আকাশে তারার মেলা পর্ব ৯

0
374

#আকাশে_তারার_মেলা ✨
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব -৯

❝ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে যেদিন থেকে আপনার আগমন
সেদিন থেকেই আমার আকাশে হাজারো তারার বিচরণ। ❞

বিষাদময় মন নিয়ে তুলি বাসে বসে আছে আমরিনের পাশে। বাস ছুটে চলেছে সুনামগঞ্জের লক্ষ্যে। মালনীছড়া চা বাগান থেকে ফিরে আদ্রর সাথে একটা কথাও বলে নি তুলি। আদ্র কে ফেইস করার সাহস টুকু আর নেই তার। আবেগের বশে বড্ড বড় ভুলে করে ফেলেছে সে। এমনটা করা উচিত হয় নি! আদ্র হয়তো খুব খারাপ ভাবছে তাকে। আদ্রর রাগী ফেইস টা চোখে ভাসলে এখনও কান্না পায় তার। সারাদিন রুম থেকে বের হয় নি। আদ্র একবার ডেকে পাঠিয়েছিল আমরিন কে দিয়ে তবুও যায় নি। আদ্র ও ব্যাপার টা বুঝতে পেরে আর জোর করে নি। কেন যে মনে ভালোবাসার উদয় হল! কেন একবারও মনে হল না যে আদ্র ভালোবাসে না। একটু চিন্তা করলে নিজেকে সামলে নিলে হয়তো আজ এমনটা হতো না। আজ তুলির কাছে একটা কথা চরম সত্য মনে হচ্ছে তা হল—”আমরা এমন কাউকেই ভালোবেসে ফেলি যাকে আমরা কখনও পাবো না।” নিজের প্রতি নিজেই লজ্জিত তুলি। বাহির থেকে বাতাস এসে চোখে মুখে ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে অনবরত। খোলা চুল গুলো ভীষণ বিরক্ত করছে। নিজের ছোট্ট ব্যাগ থেকে একটা রাবার ব্যান্ড বের করে চুল গুলো বেঁধে নিল তুলি। বিষন্ন মন নিয়ে আকাশের দিকে চোখ স্থির করল। আজকের চাঁদ টা একদম গোলাকার ও প্রশস্ত। আকাশ জুড়ে তারার ছড়াছড়ি। তুলির কাছে মনে হল আজ বোধহয় আকাশে তারার মেলা বসেছে।

হঠাৎই বুকটা শূন্যতায় ভরে গেল তুলির। মাথা ঘুড়িয়ে আড়ালে এক পলক চাইল আদ্রর দিকে। সিটে হেলান চোখ বুঁজে রেখেছে আদ্র। তুলির মন ছটফট করছে আদ্রর সাথে একটু কথা বলার জন্য। কিন্তু পারছে না সে। আদ্র ও যে সারাদিন একটু ও কথা বলে নি তার সাথে। আদ্রর আচরণে তুলি টের পাচ্ছে সে প্রচন্ড রকমের ভুল করে ফেলেছে। আদ্রর আচরণ তার বুকে অদৃশ্য ছুরি গাঁথছে যার প্রভাবে রক্ত ঝরছে অনবরত।কিছুতেই সহ্য করতে পারছে না তুলি অসহনীয় এ যন্ত্রণা। মাথা ঘুরিয়ে সোজা হয়ে বসল তৎক্ষণাৎ।

ধপ করে চোখ মেলে তাকাল আদ্র। আঁড়চোখে তুলি কে পর্যবেক্ষণ করছে শুরু থেকেই। তুলির অসহায় চাহনি ও যেন এক রাশ মায়ায় জড়ানো তার কাছে। নিজের মোবাইল বের করে তুলির আজকের ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকল নিষ্পলক। ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি।নিম্নস্বরে ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলল,,,

❝ যদি পরিস্থিতি অনুকূলে থাকত তবে নিজের সাথে মিশিয়ে নিতাম তোমায়। তুমি যে বছরের পর বছর আমার অস্তিত্বে উড়ে বেড়ানো এক সর্বনাশী তুলা। যাকে ছুঁতে গেলেও হাজার বাঁধা পেরোতে হয় আমার। তুমি আমার জীবনের এক সর্বনাশ। যেই সর্বনাশে তলিয়ে গেছে আমার মন। বিক্ষত হয়েছে আমার হৃদয়। ❞
_______________

খানিকক্ষণ আগেই রিসোর্টে এসেছে সবাই। রিমি, আমরিন, তুলি এক রুমে উঠেছে। ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এল তুলি। রিসোর্টের সামনে একটা জায়গায় বসে চাঁদের আলোয় আড্ডা দিচ্ছে সবাই। একটা টুলে বসতেই তুলির চোখ পড়ল গাছের নিচে দাঁড়িয়ে স্মোকিং করা আদ্র কে। শেষ টান দিয়ে সিগারেট টা ফেলে দিল আদ্র। চোখ ঘুরাতেই চোখ পড়ল তুলির ছলছল চোখে। এক নজরে তাকিয়ে আছে তুলি যা কারোই চোখ এড়ায় নি। তুলির ঘন মেঘে ঢাকা মুখশ্রী সবাই কে জানান দিচ্ছে কিছু একটা ঘেটেছে আদ্র ও তার মাঝে। কিন্তু কেউ একটা প্রশ্ন ও করল না। সবাই জানে আদ্রই সামলে নিবে সব। তবুও নরমাল করার জন্য পায়েল ডেকে উঠল,,

“তুলি? ”

পায়েলের ডাকে স্বাভাবিক হল তুলি। চোখে টলটল করা পানি গড়িয়ে পড়ার আগেই মুছে নিল অবিলম্বে। মুখে হাসি টেনে পায়েল কে সম্মতি জানাল।

“তুৃমি তো আমাদের সবার ব্যাপারে জানোই না। তো একটু সবাই কে অন্যরকম ভাবে পরিচয় করাই তোমার কাছে দেখি ধরতে পারো কিনা?এটা একটা গেম ধরে নিতে পারো।খেলতে রাজি তো?”

–“অবশ্যই আপু।”

–“উদ্ভট উদ্ভট কথা বলে বেড়ায় আর মেয়ে দেখলেই দাঁত কেলিয়ে রাখে। এক সময় কলেজে মেয়েদের পিছু পিছু ঘুর ঘুর করতো। একবার এক মেয়ের বাড়িতে রাতের বেলায় দেখা করতে গিয়ে চোর ভেবে মানুষের কাছে গণপিটুনি ও খেয়ে এসেছে। কে হতে পারে?”

তুলি সাথে সাথেই হেসে জবাব দিল,,–“অন্তু ভাইয়া।”

সবাই ফিক করে হেসে উঠল। পায়েল ও মুখ চেপে হাসছে। অন্তু একবার চোখ রাঙিয়ে আবার হি হি করে হেসে দিল।পায়েল আবারও বলল,,

–“চুপচাপ থাকে। প্রয়োজন ছাড়া কথা কম বলে। ডাক্তার হিসেবে মন্দ নয়। কে সেই ব্যক্তি?

–“রিমি আপু।”

মুচকি হাসল রিমি। জোর গলায় বলল,,

–“আমি মোটামুটি না অনেক ভালো ডাক্তার বুঝেছিস পায়েল?”

–“জ্বি ম্যাডাম।” মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,,,

—” চোখ দুটো মাদকতায় ভরপুর। গম্ভীরতা যেনো তার সৌন্দর্যের বিকাশ। তার এক চিলতে হাসি মেয়েদের জন্য ঘায়েল হওয়ার কারণ। তবুও তার আচরণে প্রকাশ পায় তাহার প্রেমে পড়া নিষিদ্ধ। ভুল করে পড়ে গেলেও খেতে হবে বলিষ্ঠ হাতের থাপ্পড়। ”

–“আদ্র”

ঘোর লাগা কন্ঠে লাফিয়ে বলে উঠল তুলি। সবাই একসাথে হেসে রসাত্মক সুরে বলে উঠল,,”ওহহ্ আদ্র!!!”
লজ্জায় এক মুহুর্ত না দাঁড়িয়ে ছুটে চলে এল তুলি। পিছে যে আদ্র ছিল সেটা ও খেয়াল করে নি। তুলির পিছু পিছু আদ্র ও এল ছুটে। রুমের দেয়ালে হেলান দিয়ে দু চোখ বুঁজে ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলতে লাগল। সারা মুখে গরম নিশ্বাস অনুভব করতেই আদ্র কে দেখে চমকে গেল তুলি। বিশ্বাস হচ্ছে না আদ্র ওর সম্মুখে দাড়িয়ে। চৌচির হয়ে যাওয়া মনে হঠাৎই যেন ঠান্ডা ঢেউয়ের দেখা মেলল। তৃষ্ণা মিটে গেল। পরক্ষণেই সকালের ঘটনা মনে পড়ে গেল। নিজেকে কিভাবে লুকাবে সেই চিন্তায় ডুবে গেল। কোনো উপায় না পেয়ে আদ্রর মোহনীয় দৃষ্টিতে দৃষ্টি রেখে বলল,,

–“সকালের জন্য আমি দুঃখিত ভাইয়া। আমি বুঝতে পারি নি এমন কিছু হয়ে যাবে।”

আদ্রর মুগ্ধময় চেহারা মলিন হয়ে গেল। এক পা পিছিয়ে দাঁড়াল তুলির থেকে। ঘাবড়ে গেল তুলি। হঠাৎ কি হল বুঝতে পারছে না। আদ্র আবার মেরে বসবে না তো? ভয়ার্ত মন নিয়ে আদ্রর চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। সাহস করে এগিয়ে গেল কিছুটা। আদ্র যেন এটাই চাইছিল। তুলির গালে এক হাত রেখে মধুর সুরে বলে উঠল,,,

–“সকালে কেন রাগ দেখিয়েছিলাম জানো?”

মাথা নাড়িয়ে না বুঝাল তুলি। তুলির হাত টা শক্ত করে ধরে কাছে টেনে নিল আদ্র। তুলির ডাগরডাগর আঁখিতে নিজের নীলাভ চোখে দুটো রাখল।

–” সকালে এই চোখে আকর্ষণ ছিল। নেশা ছিল যা হৃদয়ের গহীনে আঘাত করছিল। যার জন্য আমার এতো সাধনা, যার একটুখানি ভালবাসা পাওয়ার জন্য আমি তৃষ্ণার্ত তার চোখে ভালোবাসার বদলে আবেগ, নেশা সহ্য করতে পারি নি আমি। এখন চোখ দুটো তে সরলতা, ভালোবাসার সমাহার, এক রাশ লজ্জা। আকর্ষণ, নেশা এক সময় ফুরিয়ে যায়। কিন্তু ভালোবাসা আবেগের বশে হয় না। নেশা কেটে গেলে আমরা স্বাভাবিক হয়ে যায়। অথচ ভালোবাসা আমাদের কখনও স্বাভাবিক থাকতে দেয় না। ক্ষণে ক্ষণে বুকে ঝড় তুলে। গভীর হতে থাকে। বিরাজ করতে থাকে হৃদয় জুড়ে। মানুষ টা হারিয়ে গেলে আমরাও হারিয়ে যায়। সুখ গুলো হারিয়ে যায়। স্মৃতির পাতায় সজীব থাকে চিরকাল। আমি আকর্ষণ বা নেশা কোনোটাই চাই না। আমি তো ভালোবাসা চাই তুলি যেন আমার শূণ্যতায় তোমার হৃৎস্পন্দন থেমে যাবে, বুকটা হাহাকার করে উঠবে বারে বার। নেশায় ডুবে না আমার ভালোবাসায় ডুবে তুমি আলিঙ্গন করে নাও আমায়। ”

টুপ করে অশ্রু ঝড়ে পড়ল তুলির চোখ থেকে। অনুভূতিরা ছুটাছুটি করছে অন্তর জুড়ে। ছোট্ট মন টা সেকেন্ডেই নিজেকে সাতাশ বছরের যুবতী ভাবতে লাগল।আদ্রর কথার মানে স্বচ্ছ পানির মতো পরিষ্কার মনে হল তার। ভুল ছিল না তার মন। বহু কাঙ্ক্ষিত জিনিসটা পেয়ে আজ হাসতে ভুলে গেল তুলি। অশ্রুসিক্ত নয়নে চাইল আদ্রর দিকে। অনুরোধের সুরে বলল,,,

–“আমায় একটু উঁচু তুলে দিবেন ডাক্তার সাহেব? আমি আপনার গাল টা নাগাল পাচ্ছি না। এতো লম্বা কেন আপনি?”

পায়ের উপর উঠে দাঁড়াতে ইশারা করল আদ্র। বিস্ময়ে জড়ীভূত হয়ে গেল তুলি। জড়তা-সংকোচ নিয়ে বলল,,,

–” আপনি আমার অনেক বড়। আপনার পায়ের উপর পা রাখলে বেয়াদবি হবে না?”

–“একদমই না তুলা। উঠো।”

জুতা জোড়া খুলে ফেলল আদ্র। খালি পায়ে তুলি উঠে দাঁড়াল আদ্রর পায়ের উপর। পড়ে যেতে নিলে কোমড় জরিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল আদ্র। কাঁপা কাঁপা হাতে গালে হাত রাখল তুলি। খোঁচা খোঁচা দাড়িতে হাত বুলাতে লাগল। হুট করেই কেঁদে উঠল শব্দ করে। অসম্ভব যন্ত্রণা অনুভব করল আদ্র। উদ্বিগ্ন কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,,,

–“কি হয়েছে তুলি?”

—“আপনি কি আমায় ভালোবাসেন আদ্র?”

—“সন্দেহ আছে?”

–“একদমই না।”

কথাটা বলেই আদ্রর কপালে কপাল ঠেকাল তুলি। এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল আদ্রর চোখের পাতায়। নিজের কম্পনরত ঠোঁট নিয়ে ঠেকাল আদ্রর কপালে। শীতল স্রোত বয়ে গেল আদ্রর শিরদাঁড়া বরাবর। লজ্জার ছাপ ফুটে উঠল তুলির চেহারায়। সরে আসতে নিলে কোমড় চেপে ধরে আরও কাছে টেনে নিল আদ্র। নিজের ওষ্ঠদ্বয় চেপে ধরল তুলির ওষ্ঠে। হৃদয়ের কম্পন প্রখর হতে লাগল তুলির। এমন অনুভূতি জীবনে আজ প্রথম! তুলি দু চোখ বুজে নিল অবলীলায়। মিনিট পাঁচেক পর ছেড়ে দিল আদ্র। ছাড়া পেতেই তুলি মুখ লুকাল আদ্রর বুকে। নিমিষেই তুলির কাছে মনে হল পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তির স্থান হয়তো এটা। আদ্রর হৃদপিণ্ডের স্পন্দন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কান পেতে মনোযোগ দিয়ে শুনতে লাগল তুলি। হয়তো পরিমাপ ও করতে পারছে। ভালোবাসার মানুষ টা কাছে থাকলে বুঝি এমনই হয়? আজ সকালেই কত কষ্ট পাচ্ছিল তুলি আর এখন এই রাতের আঁধারে প্রিয়তমের বুকে মাথা রেখে স্পন্দন পরিমাপ করছে।


রিমি,অন্তু,পায়েল, সাগর বসে বসে কথা বলছে। অন্তু চারদিকে চোখ বুলাল। মোলায়েম স্বরে জিজ্ঞেস করল,,

–“আমরিন ও নিবিড় কে দেখছি না যে?”

–“হবে হয়তো রুমে। ওদের ছাড়াও কিন্তু আরও দু’জন গায়েব।”–দুষ্ট কন্ঠে বলল পায়েল।

–“ওদের তো গায়েব হবারই কথা ভাই। এখানে আসা টাই কিন্তু ওদের জন্য। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে কিন্তু এই সুযোগ টা তৈরি করেছে আদ্র। এবার একটু সব ঠিক হোক।”

–“একদম ঠিক বলেছিস সাগর। কিন্তু এখনও যে সবটাই বাকি!”

পাশ থেকে বলে উঠল রিমি।

–“আদ্রর মতো বিচক্ষণ মানুষ থাকতে কিসের চিন্তা ভাই? সোজা পথে নাহলে বাঁকা পথ টাই অবলম্বন করবে।”

–“হুম।”
_________

আদ্রর কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে তুলি। দুজনেই আকাশে তারা দেখছে। দূর থেকে ঝি ঝি পোকার ডাক ভেসে আসছে। রাতের বেলা বাহিরে বসে আকাশ দেখার তৃপ্তি একদম অন্যরকম। নীরবতা ভেঙে তুলি প্রশ্ন করল,,,

–“আপনি আমায় কবে থেকে ভালোবাসেন?”

–” বাইশ বছরের সেই যুবক বয়স থেকেই।”

সোজা হয়ে বসল তুলি। অবাক নয়নে চাইল আদ্রর দিকে। আদ্র তাকে পাঁচ বছর ধরে ভালোবাসে? তাহলে কোথায় ছিল এতোদিন? কেন সে আদ্র কে কোনোদিন দেখে নি?পাঁচ বছরের ভালোবাসা অথচ এতো দূরত্ব ছিল বছরের পর বছর। বিস্মিত তুলি কে একহাত দিয়ে বাহুতে জরিয়ে নিল আদ্র। প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেলে তুলির মাথায় চুমু খেল।

–” বাইশ বছর বয়সে যখন নানুর বাড়িতে যাই তখন প্রথম দেখি তোমায়। সচরাচর নানুর বাড়িতে যাওয়া হতো না আমার। কাউকে চিনতাম ও না ভালোভাবে। একটা টপস ও স্কার্ট পড়ে পুকুর পাড়ে খেলছিলে তুমি। ছোট্ট সেই তুমি টা কে দেখে অদ্ভুত মায়া জাগে আমার মনে। সারাদিন তোমাকে দেখেছি, তোমার কার্যকলাপ খেয়াল করেছি। নিজেও জানতাম না কেন এমনটা করেছি আমি। পরেরদিন সকালে তোমার পুকুরে পড়ে যাওয়ার কথা শুনে দৌড়ে গিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম আমি। তোমাকে পাড়ে তুলে অজানা কারণেই কেঁদে দিয়েছিলাম। অবাক হয়েছিল সবাই। প্রচন্ড অবাক। ছোট থেকেই তীব্র ব্যাথা পেলেও আমায় চোখের পানি থেকে ঝড়তে দেখে নি কেউ। সত্যি বলতে আমি নিজেও চমকে গিয়েছিলাম। এত বড় হয়ে ছোট্ট পিচ্চি একটা মেয়ের জন্য কেঁদে দিলাম। জানিনা কেন তোমার জ্ঞান হারানো ফ্যাকাশে মুখটা দেখে বুকে চাপা যন্ত্রণা অনুভব করছিলাম। ঢাকায় ব্যাক করার পর সারাক্ষণ তোমার কথাই মনে পড়ত। ছুটে যেতে ইচ্ছে করত তোমার কাছে। খেতে গেলেও মনে হতে খাবার টা হয়তো আমার জন্য বিষ। পড়াতে ও মন বসাতে পারছিলাম না অথচ সামনেই ছিল এক্সাম। আমার মনে হল আবেগে গা ভাসিয়ে দিচ্ছি আমি। এটা আবেগ ব্যতীত কিছুই না। কারণ,,

চলবে,,,

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। যারা যারা গল্পটা পড়েন রেসপন্স করবেন প্লিজ। নয়তো লিখার আগ্রহ টা থাকে না। আপনাদের রেসপন্স পেলে গল্প লিখতেও ভালো লাগে।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here