কাঠগোলাপের সুবাস পর্ব ৬

1
1566

“সতীন” নতুন নাম
“কাঠগোলাপের সুবাস”

৬.
আরো দুইমাস পেরিয়েছে। সাদ একটা গিফট বাক্স এগিয়ে দিলো খাদিজার দিকে। খাদিজা সেটা হাতে নিয়ে খুশি হয়ে খুললো। গিফটটা দেখেই ভীষণ লজ্জা পেলো। সাদ মুচকি হেসে বললো,

— “পছন্দ হয়েছে?”
— “হুম। কালারটা খুব সুন্দর।”
— “হাহা..। আমার পছন্দ সুন্দর সেটা বলো।”
— “হুম.. কচু।”
— “আচ্ছা আমি আসছি।”
— “কোথায় যাচ্ছো?”
— “তোমারটা তো তোমায় দিলাম। হুমায়রারটা ওকে দিয়ে আসি। মেয়েটাকে এখনো পর্যন্ত ভালো কিছু দেয়া হয়নি।”

সাদ উঠে দাঁড়ায়। দুই কদম গিয়ে আবার ফিরে আসে। খাদিজার দিকে তাকিয়ে বললো,

— “হুমায়রাকে মেনে নিতে সমস্যা কোথায়?”
খাদিজা মুখ ঘুড়িয়ে নিয়ে বললো,
— “কোনো নারী তার স্বামীর ভাগ অন্য নারীকে দিতে পারে না।”
— “হুমায়রা কি তার স্বামীর ভাগ তোমাকে দেয়নি?”

খাদিজা সাদের দিকে তাকালো। চোখে পানি চিকচিক করছে। গম্ভীর স্বরে বললো,

— “ও আমাদের মাঝে এসেছে সাদ।”
— “ও যখন আমাদের মাঝে এসেছে তখন তো তুমি আমার স্ত্রী ছিলে না।”
— “ছিলাম না তা ঠিক। কিন্তু আমরা কমিটমেন্টে তো ছিলাম।”
— “ওই কমিটমেন্টের কোনো ভেল্যু আছে ইসলামে?”
— “সাদ..!!!! তোমার কাছে ওই একবছরের কমিটমেন্ট কিছুই না?”
— “ভিত্তিটাই তো হারামের উপর দাঁড়িয়ে ছিলো। আমরা যেনাকার ব্যাভিচারি ছিলাম। আর আমাদের কমিটমেন্ট ছিলো আমরা সামনেও যেনা করে যাবো।এর জন্য যে কি শাস্তি আছে সেটা এখন বুঝতে পারছি।”
— “ওই মেয়েটা এখন তোমার কাছে বেশি দামী হয়ে গেছে তাইনা?”

খাদিজার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরলো। সাদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,

— “তোমরা দুইজনেই আমার কাছে দামী। আমি একজনকে খুশি রাখতে গিয়ে আরেকজনকে কষ্ট দিতে পারিনা।”

খাদিজা এগিয়ে এসে সাদে কলার ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। সাদের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,

— “কেনো এটা করলে তুমি? কেনো ওই মেয়েটাকে বিয়ে করলে? কেনো ওকে আমাদের মাঝখানে নিয়ে এলে?”
— “ও আমার তাকদিরে ছিলো। আর আমি আমার তাকদিরকে অস্বীকার করতে পারিনা।”

খাদিজা সাদের বুকে মুখ গুজে ফুপিয়ে কাঁদে। সাদ খাদিজাকে আগলে ধরে। বাম হাতে খাদিজার থুতনি ধরে মুখটা উঁচু করে ডান হাতে চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,

— “ওকে মন থেকে মেনে নেয়ার চেষ্টা করো দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।”
— “আমি ওকে মানতে পারিনা। ওকে আমি তোমার পাশে সহ্য করতে পারি না। তুমি যখন ওর সাথে হাসি মশকরা করো আমার রাগ উঠে। কান্না আসে। আমি পারি না ওকে মানতে।”
— “খাদু পাখি তুমি ছোটবেলা থেকেই সব ফ্যাসিলিটি পেয়েছো। ইভেন বাবা-মায়ের ভালোবাসা, বোনদের ভালোবাসাও পেয়েছো। কিন্তু ওই মেয়েটা দুই বছর বয়স থেকেই একা একা বড় হয়েছে। নিজের বাড়িতে কাজের মেয়ের মতো বড় হয়েছে। আমার কি উচিত নয় ওকে এখন একটু বেটার পজিশনে রাখা? আর এই যে বললে মেনে নিতে পারছো না এটা আসলে ভুল কথা। নারীরা মেনে নিতে পারে বলেই আল্লাহ এমন একটা বিধান নাযিল করেছেন।”
— “আমি পারবো না ওকে মানতে।”
— “আচ্ছা তুমি কি আমায় ভালোবাসো?”

খাদিজা অবাক হয়ে তাকালো সাদের দিকে। সাদের বুকের দিকের শার্ট খামছে ধরে বললো,

— “তোমার ডাউট আছে?”
— “হ্যাঁ আছে।”
— “কেনো? কেনো ডাউট আছে তোমার? তোমার পাশে আমি অন্য নারীকে মানতে পারছি না এটা কি আমার ভালোবাসা নয়?”
— “না। এটা ভালোবাসা নয়। এটা স্বার্থপরতা।”
— “তুমি আমার ভালোবাসাকে স্বার্থপরতা বলছো? কেনো?”
— “প্রথমত তুমি আমার পাশে অন্য নারীকে নয় আমার স্ত্রীকে মানতে পারছো না। তুমি আমাকে ভালোবাসলে হুমায়রার সাথে ভালো আচরণ করতে বাঁধা দিতে না। হুমায়রা আমার স্ত্রী। গায়েরে মাহরাম কোনো নারী নয়। সে আমার অর্ধেক অঙ্গ। আর তুমি আমাকে আমার অর্ধেক অঙ্গের যত্ন নিতে বারণ করছো। কেমন ভালোবাসলে তুমি আমাকে?”
— “মানে..?”
— “শুনো খাদিজা তোমার মাথায় এইরকম ভালোবাসার ছবক কিভাবে ঢুকেছে সেটা বেশ বুঝতে পারছি। তবে আসল ভালোবাসা এটা নয়। ভালোবাসার সংজ্ঞা এটা নয়। তুমি যেই ভালোবাসার কথা বলছো এই ভালোবাসা দিয়ে দুনিয়ায় ভালো থাকতে পারলেও আখিরাতে কি অবস্থা হবে আল্লাহ আলম।”
— “তাহলে তুমি বলো আমাকে ভালোবাসার সংজ্ঞা। আমিতো ভালোবাসতে পারছি না। ওই মেয়েটাই তোমাকে খুব ভালোবাসছে।”

খাদিজা দূরে সরে গেলো সাদের কাছ থেকে। জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সাদ বললো,

— “ওয়েল। সংজ্ঞা বলার আগে তোমাকে কিছু ব্যাপার ক্লিয়ার করি। তোমার সমস্যা হচ্ছে আমি কেনো দ্বিতীয় বিয়ে অর্থাৎ হুমায়রাকেও আবার তোমাকেও বিয়ে করলাম। আচ্ছা তোমার কি মনে হয় আল্লাহ এই বিধানটা এমনি এমনি নাযিল করেছেন? আল্লাহর ইচ্ছে হয়েছে তাই নাযিল করে ফেলেছে তোমার এটাই মনে হয়? তাহলে শুনে রাখো আল্লাহ কোনো আয়াত বা বিধান এমনি এমনি নাযিল করেননি। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। আর তোমার আমার চেয়ে আল্লাহই ভালো জানেন তাঁর সৃষ্টিকূলের ব্যাপারে। তিনিই ভালো জানেন কিভাবে তাঁর সৃষ্টিকূলের ব্যালেন্স করতে হবে তাইনা? তিনি জানতেন কেয়ামতের আগে আগে নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে। এখন বলো না কেনো এমনটা হবে। এটা আল্লাহই ভালো জানেন। তিনি এসব জানেন বলেই এই বিধান নাযিল করেছেন। আর তুমি ভাবতেও পারবে না এই বিধানের মাধ্যমে আল্লাহ নারীকে কতটা সম্মানিত করেছেন।”

খাদিজা একটা নিঃশ্বাস ফেলে সাদের দিকে তাকিয়ে বললো,

— “যদি সম্মানিত হতো নারীরা তাহলে আজ নারীদের এই অবস্থা হতো না। পুরুষ দ্বিতীয় বিবাহ করে প্রথমটাকে বা দ্বিতীয়টাকে ভুলে যায়। তারপর তার করুন পরিণতি হয়।”

— “ওয়েট ওয়েট। ওখানে যাওয়ার আগে তোমাকে কিছু ড্যামো দেখাই। একবার আমাদের এই সমাজের দিকে তাকাও। বিধবা, ডিভোর্সি, বয়স্ক নারীর অভাব নেই। এদের দায়িত্ব কে নেবে তুমি বলো? আচ্ছা ওদেরকে বাদ দাও। তুমি একবার তোমার দিকে ফোকাস করো। আমি এভাবে বলতে চাইনি। কিন্তু মাঝে মাঝে রুড বিহেব না করলে কিছু জিনিস মাথায় ঢুকে না। তোমার বয়স কত? পয়ত্রিশ। তাইতো? আমার থেকে ছয় বছরের বড়। এখন দেখো আমি কিন্তু কুমারী নারী বিয়ে করে সুখেই ছিলাম। ধরো আমি তোমাকে বিয়ে করলাম না। তোমার মতো আরো যারা আছে তাদেরও বিয়ে হলো না। এবার বলো তোমাদের অবস্থাটা কেমন হবে? কে নেবে তোমাদের দায়িত্ব। নিজের দায়িত্ব নিজে নেবে? ওকে নিলে। তারপর? তোমাদের যে যৌন চাহিদা আছে সেটা কার কাছে গিয়ে মিটাবে? অন্যদিকে দেখো, তুমি একজন পুরুষকে বিয়ে করলে যার আর কোনো স্ত্রী নেই। এভাবে সব পুরুষ একজন নারীকে বিয়ে করলো। এবার দেখো এই যে সমাজের আরো বিধবা, ডিভোর্সি, বয়স্কা নারী আছে তাদের কি হবে বলো? আচ্ছা মানছি তারাও তাদের দায়িত্ব নিলো। তাদের যৌন চাহিদা? এটা তো ন্যাচরাল তাইনা? এটার উপর কারো কন্ট্রোল নেই। তারা কোথায় যাবে চাহিদা মিটাতে? তোমার স্বামীর কাছেই তো আসবে তাইনা? তাদেরকে পাব্লিক প্রোপার্টি হতে হবে তাইনা? এবার বলো এই পাব্লিক প্রোপার্টির কাছে কারা যাবে? নারীরা তো আর যাবে না। যাবে তো পুরুষই। আর তুমিও জানো আমিও জানি আমাদের সভ্য সুশীল সমাজের পুরুষেরা কতটা সুশীল। এখন বলো বিশৃংখলা হবে কি হবে না? পুরুষ পরকিয়ায় জড়াবে কি জড়াবে না? এবার একটু বলো, তোমার কাছে ওই পরকিয়াবাজ স্বামীকে বেশি ভালো লাগবে নাকি হালাল ভাবে দ্বিতীয় বিবাহ করে থাকছে তাকে ভালো লাগবে? উত্তরটা তুমি নিজেই নিজের মনকে দিও।”

— “(—–)”

— “আরবে নারীরা নিজেরাই তাদের স্বামীর জন্য মাসনা খুজে বেড়ায়। আর আমাদের সমাজের দিকে দেখো দ্বিতীয় বিবাহ মানেই সে খারাপ। কেউ দ্বিতীয় বিবাহ করলেই তাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তার দিকে বাঁকা নজরে তাকানো হয়। মানে something is wrong with him এমন একটা ভাব চলে আসে সবার মাঝে। কিন্তু কেউ যদি পরকিয়া করে সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়া হয়। মানে এটাতো কিছুই না। এটা তো টুরু লাভ তাইনা। আর দ্বিতীয় বিবাহ মানেই সে চরিত্রহীন। যাদের এই বিধানের সাথে এলার্জি তারা কি আসলেই ইসলামকে সম্মান করে? তারা কি আসলেই ইসলামকে যথাযথ ভাবে মেনে চলে? উত্তর তুমি নিজেই খোঁজ করো। এই সভ্য সুশীল সমাজ তো বউ রেখেও নিষিদ্ধ পল্লীতে যায়। ওটা ইটস ওকে। ওটা তো জাস্ট ফান। টাইম পাস। আর কেউ চরিত্রের হেফাজতের জন্য দ্বিতীয় বিবাহ করলেই তার আর নিস্তার নেই।”

— “(——)”

— “এই যে তুমি মা হতে পারবে না বলে কত বিয়ে ভেঙে গেছে। কত কটু কথা শুনতে হয়েছে। তারপরেও কি তুমি বলবে এখন তুমি আগের থেকে বেটার পজিশনে নেই? তুমি আমার মাসনা হয়ে কি অসম্মানিত? এই সমাজে মাহরাম পুরুষ ছাড়া চলা কতটা কঠিন সেটা তুমি আমার থেকেও ভালো জানো। এখন বলো তোমার ওই জীবন থেকে কি আমার মাসনা হয়ে আছো এই জীবনটা বেশিই খারাপ?”

সাদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। খাদিজা মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে। সাদের সাথে পরিচয় হওয়ার আগে তার জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছিলো। সব ঠিকঠাক ছিলো। কিন্তু সমস্যা বাঁধলো যখন শুনলো সে মা হতে পারবে না। তখন সেই ছেলে তাকে রক্ষিতা হয়ে থাকার অফার করেছিলো। সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিলো খাদিজা। চোখের পানিতে বালিশ ভিজিয়েছিলো পুরো একমাস। সাদের কথায় খাদিজার ধ্যান ভাঙে। সাদ বললো,

— “একটু আগে বললে, পুরুষ দ্বিতীয় বিবাহ করে প্রথমটাকে বা দ্বিতীয়টাকে ভুলে যায়। এরপরে সেই নারীর করুন পরিণতি হয়। সমাজের কিছু সংখ্যাক দাম্পত্য দিয়ে তুমি এই বিধান জাজ করতে পারো না। যারা বহুবিবাহ করে ঝামেলায় আছে তারা কি ইসলামের সবগুলো বিধান সঠিভাবে জানে? ওয়াহিদাকে অবহেলা করার কারণে তার কি পরিমাণ শাস্তি হবে সেটা কি সে জানে? ওয়াহিদা জানে মাসনাকে তার স্বামীর হক থেকে বঞ্চিত করার পরিণাম? মাসনা জানে ওয়াহিদাকে হক থেকে বঞ্চিত করার পরিণাম? তারা খুবই স্বল্প পরিসরে জানে ইসলাম সম্পর্কে। তাই আজ এই অবস্থা। ওই যে বলে না অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী। বিষয়টার সেইরকম অবস্থা হয়েছে। তার সাথে কিসের অভাব জানো এই সমাজে বা দুনিয়ায়?”

খাদিজা প্রশ্নবোধক চাহনিতে তাকালো সাদের দিকে। সাদ বেডে বসলো। হাতের গিফট বাক্স বেডের পাশের ড্রয়ারে রেখে দিলো। খাদিজাকে নিজের পাশে বসিয়ে বললো,

— “আমাদের একটা ইসলামিক স্ট্যাট নেই। আমাদের একজন আমির নেই। আমাদের ইসলামিক খিলাফা নেই। আল্লাহর দেয়া প্রদত্ত আইন সব জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়ে মানুষের বানানো আইন সমাজে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন এই সমাজের কল্যাণ চিন্তা করা বোকামি ছাড়া কিছুই না। তুমি দেখো এখন পর্যন্ত একটা ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার হলো না। সেখানে তুমি ন্যায় আশা করো? এই সমাজের মানুষের মাঝে শৃংখলা আসবে এটা ড্রিম ছাড়া কিছুই না। সেই ওমরের শাসনে নেই আমরা যেখানে মদ্যপানের কারণে নিজের পুত্রকে পর্যন্ত ছাড় দেননি তিনি। এরকম একজন আমির পাবে এখনকার সমাজে? তারপর কি হলো দেখো। যারা ইসলামের শত্রু তারা সমাজের সেই সব দাম্পত্যকে উদাহরণ সরুপ পেশ করে সবার মধ্যে আল্লাহর বিধানের প্রতি অবমাননা ঢুকিয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা এমনভাবে তোমাদের ব্রেন ওয়াশড করেছে যে তোমরা নিজেরা অজান্তেই কুফরি করে ফেলেছো। নিজের অজান্তেই শিরকে লিপ্ত হয়ে গেছো। তাই আজ নারীদের এই অবস্থা। শুধু কিছু সংখ্যাক আল্লাহর বান্দা আছে যারা আল্লাহর সব আদেশ নিষেধ মেনে জীবন পরিচালনা করে। আর আমি তাদের দলের একজন হতে চাই। আর কিছু না।”

খাদিজার মাথা সাদ আলতো করে নিজের কাধে রাখলো। কপালের উপর পরে থাকা চুলগুলো কানের পেছনে গুজে দিয়ে বললো,

— “জানো তোমাকে আমি ছেড়ে দেয়ার জন্য চিন্তাভাবনা করে ফেলেছিলাম। যেদিন হুমায়রা তোমার সম্পর্কে জানলো এরপরের দিনই আমাকে পাঠিয়েছে তোমার কাছে। তোমাকে বিয়ে করতে। তোমাকে নিজের অর্ধেক অধিকার দিয়েছে ওই পিচ্চি মেয়েটা। আর তুমি ওকে তাড়ানোর চেষ্টা করছিলে। ওকে আমার কাছে খারাপভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছিলে। এসব করে তুমি নিজেই নিজেকে আমার কাছে খারাপভাবে প্রেজেন্ট করছিলে এতোদিন। আর এইজন্য সমাজে বহুবিবাহের আজ করুণ পরিনতি। নারীরাই নিজেরা নিজেদের সহ্য করতে পারেনা। একটু ভেবো বিষয়টি।”

খাদিজা এখন একেবারে মিইয়ে গেলো। সাদ সেটা বুঝতে পেরে বললো,

— “তোমাকে কিছু আয়াতের আফসীর শুনাই। তাহলে বুঝবে ষড়যন্ত্র করে স্বামীর কাছ থেকে তার অপর স্ত্রীকে সরিয়ে দেয়ার জন্য কি পরিমাণ শাস্তি আছে ইসলামে। শুনবে?”

খাদিজা ‘হ্যাঁ’ বোধক মাথা নাড়লো। সাদ মুচকি হাসে। খাদিজার কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালো। খাদিজাকে নিজের সাথে আরেকটু আগলে ধরে বলতে শুরু করে,

— “রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিবি হাফসার ঘরে গেলেন সময় কাটাতে। তখন তিনি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর পারমিশন নিয়ে বাবার বাড়িতে যান। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উনার নিজের খিদমতের জন্য মারিয়ার কাছে যান। এটা বিবি হাফসা শুনে মন খারাপ করলেন। বিবি হাফসার মন রাখতে তিনি বললেন, ‘আমি আমার উপর মারিয়াকে হারাম করলাম।’ আরেকটা ঘটনা হলো যয়নবের সাথে। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যয়নবের ঘরে গেলে তিনি তাঁকে মধু পান করতে দিতেন। তাই সেখানে উনি একটু দীর্ঘ সময় কাটাতেন। এটা বিবি আয়েশা এবং হাফসা (রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু) -এর সহ্য হলো না। তিনি যখন যয়নবের ঘর থেকে এলেন। তখন এই দুই বিবি উনাকে বললেন, ‘আপনার বরকতময় মুখ থেকে মাগা-ফীর গন্ধ আসছে।’ তিনি বললেন, ‘আমি তো যয়নবের ঘরে মধু পান করেছি। সেটা আমি নিজের উপর হারাম করে নিচ্ছি।’ এখানে ‘মধু’ পানের কারণে যে সময় তিনি কাটাতেন তার কারণে উনাদের মন ভেঙে যাচ্ছে। উনাদের মন রাখতে তিনি এই কথা বললেন। দেখো রাসূল এই দুই বিবির মন রাখতে গিয়ে ওদিকে তাদেরকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলেন। এই ভুলটা আল্লাহ ধরে ফেললেন। এবং আল্লাহ নবীদের ছোট ছোট ভুলগুলো ধরে ফেলতেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা উনাকে উদ্দেশ্য করে আয়াত নাযিল করলেন।”

— “কি বলেছিলেন আয়াতে?”

সাদ মুচকি হাসলো। খাদিজা এখনো কাধে মাথা রেখে সাদের হাত জড়িয়ে ধরে বসে আছে। সাদ বললো,

— “হে অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী)! আপনি নিজের উপর কেন হারাম করে নিচ্ছেন ঐ বস্তুকে যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন? আপন বিবিগণের সন্তুষ্টি চাচ্ছেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।[১]’। এখানে শেষের দিকে ‘আপন বিবিদের সন্তুষ্টি চাচ্ছেন’ এই লাইন দ্বারা বিবি আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ’লা এবং হাফসাকে বুঝানো হয়েছে। তাদের দুজনকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অপর দুজনকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। এবার এখানে একটা ব্যাপার খেয়াল করো। এইসব ঘটনা কিন্তু নরমাল। প্রায় ঘটে। তাহলে কেনো আল্লাহ এই ঘটনা কোরআনে তুলে দিয়েছেন? আর এর জন্য আল্লাহ আয়াতও নাযিল করেছেন। কেনো? কারণ টা কি?

এই আয়াতটার মর্ম যে কি তা তোমাকে বলে বুঝানো সম্ভব না। এই আয়াত এবং ঘটনা দুইটাই নিদর্শন এই যুগের জন্য। সেই সব পুরুষদের জন্য যারা এক বিবির কথায় অপর বিবিকে কষ্ট দেয়। ভুল বুঝে এবং দূরে সরিয়ে দেয়। দেখো আল্লাহ জানতেন যুগে যুগে এমন কিছু ঘটবে তাঁর বান্দাদের মাঝে। তাই তিনি এই ঘটনার প্রক্ষিতে আয়াতও নাযিল করে দিয়েছেন৷ যাতে এখান থেকে মানুষ শিক্ষা নিতে পারে। এরপরে কি বলেছে দেখো ‘আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ এটা দ্বারা আল্লাহ বুঝিয়েছেন যারা স্ত্রীকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য বিশাল শাস্তি রয়েছে। যদি তারা ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চায় তাহলে আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করবেন। এবার বলো তুমি যেইসব দাম্পত্যের উদাহরণ দিয়েছিলে তারা এই আয়াত সম্পর্কে কতটুকু জানে?”

— “তারা জানেই না। শাস্তির কথা তো অনেক পরে এরকম একটা আয়াত যে আছে সেটাই জানে না।”

— “রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে মারিয়াকে হারাম করেছিলেন সেটার জন্য কিন্তু পরে উনাকে কাফফারা দিতে হয়েছে। কারণ হালালকে নিজের উপর হারাম করে নিলে সেটা শপথ হয়ে যায়। তাই এরপরের আয়াতেই আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের শপথগুলোর পতন নির্ধারণ করে দিয়েছেন।'[২]। তারমানে এক স্ত্রীকে খুশি করার জন্য অপর স্ত্রীকে কষ্ট দেয়া এটা যেনো তেনো বিষয় নয়। খুবই সেনসেটিভ একটা বিষয়।”

— “(—-)”

— “নবীর বিবিগণের উদ্দেশ্য আল্লাহ কুরআনে কি বলেছেন দেখো, ‘হে নবীর বিবিদ্বয়! যদি আল্লাহর দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তন করো, তবে নিশ্চয়ই তোমাদের অন্তর সঠিক পথ থেকে কিছুটা সরে গেছে।'[৩]। এই যে তারা যয়নবের ব্যাপারে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে মিথ্যে বলেছিলো তাদেরকে সতর্ক করার জন্য আল্লাহ এই আয়াত নাযিল করেছেন। ‘তোমাদের অন্তর সঠিক পথ থেকে কিছুটা সরে গেছে’ এটা দ্বারা তাদের কার্জকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তাদের অন্তরে বক্রতা চলে এসেছিলো। যেটা এখন তোমার মধ্যে কাজ করছে। দেখো আয়াতটা কিন্তু তোমাকেই নির্দেশ করছে।”

— “(—-)”

— “তারা যে মিথ্যে বলেছিলো এটা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি খুব কষ্ট পেলেন। তখন আল্লাহ বিবিদেরকে আরো সতর্ক করে আরেকটা আয়াত নাযিল করলেন।”

— “কি বলেছিলো আয়াতে?”

— “তাঁর প্রতিপালকের জন্য এটা অসম্ভব নয় যে, যদি তিনি তোমাদেরকে ত্বালাক দিয়ে দেন, তাঁকে তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চেয়ে উত্তম বিবি প্রদান করবেন।'[৪]।”

— “মনে হচ্ছে আয়াতটা যেনো আমাকেই নির্দেশ করে দেয়া।”

— “হাহা। বুঝতে পেরেছো তাহলে। আমাদের সুশীল সমাজের কয়জন এই আয়াত সম্পর্কে জানে? তাদের দিয়ে আল্লাহর বিধান জাজ করা বোকামি ছাড়া কিছুই না। এবার দেখো এরপরের আয়াতে সতর্ক করে কি বলা হয়েছে। ‘হে ঈমানদারগণ! নিজেদেরকে এবং নিজেদের পরিবারবর্গকে ঐ আগুন থেকে রক্ষা করো যার ইন্ধন হচ্ছে মানুষ।'[৫]। তোমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করার জন্যেই এতোকিছু বললাম। সবকিছু ঠান্ডা মাথায় একটু ভেবো।”

— “(—–)”

— “দেখো আমার এতো কথার মানে এই নয় যে, সব পুরুষের উচিত বহুবিবাহ করা। অথবা হুমায়রা যে আমাকে সাপোর্ট করেছে এর মানে এই নয় যে, সব স্ত্রীর উচিত তাদের স্বামীকে আবার বিয়ের জন্য উৎসাহিত করা। আর লেখিকাও সব পুরুষকে বহুবিবাহের জন্য উৎসাহিত করছে না। এতোকিছু বোঝানোর মানে হলো আল্লাহর এই বিধানের প্রতি যেই অবমাননা সেখান থেকে বেরিয়ে আসা। তোমাকে আমি এইজন্যই এতোকিছু বোঝালাম। এবং লেখিকাও পাঠকদের এটাই বুঝাতে চাইছে। দেখো বিয়ে মানে দায়িত্ব। দায়িত্ব মানে চাপ। যার চাপ নেয়ার ক্ষমতা আছে তার জন্যেই বহুবিবাহ জায়িজ। অন্যথায় একজনকে নিয়েই সুখে থাকতে হবে। তাই কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘যেহেতু তোমরা সুবিচার করতে পারবে না তাই একজনকে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকো।'[৬]। হুমায়রা যেমন আমাকে সাহায্য করছে তুমিও আমাকে সাহায্য করো দেখবে এই ঘরটা জান্নাতে পরিণত হবে। শুধু মন থেকে হিংসাত্মক স্বত্ত্বাটা বের করে দাও।”

সাদ শুয়ে পরলো। খাদিজার দিকে তাকিয়ে বললো,

— “আজ তোমার কাছেই থাকলাম। যাও অজু করে এসো।”

খাদিজা বাধ্য মেয়ের মতো তাই করলো। লাইট অফ করে দিয়ে নীল ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে দিলো। সাদের পাশে চুপচাপ গুটিসুটি মেরে শুয়ে পরলো। সাদ খাদিজাকে বুকের মাঝে নিয়ে বললো,

— “তোমাকে ওই কথাগুলো খোটা দেয়ার জন্য বলিনি। শুধু বোঝাতে চেয়েছি। তুমি মা হতে পারো বা না পারো তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। আর এটাতো রবের পক্ষ থেকে একটা পরীক্ষা খাদু পাখি। তারপরেও যদি আমার কথায় কষ্ট পাও তাহলে মাফ করে দিও। আমি তোমাকে কখনোই হার্ট করতে চাইনা। তোমাদের দুজনের কাউকেই হার্ট করতে চাইনা।”
— “তুমি হুমায়রাকে ভালোবাসো?”
— “হুম..!”
— “আর আমাকে?”
— “তুমি হওয়ার পর যখন তোমার আরো দুইটা বোন হলো তাদের জন্য কি তোমার প্রতি তোমার বাবার ভালোবাসা কমে গেছে? যায়নি। একজন সন্তানের জন্য বাবার মনে যেই ভালোবাসা থাকে তেমনি দুই সন্তানের জন্যেও সেই একই পরিমাণ ভালোবাসাই থাকে। কমে যায়না কখনো। বুঝেছো কিছু?”
— “হ্যাঁ।”
— “একটা কথা আবার বলি। সেটা বারবার ভেবো। আশা করি তোমার ভেতরের হিংসাত্মক স্বত্ত্বাটা মরে যাবে ইনশাআল্লাহ।”
— “বলো।”
— “দেখো তোমরা দুজনেই নারী। দুজনেই যথেষ্ট সুন্দরী। দুজনেই এক পুরুষের বিবি। অথচ দুজনের মাঝে আকাশ পাতাল ফারাক। দুজনের মধ্যে দুনিয়া এবং আখিরাতের ফারাক। তুমি তোমার মঞ্জিল আমাতে পর্যন্ত ঠিক করে রেখেছো। এই চিন্তাটাই দুনিয়াবি। এখনকার অর্ধেকের বেশি নারীরা এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ। আর অপরদিকে আল্লাহর কিছু বান্দী আছে যারা দুনিয়াকে বাদ দিয়ে আখিরাতের চিন্তা করে। দেখো তারা হাজার দুঃখ কষ্টের মাঝেও জীবন পার করে দেয়। আর হুমায়রা তাদের দলের একজন। তুমি ওকে হাজার কষ্ট দিলেও মুখ ফুটে কিছু বলবে না। সয়ে যাবে সব। ”কিছু মানুষ শুধু আল্লাহর জন্যেই বাঁচে, তাদের সংখ্যাটা নিতান্তই কম’। আরেকটা কথা, যে ভালোবাসার সংজ্ঞায় তুমি বিশ্বাস করো। যেই সংজ্ঞার উপর ভিত্তি করে নাটক, সিনেমা, গান, গল্প, কবিতা, উপন্যাস লিখা হয় সেই ভালোবাসার সংজ্ঞাটাই শিরকের উপর দাঁড়িয়ে আছে। সময় পেলে একটু রিসার্চ করো। অনেক কথা বলেছি। ঘুমাও পাখিটা।”

সাদ খাদিজার কপালে গভীর উষ্ণ পরশ এঁকে দিলো। খাদিজা আরেকটু জড়িয়ে ধরে সাদকে। সাদ খাদিজার চুলে নাক ডুবিয়ে ঘুমে তলিয়ে যায়।

ঘুম নেই খাদিজার চোখে। সাদের বলা প্রতিটা কথা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে থাকে। সাদের কাছে আরেকটু এগিয়ে এসে বুকে থুতনি রাখে। অপলক তাকিয়ে রয় সাদের মুখের দিকে। এই মুখশ্রীর মানুষটার ব্যক্তিত্বের প্রেমে পড়েছে সে। সাদের কপালে গভীরভাবে ঠোঁট ছোঁয়ালো খাদিজা। সাদের বুকে মুখ গুজে শুয়ে পরতেই হুমায়রার কথা মাথায় এলো। আস্তে করে সাদের কাছ থেকে সরে রুম থেকে বের হলো।

হুমায়রার রুমের সামনে আসতেই দেখলো ভেতরে লাইট জ্বলছে। দরজা অল্প খোলা। খাদিজা উঁকি দিলো। হুমায়রা সালাতের সালাম ফিরিয়েছে মাত্র। খাদিজার ভেতরটা নড়ে উঠে। শেষ কবে রাত্রি জেগে আল্লাহর ইবাদাত করেছে তার মনে নেই। ভেতরে ভেতরে অনুশোচনা হলো। আবার উঁকি দিলো রুমে। হুমায়রা সেল্ফ থেকে কুরআন নিয়েছে। খাদিজা দরজার সামনে থেকে সরে দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে দাড়ালো। হুমায়রার কণ্ঠের কুরআন তেলাওয়াত শুনে বেশ ভালো লাগলো। আবার খারাপ লাগাও কাজ করলো।

পয়ত্রিশ বছরের এই জীবনে কত ডিগ্রি, সম্মাননা, সার্টিফিকেট অর্জন করেছে। অথচ রবের পক্ষ থেকে আসা সত্যের বাণী খুলে দেখার সময় তার হয়নি। একটা সূরার বাংলা অর্থ সে জানে না। একটা সূরার তাফসীর সে জানে না। অথচ নিজেকে মুসলিম দাবী করে।

রুমে এসে খাদিজা সোফায় বসলো। বেশ অস্থির লাগছে। সাদের দিকে তাকাতেই সাদের শেষ কথাটা বারবার কানে বাজচ্ছে। সত্যিই হুমায়রা সফল। দোনো জীবনেই। দুনিয়া এবং আখিরাতে। যেমন সাদকে ভালোবাসছে তেমনি ইবাদাতের প্রতিও বেশ মনোযোগী। তাইতো সাদ হুমায়রার প্রতি একটু বেশি দুর্বল। আর সে কি করেছে। হুমায়রাকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র করে নিজেই অপ্রিয় হয়ে গেছে।

খাদিজা ডুকরে কেঁদে উঠে। কান্নার শব্দ যেনো না হয় তাই মুখ চেপে ধরেছে। খুব হাসফাস লাগে। নিজের মায়ের কথা শুনে পিচ্চি মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে নিজের অবস্থানটাই নড়বড়ে করে দিয়েছে। খাদিজা উঠে ওয়াশরুমে গেলো। অজু করে বেরিয়ে আসে। মুখ মুছে সাদের মুখের উপর ঝুকে কপালে গভীরভাবে ঠোঁট ছুইয়ে দিয়ে। তারপর জায়নামাজ বিছিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। বেশ কান্না পাচ্ছে তার। জীবনটাকে এমনভাবে সাজিয়ে নিয়েছে যেনো সে মারাই যাবেনা। বারযাখের জীবন নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথাই নেই। যেনো এই দুনিয়ায় আজীবন থেকে যাবে। খাদিজা সিজদায় পড়ে তার রবকে নিজের মনের কথা জানাতে শুরু করে।

মানুষ রেগে যাওয়ার প্রধান কারণ কি?
মানুষ তখনই রেগে যায় যখন সে দুনিয়াকে আখিরাতের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। (-নোমান আলী খান)

চলবে,,,
® “নাহার”

__________________________________
রেফারেন্স, [১] সূরা তাহরীম, আয়াত:১
[২] সূরা তাহরীম, আয়াত:২
[৩] সূরা তাহরীম, আয়াত :৪
[৪] সূরা তাহরীম, আয়াত:৫
[৫] সূরা তাহরীম, আয়াত:৬
[৬] সূরা নিসা, আয়াত: ৩
মাগাফীর হলো দুর্গন্ধযুক্ত আঠা।

1 COMMENT

  1. Vhi comment na kora parlam na……apni to bohu bibahoka akabara foroz kora falachan….javhaba bollan tata mona holo ak nari ta mon pora gala…arak naribka bia kora nia ashi….nari ki sosta…….apnar golpa bia r akta karon chilo…..kintu ja hadis sonalan tata mona holo iccha korlo r bia kora nilam…..bia korla r coritra dos thaka na…….nosto manoshikota poronar jonno bia korla kono problem nai……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here