ভালবাসা মানে নীল প্রজাপতি পর্ব ২

0
315

ভালবাসা মানে নীল প্রজাপতি
Part : 2
Write : Sabbir Ahmed
______________________________
-ওহ ম ম ম মানে মনে মনে চাঁদ এঁকেছি(আদনান)
-এই সত্যি বলো তো তুমি কোথায়?(ঐশী)
-বললাম তো তোমার পাশে দাড়িয়ে..(আদনান বানিয়ে কথা বলায় ভয়ে একদম ঘেমে গেছে, সে ছাদে উঠে খেয়ালই করেনি যে আকাশে চাঁদ ছিলো কি না)
,,
দুজন অনেকটা সময় কথা বলল তারপর ঘুম।
পরদিন সকাল বেলা…
-এই ছেলে এই এদিকে আসো (বাড়িওয়ালা। আদনান যানে না এটাই বাড়িওয়ালা)
-জ্বি আংকেল বলেন (আদনান)
-তুমি নতুন
-না পুরাতন
-আরে এই বিল্ডিং এ নতুন??
-জ্বি আংকেল
-আমি এই বাসার মালিক
-জ্বি আংকেল আসসালামু আলাইকুম
-ওয়াআলাই কুমুসসালাম। বাবাজি একটা কথা বলি আমি বাড়ির মালিক জানার পর সালাম দিলা, সালাম টা আগে দিলা না কেন?
-ইয়ে মানে আংকেল
-বুচ্ছি আজ কালকার পোলাপান এর মধ্যে আদব কায়দা কিচ্ছু নাই, বাবাজি তুমি তোমার কাজে যাও দোষ তোমার না দোষ এই জেনারেশন এর
-…(আদনান আর কথা বাড়ালো না সালাম দিয়ে চলে আসলো)
,,
সেদি অফিস থেকে ফিরে রাতে ঐশীর সাথে কথা বলছিলো আদনান। ঐশী আজ বায়না ধরেছে দুজন দেখা করবে। ঐশী আদনান কে একটা রেস্টুরেন্ট এর কথা বলে আর এটাও বলে যে তার সাথে কিছু বান্ধবী থাকবে।
,,
আদনান রাজি হয়। আদনান এর টেনশন বেড়ে গেছে, কারন এটাই প্রথম দেখা ঐশী তাকে দেখে পছন্দ করবে কি না। এসব চিন্তা ঘুর ঘুর করতে করতে সেই সময় টা এসে যায়।
,,
আদনান বলেছিলো বিকেলে দেখা করবে। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে সে চলল ঐশীর সাথে দেখা করতে। ঐশীর বলা সেই রেস্টুরেন্টে আদনান ঢুকলো। আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো অনেকেই থাকায় ঐশীকে কল করলো…
-কই তুমি? (আদনান)
-তুমি কোথায় সেটা বলো (ঐশী)
-আমি রেস্টুরেন্ট এর ভেতরে
-চলে আসছো তাহলে! বাম দিকে একটা টেবিলে আমরা চারজন বসে আছি
-…(আদনান বাম দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলো)
-পেয়েছো?
-হ্যা
,,
ঐশী কল টা কেটে দিলো। আদনান টেবিল এর কাছাকাছি যেতেই দেখলো বাড়িওয়ালার মেয়ে রাত্রি। রাত্রিও দেখলো এটা তাদের নতুন ভাড়াটিয়া..
-আরে তুই এখানে কি করিস?(রাত্রি)
-আমি তো আমি.. (আদনান)
-আমি তো কি?? এইখানে কি?
-এখানে ঐশী কে?(আদনান)
-আমি (রাত্রি)
,,
রাত্রির কথা শুনে আদনান এর গলা শুকিয়ে গেলো। সেই শুকনো গলা নিয়ে বলল
-আমি আদনান (আদনান বলল)
-কিহহহহহহহহহহ (ঐশী ধপাস করে ছোপায় বসে পড়লো)
-এ তো দেখছি কাউয়া কাদের + একটু বেটে (রাত্রির বান্ধবী গুলো)
,,
কয়েকজন মিলে নানান কথা বলছে। আদনান এগুলো আগে থেকেই ভাবছিলো দেখার পর এরকম কিছু হতে পারে। আদনান ও অবাক সে বাড়িওয়ালার মেয়ে যে ঐশী সেটা সে বুঝতে পারে নি।
,,
রাত্রি বসা থেকে উঠেই আদনান এর গালে কয়েকটা চর বসিয়ে দিলো।
-চিটার, তুই আমার সাথে চিটারি করেছিস, তোর মুখ থেকে একটা কথাও আমি শুনতে চাই। তুই বলসি তুই নায়কের মতো দেখতে তাই না তোকে তো রাস্তার মেয়েও পছন্দ করবে না (রাত্রি রেগে আর কিছুক্ষণ কথা শোনালো। কয়েকবার মারার জন্য হাত ও চালিয়েছিলো পরে বান্ধবীরা তাকে আটকিয়ে দেয়)
-সরি (আদনান)
-আরে রাখ তোর সরি যা এখান থেকে
-..(আদনান চলে গেলো)
-দোস্ত মনে হচ্ছে ছেলেটাকে তুই আগে কোথাও দেখেছিলি?
-আমার বাসার ও নতুন ভাড়াটিয়া (রাত্রি)
-দোস্ত তাহলে তো তোর বাঁশ এখন কি হবে?
-আরে কিচ্ছু হবে না সবকিছু তাড়াতাড়ি বুঝতে পেরেই ওকে এত অপমান করলাম, আমার পিছু যাতে না লাগে
-লোকটা মিথ্যাবাদীও বটে
-হুমম
,,
আদনান কখনো বলেনি সে নায়ক এট মতো দেখতে অনেক স্মার্ট এসব কিচ্ছু বলে নি। তবুও এসব কথা বলে রাত্রি তাকে অপমান করলো যাতে রাত্রির মান সম্মান তার বন্ধুদের কাছে না কমে। নিজেকে ঠিক রেখে আদনান কে বেঈমান বানিয়ে সবার কাছে ছোট করলো।
,,
আদনান বাসায় চলে আসে। সে ভাবছে..
-নাহহ দেখা করাটা ঠিক হয়নি শুধু শুধু সবার কাছে ও ছোট হলো। আমি তো বুঝতেই পারি নি আমার পাখিটা এত সুন্দর। কিন্তু সে আমাকে বলেছিলো আমি যেমনই দেখতে হই না কেনো সে আমাকে পছন্দ করবে আমাকে ভালবাসবে। ছোট মানুষ তো হয়তো আবেগে বলেছে… (একা একা কথা বলতে বলতেই কান্না করে ফেলে)
,,
এদিকে রাত্রি তো ভয়ে শেষ। সবকিছু যে এতদিন সে মজা ভেবে নিয়েছে। সে ভয় করছে আদনান যেন সব তার বাবাকে বলে না দেয়।
,,
রাতে খাওয়ার পর কি ভেবে আদনান রাত্রি কে কল করলো। বার বার ব্যস্ত দেখাচ্ছিলো তার মানে নাম্বার ব্লক করেছে। এফ বিতে ঢুকে দেখে সেখানেও ব্লক।
,,
পরেরদিন আদনান রাত্রিকে খোঁজার চেষ্টা করে কিন্তু পায় না। আদনান চাচ্ছে একটু কথা বলতে, কিন্তু রাত্রিকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না।
,,
একদিন ছুটির দিনে,
আদনান ঘুম থেকে উঠেই সোজা ছাদে চলে গেলো। আরে সেখানে পেয়ে যায় রাত্রি কে। রাত্রি আদনান কে দেখে চলে যাচ্ছিলো, আদনান ডেকে বলল..
-একটু শুনুন কথা আছে (আদনান)
-কি বলবেন বলেন (রাত্রি অন্যদিকে মুখ ঘুড়িয়ে তাকিয়ে আছে)
-আপনি বলেছিলেন আমি যেমনই হই আমাকে ভালবাসবেন
-এই এই তুই বেশি কথা বলবি না
-রেগে যাবেন না শুনুন আমি আপনাকে ভালবাসতে বলছি না শুধু একটা জিনিস জানতে চাইবো
-কি?
-..(আদনান আমতা আমতা করছে)
-কি হলো?
-আমাকে এড়িয়ে চলবেন না,
-..(রাত্রি চোখ রাঙালো)
-না না আপনাকে ভালবাসতে বলছি না
-হ্যা হ্যা বুঝেছি
-আপনি ছাদ থেকে চলে যাবেন না আপনি থাকেন
-আমি এখন এমনিতেই চলে যেতাম। আর কখন থাকবো না থাকবো আমার ব্যাপার
-হুমমম আপনাদের ছাদ টা অনেক সুন্দর
-টাকা খরচা করে বানিয়েছে
-আচ্ছা ফোনে তো আপনি এভাবে কথা বলতেন না এখন এভাবে বলছেন কেনো?
-আপনাকে কৈফিয়ত দিতে হবে?
-না তা দিবেন কেনো?
-আসলে বান্ধবীরাই ঠিক বলেছিলো আপনি একটা.
-কি?
-কাউয়া কাদের
-আপনি কি হুমম?
-আমি তো দেখতে ভালো আপনার মতো কালো বেটে না
-আরে আপা আপনি তো ধলা কাদের, সরি কাদের বলছি কেনো আপনি ধলা সখিনা
-কিহহ তুই আমাকে সখিনা বললি তোর সাহস তো কম না
-আপনি বলতে পারলে আমি পারবো না কেন? ভাবছিলাম কিছু বললে আমি তার জবাব দিবো না। কিন্তু নাহ নিয়ত পালটিয়ে ফেললাম জবাব তো দিবোই উল্টো আপনাকে জ্বালাবো আমার সাথে বেঈমানি করার কঠিন প্রতিশোধ নিবো
-…(রাত্রি ভয়ে শেষ)
,,
আদনান কাছে গিয়ে বলল
-ভয় পেয়ে গেলেন! আমি তো মুভির ডায়লগ বললাম (আদনান)
-কুত্তা (রাত্রি বিড় বিড় করে বলল)
-শুনেছি কুত্তা বলেছেন, এটা মেয়ে মানুষ বলেই থাকে। মেয়েদের জিভ পাতলা হয়।
হিতাহিত জ্ঞান বুদ্ধি থাকে না। এরা না বুঝে অনেক কিছুই করে বসে
-এই এই আর একটা কথা না (রাত্রি আদনান এর কলার ধরে বলল)
-ওরে বাবা চাঁদাবাজ নাকি আপনি?
-আবার উল্টা পাল্টা বলিস
-যাই বলি তোমাকে আমি ছাড়ছি না যেখানেই যাবে শুধু আমাকে দেখবে। ভাবছিলাম কাছাকাছি থাকবো না, কিন্তু না এখন থেকে আঠার মতো লেগে থাকবো
-তোকে যেন আমার আশে পাশে না দেখি
-ওকে আশে পাশে থাকবো না সামনা সামনি থাকবো। তুমি বাইরে গেলে আমি তোমার সাথে যাবো, তুমি ভার্সিটি তে গেলে তোমার সাথে যাবো, তুমি কোথাও ঘুরতে গেলে তোমার সাথে যাবো এমনকি তুমি বাথরুমে গেলে…
-বদমাইশ তোকে আমি..
-এই তোমরা ওখানে কি করছো?.. (রাত্রির বাবা)
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
চলবে
#SSSS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here