হৃদপিন্ড পর্ব ৩৮

0
533

#হৃদপিন্ড
#জান্নাতুল নাঈমা
#পর্ব-৩৮

থানা থেকে ফোন এসেছে ইভান পালিয়েছে এবং সে কিছুদিন যাবৎ মারাত্মক অস্বাভাবিক আচরন করছে। যদিও এর আগে করেছে তবে সে নিজের সেন্সে ছিলো এটা বোঝা যেতো ইদানীং আর বোঝা যায় না যে হুঁশে আছে নাকি নেই।

দেয়ালে কামড় দেওয়া, নিজের শরীরে নিজেই কামড়ানো,নিজের চুল টেনে টেনে ছেঁড়া সহ তিনজন পুলিশকেও কামড়ে দিয়েছে।
দেয়ালে মাথা ঠুকতে ঠুকতে রক্তাক্ত করেছে অনেকবার। কোর্টে নিয়ে যাওয়ার দিনই সে পালিয়েছে পুলিশ ধাওয়া করেছে ঠিকি এক সময় জনবল বেড়ে যাওয়ায় সেই ভীরে আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায় নি।
দশজন পুলিশও তাঁর শক্তির সাথে পেরে ওঠতে পারে না। সবটা একরামুল চৌধুরী কে জানানো হলো।
বাড়ির সবার বুকের ভিতর টা আঁতকে ওঠলো।
সাজিয়া বেগম সব শুনে জ্ঞান হারালো।
ইয়াশফা রুম বন্ধ করে কেঁদে যাচ্ছে।
মুসকান ভয়ে দাদীকে জরিয়ে ধরেছে।
ইমন সবটা শুনে পকেটে এক হাত গুঁজে বাইরে চলে গেলো। তাঁর চলে যাওয়া দেখে মুসকানের বুকটা দ্বিগুণ ভাবে কেঁপে ওঠলো।
একরামুল চৌধুরী লোক লাগিয়ে দিলো ইভান কে খোঁজার জন্য।

প্রায় তিনটা বাজে মুসকান রান্নাঘরে কাজ করছিলো।ইয়াশফা বললো,,,

— এই যে দায়িত্ব বান ভাবী আমার আপনার ননদিনীর মাথাটা বেশ ধরেছে আদা চা খাওয়াবেন প্লিজ,,,

মুসকান মৃদু হেসে বললো,,,

— তুমি রুমে যাও আমি এখুনি নিয়ে আসছি।

— ওকে ডিয়ার,,,
,
ইয়াশফা সবে চোখ বুজেছে অমনি ধপাশ করে বেলকুনির দরজার দিক থেকে তাঁর রুমের মেঝেতে এসে পড়লো বাবড়িওয়ালা উষ্কখুষ্ক চুল ওয়ালা এক লোক।
মুখ তুলে ওঠতেই ইয়াশফার বুকের ভিতর টা মোচড় দিয়ে ওঠলো।
এ যে আর কেউ নয় তাঁরই বড় ভাই।
যাকে কিনা পৃথিবীর সব থেকে বেশী সম্মান করতো এবং বেশী ভালোবাসতো। যার সাথে তাঁর হাজারো সুখের স্মৃতি রয়েছে। যার বুকে রাতের পর রাত ঘুমিয়ে পার করেছে। যার স্নেহ ভরা ভালোবাসার কথা মনে পড়লে আজো বড় সুখ সুখ লাগে।
তাঁর ভাই দুনিয়ার সব লোকের কাছে খারাপ থাকলেও তাঁর চোখে বিন্দু পরিমান খারাপের আভাস ফোটায়নি কখনো।
ছোটবেলায় কেউ তাঁর সাথে ঝগরা করলে বা কেউ তাঁকে ব্যাথা দিলে তাঁর যে কি অবস্থা করতো কল্পনাও করা যায় না।
ক্লাস ফোরে যখন তাঁর ক্লাসমেট তাঁকে ধাক্কা দিয়ে বালুর ওপর ফেলে দিয়েছিলো আর এটা ইভান শুনেছিলো পরেরদিনই হকি স্টিক দিয়ে ঐ ছেলেটাকে এমন মার মেরেছিলো যে সাত দিন জ্বরে পড়ে ছিলো।
ইয়াশফার চোখ বেয়ে অঝড়ে পানি পড়তে লাগলো।
ব্রো বলেই কাছে যেতে নিয়েও থেমে গেলো।
যখন মনে পড়ে গেলো পরপর তিনজন লোক এসে কুকুড়ের মতো তাঁর শরীর খুবলে খাচ্ছিলো।
চতুর্থ লোকটা ছিলো তাঁর ভাই যে কিনা সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় তাঁর বোনকে বিছানায় ছটফট করতে দেখে চিৎকার করে ওঠে। আর ইয়াশফা তখন যেনো মরতে পারলেই শান্তি পেতো। ইভান নিজের গায়ের শার্ট খুলে বোনের নগ্ন শরীর ঢাকতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।
আর ইয়াশফা ইভানের দিকে স্থির দৃষ্টি তে চেয়ে থাকে।
দুনিয়াতে এর থেকে জঘন্য ঘটনা আর কি হতে পারে??

চমকে ওঠলো ইয়াশফা, ইভানের থেকে তিন হাত দূরে সরে গেলো। ঘৃনা হচ্ছে তাঁর ভীষণ ঘৃনা হচ্ছে।
চিৎকার দিয়ে মা ডাক দিতেই ইভান ইয়াশফার পা জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
ভয়ে কাঁপছে ইয়াশফা, ইভান পা ছেরে ইয়াশফাকে বুকে জরিয়ে নিলো আবার কপালে চুমু খেয়ে বললো,,,

— এই, এই তুই আমাকে মেরে ফেল মেরে ফেল আমাকে তুই। আমি খুব খারাপ,আমি খুব জঘন্য আমি আমার কলিজাকে শেষ করে দিয়েছি।
আমার বাঁচার অধিকার নেই বলেই ইয়াশফার হাত দুটো তাঁর গলায় চেপে ধরলো।

ইয়াশফা চিৎকার করছে,,,
মুসকানের হাত থেকে চায়ের কাপ পড়ে যেতেই ইভান,ইয়াশফা দুজনেই তাকালো। মুসকান কে দেখা মাএই ইভান ইয়াশফার হাত ছেড়ে দিয়ে এক লাফে মুসকানের সামনে চলে গেলো।

মুসকান ভয়ে এক ঢোক চিপে দৌড় দিতে নিতেই ইভান খপ করে ধরে ফেললো।

— তুই, রাক্ষসী। তোর জন্য, তোর জন্য আমার বোনের এতো বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।
তোর চালাকি সব তোর চালাকি। তুই ইচ্ছে করে আমার বোনকে পাঠিয়েছিস তোর জন্য সব হয়েছে আগে তোকে মারবো তারপর আমি মরবো। কলঙ্কিনী তুই তোর জন্য আমার কলিজা কুলসিত হয়েছে।
কি হতো সেদিন যদি তুই যেতি।

বলেই দুহাতে গলাটা শক্ত করে চেপে ধরলো।
মুসকান ছাড়াতে চেয়েও পারলো না।
ইভান তাঁর সর্বস্ব শক্তি দিয়ে গলা চিপে ধরেছে।
ইভানের চোখ দুটো দিয়ে যেনো রক্ত বের হবে।
মুখ দিয়ে যেনো অগ্নি বানী বের হচ্ছে।
তাঁর হাত থেকে যেনো মুসকানের আর রেহাই নেই।
সে যেনো প্রতিজ্ঞা করে এসেছে আজ মুসকানকে শেষ করেই ছাড়বে।
আজ কি তাহলে মরন হবে মুসকানের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ইমনের মুগ্ধময়ী ইমনের থেকে।
তাঁদের জীবনের অভিশপ্ত কালো ছায়ার থেকে কি তাঁরা রেহাই পাবে না??সব কি এভাবেই শেষ হয়ে যাবে। ইমনের সন্তানের মা হওয়া, মুসকানের সন্তানের বাবা হওয়া কি ওদের দুজনের হবে না।
চোখ বেয়ে পানি ঝড়তে শুরু করলো।
চোখ দিয়ে, হাত দিয়ে আকুতি করতে লাগলো,,,
একটা বার ছেড়ে দিন আমি আমার ওনাকে শুধু একটা বার ডাকবো,,,
কিন্তু তা যে আর হলো না সে যে ছাড়া পেলো না।
বুকের ভিতরটা হাহাকার করে ডাকতে লাগলো ইমনকে।

একসময় কেশে ওঠলো মুসকান।
প্রানটা বুঝি এই বেরিয়ে যাবে। চোখ দুটো অন্ধকার হয়ে এলো, ঝাপসা চোখে শুধু ইমনের মুখটা ভেসে ওঠলো,ইমনের করা সব আদর, ভালোবাসা স্বরন করতে লাগলো।
মৃত্যু পথে একটা পাখি যেমন ছটফট করতে থাকে তেমনি করছে মুসকান। চোখ বন্ধ হবে হবে ভাব।

ইয়াশফা ভয়ে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়লো।
ভয়ে কাঁপছে সে মুসকানের অবস্থা দেখে নিজেই ইভানকে ছাড়াতে গেলো কিন্তু না ইভান এক ঝটকায় তাঁকে মেঝেতে ফেলে দিলো।

নিপ্রা নিচ থেকে দেখা মাএই চিল্লিয়ে সবাইকে ডাকতে লাগলো বাড়ির সকলে ছুটে গেলো।
ইভান কে দেখে সকলেই চমকে ওঠলো।
নিলয়, নদী ইভানকে ছাড়াতে চেষ্টা করলো।
না পারলো না ইভানের উপর যেনো দশটা পুরুষের শক্তি এসে ভর করেছে।

এমন সময় কেউ এসে একটানে ইভানকে সরিয়ে নাক বরাবর এক ঘুষি দিলো যার ফলে ইভান ছিটকে পড়লো মেঝেতে এবং আশ্চর্যজনক ভাবে জ্ঞান হারালো। এতোক্ষন যার মাঝে দশটা পুরুষের শক্তি এসে ভর করেছিলো সে এক ঘুষিতেই জ্ঞান হারায় কিভাবে।

সবাই ভয়ার্ত চোখে তাকালো ইমনের দিকে।
ইমন বাঘের মতো গর্জন করে ওঠলো তোর সাহস কি করে হয় ওর গায়ে হাত দেওয়ার বলতেই মুসকান ঢলে পড়লো ইমনের বুকে।
ইমন জোরে এক চিৎকার দিলো মুসকান বলে।

অভ্র একরামুল কে ফোন করতেই একরামুল চলে এলো পুলিশ নিয়ে।
কিন্তু ইভান, মুসকান দুজনের অবস্থাই বেশ খারাপ তাই দুজনকেই হসপিটালাইজেশন করা হলো।

ইয়াশফা নদীকে জরিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে চলেছে।
ইমনের পুরো শরীর রাগে কাঁপছে,,,
এই মূহুর্তে ইভানকে খুন করতে পারলে তাঁর আত্মা টা শান্ত হতো।

একজন ডক্টর আসতেই ইমন ছুটে গেলো।

— ডক্টর মুসকান ঠিক আছে?? ওর কিছু হয়নি তাইনা আমি জানতাম ওর কিছু হবে না।

— মি.চৌধুরী শান্ত হন। আপনার স্ত্রীর ট্রিটমেন্ট চলছে। আশা করছি অতিদ্রুতই ওনার অবস্থার উন্নতি ঘটবে। ঠিক সময় আনা হয়েছিলো নয়তো শ্বাস আটকে মৃত্যু ঘটতো ঠিক সময় অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে।

ইমনের চোখ দুটো রক্ত বর্ন ধারন করলো।
চিৎকার করে বলে ওঠলো,,,
— এই ডাক্তার,,, মুখ সামলে কথা বল।
আমার মুসকানের কিছু হবে না, কিছু হবে না।

একরামুল চৌধুরী এসে বললো,,,

— ইমন বিহেইভ ইউর সেল্ফ। এটা হসপিটাল আর ওনি একজন ডক্টর ওনি না থাকলে সত্যি মুসকানের মৃত্যু ঘটতো।

ইমন চমকে ওঠলো ডক্টরের কলার ছেড়ে বাবার দিকে চেয়ে বললো,,,

— ব্যাস।

কেবিনের সামনের বেঞ্চে গিয়ে বসলো ইমন।

ডক্টর বললেন,,,

— মি. চৌধুরী আমি আপনার ছোট ছেলের বিষয়ে বলতে এসেছিলাম।

একরামুল চৌধুরী বেশ লজ্জিত হয়ে বললেন,,,

— সরি ডক্টর আইম এক্সট্রেমলি সরি।
আসলে ইমন অমনটা নয়,,, ওর স্ত্রীর এই অবস্থায় ওর মানসিক অবস্থার ঠিক নেই। প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড।

— ইটস ওকে আমি ওনার সম্পর্কে বেশ ভালোই জানি। কাজের কথায় আসা যাক,,,
দেখুন আপনার ছোট ছেলের মানসিক অবস্থা বেশ বিপর্যয়ে আছে। আই মিন আপনার ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছে এই অবস্থায় নিজের ক্ষতি বা অন্যের ক্ষতি করতে দুবারও ভাববে না।
আমার মনে হয় আপনার ছোট ছেলেকে চিকিৎসাধীন রাখা উচিত আই মিন মেন্টাল হসপিটালে নেওয়া উচিত।

একরামুল চৌধুরী মুখটা মলিন করে বললেন
— তাঁর কোন প্রয়োজন নেই কারাগারে বন্দি থাকলেই পাগলামো ছেড়ে যাবে।

— মি. চৌধুরী মানসিক শাস্তির থেকে বড় শাস্তি আর কি হতে পারে। আপনাদের পরিবারের সব খবড় ই সবার জানা। আর আপনাদের মতো পরিবারের ছেলে এমন হওয়া সত্যি দুঃখজনক।
আপনার ছেলে হয়তো এতোটাও খারাপ ছিলো না।
আপনাদের আদর্শের ছোঁয়া পেলেও ওর সঙ্গ খারাপ ছিলো যা আপনারা খেয়াল রাখেন নি বা সঠিক সময় সঠিক শাসন করেননি।
আর যে ঘটনা ঘটেছে তাঁর আসল কালপ্রিট নিজেই নিজেকে সাজা দিয়েছে যার প্ররোচনায় আপনার ছেলে উচ্ছন্নে গিয়েছে তাঁর শাস্তি হয়েছে।
যারা যুক্ত ছিলো সকলেরই শাস্তি হয়েছে ইভেন চরম শাস্তি টা আপনার ছেলেই পেয়েছে।
মানসিক ট্রমা থেকে কোনদিন বের হবে কিনা জানিনা। তাই ওকে ট্রিটমেন্ট করুন নয়তো সবার জীবন আরো বিষিয়ে তুলবে। একজন মানসিক রোগি যখন ক্ষ্যাপা টাইপের হয় তখন তাঁর গায়ের জোর স্বাভাবিকের তুলনায় চারগুন বেড়ে যায়।
এমন মানুষের সাথে সাধারণ মানুষ পেরে ওঠবে না।
ওর জন্য না হলেও নিজেদের সেফটির জন্য ওনাকে মানসিক হসপিটালে পাঠান নয়তো আজ যে ঘটনা ঘটেছে এর রিটার্ন যে হবে না তাঁর গ্যারান্টি পুলিশ বা ডক্টর দিতে পারবে না।
এই অবস্থায় জেলেও রাখবে না আমি একজন ডক্টর হিসেবে যা ভালো হয় তাই বললাম। বাকিটা আপনাদের ইচ্ছে।

ডক্টরের সব কথা শুনা মাএই সাজিয়া বেগম কয়েক পা পিছিয়ে গেলেন। বুকটা হুহু করে ওঠলো তাঁর।
কান্নায় ভেঙে পড়লো সে।

ইভান,,, ইভান পাগল হয়ে গেছে পাগল হয়ে গেছে ইভান বলেই ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো।
দাদী গিয়ে সাজিয়ার কাঁধে হাত রেখে বললো,,,
শান্ত হও বউ শান্ত হও।
কষ্ট কি আমাদের হয় না আমাদের ও হয় কিন্তু আমাদের যে কিছু করার নেই।
ইভান নিজেকে কিভাবে ঠিক রাখবে বউ কিভাবে??
ওর ভিতর যে একটা ভালো মানুষও রয়েছে,
ওর শরীরে চৌধুরী বংশের রক্ত রয়েছে যে।
শয়তানী, ইবলিশদের প্ররোচনায় খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে যখন নিজের কাছের মানুষ কে আঘাত করে ফেলেছে তখনি ওর ভিতর থেকে খারাপ মানুষ টা নিঃশেষ হয়ে গেছে।
নিজের বোনের সাথে হওয়া জঘন্য অন্যায়টা মেনে নিতে পারেনি বলেই মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে ভুগতে ভারসাম্য হীন হয়ে গেছে।
পাগলরা যে সব পারে কোন কিছুতে ওদের ভয় থাকে না তাই তো এতোকিছুর পরও মুসকান এর ওপর হাত তুলেছে আবার।

” মানসিক ভারসাম্য হীন মানুষের জীবনে কিছু বিষাক্ত অতীত লুকিয়ে থাকে ”
“বিষাক্ত অতীত গুলো পরিত্যক্ত করতে না পারায় একজন মানুষ মানসিক ভাবে ভারসাম্য হীন হয়ে যায় ”
“যে অতীতের বিষাক্ততা নির্মম ভাবে গ্রাস করার ফলস্বরূপ তাঁরা হয়ে যায় ভারসাম্যহীন বাকরুদ্ধ”

“যে অতীত টা হয়ে থাকে নির্মমতায় ঘেরা ”
ওর জীবনের অতীতটাও নির্মমতায় ঘেরা
শুধু নির্মমতা নয় অভিশপ্ত একটা অতীত রয়েছে ওর।
আর এই অভিশাপটা বয়ে শুধু ও আনেনি।
এনেছে ওর কাছের মানুষ রাই।
সাজিয়া বেগম চুপ হয়ে গেলো।
মা হিসেবে নিজের প্রতি চরম ঘৃনা হচ্ছে তাঁর ।
,

নিভু নিভু চোখে মুসকান তাকালো।
মুখে অক্সিজেন মাস্ক পড়ানো আশে পাশে চেয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে ছটফট করতে লাগলো।
নার্স এসে এমন অবস্থা দেখে ডক্টর কে ডাকলো।
ডক্টর এসে চেক করতে নিতেই মুসকান বড় বড় করে চেয়ে হাত পা ছুটাছুটি করতে শুরু করলো।
কিছু বলতে চাইছে বুঝতে পেরে ডক্টর গিয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে বললো,,,

— মিসেস চৌধুরী বলুন কি বলবেন,,,

মুসকানের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে,,,
হাঁপানো স্বরে বললো,,,

— ওনি কোথায়,,,ওনাকে ডাকুন।

ডক্টর সাথে সাথে অক্সিজেন মাস্ক পড়িয়ে নার্স কে বললেন,,,

— ওনার পরিবারের মধ্যে ওনার সব থেকে কাছের মানুষ কে ডেকে আনুন। ওনি কার কথা বলেছে আমরা জানি না তাই এটাই বলুন গিয়ে।

নার্সের মুখে সবটা শুনামাএই ইমন ঝড়ের বেগে কেবিনে ঢুকে ছুটে গিয়ে মুসকানের হাত চেপে ধরলো।

— মুসকান,,,
কি হয়েছে?? এই তো আমি এই যে দেখো আমি এসে গেছি। কিছু হবে না কেউ তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। লুক এট মি মুসকান,,, লুক এট মি বলেই চিৎকার দিলো ইমন।

মুসকান জোরে এক শ্বাস টেনে ইমনের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো।

ইমনের দু চোখ বেয়ে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।

ডক্টর এই দৃশ্য দেখে বিস্ময় চোখে তাকালো।
নার্স সহ বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে,,,

চলবে…..

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here