ব্লাক ডেভিল,( পর্ব-৩ )

0
815

ব্লাক ডেভিল,( পর্ব-৩ )
লেখক- Riaz Raj

ডঃজাহিদ এর লোকরা নিজেদের গাড়িতে উঠায় তাদের। এখন তারা যাবে সব চেয়ে ভয়ংকর দ্বীপে।যার নাম এখানকার মানুষ দিয়েছে Terrible island ( ভয়ংকর দ্বীপ) । সেখানে যারা গিয়েছে,কেও নাকি জীবিত ফিরে আসেনি। রিয়াজ ভাবছে,দেহে দানবীয় সত্বা আর ভ্যাম্পায়ার সত্বা নিয়ে মিশন কমপ্লিট করতে পারবে তো? ৬ জন এজেন্টকে তো বাচাতেই হবে।কে জানে,তারা এখনো জীবিত আছে কিনা। আর এই ব্লাক ডেভিলকে তো বের করতেই হবে।কিন্তু সে কে? নামটা ছাড়া আজ অব্দি তার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কে হতে পারে সে?

এদিকে ব্রাউনেল লুচি সুমাকে বশীভূত করে নেয়। সুমাকে জাগিয়ে তোলেন তিনি। জাগ্রত সুমা আগের মতো ব্যবহার করছেনা। সাধারণ একটা মেয়ের মতো তাকিয়ে আছে। ব্রাউনেল সুমাকে শুধু বশীভূত করেনি। এক্সট্রা পাওয়ার দিয়েছে। দেহের বিভিন্ন অংশে রোবটিক্স যন্ত্র বসান। ব্রাউনেল লুচি সুমার সামনে একটা শক্তিশালী রোবট উপস্থিত করায়।সুমাকে পরিক্ষা করার জন্য ব্রাউনেল লুচি বলল,” তোমার সামনে যে রোবট দেখতে পাচ্ছো, সে তোমার শত্রু। শেষ করে দাও এই যান্ত্রীয় রোবটকে”। ব্রাউনেল লুচিকে অবাক করে দিয়ে সুমা সিট থেকে হুট করে উঠে দাঁড়ায়। হাতের পাওয়ার দিয়ে সুমা রোবটের দিকে ফায়ার বুলেট ছুড়ে মারে। ফায়ার বুলেট রোবটের দেহে প্রবেশ করার আগেই সুমা বাতাসের গাতিতে রোবটের সামনে যায়। আর রোবটের বুকে সজোরে আঘাত করে সকল যন্ত্র নষ্ট করে ফেলে। যন্ত্র ডেমেজ করে আবার সুমা তার জায়গায় ফিরে যায়। এইটা অনেকটা অকল্পিত ঘটনা। ফায়ার বুলেট রোবটের বডিতে পোঁছাতে ১ সেকেন্ড সময় নেয়।আর এই ১ সেকেন্ড এর মধ্যে অর্থাৎ ০.৭০ সেকেন্ড এর মধ্যে সুমা রোবটকে আঘাত করে নিজ অবস্থানে ফিরে আসে।ফায়ার বুলেট রোবটের দেহে স্পর্শ হওয়া মাত্রই একটা বিস্ফারণ ঘটে। বড়সড় একটা শব্দে পুরো ল্যাব কেপে উঠে। ব্রাউনেল সুমার পাশেই ছিলো। বিস্ফোরণ এর প্রভাবে ব্রাউনেল লুচি ছিটকে পড়ে দেওয়ালের সাথে। ধোয়ায় তার মুখ কালি মাখানো হয়ে গেছে। পুরো ল্যাবের যন্ত্রপাতি উলটপালট হতে সময় নেয়নি। ৩ সেকেন্ডেই সব ঘটে গেছে। ব্রাউনেল ছিটকে দেওয়ালের সাথে মিশে আছে। উনার উপর ভারি যন্ত্রের ভাঙ্গা অংশ পড়ে আছে।পুরো রুম ঘোর অন্ধকার হয়ে গেছে। ব্রাউনেল ফ্লোর থেকে ধীরে ধীরে উঠতে শুরু করে। অন্ধকারে কিছুই দেখা যায়না। উঠার সময় উনার উপর থাকা যন্ত্র গুলোর নাড়াচাড়ার শব্দ প্রতিধ্বনি হচ্ছে পুরো রুমে। ব্রাউনেল লুচি হাত চালিয়ে রুমে টর্চ লাইট খুজছে। এতো অন্ধকারে তা উনার দ্বারা অসম্ভব। ঘোলাটে অন্ধকার রুম ধীরে ধীরে পরিষ্কার হতে লাগলো। ব্রাউনেল লুচি সুমাকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে ধীরে ধীরে। লাল চোখ নিয়ে সুমা মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে। এক ফোটাও ক্ষতি হয়নি তার। ব্রাউনেলের মুখে সফলতার হাসি ফুটে উঠে। উনি বশীভূত করতে গিয়ে একটা সুপার পাওয়ার অর্জিত মানব তৈরি করে ফেলেছে।

এদিকে রনি আর রিয়াজ এসে পৌঁছায় ভয়ংকর দ্বীপে। শুনশান পরিবেশ। তার উপর এক মায়াবী যাদু যেনো মিশ্রিত আছে এই দ্বীপে । সন্ধ্যা হয়ে গেছে। সূর্য ঢুবে যাচ্ছে গাছের আড়াল দিয়ে। গরম আর ঠান্ডা একটা আবহাওয়া তাদের শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছে। রনি বলল,
– এখন কোথায় যাবেন মিষ্টার রিয়াজ সাহেব।
– এক মনে হেটে চলুন। সামনে কিছুনা কিছু পড়বেই?
– যদি না পড়ে?
– এই দ্বীপেই আমাদের ৬ জন এজেন্ট আটক আছে। তারা যেনো পালিয়ে না যায়,তার জন্য নিশ্চয় সিকিউরিটি রাখা আছে। সেই একটা সিকিউরিটি যদি আমাদের সামনে পড়ে যায়। তবে আমরা একটা ক্লু পাবো।অর্থাৎ বালুকণা একটা একটা করে বালির পাহাড় তৈরি হয়। আর এখানেও একটা সিকিউরিটি দ্বারা বাকিদের কাছে চলে যেতে পারবো।
– আপনি যা ভালো বুঝেন। চলুন।কি আর করার।

রিয়াজ ও রনি হেটে চলছে দ্বীপ বেয়ে জঙ্গলে।উঁচু উঁচু পাহাড়ের সারি হেলে আছে। অন্ধকারে মনে হয় ইয়া বড় কিছু দানব দাঁড়িয়ে আছে। রিয়াজ আরেকটু সামনে গিয়ে রনিকে বলল,
– দাড়ান। দেখেন দূরের ঐ পাহাড়ের দিক থেকে একটা আলো আসতেছে না?
– হুম।
– আমি শিওর, ওখানেই আমাদের ৬ জন এজেন্ট আর ব্লাক ডেভিল আছে। চলুন প্রবেশ করা যাক।
– কিন্তু পাহাড় তো এখানে দুইটা। এই পাহাড় থেকে ওই পাহাড়ে যেতে হলে নিছে নামতে হবে। কিভাবে যাবো।
– কেনো,পারবেন না?
– রাতের বেলা মোটামুটি আমি সব দেখতে পাচ্ছি। ঝরনার পানির স্রোত যে দুই পাহাড়ের মাঝ দিয়ে যাচ্ছে,এইটা কি আপনি দেখেন না? এখান থেকে পড়লে এই জীবন আর আস্ত থাকবে?
– হাহাহা

অতএব রনি রিয়াজের পিঠে চড়ে বসে। রিয়াজ এখন লাফ দিবে। এই পাহাড় থেকে ওই পাহাড়ে। রনি বার বার রিকুয়েস্ট করে যাচ্ছে। রিয়াজ ওর কথায় কান না দিয়ে দানব সত্বায় পরিণত হয়। রনি লাফ দেওয়ার আগেই চিৎকার দিতে লাগলো। রিয়াজ গর্জন ছেড়ে এক লাফ দেয় অপর পাশের পাহাড়ে। রনি স্লো মোশনে দেখতে পাচ্ছে। রিয়াজের দেহে দানবীয় লোম গুলো উড়ছে। পায়ের নিছে ইয়া বড় গর্ত দেখা যাচ্ছে। রনির নিজের গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায় ভয়ে। রিয়াজ দানবীয় সত্বা নিয়ে ওপাড়ে পৌঁছাবে, ঠিক তখনি,
একটা ফায়ার বুলেট এসে রিয়াজের বুকে পড়ে। ছুতে পারেনি ওপাড়ের কূল। উল্টো হয়ে গর্তের ভিতর,অর্থাৎ দুই পাহাড়ের চিপায় পড়ে যেতে লাগলো,রিয়াজের দানবীয় সত্বা আর রনি।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here