#কৃষ্ণচূড়ার_এক_সন্ধ্যা – [১৯]
লাবিবা ওয়াহিদ
————————-
নিথির জ্ঞান ফিরতেই সে দ্রুত উঠে বসলো। বক্ষঃস্থলের তীব্র ওঠা-নামা শব্দ উপলব্ধি করছে সে। শক্ত হাতে ওড়নার একাংশ মুঠিবদ্ধ করে ফেললো। নিঃশ্বাসও কেমন ঘন হয়ে আসছে তার। নিথি পিটপিট করে আয়নার দিকে তাকাতেই দেখলো রায়িন টাই বাঁধছে। আয়নার নিথির প্রতিচ্ছবি খেয়াল হতেই রায়িন ব্যস্ত ভঙ্গিতে বললো,
–“ফাইনালি আপনার জ্ঞান ফিরলো। আমি তো ভাবলাম বড় কিছু ঘটে গেছে৷ আর জ্ঞান হারানোর লজিক পরে এসে শুনবো, এখন অফিস আছে!”
বলেই রায়িন বেরিয়ে গেলো। আর নিথি সেখানেই হ্যাবলার মতো বসে রয়। তার চোখে এখনও রায়িনের ওই রূপটা দৃশ্যমান। সদ্য ঘুম থেকে উঠে ওরকম একটা অবস্থা নিথির মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করেছে৷ লজ্জা, জড়তা, আতঙ্ক সব একসাথে আসায় নিথি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। এখন নির্ঘাত এই জ্ঞান হারানো নিয়ে রায়িন মজা লুফবে। নিথি চোখ-মুখ কুচকে মুখ দিয়ে ফোঁস করে শব্দ করলো। যেন নিজের প্রতি ভিষণ বিরক্ত। এর মাঝে অন্তরা রহমান আসলেন। নিথি চমকে গেলো বেশ। অন্তরা রহমান ভ্রু কিঞ্চিৎ কুচকে চিন্তিত স্বরে বলে,
–“তুমি নাকি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলে?”
গেলো! সব গেলো! নিথির গালজোড়া লাল হয়ে উঠলো জড়তায়। কী দরকার ছিলো রায়িনের এসব বলার? নিথি লাজুক হয়ে আমতা আমতা করে বললো,
–“জ্ঞান হারাইনি, হ..হঠাৎ মাথাটা কেমন চক্কর দিয়ে উঠেছিলো আর কী!”
–“ও আচ্ছা। শুনো, ফ্রেশ হয়ে একটা সুন্দর শাড়ি পরিও। তোমার শ্বশুর এবং ফুপি শ্বাশুড়ি নিচে অবস্থান করছে!”
নিথি জড়তার সাথে শুধালো, “জ্বী!”
—————————–
রায়িনকে সিঁড়ি বেয়ে নামতে দেখে আঁচলের অংশ কাঁধ দিয়ে টেনে নিলেন জবেদা রহমান। চোখে তার মোটা ফ্রেমের চশমা। বয়সের ছাপ মুখশ্রীতে দৃশ্যমান৷ রায়িনের বাবা আরমান সাহেব ছেলের দিকে শক্ত চোখে তাকিয়ে আছেন। দৃষ্টিতে স্পষ্ট ক্রোধ প্রকাশ পাচ্ছে। রায়িন নামতেই তার ফুপিকে দেখতে পেলো। প্রথমে কী করবে তা উপলব্ধি করতে না পেরে সালাম জানালো। পাপাকে দেখতে পেয়ে ইচ্ছে করলো ফুপির পাশ কেটে চলে যেতে। কিন্তু সে ব্যর্থ হয় ফুপির অনুতাপসূচক চাহনি দেখে। জবেদা রহমান ভাঙ্গা গলায় সালামের উত্তর নিয়ে বলে,
–“দু’মিনিট সময় হবে এই অক্ষম মহিলার সাথে কথা বলার!”
রায়িনের যেন তীরের মতো কথাগুলো বললো। জবেদা রহমানের কন্ঠে স্পষ্ট বেদনা প্রকাশ পাচ্ছে। রায়িন নরম হলো। কন্ঠস্বর যথাসম্ভব শীতল করে বলে,
–“এভাবে বলে লজ্জা দিচ্ছো কেন ফুপি? আমি তোমার অপরিচিত কেউ নই!”
–“পূর্বে যা ভুল করেছি তাতে তোর থেকে ক্ষমা পাওয়ার জন্যে কাঁতরাচ্ছি রে বাবা! বারবার মনে হয় তোকে ভুল পথে ঠেলে দিয়েছি!”
রায়িন ঘাড় ডানে বামে কাত করে ব্যায়াম করলো। অতঃপর জবেদা রহমানের দিকে দুই ধাপ এগিয়ে বলে,
–“তুমি কোনো ভুল করোনি আর না আমি ভুল পথে হেঁটেছি। বরং তুমি আমার বাস্তবতা শিখিয়েছো। নয়তো আমি তো জানতামই না, সৌখিনতা ব্যতীত আলাদা একটা জীবন আছে। ভাগ্যিস জেদ ধরেছিলাম, নয়তো এই জীবনের আসল মূল্যটা বুঝতাম না।”
শেষোক্ত বাক্যটি বলে রায়িন চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। দু’জনের কথার মাঝে বাম হাত ঢোকায় আরমান সাহেব।
–“কী*সব ন’স্টালজিক নিয়ে কথা বলছো তোমরা? আর আপা, আপনি কবে এসব আধুনিকতা ছাড়লেন? কিসব ভুল শিক্ষা দিয়েছেন যার জন্যে আমার ছেলে থার্ডক্লাস টিউশনি আর এক সাধারণ মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে তুললো?”
জবেদা রহমান হাসলো।
–“তুই আর মানুষ হলি না রে আরমান। সেই যন্ত্র-ই থেকে গেলি। ছোট জিনিসের সুখ যে কতটা অমূল্য, সেটা তোর যান্ত্রিক মন বুঝলো না। আমি খুশি, যে আমার ভাইয়ের ছেলে কোনো যন্ত্রে পরিণত হয়নি৷ ভাগ্যিস সেদিন দু’চারটা কথা শুনিয়েছিলাম। আমার উচিত ছিলো এসব তোকেও শোনানো। তোকে শোনালে অন্তত কোনো যন্ত্রতে পরিণত হতি না!”
আরমান সাহেব যেন ধপ করে জ্বলে ওঠে। তিনি বসা ছেড়ে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে ক্রোধ মিশ্রিত কন্ঠে বললো,
–“বেশি বলে ফেলছো তুমি আপা! ও ভুল করেছে আর তুমি তাকে প্রশ্রয় দিচ্ছো? সাধারণ ঘরের মেয়ে কিনা এই সম্রাজ্যের রাণী হবে? তুমি আমাকে এই কঠিন বিষয়টি হজম করতে বলছো?”
–“খবরদার পাপা, মানুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার মতো অপরাধ করবে না!”
আরমান সাহেব তাচ্ছিল্যের সাথে বললো,
–“এদের মতো মেয়েকে আমার টাকা বিশ বা তার অধিক বার কিনতে পারি। কেন? আমার দেখা মেয়ে কী খারাপ ছিলো? যথেষ্ট মর্ডান এবং উচ্চশিক্ষিত!”
–“আমি ওকে ভালোবাসি তাই বিয়ে করেছি। আর ভালোবাসার কাছে তোমার থার্ডক্লাস রূপ, উচ্চশিক্ষা মূল্যহীন। ভালোবাসার মানে তুমি কী বুঝবে? তুমি তো বুঝো শুধু টাকা আর স্ট্যাটাস!”
রায়িন বাসাতেই আর থাকলো না। রেগে-মেগে নাস্তা না করেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো। ওদিকে নিথি সিঁড়িতে ঠায় দাঁড়িয়ে। চোখে-মুখে একরাশ বিষ্ময়। রায়িনের বলা বক্তব্য গুলো এখনো তার কানে পিয়ানোর মতোন বাজছে। সে কী ভুল শুনলো?
————————-
রায়িনের ফোনে একটার পর একটা কল আসছে। ফোনের স্ক্রিনে “মা” নিকনেমটি ভেসে উঠছে। একসময় রায়িন অতীষ্ঠ হয়ে কল রিসিভ করলো।
–“মা, প্লিজ বাবার টপিকে…”
রায়িন পুরো বাক্য শেষ করার পূর্বেই অপরপাশ থেকে নরম স্বরে কেউ বলে ওঠে,
–“আমি মা নই, নিথি৷”
রায়িন শান্ত হলো।
–“তোমার ফোন কই? এই ফোন দিয়ে কল দিকে যে?”
নিথি ইতস্ততায় জমে গেলো। আঁচলের ছোট পুঁতি খোঁচাতে খোঁচাতে আমতা আমতা করে বললো,
–“আসলে আমার ফোনটা বিয়ের দিন ভেঙ্গে গিয়েছে। তাই…”
–“কল কেন দিয়েছো?”
–“আপনি খাননি?”
–“ইচ্ছে নেই!”
–“আপনার মা যে বললো, আমি নাস্তা সময়মতো না খেলে অসুস্থ হয়ে পরেন?”
–“ওরকম কিছুই না!”
–“আন্টি চিন্তায় আছে, প্লিজ খেয়ে নিন।”
–“তোমায় মাথা ঘামাতে বলেছি?”
রায়িনের রাগাম্বিত কন্ঠে নিথি চুপসে গেলো। বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বললো,
–“আমি নাস্তা করিনি!”
–“কেন?”
–“আপনি খাননি, তাই!”
রায়িন যেন হঠাৎ বরফের ন্যায় গলে গেলো। এক অদ্ভুত শীতলতা খেলে গেল তার মস্তিষ্কে। এই বাক্যটিতে অদ্ভুত মায়া, ভালোবাসা, আকাঙ্খা মিশে আছে। এই যুগে কয়টা মেয়ে এতটা স্নিগ্ধ হতে পারে? সেখানে নিথির রায়িনের প্রতি চিন্তা, ভালোবাসা সম্পূর্ণ পবিত্র। রায়িন যদি নিথির দিকে আরেকটু মনোযোগ দিতো, তাহলে নিথিকে বুঝতে পারতো। রায়িনের চট করে মনে পরে গেলো নিথির চিঠিতে বলা “ভালোবাসি” শব্দটি! একই সাথে মনে পরলো রায়িনকে অসুন্দর, নিরামিষ বলা কথাগুলো।
–“হ্যালো? শুনতে পাচ্ছেন?”
রায়িন গলা খাঁকারি দিলো। অতঃপর মৃদ্যু স্বরে বলে,
–“ব্রেকফাস্ট অর্ডার করছি!”
বলেই রায়িন কল কেটে দিলো। নিথির আনন্দ হলো, খুব। একসময় তো এরকম এক সংসারের স্বপ্ন বুনেছে সে! সবটা এত সুন্দর ভাবে তার জীবনকে ধন্য করবে কে জানতো? নিথি মিষ্টি হেসে রায়ার রুমে চলে গেলো রায়াকে ঘুম থেকে ওঠাতে। অতঃপর দু’জন মিলেই ব্রেকফাস্ট করবে!
———————-
–“আপনি সত্যি আমাকে ভালোবাসেন?”
রায়িন চমকে নিথির দিকে তাকালো। নিথি তখন তার দেয়া দেনমোহর এবং উপহারস্বরূপ নতুন ফোনটায় নজর বুলাচ্ছে। কন্ঠস্বরও যেন শোনালো ভাবলেশহীন! রায়িন হাতার বোতাম খুলতে খুলতে বললো,
–“সকালের কথা শুনে নিয়েছো বুঝি? ফাইন, ব্যাপার না!”
বলেই রায়িন নিথির দু’পাশে হাত রেখে নিথির দিকে ঝুঁকে পরলো। নিথি চমকালো, ভড়কালো। বিষ্ময়ে সে মাথা পেছনের দিকে সরিয়ে ফেলেছে। রায়িনের অপ্রস্তুত কান্ড নিথির এক্সেপ্টেশনের বাহিরে ছিলো। বড়ো বড়ো চোখের রায়িনের রহস্যময় চোখজোড়ার দিকে তাকিয়ে আছে সে। মস্তিষ্ক মুহূর্তে-ই শূন্য হয়ে গেলো! যেন, উপস্থিত হতবুদ্ধি লোপ পেলো। রায়িন নিথির বিষ্ময়ে ভরা চোখ জোড়ার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর স্বরে বললো,
–“এক অসুন্দর, আনরোমান্টিক ছেলের কাছে ভালোবাসা কীভাবে এক্সেপ্ট করো তুমি?”
রায়িন সরে এলো। নিথি তখনো পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে বসে রইলো। কী করবে, কী করছে কিছুই তার মস্তিষ্কে ধরছে না। শ্বাস যেন গলাতেই আটকে আছে। রায়িন নিথির অবস্থা কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে টি-শার্ট, টাউজার নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে ফিরে দেখে নিথি রুমে নেই। অন্তরা রহমান ডিনারের জন্যে ডেকে পাঠালে কপালে পরে থাকা চুলগুলো হাতের সাহায্যে পেছনের দিকে নিয়ে রায়িন রুম থেকে বেরিয়ে পরে। রায়ার রুম অতিক্রম করতেই অট্টহাসির শব্দ পেলো। দরজা ছিলো সম্পূর্ণ খোলা, তাই রায়িনের নজর সরাসরি রুমে প্রবেশ করে। রায়া এবং নিথি বালিশ দিয়ে খেলছে। এই অসাধারণ দৃশ্যটি দেখে রায়িনের অভ্যন্তরে প্রশান্তি অনুভব হলো। ফিচেল হেসে রায়াকে উচ্চস্বরে বলতে বলতে সিঁড়ির দিকে পা বাড়ায়,
–“রায়া, দ্রুত খেতে আয়। তোর সাথে তোর পার্টনার্রকেও নিয়ে আসিস!”
পার্টনার কথাটি শুনে রায়া নিথিকে খোঁচালো!
–“ভাবী, ভাইয়া মেবি বলতে ভুল করেছে! যে তুমি আমার পার্টনার নও, ভাইয়ার!”
মুহূর্তে-ই নিথির মস্তিষ্কে কিছুক্ষণ পূর্বের ঘটনা তরঙ্গিত হলো। নিথি এবার লাল হয়ে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে বললো,
–“খেতে ডাকছে। চলো!”
ডাইনিং বিচরণ করছে কঠোর নিরবতা। আরমান সাহেব চেয়েও নিথির উদ্দেশ্যে কিছু বলতে পারছে না। সামনে যে তার বড়ো আপা বসে আছে। সে থাকতে কী করে নিথিকে কথা শুনাবে? জবেদা রহমান তো সাফ সাফ বলে দিয়েছেন, সে থাকতে নিথিকে যদি কোনোরকম কথা শোনায় তাহলে ছেলের বউয়ের সামনে আরমান সাহেবকে লজ্জিত করতে ভুলবে না। তাইতো আরমান সাহেব মান-সম্মান বাঁচানোর খাতিরে দমে আছেন। নয়তো নিথিকে সে একদমই সহ্য করতেন না। রায়িন তার পাপাকে দেখিয়ে খাবার টেবিলে নিথির খুব খাতির-যত্ন করলো। নিজে থেকে নিথির পাতে এটা ওটা তুলে দিয়েছে। রায়িনের কান্ডে অন্তরা রহমান, রায়া এবং জবেদা রহমান মিটমিটিয়ে হেসেছে। শুধু মুখে হাসি নেই আরমান সাহেবের। আজ হাসি তার সাথে কঠিন বেঈমানী করেছে যে!
নিথি সংকোচে পরে গেলো রায়িনের পাশে শোয়া নিয়ে। রায়িন তো বেশ আরামেই নিজ বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসে আছে। ফোনের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিথির দিকে তাকিয়ে বললো,
–“শুবে নাকি বেলকনিতে বিছানা পেতে দিবো?”
নিথি চোখ বড়ো বড়ো করে বললো,
–“বেলকনিতে কেন শুবো?”
–“তোমার হাবভাবে তো তেমনই মনে হচ্ছে। ভাব ধরছো এমন যেন আমি পরপুরুষ! আমার পাশে শুলে তোমার গায়ে ফো’স্কা পরবে!”
নিথির এবার যেন মাটি ফাঁক করে ভেতরে ঢুকে যেতে ইচ্ছা হলো। এভাবে বলে নাকি কেউ? প্রথম প্রথম শুতে বুঝি লজ্জা লাগে না!
–“এখনো সটান মেরে দাঁড়িয়ে আছো কেন? শুবে নাকি তোমায় টেনে-হিঁচড়ে বিছানায় ফেলবো? যতটা নিরামিষ ভাবো আমি ততোটাও নিরামিষ নই!”
এবার নিথি দাঁড়ানোর সাহস পেলো না। ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে রায়িনের পাশে গিয়ে শুলো। তবে বিছানার একদম কর্ণারে। রায়িন ল্যাম্প অফ করে নিথিকে হেঁচকা টানে মাঝামাঝিতে আনলো।
–“বিছানায় এত জায়গা থাকতে ওই কোণায় গেছো কী করতে? আমি তো জানি-ই তোমার ঘুমের স্টাইল ভালো না। বলা যায় না যে কোনো পরে নাক, কোমড় ফাটাতে পারো!”
নিথি চোখ বড়ো বড়ো করে বললো,
–“আপনি কী করে জানলেন?”
–“এর মানে আমার গেস সত্যি ছিলো?”
নিথি তার অবুঝের প্রশ্নে ভীষণরকম লজ্জিত হলো। আজ কী তার লজ্জা পাওয়ার দিন? এই গম্ভীর মানুষটা কেন তাকে পদে পদে লজ্জায় ফেলছে? বিয়ের আগের সব আজেবাজে ঘটনার প্রতিশোধ নিচ্ছে নাকি? কে জানে!
রায়িন নিথির থেকে দূরত্ব রেখেই শুয়েছে। এতেও নিথির অস্বস্তির শেষ নেই। নিথির ঘনঘন নিঃশ্বাস ত্যাগ করার অস্ফুট শব্দ নিস্তব্ধ রুমটায় শ্রবণ হচ্ছে। নিথি হলফ করে বলতে পারবে, আজ আর তার চোখে ঘুম ধরা দিবে না। অনেকসময় পর রায়িন কপালে হাত রেখে চোখ বুজে বলে ওঠে,
–“পাপা আমাকে আরেক জায়গায় বিয়ে দেয়ার জন্যে উঠে পরে লেগেছিলো, ইভেন তোমাকে নিয়েও পাপা অকারণে অসন্তুষ্ট। সে একদমই অবগত নয় বিয়ের ঘটনার ব্যাপারে। ওসব পাপার কানে গেলে কঠিন ঝড় উঠবে। ডিভোর্সের জন্যেই জোরাজোরি করবে যা আমার অপছন্দ। তাই সবটা মাটি চাপা দিতেই আমি সেই ভালোবাসার মিথ্যেটা বলেছি। যদিও এটা বড় অন্যায় তবে আমি ছিলাম উপায়হীন। এছাড়া পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতোন অন্য কোনো পথ খুঁজে পাইনি। আমার সময়ের প্রয়োজন। আর যাই হোক না কেন, আমার বিবাহিতা স্ত্রীর পবিত্র ভালোবাসার মর্যাদা আমি দিবো, সবসময়। তুমি এখন আমার হেফাজতে আছো, তোমার ভালো-মন্দ দেখা আমার দায়িত্ব!”
~চলবে, ইনশাল্লাহ।
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গঠনমূলক মন্তব্যের প্রত্যাশায় রইলাম।