আকাশে তারার মেলা পর্ব ২০

0
336

#আকাশে_তারার_মেলা
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব -২০

তুলির চোখ ছাপিয়ে জল নেমে এল। কষ্টের অশ্রু নয়। এই অশ্রুগুলো সুখময় কিছু মুহুর্তের স্বাক্ষী। চোখ মেলে সম্মুখে আদ্র কে আবিষ্কার না করলেও আঁখিদ্বয়ে ভেসে উঠেছে পরিচিত কিছু মুখ। অতিশয় ভয়ে চুপসে যাওয়া মনটা নিমিষেই সতেজ হয়ে উঠল। আনন্দের জল গড়াতে লাগল মনের গহীনে। এতো বড় সারপ্রাইজ তো তুলি কখনও পায় নি। আহান, ঝুমু, সায়েরা বেগম, রাদিফ সাহেব, আমরিন,নিবিড়, অন্তু,পায়েল,ইনশিতা, রনক, রিমি,সাগর সবাই হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। রাদিফ সাহেবের হাতে একটা চকলেট কেক। এতো রাতে সবাই কে নিজের চোখের সামনে দেখতে পেয়ে মুখে হাত চেপে কেঁদে দিল তুলি। বিশেষ করে আহান ও ঝুমু কে দেখতে পেয়ে তুলি বিস্মিত। এতো রাতে এখানে ওদের উপস্থিতি সত্যিই খুবই বিস্ময়কর। আর এই বিস্ময়কর ও এতো সুন্দর কাজ টা কার তুলি বেশ ঠাওর করতে পারছে। আদ্র তুলির কল্পনায় ছিল না বরং বাস্তব টা কেই যেন কল্পনার রাজ্য বানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু যেই মানুষ টা সবাই কে জড়ো করে সারপ্রাইজ দিয়েছে তুলি কে সারা ঘরময় চোখ বুলিয়েও তুলি তার হদিস পেল না। কোথায় গেল আদ্র? এখনই তো তার সামনে ছিল? ভালোবাসার সবটুকু অনুভূতি দিয়ে তার চোখের জল শুষে নিয়েছিল। এতটুকু সময়ে কোথায় গায়েব হয়ে গেল? রাদিফ সাহেব এগিয়ে এলেন। কেক টা টেবলি রেখে তুলির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,,–” হ্যাপি বার্থডে মাই প্রিন্সেস।”

প্রিন্সেস? শব্দ টা তুলির হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়তে লাগল অনবরত। কতটা স্নেহ করলে নিজের মেয়ে ভাবলে একজন বাবা এই নামে ডাকতে পারে। তুলির চোখের জল আজ আর বাঁধ মানবে না। এতো সুখ তো তুলি কখনও পায় নি। অতি সুখে যে মানুষ কেঁদে দেয় তুলির তার চাক্ষুষ প্রমাণ। কখনও ভাবে নি পরিবার হারিয়ে আবারও এতো সুন্দর একটা পরিবার পাবে সে। কেন সবাই তাকে এতো ভালোবাসে? তুলি পারবে তো আগলে রাখতে ভালোবাসা গুলো? রাদিফ সাহেবের হাত টা ধরে ডুকরে কেঁদে উঠল। সবার মুখে মৃদু হাসি। কান্না ভেজা কন্ঠে বলে উঠল-

–” আপনাদের ধন্যবাদ জানালে সেটা অপরাধ হবে। তাই ধন্যবাদ জানাব না বাবা বরং জেনে রাখুন আমি খুব খুব বেশি ভালোবাসি আপনাদের সবাইকে।”

রাদিফ সাহেব হালকা হেসে তুলির চোখের পানি মুছে দিলেন। হাত টা ধরে নিয়ে এলেন কেকের কাছে। কেক টা কাটতে বললেন। তুলি সবার দিকে একপলক তাকিয়ে সূক্ষ্ম হাসল। কেক টা কেটে রাদিফ সাহেব কে খাওয়াল সবার আগে। রাদিফ সাহেব ও সায়েরা বেগম চলে যেতেই পায়েল, রিমি, আমরিন,ইনশিতা এসে শক্ত করে জরিয়ে ধরল তুলি কে। রিমি ও পায়েল একসাথে মুচকি হেসে বলল –” শুভ জন্মদিন আদ্রর বউ।”

ইনশিতা আর আমরিন তুলির দুই গালে হাত রেখে বলে উঠল- ” শুভ জন্মদিন ভাবী।”

এগুলো যেন তুলির জন্য উইশ নয় বরণ এক রক্তিম লজ্জার সমারোহ । লজ্জায় থম মেরে রইল তুলি। এক এক করে সবাই উইশ করল। আহান ও ঝুমু কাছে আসতেই তুলির ঠোঁট দুটো প্রসারিত হয়ে এল। ঝুমু কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। আহানের দিকে তাকিয়ে বলল –” তোমাদের সবাইকে যে একত্রিত করেছে সেই মানুষ টা কোথায় ভাইয়া? হঠাৎ করে কোথায় হারিয়ে গেল?”

তুলির আদ্র কে দেখার অস্থিরতা বুঝতে পেরে সবাই ফিক করে হেসে দিল। আহান কোনো জবাব না দিয়ে বাকি সব ছেলেদের নিয়ে বের হয়ে গেল। তুলি হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে পড়ল। সবাই তার কথায় হাসল কেন বুঝতে পারছে না সে। একটু আগেও তো আদ্র ছিল। গভীর রাতে সবাইকে জ্বীনে পায় নি তো? ভেবেই তুলি এক নজর সবার দিকে তাকাল। চোখ গেল আমরিনের হাতে থাকা কালো একটা গাউনের দিকে। গাউন টা অসম্ভব সুন্দর। আমরিন গাউন টা এগিয়ে দিয়ে বলল–” গাউন টা পড়ে আয় জলদি। হাতে মাত্র দশ মিনিট সময় আছে।”

বাকরুদ্ধ হয়ে গেল তুলি। সবাই কি পাগল হয়ে গেল? কিসের দশ মিনিট? তুলির চিৎকার করে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে –” আমার আদ্র কোথায়? একটু আগেই তো ছিল। চোখের পলকে কোথায় উদাও হয়ে গেল? ”
তুলি কে নড়তে না দেখে আমরিন গাউন টা হাতে ধরিয়ে দিয়ে ঠেলে ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে দিল। বাকি সবাই হাসতে হাসতে নিচে চলে গেল। কে বলবে এটা গভীর রাত? এ বাড়িতে অবস্থান থাকা প্রত্যেক টা মানুষের জন্য যেন এটা খুশির রাত। আর এই খুশিতে ঘুম ও যেন পালিয়ে গেছে। তুলি মাত্র কয়েক মাসেই সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। গাউন টা পরে বের হয়ে আসতেই আমরিন সুন্দর করে তুলির চুলটা বেঁধে দিল। বেনুনি করে ঘাড়ের একপাশে রাখল। তুলি কে দাঁড় করিয়ে একটা কালো ফিতা দিয়ে চোখ টা বেঁধে দিল। আতকে উঠল তুলি। আমরিনের হাত চেপে ধরে বলল –” কি করছিস?চোখ কেন বেঁধে দিলি?”

মুচকি হাসল আমরিন। তুলি কে ধরে হাঁটতে হাঁটতে বলল–” নিশি রাতে তোর পরীক্ষার পালা।”

তুলি না বুঝে একনাগাড়ে প্রশ্ন করতে লাগল। আমরিন কোনো জবাব না দিয়ে তুলি কে বাড়ির বাহিরে নিয়ে আসল। ছেড়ে দিতেই তুলি ভয়ে উচ্চস্বরে ডেকে উঠল আমরিন কে। কোনো সাড়াশব্দ নেই আমরিনের তবে দূর থেকে ঝি ঝি পোকার ডাক ভেসে আসছে। একটা হিমেল হাওয়া তুলির গা ছুয়ে যেতেই সারা শরীর কাটা দিয়ে উঠল। নাকে এসে লাগল চিরচেনা সুবাস। মুহুর্তেই তড়িৎ বেগে বুকের ভেতর কিছু একটা এসে ধাক্কা খেল। ঠোঁটের কার্নিশে জড়ো হল মুগ্ধময়ী হাসি। হাতড়ে হাতড়ে এক কদম এগিয়ে যেতেই দু হাত ঠেকল কারো বুকে। স্থির হয়ে পড়ল তুলি। একটুও সময় ব্যয় না করে প্রচন্ড বেগে আছড়ে পড়ল মানুষটার বুকে। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে হাউমাও করে কেঁদে উঠল।

–” কোথায় ছিলেন আপনি আদ্র? অফূরন্ত ভালোবাসায় নিমজ্জিত করে গায়েব হয়ে গেলেন? আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল কেউ আমার শ্বাসরুদ্ধ করে দিয়েছিল। এভাবে হুট করে হারিয়ে যাবেন না। আমার কষ্ট হয়। প্রচন্ড ব্যাথা হয় হৃদপিণ্ডে। ”

নিজের সাথে গায়ের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিল আদ্র। ঘাড়ে আলতো করে চুমু খেল। কানের পাতায় ঠোঁট ছুঁয়ে ধীর স্বরে বলে উঠল-” এভাবে কাঁদবে না তুলা। এতো রাতে এভাবে কাঁদলে মানুষ জ্বীন-ভূত ভেবে ভয় পেয়ে যেতে পারে।”

আদ্রের রসাত্মক কন্ঠ শুনে তুলি জোরে একটা কামড় বসিয়ে দিল আদ্রর বুকে। স্তব্ধ হয়ে গেল আদ্র। ঠোঁট দুটো এখনও তুলির কান স্পর্শ করে রেখেছে। হৃদয়ের স্পন্দন দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে। তুলি কে নিজের সাথে মিশিয়ে নেশাময় সুরে বলে উঠল- ” আমার বুকে তোমার দেওয়া ভালোবাসার দ্বিতীয় স্পর্শ। তুমি কি আমার বুকের ঝড় টা টের পাচ্ছ? এলোমেলো হয়ে পড়ছি আমি। অবাধ্য হয়ে পড়ছে মন। কেন এমনটা করলে এ মুহুর্তে?”

আদ্রর আবেগ মাখানো ভালোবাসাময় আর্তনাদ টের পেতেই অভিভূত হল তুলি। এক শীতল স্রোত বয়ে গেল শিরদাঁড়া বেয়ে। নেশা মিশ্রিত কথাগুলো তুলির অন্তরে ছড়িয়ে পড়ল দ্রুত বেগে। বরফের মতো গলে যাচ্ছে তুলি। আদ্র কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতেই চারপাশ থেকে মুখরিত হল আওয়াজ। আদ্র ও তুলি উভয়ের কানে এসে ঝংকার তুলল একটা বাক্য—” আমরা কিছু দেখি নি ভাই। আমরা কিন্তু কিছু দেখি নাই। ” বাক্য টা কানে পৌঁছতেই দু’জন দুজনকে ছেড়ে দিল। চোখ থেকে কালো কাপড় টা সরাতেই আদ্র কে দেখে অসীম মুগ্ধতা এসে গ্রাস করে নিল তুলি কে। কালো জ্যাকেটে আদ্র কে ভীষণ সুন্দর লাগছে। তুলির ইচ্ছে করছে আদ্র কে লুকিয়ে ফেলতে। এতো সুন্দর হতে পারে একটা ছেলে? নিজের উপর লাল গোলাপের পাপড়ি পড়তেই ঘোর থেকে বেরিয়ে এল তুলি। চারদিকে তাকিয়ে দেখল সবাই ওদের উপর গোলাপের পাপড়ি ছিটাচ্ছে। এতো এতো সুন্দর মুহুর্ত তো তুলি তার কোনো জন্মদিনেই পায় নি। এসব মুহুর্ত শুধু মাত্র একটা মানুষের জন্যই পেয়েছে তুলি। সারাজীবন এই মানুষ টাকে পাশে চায় তার। কোনোদিনও যেন বিচ্ছেদ না আসে এটাই আল্লাহর কাছে একটা চাওয়া তুলির। আদ্র সবাইকে তাড়া দিয়ে বাইকে উঠল। একে একে সবাই বাইকে উঠে গেল। তুলি এখনও মুগ্ধ চাহনি নিক্ষেপ করে রেখেছে আদ্রর দিকে। হাতে টান পড়তেই আদ্রর পিছনে উঠে বসল। কিন্তু গাউন টা সামলাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তার। আদ্র নেমে গাউন টা ঠিক করে দিল। উঠে বাইক স্টার্ট দিতেই বাকি সবাই স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে গেল। তুলির জীবনে বাইকে উঠা ও প্রথম। ভয়ে আদ্রর দুই বাহু জরিয়ে চোখ বুজে আদ্রর পিঠে মুখ গুজে ফেলল তড়িঘড়ি করে। বুকটা ধরফর করতে লাগল আদ্রর। এই মেয়েটা তার হার্ট এট্যাক করিয়েই দম নিবে। আলতো হেসে বাইক চালাতে চালাতে বলল–

–” মাথা উঠিয়ে রাতের আঁধার টা অনুভব করো তুলা।”

–” আমার ভয় লাগছে। যদি পড়ে যায়?”

–” আমি থাকতে কিসের ভয়? একটা আঁচড়ও লাগতে দিব না তোমার মোলায়েম দেহে। নিজে রক্তাক্ত হয়ে যাব তবুও তোমার গায়ে রক্তের দাগ টুকুও লাগতে দিব না।”

এমন কথা শুনলে কোনো মানুষ স্বাভাবিক থাকতে পারে? তুলিও পারছে না নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে। মনের অনুভূতি গুলো কেও ধরে বেঁধে গুছিয়ে নিতে পারছে না। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠল-

–” আপনি আর এমন করে কথা বলবেন না আদ্র।”

বাঁকা হাসল আদ্র। তুলির মনোভাব বুঝতে পারছে সে অনাসয়ে। না দেখেও দিব্যি অনুভব করতে সক্ষম হচ্ছে তুলির অস্থিরতা। সাবলীলভাবে বলল,,

–” তুলা একবার মাথা তুলো। মনে জড়ো করে নাও প্রখর অনুভূতি মেশানো এই ঘোর অমানিশা টা কে। কেমন হাতছানি দিয়ে যাচ্ছে প্রতিবার।”

আদ্র কে জড়িয়ে ধরে রেখেই মাথা তুলল তুলি। তীব্র বাতাসে তুলির অবাধে পড়ে থাকা চুলগুলো উড়তে লাগল। অসম্ভব রকম ভালো লাগা ছেয়ে গেল মন প্রাণ জুড়ে। বাতাসের বেগে কানে এসে যেন কেউ চুপিসারে বলে যাচ্ছে –” তুই অমানিশার মাঝে ও এক মুঠো আলো। যেই আলোতে তোর ডাক্তার সাহেবের ঠোঁটের কোণে হৃদয় নাড়ানো হাসির ঝলক দেখা যাচ্ছে। ”

আনমনেই হাসল তুলি। আদ্রর পিঠে মাথা এলিয়ে বলল,,

–” আপনি ডাক্তার হলেন কেন ডাক্তার সাহেব? ”

তুলির অদ্ভুত প্রশ্নে ঠোঁট দুটো প্রসারিত হয়ে এল আদ্রর। এই মেয়ের উদ্ভট কথাগুলোই আরো মন কেড়ে নিয়েছে তার।

–” এমন প্রশ্ন কেন?”

–” আপনি বাইক চালাতে পারেন। আবার আপনার চোখ দুটো ও নেশা ধরানো। দেখতেও খুব খুব বেশি হ্যান্ডসাম আপনি। আপনার না নায়ক হওয়ার উচিত ছিল। ডাক্তার কেন হলেন?”

–” বাবার ইচ্ছে ছিল তাই। ”

বিস্ময়ে জড়ীভূত হয়ে গেল তুলি। নরম স্বরে বলে উঠল-

–” বাবা কে খুব ভালোবাসেন তাই না?”

–” হুুম।”

–” তাহলে এভাবে অভিমান চেপে রেখেছেন কেন? আপনি জানেন বাবাও আপনাকে ভীষণ ভালোবাসে।”

–” অভিমান নয়। শুধু নিজের কাছেই নিজে লজ্জিত সেইদিনের বিহেভিয়ারের জন্য। ”

–” বাবাও লজ্জিত ওনার ভুল ধারণার জন্য। আপনি ওনার সাথে একবার ভালো করে কথা বললে দেখবেন ওনার খুব ভালো লাগবে।”

–” অবশ্যই বলব তুলা।”

____
বাইক এসে একটা বাড়ির সামনে থামল। আদ্র নেমে তুলি কে ধরে নামাল। বাকি সবাই ও দাড়িয়ে আছে। সবাই স্বাভাবিক থাকলেও স্বাভাবিক নেই অন্তু ও পায়েল। পায়েলের মেজাজ চওড়া। অন্তু কে যেভাবে পারছে ধুয়ে দিচ্ছে। বেচারা অন্তু চুপ করে সব শ্রবণ করে নিচ্ছে। আদ্র তুলির হাত ধরে এগিয়ে এসে পায়েল কে থামাল।

–” কি হয়েছে পায়েল?”

–” কি আর হবে? তোর এই ফালতু ফ্রেন্ড বাইক ও ঠিকভাবে চালাতে পারে না। আমার কোমর টা শেষ। ”

–” এতো যত্ন করে ভালোবেসে চালিয়ে আনলাম তবুও এমন বললা বউ? আজ ভালোবাসি বলেই এতো অত্যাচার সহ্য করি। নয়তো কবেই উগান্ডা তে পাড়ি জমাতাম। ”

অন্তুুর কথা শুনে সবার হেসে লুটোপুটি খাওয়ার অবস্থা। আদ্র হাসতে হাসতে বলল–” হয়েছে চল। আজ কিন্তু আমার বউয়ের বার্থডে। অন্তত ওর খাতিরেই ঝগড়া অন্য একদিন করিস। আপাতত মনের খাতায় লিখে রাখ।”

আরেকদফা হাসির রোল পড়ে গেল। গেইট খুলে ভিতরে প্রবেশ করল সবাই। শহর থেকে কিছুটা দূরে বাড়ি টা। বেশি বড় না। তিনটা কক্ষের একতলা একটা বাড়ি। চারদিকে ফুলের সমারোহ। বাগান বাড়ি বললেও ভুল হবে না। ঘুরে ঘুরে পুরোটা বাড়ি দেখল তুলি। চোখ জুড়িয়ে গেল তার। আদ্রর হাত টা চেপে ধরে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলে উঠল-

–” বাড়িটা কার আদ্র?”

–” তোমার ও আমার।”

অবাক হল তুলি। বিস্ময়ের সাথে বলল,,

–” আমাদের মানে?”

সবাই ড্রইং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তুলি ও আদ্র বাড়ির পেছনের দিকটায়। পেছন থেকে তুলির পেটে দু হাত রেখে জড়িয়ে ধরল আদ্র। হালকা কেপে উঠল তুলি। পেটে বিরাজমান আদ্রর হাতের উপর হাত চেপে ধরল।

–” ছোট্ট এই বাড়িটা আমি আমাদের জন্য বানিয়েছি। মাঝে মাঝে দু জন এসে ছোট্ট একটা সংসার গড়ে যাব। রেখে যাব আমাদের ভালোবাসার হাজারো স্মৃতি।”

তুলির মনে উদয় হল কাগজের ব্যাপার টা। তৎক্ষনাৎ প্রশ্ন করল,,

–” কাগজগুলো কি এই বাড়ির ছিল?”

–” উহু! কাগজ টা তো আমাদের সংসার জীবনে পদক্ষেপের প্রমাণ ছিল। ”

কথাটা বোধগম্য হল না তুলির। আদ্রর কথায় রহস্য ভরপুর মনে হচ্ছে তার নিকট।

–” মানে?”

–” মানে টা নাহয় বিয়ের দিনই জেনে নিও তুলা।”

#চলবে,,,

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here