
নাবিলা ইষ্ক
পর্ব : ৭
গাড়ি চলতে শুরু করলো। আমি আর কোথাও তাকানোর শক্তি পেলাম না। আর কিছুক্ষণ আগে যে পড়েপিটে কাদতেছিলাম সেটা মনে হচ্ছে এখন আরো তিব্র ভাবে বাহিরে আসতে চাচ্ছে। না চাইতেও বারবার তার দিক চোখ যাচ্ছে। গোলাপী ঠোঁট দু ‘টি রক্তের লাল বর্নের ধারন পেয়েছে তার। কালো টি_সার্টের মাঝে তার ফোর্সা গায়ের রঙ ফুটে উঠেছে। সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালিয়েই যাচ্ছে। গলায় সিংহের একটা চেইন আইটেম কিছু পড়া। হাতে ঘড়ি বেশ বড়? আজকে চুল আওলাঝাওলা হয়ে আছে। মে বি তখনের জন্য? কেনো জানো স্যারটাকে আজ বেশ লাগছে! এমন চোখে আগে কখনও পর্যবেক্ষন করা হয় নি! আর করবো বাই বা কেনো? আমি তো শুধু শিক্ষকের নজরে দেখেছিলাম!
আমার প্রচন্ড রাগ লাগছে স্যারের এমন বিহেভিয়ারে। কোথায় গাড়ি যাচ্ছে তাও জানি নাহ? আর কিছু বলার ভাষাও পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে কেউ আমার গলা চেপে ধরে আছে…স্যার কি আমায় ইউস করতে চাচ্ছে। নাকি সে আমায় ঘৃনা করে তাই এমন কাজ করলো? কিস তো ঘৃনা করা ব্যাক্তিকে করা যায় না। কাউকে তিব্র ভাবে আপন করে পেতে চাইলেই এভাবে কিস করে নিজের মাঝে গুছিয়ে নেয়।
এখন আমার আরো বেশি কান্না পাচ্ছে। ঠোঁট গুলি মে বি তেনাতেনা হয়ে গেছে। এতোক্ষন অন্যকারো ঠোঁটের ভার বহন করেছে কম কথা…?
আমার কাছে এই কাহিনীটা একটা স্বপ্ন মনে হচ্ছে। স্বপ্ন হলে এখনি উঠতে চাচ্ছি এই বাজে স্বপ্ন থেকে। এইটা অবিশাষ্য তৃষ্ণা স্যার যে কিনা আমায় দেখতেই পারে না সে আমায় কিস করেছে তাও এতো সফটলি। আবার মনে হচ্ছিলো সে কাদতেছিলো। আমার মাথায় কিছুই আসছে না…
ভাবনায় ছেদ পড়লো গাড়িটা থামায়। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম এক লেকের পাশে। একটা মানুষও দেখতে পাচ্ছি না। স্যারের দিক তাকাতেই দেখলাম সে সিটে মাথা হেলান দিয়ে শুয়ে আছেন।
আমি কাপাকাপা কন্ঠে বললাম…
” আ…আমি বাসা…বাসায় যাবো প্লিজ।
সে এখনও সেভাবেই চোখ বুঝে আছে। হঠাৎ তার গলার আওয়াজ পেয়ে সেখানে তাকাতেই দেখলাম সে এখনো সেভাবেই চোখ বুঝে আছে…
” রোকনা নাহি মুঝকো.. জিদপে আগায়াহু মে…?
ইস কা দার দিবানা পান চারহা…
দেখোনো এহা আকে মেরা হাল কেয়সা হে…
টুটকে আভিতাক না জুড়া…. [এতোটুকু গেয়ে সে আমার দিক তাকালো.. ]
তুমহে আপনা বানানেকা জুনুন ছাড়পে হে… কাবছে হে …?
মুঝে আদাত বানালো একবুড়ি কেহনা এহ তুমসে হ্যা…
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি স্যারের দিক। সে গান গেলো তাও এমন ইনসেন সং। তাও আমার দিক তাকিয়ে! গানটা কি আমায় মিন করে গেলো…? তার চোখের দিক তাকাতেই তার চোখে চোখ পড়তেই আটকে উঠলাম আমি..? তার চোখের চারপাশ সম্পুর্ণ লাল হয়ে জমে আছে। কেমন এক ভয়ানক চাহনীয় ছিলো! বেশিক্ষণ তাকাতে পারি নি আমি! চোখ নামিয়ে আশে_পাশে তাকাতে লাগলাম! সে এবার আমার দিক একটু ঝুকে গেলোহ..
” ভয় করছে তাই নাহ? [ আমি তাকালাম ] আমি তো চাই তুমি আমায় ভয় পাও.. ঘৃনা করো!
কথাটা বলেই সে অট্টহাসি হাসিতে ফেটে পড়লো! আমি তো প্রচন্ড ভয় পাচ্ছি স্যারের এমন বিহেভে! হঠাৎ স্যার আবার মুখটা খিচে ফেললেন..! সাথে সাথে ড্রাইভিং স্ট্রিকে কষে বারি মারলেন! আমার দিক ভ্রু_কুচকে তাকিয়ে বললেন…
” এই পিচ্চি কি আছে তোমার মাঝে..?
[ আমি তো রীতিমতো অবাক, কি বলছে স্যার এগুলো! ]
হ্যা.. কি আছে? কেনো আমায় এমন বানাচ্ছো? [ কথাটা বলেই তার ডান হাতের চার আংগুল ইউস করে আমার গাল চেপে ধরে, তার দিক টেনে নিলেন ] দিন দিন আমি আমার নিজেকে হাড়িয়ে ফেলছি! কেনো? কেনো তোমার থেকে দূরে থাকতে পারি না! কেনো তোমায় নিয়ে সারাক্ষন ভাবি! কেনো তোমায় এতোটা চাই? উত্তর আছে তোমার কাছে? নাই..! আমার কাছেও যে নেই!
তোমার মাঝে কিচ্ছু নেই.! কিচ্ছু?
তাও আমি প্রতিনিয়ত পাগল হচ্ছি! এই! আমি তোমার টিচার নই! আমি শুধু তোমায় একনজর দেখার জন্য পড়াই! কেনো বুঝোনা?
আমি শুধু তার দিক তাকিয়ে! অজানা এক টান অনুভব করছি! স্যারের কি হয়েছে? এটাতো বুঝতে বাকি নেই যে স্যার মে বি আমায় পছন্দ করেন! পছন্দ না করলে কি কেউ এভাবে কিস করে? বা এভাবে কথা বলে?
ভাবনায় ছেদ পরে স্যারের আওয়াজে! সেদিকে তাকাতেই দেখি স্যার চোখ বুঝে সিটে হ্যালান দিয়ে আছেন!..
বলতে শুরু করলেন আর আমি শুনতে..
” তুমি যেই ডাইরীটা পড়েছিলে ফ্ল্যাটের লাইব্রেরীতে! সেখানে যেই পিচ্চি মেয়ের কথা আমি উল্লেখ করেছিলাম জানতে চাও সে কে?
আমি সাথে সাথেই রিপ্লাই দিলাম.. ” নাহ..নাহ..! শুনতে চাই না! আমি বাড়ি যাবো?
” উহুউম… ইউ হেভ টু নো?
তাকিয়ে রইলাম স্যারের দিক! সে সিটে চোখ বোঝা অবস্থায় বলা শুরু করলেন!
PAST….
জানো ভালোবাসা বলতে তেমন কিছুই আমার মনে আসে নি! কিছুটা হ্যান্ডসাম থাকায় ভার্সিটিতে অনেক প্রেম করেছি! যেই মেয়েকে ভালোলাগতো প্রপোজ করতাম আর সেও এক্সেপ্ট করতো!
সেদিন বুধবার ছিলো! ভার্সিটি সেষে মাত্র বাড়ির পাশের চায়ের টঙে দাড়িয়েছিলাম! তখনি সেখানে উপস্থিত হয় একটি ট্রাক! আমি চা খাওয়ায় মনোযোগ দিচ্ছিলাম! তখনি এক পুচকি মেয়ে দৌড়িয়ে আসে দোকানে..
বলতে থাকে আইসক্রিম বা চিপস দিন!
মেয়েটাকে ভালো ভাবে একনজর দেখলাম! আমার এখনও স্ট্রিট মনে আছে.. গোলাপি রঙের হাটু অবদি জিন্স আর হোয়াইট ফুল হাতার গেঞ্জি ছিলো পরনে! মাথায় ক্যাপ ছিলো আর চারপাশের চুল গুলি লাফাচ্ছিল! হালকা ফোর্সা গায়ের রঙে পিচ্চিটা বেশ মায়াবতী ছিলো! যতক্ষণ ছিলো সেখানে আমি তাকিয়েই ছিলাম!
তখনি হয়তো সেই মেয়ের বাবা আসেন! মেয়েটি চিপসটা নিয়েই দৌড়িয়ে সামনের বাড়ির মধ্যে ঢুকে পরে! তখনি এক মহিলা ঢেকে উঠে ” বেলি.. ”
পিচ্চি মেয়েটির নাম ছিলো বেলি! বেলিকে আমার ভালোলাগতো! ভাবতাম যে আমি তো বাচ্চা প্রিয় তাই হয়তো! অতোটা গুরুত্ব দিতাম না এই বিষয়ে! শুনলাম বেলির বাবা তার জন্য টিচার খুজছেন! আমাকে বলতেই আমি হ্যাঁ বলে দিলাম! কেনো বললাম তার জবাব ও নেই! আমার তখন এক্সাম চলছিলো! পড়াতে শুরু করলাম মেয়েটিকে..!
প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত বেলিক নতুন ভাবে খুটিয়ে খাটিয়ে দেখতাম! প্রচন্ড ভালো লাগতো! ওর বোকা, বোকা কথা গুলোর মাঝেই নিজের হাসি খুজে পেতাম! হঠাৎ, হঠাৎ নাক টানা! কখনও পড়ার জন্য বকলে মুখ কুচকে রাখা আমার বেশ লাগতো ওকে দেখতে! প্রায় টাইম ওর ছবি তুলে রাখতাম ফোনে! মোবাইল ওপেন করতেই ওর ছবি গুলি নেড়েচেড়ে দেখতাম! মাঝে মাঝে বাড়ির পথে দেখতাম খেলতে! সারাদিন খেলতো আর আইসক্রিম খেতো!
মাঝে মাঝে অনেক মন চাইতো ওর জন্য আইসক্রিম কিনতে! নিজে নিজেই বলতাম ও আমার ছাত্রী! অনেকটা মেয়ের মতোই! কিন্তু ওটা চিন্তা করতেই পারতাম না! মুখটা কালো হয়ে যেতো! প্রায় টাইম আইসক্রিম কিনে দিতাম, আর ও তা আমাকেও খাইয়ে দিতে চাইতো! ওর হাতে খেতে তো চাইতাম কিন্তু ফোকাস আমার ভালো ছিলো না! তাই ইগনোর করতাম!
এতো কাহিনীর মাঝেও নিজের অনুভূতি তখনও বুঝতে পারি নি!
সেদিন মনে হয় শনিবার ছিলো! অনেক্ষণ যাবত বসে ছিলাম ওর জন্য! কিন্তু ও তো পড়তেই আসলো না! ভাবলাম হয়তো আজ আসবে না! কেমন ফাকা ফাকা লাগছিলো সেই দিনটা! কিছু একটা নেই, নেই লাগছে!
রাত্রে ঘুমুচ্ছিলাম! এমন এক বাজে স্বপ্ন দেখলাম যে তড়িঘড়ি করে উঠে পরলাম! তখনও বিস্বাশ হচ্ছিলো না ব্যাপারটা! বারবার ভালোবাসার কথা বলছিলাম বেলিকে ! আমি সেই রাত্রে আর ঘুমাই নি!
পরের দিন আর কোথাও বের হই নি! বেলিকে না দেখতে পেয়ে নিজেকে পাগল, পাগল মনে হচ্ছিলো! অস্থির অস্থির ফিলিং হচ্ছিলো! কি করবো না করবো ভেবে পাচ্ছি না! আর কিছু না ভেবেই কল লাগালাম! কলটা ধরেই বেলির বাবা বললেন! তারা গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন! ১০_১২ দিন আসবে না! কথাটা শুনে আমি কিছু সময় স্তব্ধ হয়ে ছিলাম! ফোনের মধ্যে বেলির আওয়াজ পাচ্ছিলাম.. ” উফ বাবা তুমি আমায় হ্যাল্প করো গাছে উঠবো!
ভয়েসটা শুনা মাত্রই চিৎকার দিতে ইচ্ছে করছিলো! একদিন না দেখতে পেয়ে আমার এই অবস্থা ১২ দিন কিভাবে থাকবো?
দিন যাচ্ছে আর বেলির প্রতি আমি কতোটা উইক তা অনুভব করছি ! একনজর শুধু একনজর দেখতে মন চাচ্ছিলো! ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম এতো উইক এর মানে!
যখন বুঝতে পেরেছিলাম নিজেকে থু থু দিতে ইচ্ছে করছিলো! সেষে এক নাবালিকা মেয়েকে মনে ধরেছে! তিব্র কষ্ট মনে ধরেছিলো তখন! স্বাশ নিতেও কষ্ট হচ্ছিলো আমার!
আমার অতিরিক্ত চাওয়া শুরু হয়েছিলো সেই ২ দিনের মাঝে! বুঝিয়ে দিয়েছিলো আমি কতোটা ব্যহায়া হয়ে উঠেছি! ৩ দিনের মাথায় ঠিকানা জোগার করলাম চাদপুরের! সকল তথ্য নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম….
continue