#বিবর্ণ_বসন্ত
নুসরাত জাহান লিজা
একুশ পর্ব
ত্রিশ.
সেদিন অন্বেষা চলে যাবার পরে আবিদ নিজেকে নিয়ে কিছুটা ভাবতে শুরু করে, সেদিনের সেই শেষ বিকেলে বহুদিন ধরে হৃদয়ে বন্দী যন্ত্রণাকে কিঞ্চিৎ হলেও মুক্ত করতে পেরেছিল সে। নিজের অজান্তেই কষ্টগুলোকে চোখ রাঙিয়ে হেসেছিলে প্রাণ খোলে, কতদিন, কতবছর পর ফিরে পেয়েছিল নিজের হারিয়ে যাওয়া স্বত্বাকে! সাড়া দিয়েছে এক আধাপাগল, একরোখা আর ভীষণ আবেগপ্রবণ মেয়েটার বন্ধুত্বের আহবানে! কী নাছোড়বান্দার মতো লেগে থাকে! অবচেতনেই হেসে ফেলল ও।
সেদিনের পর কয়েকদিন অতিবাহিত হয়ে গেছে, অন্বেষার সাথে কথাও হলো পরশু! বসন্তের শেষ বেলা চলছে। দুদিন পরেই পহেলা বৈশাখ, তারই প্রস্তুতিতে বাইরের দুনিয়ায় সাজসাজ রব। শুধু আবিদের নিজের দুনিয়ার কোনো প্রস্তুতি নেই। দেশসেরা দুটো ম্যগাজিনের বৈশাখী সংখ্যায় ওর লেখা চেয়েছিল, তাও পাঠিয়ে দিয়েছে সেই কবে। এছাড়া পহেলা বৈশাখের আলাদা কোনো এক্সাইটমেন্ট এখন আর কাজ করে না ওর, শুধু এটা না কোনো কিছুই আর টানে না।
অথচ একসময় কত প্রস্তুতি থাকত, খুব সকালের মঙ্গল শোভাযাত্রা, ইউনিভার্সিটির কনসার্ট, বন্ধু, আড্ডা, গানে মেতে আর মাতানো শেষ করে হলে ফিরতে ফিরতে সেই রাত ভোর। কী মুখরই না ছিল জীবনটা! কেন সবকিছু এভাবে বদলে যায়? কেন ভেঙ্গেচুরে, দুমড়ে মুচড়ে যায় সব?
অতসীকে নিয়ে সুন্দর একটা জীবনের স্বপ্নই তো শুধু দেখেছিল, সাথে সব কাছের মানুষগুলোকে নিয়ে একসাথে বাঁচার, জীবনের উৎসব আনন্দ, রং একসাথে উপভোগ করার! চাওয়াটা কী খুব বেশী ছিল? অতসীর কথা মনে হতেই আবারও যন্ত্রণাগুলো ফিরে এলো। যন্ত্রণারা দলবেঁধে ধেয়ে এসে ওকে মনে করিয়ে দিল,
“তোমার হৃদয়টা শুধু আর শুধুই আমাদের জন্য বরাদ্দ, এতে একচ্ছত্র অধিকার কেবলই আমাদের, তুমি কোথাকার কোন সুখ টুখ, আনন্দকে আনতে চাইছো, এতবড় স্পর্ধা তোমার?”
আবিদেই আশ্রিত পরজীবী কষ্টেরা যেন ওকেই চোখ রাঙাচ্ছে, নিজেদের পাকাপোক্ত আসন কে-ই বা ছাড়তে চায়! অতসীর আকুতিভরা অশ্রুসিক্ত দৃষ্টি চোখের পর্দায় ভেসে উঠতেই আবারও অপরাধবোধের বোঝা মাথায় চেপে বসল, বুক নিংড়ে বেরিয়ে এলো সবসময়ের সঙ্গী দীর্ঘশ্বাস!
রাতে খাবার পর ড্রইংরুমে বসে চ্যানেল পাল্টাচ্ছিল আবিদ, খবর দেখবে বলে। এসময় সোহান এলো কাঁচুমাচু মুখ করে। রিমোট হাতে টেলিভিশনে চোখ রেখেই আবিদ প্রশ্ন করল, “কী ব্যাপার, সোহান?”
সোহানের ইতস্ততবোধ দেখে ও বলল, “পহেলা বৈশাখের প্ল্যান কী ফিক্সড হয়ে গেছে?”
“না, আসলে ওইটার ব্যাপারে কথা বলতেই আসছিলাম…”
“তো বলো, শায়লা অপেক্ষা করবে নিশ্চয়ই?”
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইল আবিদের দিকে, এই লোকের দৃষ্টি অন্তর্ভেদী!
সোহানের মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলল আবিদ, “এভাবে তাকিয়ে আছ কেন? এত অবাক হবার মতো কিছু হয়নি। আর তোমাকে আগেও বলেছি এত সংকোচের কিছু নেই, যেকোনো প্রয়োজনে নির্দ্বিধায় আমাকে বলবে! তবুও…”
সোহান এখনও বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আবিদের দিকে, এত ভালো একটা লোক, তবুও কেন যে ভয় পায়! এটা অবশ্য ভয় না, সমীহ। ওর মায়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল আবিদ। তাও আবার সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে। তখন সোহান সবে যোগ দিয়েছে এখানে, সদ্য যোগ দেয়া একজন এমপ্লয়ির জন্য কেউ এতটা করে না, কিছু টাকা দিয়ে দায় এড়াতে পারত, কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির সময় থেকে শুরু করে প্রতি মুহূর্তে আবিদের সাহচার্য পেয়েছে ও। ওর মা এখনও হেসে খেলে বেড়াচ্ছে আল্লাহ্র রহমতে সেই ট্রিটমেন্টেই। এই লোকের কাছে ওর কৃতজ্ঞতার সীমা নেই! এখনও কোনো প্রশ্ন ছাড়াই ছুটি দিয়ে দিল, তাও চাইবার আগেই! মনে মনে আবিদকে নিজের বড় ভাইয়ের জায়গা দিয়েছে ও।
রুমে ফিরতেই মুঠোফোনের রিংটোন কানে আসল, স্ক্রিনে কলারের নাম দেখে অবচেতনেই সহসা এক চিলতে হাসি ছড়িয়ে পড়ল আবিদের সদা গোমড়ামুখো অবয়বে! অন্বেষা রয়েছে মুঠোফোনের ওপারে।
একত্রিশ.
আবিদের সাথে বন্ধুত্ব হবার পর থেকে অন্বেষা যেন মেঘের দোলনায় দুলছে, বিচরণ করছে এক স্বপ্নময় জগতে, ভালোবাসায় পূর্ণ আশ্চর্যময় এক জগত! একদিকে একপা দু’পা করে এগুচ্ছে ও, অন্যদিকে ওর মন আলোর বেগে ছুটছে আবিদের হৃদয় পানে! হৃদয়ের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে এগুতে পারছে না সে, সম্ভবও নয়। তাই ধৈর্য তো ধরতেই হবে, বন্ধুত্ব আরেকটু পাকাপোক্ত হোক, ধাপে ধাপেই নাহয় সিঁড়ি ভেঙে এগুবে। একেবারে উপরে উঠলে চিৎপটাং হয়ে পড়ে যাবার সম্ভাবনা আছে!
এ কী অসুখ হয়েছে ওর! সারাক্ষন বিষাদপুত্রে বুঁদ হয়ে থাকার অদ্ভুত এক ব্যামোতে ধরেছে ওকে! কিছুতেই মাথা থেকে তা সরাতে পারছে না, বলা ভালো চাইছে না! কেন চাইবে? এ যে মধুর যন্ত্রণা! যা নিয়ে বাস করা যায় সহস্র বছর!
আবিদের সাথে ফোনে কথা হবার পর একদিন চলে গেছে মাঝে, আজ ফোন করাই যায়। যেই ভাবা সেই কাজ। ডায়েল লিস্টে সবার উপরে আবিদের নাম্বারটাই ছিল, আজ এর আগেও অসংখ্যবার ডায়েল করে ত্বরিত কেটে দিয়েছে, কল ঢুকার আগেই! তবে শেষ পর্যন্ত দিয়েই দিল।
ওপাশ থেকে আবিদের গলা শুনতেই যেন বোবা বনে গেল ও, সহসা কোন কথা খুঁজে পেল না অথচ অসংখ্য কথার পাহাড় জমে আছে মনে। কিন্তু সেসবের কোনোটাই মুখ অব্দি আসছে না কিংবা সব কথা একসাথে হুড়োহুড়ি করে বেরোতে চাইছে! তাই গলা পর্যন্ত এসে আটকে যাচ্ছে। কী অদ্ভুত এক সমস্যা!
আবিদই আগে কথা বলল, “কেমন আছো, অন্বেষা?”
অবশেষে ওর কথারা গন্তব্য খুঁজে পেল, “ভাল, আপনি?”
“কোনো অসুখ বিসুখ যেহেতু করেনি, এরমানে ভালোই আছি!”
গলার সূক্ষ্ম বিষাদ অন্বেষার কানে ঠিকই ধাক্কা মারল। অনেক ভেবে ভেবে আবিদের মন ভাল করার একটা সুন্দর প্ল্যান দাঁড় করিয়েছে, কিন্তু আবিদ রাজি হবে নাকি স্বভাবসুলভ কড়া কথা শুনাবে তা জানে না ও। তবে চেষ্টা করে দেখতে হবে।
“পহেলা বৈশাখ কীভাবে কাটে আপনার?”
“বাসায় বসে, খেয়ে ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিই, মুড থাকলে কিছুক্ষণ লেখালেখি করি। এই তো!”
“কী বলেন? এরজন্যই আপনার সারাবছর এরকম নিরামিষ কাটে!” ঠাট্টাচ্ছলে বলল অন্বেষা।
“তোমার কথা বুঝিনি আমি, স্পষ্ট করে বলো।”
“আরে ছোটবেলায় শোনেননি যে, বছরের প্রথমদিনটা যেভাবে কাটে সারাবছর তেমনই কাটে!” হাসি চেপে কথাটা বলল ও।
“তুমি এসব অ্যাবসার্ড কথাবার্তা বিশ্বাস কর?” আবিদের গলায় বিস্ময়!
অন্বেষা এবার শব্দ করে হেসে উঠল, উচ্ছল, প্রাণবন্ত হাসি।
“আপনি কি সবসময় এরকম কথায় কথায় সিরিয়াস হয়ে যান! আমি তো মজা করে বলেছি।”
আবিদ উত্তর না দিয়ে ওকে জিজ্ঞেস করল, “তোমার প্ল্যান কী?”
এই প্রশ্নের জন্যই অন্বেষা অপেক্ষা করছিল,
“আমারও কিছুটা নিরামিষ কাটে আপনার মতো। আমদের প্রফেশনে তো কী ভীষণ ব্যস্ততা থাকে জানেনই! ইদের দিন আর এই দিনটাই একটু শান্তিতে ছুটি কাটানোর সুযোগ থাকে। বৈশাখী বিভিন্ন ফিচার করতে করতে হাঁপিয়ে যাই। এই দিনটা একটু শান্তি। সকালে বাসায় এটা সেটা নিজে রান্না করার চেষ্টা করি, আমার রান্না বাবার অনেক পছন্দ! আর সন্ধ্যায় বাবার সাথেই ঘুরি, ফ্রেন্ডরা বাসায়ই আসে নয়ত প্ল্যান করে কারও বাসায় যাই! এভাবেই কাটে প্রত্যেকবার। কিন্তু এবার…”
“এবার কী?”
দ্বিধা কাটিয়ে ভয়ে আর সংকোচে চোখ বন্ধ করে বলেই ফেলল, “এবার আমি আমার সদ্য পাতানো বন্ধুর সাথে কিছুটা সময় কাটাটে চাই! বের হবেন আমার সাথে?”
আবিদ মোটেও এর জন্য প্রস্তুত ছিল না, “আমার এসব ঘোরাঘুরি একদম ভালো লাগে না, সেই বয়সটাও এখন নেই। আর তাছাড়া, সেদিন এমনিতেও প্রচুর ক্রাউডি সিচুয়েশন থাকবে। এরমধ্যে তো একদমই না।”
ওর প্রস্তাব এভাবে নাকচ হয়ে যাবে এটা ও আগেই জানত, তাই হতাশ না হয়ে ‘একবার না পারিলে দেখো শতবার’ নীতি অনুসরণ করে পুনঃপ্রস্তাব রাখতে চলল,
“সবসময় এত বয়সের দোহায় দেন কেন বলেন তো। নিজেকে বুড়ো মনে করেন নাকি? একচল্লিশ আর কী এমন বয়স? ঘরে বসে দুঃখগুলোকে লালনপালন না করে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে সেগুলোকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিন। ওরা আপনাকে ছেড়ে যেতে চাইলেও চার দেয়ালে বাঁধা পড়ে আবার আপনার কাছেই ফিরে আসে। আপনি ছাড়া সেখানে আর কোনো অবজেক্ট নেই। কিন্তু খোলা জায়গায় সেগুলো ছড়িয়ে পড়লে দলছুট হয়ে যায়, দিগভ্রান্ত হয়ে চলে যায় অন্য কোথাও! ট্রাস্ট মি।”
ওপ্রান্তে আবিদ যে দ্বিধায় ভুগছে এটা ও ভালোই বুঝতে পারে, মনে মনে একাগ্রচিত্তে দোয়া করে চলেছে যেন আবিদ রাজি হয়।
“কিন্তু…”
“ক্রাউড? সেটা আমার উপর ছেড়ে দিন। আমার খুব পছন্দের নিরিবিলি জায়গা আছে, ঢাকা থেকে একটু দূরে, দেড়-দু’ঘন্টার রাস্তা।” দ্বিধাচিত্তে বলল ও।
“মাথা খারাপ তোমার, ঢাকার বাইরে যাব। অসম্ভব!”
“কেন সম্ভব নয়? চলুন না, গেলেই ভালো লাগবে, ফুরফুরে লাগবে। একটা দিনই তো। প্লিজ…”
অন্বেষাকে অবাক করে দিয়ে আবিদ রাজি হয়ে গেল।
“ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ…”
প্রচন্ড খুশিতে অণ্বেষা বারবার ধন্যবাদ দিতে থাকল। কতটা আনন্দ হচ্ছে তা কোনো শব্দে প্রকাশ করতে পারবে না ও, কিন্তু ওর গলায় তার রেশ টের পাওয়া যাচ্ছে ভালো করেই!
অন্বেষার ছেলেমানুষি উচ্ছ্বাসে আবিদ হেসে ফেলল, শব্দ করে! সে হাসি ছন্দ তুলল অন্বেষার কানে, হাজার তারের ঝঙ্কার বেজে চলেছে যেন, সাত সমুদ্রের ওপার থেকে ওর কানে মধুবর্ষণ করতে থাকল সেই হাসি! হাসিতে কি আসলেই এত সুর থাকে, ছন্দ থাকে? নাকি বিশেষ মানুষের হাসিই এতটা সুরেলা আর ছন্দময় হয়!
রাতে খাবার পর বাবার সাথে গল্প করছিল, এরমধ্যে হুট করে বাবা জিজ্ঞেস করে বসলেন,
“কী রে! তোর ব্যাপারটা কী আমাকে বলত? তোর ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন আজকাল বড্ড বেশিই আনপ্রেডিক্টেবল! এই মেঘ তো এই রোদ্দুর খেলা চলছে সারাক্ষণ। ওয়েদার ফোরকাস্টের রাডারেও তো এটা ধরা পড়ছে না!”
চমকে উঠে চোখ সরিয়ে নিল অন্বেষা, সহসা সলজ্জ হলো চোখমুখ! ইশ! বাবা এরকম কেন? এতটা সরাসরি কেউ বলে এসব, ওর বুঝি লজ্জায় মাথা কাটা যায় না!
“হয়েছে, আর লজ্জা পেতে হবে না!” ক্ষণেক বিরতি দিয়ে বললেন,
“আমাকেও বলবি না? আমি কিন্তু এতদিন তোকে আমার বন্ধুই ভেবেছি, ভেবেছিলাম তুইও তাই ভাবিস!”
কপট অভিমান দেখান, অন্বেষা বুঝতে পারে সত্যি সত্যি অভিমান নয়, তবুও কোথাও যেন কষ্ট হয়। তাই তো, বাবা ওর সবথেকে প্রিয় মানুষ, কাছের বন্ধু! লুকিয়ে কোনো লাভ নেই,
“বাবা, তোমাকে বলিনি এরকম কখনো হয়েছে? ব্যাপারটা এখনও একতরফা, আগে দোতরফা হোক তবেই না বলব তোমাকে।”
“সে কী! ছেলেটা কে? এখনো জানাসনি কেন?”
এবার অন্বেষা কপট রাগ দেখায়, “বাবা! তুমি না! বললাম তো আগে সেদিক থেকে কিছুটা সাড়া পাই, তারপর বলব, তোমাকেও তখনই দেখাব ওকে, এখন কোনো প্রশ্ন করো না, প্লিজ…” ভীষণ আদুরে গলায় বলল অন্বেষা।
“তা কোন সে রাজপুত্র যে আমার রাজকন্যাকে এড়িয়ে যাবে? এরকম সাধ্য কারও হবে নাকি?”
“রাজপুত্র নয় বিষাদপুত্র…”
মুখ ফসকে বেরোতেই আরেক দফায় সলজ্জ হলো। আজ ওর লজ্জা পাবার দিন। লজ্জায় লজ্জায় লাজুককন্যা হবার দিন! ইশ! লজ্জাবতী লতার মতো নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে পারলে কী ভালই না হতো!
বাবা কন্যার লজ্জাবনত মুখে তাকিয়ে ভাবলেন, সময় কত দ্রুত চলে, সেদিনের সেই ছোট্ট রাজকন্যা আজ কতটা বড় হয়ে গেছে! মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করে দিলেন,
“দোয়া করে দিলাম, তোর সেই বিষাদপুত্র আর আমার প্রিয় ছোট্ট রাজকন্যার জীবন একসাথে জুড়ে যাক, সামনের পিচ্ছিল বন্ধুর পথটা একসাথে হাতে হাত ধরে পাড়ি দিক! সুখ আর সুখে ভরে উঠুক জীবন!”
শেষের দিকে ভারাক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল বাবার গলা। স্নেহের প্রচন্ড প্রগাঢ়তা আরও একবার অনুভব করল অন্বেষা। দৃষ্টি ঝাপসা হলো ওর!
মনে মনে বলল, “আমার বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা! তুমি জানো না বাবা, এখন আমার সবচেয়ে বেশি তোমার দোয়াটাই দরকার। খুব করে দরকার! তোমার মতো করে পুড়তে চাই না আমি!”
এরপর একরাশ নীরবতা, স্নেহের বৃষ্টিতে ভিজতে লাগল পরম যত্নে।
……
বাকিটা পরের পর্বে