হৃদয়হরণী পর্ব ৪

0
815

#হৃদয়হরণী
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব-৪

-মেজাজ টা প্রচণ্ড খারাপ হয়ে যাচ্ছে আবিরের ক্ষনে ক্ষনে,,,একের থেকে গরম তার উপরে কলকাতার এই ট্রাফিক জ্যাম,,,স্টারিং এর উপর একটা জোড়ে আঘাত করলো হাত দিয়ে নিজের রাগটাকে সংযত করার জন্য,,, আচমকা একটা শব্দ হওয়াতে পাশ ফিরে আবিরের মুখটা দেখে চুপসে যায় পেখম ,,এতক্ষণ ও মন দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছিল,,

-আবির দা আমার কোনো সমস্যা হবে না,, আপনি বরং গাড়ির এসি টা চালিয়ে দিন,,(গাড়িতে উঠলেই পেখম মুক্ত ভাবে থাকতে পছন্দ করে, ওই কাঁচ বন্ধ করে এসির মধ্যে থাকলেই ওর শরীর গুলিয়ে আসে,,মাথা ব্যথা অনুভব হয়,,ঠিক সেই কারণে ও যখনই আবিরের গাড়িতে ওঠে, আবির এসি বন্ধ রাখে,,আর গাড়ির জানালা খুলে দিয়ে রাখে)

-চুপ করে থাক পাখি,,এমনি মেজাজ খারাপ আছে,,আর তুই এমন কিছু বলিস না যার কারণে তোর সাথেও খারাপ ব‍্যবহার করে ফেলি,,,

-ঠিক আছে (বলেই পাখি রাস্তার দিকে পুনরায় দৃষ্টি দেয় কিন্তু মাথায় ঘোড়ে তার হাজার টা প্রশ্ন,,ও আবার কি এমন বললো যে আবির দার মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে,,, এই তো ঠিক ছিল মানুষটা,,,কি জানি কখন কি হয়)

-কিছুক্ষণ আগের ঘটনা সবাই শপিং শেষ করে গ্ৰাউন্ড ফ্লোরে আসলেও পেখম আর তুর্য আসে না,, আর সেই বিষয়টা আবির খুব ভালো করেই পর্যবেক্ষণ করছে,,হঠাৎ তার চোখ যায়,,আবির পেখমের হাত ধরে নিয়ে আসছে,,,

-কি রে তোর পায়ে কি হল?? এই রকম খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটছিস কেন?(প্রিয়া)

-ও কিছু না,,এমনি,,(পেখম)

-কি কিছু না পেখু?? মিথ্যে কেন বলছো,,,আসলে তোমরা সবাই লিফটে করে নামছিলে,,ও আর আমি পিছনে থাকায় এসে দেখি পরের লিফট পুরো ভর্তি,, পেখু তখন বললো যে সিড়ি দিয়ে নীচে নামবে তাই আমি আর পেখু গল্প করতে করতে সিড়ি দিয়ে নামছিলাম হঠাৎ ওর পা মুচকে যায়,,,ও সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলো না তাই আবার ওকে কোলে করে নামিয়ে আনি,,,গ্ৰাউন্ড ফ্লোরে এসে বললো ও হাঁটতে পারবে কোনো অসুবিধা হবে না,, কিন্তু দেখো সেই ওর কষ্ট হচ্ছে তাই ধরে ধরে আনছিলাম।(তুর্য)

-তুর্যের কথা গুলো কর্ণপাত হতেই আবিরের চোয়াল শক্ত হয়ে যায়,,, রাগে হাত ও মুষ্টিবদ্ধ করে নেই,,কপালের রগ ফুলে যায়,,প্রথম কথা পাখিকে ও কোলে করে এনেছে ,যার দরুন ওর স্পর্শ লেগে আছে পাখির শরীরে আর দ্বিতীয় কথা সামান্য কিছুক্ষণের দেখায় পেখম থেকে পেখু বলে সম্বোধন করা।

-ওও পেখু ভীষণ কষ্ট হচ্ছে সোনা?? তোর দাভাই কে আমি বারণ করে দি আসতে,,আমরা না হয় অন্য দিন যাবো,,,মিতা মৌ তোরা যা আজ আমি যাবো না,,,(অদ্বিতীয়া)

-না না বৌমনি আমার জন্যে তোমাদের প্ল্যান ক‍্যানসেল করো না,,, আমি ঠিক আছি,,একবার বাড়ি গিয়ে একটু রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবো(পেখম)

-কিছু মনে না করলে আমি গাড়ি এনেছি,,পেখুকে বাড়ি আমি পৌছে দিয়ে আসি,,তারপর তোদের সাথে জয়েন করছি,,(তুর্য)

-এতক্ষণ এদের সব কথা মন দিয়ে শুনছিল আবির,,তুর্যের কথায় পেখম কিছু বলতে যাবে তার আগেই আবির বলে” তার কোনো প্রয়োজন নেই তুর্য। তোরা সবাই চলে যা,,,আমার গাড়ি আছে। আমি বাড়িতেই যাচ্ছি পাখি আমার সাথেই যাবে বলেই কারোর কোনো উত্তরের অপেক্ষা না করে পেখমকে কোলে করে নিয়ে যায় গাড়ির কাছে”।আবিরের এই ব‍্যবহারে সবাই বেকুব হয়ে যায় এমনকি পেখম নিজেও।ইশশ সবাই কি ভাবছে?? এই লোকটা কি কিছুই বোঝে না,,,
____________________________________________

-গাড়ির হর্নের আওয়াজে পেখমের কাঁচা ঘুমটা ভেঙে যায়,, চোখ খুলে নিজেকে গাড়ির মধ্যে দেখে কিছুটা সময় নিস্তব্ধ হয়ে বসে থাকে পেখম ,তারপর দেখে গাড়িটা বাড়ির রাস্তার কাছে দাঁড়িয়ে না,, বরং বড়ো কোনো একটা ক্লিনিকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে,,,পেখমের ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে হঠাৎ আবির ডাকে গাড়ির বাইরে দিয়ে,,

-পাখি চল ডাক্তার এসে গেছে,,,,

-ডাক্তার মানে??

-মানে আবার কি?? তোর পা দেখাবো,,একবার ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়া ভালো,,বলেই কোলে নিতে যাবে,, তখনই পেখম বলে ওঠে,,আমি পারবো যেতে আবির দা,,,

-আবির পেখমকে কোলে নিয়ে হাঁটা শুরু করে এমন ভাব করলো যেন কিছুই শোনেনি ও পেখমের কথা,,

-তেমন গুরুতর আঘাত পাইনি মিস পেখম,,সামান্য একটু চোট লেগেছে,,,ঐ কারণে ব‍্যাথা করছে,,আমি কিছু মেডিসিন দিয়েছি ওই গুলো খাবে আর একটা মলম দিয়েছি দিনে তিনবার লাগাবে। আশা করি দু-এক দিনের মধ্যেই আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে পা, মিষ্টার আবির,,(ডাক্তার)

-ওকে ডাক্তার,,(তারপর ডাক্তারকে ফিজ দিয়ে পেখমকে আবার কোলে করে গাড়িতে নিয়ে যায় )

-দেখলেন তো ডাক্তার কি বললো,, আপনি শুধু শুধু চিন্তা করছিলেন।

-কোনো কিছুই শুধু শুধু করি না আমি পাখি, যেখানে তোমার বিষয় সেখানে তোমাকে নিয়ে আমি কোনো রিক্স নিতে চাই না,,

-আবিরের কথার পরিপ্রেক্ষিতে পেখম কিছু বলে না। আবির এইদিকে ড্রাইভিং মনোযোগ দেয়,,,
___________________________________________
-জুন মাসের এই হচ্ছে এক সমস্যা এই গরমে সিদ্ধ হয়ে যেতে হবে তো ক্ষণেই আকাশে প্রচণ্ড মেঘ হয়ে এসে বৃষ্টি শুরু হবে,,,ক্রমেই বৃষ্টির বেগ বেড়েই চলেছে,,,আবির বাড়িতে ফোন করে দেয় ফিরতে দেরি হবে,,,

-যেমন বৃষ্টি ঠিক সেই বেগে ঝড়ো হাওয়া বইছে বাইরে,,,পেখমের বৃষ্টি খুব পছন্দের একটি জিনিস। ঠিক ওর এই মুহূর্তে ইচ্ছা করছে গাড়ি থেকে নেমে বৃষ্টিতে ভিজতে,, দাদাভাই যদি থাকতো তাহলে এতক্ষণে গাড়ি থেকে নেমে বৃষ্টিতে ভিজতে যেতো কিন্তু আফসোস এটা হবে না,,,,

-আবির বার বার আড়চোখে দেখছে তার প্রেয়সীকে,, দমকা হাওয়ার দরুন পেখমের অবাধ্য চুল গুলো বার বার আবিরের মুখে আছড়ে পড়ছে,,, নিজেকে সামলানো দায় হয়ে পড়েছে,,,বিদ্যুৎ এর ঝলকে প্রেয়সীর মুখটা আবেদনময়ী হয়ে উঠেছে,,, নিজেকে যথা সম্ভব সামলে আবির বলে ওঠে,,

-পাখি চুল গুলো বেঁধে ফেল, দ্রুত,,,

-পেখম কিছু না বলেই চুল গুলো হাত খোঁপা করে নেয়,,কিন্তু সেখানেও বাঁধে বিপত্তি,, পেখমের উন্মুক্ত ঘাড়ে নজর যেতেই আটকে যায় আবিরের দৃষ্টি,,, কালো তিলটা খুবই আকষর্ণীয় হয়ে উঠেছে ওর কাছে,,,না এইভাবে চলতে থাকলে ওর দ্বারা কোনো ভুল হয়ে যেতে পারে,,,, মেয়েটা কি বোঝেনা ওকে এই রকম অবস্থায় দেখলে আমার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়,,,নিজেকে সামলে আবির বলে

-পাখি তুই তোর ওড়না টা মাথায় পেঁচিয়ে নে,,,বাইরের হাওয়ায় ঠান্ডা লেগে যাবে,,,

-কিন্তু আবির দা আমার তো বেশ ভালোই লাগছে,,,আচ্ছা দাঁড়ান আমি বরং চুলটা ছেড়ে দি,,তাহলে অত ঠান্ডা লাগবে না,,,

-না এই মেয়ে বুঝবে না আবির ,,তোর ভেতরের তোলপাড় ও বুঝবে না।

-কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আবির ড্রাভিং এর ফাঁকে বলে ওঠে পাখি জানালা বন্ধ করে দে,,,বৃষ্টির জল শরীরের লাগছে তো,,,এবার কিন্তু সত‍্যি সত্যিই ঠান্ডা লেগে যাবে,,,

-আবিরের কথা শুনে অসন্তুষ্ট হয়ে পেখম বলে ওঠে আপনি এত অ্যানরোমান্টিক কেন বলুন তো আবির দা?? এই সুন্দর মুহূর্ত টাকে উপভোগ না করে বলছেন জানালা বন্ধ করে দিতে বৃষ্টির ছাঁট আসছে তাই,,,কিন্তু আমার তো মন চাইছে এক্ষুনি গাড়ি থেকে নেমে বৃষ্টি বিলাস করতে,,,(কথা গুলো বলেই নিজে নিজের জিভ কাটে,,,এ কি বলে ফেলল আবির দাকে ও,,,নিজের গালে চড় দিতে ইচ্ছা করছে,,ঠিক তখনই আবির বলে ওঠে,,)

-এখন কি আমাকে এই মুহূর্তে রোমান্টিক হতে হবে??(বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার ড্রাইভিং মনোযোগ দেয়)
____________________________________________

-পুলক ও অদ্বিতীয়া ওদের আসতে দেরি হবে বলে ফোন করে জানিয়ে দেয়,, বৃষ্টি ও ঝড়ের জন্যে জায়গায় জায়গায় গাড়ি দাঁড় করাতে হচ্ছে যার দরুন সবার আজ বাড়ি ফিরতে দেরি হবে,,,তুর্য,মৌ,মিতা এরা একটা আলাদা গাড়িতে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়েছে,,আর পুলক এবং অদ্বিতীয়া আলাদা একটা গাড়িতে বেরিয়েছে।

-তীয়া আবিরের সাথে কথা হয়েছে,,,ওরা কোথায়??

-হ‍্যাঁ দাদাভাই বললো চিন্তা করতে হবে না ঠিক মতো যদি গাড়ি ড্রাইভ করতে পারে তো এক ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে যাবে,, আর যদি বৃষ্টির জন্যে আটকে যায় তো দেরি হবে,,,ও ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল বলেই এত দেরি হচ্ছে,,,

-না না সে ঠিক আছে,, ওর সাথে পেখম থাকলে আমার চিন্তা করতে হয় না। কিন্তু এই বৃষ্টি আর ঝড় হচ্ছে বলেই চিন্তা হচ্ছে,, তার উপরে পেখমের পায়ে ব‍্যাথা,,,

-আপনি এত চিন্তা করবেন না।ওরা সাবধানেই চলে আসবে দেখবেন।

-ঠিক আছে পাগলী,,,এই তোমার ঠান্ডা লাগছে না তো??জানালা বন্ধ করে দেবো??

-না না ঠিক আছে,,(বলেই একহাত দিয়ে পুলকের বাম হাত জড়িয়ে নিয়ে তার উপরে মাথা রাখে,,পুলক অদ্বিতীয়ার মাথায় একটা ভালোবাসার পরশ দিয়ে ড্রাইভিং মনোযোগ দেয়)

___________________________________________

-বৃষ্টি হওয়ার দরুন রাস্তা-ঘাট প্রায় জন-মানব শূণ্য,,, ঝড়ের প্রবাহ কমে গেছে,,, এখন শুধু ভারী বর্ষণ হচ্ছে আর থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে,, যার দরুন বাইরের প্রকৃতি ক্ষণে ক্ষণে আলোকিত হয়ে উঠছে,,আবির একটা ফাঁকা জায়গা দেখে গাড়ি থামায়,,তারপর পেখমকে উদ্দেশ্যে করে নামতে বলল,,

-সত‍্যি নামবো,,,মানে ভিজবো??

-পাঁচ মিনিট সময়,, এবার সেটা কথা বলে কাটিয়ে দিবি নাকি বৃষ্টিতে ভিজে কাটাবি সেটা সম্পূর্ণ তোর ব‍্যাপার,,,your time start now..

-আবির বলার সাথে সাথেই পেখম দৌড়ে নেমে যেতে চাই,,,তারপর নামতে গিয়ে মনে পড়ে ওর পায়ে ব‍্যাথা,ও করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আবিরের দিকে।আবির ব‍্যাপারটা বুঝতে পেরে গাড়ি থেকে নেমে যায়,,তারপর পেখমকে কোলে করে নিয়ে হেঁটে যায় ফাঁকা রাস্তার মাঝখানে,,,বৃষ্টির জল আবিরের মুখ বেয়ে নেমে এসে পেখমের সারামুখে মাখিয়ে যাচ্ছে একটা ভালো লাগার অনুভূতি,,, পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থাকে ওরা দুজনে দুজনের দিকে। কোনো একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে এই মানব-মানবী,,,একে অপরের চোখের ভাষা বুঝে নেওয়ার খেলায় নেমেছে হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে পেখম আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আবিরকে,,হঠাৎ পেখম খেয়াল করলো ওর ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে,, লজ্জার দরুন ওর গাল দুটো ঠান্ডাতেও গরম ও রক্তিম হয়ে উঠেছে,,,,এই ভাবে কেটে যায় অনেক সময়,,,তারপর পেখম নিজেকে সামলে অতি সন্তপর্ণে আবিরকে বলে ওঠে,,

-আবির দা আমাকে এখানে নামিয়ে দিন,, আমি পারবো দাঁড়াতে,,, আবির ওর কথা মতো নামিয়ে দিয়ে একটা গাছের পাশে এসে দাঁড়িয়ে থাকে।

-দূর থেকে প্রেয়সীর বৃষ্টিবিলাস দেখছে আবির,,,পেখম বাচ্চাদের মত করে ভিজছে বৃষ্টিতে,,, থেকে থেকে হাত তালি দিয়ে উঠছে,,,গোল করে ঘুরছে দুই হাত মেলিয়ে,,, বৃষ্টিতে ভেজার দরুন পেখমের চুড়িদার শরীরের সাথে লেপ্টে যায়,,,ভেজা চুল বেয়ে টুপটাপ করে পড়ে বৃষ্টির জল,,আবির কেমন নেশাক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে পেখমের দিকে,,,এই মুহূর্তে ওর মনের কুটিরে অবস্থিত ইচ্ছেরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বারংবার,,, নিজেকে ভীষণ কষ্টে সামলে পেখমের উদ্দেশ্যে চেঁচিয়ে বলে ওঠে” অনেক হয়েছে পাখি এবার আমাদের ফিরতে হবে,,,”

-আবির দা আরও একটু থাকি প্লিজ,,, আপনি ওখানে কেন দাঁড়িয়ে আছেন,,, এখানে আসেন ভিজবেন আমার সাথে,,,

-(আবির মনে মনে বলে ওঠে মেয়েটা কি একটুও বোঝে না ওর নিজের শরীরের কি অবস্থা?? এই অবস্থায় কোনো ছেলেকে কেউ কাছে ডাকে,,,সত্যিই ওর পাখি ভীষণ নির্বোধ,,,) অনেক হয়েছে পাখি,,,এবার বাড়ি ফিরতে হবে বলেই কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয় পেখমকে।সারা রাস্তা আর কোনো কথা হয়নি দুজনের মধ্যে,, শুধু বারবার একে অপরকে আড় চোখে দেখেছে,,পেখমের আজ নতুন অনুভূতির সাথে পরিচয় ঘটেছে,, ও জানে না এই অনুভূতির নাম কি,,তবে এটা খুব সুখকর অনুভূতি সেটা ও বুঝতে পেরেছে।

-প্রায় ঘন্টা খানেকের মধ‍্যেই আবির পেখমদের ফ্ল্যাটের নীচে গাড়ি এনে দাঁড় করালো,,তারপর নিজে গাড়ি থেকে নেমে পেখমকে কোলে তুলে নিয়ে রওনা দিল ফ্লাটের উদ্দেশ্যে,,, দরজার সামনে কলিং বেল দিতেই মনোরমা(পেখমের মা) দরজা খুলে দেয়,,,

-কাকিমা আমি পাখিকে একেবারে ঘরে রেখে আসবো নাকি ড্রয়িং রুমে বসাবো??

-না আবির তুই একেবারে ওকে ওর রুমে দিয়ে আয়,,,আমি তোদের জন্য আদা দিয়ে চা বানিয়েছি,,যাওয়ার সময় খেয়ে যাস,আর পেখুর টা আমি ওর ঘরে গিয়ে দিয়ে আসছি,,,

-ঠিক আছে কাকিমা,,,(বলেই আবির পেখম কে ওর ঘরের ওয়াশরুমের সামনে নামিয়ে দেয়)

-তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে নে আমি তোকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে তারপর বাড়ি যাবো।

-তার কোনো প্রয়োজন ছিল না আবির দা,,,আপনার ঠান্ডা লেগে যাবে বেশি দেরি হয়ে গেলে,,,

-আর একটাও কথা না ,,যা,,,(বলেই একসেট জামা পেখমের হাতে দিয়ে দিলো,,,অগত্যা পেখম ভিতরে ঢুকে চেঞ্জ করে বেরিয়ে আসে তাড়াতাড়ি,, আবার আবির ওকে কোলে করে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়,,,তারপর যাওয়ার সময় ওর কানের কাছে মুখ এগিয়ে নিয়ে বলে,,)

-আর কোনো দিন নিজেকে উন্মুক্ত করে আমার সামনে আসবে না তুমি,,, ঐ রকম পরিস্থিতিতে কখনোই কাছে ডাকবে না আমাকে,,,নিজেকে তাহলে আর সংযত করে রাখতে পারবো না আমি,,,, আমি চাই না আমার দ্বারা কোনো ভুল হয়ে যাক পাখি,,,আর তুমি সেটা নিয়ে আফসোস করো। আমি চাই আমাদের স্পর্শ হবে পবিত্র ও বৈধ।

-কথা গুলো বলে পেখমের চোখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে ওঠে” তোমার আমার প্রথম স্পর্শ হবে পবিত্র, বৈধ।যে ছোঁয়ায় থাকবে ভালোবাসা,ভালোলাগা আর থাকবে তোমার চোখে একরাশ লজ্জা,,,

চলবে,,,,,

(যারা যারা পড়ছেন সবাই লাইক ও মন্তব্য অবশ্যই করবেন। আপনারা লাইক ও মন্তব্য করলে আমার লেখার প্রতি আরও আগ্ৰহ বাড়ে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here