#হৃদয়হরণী
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব-১২
-বিয়ের পাঁচ -ছ মাস পরে ছেলে আমার হানিমুনে যাওয়ার ছুটি পেলো,,,(মনোরমা)
-মা রাগ করছো কেন?? আমি কি ইচ্ছা করে ছুটি নেই নি তুমি বলো?(পুলক)
-চুপ কর পুলক আর একটাও কথা বলবি না। নেহাত তীয়া ভালো তাই তোকে কিছু বলেনি,,,(মনোরমা)
-ও মা বাদ দাও না,,জানো তো তোমার ছেলের কাজ আগে তারপরে আমরা,,(তীয়া)
-এ সব কি কথা তীয়া,,, এটলিস্ট তুমি তো বুঝবে,,মার সাথে তুমি অন্তত তাল মিলিও না। ঠিক আছে যাবো না আমি কোথাও, এই পনেরো দিনের ছুটি টা আমি বাড়িতে ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেবো,,,(পুলক)
-এই তুই একদম এভাবে বৌমনির সাথে কথা বলবি না দাভাই,,, উনি নাকি ঘুমাবে বাড়িতে, তোর ঘুম আমি বার করছি একটু অপেক্ষা কর। বৌমনি ল্যাগেজ দুটো বার করে দাও তো,আজ ও একা তোমাদের দুজনের ল্যাগেজ গোছাবে,,,(পেখম)
-কাল কটার ফ্লাইটে যাচ্ছিস?(মনোরমা)
– সকাল সাত টা মা।(পুলক)
-এ দাভাই আমার জন্যে একটি ভালো হুডি নিয়ে আসবি,,, শুনেছি সিকিমে এটা ভালো পাওয়া যায়,,,(পেখম)
-পারবো না, আমার অত টাকা নেই,,,(পুলক)
-ভেবেছিলাম ল্যাগেজ গোছাতে তোকে সাহায্য করবো,,কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তার আর দরকার নেই(পেখম)
-শোন পেখু তোর জন্য আমি এনে দেবো,,আমার বর মাসে মাসে যে টাকা আমার হাত খরচের জন্যে দেয় ,তা থেকেই আমি তোকে এনে দেবো বুঝেছিস,,(তীয়া)
-সব কটা ড্রামা কুইন,,(পুলক)
-আর তুই আস্ত একটা ড্রাম(বলেই পেখম দৌড় দেয়)
-এতদিন অফিসের কাজের জন্য পুলকরা কোথাও ঘুরতে যেতে পারে নি। হঠাৎ পনেরো দিনের ছুটি পাওয়ায় ওরা কালকে সিকিম যাচ্ছে,,
____________________________________________
-রাত প্রায় একটা বাজে,তবুও পেখমের চোখে ঘুম নেই,, এই পাঁচটা মাস যে কিভাবে পার করেছে তার কোন হিসাব নেই। বিয়ের প্রায় এক সপ্তাহ পরেই আবির ব্যাঙ্গালোরে চলে যায়,, ওই মনুষটার প্রতি তো এতদিনে পেখমের অনেক অভিমান জমা হয়ে আছে। ফোন নাম্বার থাকা সত্ত্বেও মানুষটি একটা বারের জন্যেও পেখমের খোঁজ নেয় না। মানুষ টা কাছে নেই বলে পেখম রাতে ঠিক করে ঘুমাতে পারে না। কারণে অকারণে কেঁদে ভিজিয়ে ফেলে মাথার বালিশ, মানুষটাকি এ সবের খোঁজ রাখে??আজকাল ওর কোনো কিছুতেই ভালো লাগে না,, চারপাশ যেন বিষাদময় হয়ে উঠেছে,, ইশশ প্রেমে পড়লে,,, ভালোবাসলে বুঝি এমন হয়??তবে সে কেন এত তাড়াতাড়ি বুঝলো আবিরের মনের অনুভূতি?? কেন আবির তাকে বলে না ভালোবাসি?? এতদিন তো বেশ ভালোই ছিল, তবে কেন সেদিন কাছে টেনে নিয়েছিল??কেন সেদিন ঘুমের মধ্যেও তাকে টেনে ভালোবাসার প্রথম স্পর্শের সাথে পরিচয় ঘটিয়ে ছিল?? উনি কি বোঝেন না এই বিরহ ,এই অবহেলা আমি আর সহ্য করতে পারছি না?? কথা গুলো বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল পেখম, আবিরের ব্যালকনির দিকে তাকিয়ে ভাবলো মানুষটা বাড়ি থাকলে নিশ্চয়ই এখন রকিং চেয়ারে বসে থাকতেন,, কথা গুলো ভাবতেই বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে পেখমের,,
-প্রতিদিন নানান কথা ভাবতে গিয়ে কফি ঠান্ডা হয়ে যায়, আর পরে ও সেটা চুপচাপ খেয়ে নেয় অনুভূতি শূন্যের মতো।আজও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি,,কফির মগে শেষ চুমুক টা দিয়ে উঠে চলে গেল ঘরে। না ওই হৃদয়হীন লোকটার কথা আর ভাববে না।
__________________________________________
-মা তুমি কিন্তু সাবধানে থাকবে,,,আর বাবা তুমি সময় মতো ওষুধ খেয়ে নেবে। পেখু তুই আমাকে রোজ ফোন করিস,,(তীয়া)
-বৌমনি এত চিন্তা করতে হবে না,, তোমরা সাবধানে যাবে।
-পুলক আর তীয়া তোমরা কিন্তু পৌঁছে আমাকে ফোন করবে,,বুঝতেই পারছো তোমাদের মা একটু বেশি টেনশন করে,,(দেবেন্দ্র)
-ঠিক আছে বাবা,,আমরা তাহলে আসি ,,(পুলক)
-যাওয়ার আগে একটু ঐ বাড়ি থেকে দেখা করে যাস(মনোরমা)
-ঠিক আছে মা(তীয়া)
___________________________________________
-কলেজ ক্যান্টিনে বসে আছে ছয় জন,,,পাঁচ জন অবাক হয়ে পেখমের দিকে তাকিয়ে আছে,,,
-হোয়াট?? এই ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন তোরা??(পেখম)
– চোখ-মুখের কি অবস্থা করেছিস পেখু,,(প্রিয়া)
– এর আগেও তো আবির দা এর থেকেও বেশি সময় করে ব্যাঙ্গালোরে থেকেছে,,তখন তো তোর এই রকম অবস্থা হয়নি,,(রুশা)
-আমার যা মনে হচ্ছে বিষয় টা খুব সিরিয়াস,,(দিপু)
-চুপ করবি তোরা,,, কিছু হয়নি আমার,, আমি ঠিক আছি,,(অন্যদিকে তাকিয়ে পেখম বলে)
-এই তোর কি হয়েছে একটু ক্লিয়ার করে বল,,,(অর্নব)
-কি হয়েছে বল,,এর আগেও তো আবির দা তোর খোঁজ খবর নিতো না,,ইভেন সে তোকে ভালোবাসে কি না সেটাও তো আমরা জানি না,,, তাহলে কেন এত কষ্ট পাচ্ছিস?? কি হয়েছে আমাদের বল( পেখমের কাধে হাত রেখে প্রিয়া বলে,আর সাথে সাথেই প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরে পেখম কেঁদে ফেলে,,কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলে বলে)
-সে ভালোবাসে আমাকে। তবে কেন এত অবহেলা করে?? আমি বুঝি তার চোখের চাহনি,, ওই চোখের ভাষা বুঝতে পেরেই আজ আমার এই দশা। এক এক সময় মনে হয় এই বুঝি আমি দম আটকে মরে যাবো,,,জানিস বাড়িতে বিয়ের কথা হচ্ছে আমার। দাদান ফোনে বাবাকে বলেছে তারা নাকি কোন ছেলেকে পছন্দ করেছে,,আমি আর সহ্য করতে পারছি না।(পেখম)
-ছেলে দেখলেই তো আর বিয়ে হয়ে যাবে না পাগল(অর্নব)
-তুই জানিস না দাদান আর বাবা যদি একবার ছেলেকে পছন্দ করে বা ওদের কথা দিয়ে দেয়,,,তখন আর কিছুই করতে পারবো না,,,(পেখম)
-তুই ফালতু চিন্তা করছিস ,,এইরকম কিছু হবে না আবির দা থাকতে। আর তোর পড়াশোনা তো এখনো শেষ হয়ে যায় নি। কাকু নিশ্চয়ই তোর পড়াশোনা কমপ্লিট না করিয়ে বিয়ে দেবেন না,,,সুতরাং চাপ নিস না,,হাতে এখনো এক বছর সময় আছে,,,(রুশা)
-সে কেন আমাকে অবহেলা করে?? মাঝে মাঝে মনে হয় ভালোই যদি বাসে তাহলে কেন তার অনুভূতি প্রকাশ করে না আমার কাছে?? আমার ধৈর্যের পরীক্ষা আর কত নেবে বলতে পারিস??(পেখম)
-পেখু চুপ আর কাঁদবি না। এই চল সবাই আজ পেখমদের বাড়িতে যাবো,,,সন্ধ্যেবেলায় জমিয়ে আড্ডা দেবো,,সাথে থাকবে পেখমের হাতের গরম গরম কফি আর পকোড়া,,, কি এবার মন খারাপ করে থাকলে টেনে চড় লাগাবো,,(অর্নব)
___________________________________________
-সকাল বেলায় এই রকম খবর শুনলে কার ভালো লাগে বলো তো? আমার তো ভীষণ ভয় করছে অনুপমা,, বাবার এমনিতেই শরীর খারাপ ছিল,, যার কারণে পুলকের বিয়েতে তিনি আসতে পারেন নি,, এর জন্য কত আফসোস করেছেন ফোন করে,,,(মনোরমা)
– দাদা কি বলছেন,,, এখনই রওনা দেবে তোমরা??(অনুপমা)
-হ্যাঁ,,পুলকদের বাড়ি ফিরতে এখানো তিন দিন লাগবে,,এদিকে পেখমের টেস্ট চলছে কলেজে,,ওকে যে নিয়ে যাবো ,সেটাও হবে না,,
-ওই সব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না,, পেখম আমার কাছেই থাকুক,, আবির বাড়ি থাকে না,,আর তীয়া তোমার বাড়ি যাওয়ার পর থেকে কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আর তোমার দাদার কথা তো জানো অর্ধেক সময় তিনি কাজ নিয়েই থাকেন,,, পেখম থাকলে আমার খুব ভালো লাগবে,,,
-তুমি আমাকে অনেক টা নিশ্চিত করলে অনুপমা,,, বাবার অবস্থা কেমন,,,সেখানে গিয়ে আমরা আবার কবে ফিরবো তা তোমাকে আমি ফোনে জানিয়ে দেবো,,,আমরা বেরোনোর আগে পেখমকে তোমাদের বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে যাবো,,
-ঠিক আছে এখন তাহলে রাখছি।
-হ্যাঁ
____________________________________________
-আষাঢ়ে মেঘ তাই ঘন ঘন বৃষ্টি লেগেই থাকে,,এই ভ্যাপসা গরম তো এই ঠান্ডা। প্রকৃতির এই ঠান্ডা বাতাস উপলব্ধি করতে ব্যস্ত পেখম। কাল থেকে সে তীয়াদের বাড়িতেই থাকছে। অনুপমা ওকে আবিরের ঘরেই থাকতে বলেছে। সে চাইনা পেখম গেস্টরুমে থাকুক। আজ বাদে কাল এমনিতেই এই বাড়ির বৌ হবে সে,,
-পেখম এই নে দই, এটা খেয়ে পড়তে বস আর তা না হলে যা একটু ঘুমিয়ে নে,,
-তুমিও বসো পাশে,,একটু গল্প করি,,,
-আমার আজকে আর সেই সময় নেই,,,তোর কাকু এক সপ্তাহের জন্য ব্যাঙ্গালোরে যাবে তাই তার ব্যাগ গুছিয়ে দিতে হবে,,,তুই টিভি দেখ,,,ভালো কথা আবিরের ঘরের জানালা গুলো বন্ধ করে দিয়ে আয় তো,,মনে হচ্ছে আবার বৃষ্টি আসবে,,,
-ঠিক আছে ওটা করে আমি তাহলে টেরিসে যাবো,,,
-ঠিক আছে,, বৃষ্টি হলে নীচে চলে আসিস,,,
-পেখম দই এর প্লেটটা নিয়ে আবিরের রুমে গেল,,তারপর ঘরের মৃদু আলো জ্বালিয়ে জানালা বন্ধ করে দিলো,,,কি একটা ভেবে ব্যালকনির দরজা খুলে পর্দা গুলো সরিয়ে দিয়ে বিছানায় এসে শুয়ে পড়লো।এখন আর পড়তে ভালো লাগছে না,,, একটু ঘুমানোর দরকার,,দুপুরে খাওয়ার পর একটু ঘুমানোর অভ্যাস আছে ওর,,
-আবিরের ঘরে তো পেখমের মোটেই ঘুম আসে না, বরং আরোও বেশি করে মনে পড়ে যায় ওর সেইদিনের কথা,,এইঘরে ও আবিরের শরীরের ঘ্রাণ উপলব্ধি করতে পারে,,, প্রত্যেকটা জিনিসে আবিরের ছোঁয়া আছে,,এইসব ভাবতে ভাবতে শরৎরচনা বলী বইটা নিয়ে পড়তে পড়তে একসময় ও ঘুমিয়ে পড়ে,,
___________________________________________
-তোর বাবাতো একবারো বললো না তো যে,তুই আসবি,,আমি তো আরও ভাবলাম তোর কাছেই মনে হয় যাচ্ছেন উনি,,,
-না মা বাবা ব্যাঙ্গালোরে যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু অন্য সাইডে,,বাবা আমাকে কাল ফোন করে বললো এক সপ্তাহের জন্য এখানে আসতে,,,
-ঠিক আছে যা ফ্রেশ হয়ে নে,,আমি ভাত বাড়ছি,,,
-আমি হালকা কিছু খেয়ে নিয়েছিলাম,,, এখন একটা শাওয়ার নিয়ে ঘুম দেবো,,তুমি বরং সন্ধ্যের দিকে একটু স্টু বানিয়ে দিও।
-ঠিক আছে,,,
-আবির ওর মার সাথে কথা বলে উপরে গেল,,,ঘরের সামনে এসে দেখে দরজা ভেজানো,, ও যতদূর জানে বাড়িতে কেউ ওর ঘরে ঢোকে না,,শুধু পরিষ্কার করতে ছাড়া,,তাহলে দরজা খোলা কেন,,এইসব ভাবতে ভাবতে দরজা খুলে ও দাঁড়িয়ে যায়,,
-খানিকক্ষণ ওইভাবে থেকে আস্তে আস্তে বিছানার পাশে এসে দাঁড়ায় আবির,,, ও তো এই স্বপ্নটাই দেখতো যে অফিস থেকে ও অসময়ে বাড়ি আসবে,,আর এসে দেখবে ওর প্রেয়সী এইভাবে অগোছালো ভাবে বিছানায় ঘুমিয়ে আছে, আর ও সেটা তৃপ্তি ভরে দেখবে,,,আজ তবে কি স্বপ্ন টা সত্যি হল,,,আবির ভীষণ ক্লান্ত থাকায় ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটা টি-শার্ট আর ট্রাউজার পড়ে আসে,,তারপর সোফায় শুয়ে পড়ে,,,লম্বা হওয়ার দরুন একটু অসুবিধা হয়, কিন্তু ক্লান্ত থাকায় গুটিয়ে শুয়ে পড়ে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে যায়।
-ঘন্টা খানেক পরে পেখমের ঘুম ভেঙে যায়,,, ও আড়ামোড়া খেয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে চলে যেতে নিলে সোফায় আবিরকে শুয়ে থাকতে দেখে থমকে যায়,,,ঘুম থেকে উঠে ভুল দেখছে ভেবে, নিজের চোখ কচলিয়ে দেখে ভালো করে, না ও ভুল দেখছে না,,,ও আস্তে আস্তে করে আবিরের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়,,,তারপর একটু ঝুঁকে আবিরের চুলে হাত রাখলো,আর সাথে সাথেই দু-টোপ জল আবিরের মুখের উপর পড়লো,,,মুখের উপর কিছু পড়ায় আবিরের ঘুম ভেঙে যায়,, ও চোখ খুলে দেখে পেখম ওর দিকে তাকিয়ে আছে,,,
-আবিরকে হঠাৎ চোখ খুলে তাকাতে দেখেই পেখম তাড়াতাড়ি করে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়,, পেখমের এইভাবে চলে যাওয়া দেখে আবির হতভম্ব হয়ে পড়ে,,,তক্ষনাৎ নিজের মুখের উপর জলের স্পর্শ পেয়ে ও বলে ওঠে”পাখি কাঁদছিলো,,,কিন্তু কেন”?? ও তাড়াতাড়ি উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় পাখিকে খুঁজতে,,,নীচে এসে দেখে ড্রয়িংরুমে কেউ নেই,,এদিকে বাইরে বৃষ্টি পড়ছে,,,আবির ওর মার রুমে গেল,,,
-মা আসবো,,
-হ্যাঁ আয়,,কফি দেবো??
-না আসলে আমি,,(আবিরের কথার মাঝে রেখা এসে বলে কাকিমা বাইরে ভীষণ বৃষ্টি পড়ছে)
-কি বলিস কি,,,পেখম নীচে এসেছে?? সেই যে দুপুরের পরে টেরিসে গেল,,এখনো তো এলো না,,,
– মা পাখি তো আমার,,(আবিরকে কথা বলতে না দিয়ে অনুপমা বলে ওঠে)
-আবির দেখ তো গিয়ে একবার,,, সন্ধ্যে হয়ে গেছে মেয়েটা এখনো নীচে এলো না কেন?? এইদিকে বৃষ্টি হচ্ছে সে আবার ভিজছে না তো,,,
-ঠিক আছে মা তুমি চিন্তা করো না আমি দেখছি,,,
আবির টেরিসে গিয়ে দেখে পাখি ছাদের ধারে দাঁড়িয়ে আছে,, বৃষ্টিতে ভিজে চুড়িদার পুরো শরীরে লেপ্টে গেছে,,,ও আবিষ্কার করলো ঠিক এই সময় পাখিকে আবেদনময়ী লাগছে,,নিজের ভাবনাকে দমিয়ে রেখে ও পাখির দিকে এগিয়ে গেল। কাছে এসে দাঁড়াতেই বুঝতে পারলো পাখির শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে ,,মাঝে মাঝে হাত দিয়ে কিছু একটা মুছছে,,,
-তবে কি আমার ধারণা ঠিক,, ও কাঁদছে,, কিন্তু কেন?? এই তো ঘুমিয়ে ছিল,, আমাকে দেখে কেন কাঁদছে,, তবে কি আমি কিছু করেছি নিজের অজান্তে,,, ও তক্ষুনি বলে ওঠে,,
-“সে কি জানে না তার ওই মায়াবী কালো চোখের এক ফোঁটা জল ই যথেষ্ট আমার এই হৃদয়ের রক্ত ক্ষরণের জন্য”??
-হঠাৎ চিরচেনা পুরুষালী গম্ভীর কন্ঠস্বর কানে আসতেই পেখম নিজেকে সামলে নেয়,,তারপর বিনা বাক্যে চলে আসতে নিলে আবির পিছন থেকে পাখির হাত ধরে বলে ওঠে,,
-সে কি জানে না আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তার এইভাবে ইগনোর করে চলে যাওয়া আমার একেবারেই পছন্দ নয়?? তবে কি তার চোখের জলের কারণ আমি?? নিজের অজান্তেই যদি কোনো অন্যায় তার সাথে আমি করে থাকি ,তাহলে সে আমাকে শাস্তি দিক,,আমি তা মাথা পেতে নেবো। তবুও তার ওই মায়াবী চোখের জল এক ফোঁটাও যেন গড়িয়ে না পড়ে”
-আবিরের কথা শুনে পেখম আর থাকতে পারেনি সেখানে,,, টেরিস থেকে দৌড়ে নীচে চলে আসে,,,আর আবির পেখমের যাওয়ার দিকে এক নজরে তাকিয়ে থাকে,,আর মনে মনে বলে ওঠে,,
-” প্রেয়সীর অভিমান বুঝি এত সহজে ভাঙ্গানো যাবে না, কিন্তু আমি জানি আমার ভালোবাসার কাছে তার এই অভিমান ক্ষনিকের, সে যে ভালোবাসার কাঙাল”।
চলবে,,,,,
(সবাই লাইক ও মন্তব্যে করবেন। প্রত্যেকটা পর্ব কেমন লেগেছে জানাবেন,,তাহলে আমি লেখায় আগ্ৰহ পাবো। কপি করা নিষেধ)